আবাসনএবংশহরাঞ্চলেরদারিদ্র্যদূরীকরণমন্ত্রক
ইন্দোরে আজ ইন্ডিয়া স্মার্ট সিটিজ অ্যাওয়ার্ড প্রতিযোগিতার (আইএসএসি) বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ করলেন রাষ্ট্রপতি
সর্বোত্তম অনুশীলনের বাস্তবায়ন এবং কার্যকর ব্যবসায়িক মডেলের বিকাশে স্মার্ট সিটি মিশনের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ : শ্রীমতী দ্রৌপদী মুর্মু
স্মার্ট সিটি মিশন ভারতের শহুরে চালচিত্রে উদ্ভাবনী ছোঁয়া এনেছে : শ্রী হরদীপ সিং পুরী
Posted On:
27 SEP 2023 2:18PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩
রাষ্ট্রপতি শ্রীমতী দ্রৌপদী মুর্মু আজ ইন্দোরে ইন্ডিয়া স্মার্ট সিটিজ অ্যাওয়ার্ড প্রতিযোগিতার চতুর্থ সংস্করণের বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিয়েছেন। ২০১৮ সাল থেকে ভারত সরকারের আবাসন ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রক স্মার্ট সিটিজ মিশনের আওতায় এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আসছে। অনুষ্ঠানে মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপাল শ্রী মঙ্গুভাই সি প্যাটেল, কেন্দ্রীয় আবাসন ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী শ্রী হরদীপ সিং পুরী, মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী শিবরাজ সিং চৌহান, আবাসন ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী শ্রী কৌশল কিশোর, মধ্যপ্রদেশের নগরোন্নয়ন মন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্র সিং প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
নগরোন্নয়নের ক্ষেত্রে দেশে সার্বিক বিনিয়োগের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, গত এক দশকে এই বিনিয়োগ দশগুণ বেড়েছে। সর্বোত্তম অনুশীলনের বাস্তবায়ন এবং কার্যকর ব্যবসায়িক মডেলের বিকাশে স্মার্ট সিটি মিশনের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি মন্তব্য করেন।
নগরোন্নয়নের ক্ষেত্রে জি-২০-র ভূমিকা প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি বলেন, জি-২০-র অধীনে ‘আর্বান-২০’ নামে একটি উপ-গোষ্ঠী গড়ে তোলা হয়েছে, যা শহরগুলির মধ্যে এক সুস্থিত সংযোগ প্রতিষ্ঠার প্রয়াস চালাচ্ছে। সুস্থিত উন্নয়নের অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রে নগর ব্যবস্থাপনারও যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে, এর মাধ্যমে সেই সম্মিলিত বার্তা দেওয়াও সম্ভব হয়েছে। বিশ্বের যে শহরগুলিতে সবথেকে সুপটু ব্যবস্থাপনা রয়েছে, আমরা সেগুলির সম্পর্কে জানতে পারছি এবং আমাদের যেসব প্রয়াস সাফল্য পেয়েছে, সেগুলি সম্পর্কে অন্যদের জানাতে পারছি। সার্বিক ও সুস্থিত উন্নয়নের জন্য স্থানীয় ও বিশ্বস্তরে সহযোগিতা একান্ত আবশ্যক।
স্মার্ট সিটিগুলিতে সংযুক্ত নির্দেশ ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের (আইসিসিসি) গুরুত্ব প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি বলেন, ১০০টি স্মার্ট সিটির প্রত্যেকটিতেই আইসিসিসি রয়েছে, যেখান থেকে বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শ্রীমতী দ্রৌপদী মুর্মু বলেন, বর্তমানে শহরগুলিতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আঁটোসাটো করতে সিসিটিভি বসানো হয়, কিন্তু বিশেষত মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে আরও মজবুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। স্মার্ট সিটিগুলিতে সেই লক্ষ্যে প্রয়াস নেওয়া হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। এই প্রয়াস সাফল্য পেলে তা আমাদের ৪,৮০০-রও বেশি শহরে প্রয়োগ করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
দেশের বিভিন্ন শহরের মেয়র ও পুর কমিশনারদের নতুন আত্মবিশ্বাস ও উৎসাহ নিয়ে এগিয়ে চলার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, এই সম্মেলনে বিভিন্ন সফল প্রয়াস নিয়ে যে তথ্য পাওয়া যাবে, সেগুলি তাঁরা যদি তাঁদের নিজেদের শহরেও কাজে লাগান তাহলে এই অনুষ্ঠান আরও বেশি করে অর্থবহ হয়ে উঠবে।
অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় আবাসন ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী শ্রী হরদীপ সিং পুরী সুপরিকল্পিত নগরায়নের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর রূপান্তরমুখী দৃষ্টিভঙ্গীর উল্লেখ করে বলেন, ‘নতুন শহুরে ভারত’ গড়ে তোলার যে লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রী নিয়েছেন, তার অঙ্গ হিসেবেই স্মার্ট সিটিজ মিশন গড়ে উঠেছে। ২০৪৭ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার যে লক্ষ্য ভারত নিয়েছে, এটি তার এক মুখ্য উপাদান বলে মন্তব্য করেন তিনি।
স্মার্ট সিটিজ মিশন ভারতের নগরায়নে উদ্ভাবনী ছোঁয়া দিয়েছে বলে মন্তব্য করে শ্রী পুরী বলেন, এই মিশন দেশের ১০০টি বৃহত্তম শহরে মূল পরিকাঠামো গড়ে তুলছে এবং যথাযথ পরিষেবার ব্যবস্থা করছে। এর মাধ্যমে সরকার, বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন সংস্থা, অংশীদার শহর, শিক্ষা মহল ও শিল্প মহলের গভীর অংশীদারিত্ব গড়ে উঠছে। শ্রী পুরী বলেন, স্পেশাল পারপাস ভেহিকেল (এসপিভি)-র মাধ্যমে বহু প্রতীক্ষিত কারিগরি ও পরিচালন সংক্রান্ত সহায়তা দিয়ে এই মিশন দেশে তৃতীয় স্তরের শাসনের ক্ষমতায়ন ঘটাচ্ছে। এর মাধ্যমে নাগরিক-কেন্দ্রিক ভবিষ্যৎমুখী সামাজিক, অর্থনৈতিক, প্রাতিষ্ঠানিক ও ভৌত পরিকাঠামো গড়ে উঠছে।
কেন্দ্রীয় আবাসন ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, এ পর্যন্ত স্মার্ট সিটিজ মিশনের আওতায় ৭,৯৩৪টি প্রকল্পে ১ লক্ষ ৭১ হাজার ৪৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ লক্ষ ১০ হাজার ৭৯৪ কোটি টাকার ৬,০৬৯টি প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। ২০২৪ সালের জুন মাসের মধ্যে আরও ১,৮৬৫টি প্রকল্পের কাজ শেষ হবে যার মূল্য ৬০,২৫০ কোটি টাকা। এছাড়া, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে ২৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প এ পর্যন্ত সম্পন্ন হয়েছে। মিশনের আওতায় ২,৭০০ কিলোমিটার স্মার্ট রাস্তা এবং ৭ হাজার স্মার্ট ক্লাসরুম তৈরি হয়েছে। লাগানো হয়েছে ৫০ লক্ষেরও বেশি এলইডি / সৌর আলো। গড়ে তোলা হয়েছে ৩০০-রও বেশি স্মার্ট স্বাস্থ্যকেন্দ্র। সুরক্ষার জন্য ১,৮৮৪টি এমার্জেন্সি কল বক্স, ৩ হাজারটি পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেম ও ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা স্থাপন করা হয়েছে।
নগর শাসনে উৎকর্ষের জন্য ইন্দোরের প্রশংসা করে শ্রী পুরী বলেন, ইন্দোর এই ধরনের প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হওয়া অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, কার্বন নির্গমন হ্রাস, ডিজিটাল প্রযুক্তি এবং উন্মুক্ত পরিসরের জন্যও ইন্দোরের প্রশংসা করেন তিনি।
যে ৩১টি শহর পুরস্কার পেয়েছে তাদের অভিনন্দন জানিয়ে শ্রী পুরী বলেন, ৮৪০টিরও বেশি আবেদনের মধ্য থেকে এই ৩১টি শহরকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
শহরগুলির মধ্যে দ্বিতীয় স্থান পেয়েছে সুরাট, তৃতীয় হয়েছে আগ্রা। রাজ্যগুলির মধ্যে প্রথম তিনটি স্থান দখল করেছে তামিলনাড়ু, রাজস্থান ও উত্তরপ্রদেশ। শ্রী পুরী এদের সবাইকে অভিনন্দন জানান।
গতকাল মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপাল শ্রী মঙ্গুভাই সি প্যাটেল চারটি নথি প্রকাশ করেন। এগুলি হল – আইএসএসি পুরস্কার, ২০২২ সঙ্কলন, স্মার্ট সিটিজ মিশন-এর নিউজ লেটারের সঙ্কলন, রাষ্ট্রসঙ্ঘ জীবিকা প্রতিবেদন : স্মার্ট সিটিজ মিশন – স্থানীয় স্তরে সুস্থিত উন্নয়ন লক্ষ্য এবং আইএসএসি পুরস্কার, ২০২৩-এর সঙ্কলন (ই-সংস্করণ)।
সম্মেলনে শহর উন্নয়নের প্রয়াসে উদ্ভাবনী কার্যক্রমের অগ্রভাগে থাকা ১০০টি স্মার্ট সিটি অংশগ্রহণ করে। এই অনুষ্ঠান শুধুমাত্র মিশনের আওতায় থাকা শহরগুলিকে তাদের দৃষ্টান্তমূলক কাজ উপস্থাপনের মঞ্চই প্রদান করেনি, একইসঙ্গে সর্বোত্তম অনুশীলনের আদান-প্রদান ও শিক্ষার এক মাধ্যম হয়ে উঠেছে।
এই সম্মেলনে স্মার্ট সিটিজ মিশনের আওতায় থাকা শহরগুলির পুরস্কার জয়ী প্রকল্পগুলি উপস্থাপন করা হয়। দু’হাজারেরও বেশি মানুষ এগুলি দেখেন। এখানে পাঁচটি রাজ্য / কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, ১৩টি শহর এবং ১৫টি প্রকল্পের মডেলের স্টল ছিল। এছাড়া একটি স্মার্ট রাস্তা তৈরি করা হয় যেখানে হাঁটার জায়গা, মেধাসম্পন্ন যান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং স্মার্ট চিহ্নাবলী স্থান পেয়েছিল। ইন্দোর, সুরাট, চণ্ডীগড়, আমেদাবাদ, বেলাগাভী ও রাঁচির মতো পুরস্কার বিজয়ী শহরগুলির সিইও-রা আলাপচারিতায় অংশ নেন।
PG/SD/DM
(Release ID: 1961520)
Visitor Counter : 85