প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

জি২০-তে ভারতের সভাপতিত্ব দেশের সাধারণ নাগরিকদের সম্ভাবনাকে তুলে ধরেছে : প্রধানমন্ত্রী

Posted On: 15 AUG 2023 1:40PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ১৫ আগস্ট, ২০২৩

 

জি২০-তে ভারতের সভাপতিত্ব দেশের সাধারণ নাগরিকদের সম্ভাবনাকে কিভাবে তুলে ধরেছে, ৭৭ তম স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লার প্রাকার থেকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে, প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী তা ব্যাখ্যা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের সামর্থ্য ও সম্ভাবনা নিশ্চিতভাবেই তাকে আত্মবিশ্বাসের এক নতুন চূড়ায় পৌঁছে দিতে চলেছে। এই চূড়া ভারতকে আবার নতুন সামর্থ্য যোগাবে। জি২০-তে ভারতের সভাপতিত্ব বিশ্বের সামনে দেশের সাধারণ নাগরিকদের সম্ভাবনাকে তুলে ধরেছে। জি২০ শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের সুযোগ পেয়েছে ভারত। গত ১ বছর ধরে যেভাবে দেশের প্রতিটি প্রান্তে জি২০ সংক্রান্ত নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে, তা সারা বিশ্বকে ভারতের সাধারণ মানুষের সম্ভাবনা সম্পর্কে সচেতন করেছে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত বিশ্বের কাছে নিজের বৈচিত্র্য উপস্থাপন করেছে। সারা বিশ্ব বিস্ময়ের সঙ্গে এই বৈচিত্র্য প্রত্যক্ষ করেছে এবং এজন্যই ভারতের প্রতি বিশ্বের আকর্ষণ বেড়েছে। ভারত সম্পর্কে জানার ও বোঝার ইচ্ছে জেগে উঠেছে। 

জি২০ শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষে তাঁর বালি সফরের স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেখানে বিশ্ব নেতারা ভারতের ডিজিটাল ইন্ডিয়া কর্মসূচির সাফল্য সম্পর্কে জানতে উদগ্রীব ছিলেন। তাঁর নিজের কথায়, ‘প্রত্যেকে ডিজিটাল ইন্ডিয়া নিয়ে জানতে চাইছিলেন। আমি তাঁদেরকে বলেছিলাম, ভারতের এই বিস্ময়কর সাফল্য কিন্তু শুধুমাত্র দিল্লি, মুম্বাই বা চেন্নাইয়ের মতো বড় শহরগুলিতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। আমাদের যুব সম্প্রদায় দ্বিতীয় পর্যায় ও তৃতীয় পর্যায়ের শহরগুলিতেও এই সাফল্য ছড়িয়ে দিয়েছে।’ 

“ভারতের যুব সম্প্রদায় দেশের ভাগ্য তৈরি করছে”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের যুব সম্প্রদায় আজ দেশের ভাগ্য তৈরি করছে। তিনি বলেন, ‘আমি খুব জোরের সঙ্গে বলতে পারি, দেশের এই নতুন সম্ভাবনা স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছে। আমাদের ছোট শহর ও মফস্বল অঞ্চলগুলি আয়তন এবং জনসংখ্যার দিক থেকে ছোট হতে পারে, কিন্তু তাঁদের আশা-আকাঙ্ক্ষা, প্রচেষ্টা ও প্রভাব কারোর থেকে কম নয়। তাঁদের মধ্যে অমিত সম্ভাবনা রয়েছে।’ এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী যুব সমাজের তৈরি করা নতুন অ্যাপ ও নতুন প্রযুক্তিগত সমাধানের উল্লেখ করেন। 

ক্রীড়া জগত প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বস্তির থেকে উঠে আসা ছেলে-মেয়েরা আজ খেলার দুনিয়া দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। ছোট গ্রাম ও ছোট শহর থেকে উঠে আসা আমাদের ছেলে-মেয়েরা সবাইকে অবাক করে দিচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে এমন অন্তত ১০০টি স্কুল রয়েছে, যেখানকার পড়ুয়ারা উপগ্রহ তৈরি করে তা মহাকাশে ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তিনি বলেন, ‘হাজার হাজার টিংকারিং ল্যাব থেকে নতুন বিজ্ঞানীরা উঠে আসছেন। এই ল্যাবগুলি লক্ষ লক্ষ ছেলে-মেয়েকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির শিক্ষা গ্রহণে উদ্ভুদ্ধ করছে।’

যুব সমাজকে আশ্বস্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে সুযোগের কোনো অভাব নেই। তিনি বলেন, ‘তোমরা যত সুযোগ চাও তা এখানে পাবে। এই দেশ তোমাদের আকাশের থেকেও অসীম সুযোগ দেবে।’

মহিলা নেতৃত্বাধীন উন্নয়নের গুরুত্ব এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তার অপরিহার্যতার উপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জি২০ বৈঠকে তিনি এই প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন। জি২০ দেশসমূহ এর গুরুত্ব স্বীকার করে এটি গ্রহণ করেছে।

“ভারতীয় দর্শনে প্রভাবিত হচ্ছে সারা বিশ্ব, আমরা জলবায়ু সঙ্কট নিরসনের পথ দেখিয়েছি”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত আজ তার দর্শন সারা বিশ্বের সামনে রেখেছে এবং সমগ্র বিশ্ব তাতে প্রভাবিত হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি, এক সূর্য, এক বিশ্ব, এক গ্রিড। পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির ক্ষেত্রে আমাদের এই দৃষ্টিভঙ্গী আজ সারা বিশ্ব মেনে নিচ্ছে। কোভিড অতিমারির পর আমরা বিশ্বকে বলেছি, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গী হওয়া উচিত – এক পৃথিবী, এক স্বাস্থ্য।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত বহু আগেই বলেছিল, সঙ্কটের সময়ে যদি মানুষ, প্রাণীজগৎ এবং গাছপালার সঙ্গে একইরকম ব্যবহার করা হয়, তবেই সমস্যার সমাধান হবে। তিনি বলেন, ‘জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে আমরা বলেছি, এক বিশ্ব, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ। এই ভাবনাকে সামনে রেখে আমরা এগিয়ে চলেছি। বিশ্ব আজ যে জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যায় ভুগছে, আমরা তার সমাধানের পথ দেখিয়েছি। পরিবেশের জন্য মিশন লাইফস্টাইল চালু করেছি আমরা।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত আন্তর্জাতিক সৌর জোট গঠনের উদ্যোগ নিয়েছিল। আজ বিশ্বের বহু দেশ এই জোটের শরিক হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘জীব বৈচিত্র্যের গুরুত্ব উপলব্ধি করে আমরা বিগ ক্যাট অ্যালায়েন্সের ব্যবস্থা করেছি। বিশ্ব উষ্ণায়ন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য পরিকাঠামোর যে ক্ষতি হয়েছে, তার মোকাবিলায় সুদুরপ্রসারী ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। সেকথা মাথায় রেখে আমাদের দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্ষম পরিকাঠামো জোটের (কোয়ালিশন ফর ডিজাস্টার রেজিলিয়েন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার - সিডিআরআই) ধারণা বিশ্বকে এক নতুন সমাধান সূত্র দিয়েছে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের বিশ্বে সমুদ্র, সংঘাতের এক নতুন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। সেজন্যই আমরা সমুদ্রবিষয়ক একটি মঞ্চ গড়ে তুলেছি, যা বিশ্বজুড়ে সামুদ্রিক শান্তি সুনিশ্চিত করতে পারে। 

প্রধানমন্ত্রী জানান, ভারত নিজেদের প্রথাগত চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর জোর দিয়ে দেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) বিশ্বমানের একটি কেন্দ্র গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি বলেন, যোগ এবং আয়ুষের মাধ্যমে আমরা বিশ্ব কল্যাণ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্যের লক্ষ্যে কাজ করছি। ভারত মঙ্গল অভিযানের এক মজবুত ভিত্তি স্থাপন করেছে। একে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সবার যৌথ দায়িত্ব।

AC/SD/SKD



(Release ID: 1949347) Visitor Counter : 128