প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

প্রধানমন্ত্রী ভিডিও বার্তার মাধ্যমে প্রথম সারা ভারত বার্ষিক রাজ্যের জলসম্পদ মন্ত্রীদের সম্মেলনে ভাষণ দিয়েছেন

“ওয়াটার ভিশন@২০৪৭ আগামী ২৫ বছরের জন্য অমৃতকাল যাত্রার এক গুরুত্বপূর্ণ দিক”

“কোনও অভিযানের সঙ্গে যখন জনগণ যুক্ত হন তাঁরা তখন কাজটির গুরুত্বও বুঝতে পারেন”

“যখন মানুষ স্বচ্ছ ভারত অভিযানে অংশ নিয়েছিল তখন তাঁদের মধ্যে সচেতনতাও জাগ্রত হয়েছিল”

“দেশ প্রতিটি জেলায় ৭৫টি অমৃত সরোবর তৈরি করছে যেখানে এরই মধ্যে ২৫ হাজার অমৃত সরোবর তৈরি হয়ে গেছে”

“প্রতিটি বাড়িতে জল পৌঁছনোর ব্যবস্থা করার ক্ষেত্রে জল জীবন মিশন রাজ্যের পক্ষে একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়নের মাপকাঠি”

“ ‘প্রতি ফোঁটায় আরও শস্য’ অভিযানে দেশের ৭০ লক্ষ হেক্টরের বেশি জমিকে এ পর্যন্ত ক্ষুদ্র সেচ ব্যবস্থার আওতায় আনা গেছে”

“গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির উচিৎ আগামী পাঁচ বছরের জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা যাতে জল সরবরাহ থেকে শুরু করে পরিচ্ছন্নতা এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত থাকবে”

“আমাদের নদীগুলি এবং জলাশয়গুলি সামগ্রিক জল পরিবেশের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ”

“নমামি গঙ্গে মিশনকে মাথায় রেখে নদী সংরক্ষণের জন্য রাজ্যগুলি একই ধরনের অভিযান শুরু করতে পারে”

Posted On: 05 JAN 2023 10:14AM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ৫ জানুয়ারি, ২০২৩


প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও বার্তার মাধ্যমে প্রথম সারা ভারত বার্ষিক রাজ্যের জলসম্পদ মন্ত্রীদের সম্মেলনে ভাষণ দিলেন। সম্মেলনের থিম - ‘ওয়াটার ভিশন@২০৪৭’। এর লক্ষ্য, দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়ন এবং মানবসম্পদের উন্নয়নের জন্য জলসম্পদের সঠিক ব্যবহার নিয়ে সমস্ত নীতিপ্রণেতাদের আলোচনার ব্যবস্থা করা।


সমাবেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী দেশের জলসম্পদ মন্ত্রীদের নিয়ে প্রথম সারা ভারত বার্ষিক সম্মেলনের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে বলেন যে জল নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ভারতে অভূতপূর্ব কাজ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে আমাদের সাংবিধানিক ব্যবস্থায় জলের বিষয়টি রাজ্যগুলির অধীন এবং দেশের সার্বিক লক্ষ্য অর্জনে জল সংরক্ষণে রাজ্যগুলির প্রয়াস সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে। শ্রী মোদী বলেন, “ওয়াটার ভিশন@২০৪৭ আগামী ২৫ বছরের জন্য অমৃতকাল যাত্রার এক গুরুত্বপূর্ণ দিক।


‘সম্পূর্ণ সরকার’ এবং ‘সম্পূর্ণ দেশ’ নিয়ে তাঁর ভাবনার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব সরকারকে এমনভাবে কাজ করতে হবে যেখানে জল মন্ত্রক, সেচ মন্ত্রক, কৃষি মন্ত্রক, গ্রাম ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রক এবং বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা মন্ত্রকের মধ্যে নিয়মিত আলাপ-আলোচনা হবে। তিনি আরও বলেন যে পরিকল্পনা আরও ভালো হবে যদি এইসব দপ্তরগুলি নিজেদের মধ্যে তথ্য এবং পরিসংখ্যান আদানপ্রদান করে।


শুধুমাত্র সরকারের প্রয়াসেই সাফল্য আসতে পারে না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী সাধারণ মানুষ, সামাজিক সংস্থা ও সুশীল সমাজের ভূমিকার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং জল সংরক্ষণ সংক্রান্ত অভিযানে তাঁদের আরও বেশি করে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান। শ্রী মোদী এর ব্যাখ্যা করে বলেন যে জনগণের অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতা কমে না, আর এর মানে এই নয় যে সব দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে সাধারণ মানুষের ওপর। তিনি আরও বলেন, জনগণের অংশগ্রহণের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, অভিযান চালাতে যে প্রয়াস নেওয়া হচ্ছে এবং যে অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে সে সম্পর্কে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হয়। তিনি বলেন, “কোনও অভিযানের সঙ্গে যখন জনগণ যুক্ত হন তাঁরা তখন কাজটির গুরুত্বও বুঝতে পারেন। এর জন্য কোনও কর্মসূচি বা অভিযানের প্রতি মানুষের একটা একাত্মতা গড়ে ওঠে।”


প্রধানমন্ত্রী স্বচ্ছ ভারত অভিযানের উদাহরণ দেন এবং বলেন, “যখন মানুষ স্বচ্ছ ভারত অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন তখন তাঁদের মধ্যে সচেতনতাও জাগ্রত হয়েছিল।” মানুষের প্রয়াসের জন্য তাঁদের কৃতিত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে সরকার অনেক উদ্যোগ নিয়েছে, তা সে নোংরা সরাতে সম্পদ সংগ্রহই হোক বা একাধিক জল শোধন কেন্দ্র অথবা শৌচাগার নির্মাণই হোক, এই অভিযানের সাফল্য তখনই নিশ্চিত হয়েছে যখন মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে কোনরকম নোংরা থাকবে না। শ্রী মোদী জল সংরক্ষণে জনগণের অংশগ্রহণের এই ধারণাকে জাগ্রত করার ওপর জোর দেন এবং এই সচেতনতা সৃষ্টির যে প্রভাব, সেটিও তুলে ধরেন।


প্রধানমন্ত্রী পরামর্শ দেন, “আমরা ‘জল সচেতনতা উৎসব’-এর আয়োজন করতে পারি অথবা জায়গায় জায়গায় যে মেলা হয় তাতে জল সচেতনতার বিষয়েও কোনও অনুষ্ঠান রাখতে পারি।” স্কুলে পাঠ্যসূচি থেকে শুরু করে নানা ধরনের কাজকর্মে অভিনব উপায়ে এই বিষয়ে তরুণ সমাজের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন তিনি। শ্রী মোদী জানান দেশে প্রতিটি জেলায় ৭৫টি করে অমৃত সরোবর তৈরি করা হবে, যেখানে এরই মধ্যে ২৫ হাজার অমৃত সরোবর তৈরি হয়ে গেছে। সমস্যা চিহ্নিত করতে এবং তার সমাধান খুঁজতে প্রযুক্তি, শিল্প এবং স্টার্ট-আপগুলির মধ্যে সংযোগ ঘটানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, জিও-সেন্সিং এবং জিও-ম্যাপিং-এর মতো প্রযুক্তি অনেক উপকারে আসতে পারে। জল সংক্রান্ত বিষয়ের মোকাবিলায় নীতি প্রণয়নের স্তরে সরকারি নীতি এবং আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সংস্কার করার ওপর জোর দেন তিনি।


প্রতিটি বাড়িতে জল পৌঁছনোর ব্যবস্থা করার ক্ষেত্রে রাজ্যের পক্ষে একটি প্রধান উন্নয়নের মাপকাঠি হিসেবে ‘জল জীবন মিশন’-এর সাফল্যের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক রাজ্যই ভালো কাজ করেছে, আবার অনেক রাজ্য ঐ লক্ষ্যে এগোচ্ছে। তাঁর সুপারিশ, একবার কোনও জায়গায় ব্যবস্থা বহাল হলে আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে তা যেন ভবিষ্যতেও বহাল থাকে। তাঁর প্রস্তাব, গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি ‘জল জীবন মিশন’-এর নেতৃত্ব দিক এবং কাজ সম্পূর্ণ হলে তাদেরই জানানো উচিৎ যে পর্যাপ্ত পরিমাণে পরিষ্কার জল পাওয়া যাচ্ছে কিনা। শ্রী মোদী বলেন, “প্রত্যেক গ্রাম পঞ্চায়েত মাসে মাসে বা তিনমাসে একবার অনলাইন রিপোর্ট দিয়ে জানাতে পারে যে গ্রামে কতগুলি বাড়ি কলের জল পাচ্ছে।” তিনি আরও বলেন যে জলের গুণমান নিশ্চিত করার জন্য নিয়মিত জল পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।

 

প্রধানমন্ত্রী, শিল্প এবং কৃষি - দুই ক্ষেত্রেই জলের প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করেন এবং জল নিরাপত্তা বিষয়ে তাদের সচেতন করে তুলতে বিশেষ অভিযানের সুপারিশ করেন। তিনি জল সংরক্ষণের ক্ষেত্রে একইসঙ্গে একাধিক ফসলের চাষ এবং প্রাকৃতিক চাষের মতো পদ্ধতির ইতিবাচক প্রভাবের উদাহরণ দেন। তিনি ‘প্রধানমন্ত্রী কৃষি সেচ কর্মসূচি’র অধীনে শুরু হওয়া ‘প্রতি ফোঁটায় আরও বেশি ফসল’ অভিযানের ওপর আলোকপাত করে জানান যে এ পর্যন্ত ক্ষুদ্র সেচের আওতায় দেশের ৭০ লক্ষ হেক্টরের বেশি জমি আনা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, “সব রাজ্যের উচিৎ ক্ষুদ্র সেচকে নিয়মিত উৎসাহ দেওয়া।” তিনি ‘অটল ভূ-জল সংরক্ষণ যোজনা’র উদাহরণ দেন যেখানে ভূগর্ভস্থ জল পূরণে বৃহৎ মাত্রায় জল সংরক্ষণ জরুরি। তিনি পার্বত্য অঞ্চলের ঝর্নাগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করার কাজ দ্রুতগতিতে করার ওপরও জোর দেন।

 

জল সংরক্ষণে রাজ্যগুলিকে বনাঞ্চলের পরিমাণ বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার ওপর আলোকপাত করে শ্রী মোদী পরিবেশ মন্ত্রক এবং জল মন্ত্রককে সমন্বিত প্রয়াস চালানোর আহ্বান জানান। তিনি জলের স্থানীয় সব উৎসগুলি সংরক্ষণের দিকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানান এবং বলেন যে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির উচিৎ আগামী পাঁচ বছরের জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা যাতে জল সরবরাহ থেকে পরিচ্ছন্নতা এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। প্রধানমন্ত্রী রাজ্যগুলিকে এমন ব্যবস্থা নিতে বলেন যাতে পঞ্চায়েত স্তরে জলের জন্য বাজেট তৈরি করা যায়। কোন গ্রামে কতটা জল প্রয়োজন এবং তার জন্য কি করা উচিৎ তার ভিত্তিতে এই বাজেট তৈরি হবে। ‘বৃষ্টির জল ধরো’ অভিযানের সাফল্যের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ধরনের অভিযান রাজ্য সরকারের প্রয়োজনীয় অংশ হওয়া উচিৎ যেখানে প্রতি বছর এর মূল্যায়ন করা হবে। তিনি আরও বলেন, “বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করার পরিবর্তে বৃষ্টি আসার আগেই পরিকল্পনা করে নিতে হবে।”

 

জল সংরক্ষণের ক্ষেত্রে চক্রাকার অর্থনীতির গুরুত্বের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান যে এবারের বাজেটে চক্রাকার অর্থনীতির ওপর প্রভূত জোর দিয়েছে সরকার। তিনি বলেন, “যখন পরিশোধিত জল পুনরায় ব্যবহার করা হয়, তখন নতুন জল সংরক্ষিত হয়। এতে সার্বিকভাবে পরিবেশের উন্নতি হয়। এজন্য জল পরিশোধন এবং জলের পুনর্ব্যবহার জরুরি।” বিভিন্ন প্রয়োজনে ‘পরিশোধিত জল’ পুনরায় ব্যবহার করার উপায় খুঁজতে হবে রাজ্যগুলিকে - একথার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের নদীগুলি এবং জলাশয়গুলি সামগ্রিক জল পরিবেশের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ।” শ্রী মোদী প্রতিটি রাজ্যে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং নিকাশি পরিশোধনের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার ওপর জোর দেন। পরিশেষে শ্রী মোদী বলেন, “নমামি গঙ্গে মিশনকে মাথায় রেখে রাজ্যগুলি নদী সংরক্ষণের জন্য একই ধরনের অভিযান শুরু করতে পারে। প্রত্যেকটি রাজ্যের দায়িত্ব জলকে সহযোগিতা এবং সমন্বয়ের বিষয় করে তোলা।”

 

সব রাজ্যের জলসম্পদ মন্ত্রী জল শীর্ষক প্রথম সারা ভারত বার্ষিক রাজ্য মন্ত্রীদের সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

PG/AP/DM



(Release ID: 1889086) Visitor Counter : 170