স্বাস্থ্যওপরিবারকল্যাণমন্ত্রক

উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে এক বিশেষ স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচির সূচনা হল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের উদ্যোগে


এই কর্মসূচি রূপায়ণের কাজ শেষ হবে আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে

Posted On: 17 MAY 2023 2:32PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১৭ মে, ২০২৩


আজ বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ সচেতনতা দিবস। এই উপলক্ষে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক স্বাস্থ্য সুরক্ষা সম্পর্কিত এক বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে দেশের ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে এ ধরনের ৭৫ কোটি নাগরিকের জন্য। আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে এই কর্মসূচি রূপায়ণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র যৌথ উদ্যোগে জি-২০-র আওতায় ‘উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে বিশেষ উদ্যোগ’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে একথা ঘোষণা করেন নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) ডঃ ভি কে পল। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব শ্রী রাজেশ ভূষণ, স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বিশেষ সচিব শ্রী এস গোপালকৃষ্ণন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডিরেক্টর জেনারেল ডঃ টেড্রোজ আধানম গেব্রেইসাস এবং হু সিআরও-র ডিরেক্টর ডঃ পুনম ক্ষেত্রপাল সিং। তাঁরা সকলেই ভার্চ্যুয়াল মঞ্চে উপস্থিত থেকে তাঁদের নিজের নিজের বক্তব্য পেশ করেন।

এই উদ্ভাবনী কর্মসূচি প্রসঙ্গে ডঃ পল জানান, প্রাথমিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা পর্যায়ে এই কর্মসূচিটি সমষ্টিগতভাবে রূপায়িত হবে। এজন্য কেন্দ্রীয় সরকার প্রয়োজনীয় সহায়সম্পদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কাজে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করে যেতে আগ্রহী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে স্বাধীনতার অমৃতকাল অর্থাৎ, আগামী ২৫ বছরের মধ্যে ভারত একটি উন্নত রাষ্ট্রে রূপান্তরিত হওয়ার বিষয়ে স্থিরপ্রতিজ্ঞ। এই লক্ষ্যে নাগরিকদের আয়ুষ্মান বৃদ্ধি, প্রসবকালীন মা ও শিশুর মৃত্যুহার হ্রাস ইত্যাদির ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হবে। ২০২৩-২৪-এর কেন্দ্রীয় বাজেটের খসড়ায় এই প্রথম ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এক সুসংবদ্ধ কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে বলে ডঃ পল উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, প্রাথমিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা পর্যায় থেকে শুরু করে সর্বতোভাবে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের মোকাবিলা করা হবে। এজন্য দেড় লক্ষেরও বেশি স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু করা হবে। ব্যবস্থা থাকবে টেলি-মেডিসিন ও ডিজিটাল স্বাস্থ্য পরিষেবারও।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সম্পর্কে ডঃ পল জানান যে একেবারে নিচের তলা থেকেই উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের পরীক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। শারীরিক পরীক্ষার মাধ্যমে রোগীদের শুধুমাত্র চিহ্নিত করাই নয়, জোর দেওয়া হবে উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধের ওপরও। এজন্য চিহ্নিত রোগীদের অন্তত ৮০ শতাংশকে যাতে দ্রুত চিকিৎসার আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হয় তা নিশ্চিত করতে সকল পক্ষকেই কাজে লাগানো প্রয়োজন। বেসরকারি ক্ষেত্রগুলিকেও এই কাজে সামিল করা একান্তভাবে জরুরি বলে তিনি মনে করেন। এছাড়াও, বিভিন্ন শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানকেও এই উচ্চাকাঙ্ক্ষামূলক স্বাস্থ্য কর্মসূচি রূপায়ণে এগিয়ে আসতে হবে।

উচ্চ রক্তচাপের মতো একটি জটিল রোগের নিয়ন্ত্রণে জীবনশৈলী পরিবর্তনের ওপর বিশেষ জোর দেন ডঃ ভি কে পল। তিনি বলেন, এজন্য স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য গ্রহণের পাশাপাশি ব্যায়াম এবং অন্যান্য নিয়মকানুনও রোগীদের মেনে চলা উচিত। এই কর্মসূচিকে সমষ্টিগতভাবে জন-আন্দোলন রূপে গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি। ‘এক অভিন্ন বিশ্ব তথা এক অভিন্ন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা’ গড়ে তুলতে প্রতিটি দেশকেই এই কাজে এগিয়ে আসতে হবে বলে ডঃ পল মন্তব্য করেন।

ভারতের এই উদ্যোগের বিশেষ প্রশংসা করে ডঃ গেব্রেইসাস বলেন যে ৭৫ কোটি উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের সুস্থ রাখতে ভারত সরকারের এই উচ্চাকাঙ্ক্ষামূলক লক্ষ্যমাত্রা আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্বের প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় এক বিশেষ মাত্রা যোগ করবে বলে তিনি মনে করেন।

ডঃ পুনম ক্ষেত্রপাল সিং এই ধরনের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য ভারত সরকারকে অভিনন্দন জানান। তিনি স্বাগত জানান নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা পূরণে দেড় লক্ষেরও বেশি ‘আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য সুরক্ষা কেন্দ্র’ গড়ে তোলার সিদ্ধান্তকেও। এই কাজে গতি সঞ্চারের জন্য তিনি আর্জি জানান দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলির কাছেও।

অন্যদিকে দেশের অর্থনীতি, সমাজ এবং মহামারী প্রতিরোধ ব্যবস্থার মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগের একটি তথ্যসূত্র তুলে ধরেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব শ্রী রাজেশ ভূষণ। তিনি বলেন, গত দু’দশকে ভারতে অর্থনৈতিক বিকাশ ঘটেছে ৭ শতাংশের মতো। সেইসঙ্গে বৃদ্ধি পেয়েছে দেশবাসীর গড় আয়ুষ্কাল। কিন্তু জনসংখ্যার এক বিরাট অংশ এখন আরও বেশি করে অলস হয়ে উঠেছে। এই সমস্যার সমাধানে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন তথা সচেতনতা প্রসারের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব শ্রী বিশাল চৌহান, ভারতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ডঃ রডরিকো এইচ অফ্রিন ছাড়াও জি-২০ভুক্ত দেশগুলির অন্যান্য প্রতিনিধি এবং হু সিআরও রাষ্ট্রগুলির অংশগ্রহণকারীরাও উপস্থিত ছিলেন এই বিশেষ অনুষ্ঠানে।

 


PG/SKD/DM/



(Release ID: 1924847) Visitor Counter : 255