প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

গুজরাটের দ্বারকায় বিভিন্ন প্রকল্পের সূচনা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বঙ্গানুবাদ

Posted On: 25 FEB 2024 4:42PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

 

দ্বারকাধীশ-এর জয় ! 

দ্বারকাধীশ-এর জয় ! 

দ্বারকাধীশ-এর জয় ! 

মঞ্চে উপস্থিত গুজরাটের জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্রভাই প্যাটেল, সংসদে আমার সতীর্থ এবং গুজরাটে ভারতীয় জনতা পার্টির সভাপতি শ্রী সি. আর. পাটিল, অন্য মাননীয় অভ্যাগতবৃন্দ এবং গুজরাটের আমার ভাই ও বোনেরা,

প্রথমত আহীর ভগিনীরা আমাকে এখানে শুভেচ্ছা জানানোয় আমি তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। কিছুদিন আগে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। প্রায় ৩৭০০০ আহীর ভগিনী দ্বারকায় গরবা প্রদর্শন করছিলেন এবং লোকেরা আমাকে সেকথা জানালে আমি তাঁদের বলি, আপনারা গরবা দেখেছেন তবে এর অন্য একটা দিকও রয়েছে। ৩৭,০০০ আহীর ভগিনীরা যখন গরবা নৃত্য প্রদর্শন করছেন তখন মনে রাখতে হবে যে তাঁদের গায়ে প্রায় ২৫,০০০ কিলোগ্রাম সোনাও রয়েছে। একথা শুনে তাঁরা রীতিমত বিস্মিত হন। মাতৃসমা এইসমস্ত মানুষরা আমায় আশীর্বাদ জানানোয় আমি তাঁদের প্রতি প্রণাম ও কৃতজ্ঞতা জানাই।

ভগবান কৃষ্ণের কর্মভূমি দ্বারকাধামের প্রতি আমার শ্রদ্ধাবনত প্রণাম। ভগবান কৃষ্ণ দেবভূমি দ্বারকায় বসবাস করতেন দ্বারকাধীশ হিসেবে। এখানে যা কিছুই ঘটে তা দ্বারকাধীশের ইচ্ছাক্রমেই হয়। আমি সৌভাগ্যবান যে সকালে মন্দিরে গিয়ে পূজার্চনা করতে পেরেছি। দ্বারকাকে বলা হয় চার ধাম এবং সপ্ত পুরীর অংশ। আদি শঙ্করাচার্য চারিটি পীঠের একটি সারদা পীঠ এখানে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এখানে রয়েছে নাগেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ, রুক্মিনী দেবীর মন্দির এবং অন্য আরও ধর্মীয় স্থান। সম্প্রতি আমার ‘দেশ কাজ’ (জাতীয় কর্ম)-এর মাঝেও আমি সৌভাগ্যবান যে আমি দেশের নানা পবিত্র স্থানে ‘দেব কাজ’ (তীর্থযাত্রা)-তে অবতীর্ণ হয়েছি। আজ দ্বারকাধামে আমি এক স্বর্গীয় বিভা অনুভব করছি। আজ সকালে আমার এমন এক অভিজ্ঞতা হয়েছে যা সারা জীবন আমার মনে থাকবে। সাগরের অতল গভীরে ডুব দিয়ে আমি প্রাচীন দ্বারকা দর্শন করি। পুরাতাত্ত্বিকরা সাগরে নিমজ্জিত দ্বারকা নিয়ে অনেক কিছু লিখেছেন। আমাদের ধর্মগ্রন্থে দ্বারকার বিস্তৃত ব্যাখ্যা রয়েছে।

भविष्यति पुरी रम्या सुद्वारा प्रार्ग्य-तोरणा।
चयाट्टालक केयूरा पृथिव्याम् ककुदोपमा॥

অন্যভাবে বলতে গেলে এই শহরের অপূর্ব সব দরজা এবং সুউচ্চ বাড়িগুলি যেন স্বর্গের চূড়া। বলা হয়ে থাকে ভগবান বিশ্বকর্মা এই দ্বারকা শহর নিজের হাতে নির্মাণ করেছিলেন। দ্বারকা নগর তার সংগঠন এবং উন্নয়নের এক অপরূপ দৃষ্টান্তস্বরূপ। সাগরের গভীরে আমি যেন দ্বারকাজিকে প্রত্যক্ষ করছিলাম। প্রাচীন বৈভব এবং স্বর্গীয় বিভার অপরূপ নমুনা আমি আমার অন্তরের অন্তঃস্থলে অনুভব করছিলাম। দ্বারকাধীশ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রতি আমি আমার শ্রদ্ধা নিবেদন করেছি। আমি আমার সঙ্গে একটি ময়ূরপুচ্ছ নিয়ে গিয়েছিলাম। ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে স্বরণ করার সঙ্গে আমি সেই ময়ূরপুচ্ছ তাঁকে নিবেদন করেছি। পুরাতাত্ত্বিকদের কাছে শোনার পর থেকেই বহু বছর ধরে আমার মধ্যে এটি দর্শন করার এক ঔৎসুক্য জাগ্রত হয়েছিল। সমুদ্রের  গভীরে গিয়ে দ্বারকা নগরের ধ্বসংসাবশেষ স্বচক্ষে দেখার এক বাসনা ছিল আমার। আজ বহু বছর পর আমার সেই বাসনা চরিতার্থ হল। আমি এককথায় অভিভূত এবং আবেগাপ্লুত। আপনারা একবার ভাবার চেষ্টা করুন কী অপরিসীম আনন্দ আমার মধ্যে হচ্ছে যে কয়েক দশক ধরে আমার লালিত বাসনা আজ বাস্তবায়িত হল। আমি অবশেষে এই পবিত্র ভূমি স্পর্শ করতে পেরেছি। 

বন্ধুগণ,

একবিংশ শতাব্দীর ভারতের গরিমার দিশা আজ আমার চোখে। আমি যেন অনেক সময় ধরে নিজের মধ্যে আত্মসমাহিত ছিলাম। আজ এখানে বিলম্বে পৌঁছানোর কারন হল আমি বেশকিছু সময় জলের মধ্যে নিমগ্ন ছিলাম। দ্বারকার সামুদ্রিক বিভা প্রত্যক্ষ করে ‘বিকশিত ভারত’ (উন্নত ভারত)-এর সংকল্পে এখন আমি আরও স্থিতপ্রজ্ঞ। 

বন্ধুগণ,

আমি সৌভাগ্যবান যে আজ আমি সুদর্শন সেতুর উদ্বোধন করলাম। ৬ বছর আগে এই সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। এই সেতু ওখাকে ভেট দ্বারকাভূমির সঙ্গে যুক্ত করবে। এতে কেবলমাত্র দ্বারকাধীশ-এর কাছে যাওয়াই সহজ হবে না, এই এলাকার স্বর্গীয় সৌন্দর্যকেও তা আরও মহিমান্বিত করবে। এই স্বপ্নদর্শন আমার হয়েছিল। এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর আজ আমি তার বাস্তব রূপ প্রত্যক্ষ করছি। মানুষের সেবক, ঐশ্বরিক আশীর্বাদধন্য মোদীর গ্যারান্টি এটাই। সুদর্শন সেতু কেবল যাতায়াতকেই সুগম করবে তাই নয়, এটা কারিগরি নৈপুণ্যের এক জাদুও বটে। কাঠামো নির্মাণ কারিগরি বিদ্যার সঙ্গে যুক্তদের আমি এই সুদর্শন সেতুর নির্মাণ কৌশল প্রত্যক্ষ করতে অনুরোধ জানাচ্ছি। এটি হল ভারতে এ পর্যন্ত দীর্ঘতম কেবল স্টেইড সেতু। এই আধুনিক এবং অসাধারণ সেতুটির জন্য সমগ্র দেশবাসীকে আমি অভিনন্দন জানাচ্ছি। 

আজ এই অসাধারণ ক্রিয়াকর্মের মাঝে পুরনো স্মৃতি আমার মধ্যে ফিরে ফিরে আসছে। রাশিয়ায় আস্ত্রাখান নামে একটি রাজ্য রয়েছে এবং এই আস্ত্রাখানের সঙ্গে গুজরাটের ভগিনী রাজ্যের সম্পর্ক। আমি গুরজাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন আস্ত্রাখান রাজ্যে আমন্ত্রিত হয়েছিলাম। আমি সেখানে গিয়ে সেখানকার সবথেকে ভালো বাজার এবং সব থেকে বড় মলের নাম ওখা দেখে রীতিমত বিস্মিত হয়েছিলাম। সবকিছুই ওখা নামে নামকরণ করা হয়েছে। আমি জানতে চাইলাম কেন ওখা বলা হচ্ছে? তার কারন শত শত বছর আগে এখান থেকে লোকেরা ব্যবসা করতে রাশিয়ার আস্ত্রাখানে যেত এবং এখান থেকে যা কিছু ওখানে পাঠানো হত তা সবই সর্বোৎকৃষ্ট হিসেবে গণ্য হত। ফলে শত শত বছর পরেও লোকেরা এই বিশ্বাসে অবিচল যে ওখা নামে নামকরণ যখন করা হয়েছে তখন সেখানে নিশ্চয় সব থেকে ভালো জিনিস পাওয়া যাবে। শত শত বছর আগে ওখা যে শ্রদ্ধার জায়গায় ছিল, আজ এতো বছর পরেও এই সুদর্শন সেতু নির্মাণের মধ্যে দিয়ে বিশ্ব মানচিত্রে ওখার নাম স্বমহিমায় জায়গা করে নেবে।

বন্ধুগণ,

আজ যখন আমি এই সুদর্শন সেতুর দিকে তাকিয়ে পুরনো হাজারো স্মৃতি আমার মনে ভিড় করে আসছে। আগে দ্বারকা এবং ভেট দ্বারকার মানুষরা খেয়া নৌকায় যাতায়াত করতেন। দীর্ঘ পথ তাঁদের পেরতো হত প্রথমে সমুদ্রপথে তারপর স্থলপথে। এই যাত্রাপথে যাত্রীদের নানা অসুবিধার সম্মুখীন হতে হত। কখনও কখনও সমুদ্রে জোয়ারের ফলে দীর্ঘ সময় নৌকো চলাচল স্থগিত রাখতে হত। ভক্তবৃন্দরাও এ রকম নানা অসুবিধার মধ্যে পড়তেন। আমি মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন এখান থেকে কিছু কোম্পানী আমার সঙ্গে দেখা করে একটা সেতু গড়ে তোলার প্রয়োজনের কথা আমায় বলতেন এবং তাঁদের একটা পরিকল্পনা ছিল এই কাজটা আমার হাত ধরেই হোক। আজকে নিশ্চয় তাঁরা এতে খুশি।

বন্ধুগণ,

আগে কেন্দ্রে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকারের সময় আমি বহুবার তাঁদের কাছে এই সেতু নির্মাণের বিষয়টিকে তুলে ধরি। কিন্তু তাঁরা তাতে কর্ণপাত করেনি। হয়তো ভগবান শ্রীকৃষ্ণ আমার অগোচরে, আমার অদৃষ্টে এই বিধান লিখে দিয়েছিলেন যে আমার হাত ধরেই এই সেতু নির্মাণ হবে। আমি খুশি ঈশ্বরের সেই নির্দেশ আজ আমি সম্পূর্ণ করতে পারলাম। এই সেতু নির্মাণ দেশ জুড়ে অগণিত ভক্তের যাতায়াতের পথকে সুগম করে দেবে। এই সেতুর আরও একটা বৈশিষ্ট্য হল এর অসাধারণ আলোক সৌকর্য। এই সেতুতে আলোগুলি পুরোপুরি সৌর আলোকে আলোকিত। সুদর্শন সেতুতে ১২টি পর্যটন গ্যালারি গড়ে তোলা হয়েছে। আমি এই সমস্ত গ্যালারিগুলি আজ ঘুরে দেখেছি। এদের দারুনভাবে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। এই গ্যালারিগুলির মাঝে মানুষ নীল সাগরের অনন্ত জলরাশি প্রত্যক্ষ করতে পারবেন।

বন্ধুগণ,

আজকের এই পবিত্র অনুষ্ঠানে পবিত্র দ্বারকাভূমির মানুষদের কাজের আমি প্রশংসা করছি। তাঁরা যে স্বচ্ছতা উদ্যোগ হাতে নিয়েছেন এবং সামাজিক মাধ্যমে যেসব ছবি তাঁরা আমাকে পাঠান, তাতে বলতেই হয় দ্বারকায় স্বচ্ছতার যে কাজ চলেছে তা সত্যিই স্মরণীয়। আপনাদের এখন করণীয় কী? এই স্বচ্ছতা পর্বকে বজায় রাখবেন বলে আপনারা কি আমাকে নিশ্চয়তা দিতে পারেন? আপনারা হাত তুলে আমাকে জানান যে দ্বারকাকে আমরা কখনও নোংরা হতে দেব না। বিদেশ থেকে বহু মানুষ এখানে আসবেন। অনেক ভক্তবৃন্দ এখানে আসবেন। তাঁরা যখন এই স্বচ্ছতাকে প্রত্যক্ষ করলে মনে করতে হবে যে তাঁদের অর্ধেক হৃদয় আপনারাই জয় করে নিয়েছেন।

বন্ধুগণ,

নতুন ভারতের অগ্রগতির বিষয়ে আমি যখন দেশবাসীকে নিশ্চয়তা দিই, বিরোধী সদস্যরা তা নিয়ে ঠাট্টা-ইয়ার্কি এবং আমাকে অভিসম্পাত করেন। আজ মানুষ নিজের চোখে প্রত্যক্ষ করছে নতুন ভারতের কীর্তিকে। অতীতে যারা দেশ শাসন করে গেছেন, মানুষের কল্যাণে তাদের কাজ ছিল সম্পূর্ণ ত্রুটিপূর্ণ। কংগ্রেস দলের সমস্ত শক্তি একটি পরিবারের কল্যাণ কর্মে নিহিত ছিল। একটি পরিবারই যদি সবকিছু করবে তাহলে আর দেশ গঠনের বিষয় তাদের মাথায় আসবে কী করে। ৫ বছর ধরে সরকার চালানোয় তাদের সমস্ত শক্তি নিহিত হত কুকীর্তি কী করে ধামাচাপা দেওয়া যেতে পারে তার পরিকল্পনা করতেই। ফলে ২০১৪র আগের ১০ বছর ভারত কেবলমাত্র একাদশ বৃহত্তম অর্থনীতি হতে পেরেছিল। তখন অর্থনীতির ক্ষেত্র ছিল ক্ষুদ্র। সারা দেশের বৃহৎ স্বপ্ন পূরণের অঙ্গীকার তাতে নিহিত ছিল না। পরিকাঠামো ক্ষেত্রে যেটুকু বাজেট বরাদ্দ হত তাতে কেবলমাত্র দুর্নীতি প্রশ্রয় পেত। দেশের টেলিকম পরিকাঠামোর প্রসার ঘটাতে হিয়ে কংগ্রেস ২জি কেলেঙ্কারি ঘটিয়ে বসে। ক্রীড়া পরিকাঠামোর প্রশ্ন যখন দেশে দেখা দেয় তখন কংগ্রেস দল কমনওয়েল্থ কেলেঙ্কারি ঘটায়। যখন প্রতিরক্ষা পরিকাঠামোকে শক্তিশালী করার যখন প্রশ্ন ওঠে তখন কংগ্রেস দল হেলিকপ্টার এবং সাবমেরিন কেলেঙ্কারি ঘটিয়ে বসে। দেশের প্রতিটি প্রয়োজনের মুহুর্তে কংগ্রেস দল বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। 

বন্ধুগণ,

আপনারা আপনাদের আশীর্বাদ বলে ২০১৪ সালে আমাকে  দিল্লিতে পাঠানোর পর আমি সংকল্প নিয়েছিলাম যে দেশকে আমি আর লুঠ হতে দেব না। কংগ্রেস আমলে কোটি কোটি টাকার লুঠ এখন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। বিগত ১০ বছরে ভারত এখন বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে পরিগণিত। সারা দেশ জুড়ে আপনারা এখন আসাধারণ সমস্ত নির্মাণ প্রত্যক্ষ করছেন। একদিকে যেমন পবিত্র তীর্থযাত্রার পথগুলি নতুন আধুনিক পরিকাঠামোর মাধ্যমে সুগম হয়ে উঠছে ঠিক তেমনি বৃহৎ সব প্রকল্পের মাধ্যমে নতুন ভারতের ভাবমূর্তি ফুটে উঠছে। এরই নমুনা স্বরূপ আজ আপনারা গুজরাটে বৃহত্তম কেবল স্টেড সেতু প্রত্যক্ষ করছেন। মাত্র কয়েকদিন আগেই মুম্বাইয়ে বৃহত্তম সাগর সেতু আপনারা তৈরি হতে দেখেছেন। জম্মু-কাশ্মীরের চেনাব নদীর ওপর ওপর অসাধারণ সেতুটি আজ সারা পৃথিবী জুড়ে আলোচনার বিষয়। দেশের প্রথম ভার্টিক্যাল লিফ্ট ব্রিজ তামিলনাড়ুর নতুন পামবান ব্রিজের কাজ এগিয়ে চলেছে। ভারতের বৃহত্তম নদী সেতু আসামে গত ১০ বছরে গড়ে উঠেছে ঠিক তেমনি পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর, দক্ষিণ সর্বত্রই বৃহৎ সব নির্মাণ কর্মের কাজ চলেছে। এই আধুনিক সংযোগ ব্যবস্থা শক্তিশালী, সক্ষম রাষ্ট্র গড়ে তোলার পথ।

বন্ধুগণ,

সংযোগ ব্যবস্থা উন্নতিলাভ করলে দেশে পর্যটন ক্ষেত্রে তার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ে। গুজরাটের ক্রমবর্ধমান সংযোগ রাজ্যকে বৃহৎ পর্যটন হাব হিসেবে গড়ে তুলেছে। আজ গুজরাটে ২২টি অভয়ারণ্য, ৪টি জাতীয় উদ্যান রয়েছে। হাজার বছরের পুরনো বন্দর শহর লোথাল আজ বিশ্বজুড়ে আলোচনার বিষয়। আজ আমেদাবাদ শহর, রানী কী ভবন, চম্পানের এবং ঢোলাভিরা বিশ্ব পর্যটন ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। দ্বারকার শিবজপুর ব্রীজ আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। আমেদাবাদ এখন বিশ্ব ঐতিহ্য নগরী। মাউন্ট গিরনার-এ রয়েছে এশিয়ার বৃহত্তম রোপওয়ে। গির অভয়ারণ্যে এশীয় সিংহের বাস। গুজরাটের একতা নগরে রয়েছে বিশ্বের সব থেকে উঁচু সর্দার প্যাটেলর স্ট্যাচু অফ ইউনিটি। রান উৎসবে যে মেলা বসে তাতে বিশ্বের নানা প্রান্তের পর্যটকরা এসে ভিড় করেন। কচ্ছ-এর দেওরা গ্রাম বিশ্বের শ্রেষ্ঠ পর্যটন গ্রাম হিসেবে পরিগণিত। গুজরাট উন্নয়ন এবং ঐতিহ্যের মেলবন্ধনে গড়ে উঠছে। দ্বারকা, সোমনাথ, মোধেরা, আম্বাজি প্রভৃতি জায়গাকে গুরুত্বপূর্ণ তীর্থক্ষেত্র হিসেবে নানা সুযোগ-সুবিধা মণ্ডিত করে তোলা হচ্ছে। 

আজ ভারতে আসা পর্যটকদের কাছে অন্যতম গন্তব্য হল গুজরাট। ২০২২ সালে ৮৫ লক্ষেরও বেশি পর্যটক ভারতে এসেছেন। দেখা গেছে প্রতি ৫ জন পর্যটকের একজন গুজরাটে এসেছেন। গত বছর অগাস্ট মাসের মধ্যে প্রায় ১৫ লক্ষ পর্যটক গুজরাট সফর করেছেন। কেন্দ্রীয় পর্যটক দ্বারা বিদেশী পর্যটকদের ই-ভিসা দেওয়ায় গুজরাট নানাভাবে উপকৃত। পর্যটকদের এই সংখ্যা বৃদ্ধি গুজরাটে কর্মসংস্থান এবং স্বনির্ভরতার প্রসার ঘটাচ্ছে।

বন্ধুগণ,

আমি যখনই সৌরাষ্ট্রে আসি তখনই আমি এক নতুন সংকল্প নিয়ে ফিরি। সৌরাষ্ট্র হল সংকল্প এবং সাফল্যের এক বিরাট অনুপ্রেরণা। আজ সৌরাষ্ট্রের উন্নয়ন দেখে কেউ কল্পনাও করতে পারবেন না অতীতে এখানে জীবন-যাপন কতটা কষ্টকর ছিল। আমি স্বচক্ষে দেখেছি সৌরাষ্ট্রের প্রতিটি পরিবার একবিন্দু জলের জন্য কীভাবে তাকিয়ে থাকতো। আমি যখন বলতাম প্রবাহিত নদীর জল সৌরাষ্ট্র এবং কচ্ছে সারা বছর ধরেই নিয়ে আসা যায়। কংগ্রেসের লোকজন তা নিয়ে ঠাট্টা-তামাশা করতেন। তবে আজ দেখছেন সৌনি এমন এক প্রকল্প যা সৌরাষ্ট্রের আমূল পরিবর্তন ঘটিয়ে দিয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় ১৩০০ কিলোমিটার জলের পাইপ লাইন পাতা হয়েছে। এবং এই পাইপ লাইনগুলি বৃত্তও বিরাট আকারের। একটা মারুতি গাড়ি অনায়াসে এই পাইপের মধ্যে দিয়ে চলে যেতে পারে। ফলে সেচের জল এবং সৌরাষ্ট্রের কয়েকশো গ্রামে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া গেছে। আজ সৌরাষ্ট্রের কৃষক, পশুপালক, মৎস্য চাষী সকলেই বিত্তবান হয়ে উঠেছেন। আমার বিশ্বাস গুজরাট এবং সৌরাষ্ট্র আগামী কয়েক বছরে সাফল্যের নতুন শিখর স্পর্শ করবে। দ্বারকাধীশ-এর আশীর্বাদ আমাদের সঙ্গে রয়েছে। আমরা যৌথভাবে সৌরাষ্ট্র এবং গুজরাটকে গড়ে তুলবো। এবং মনে রাখতে হবে গুজরাটের উন্নয়ন মানেই ভারতের উন্নয়ন।

আর একবার আমি আমার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে এই অসাধারণ সেতুটির জন্য আপনাদের সকলকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। দ্বারকাবাসীর কাছে আমি অনুরোধ করবো বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে পর্যটক আকর্ষণের এমন অনুকূল বাতাবরণ আপনারা গড়ে তুলুন যাতে তারা এখানে এসে থেকে যেতে চাইবেন। আপনারা এবার আমার সঙ্গে বলুন: 

দ্বারকাধীশ-এর জয় ! 

দ্বারকাধীশ-এর জয় ! 

দ্বারকাধীশ-এর জয় ! 

দ্বারকাধীশ-এর জয় ! 

দ্বারকাধীশ-এর জয় ! 

দ্বারকাধীশ-এর জয় ! 

আপনাদের অনেক অনেক ধন্যবাদ।

প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি হিন্দিতে। 

    


PG/AB/NS…



(Release ID: 2009266) Visitor Counter : 73