প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

উত্তরপ্রদেশের জালাউঁতে বুন্দেলখন্ড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

Posted On: 16 JUL 2022 4:05PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১৬  জুলাই, ২০২২

 

ভারত মাতা কি জয় !

ভারত মাতা কি জয় !

ভারত  মাতা কি জয় !

জয় বুন্দেলখন্ড

বেদব্যাসের জন্মভূমি এবং মহারানী লক্ষ্মীবাঈ-য়ের অঞ্চলে আবারও আমার আসার সৌভাগ্য হল। আমি এর জন্য অত্যন্ত আনন্দিত। নমস্কার !

উত্তরপ্রদেশের জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথজি, উপমুখ্যমন্ত্রীরা শ্রী কেশব প্রসাদ মৌর্যজি এবং শ্রী বৃজেশ পাঠকজি, এই অঞ্চলের প্রতিনিধি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মী শ্রী ভানুপ্রতাপ সিংজি, উত্তরপ্রদেশ সরকারের মন্ত্রীরা, সাংসদ, বিধায়ক, অন্যান্য জনপ্রতিনিধি এবং আমার বুন্দেলখন্ডের ভাই ও বোনেরা,

আধুনিক বুন্দেলখন্ড এক্সপ্রেসওয়ের জন্য বুন্দেলখন্ডের ভাই-বোন এবং উত্তরপ্রদেশের জনসাধারণকে অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন ! এই এক্সপ্রেসওয়ে বুন্দেলখন্ডের গৌরবজ্জ্বল ঐতিহ্যকে উৎসর্গ করা হল। উত্তরপ্রদেশের একজন সাংসদ হিসেবে, জনপ্রতিনিধি হিসেবে বুন্দেলখন্ডকে এই এক্সপ্রেসওয়ে উপহার দেওয়ার জন্য আমি অত্যন্ত আনন্দিত। বুন্দেলখন্ড অগণিত যোদ্ধা উপহার দিয়েছে যাঁদের রক্তে ভারতের জন্য কাজ করার অদম্য উৎসাহ রয়েছে, যাদের শৌর্য্য ও কঠোর পরিশ্রম দেশকে মহিমান্বিত করে তোলে।

ভাই ও বোনেরা,    

অনেকদিন ধরেই আমি উত্তরপ্রদেশে আসা-যাওয়া করি। উত্তরপ্রদেশবাসীর আর্শীবাদে গত ৮ বছর ধরে আমি দেশের প্রধান সেবক হিসেবে কাজ করছি। আমি সবসময় বিশ্বাস করি যে উত্তরপ্রদেশে যদি দুটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদানকে যুক্ত করা যায়, যদি এই রাজ্যের পিছিয়ে পড়ার কারনগুলিকে ঠিক করা যায় তাহলে রাজ্য আরও শক্তিশালী হয়ে বিভিন্ন সমস্যার সমস্যার সহজেই সমাধান করতে পারবে। প্রথম উপাদানটি ছিল রাজ্যের খারাপ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি। আর দ্বিতীয় উপাদানটি ছিল রাজ্যের অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা। আজ যোগী আদিত্যনাথজির নেতৃত্বে উত্তরপ্রদেশের জনসাধারণ পুরো চিত্রটি বদলে ফেলেছে। যোগীজির নেতৃত্বে সরকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটিয়েছে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থায় গতি এনেছে। স্বাধীনতার পর গত ৭ দশকে যখনই উত্তরপ্রদেশে নানা আধুনিক পরিকাঠামোর জন্য কাজ করা হয়েছে ,  তার বেশিরভাগ কাজই হয়েছে ইদানিংকালে। কি ঠিক বললাম তো? বুন্দেলখন্ড এক্সপ্রেসওয়ে চিত্রকূট ও দিল্লির মধ্যে যোগাযোগের সময় ৩-৪ ঘণ্টা কমিয়ে দিয়েছে। এই মহাসড়ক শুধুমাত্র এই অঞ্চলের গাড়ির গতিবেগই বাড়াবে না, পাশাপাশি বুন্দেলখন্ডে শিল্পায়নের গতি আনবে। গুদামঘর এবং হিমঘর সহ বিভিন্ন শিল্প এক্সপ্রেসওয়ের দুদিক গড়ে উঠবে। কৃষি ভিত্তিক শিল্পের জন্য এই এক্সপ্রেসওয়ে সহায়ক হবে। কারন এখান থেকে কৃষিপণ্য নতুন নতুন বাজারে পরিবহণ করা যাবে। বুন্দেলখন্ডে প্রতিরক্ষা করিডরেও এক্সপ্রেসওয়ে সহায়তা করবে। এক কথায় এই এক্সপ্রেসও বুন্দেলখন্ডের প্রতিটি কোনায় উন্নয়নকে পৌঁছে দেবে, স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে সাহায্য করবে এবং নতুন নতুন সুযোগ তৈরি করবে।

বন্ধুগণ,

একটা সময় ছিল যখন মনে করা হতো পরিবহণের আধুনিক সুযোগ-সুবিধাগুলি শুধুমাত্র মুম্বাই, চেন্নাই, কলকাতা, বেঙ্গালুরু, হায়দ্রাবাদ ও দিল্লির জন্য বরাদ্দ। কিন্তু এখন সরকারের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মানসিকতাও বদলেছে। মোদী এবং যোগী একসঙ্গে পুরনো কাজের ধারাকে সরিয়ে নতুনভাবে এগিয়ে  চলেছেন। দেশের বড় বড় শহরগুলির মতো ছোট শহরগুলিকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশের ছোট ছোট শহরে বড় শহরগুলির মতোই নানা প্রকল্পের সূচনা হয়েছে। বুন্দেলখন্ড এক্সপ্রেসওয়ে চিত্রকূট, বান্দা, হামিরপুর, মাহোবা, জালাউুঁ, আউরিয়া এবং এটাওয়ার মধ্যে দিয়ে গেছে। পূর্বাঞ্চল এক্সপ্রেসওয়ে লক্ষ্ণৌ ছাড়াও বারাবাঁকি, আমেঠি, সুলতানপুর, অযোধ্যা, আম্বেদকরনগর,  আজমগড়, মৌ ও গাজিপুরের মধ্যে দিয়ে গেছে। গোরক্ষপুর লিঙ্ক এক্সপ্রেসওয়ে আম্বেদকরনগর, সন্ত কবীর নগর এবং আজমগড়কে যুক্ত করেছে। গঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে মিরাট, হাপুর, বুলন্দ শহর, আমরোহা, সম্বল, বাদাউুঁ, শাহজাহানপুর, হারদৈ, উন্নাও, রায়বেরিলী, প্রতাপগড় এবং প্রয়াগরাজকে সংযুক্ত করবে।  আপনারা দেখতে পাচ্ছেন বিপুল কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হচ্ছে। উত্তরপ্রদেশের প্রতিটি অঞ্চল নতুন স্বপ্ন ও সংকল্প নিয়ে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলার জন্য প্রস্তুত। সবকা সাথ সবকা বিকাশের এটি আদর্শ উদাহরণ। সকলকে নিয়ে একসঙ্গে এগিয়ে চলতে হবে। ডাবল ইঞ্জিন সরকার সেই লক্ষ্যেই কাজ করে চলেছে। রাজ্যের ছোট ছোট শহরগুলির সঙ্গে বিমান যোগাযোগ গড়ে তোলা হচ্ছে। সম্প্রতি প্রয়াগরাজ এবং গাজিয়াবাদে বিমান বন্দরের নতুন টার্মিনাল তৈরি করা হয়েছে। কুশিনগরের বিমানবন্দরে বিমান ওঠা-নামা চলছে। নয়ডার জেওয়ারে নতুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর গড়ে তোলার কাজ চলছে। উত্তরপ্রদেশের আরও শহরে বিমান পরিষেবার ব্যবস্থা করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পর্যটন শিল্প এরফলে উপকৃত হবে। এই অনুষ্ঠান মঞ্চে ওঠার আগে আমাকে বুন্দেলখন্ড এক্সপ্রেসওয়ে সম্পর্কে জানানো হচ্ছিল। আমি একটি উপস্থাপনায় দেখলাম এই অঞ্চলে অনেকগুলি দূর্গ রয়েছে। যারা বিদেশে গেছেন তারা অনেকেই জানেন ইউরোপে অনেক দেশে দূর্গকে ঘিরে পর্যটন শিল্প আবর্তিত হয়। পৃথিবীর নানা প্রান্তের মানুষ পুরনো দূর্গ দেখতে জড়ো হন। বুন্দেলখন্ড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধনের পর আমি যোগীজির সরকারকে অনুরোধ করবো দূর্গগুলিকে নিয়ে একটি পর্যটন সার্কিট গড়ে তোলার জন্য। আমি যোগীজিকে আরও অনুরোধ জানাবো রাজ্যের তরুণ-তরুণীদেরকে নিয়ে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করুন। কত দ্রুত এই সব দুর্গে পৌছানো যায়।  এই রাস্তা প্রথাগত রাস্তা অনুযায়ী হবে না বরং বলা ভালো দূর্গগুলিতে পৌঁছানোর জন্য বেশ শক্ত রাস্তায় হবে। আপনারা দেখবেন উত্তরপ্রদেশের হাজার হাজার যুবক-যুবতী এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন এবং যথেষ্ট কঠিন প্রতিকূল পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছেন। যিনি সব থেকে দ্রুত দূর্গের চূড়ায় পৌঁছাতে পারবেন তিনি সরকারের সহায়তায় এই অঞ্চলের জীবিকার সুযোগও পাবেন। বন্ধু তাহলে বুঝতেই পারছেন এক্সপ্রেসওয়ে থেকে কতো রকমের সুযোগ তৈরি হতে পারে।

বন্ধুগণ,

উত্তরপ্রদেশে ডাবল ইঞ্জিন সরকার যেভাবে আধুনিক নানা উদ্যোগের অঙ্গ নিয়েছে তার অভূতপূর্ব ফল এখন পাওয়া যাচ্ছে। বন্ধুরা, আপনাদের মনে আছে আমি কি বলেছিলাম? উত্তরপ্রদেশের সরযূ নদীর খাল প্রকল্পে ৪০ বছর লেগে গেছে। গোরক্ষপুরে সার কারখানা ৩০ বছর বন্ধ ছিল। অর্জুন জলাধার প্রকল্প শেষ করতে ১২ বছর লেগেছে। আমেঠি রাইফেল ফ্যাক্টরির শুধুমাত্র একটি বোর্ড টাঙানো ছিল। রায়বেরিলীতে কোনো কামরা তৈরি হতো না, সেখানে কামরাগুলিকে নতুন করে সাজানো হতো। আজ উত্তরপ্রদেশে যেভাবে পরিকাঠামোর উন্নয়নে কাজ হচ্ছে তার ফলে এই রাজ্যে অনেক উন্নত রাজ্যকে পিছনে ফেলে এগিয়ে চলেছে। আপনারা কি এরজন্য গর্বিত নন?

বন্ধুগণ,

শুধুমাত্র মহাসড়ক বা বিমান পথই নয়, উত্তরপ্রদেশ শিক্ষা, উৎপাদনশিল্প ও কৃষিকাজে সমানভাবে এগিয়ে চলেছে। আগে এই রাজ্যে বছরে মাত্র ৫০ কিলোমিটার রেলপথের দ্বিতীয় লাইন বসানো হতো। আজ আমাদের সরকার আসার পর গড়ে প্রতি বছর ২০০ কিলোমিটার রেললাইন বসানোর কাজ হচ্ছে। ২০১৪ সালের আগে মাত্র ১১ হাজার কমন সার্ভিস সেন্টার ছিল। আজ এই সংখ্যা ১ লক্ষ ৩০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আগে মাত্র ১২টি মেডিকেল কলেজ ছিল  এই রাজ্যে। আজ ৩৫টির বেশি মেডিকেল কলেজ গড়ে উঠেছে, আরো ১৪টি কলেজের কাজ চলছে।

ভাই ও বোনেরা,

দেশের উন্নয়ন আজ দুটি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে এগিয়ে চলেছে। একটি হল ইচ্ছাশক্তি আর একটি হল মর্যাদা। আমরা দেশে নতুন নতুন সুবিধা যেমন গড়ে তুলছি একইসঙ্গে দেশের ভবিষ্যৎকেও শক্তিশালী করা হচ্ছে। আমরা পিএম গতিশক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যানের সাহায্যে একবিংশ শতাব্দীর সময়োপযোগী পরিকাঠামো গড়ে তুলছি।

আর বন্ধুরা,

উন্নয়নে বিষয়ে আমাদের অঙ্গীকার হল আমরা নির্ধারিত সময়কে কখনই অতিক্রম করবো না। কাশীতে আমাদের সরকার সৌন্দ্যার্যায়নের কাজ শুরু করেছে। আমাদের সরকারই সেই কাজ শেষ করেছে। আমাদের সরকার গোরক্ষপুরে এইমস-এর শিলান্যাস করেছে এবং তার উদ্বোধনও করেছে। আমাদের সরকার দিল্লি-মিরাট এক্সপ্রেসওয়ের শিলান্যাস এবং উদ্বোধন দুটিই করেছে। বুন্দেলখন্ড এক্সপ্রেসওয়েও আর একটি উদাহরণ তৈরি করেছে। আগামী বছর ফেব্রুয়ারি মাসে এই এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধনের কথা ছিল। কিন্ত ৭-৮ মাস আগেই এটি ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়া হল। করোনার সময় কতটা সমস্যা ছিল সেটি প্রত্যেক পরিবার জানেন। অথচ এই সমস্যার মধ্যেও এই প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ করেছি। এর ফলে প্রত্যেক দেশবাসী বুঝতে পারছেন যে ভোট তিনি দিয়েছেন তাকে সম্মান জানানো হচ্ছে। আমি যোগীজি এবং তাঁর দলের সদস্যদের এরজন্য অভিনন্দন জানাই।

বন্ধুগণ,

যখন আমি কোনো সড়ক, হাসপাতাল বা কারখানার উদ্বোধন করি তখন আমার মনে হয় আমি ভোটদাতাদের সম্মান জানাচ্ছি। কারন তাঁরা এই সরকার গঠন করেছেন আর আমি তাঁদের কিছু সুযোগ-সুবিধা করে দিচ্ছি। আজ সারা বিশ্ব ভারতের দিকে বিপুল আশা নিয়ে তাকিয়ে আছে। আমরা স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষ উদযাপন করছি। আমরা আগামী ২৫ বছর কি করবো তার পরিকল্পনা করছি। আজ যখন আমি বুন্দেলখন্ডে এসেছি যা ঝাঁসির রানী লক্ষ্মীবাঈয়ের অঞ্চল, আমি এই অঞ্চলের ৬ লক্ষের বেশি গ্রামের বাসিন্দাদের কাছে একটি অনুরোধ রাখবো। আমরা আমাদের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন আমাদের পূর্বপুরুষদের প্রতি উৎসর্গ করবো কারন তাঁরা শত শত বছর নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। ১৫ই আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করার আহ্বান জানাচ্ছি। স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব উদযাপন করার জন্য গ্রামগুলির পরিকল্পনা করা উচিত। আমরা প্রত্যেক গ্রামে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মরণ করবো এবং একটি নতুন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো। আজ এই বীরভূমি থেকে আমি সমস্ত দেশবাসীর উদ্দেশে এই আহ্বান জানাচ্ছি।

বন্ধুগণ,

আজ ভারতে এমন কিছু করা উচিত নয় যা বর্তমানে উচ্চাকাঙ্খার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে করা হচ্ছে না। আজ প্রত্যেকটি সিদ্ধান্ত ও নীতি এমনভাবে গ্রহণ করতে হবে যাতে দেশের উন্নয়নে গতি আসে। দেশের জন্য যা ক্ষতিকারক, যা দেশের উন্নয়নের পক্ষে খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে আমাদের সেগুলির থেকে দূরে থাকা উচিত। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর ভারত উন্নয়নের জন্য বিপুল সুযোগ পেয়েছে। আজ নতুন ভারত গড়ার জন্য আমাদের আরও সক্রিয় হতে হবে। নতুন ভারতের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এই বিষয়গুলিতে আমরা যদি এখনই সক্রিয় না হই তাহলে ভারতের তরুণ প্রজন্মের জন্য এবং বর্তমান পরিস্থিতির জন্য তা ক্ষতিকারক হতে পারে। আপনাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারময় হয়ে যেতে পারে। আর তাই আপনাদের সতর্ক হতে হবে। এখন আমাদের দেশে ভোট পাওয়ার জন্য উপহার দেওয়ার প্রবনতা দেখা দিয়েছে। দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে এই পাইয়ে দেওয়ার সংস্কৃতি অত্যন্ত বিপজ্জনক। আমার প্রিয় দেশবাসী এবং যুব বন্ধুরা আপনারা এই পাইয়ে দেওয়ার সংস্কৃতির বিষয়ে সতর্ক থাকুন। যারা এই সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী তারা কখনই আপনাদের জন্য নতুন এক্সপ্রেসওয়ে, বিমান বন্দর, প্রতিরক্ষা করিডর তৈরি করবেন না। তাঁরা মনে করবেন তাঁরা কিছু উপহার দিয়ে মানুষকে কিনে নেবেন। আজ দেশের এই পাইয়ে দেওয়ার সংস্কৃতিটিকে আমাদের সরিয়ে ফেলতে হবে।

বন্ধুগণ,

পাইয়ের দেওয়ার রাজনীতির বদলে আমাদের মানুষের আকাঙ্খা পূরণের জন্য রাস্তা তৈরি করতে হবে, নতুন রেললাইন বানাতে হবে। আমরা দরিদ্রদের জন্য পাকা বাড়ি বানাচ্ছি। বহু দশক ধরে অসমাপ্ত থাকা সেচ প্রকল্পের কাজ শেষ করছি, অনেক ছোট ও বড় জলাধার নির্মাণ করছি, দরিদ্র মানুষদের এবং কৃষকদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে নতুন নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তুলছি যাতে দেশের যুব সম্প্রদায়কে অন্ধকারে নিমজ্জিত হতে না হয়।

বন্ধুগণ,

কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে একজন জনসাধারণের জন্য তাঁর জীবন উৎসর্গ করতে পারেন। আমাদের ডাবল ইঞ্জিন সরকার দেশের যেখানে যেখানে রয়েছে সেখানে তারা উন্নয়নের জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে। ডাবল ইঞ্জিন সরকারগুলি পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়, তারা উপহার বিলোনোর মতো শর্টকাট পদ্ধতি মেনে চলে না। রাজ্যের ভবিষ্যৎ উন্নত করতে এই সরকারগুলি কঠোর পরিশ্রম করে।

বন্ধুগণ,

আজ আমি আরও একটি জিনিস আপনাদের বলবো। দেশের সুষম উন্নয়ন এবং ছোট ছোট শহর ও গ্রামে আধুনিক পরিকাঠামো গড়ে তুললে প্রকৃত অর্থে সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠা হয়। পূর্ব ভারত এবং বুন্দেলখন্ডের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে নানা সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। আজ যখন আধুনিক পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে এবং সামাজিক ন্যায় সুনিশ্চিত হচ্ছে, যখন উত্তরপ্রদেশের প্রত্যেকটি জেলায় উন্নয়ন হচ্ছে তখন সেটি এক ধরনের সামাজিক ন্যায়। গ্রামে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা, প্রত্যেক বাড়িতে রান্নার গ্যাস পৌঁছে দেওয়া, দরিদ্রদের জন্য পাকা বাড়ি ও শৌচাগার নির্মাণ সামাজিক ন্যায়কে শক্তিশালী করছে। আমাদের সরকারের বিভিন্ন সামাজিক ন্যায় প্রকল্প থেকে বুন্দেলখন্ডের মানুষরা উপকৃত হচ্ছেন।

ভাই ও বোনেরা,

আমাদের সরকার বুন্দেলখন্ডের একটি বড় সমস্যার সমাধান করছে। জল জীবন মিশনের আওতায় আমরা প্রত্যেকের বাড়িয়ে নল বাহিত জল পৌঁছে দিচ্ছি। বুন্দেলখন্ডের লক্ষ লক্ষ পরিবারে জলের সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আমাদের মা ও বোনেরা এর থেকে অনেক উপকৃত হয়েছেন কারন তাঁদের দূর্দশা লাঘব হয়েছে। আমরা বুন্দেলখন্ডের নদীগুলি থেকে জল নিয়ে এই প্রকল্প কাজে লাগানোর চেষ্টা করছি। এরই উদ্যোগের ফসল রাতোলি ও ভাবনি জলাধার প্রকল্প এবং মাঝগাঁও-চিল্লি সেচ প্রকল্প। কেন- বেতোয়া সংযোগ প্রকল্পের জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এর ফলে বুন্দেলখন্ডে মানুষের জীবনযাত্রার পরিবর্তন আসবে।  

বন্ধুগণ,

বুন্দেলখন্ডের বন্ধুদের কাছে আমার একটি অনুরোধ, স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে দেশ অমৃত সরোবর খননের শপথ নিয়েছে। বুন্দেলখন্ডের প্রত্যেকটি জেলায় ৭৫টি অমৃত সরোবর খনন করতে হবে। এর ফলে ভবিষ্যৎ প্রকল্প জল সঙ্কট থেকে রেহাই পাবে। আজ আমি আপনাদের সকলের কাছে অনুরোধ রাখছি আপনারা এই মহতী কাজে বিপুল সংখ্যায় অংশগ্রহণ করুন। এর জন্য গ্রামে গ্রামে বার্তা ছড়িয়ে দিন।

ভাই ও বোনেরা,

বুন্দেলখন্ডে কুটির শিল্পের প্রসারের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের সরকারের আত্মনির্ভর ভারত অভিযানে কুটির শিল্পকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ভারতের কুটির শিল্পের সংস্কৃতিকে মেক ইন ইন্ডিয়া কর্মসূচি সাহায্য করবে। আজ এই প্রসঙ্গে আমি আপনাদের জানাবো একটি ছোট্ট উদ্যোগ কিভাবে বিপুল প্রভাব ফেলতে পারে। প্রতি বছর নানা দেশ থেকে ভারতে কোটি কোটি টাকার খেলনা আমদানি হতো। ভারতে খেলনা বানানোর একটি পারিবারিক ও ঐতিহ্যশালী শিল্প রয়েছে। এই দিকটি বিবেচনা করে আমি খেলনা শিল্পকে শক্তিশালী করার জন্য দেশবাসীর কাছে আবেদন জানাই,  তারা যাতে শুধুমাত্র ভারতে তৈরি খেলনাই কেনেন। খুব কম সময়ে যা যা করা সম্ভব সরকার সে কাজগুলি করেছে। আজ প্রত্যেক ভারতবাসী জেনে গর্বিত হবেন যে কিভাবে আমাদের দেশ একটি স্বপ্ন পূরণ করলো। আমাদের উদ্যোগের ফলে বিদেশ থেকে খেলনা আমদানি যথেষ্ট কমেছে। এখন ভারত থেকে বিদেশে খেলনা রপ্তানী হচ্ছে। এর সুফল কারা পাচ্ছেন? দরিদ্র, দলিত, পিছিয়ে পরা এবং উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষরা যাঁরা এই খেলনা তৈরি করেন তাঁরা সবথেকে উপকৃত। ঝাঁসি, চিত্রকূট এবং বুন্দেলখন্ডের খেলনা তৈরির একটি সমৃদ্ধ ঐতিহ্য রয়েছে। ডাবল ইঞ্জিন সরকার সেটিকে গুরুত্ব দিয়েছে।

বন্ধুগণ,

বুন্দেলখন্ডের নায়করা খেলার মাঠে বিজয় পতাকা উত্তোলন করেছেন। আজ বুন্দেলখন্ডের সন্তান মেজর ধ্যানচাঁদের নামে দেশের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ক্রীড়া পুরস্কারটি দেওয়া হচ্ছে। ধ্যানচাঁদজি তাঁর জীবনের একটি বড় সময় মিরাটে কাটিয়েছিলেন। সেই দিকটি বিবেচনা করে একটি ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা হচ্ছে। আমাদের বুন্দেলখন্ডের মেয়ে শাইলী সিং লং জাম্পে নতুন রেকর্ড করেছেন। গত বছর অনুর্দ্ধ ২০ ওয়ার্ল্ড অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পেয়ানশিপে সে রুপো জিতেছে। আমাদের সরকার দেশের যুব সম্প্রদায়ের জন্য নানা সুযোগ গড়ে তোলার কাজ করছে। এই অঞ্চলে উন্নত পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে যাতে এখান থেকে কাউকে অন্য কোথাও জীবিকার জন্য যেতে না হয়। উত্তরপ্রদেশ সুপ্রশাসনের নতুন উদাহরণকে আরও শক্তিশালী করে তুলুক। আরো একবার বুন্দেলখন্ড এক্সপ্রেসওয়ের জন্য আমি আপনাদের অভিনন্দন জানাই। আপনাদের মনে করিয়ে দিই ১৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রত্যেক বাড়িতে স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব আমরা উদযাপন করবো। সবাইকে অনেক অনেক অভিনন্দন ও ধন্যবাদ। আসুন আমরা সমস্বরে বলে উঠি

ভারত মাতা কি জয়!

ভারত মাতা কি জয়!

ভারত মাতা কি জয়!

অনেক অনেক ধন্যবাদ।

(প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি হিন্দিতে দিয়েছেন)

 

PG/CB/NS


(Release ID: 1842243) Visitor Counter : 311