প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
গোয়ায় ৩৭তম জাতীয় গেমস-এর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী
“জাতীয় গেমস ভারতের অসাধারণ ক্রীড়া শক্তির এক উদযাপন”
“ভারতের কোনায় কোনায় ছড়িয়ে রয়েছে প্রতিভা। ২০১৪র পরবর্তী সময়কালে ক্রীড়া সংস্কৃতির প্রসারে আমরা জাতীয় সংকল্প নিয়েছি”
Posted On:
26 OCT 2023 8:52PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ২৬ অক্টোবর, ২০২৩
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী গোয়ার মারগাঁও-এ পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে আজ ৩৭তম জাতীয় গেমস-এর উদ্বোধন করেছেন। এই জাতীয় গেমস ২৬ অক্টোবর থেকে ৯ই নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ১০ হাজারের বেশি ক্রীড়াবিদ ২৮টি স্থানে ৪৩টির বেশি ক্রীড়া ইভেন্টে অংশ নেবেন।
সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতীয় ক্রীড়ার মহাকুম্ভ যাত্রা গোয়ায় পৌঁছেছে। আনন্দের হিল্লোলে উৎসাহের আতিশয্যে এবং অভিনবত্বে গোয়ার পরিবেশ রঙীন হয়ে উঠেছে। শ্রী মোদী জোর দিয়ে বলেন, গোয়ার এই পরিমণ্ডল এককথায় অতুলনীয়। তিনি গোয়াবাসীকে অভিনন্দন এবং ৩৭তম জাতীয় গেমস উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানান। প্রধানমন্ত্রী দেশের জাতীয় ক্রীড়া ক্ষেত্রে গোয়ার অবদানের ওপর আলোকপাত করে গোয়ার ফুটবল প্রেমের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, জাতীয় গেমস ক্রীড়া মোদী গোয়াকে নতুন করে উজ্জীবিত করছে।
শ্রী মোদী উল্লেখ করেন, বিশ্ব ক্রীড়া ক্ষেত্রে ভারত যখন নতুন নতুন সাফল্যের শিখর স্পর্শ করছে ঠিক সেই সময় এই জাতীয় গেমস অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তিনি এশিয়ান গেমস-এর সাফল্যের উল্লেখ করতে গিয়ে ৭০ বছরের পুরনো রেকর্ড ভেঙে নতুন নজির তৈরির কথাও তুলে ধরে বলেন, এখন যে এশিয়ান প্যারা গেমস চলছে এখানে অতীতের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিয়ে ৭০-এর বেশি পদক জয় করেছে ভারতীয় ক্রীড়াবিদরা। তিনি সম্প্রতি সমাপ্ত ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি গেমস-এর উল্লেখ করেন যেখানে ভারত ইতিহাস রচনা করেছে। শ্রী মোদী বলেন, “বিশ্ব ক্রীড়া ক্ষেত্রে ভারতের সাম্প্রতিক সাফল্য প্রত্যেক তরুণ ক্রীড়াবিদের কাছে এক অপার অনুপ্রেরণার অঙ্গ হয়ে থাকবে।” প্রত্যেক তরুণ ক্রীড়াবিদের কাছে জাতীয় গেমস তাদের নৈপুণ্য প্রদর্শনের অনন্য ক্ষেত্র বলে তিনি জানান। প্রধানমন্ত্রী নানা সম্ভাবনার উল্লেখ করে ক্রীড়াবিদদের তাঁদের শ্রেষ্ঠ ক্রীড়া প্রতিভা প্রদর্শনের আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, ভারতে প্রতিভার কোনো অভাব নেই। নানা বঞ্চনা সত্ত্বেও দেশ চ্যাম্পিয়ানদের তৈরি করেছে। তাহলেও পদক তালিকা প্রাপ্তিতে পিছিয়ে থাকায় সব সময় দেশের মানুষের মন ভেঙে যেত। এই প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪র পরবর্তীকালে দেশের ক্রীড়া পরিকাঠামো, নির্বাচন পদ্ধতি, ক্রীড়া ব্যক্তিত্বদের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রকল্প, প্রশিক্ষণ প্রকল্প এবং সমাজের মানসিকতার বদল নিয়ে আসা হয়েছে। ফলে দেশে ক্রীড়া পরিমণ্ডলের ক্ষেত্রে একে একে সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে উপড়ে ফেলা হয়েছে। সরকার প্রতিভার অন্বেষণে নতুন নকশা প্রস্তুত করেছে যা অলিম্পিক আসরের উপযোগী হয়ে উঠতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী জানান যে এ বছর ক্রীড়া ক্ষেত্রে বাজেট বরাদ্দ ৯ বছর আগের বাজেট বরাদ্দের তিন গুণ। তিনি জানান নানা উদ্যোগের নতুন পরিমণ্ডল গড়ে তোলা হয়েছে যেমন, খেলো ইন্ডিয়া এবং টপস-এর উল্লেখ করেন তিনি, যাতে করে বিদ্যালয়, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় স্তর থেকে প্রতিভাবান ক্রীড়াবিদদের খুঁজে বের করা যায়। তিনি বলেন, টপস-এ প্রথম সারির ক্রীড়াবিদরা বিশ্বের সর্বোত্তম প্রশিক্ষণ পাচ্ছেন এবং খেলো ইন্ডিয়ার অধীন প্রশিক্ষণ পাচ্ছেন ৩ হাজার ক্রীড়াবিদ। ক্রীড়াবিদরা প্রত্যেক বছর প্রায় ৬ লক্ষ টাকার স্কলারশিপ পাচ্ছেন। খেলো ইন্ডিয়ার অধীন যে ১২৫ জন ক্রীড়াবিদকে নির্বাচন করা হয়েছিল, এশিয়ান গেমস এ যোগ দিয়ে তাঁরা ৩৬টি পদক এনে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “খেলো ইন্ডিয়ার মাধ্যমে ক্রীড়া প্রতিভার অন্বেষণ করা হোক এবং তাঁদেরকে অলিম্পিক আসরে যোগ দেওয়ার মতো প্রশিক্ষণ ও মানসিকতায় গড়ে তোলা হোক এবং টপস-এর মাধ্যমে বিশ্বের সর্বোত্তম প্রশিক্ষণ পেয়ে যাতে তাঁরা অলিম্পিকের উপযোগী হয়ে উঠতে পারে সেই রকম রোডম্যাপ আমরা তৈরি করেছি।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোন দেশের ক্রীড়া ক্ষেত্রে অগ্রগতি তার পরিমণ্ডের অগ্রগতির সঙ্গে যুক্ত। তিনি দেশে নেতিবাচক আবহের উল্লেখ করে বলেন, এর প্রভাব খেলার মাঠে এমনকি দৈনন্দিন জীবনেও পড়ে। তবে সাম্প্রতিককালে ক্রীড়া ক্ষেত্রে ভারতে যে সার্বিক সাফল্য প্রদর্শিত হয়েছে তাতে সামগ্রিক ক্ষেত্রে এক সাফল্যের চিত্র পরিলক্ষিত হয়। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, ভারত নতুন নতুন রেকর্ড গড়ে সমস্ত ক্ষেত্রেই এগিয়ে চলেছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ভারতের এই গতি এবং মাত্রার সঙ্গে এখন তাল মেলানো কঠিন। বিগত ৩০ দিনের ভারতের সাফল্যের ওপর আলোকপাত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ যদি ক্রমাগত এই গতি ও মাত্রায় এগিয়ে চলে তাহলে এই মোদী তরুণ প্রজন্মের জন্য উজ্জ্বল ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা দিচ্ছে। উদাহরণ স্বরূপ প্রধানমন্ত্রী নারীশক্তির বন্ধন অধিনিয়ম পাশ হওয়া, গগনায়নের সফল পরীক্ষা, ভারতের প্রথম রাপিড রেল ‘নমো ভারত’এর উদ্বোধন, বেঙ্গালুরু মেট্রোর প্রসার, কাশ্মীরের প্রথম ভিস্তা ডোম ট্রেন পরিষেবা, দিল্লি-ভদোদরা এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন, জি২০ শিখর সম্মেলনের সফল আয়োজন, বিশ্ব সামুদ্রিক শিখর সম্মেলন যেখানে ৬ লক্ষ কোটি টাকার চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে, অপারেশন অজয় যা ইজরায়েল থেকে ভারতীয়দের উদ্ধার করে নিয়ে এসেছে, ভারত এবং শ্রীলঙ্কার মধ্যে ফেরি সার্ভিসের সূচনা, ৫জি ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশ্বের প্রথম তিনটি দেশের মধ্যে ভারতের অন্তর্ভুক্তি, অ্যাপেল-এর পর স্মার্ট ফোন তৈরির গুগলের সাম্প্রতিক ঘোষণা, দেশে ফল এবং সব্জি উৎপাদনে নতুন রেকর্ড এই সমস্ত কিছুর উল্লেখ করে বলতে হয় সাফল্যের তালিকা তৈরিতে এটা অর্ধেক।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের যাবতীয় কর্মকাণ্ডে তরুণরাই মূল শক্তি হয়ে দেখা দিচ্ছে। তিনি মাই ভারত মঞ্চের উল্লেখ করে বলেন, এর মাধ্যমে দেশের তরুণ সম্প্রদায় নানা প্রকল্পের সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করে সর্বোত্তম সুবিধা বা নিজেদের যোগ্যতা সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল হতে পারেন । দেশ গঠনে পরিপূরক ভূমিকা নিতে তাদের সামনে যাবতীয় সুবিধার ক্ষেত্রকে এর মাধ্যমে তুলে ধরা হয়। এটা হল এমন এক মাধ্যম যা ভারতের যুবশক্তিকে বিকশিত ভারতের যুবশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। তিনি বলেন, আসন্ন একতা দিবসের অভিযানের সূচনা করবেন এবং একতা দৌড়ের মহা উদযাপনে সকলকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ যখন ভারতে প্রভূত সংকল্প এবং প্রয়াস নেওয়া হচ্ছে তখন এটা খুবই স্বাভাবিক, ভারতের আকাঙ্খাও আকাশচুম্বী হবে। এই কারণে আইওসি অধিবেশনে আমি ১৪০ কোটি ভারতবাসীর আকাঙ্খার বিষয়কে তুলে ধরেছি। আমি অলিম্পিকের সর্বোচ্চ কমিটিকে নিশ্চয়তা দিয়েছি যে ভারত ২০৩০-এ যুব অলিম্পিক আয়োজনের জন্য প্রস্তুত এবং ২০৩৬-এ অলিম্পিকের আয়োজনও করবে। অলিম্পিকের এই আয়োজন করার আকাঙ্খা কেবলমাত্র আমাদের আবেগ নির্ভরই নয়, বরং এর পিছনে রয়েছে নানা বলিষ্ঠ কারণ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০৩৬এ ভারতের অর্থনীতি এবং পরিকাঠামো এমন পর্যায়ে পৌঁছবে যে অনায়াসেই অলিম্পিক আয়োজন সম্ভব।
আমাদের জাতীয় গেমস এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারতের নমুনা স্বরূপ। প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, এটা এক বিরাট মাধ্যম যেখানে ভারতের প্রত্যেকটি রাজ্য তাদের দক্ষতাকে মেলে ধরতে পারে। গোয়ার সরকার এবং সেখানকার মানুষ জাতীয় গেমস আয়োজনের যে প্রস্তুতি করেছে তার ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে যে ক্রীড়া পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে তা আগামী কয়েক দশক ধরে গোয়ার তরুণ প্রজন্মের কাজে লাগবে এবং দেশের নতুন নতুন ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব এখান থেকে তৈরি হতে পারবে। এর পাশাপাশি এখানকার পরিকাঠামো ভবিষ্যতে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানে আয়োজনের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা যাবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিগত কয়েক বছরে সংযোগ ক্ষেত্রে আধুনিক পরিকাঠামো গোয়ায় গড়ে তোলা হয়েছে। তিনি জানান, জাতীয় গেমস গোয়ার পর্যটন এবং অর্থনীতিকে নানাভাবে সমৃদ্ধ করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গোয়া হল এক উদযাপনের ক্ষেত্র। এক্ষেত্রে তিনি গোয়া আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উল্লেখ করেন এবং আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও শিখর সম্মেলনের ক্ষেত্রে এই রাজ্য উত্তরোত্তর নিজের জায়গা করে নিচ্ছে বলে জানান। ২০১৬ সালের ব্রিকস সম্মেলন এবং অনেকগুলি জি২০ সম্মেলনের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আনন্দের সঙ্গে বলেন, সুস্থায়ী পর্যটনের জন্য গোয়ার রোড ম্যাপ জি২০তে গৃহীত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণের শেষে প্রত্যেক ক্রীড়াবিদকে যে কোন ক্ষেত্রে, যে কোন চ্যালেঞ্জের মুখে তাঁদের সর্বোত্তম নমুনা তুলে ধরার আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণ শেষ করেন এই বলে, “কোনো সুযোগ আমরা ছাড়বো না। এই আহ্বান জানিয়ে আমি ৩৭তম জাতীয় গেমস-এর উদ্বোধন ঘোষণা করছি। ক্রীড়াবিদদের প্রত্যেককে আমার সর্বোত্তম শুভেচ্ছা জানাই। গোয়া প্রস্তুত।”
গোয়ার রাজ্যপাল শ্রী পি এস শ্রীধরণ পিল্লাই, গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী শ্রী প্রমোদ সওয়ান্ত, কেন্দ্রীয় ক্রীড়া ও যুব বিষয়ক মন্ত্রী শ্রী অনুরাগ সিং ঠাকুর, ইন্ডিয়ান অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডঃ পি টি উষা অন্যদের মধ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
PG/AB/NS…
(Release ID: 1972701)
Visitor Counter : 164
Read this release in:
Malayalam
,
English
,
Urdu
,
Marathi
,
Hindi
,
Manipuri
,
Assamese
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Odia
,
Tamil
,
Telugu
,
Kannada