প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

নতুন দিল্লির তালকাটোরা স্টেডিয়ামে দিল্লি – কর্ণাটক সংঘের ‘বরিসু কন্নড় দিমদিমাভা’ অমৃত মহোৎসবের সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী


“পুরাকাল থেকে কর্ণাটক ভারতের হনুমানের ভূমিকা পালন করেছে”

“কর্ণাটক ঐতিহ্য ও প্রযুক্তির ভূমি; ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্বের পাশাপাশি এখানে আধুনিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা রয়েছে”

“২০০৯-২০১৪ সালের মধ্যে কর্ণাটক রেল প্রকল্পের জন্য ৪ হাজার কোটি টাকা পেয়েছে; অন্যদিকে কেবলমাত্র এ বছরের বাজেটেই কর্ণাটকের রেল পরিকাঠামোর জন্য ৭ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে”

Posted On: 25 FEB 2023 7:55PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী নতুন দিল্লির তালকাটোরা স্টেডিয়ামে আজ ‘বরিসু কন্নড় দিমদিমাভা’ সাংস্কৃতিক উৎসবের সূচনা করেছেন। তিনি একটি প্রদর্শনীও ঘুরে দেখেন। আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের পাশাপাশি, কর্ণাটকের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও ইতিহাস উদযাপনের জন্য এই উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দিল্লি – কর্ণাটক সংঘ উজ্জ্বল ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। তিনি বলেন, দিল্লি – কর্ণাটক সংঘের ৭৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উৎসব এমন সময় পালন করা হচ্ছে, যখন দেশে স্বাধীনতার ৭৫ বছর উপলক্ষে অমৃত মহোৎসব উদযাপিত হচ্ছে। ‘কর্ণাটক সংঘের স্থাপনা দেশকে শক্তিশালী করার বিষয়ে জনগণের প্রতিশ্রুতিবদ্ধতার পরিচায়ক’ বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

কর্ণাটকের অবদান ছাড়া কখনই ভারতের ঐতিহ্য ও পরিচয়কে স্বীকৃতি দেওয়া যায় না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পৌরাণিককালে হনুমানের ভূমিকা বিশেষ ছিল, তেমনই কর্ণাটকও ভারতের উন্নয়নে একই ভূমিকা পালন করে।

মধ্যযুগে যখন বাইরে থেকে আসা বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী ভারতে সোমনাথের মতো শিবলিঙ্গ ধ্বংস করেছিল, তখন দেভারা দাসিমায়া, মাদারা চেন্নাইয়া, দোহারা, কাক্কাইয়া এবং ভগবান বাসবেশ্বরের মতো সাধু-সন্তরা মানুষের বিশ্বাস ফিরিয়ে আনেন। একইভাবে, রানী আবাক্কা, ওনাকে, ওবাভা, রানী চেনাম্মা, ক্রান্তিবীরা সাঙ্গোলির মতো যোদ্ধারা বিদেশি শক্তির মোকাবিলা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পরও কর্ণাটকের প্রতিনিধিরা ভারতকে বারবার উদ্বুদ্ধ করেছে।

প্রধানমন্ত্রী ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’ – এর মন্ত্রে জীবনযাপনের জন্য কর্ণাটকবাসীর প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, কবি কুভেম্পুর, ‘নাদ-গীত’ জাতীয় অনুভূতিকে সুন্দ্রভাবে ব্যাখ্যা করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত গণতন্ত্রের ধাত্রীভূমির নীতিতে পরিচালিত এবং এই নীতিকে সঙ্গে নিয়েই জি-২০’র মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার সভাপতিত্ব করছে। তিনি বলেন, ভগবান বাসবেশ্বরের একটি মূর্তি উদ্বোধন করার সুযোগ তিনি পেয়েছিলেন।

‘কর্ণাটক ঐতিহ্য ও প্রযুক্তির অন্যতম পীঠস্থান হিসাবে পরিচিত। ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্বের পাশাপাশি এর আধুনিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিশেষভাবে পরিচিত। প্রধানমন্ত্রী দিনের শুরুতে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলাজোর সঙ্গে তাঁর বৈঠকের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, আগামী কাল বেঙ্গালুরুতে তাঁর পরবর্তী কর্মসূচি থাকায় তিনি আনন্দিত। শ্রী মোদী বলেন, ঐতিহ্য ও প্রযুক্তি হ’ল আধুনিক ভারতের মূল ভাবনা। দেশ উন্নয়ন ও ঐতিহ্যকে একসঙ্গে নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে। একদিকে ভারত যেমন প্রাচীন মন্দির ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলির সংস্কার করছে, অন্যদিকে ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থায় বিশ্বকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। বর্তমানে ভারত বিদেশ থেকে নিজের চুরি হয়ে যাওয়া সামগ্রী ফিরিয়ে আনছে এবং প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে রেকর্ডও করছে। তিনি বলেন, “নতুন ভারতের এই উন্নয়নযাত্রা উন্নত দেশ হিসাবে নিজেদের গড়ে তোলার লক্ষ্যে পৌঁছতে সাহায্য করবে”।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বর্তমানে কর্ণাটকের উন্নয়ন দেশের এবং কর্ণাটক সরকারের অন্যতম প্রধান গুরুত্বের বিষয়”। তিনি বলেন, ২০০৯ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে কেন্দ্র কর্ণাটককে দিয়েছিল ১১ হাজার কোটি টাকা। অন্যদিকে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ এই সময়ের মধ্যে কর্ণাটককে কেন্দ্র দিয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা। ২০০৯-২০১৪ সালের মধ্যে কর্ণাটকে রেল প্রকল্পের জন্য ৪ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, এবারের বাজেটে কর্ণাটকে রেল পরিকাঠামোর উন্নয়নের জন্য ৭ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কর্ণাটকে বিগত ৯ বছরে জাতীয় সড়কের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকা করে প্রতি বছর ব্যয় করা হচ্ছে। অন্যদিকে, এর আগে ৫ বছরে দেওয়া হয়েছিল মাত্র ৬ হাজার কোটি টাকা। বর্তমান সরকার দীর্ঘ দিনের বকেয়া আপার ভদ্রা প্রকল্পের দাবিও পূরণ করছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দিল্লি – কর্ণাটক সংঘের ৭৫ বছর উন্নয়ন, সাফল্য ও জ্ঞানের ক্ষেত্রে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক সামনে নিয়ে এসেছে। আগামী ২৫ বছরের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অমৃতকালে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। দিল্লি – কর্ণাটক সংঘ আগামী ২৫ বছরে একইভাবে এগিয়ে চলবে বলে তিনি আশা করেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, শিক্ষা ও শিল্পের ক্ষেত্রে মূল লক্ষ্য দিতে হবে। কন্নড় ভাষার মাধুর্য ও এর সমৃদ্ধ সাহিত্যকে প্রচারের আলোয় আনতে হবে। তিনি বলেন, কন্নড় ভাষায় পাঠকের সংখ্যা অনেক বেশি এবং এই ভাষায় যখনই কোনও ভালো বই প্রকাশিত হয়, তখন কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই প্রকাশকদের তা পুনর্মুদ্রণে পাঠাতে হয়।

শিল্পের ক্ষেত্রে কর্ণাটকের বিশেষ সাফল্যের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শাস্ত্রীয় ও কর্ণাটকী ধারার সঙ্গীতের বিশেষভাবে সমৃদ্ধ এই রাজ্য ভরতনাট্যম্‌ এবং যক্ষগণ নৃত্যশৈলীও বিশেষ জনপ্রিয়। এগুলিকে আরও বেশি প্রচারের আলোয় আনতে হবে। দিল্লি ভিত্তিক কন্নড় পরিবারগুলিকে প্রধানমন্ত্রী এ ধরনের অনুষ্ঠানে কন্নড় নন এমন পরিবারকেও নিয়ে আসার আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কন্নড় ভাষার বেশ কিছু চলচ্চিত্র ইতিমধ্যেই বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। কর্ণাটক থেকে সফররত শিল্পী ও শিক্ষাবিদদের প্রধানমন্ত্রী জাতীয় যুদ্ধস্মারক, প্রধানমন্ত্রী সংগ্রহালয় এবং কর্তব্যপথ ঘুরে দেখার অনুরোধ জানান।

প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক মিলেট বর্ষের কথা উল্লেখ করে বলেন, সারা বিশ্বে এই উৎসব উদযাপিত হচ্ছে। ভারতীয় মিলেট শ্রী অন্ন-র মূল কেন্দ্র হচ্ছে কর্ণাটক। শ্রী অন্ন রাগি কর্ণাটকের সংস্কৃতি ও সামাজিক পরিচিতির বিশেষ অংশ। শ্রী ধান্য-র প্রচারের জন্য ইয়েদুরাপ্পাজীর সময় থেকেই কর্ণাটকের বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে বলে তিনি বলেন, সমগ্র বিশ্ব বর্তমানে শ্রী অন্ন-র উপকারিতা স্বীকার করে নিয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর চাহিদা আরও বাড়বে এবং এ থেকে উপকৃত হবেন কর্ণাটকের কৃষকরাও।

পরিশেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত যখন ২০৪৭ সালে স্বাধীনতার ১০০ বছর পূর্তি উদযাপন করবে, তখন দিল্লি – কর্ণাটক সংঘ তাদের শততম বর্ষে পদার্পণ করবে। অমৃতকালে দিল্লি – কর্ণাটক সংঘের ভূমিকাও আলোচিত হবে।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী প্রহ্লাদ যোশী, কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বাসবরাজ বোম্মাই, আদি চুনচানগিরি মঠের স্বামীজী শ্রী নির্মলানন্দ নাথ, উদযাপন কমিটির সভাপতি শ্রী সিটি রবি, দিল্লি – কর্ণাটক সংঘের সভাপতি শ্রী সি এম নাগরাজ সহ অন্যরা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

প্রেক্ষাপট:

প্রধানমন্ত্রীর ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’ চিন্তাভাবনার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে কর্ণাটকের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও ইতিহাস উদযাপনের জন্য ‘বরিসু কন্নড় ডিমডিমাভা’ সাংস্কৃতিক উৎসবের আয়োজন করা হয়। আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের আওতায় এই অনুষ্ঠান পালিত হচ্ছে। কর্ণাটকের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে নাচ, গান, কবিতা ও নাটকের মধ্য দিয়ে তুলে ধরছেন শতাধিক শিল্পী।

 

PG/PM/SB



(Release ID: 1903650) Visitor Counter : 125