প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

প্রধানমন্ত্রী জামনগরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরম্পরাগত চিকিৎসার আন্তর্জাতিক কেন্দ্রের শিলান্যাস করেছেন


এই চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপনে সহায়তার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহানির্দেশক প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন

বিশ্ব নেতৃবৃন্দ পরম্পরাগত চিকিৎসার এই আন্তর্জাতিক কেন্দ্রের জন্য ভারতকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন

“বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরম্পরাগত চিকিৎসার এই আন্তর্জাতিক কেন্দ্রটি পরম্পরাগত চিকিৎসা ক্ষেত্রে ভারতের অবদান ও সম্ভাবনাকে স্বীকৃতি দেয়”

“সমগ্র মানবজাতির সেবায় এক মহৎ দায়িত্ব হিসেবে ভারত এই অংশীদারিত্ব গ্রহণ করেছে”

“বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরম্পরাগত চিকিৎসার আন্তর্জাতিক কেন্দ্রটির সঙ্গে সঙ্গে রোগী কল্যাণের ক্ষেত্রে জামনগরের অবদান সারা বিশ্বে পরিচিতি লাভ করবে”

“এক গ্রহ আমাদের স্বাস্থ্য – এই স্লোগানের মধ্য দিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এক বিশ্ব এক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত ভারতের দৃষ্টিভঙ্গিকেই সমর্থন করে”

“ভারতের পরম্পরাগত চিকিৎসা পদ্ধতি কেবল নিরাময়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই; এটি আসলে জীবনের এক সার্বিক বিজ্ঞান”

Posted On: 19 APR 2022 6:43PM by PIB Kolkata
নতুন দিল্লি, ১৯ এপ্রিল, ২০২২
 
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ জামনগরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) পরম্পরা গত চিকিৎসার আন্তর্জাতিক কেন্দ্রের শিলান্যাস করেছেন। এই উপলক্ষে মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী মিঃ প্রবিন্দ কুমার জগন্নাথ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহানির্দেশক ডাঃ টেড্রস ঘেব্রেইসাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পরম্পরাগত চিকিৎসার ক্ষেত্রে এটি বিশ্বে এধরণের একমাত্র কেন্দ্র হয়ে উঠতে চলেছে। বিশ্ব কল্যাণে এই কেন্দ্রটি এক আন্তর্জাতিক হাব হয়ে উঠবে। এই উপলক্ষে বাংলাদেশ, ভূটান ও নেপালের প্রধানমন্ত্রী এবং মলদ্বীপের রাষ্ট্রপতির ভিডিও বার্তা শোনানো হয়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ডাঃ মনসুখ মান্ডভিয়া, শ্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল, শ্রী মুঞ্জাপারা মহেন্দ্রভাই এবং গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্রভাই প্যাটেল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 
 
জামনগরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরম্পরাগত চিকিৎসার আন্তর্জাতিক কেন্দ্রটি স্থাপনে সবরকম সহায়তা ও নেতৃত্বের জন্য হু-এর মহানির্দেশক ডাঃ টেড্রস ঘেব্রেইসাস, ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদীকে ধন্যবাদ জানান। ডাঃ ঘেব্রেইসাস এই কেন্দ্রটিকে প্রকৃত পক্ষেই এক আন্তর্জাতিক কর্মসূচি হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১০৭টি সদস্য দেশের পৃথক পৃথক সরকারি কার্যালয় রয়েছে। এর ফলে পরম্পরাগত চিকিৎসার ক্ষেত্রে নেতৃত্বদানে এই দেশগুলি ভারতে আসবে। তিনি আরও বলেন, বিশ্বে বিপুল পরিমাণে পরম্পরাগত ওষুধ উৎপাদিত হচ্ছে এবং এই কেন্দ্রটি পরম্পরাগত চিকিৎসার অঙ্গীকার পুরণে সুদূর প্রসারী ভূমিকা নেবে। বিশ্বের বহু অঞ্চলে পরম্পরাগত চিকিৎসা পদ্ধতি নিরাময়ের অন্যতম মাধ্যম। নতুন এই কেন্দ্রটি ডেটা, উদ্ভাবন এবং ধারাবাহিকতার উপর গুরুত্ব দেবে। সেই সঙ্গে পরম্পরাগত ওষুধের ব্যবহার বাড়াতে সাহায্য করবে। এই কেন্দ্রটিতে ৫টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এগুলি হল – গবেষণা ও নেতৃত্বদান, সাক্ষ্য প্রমাণ ও শিক্ষা, ডেটা ও অ্যানালেটিক্স, ধারাবাহিকতা ও সমতা তথা উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি।
 
এই উপলক্ষে মরিশাসকে যুক্ত করার জন্য সেদেশের প্রধানমন্ত্রী মিঃ জগন্নাথ ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদীকে ধন্যবাদ জানান। দেশীয় চিকিৎসা পদ্ধতি এবং বিভিন্ন সংস্কৃতিতে ভেষজ সামগ্রীর গুরুত্বের কথাও তিনি উল্লেখ করেন। মিঃ জগন্নাথ আরও বলেন, এই কেন্দ্রটি স্থাপনের জন্য এটিই উপযুক্ত সময়। আন্তর্জাতিক স্তরের এই কেন্দ্রটি স্থাপনে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা গ্রহণের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদীর ব্যক্তিগত অবদানের কথাও উল্লেখ করেন। মিঃ জগন্নাথ আরও বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জি, ভারত সরকার এবং ভারতবাসীর কাছে মহৎ এই অবদানের জন্য অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। তিনি আরও জানান, মরিশাসে আয়ুর্বেদ ১৯৮৯ সাল থেকেই আইনী স্বীকৃতি পেয়েছে। জামনগরে আয়ুর্বেদ চিকিৎসা শিক্ষার জন্য মরিশাসের ছাত্র-ছাত্রীদের স্কলারশিপ দেওয়ার প্রশংসা করেন তিনি। 
 
এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহানির্দেশককে তার প্রশংসাসূচক ভাষণের জন্য ধন্যবাদ জানান। ভারত এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরম্পরাগত চিকিৎসার আন্তর্জাতিক এই কেন্দ্রটির সঙ্গে ডাঃ ঘেব্রেইসাসের ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ থেকেই পরম্পরাগত চিকিৎসার আন্তর্জাতিক এই কেন্দ্রটিকে বাস্তবায়িত করতে তার আবেগের প্রতিফলন ঘটে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহানির্দেশককে আশ্বস্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত তার সমস্ত প্রত্যাশাপূরণের চেষ্টা করবে। 
 
মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘ তিন দশকের সম্পর্কের কথাও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। যেসমস্ত বিশ্ব নেতৃবৃন্দের ভিডিও বার্তা শোনানো হয়েছে তার জন্য প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানান। 
 
প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরম্পরাগত চিকিৎসার এই আন্তর্জাতিক কেন্দ্রটি পরম্পরাগত চিকিৎসার ক্ষেত্রে ভারতের অবদান ও সম্ভাবনার দিকটিকেই স্বীকৃতি দেয়। তিনি আরও বলেন, সমগ্র মানবজাতির সেবায় এক মহৎ দায়িত্ব হিসেবে ভারত এই অংশীদারিত্ব গ্রহণ করেছে। 
 
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আন্তর্জাতিক এই কেন্দ্রটির আয়োজন স্থল সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরম্পরাগত চিকিৎসার আন্তর্জাতিক কেন্দ্রটির সঙ্গে সঙ্গে রোগী কল্যাণের ক্ষেত্রে জামনগরের অবদান সারা বিশ্বে পরিচিতি লাভ করবে। তিনি আরও জানান, পাঁচ দশকেরও বেশি সময় আগে, বিশ্বের প্রথম আয়ুর্বেদ বিশ্ববিদ্যালয়টি এই জামনগরে স্থাপিত হয়েছিল। আয়ুর্বেদ শিক্ষা ও গবেষণার যে প্রতিষ্ঠান এই শহরে রয়েছে, সেখানে একটি আয়ুর্বেদ উৎসর্ষ কেন্দ্রও গড়ে উঠেছে।
 
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, আমাদের প্রধান লক্ষ্যই হল সার্বিক কল্যাণ। রোগমুক্ত জীবন একদিক থেকে যেমন গুরুত্বপূর্ণ অন্য দিক থেকে তেমনই রোগী কল্যাণও অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত। রোগী কল্যাণের গুরুত্ব সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহামারীর সময় এই বিষয়টি গভীরভাবে অনুভূত হয়েছে। সমগ্র বিশ্ব আজ স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে এক নতুন সমাধানের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এক গ্রহ আমাদের স্বাস্থ্য – এই স্লোগানের মধ্য দিয়ে এক বিশ্ব এক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত ভারতের দৃষ্টিভঙ্গিকেই সমর্থন করছে।
 
প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী আরও বলেন, ভারতের পরম্পরাগত চিকিৎসা পদ্ধতি কেবল নিরাময়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। এটি জীবনের এক সার্বিক বিজ্ঞান হয়ে উঠেছে। প্রকৃত পক্ষে আয়ুর্বেদ নিরাময় ও চিকিৎসার অনেক উর্ধ্বে। এমনকি সামাজিক স্বাস্থ্য, মানসিক স্বাস্থ্য ও খুশি, পরিবেশের স্বাস্থ্য, করুণা, দয়া এবং উৎপাদনশীলতার ক্ষেত্রেও আয়ুর্বেদের ভূমিকা রয়েছে। শ্রী মোদী বলেন, সুস্বাস্থ্যের সঙ্গে সুষম আহারের বিষয়টি প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। তিনি বলেন, আমাদের পূর্বপুরুষরা খাদ্যাভ্যাসকে অর্ধেক নিরাময়ের সঙ্গে তুলনা করতেন এবং আমাদের চিকিৎসা পদ্ধতি খাদ্য সম্পর্কিত পরামর্শে পরিপূর্ণ। ২০২৩ বর্ষটিকে রাষ্ট্রসঙ্ঘ আন্তর্জাতিক ভুট্টা বর্ষ হিসেবে ঘোষণা করায় প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্রসঙ্ঘের এই পদক্ষেপ সমগ্র মানবজাতির কাছে অত্যন্ত স্বার্থবাহী হবে।
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বহু দেশে আয়ুর্বেদ, সিদ্ধা, ইউনানি চিকিৎসা পদ্ধতির চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে। একইভাবে, যোগাভ্যাস সারা বিশ্বে আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। মধুমেহ, স্থূলতা এবং হতাশার মতো অসুস্থতার ক্ষেত্রে যোগাভ্যাস অত্যন্ত কার্যকর হয়ে উঠেছে। শুধু তাই নয়, নিয়মিত যোগ চর্চা মানসিক উত্তেজনা এবং দেহ ও মনের মধ্যে সুসামঞ্জস্য বজায় রাখতে সাহায্য করছে।
 
প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরম্পরাগত চিকিৎসার আন্তর্জাতিক এই কেন্দ্রটির জন্য পাঁচটি লক্ষ্য স্থির করেন। প্রথমত, প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে পরম্পরাগত জ্ঞানের এক তথ্যভাণ্ডার তৈরি করা; দ্বিতীয়ত, পরম্পরাগত ওষুধপত্রের গুণমান যাচাই এবং স্বীকৃতির জন্য আন্তর্জাতিক মান প্রণয়ন; তৃতীয়ত, পরম্পরাগত চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞদের এক ছাতার তলায় নিয়ে এসে তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মঞ্চ গড়ে তোলা; চতুর্থত, পরম্পরাগত ওষুধের ক্ষেত্রে গবেষণার জন্য তহবিল সংস্থান; এবং পঞ্চমত, নির্দিষ্ট রোগ ভিত্তিক স্বতন্ত্র চিকিৎসা পদ্ধতির প্রোটোকল প্রণয়ন। এর ফলে রোগীরা পরম্পরাগত ও আধুনিক উভয় চিকিৎসা পদ্ধতিতেই উপকৃত হবেন। 
 
শ্রী মোদী ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’ বা সমগ্র বিশ্বই এক পরিবার – এই ভারতীয় আদর্শের কথা উল্লেখ করে সারা বিশ্বের সুস্বাস্থ্য কামনা করেন। পরিশেষে শ্রী মোদী বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরম্পরাগত চিকিৎসার এই আন্তর্জাতিক কেন্দ্রটি ভারতের মূল্যবোধের ঐতিহ্যকে আরও সমৃদ্ধ করবে।
 
CG/BD/SKD/


(Release ID: 1818529) Visitor Counter : 186