প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

‘পিএম বিশ্বকর্মা কৌশল সম্মান (পিএম বিকাশ)’ এই বিষয় নিয়ে বাজেট পরবর্তী ওয়েবিনারে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বঙ্গানুবাদ

Posted On: 11 MAR 2023 12:56PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি,  ১১  মার্চ, ২০২৩

 

নমস্কার!

গত কয়েকদিন ধরে ধারাবাহিক বাজেট পরবর্তী ওয়েবিনার হয়ে চলেছে। গত তিন বছরে প্রত্যেক বাজেটের পরই বাজেট নিয়ে অংশীদারদের কথা বলার একটি প্রথা আমরা শুরু করেছি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি সুনির্দিষ্ট পথে আমরা বাজেট রূপায়ণ করব কী ভাবে? অংশীদাররা কী পরামর্শ দিচ্ছেন? সরকার তাদের পরামর্শকে কীভাবে রূপদান করবে? এসব নিয়ে বিশ্লেষণাত্মক আলোচনাধর্মী অধিবেশন করা হচ্ছে। শিল্প, বাণিজ্য, সংগঠন এবং বাজেটের প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রয়েছে তা সে চাষি, মহিলা, যুব, আদিবাসী, আমাদের দলিত ভাই-বোন এবং এ রকম হাজারো অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনায় অসাধারণ সমস্ত প্রস্তাব উঠে এসেছে। এমন কিছু পরামর্শ পাওয়া গেছে যা সরকারের ক্ষেত্রেও যথেষ্ঠ কাজের এবং আমার ক্ষেত্রে এটা পরম বিষ্ময়ের যে এবার বাজেট ওয়েবিনারে বাজেটে কী থাকা উচিত ছিল কী নয় তা নিয়ে আলোচনার পরিবর্তে সমস্ত অংশীদাররাই একেবারে সুনির্দিষ্টভাবে আলোচনা করেছেন যে বাজেটকে কীভাবে সর্বাধিক ফলদায়ক করে তোলা যায়।

আমাদের কাছে গণতন্ত্রের এটা এক নতুন এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। সংসদে যেভাবে আলোচনা হয় এবং সাংসদরা যেভাবে আলোচনা করেন, অনুরূপভাবেই জনসাধারণের সঙ্গেও আলোচনা বস্তুতপক্ষে এক সফল প্রয়াস বলে দেখা যাচ্ছে। বাজেট নিয়ে আজকের ওয়েবিনারে দক্ষতা বিকাশ এবং ভারতে কোটি কোটি মানুষের প্রতিভার দিকের ওপর আলোকপাত করা হয়েছে। বিগত বছরগুলিতে দক্ষ ভারত মিশন এবং দক্ষতা বিকাশ কেন্দ্রগুলির মাধ্যমে আমরা কোটি কোটি যুবক-যুবতীর দক্ষতা বিকাশের লক্ষ্যে কাজ করেছি এবং তাদেরকে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ যুগিয়েছি। দক্ষতা বিকাশের ক্ষেত্রেও আমরা আরও বেশি সুনির্দিষ্ট এবং এই সুনির্দিষ্ট অভিমুখ থেকে আমাদের বিশ্বাস তা আরও ভালো ফলদায়ক হবে।

পিএম বিশ্বকর্মা কৌশল সম্মান যোজনা যাকে সাধারণভাবে পিএম বিশ্বকর্মা যোজনা বলা হচ্ছে তা হল এই চিন্তার ফল। এই বাজেটে পিএম বিশ্বকর্মা যোজনার ঘোষণা এ নিয়ে বিস্তৃত আলোচনার পরিসর তৈরি করেছে এবং অর্থনীতিবীদদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। যেহেতু এই ঘোষণা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে ফলে সততই প্রশ্ন উঠছে যে এই যোজনার প্রয়োজন নিয়ে। কেনই বা তার নাম বিশ্বকর্মা করা হল? অংশীদাররা কেনই বা এর সফলতাকে এতো গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন? আমি এই বিষয়ে কয়েকটি দিক নিয়ে আলোচনা করব। আপনারাও অন্য আরও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নিশ্চয় বিশ্লেষণধর্মী আলোচনা করবেন।

বন্ধুগণ,

আমাদের বিশ্বাস মতো ভগবান বিশ্বকর্মা বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের সৃষ্টিকর্তা এবং নিয়ন্তা। তাঁকেই সর্ববৃহৎ কারিগর হিসেবে বিশ্বাস করা হয়। ভগবান বিশ্বকর্মার হাতে ধরা থাকে নানা ধরনের যন্ত্রসামগ্রী। আমাদের সমাজে সেইসব মানুষদের নিয়ে এক সমৃদ্ধ ঐতিহ্য রয়েছে যারা কিছু সৃষ্টি করেন, হয় তারা নিজেদের হাত দিয়ে সৃষ্টি করেন অথবা কেউ কেউ যন্ত্রের সাহায্যে সৃষ্টি করেন। বস্ত্রশিল্পের ক্ষেত্রে একটা বড় আকর্ষণ রয়েছে। কিন্তু আমাদের কামার, স্বর্ণশিল্পী, কুমোর, ছুতোর, স্থপতিকার, বাস্তুকার, কারিগর এরাও শত শত বছর ধরে তাদের অনন্য সেবাদানের ক্ষেত্রে সমাজের এক অভিন্ন অঙ্গ হয়ে রয়েছেন।

এই সমস্ত মানুষরা পরিবর্তিত আর্থনৈতিক চাহিদার ভিত্তিতে সময়ে সময়ে নিজেদেরকে পরিবর্তন করেছেন। এছাড়াও স্থানীয় প্রথা মাফিক তারাও নতুন কিছু তৈরি করেছেন। উদাহরণ স্বরূপ মহারাষ্ট্রের কয়েকটি অঞ্চলে আমাদের কৃষক ভাই-বোনেরা বাঁশে তৈরি একটা কাঠামোয় তাদের শস্য মজুত রাখেন। এটাকে বলা হয় কাঙ্গি। স্থানীয় কারিগররাই কেবল এটা তৈরি করতে পারেন। আমরা যদি উপকূলবর্তী এলাকায় যায় সেখানে দেখব সমাজের চাহিদা মাফিক বিভিন্ন রকম কারিগরি দ্রব্য তৈরি হয়েছে। কেরালার প্রসঙ্গে যদি বলা যায় কেরালার উরু নৌকা সম্পূর্ণ হাতে তৈরি। ছুতোররা মাছ ধরার এই নৌকা তৈরি করেন। এটা তৈরি করতে বিশেষ ধরনের দক্ষতা, কর্মক্ষমতা এবং স্বকীয়তার প্রয়োজন পড়ে। 

বন্ধুগণ,

কারিগররা ছোট মাপের স্থানীয় স্তরে হস্তচালিত উৎপাদনের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং জনগণের কাছে তার একটা অদম্য আকর্ষণ রয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমাদের দেশে তাদের এই ভূমিকাটা অনেকটা সমাজের মর্জির ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে তাদের ভূমিকা অনেকখানি সংকুচিত হয়েছে। এমন একটি পরিস্থিতি ছিল যখন এই জাতীয় কাজকে ছোট মাপের এবং ততখানি গুরুত্বপূর্ণ নয় বলে মনে করা হত। কিন্তু এমন একটা সময় ছিল এই সমস্ত কাজের মধ্য দিয়ে বিশ্বজুড়ে আমাদের পরিচিতি গড়ে উঠেছিল। প্রাচীন রপ্তানী মডেলে আমরা দেখতে পাই যে এইসব কারিগরদের ভূমিকা ছিল সুবিদিত। কিন্তু দীর্ঘ ঔপনিবেশিক শাসনকালে এই শৈলী যথেষ্ঠ নিপীড়নের মুখোমুখি হয়েছে।

স্বাধীনতার পর আমাদের এইসব কারিগররা সরকারের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সাহায্য পায়নি। ফলস্বরূপ যারা এই সমস্ত অসংগঠিত ক্ষেত্রে জীবিকা উপার্জনের সঙ্গে যুক্ত তারা বিকল্প কোনো সমাধান সূত্র খুঁজে নেন। অনেকেই আছেন যারা তাদের প্রাচীন এবং ঐতিহ্যগত পেশা ছেড়ে দিচ্ছেন। আজকের সময়ে চাহিদামতো নিজেদেরকে গড়তে তারা সমর্থ হচ্ছেন না।

আমরা এই শ্রেণীকে হেলায় হারিয়ে যেতে দিতে পারি না। এটা হল সেই শ্রেণী যারা শত শত শতাব্দী ধরে প্রথাগত পদ্ধতিতে কারিগরি শিল্পকে বাঁচিয়ে রেখেছে। এটা হল সেই শ্রেণী যারা তাদের অনন্য দক্ষতা এবং অপরূপ সৃষ্টিকার্জের নজির তুলে ধরেছে। স্বনির্ভর ভারতের প্রকৃত ভাবধারার এরাই হলেন প্রতীক স্বরূপ। আমাদের সরকার মনে করে এই শ্রেণীর মানুষ নব ভারতের বিশ্বকর্মা। এই কারনবশত পিএম বিশ্বকর্মা কৌশল যোজনা তাদের দিকে তাকিয়ে চালু করা হয়েছে। এই যোজনা নতুন কিন্তু তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বন্ধুগণ,

আমরা একটা জিনিস শুনে থাকি যে মানুষ হল সামাজিক জীব এবং সমাজের বিভিন্ন শক্তির মধ্যে দিয়ে সামাজিক ব্যবস্থা গড়ে ওঠে এবং তা পরিচালিত হয়। এমন কিছু পেশা রয়েছে যেগুলো ছাড়া সামাজিক জীবনযাপন সম্ভব নয়। উন্নতি করা তো দুরস্থান। কেউ তা কল্পনাও করতে পারে না। আজকে এইসব কাজ হয়তো প্রযুক্তির সামর্থ লাভ করেছে এবং তা আধুনিক হয়ে উঠেছে কিন্তু এইসব কাজের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেন না। যারা ভারতের গ্রামীণ অর্থনীতিকে চেনেন ও জানেন এবং এ বিষয়ে সচেতন যে কোনো পরিবারিক একজন ডাক্তার থাকতে পারেন বা নাও পারেন। কিন্তু একজন পারিবারিক স্বর্ণশিল্পী সেখানে নিশ্চিতভাবে রয়েছেন দেখা যায়। একটি পরিবারে প্রত্যেকটি প্রজন্মই একটি নির্দিষ্ট স্বর্ণশিল্পী পরিবারের কাছ থেকে অলঙ্কার সামগ্রী কেনে। গ্রামে এবং শহরে এমন অনেক কারিগর রয়েছে তারা হস্তচালিত যন্ত্রের মাধ্যমে এবং অপরিসীম দক্ষতার মধ্যে দিয়ে কিছু তৈরি করে গ্রাসাচ্ছাদন করেন। সমাজে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এই বিরাট সম্প্রদায়ের দিকে তাকিয়ে পিএম বিশ্বকর্মা যোজনার আলোকপাত।

বন্ধুগণ,

গ্রাম স্বরাজ নিয়ে আমরা যদি মহাত্মা গান্ধীর দৃষ্টিভঙ্গীর দিকে তাকাই কৃষির পাশাপাশি গ্রাম জীবনে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ পেশা রয়েছে। গ্রামীণ বিকাশের জন্য গ্রামের এই প্রত্যেকটি সম্প্রদায়ের উন্নয়ন যাত্রার স্বার্থে প্রতেকটি পেশার আধুনিকীকরণ করা দরকার।

কয়েকদিন আগে দিল্লিতে আমি আদি মহোৎসবে গিয়েছিলাম। আমি সেখানে গিয়ে দেখলাম বহু মানুষ আদিবাসী কলা এবং হস্তশিল্পে পারঙ্গম। তারা আদিবাসী এলাকা থেকে এসেছেন এবং তাদের স্টল সেখানে দিয়েছে। তবে সেইসব লোকেদের ওপর আমার দৃষ্টি গেল যারা গালা দিয়ে চুড়ি তৈরি করেছেন। তারাই ছিল আকর্ষণের কেন্দ্র। গালা দিয়ে তারা কী করে চুড়ি তৈরি করেন? কীভাবেই বা তারা মুদ্রণের কাজ করেন? গ্রামীণ মেয়েরা এ কাজ করেন কী করে? হাতের মাপ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে কী প্রযুক্তি ব্যবহার করেন তারা? এবং আমি লক্ষ্য করলাম সেখানে যারাই তা দেখতে যাচ্ছেন অন্তত ১০ মিনিট তারা সেখানে কাটাচ্ছেন।

অনুরূপভাবে আমাদের কামার ভাই-বোনেরা যারা লোহা দিয়ে কাজ করেন, আমাদের কুমোর ভাই-বোনেরা, যারা মৃৎশিল্পে কাজে যুক্ত, কাঠের কাজ যারা করেন, যারা সোনা নিয়ে কাজ করেন তাদের প্রত্যেকেই সাহায্য চান। আমরা যেভাবে পিএম স্বনিধি যোজনা করেছি, যা থেকে ছোট দোকানদার বা হকাররা উপকৃত হচ্ছেন ঠিক তেমনিভাবে পিএম বিশ্বকর্মা যোজনার মধ্যে দিয়েও কোটি কোটি মানুষ প্রভূত উপকৃত হতে পারেন। বহু বছর পূর্বে আমি ইউরোপের একটি দেশে ভ্রমণ করেছিলাম। সেখানে অলঙ্কার ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত গুজরাটিদের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়। আমি তাদের কাছে পরিস্থিতির কথা জানতে চাই। তারা বলেন, অলঙ্কার শিল্পে প্রযুক্তি এবং যন্ত্র সামগ্রী সহজলভ্য হওয়া সত্ত্বেও হাতে তৈরি অলঙ্কারের চাহিদা অনেক বেশি এবং এর একটা বিরাট বাজার রয়েছে। ফলে বোঝা যাচ্ছে এই ক্ষেত্রের একটা অমিত সম্ভাবনা রয়েছে।

বন্ধুগণ,

এ রকম অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে। ফলে এই প্রকল্পের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকার একটি সার্বিক প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা সমস্ত কারিগর বন্ধুদেরকে যোগাবে। আমরা নিশ্চিত করতে চাই যাতে এইসব কারিগর বন্ধুরা সহজে ঋণ পায়, তাদের দক্ষতা বিকাশ পায় এবং প্রযুক্তিগত কারিগরি সহায়তা যাতে তারা পায় তা নিশ্চিত করতে হবে। ডিজিটাল স্বশক্তিকরণের প্রস্তুতির পাশাপাশি ব্র্যান্ডকে তুলে ধরা এবং সেইসব পণ্যের যাতে বাজার পাওয়া যায় তাও নিশ্চিত করা যায়। কাঁচামাল নিশ্চিত করা দরকার। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য কেবলমাত্র কারিগর বা হস্তশিল্পীদের সমৃদ্ধ ধারাকেই বজায় রাখা নয় বরং তার আরও উন্নতিসাধন করা।

বন্ধুগণ,

দক্ষতা পরিকাঠামো ব্যবস্থাকে তাদের প্রয়োজন ভিত্তিক আমরা পুনর্নবীকরণ করতে চাই। আজ মুদ্রা যোজনার মাধ্যমে কোনো রকম ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি ছাড়াই কোটি কোটি টাকা ঋণ সরকার দিচ্ছে। কারিগরি বন্ধুদের ক্ষেত্রে এই প্রকল্প সর্বতো সুবিধাকে নিশ্চিত করেছে। ডিজিটাল সাক্ষরতা অভিযানে আমরা এই কারিগর বন্ধুদের অগ্রাধিকার দিতে চাই।

বন্ধুগণ,

আমাদের উদ্দেশ্য হল, আজকের যারা কারিগর আগামীদিনে তারা বড় উদ্যোগপতি হয়ে উঠুন। এজন্য তাদের সাব-বিজনেস মডেলে সুস্থায়িত্ব দরকার। একথা মাথায় রেখে আকর্ষণীয় নকশা তারা যে সমস্ত সামগ্রী প্রস্তুত করছেন তার আরও উন্নতি সাধনে আমরা চেষ্টা করছি। এর পাশাপাশি তার প্যাকেজিং এবং ব্র্যান্ডিং-এর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে ক্রেতাদের কথাও ভাবা দরকার। তারা কেবলমাত্র স্থানীয় বাজারেই জিনিসপত্র দেখছেন না, আন্তর্জাতিক বাজারের দিকেও তাদের চোখ রয়েছে। এখানে উপস্থিত সমস্ত অংশীদারদের আমি অনুরোধ করব তারা এইসব কারিগর বন্ধুদের হাতে হাত ধরে তাদের উন্নতির লক্ষ্যে এগিয়ে যান। সচেতনতা তৈরির মাধ্যমে তারা যাতে এগিয়ে যেতে পারেন তা নিশ্চিত করুন। এজন্য যা দরকার তা হল যতদুর সম্ভব এইসব কারিগরদের সঙ্গে যুক্ত হওয়া এবং তাদের স্বপ্ন যাতে ডানা মেলতে পারে তা নিশ্চিত করা। 

বন্ধুগণ,

কারিগর এবং হস্তশিল্পীদের আমরা সশক্তি প্রদান করতে পারি যদি তাদেরকে আমরা একটা মূল্য শৃঙ্খলের মধ্যে নিয়ে আসতে পারি। তাদের মধ্যে এমন অনেকেই রয়ছেন যারা এমএসএমই ক্ষেত্রে সরবরাহকারী এবং উৎপাদক হয়ে উঠতে পারেন। তাদেরকে যদি যন্ত্র এবং প্রযুক্তি দিয়ে সহায়তা করা যায় তাহলে অর্থনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হয়ে উঠতে পারেন তারা। শিল্প ক্ষেত্রও তাদের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারে তাদের প্রয়োজন ভিত্তিক এইসব লোকদের যুক্ত করে। শিল্পক্ষেত্র তাদের দক্ষতা বিকাশ এবং উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে পারে।

সরকার তাদের বিভিন্ন যোজনার মধ্যে সুসমন্বয় ঘটাতে পারে এবং ব্যাঙ্ক এই জাতীয় প্রকল্পে লগ্নি করতে পারে। এইভাবেই সমস্ত অংশীদারদের কাছেই তা একটা সুচারু এবং সুবান্ধব পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। কর্পোরেট সংস্থাগুলি সাশ্রয়ী মূল্যে অনেক উন্নতমানের পণ্য পেতে পারে। ব্যাঙ্ক এমন প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে পারে যা সম্পূর্ণ নির্ভর করা যায়। এ সবের মধ্যে দিয়ে সরকারের এইসব প্রকল্পকে ঘিয়ে এক সর্বাত্মক প্রভাব তৈরি করা সম্ভব।

আমাদের স্টার্টআপগুলি হস্তচালিত পণ্যের এক বিরাট বাজার ই-বাণিজ্য মডেলের মধ্যে দিয়ে তৈরি করতে পারে। এইসব পণ্য সামগ্রী স্টার্টআপগুলির কাছ থেকে উন্নত প্রযুক্তি, নকশা, প্যাকেজিং এবং অর্থলগ্নির সাহায্য পেতে পারে। আমি আশা করব বেসরকারী সংস্থাগুলির সঙ্গে সহযোগিতা গড়ে তুললে পিএম বিশ্বকর্মা যোজনার মাধ্যমে তা আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে। এর মধ্যে দিয়ে উদ্ভাবনের শক্তি, বেসরকারী ক্ষেত্রে  ব্যবসার পারদর্শিতার পূর্ণ সুবিধা লাভ করা সম্ভব।

বন্ধুগণ,

এখানে উপস্থিত সমস্ত অংশীদারদের আমি অনুরোধ করব তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে একটি সমর্থ কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুত করবে। প্রত্যন্ত এলাকায় আমরা পৌঁছানোর চেষ্টা করছি। এদের অনেকেই এই প্রথমবার সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাবে। আমাদের বেশিরভাগ ভাই-বোন, দলিত, আদিবাসী এবং অনগ্রসর এলাকা, অথবা তারা মহিলা এবং অন্য দুর্বল শ্রেণীভুক্ত। ফলে বাস্তবসম্মত এবং কার্যকরী কৌশল রচনা করা দরকার যাতে আমরা অভাবী মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারি এবং তাদেরকে পিএম বিশ্বকর্মা যোজনা সম্পর্কে অবগত করে তারা যাতে এই প্রকল্প থেকে সুবিধা পান তা সুনিশ্চিত করতে পারি।

সময়সীমা নির্দিষ্ট করে, লক্ষ্যপথ ধরে আমাদের কাজ করতে হবে এবং আমি স্থির নিশ্চিত আজকের এই আলোচনা প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে আপনাদের মাথায় বাজেটের বিষয়টিও রাখবেন। সেইসঙ্গে এই সমস্ত মানুষ এবং তাদের প্রয়োজনের দিকটা নির্দিষ্ট করবেন। কী পদ্ধতিতে কাজ করা যায় তা নিয়ে আপনারা ভাববেন। এই যোজনার কী নকশা হতে পারে? কী পণ্যই বা হতে পারে? আমরা যাতে সত্যি সত্যিই যাতে তাদের উপকার করতে পারি তা নিশ্চিত করতে হবে।

বন্ধুগণ,

আজ এই ওয়েবিনারের শেষ অধিবেশন। এ পর্যন্ত বাজেটের বিভিন্ন দিক নিয়ে আমরা ১২টি ওয়েবিনার আয়োজন করেছি। তা নিয়ে ক্ষুরধার বিশ্লেষণাত্মক আলোচনা হয়েছে। আগামীকাল থেকে সংসদের অধিবেশন শুরু হবে। নতুন আস্থা এবং নতুন পরামর্শ নিয়ে সদস্যরা সংসদে আসবেন। বাজেট পাশ হওয়ার প্রক্রিয়ায় এক নতুন উজ্জীবিত শক্তি লক্ষ্য করা যাবে। এই বিশ্লেষণাত্মক আলোচনা নিজ গুণে অনন্য সাধারণ। এটা একটা সুবিধাজনক উদ্যোগ। সমগ্র দেশ এবং প্রত্যেকটা জেলা এরসঙ্গে যুক্ত হয়। আপনারা যারা সময় বের করে নিয়ে এই ওয়েবিনারকে উৎকর্ষমন্ডিত করেছেন তাদের সকলকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ।

আরও একবার আজ এখানে উপস্থিত সকলকে আমি সাধুবাদ দিতে চাই। এ পর্যন্ত ওয়েবিনার যারা পরিচালনা করেছেন তাদেরকে আমি ধন্যবাদ দিই। অসাধারণ সমস্ত পরামর্শ দিয়ে এই প্রয়াসকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আপনাদের সর্বতো সাহায্য প্রশংসাযোগ্য।

আপনাদের সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা।

 

PG/AB/NS



(Release ID: 1906873) Visitor Counter : 152