প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘মন কি বাত’, ১০০ তম পর্ব অনুষ্ঠানের বাংলা অনুবাদ

Posted On: 30 APR 2023 11:47AM by PIB Kolkata

 

আমার প্রিয় দেশবাসী, নমস্কার। আজ “মান কি বাত”-এর শততম পর্ব। আপনাদের হাজার হাজার চিঠি পেয়েছি আমি, লক্ষ-লক্ষ বার্তা এসে পৌঁছেছে আর আমি চেষ্টা করেছি যাতে বেশি-বেশি চিঠি পড়ে উঠতে পারি, দেখতে পারি, বার্তার মর্মার্থ উদ্ধার করতে পারি। আপনাদের চিঠি পড়তে গিয়ে অনেক বার আমি আপ্লুত হয়েছি, আবেগে পূর্ণ হয়েছি, ভেসে গিয়েছি আবেগে এবং আবার নিজেকে সামলে নিয়েছি। আপনারা আমাকে ‘মন কি বাত’-এর শততম পর্ব উপলক্ষে অভিনন্দন জানিয়েছেন; কিন্তু আমি হৃদয়ের অন্তর থেকে বলছি, প্রকৃতপক্ষে অভিনন্দনের পাত্র তো আপনারা, মন কি বাতের শ্রোতারা, আমাদের দেশবাসী। ‘মন কি বাত’ কোটি কোটি ভারতীয়র মনের কথা, তাঁদের ভাবনার প্রকাশ।
 
বন্ধুরা, ২০১৪ সালের তেসরা অক্টোবর, বিজয়া দশমীর সেই উৎসব ছিল আর আমরা সবাই মিলে বিজয়া দশমীর দিনে ‘মন কি বাত’-এর যাত্রা শুরু করেছিলাম। বিজয়া দশমী অর্থাৎ অশুভের বিরুদ্ধে শুভর বিজয়ের উৎসব। ‘মন কি বাত’ও দেশবাসীর যা কিছু ভালো, যা সদর্থক তার এক অনন্য উৎসব হয়ে উঠেছে। এমন এক উৎসব যা প্রত্যেক মাসে আসে, যার প্রতীক্ষা আমাদের সবার থাকে। আমরা এখানে সদর্থক ভাবনার উদ্যাপন করি। আমরা এখানে জনগণের অংশগ্রহণের উদ্যাপনও করি। অনেক সময় বিশ্বাসই হয় না যে ‘মন কি বাত’ এত মাস আর এত বছর পেরিয়ে এল। নিজগুণে প্রত্যেকটি পর্বই বিশেষ। প্রত্যেক বার নতুন উদাহরণের নবীনত্ব, প্রত্যেক বার দেশবাসীর নতুন-নতুন সাফল্যের বর্ণনা। ‘মন কি বাত’-এ দেশের বিভিন্ন কোণ থেকে মানুষ যুক্ত হয়েছেন, সব বয়সের মানুষ যুক্ত হয়েছেন। বেটি বচাও-বেটি পড়াওয়ের আলোচনা হোক, স্বচ্ছ ভারত আন্দোলন হোক, খাদির প্রতি ভালোবাসা হোক অথবা প্রকৃতি নিয়ে আলোচনা, আজাদী-কে-অমৃত মহোৎসব হোক অথবা অমৃত সরোবরের কথা হোক, ‘মন কি বাত’ যে বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, সেটা, জন-আন্দোলনে রূপান্তরিত হয়েছে আর আপনারা সেটা তৈরি করেছেন। যখন আমি, তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামার সঙ্গে ‘মন কি বাত’ করেছিলাম, তখন এর আলোচনা হয়েছিল গোটা বিশ্ব জুড়ে।
 
বন্ধুরা, আমার জন্য ‘মন কি বাত’ তো অন্যের গুণের পূজো করার মতই। আমার এক পথপ্রদর্শক ছিলেন – শ্রী লক্ষণরাও জী ইনামদার। আমি তাঁকে উকিল সাহেব বলে ডাকতাম। উনি সবসময় বলতেন যে অন্যের গুণাবলীর পূজো করা উচিত। সামনে যেই থাকুন, আপনার পক্ষের হোন, আপনার বিরোধী হোন, তাঁর ভালো গুণাবলীর কথা জানার, তাঁর থেকে শেখার প্রচেষ্টা করা উচিত আমাদের। তাঁর এই কথা সবসময় আমাকে প্রেরণা দিয়েছে। অন্যের গুণ থেকে শেখার খুব বড় মাধ্যম হয়ে উঠেছে মন কি বাত।

আমার প্রিয় দেশবাসী, এই অনুষ্ঠান আমাকে কখনোই আপনাদের থেকে দূরে যেতে দেয়নি। আমার মনে আছে, যখন আমি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম, তখন সাধারণ মানুষের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই মেলামেশা হয়ে যেত। মুখ্যমন্ত্রীর কাজকর্ম এবং কার্যকাল এমনই হয়ে থাকে যে মেলামেশার অনেক সুযোগ পাওয়া যায়। কিন্তু ২০১৪ তে দিল্লিতে আসার পর আমি বুঝেছিলাম যে এখানকার জীবন অনেকটাই আলাদা। কাজের ধরন আলাদা, দায়িত্ব আলাদা, স্থিতি-পরিস্থিতির বন্ধন, সুরক্ষার আয়োজন, সময়ের সীমা। শুরুর দিকে একটু অন্যরকম অনুভূতি হত, ফাঁকা ফাঁকা মনে হতো। ৫০ বছর আগে আমি নিজের ঘর এই জন্য ছাড়েনি যে, একদিন নিজের দেশের মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা মুশকিল হয়ে যাবে এটা ভেবে। যে দেশবাসী আমার সবকিছু, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে আমার পক্ষে বেঁচে থাকা সম্ভব না। 'মন কি বাত' আমাকে এই চ্যালেঞ্জের সমাধান দিয়েছে, সাধারণ মানুষের সঙ্গে জুড়ে থাকার পথ খুঁজে দিয়েছে। পদমর্যাদা এবং প্রোটোকল, একটা নির্দিষ্ট ব্যবস্থা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থেকেছে এবং কোটি কোটি জনমতের সঙ্গে আমার ভাবনা, বিশ্বের এক অটুট অঙ্গে পরিণত হয়েছে। প্রতিমাসে আমি দেশের মানুষের পাঠানো হাজার হাজার বার্তা পড়ি, প্রতিমাসে আমি দেশবাসীর একের পর এক অনন্য স্বরূপ দেখি। আমি দেশবাসীর তপস্যা ও ত্যাগের পরাকাষ্ঠা দেখি, অনুভব করি। আমার মনেই হয় না যে আমি আপনাদের থেকে একটুও দূরে আছি। আমার জন্য ‘মন কি বাত’ শুধুমাত্র একটি অনুষ্ঠান নয়, আমার জন্য এটা এক আস্থা, পূজা, ব্রত। যেমনভাবে মানুষ ঈশ্বরের পুজো করতে গেলে প্রসাদের থালা নিয়ে যায়, আমার জন্য ‘মন কি বাত’ ঈশ্বররূপী জনতা জনার্দনের চরণে প্রসাদের থালার মত। ‘মন কি বাত’ আমার মনের এক আধ্যাত্মিক যাত্রা।

'মন কি বাত' স্ব থেকে সমষ্টির যাত্রা।

'মন কি বাত' অহম থেকে বয়ম এর যাত্রা।

এ তো 'আমি' নয়, ' তুমি ' র মধ্যে দিয়েই এর সংস্কার সাধনা।

আপনি কল্পনা করুন, আমার কোন এক দেশবাসী ৪০-৪০ বছর ধরে নির্জন পাহাড়ি এবং বন্ধ্যা জমিতে গাছ লাগাচ্ছে, কত মানুষ ৩০-৩০ বছর ধরে জল সংরক্ষণের জন্য কুঁয়ো এবং পুকুর তৈরি করছে, সেটা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখছে। কেউ আবার ২৫-৩০ বছর ধরে গরিব বাচ্চাদের পড়াচ্ছে, কেউ গরিব বাচ্চাদের চিকিৎসার জন্য সাহায্য করছে। কতবার ‘মন কি বাত’-এ তাদের নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আমি ভাবুক হয়ে পড়েছি। আকাশবাণীর বন্ধুদের কতবার সেটা আবার নতুন করে রেকর্ড করতে হয়েছে। আজ, অতীতের কতকিছু আমার চোখের সামনে ভেসে উঠছে। দেশবাসীর এই প্রয়াস আমাকে ক্রমাগত কাজ করে যাওয়ার প্রেরণা দেয়।

বন্ধুরা, ‘মন কি বাত’-এ যাদের কথা আমি উল্লেখ করেছি, তাঁরা আমাদের হিরো, তাঁদের জন্যই এই অনুষ্ঠান জীবন্ত হয়ে উঠেছে। আজ যখন আমরা শততম পর্বের দোরগোড়ায়, আমার ইচ্ছে আরও একবার, এই হিরোদের কাছে গিয়ে তাঁদের যাত্রাপথ সম্পর্কে জানি। আজ আমরা কিছু বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলারো চেষ্টা করব। দূরভাষে আমাদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন, হরিয়ানা থেকে ভাই সুনিল জাগলানজি। আমার মনের ওপর সুনিল জাগলানজির কাজের গভীর প্রভাব পড়ে, কারণ হরিয়ানাতে gender ratio বিষয়টি খুবই চর্চায় থাকে। আমিও 'বেটি বাচাও - বেটি পড়াও' অভিযান হরিয়ানা থেকেই আরম্ভ করি। আর এর মধ্যে যখন সুনীলজির 'selfie with daughter' campaign, আমার দৃষ্টিগোচর হয়, আমি খুব আনন্দিত হই। আমিও ওনার থেকে শিক্ষালাভ করি, এবং ওনাকে ‘মন কি বাত’-এর  অংশ করেনি। দেখতে দেখতে 'selfie with daughter' এক global  campaign হয়ে উঠেছে। এই campaign এর মূখ্য বিষয় selfie ছিল না,  technology ছিলোনা, কন্যাসন্তানকে সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আমাদের জীবনে মেয়েদের গুরুত্ব যে অসীম, এই অভিযানের ফলে এই কথাই স্পষ্ট হয়। আর আজ, তার এই অভিযানের ফল স্বরূপ, হরিয়ানাতে gender ratio উন্নত হয়েছে। আসুন, আজ সুনীল বাবুর সঙ্গে কিছুটা গল্প করি।

প্রধানমন্ত্রীজি - নমস্কার সুনীলজি।

সুনীল জি - নমস্কার স্যার। আপনার কন্ঠস্বর শুনে আমার আনন্দ আরও বেড়ে গেছে।

প্রধানমন্ত্রীজি - সুনীলজি, selfie with daughter, অভিযান সবার মনে আছে। এখন এই বিষয়টি আবার চর্চায় এসেছে, আপনার কেমন লাগছে?

সুনীল জি - আসলে আপনি আমাদের প্রদেশ হরিয়ানাতে, মেয়েদের মুখে হাসি ফোটানোর ক্ষেত্রে  পানিপথের যে চতুর্থ লড়াই শুরু করেছেন, এবং আপনার নেতৃত্বে সারা দেশের মানুষ যে যুদ্ধ জেতার  চেষ্টা করেছেন, এটা আমি, আমার মত সব মেয়েদের বাবা ও মেয়েদের শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছে খুব বড় ব্যাপার।

প্রধানমন্ত্রীজি - সুনীল জি, আপনার মেয়ে এখন কেমন আছে, আজকাল কী করছে?

সুনীল জি - হ্যাঁ, আমার মেয়েরা নন্দনী আর ইয়াচিকা, একজন সপ্তম শ্রেণীতে পড়ছে, একজন চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ছে এবং তারা আপনার অনেক বড় ভক্ত এবং তারা তাদের সহপাঠীদের আপনাকে, অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে চিঠি লিখতে উৎসাহিতও করেছিল।

প্রধানমন্ত্রীজি - বাহ্ বাহ্! সোনা মেয়েদের আপনি আমার এবং ‘মন কি বাত’-এর শ্রোতাদের তরফ থেকে অনেক আশীর্বাদ দেবেন।

সুনীল জি - আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, আপনার কারণে দেশের মেয়েদের মুখের হাসি ক্রমাগত বাড়ছে।

প্রধানমন্ত্রীজি - আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সুনীলজি।

সুনীল জি - ধন্যবাদ।

বন্ধুরা, আমি খুবই সন্তুষ্ট যে 'মন কি বাত'-এ আমরা দেশের নারীশক্তির শত শত অনুপ্রেরণামূলক গল্পের উল্লেখ করেছি। সে আমাদের সেনাবাহিনীই হোক বা ক্রীড়া জগৎ, আমি যখনই নারীদের সাফল্যের কথা বলেছি, তা বেশ প্রশংসিত হয়েছে। যেমন আমরা ছত্তিশগড়ের দেউর গ্রামের মহিলাদের নিয়ে আলোচনা করেছি। এই মহিলারা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির মাধ্যমে গ্রামের চত্বর, রাস্তা এবং মন্দির পরিষ্কার করার অভিযান চালান। একইভাবে, এই দেশ তামিলনাড়ুর আদিবাসী মহিলাদের থেকেও ভীষণ অনুপ্রাণিত হয়েছে, যারা হাজার হাজার ইকো-ফ্রেন্ডলি টেরাকোটা কাপ রপ্তানি করেছিলেন। খোদ তামিলনাড়ুতে, ভেলোরে নাগ নদীকে পুনরুজ্জীবিত করতে ২০ হাজার মহিলা একত্রিত হয়েছিল। এই ধরনের অনেক অভিযান আমাদের নারী শক্তির নেতৃত্বে হয়েছে এবং 'মন কি বাত' তাদের প্রচেষ্টাকে সামনে আনার একটি প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে।

বন্ধুরা, এখন আমাদের ফোন লাইনে আরও একজন ভদ্রলোক আছেন। তাঁর নাম মনজুর আহমেদ। 'মন কি বাত'-এ, জম্মু ও কাশ্মীরের পেন্সিল স্লেট সম্পর্কে কথা বলার সময় মনজুর আহমেদজির উল্লেখ করা হয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রীজি - মনজুর সাহেব, কেমন আছেন?

মনজুর জি - ধন্যবাদ স্যার...খুব ভালো আছি স্যার।

প্রধানমন্ত্রীজি - ‘মন কি বাত’-এর এই শততম পর্বে আপনার সঙ্গে কথা বলতে পেরে খুব ভালো লাগছে।

মনজুর জি - ধন্যবাদ স্যার।

প্রধানমন্ত্রীজি - আচ্ছা এই পেন্সিল slate এর কাজ কিরকম চলছে?
মনজুর জি - খুব ভালো ভাবে চলছে স্যার, যেদিন থেকে আপনি আমাদের কথা ‘মন কি বাত’-এ বলেছেন তখন থেকে আমাদের কাজ আরো বেড়ে গেছে আর অন্যদেরও রোজগার বেড়ে গেছে এই কাজের মাধ্যমে।

প্রধানমন্ত্রীজি - কতজন লোক এখন রোজগার করেন এর থেকে?

মনজুর জি - এখন আমার কাছে ২০০-এরও বেশী  লোক আছে।

প্রধানমন্ত্রীজি - আরে বাহ! আমি শুনে খুব খুশি হলাম।

মনজুর জি - হ্যাঁ স্যার, আর এক-দু’মাসে আমি এটাকে এক্সপ্যান্ড করছি, এতে আরো ২০০ জনের রোজগার বেড়ে যাবে স্যার।

প্রধানমন্ত্রীজি – বাহ্ বাহ্ দেখুন মঞ্জুর জি...

মনজুর জি - হ্যাঁ স্যার..

প্রধানমন্ত্রীজি - আমার খুব মনে আছে আপনি ওইদিন বলেছিলেন যে এটা এমন একটা কাজ যার কোনো পরিচিতি নেই, আপনার নিজস্ব কোনো পরিচিতি নেই, যার জন্য আপনার অনেক কষ্ট হতো, অনেক কঠিন পরিস্থিতিতে আপনাকে কাজ করতে হয়েছে আপনি বলেছিলেন, কিন্তু এখন তো আপনি প্রসিদ্ধও হয়ে গেছেন আর আপনার জন্য ২০০-রও বেশি মানুষ রোজগার করছেন।

মনজুর জি - হ্যাঁ স্যার.. হ্যাঁ স্যার..

প্রধানমন্ত্রীজি - আর এই নতুন এক্সপ্যানশন এর মাধ্যমে আরো ২০০ জনের রোজগারের সংস্থান হবে,এটা আরো খুশির খবর।

মনজুর জি - এমনকি স্যার এর ফলে এখানকার কৃষক বন্ধুরাও অনেক উপকৃত হয়েছেন। ২০০০ টাকার গাছ এখন ৫০০০টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এত ডিমান্ড বেড়ে গেছে তারপর থেকে,  আর এই ক্ষেত্রে আমাদের পরিচিতিও বেড়ে গেছে, তাই অনেক অর্ডারও আসছে, আর সামনের এক-দু’মাসে এক্সপ্যান্ড করার পর আরো আশেপাশের বেশ কিছু গ্রামের যত যুবক-যুবতীদের এই কাজে নিয়োজিত করা যায় ততই তাদের কর্মসংস্থান এর ব্যবস্থা হতে পারবে স্যার।
প্রধানমন্ত্রীজি - দেখুন মঞ্জুর জি ভোকাল ফর লোকাল এর শক্তি কতটা অভূতপূর্ব হতে পারে তা আপনি পৃথিবীর মাটিতে করে দেখিয়ে দিয়েছেন।

মনজুর জি - হ্যাঁ স্যার।

প্রধানমন্ত্রীজি - আমার পক্ষ থেকে আপনাকে, গ্রামের সকল কৃষক বন্ধুদের এবং আপনার সঙ্গে কাজ করছেন এমন সমস্ত বন্ধুদের অনেক অনেক শুভকামনা। ধন্যবাদ ভাই।

মনজুর জি - ধন্যবাদ স্যার।

বন্ধুরা, আমাদের দেশে এমন অনেক প্রতিভাবান মানুষ রয়েছেন, যারা কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছেন। আমার মনে আছে বিশাখাপত্তনমের বেঙ্কট মুরলী প্রসাদ জি একটা 'আত্মনির্ভর ভারত chart' share করেছিলেন।  তিনি জানিয়েছিলেন কিভাবে তিনি আরো বেশি পরিমাণে ভারতীয় products ব্যবহার করবেন। যখন বেতিয়ার প্রমোদ জি LED বাল্ব বানানোর ছোট একটা ইউনিট শুরু করেন বা গড়-মুক্তেশ্বর'এর সন্তোষ জি Mats তৈরি করার কাজ শুরু করেন তখন 'মন কি বাত' অনুষ্ঠানই তাদের সেই উৎপাদিত পণ্যকে সবার সামনে তুলে ধরার মাধ্যম হয়ে ওঠে। আমরা Make in India'র অনেক দৃষ্টান্ত থেকে শুরু করে Space start-ups পর্যন্ত বহু আলোচনা 'মন কি বাত' অনুষ্ঠানে করেছি।

বন্ধুরা, আপনাদের হয়তো মনে আছে বেশ কিছু এপিসোড আগে আমি আমাদের মণিপুরের বোন বিজয়শান্তি দেবীর কথা বলেছিলাম। বিজয়শান্তি জি পদ্ম-ফুলের আঁশ থেকে জামাকাপড় তৈরী করেন। 'মন কি বাত' অনুষ্ঠানে তার এই অনন্য eco-friendly idea নিয়ে কথা হয়, আর সেজন্য তার এই কাজ আরো popular হয়ে গেছে। আজ বিজয়শান্তি জি আমাদের সঙ্গে টেলিফোন লাইনে রয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীজি - নমস্কার বিজয় শান্তি জি। কেমন আছেন?

বিজয়শান্তি জি - Sir, আমি ভালো আছি।

প্রধানমন্ত্রীজি - আপনার কাজকর্ম কেমন চলছে?

বিজয়শান্তি জি - Sir, এখন আমি ৩০ জন মহিলাকে নিয়ে কাজ করছি।

প্রধানমন্ত্রীজি - এত অল্প সময়ের মধ্যে আপনি তাহলে ৩০ জনের দল তৈরি করে ফেলেছেন!

বিজয়শান্তি জি - হ্যাঁ স্যার, এ বছর আরো বাড়তে পারে, ১০০ জনকে দলে পেতে পারি, আমার এলাকা থেকে।

প্রধানমন্ত্রীজি - অর্থাৎ আপনার লক্ষ্য ১০০ জন মহিলা।

বিজয়শান্তি জি - হ্যাঁ! ১০০ জন মহিলা।

প্রধানমন্ত্রীজি - আর এখন মানুষ lotus stem fiber-এর (পদ্ম ডাটার আঁশের) সঙ্গে পরিচিত হয়েছেন।

বিজয়শান্তি জি - হ্যাঁ প্রধানমন্ত্রীর 'মন কি বাত'-এর মাধ্যমে সারা দেশের মানুষ এর কথা জানেন।
প্রধানমন্ত্রীজি - তাহলে এটা এখন ভীষণ জনপ্রিয়।

বিজয়শান্তি জি - হ্যাঁ স্যার , এখন সবাই প্রধানমন্ত্রীর 'মন কি বাত'-এর মাধ্যমে লোটাস ফাইবারের কথা জানেন।

প্রধানমন্ত্রীজি - তাহলে আপনারা বাজারেও পৌঁছতে পেরেছেন?

বিজয়শান্তি জি - হ্যাঁ আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটা বাজারে পৌঁছতে পেরেছি, এবং তাঁরা বৃহৎ পরিমাণে এই সামগ্রী কিনতে চান, এবং আমি এ বছর থেকে আমেরিকাতে আমার জিনিস রপ্তানি করতে চাই।

প্রধানমন্ত্রীজি - তাহলে আপনি এখন রপ্তানি ব্যবসাদার হয়ে গেছেন?

বিজয়শান্তি জি - হ্যাঁ, এ বছর থেকে আমরা ভারতীয় lotus fiber-এর তৈরি সামগ্রী বিদেশে রপ্তানি করব।

প্রধানমন্ত্রীজি - মানে আমার বলা ভোকাল ফর লোকাল এখন লোকাল ফর গ্লোবাল হয়ে গেছে?

বিজয়শান্তি জি - হ্যাঁ, স্যার, আমি এখন আমার সামগ্রী সারা পৃথিবীতে রপ্তানি করতে চাই।

প্রধানমন্ত্রীজি - আপনাকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাই।

বিজয়শান্তি জি - ধন্যবাদ, স্যার।

প্রধানমন্ত্রীজি - ধন্যবাদ বিজয়শান্তি জী।

বিজয়শান্তি জি - ধন্যবাদ, স্যার।

বন্ধুরা, 'মন কি বাত' অনুষ্ঠানের আরেকটা বিশেষত্ব আছে। 'মন কি বাত'-এর মাধ্যমে বহু জন আন্দোলন জন্মেছে এবং গতি নিয়েছে। যেমন আমাদের খেলনা, আমাদের toy industry-কে আবার প্রতিষ্ঠিত করার মিশন 'মন কি বাত'-এই শুরু হয়েছিল। আমাদের দেশীয় প্রজাতির কুকুর, দেশি ডগস নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজও শুরু হয়েছিল 'মন কি বাত'-এই।  আমরা আরেকটি কাজও শুরু করেছিলাম, যে গরীব, ক্ষুদ্র দোকানদারদের সঙ্গে দরদাম করব না, ঝগড়া করব না। প্রতি ঘরে তেরঙ্গার মত কঠিন প্রকল্পে নামার সময় দেশবাসীকে এই ব্রতে ব্রতী করার ভূমিকাও 'মন কি বাত' বিরাট রূপে পালন করে।

এইরূপ প্রতিটি দৃষ্টান্ত সমাজে পরিবর্তন এনেছে। সমাজকে প্রেরণা জোগানোর এরকম প্রতিজ্ঞা  প্রদীপ সাংওয়ান মহাশয়ও নিয়েছেন। 'মন কি বাত' অনুষ্ঠানে আমরা প্রদীপ সাংওয়ানের healing Himalayas অভিযানের কথা আলোচনা করেছিলাম। উনি এখন ফোনলাইনে রয়েছেন আমাদের সঙ্গে।

প্রধানমন্ত্রীজি - প্রদীপ জি, নমস্কার!

প্রদীপজি - স্যার, জয় হিন্দ!

প্রধানমন্ত্রীজি - জয় হিন্দ, জয় হিন্দ ভাই! কেমন আছেন আপনি?

প্রদীপজি - স্যার, খুব ভালো। আপনার কণ্ঠস্বর শুনে আরো ভালো লাগছে।
 
প্রধানমন্ত্রীজি - আপনি হিমালয়কে হিল (heal) করার কথা ভেবেছেন।

প্রদীপজি - হ্যাঁ, স্যার ।

প্রধানমন্ত্রীজি - এ বিষয়ে কর্মসূচিও চালিয়েছেন। আজকাল আপনার ক্যাম্পেন কেমন চলছে?

প্রদীপজি - স্যার, খুব ভালো চলছে। আগে যতটা কাজ আমরা পাঁচ বছরে করতাম, ২০২০ সাল থেকে সেটা মোটামুটি এক বছরে হয়ে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীজি - আরে বাঃ!

প্রদীপজি - হ্যাঁ, স্যার। শুরুতে খুব নার্ভাস ছিলাম। খুব ভয় করত এ কথা ভেবে যে, জীবনভর এই কাজ করতে পারব কিনা। কিন্তু তারপর কিছুটা সাপোর্ট পেলাম। সত্যি কথা বলতে, ২০২০ পর্যন্ত আমরা খুব ওনেস্টলি স্ট্রাগল করেছি। খুব অল্প সংখ্যক মানুষ আমাদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছিলেন। এমন অনেক মানুষ ছিলেন যারা সাপোর্ট করতে পারছিলেন না। আমাদের অভিযানের দিকে সেভাবে গুরুত্ব সহকারে মনোনিবেশও করছিলেন না। কিন্তু ২০২০ এর পরে, অর্থাৎ 'মন কি বাত' অনুষ্ঠানে আপনি উল্লেখ করার পর থেকে অনেক কিছু বদলে গেল। আগে আমরা বছরে ছয় - সাতটা, বড়জোর দশটা ক্লিনিং ড্রাইভ করতে পারতাম। আর আজকের তারিখে দাঁড়িয়ে আমরা ডেইলি বেসিসে পাঁচ টন জঞ্জাল একত্র করি। আলাদা আলাদা লোকেশনে।

প্রধানমন্ত্রীজি - আরে বাঃ!

প্রদীপজি - স্যার, আপনি আমার কথা বিশ্বাস করুন, আমি একটা সময় প্রায় হাল ছেড়ে দেওয়ার পর্যায়ে ছিলাম। কিন্তু 'মন কি বাত'-এ আপনি উল্লেখ করার পর থেকে আমার জীবনে অনেক কিছু বদলে গেল, আর বিষয়গুলো এত স্পিড আপ হয়ে গেল যা আমরা কখনো ভাবতেই পারিনি। সো আই অ্যাম রিয়েলি থ্যাঙ্কফুল। জানি না কী ভাবে আমাদের মত মানুষদের আপনি খুঁজে নেন। হিমালয়ের কোন সুদূর প্রত্যন্ত অঞ্চলে, এত অল্টিচুডে গিয়ে আমরা কাজ করছি। সেখান থেকেও আপনি আমাদের খুঁজে নিয়েছেন। আমাদের কাজকে সারা পৃথিবীর সামনে নিয়ে এসেছেন। তাই আমার কাছে সেদিনও খুব ইমোশনাল মোমেন্ট ছিল, আজও তাই। কারণ আমাদের দেশের যিনি প্রথম সেবক তাঁর সঙ্গে আমি কথা বলার সুযোগ পাচ্ছি। আমার জন্য এর থেকে বড় সৌভাগ্যের কথা আর কিছু হতে পারে না।

প্রধানমন্ত্রীজি - প্রদীপ জি আপনি হিমালয়ের চূড়ায় প্রকৃত অর্থেই সাধনা করছেন আর আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে এখন আপনার নাম শুনলেই সকলের এটা মনে পড়বে যে আপনি কিভাবে পাহাড়ের স্বচ্ছতা অভিযানের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন।

প্রদীপজি - হ্যাঁ স্যার।

প্রধানমন্ত্রীজি - আর যেমন আপনি বললেন যে এখন একটি বিরাট টিম তৈরি হতে চলেছে আর আপনি প্রতিদিন এত বড় মাপের কাজ করে চলেছেন।

প্রদীপজি - হ্যাঁ স্যার।

প্রধানমন্ত্রীজি - আমার সম্পূর্ণ বিশ্বাস যে এই প্রচেষ্টার ফলে, এই বিষয়ের আলোচনার ফলে অনেক পর্বতারোহী স্বচ্ছতা অভিযানের ফটো পোস্ট করছেন।

প্রদীপজি - হ্যাঁ স্যার। অনেকেই।

প্রধানমন্ত্রীজি - এটা ভালো বিষয় যে আপনাদের মত বন্ধুদের কারণে ওয়েস্ট ইজ অলসো অ্যা ওয়েলথ এই কথাটা মানুষের মনের মধ্যে গেঁথে যাচ্ছে। আর পরিবেশেরও সুরক্ষা নিশ্চিত হচ্ছে, আর হিমালয় যা আমাদের অহংকার তার সুরক্ষা, সৌন্দর্য রক্ষা এবং সাধারণ মানুষরা এর সঙ্গে জড়িত হচ্ছে। প্রদীপ জি খুব ভালো লাগছে আমার। অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই।
প্রদীপজি - ধন্যবাদ স্যার। অনেক ধন্যবাদ। জয় হিন্দ।

বন্ধুরা, আজ দেশে ট্যুরিজম খুব তাড়াতাড়ি গ্রো করছে। আমাদের এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, নদী, পাহাড়, জলাশয় অথবা আমাদের তীর্থস্থান এই সব কিছু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা অত্যন্ত জরুরী। এটা ট্যুরিজম ইন্ডাস্ট্রিকে অনেক সাহায্য করবে। পর্যটনের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতার সঙ্গে সঙ্গে আমরা ইনক্রেডিবল ইন্ডিয়া মুভমেন্টের কথাও অনেকবার বলেছি। এই মুভমেন্টে মানুষ প্রথমবার এমন অনেক স্থানের বিষয়ে জানতে পেরেছে যা হয়তো তাদের খুব কাছাকাছি ছিল। আমি সবসময়ই বলি যে আমাদের বিদেশে ট্যুরিজমের ব্যাপারে যাওয়ার আগে আমাদের দেশে কমপক্ষে ১৫টি টুরিস্ট ডেস্টিনেশনে যাওয়া উচিত এবং সেই ডেস্টিনেশন গুলো যে রাজ্যে আপনি থাকেন, অবশ্যই সেই রাজ্যের হওয়া উচিত নয়। অর্থাৎ আপনার রাজ্যের বাইরে অন্য রাজ্যে যাওয়া উচিত।

এইভাবে আমরা স্বচ্ছ সিয়াচিন, single use plastic এবং e-waste এর মত গুরুতর বিষয়েও ক্রমাগত বলেছি। আজ সারা বিশ্ব পরিবেশের যে issue নিয়ে বিশেষভাবে নাজেহাল, সেই সমস্যা সমাধানে 'মন কি বাত' অনুষ্ঠানের এই প্রয়াস খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বন্ধুরা, এবার আমি 'মন কি বাত' অনুষ্ঠানটি নিয়ে ইউনেস্কোর ডিজি অড্রে আজুলের আরেকটি বিশেষ বার্তা পেয়েছি। তিনি শততম পর্বের এই অবিস্মরণীয় যাত্রার জন্য সমস্ত দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এছাড়াও, তিনি কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছেন। আসুন প্রথমে ইউনেস্কোর ডিজির মনের কথা শোনা যাক।

#অডিও UNESCO DG

ডিজি ইউনেস্কো: নমস্কার মহামান্য, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী; ‘মন কি বাত’ রেডিও সম্প্রচারের শততম পর্বে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়ে ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে আমি আপনাকে ধন্যবাদ জানাই।  ইউনেস্কো এবং ভারতের একটি দীর্ঘ সাদুর্যপূর্ণ ইতিহাস রয়েছে। বিভিন্নক্ষেত্রে আমাদের যৌথভাবে খুবই শক্তিশালী অংশীদারিত্ব রয়েছে - শিক্ষা, বিজ্ঞান, সংস্কৃতি, তথ্য এবং আমি আজ এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে শিক্ষার গুরুত্ব নিয়ে কথা বলতে চাই। UNESCO, তার সদস্য রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে কাজ করছে যাতে 2030 সালের মধ্যে বিশ্বের প্রত্যেকে উচ্চমানের শিক্ষার সুযোগ পায়। বিশ্বের বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ হওয়ার সুবাদে, এই লক্ষ্য অর্জনের ভারতীয় পন্থা আপনি অনুগ্রহ করে বিশ্লেষণ করুন৷ UNESCO সংস্কৃতিকে সমর্থন এবং ঐতিহ্য রক্ষা করার জন্যও কাজ করে এবং ভারত এই বছর G-20-এর সভাপতিত্ব করছে। এই অনুষ্ঠানে বিশ্ব নেতারা আসতে চলেছে দিল্লিতে। মহামান্য, ভারত কিভাবে সংস্কৃতি ও শিক্ষাকে আন্তর্জাতিক এজেন্ডার শীর্ষে রাখতে চায়? আমি আবারও এই সুযোগের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাই এবং ভারতের জনগণকে আপনার মাধ্যমে আমার অনেক শুভকামনা জানাই.... শীঘ্রই দেখা হবে। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ.

প্রধানমন্ত্রী মোদি: আপনাকে ধন্যবাদ, মহামান্য। শততম 'মন কি বাত' অনুষ্ঠানে আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরে আমি অভিভূত। আমি আরও খুশি যে আপনি শিক্ষা ও সংস্কৃতির মতন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন।

বন্ধুরা, ইউনেস্কোর DG Education ও Cultural Preservation, অর্থাৎ শিক্ষা ও সংস্কৃতির সংরক্ষণ ক্ষেত্রে ভারতের প্রচেষ্টার বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। এ দুটি ‘মন কি বাত' অনুষ্ঠানের খুব পছন্দসই বিষয়।

শিক্ষা হোক বা সংস্কৃতি, তার সংরক্ষণ বা উন্নয়ন যে বিষয়েই কথা হোক না কেন, ভারতের এ এক প্রাচীন পরম্পরা। এই বিষয়ে আমাদের দেশে যা কাজ চলছে, তা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। National Education Policy হোক বা স্থানীয় ভাষায় পড়াশোনার বিকল্প ব্যবস্থা হোক বা Education-এ Technology Integration হোক, আপনি এরকম অনেক প্রচেষ্টার নিদর্শন অনেক দেখতে পাবেন। অনেক বছর আগে গুজরাটে উন্নততর শিক্ষা প্রদান ও ‘Dropout Rates’ কম করার লক্ষ্যে ‘গুণোৎসব ও শালা প্রবেশোৎসব’-এর মতো অনুষ্ঠানে জনগণের যোগদানের মাধ্যমে এক অনন্য উদাহরণ তৈরি হয়েছিল। ‘মন কি বাত'-এ আমরা এরকম কত জনের প্রচেষ্টাকে Highlight করি, যারা নিঃস্বার্থভাবে শিক্ষাক্ষেত্রে কাজ করে চলেছেন। আপনাদের হয়তো মনে আছে, একবার আমরা উড়িষ্যায় ঠেলার উপর চা বিক্রেতা স্বর্গীয় ডি. প্রকাশ রাউজি সম্পর্কে আলোচনা করেছিলাম, যিনি গরিব বাচ্চাদের শিক্ষিত করে তোলার মিশনে কাজ করছিলেন। ঝাড়খণ্ডের গ্রামে Digital Library চালানো সঞ্জয় কাশ্যপ জি হোন, বা Covid-এর সময় E-learning-এর মাধ্যমে বাচ্চাদের সাহায্যকারী হেমলতা এন কে জি হোন, এমন অসংখ্য শিক্ষকদের উদাহরণ আমরা ‘মন কি বাত'-এ নিয়ে এসেছি। আমরা Cultural Preservation সম্পর্কিত প্রচেষ্টাকেও ‘মন কি বাত' অনুষ্ঠানে ক্রমাগত স্থান দিয়েছি।

লাক্ষাদ্বীপের Kummel Brothers Challengers Club হোক, বা কর্ণাটকের কোয়েমশ্রী জির ‘কলা চেতনার’ মতো মঞ্চ হোক, দেশের প্রতিটি কোন থেকে মানুষ এরকম বহু উদাহরণ আমায় চিঠি লিখে জানিয়েছেন। আমরা সেই তিন Competition- এর বিষয়েও কথা বলেছি যা দেশভক্তির উপর ‘গীত’, ‘লোরি’(ঘুমপাড়ানি গান) ও ‘রঙ্গলি’র সঙ্গে যুক্ত। আপনাদের মনে থাকবে একবার আমরা সমগ্র দেশে Story Tellers-এর দ্বারা Story Telling-এর মাধ্যমে শিক্ষায় ভারতীয় বিধান নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। আমার অটুট বিশ্বাস এই সামগ্রিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে বড় থেকে বড় পরিবর্তন আনা সম্ভব। এই বছর আমরা যখন আজাদীর অমৃতকালে এগিয়ে চলেছি, তখন G-20র সভাপতিত্বও করছি। এটাও আরেকটা কারণ যে Education-এর সঙ্গে Diverse Global Cultures কে সমৃদ্ধ করার জন্য আমাদের সংকল্প আরো মজবুত হয়েছে।

আমার প্রিয় দেশবাসী, আমাদের উপনিষদের এক মন্ত্র শত শত বছর ধরে আমাদের প্রেরণা দিয়ে এসেছে।

চরৈবতি চরৈবতি চরৈবতি।

চলতে থাকো - চলতে থাকো - চলতে থাকো।

আজ আমরা এই এগিয়ে চলার চরৈবতি মন্ত্র নিয়েই "মন কী বাত"-এর শততম পর্বে এসে পৌঁছেছি। ‘মন কি বাত’ মালার সুতোর মত। যে কিনা ভারতের সামাজিক বিভিন্ন খন্ড খন্ড বিষয়কে দৃঢ়বন্ধ করে রেখেছে এবং যা সকলের মনকে এক এক সুতোয় বেঁধে রেখেছে। প্রত্যেক পর্বেই দেশবাসী তাদের সেবা ও সামর্থ্য দিয়ে অন্যকে প্রেরণা যুগিয়েছেন। এই অনুষ্ঠানে প্রত্যেক দেশবাসী ওপর দেশবাসীর প্রেরণা উৎস হয়ে উঠেছেন। সেভাবে দেখতে গেলে, ‘মন কি বাত’-এর প্রতি পর্ব তার পরবর্তী পর্বের জমি তৈরি করে রাখে। মন কি বাত সর্বদাই সদিচ্ছা, সেবা ও কর্তব্যকে সঙ্গী করেই এগিয়ে চলেছে। স্বাধীনতার অমৃতকালে এই পসিটিভিটিই দেশকে সামনের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে, নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে, এবং আমার আনন্দ হচ্ছে ভেবে, যে, মন কি বাতের হাত ধরে যে নতুন এক দিগন্তের শুরু হল, তা দেশের এক নতুন পরম্পরাও তৈরি করতে চলেছে। এ এমন এক পরম্পরা, যার মধ্যে সবার সবরকম প্রয়াস একত্রে প্রতিভাত হয়।

বন্ধুগণ, আজ আমি আকাশবাণীর বন্ধুদেরও ধন্যবাদ দিতে চাই, যাঁরা প্রভূত ধৈর্যের সঙ্গে এই সম্পূর্ন অনুষ্ঠানটি রেকর্ড করেন। সেসকল অনুবাদকেরা, যাঁরা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে, অতি দ্রুত ভারতের বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করেন, আমি তাঁদের প্রতিও কৃতজ্ঞ। আমি দূরদর্শন এবং My Gov এর বন্ধুদেরও ধন্যবাদ দিতে চাই। সারা দেশের টিভি চ্যানেল এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মানুষেরা, যাঁরা মন কি বাতের এই সম্প্রচার কোনরকম বিজ্ঞাপন বিরতি ছাড়াই প্রচার করে থাকেন, তাঁদের সকলের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা রইল। এবং সবশেষে, ভারতবাসী এবং ভারতের ওপর আস্থা রেখেছেন এমন সকল মানুষ, যাঁরা ‘মন কী বাত’-এর রাশ ধরে রেখেছেন, আমি তাঁদের প্রতিও জানাই আমার কৃতজ্ঞতা। এই সবকিছু, আপনাদের প্রেরণা এবং আপনাদের ক্ষমতার জন্যেই সম্ভবপর হলো।

বন্ধুরা, বস্তুতই আজ এতো কিছু আমার বলতে ইচ্ছে করছে, যে তার জন্যে সময় এবং শব্দ দুইই কম মনে হচ্ছে। কিন্তু, আমার বিশ্বাস আছে যে, আপনারা নিশ্চয়ই আমার মনের সেই ভাব, সেই সকল ভাবনার কথা বুঝতে পারছেন। মন কি বাতের মাধ্যমে আপনাদের পরিবারের একজন সদস্য হয়ে আপনাদের মাঝে থেকেছি। আপনাদের মাঝেই থাকবো আগামীতেও। সামনের মাসে আমরা আবার একবার মিলিত হবো। আবারও কিছু নতুন বিষয়, কিছু নতুন তথ্যের সঙ্গে দেশবাসীর সাফল্যের উদ্যাপন করবো। ততক্ষণের জন্যে আমায় বিদায় জানাবেন এবং নিজের ও আপনার জনদের খুবই খেয়াল রাখবেন। অনেক অনেক ধন্যবাদ। নমস্কার।



(Release ID: 1920866) Visitor Counter : 337