প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

উত্তর প্রদেশের শাহজাহানপুরে গঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

Posted On: 18 DEC 2021 5:56PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১৮ ডিসেম্বর,  ২০২১

 

ভারত মাতার জয়!

ভারত মাতার জয়!

ভারত মাতার জয়!

শ্রী বাবা বিশ্বনাথ এবং ভগবান পরশুরামের চরণে আমার সশ্রদ্ধ প্রণাম। জয় গঙ্গা মা, হর হর গঙ্গে! উত্তর প্রদেশের প্রাণশক্তিতে পরিপূর্ণ তেজী মুখ্যমন্ত্রী শ্রী যোগী আদিত্যনাথজী, উপ-মুখ্যমন্ত্রী শ্রী কেশব প্রসাদ মৌর্যজী, আমার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য শ্রী বি এল ভার্মাজী, আমার সংসদের সহযোগী শ্রী সন্তোষ গাঙ্গোয়ারজী, উত্তর প্রদেশ সরকারের মন্ত্রী শ্রী সুরেশ কুমার খান্নাজী, শ্রী সতীশ মহানাজী, শ্রী জিতেন প্রসাদজী, শ্রী মহেশ চন্দ্র গুপ্তাজী, শ্রী ধর্মবীর প্রজাপতিজী, আমার অন্যান্য সাংসদ সহযোগীগণ, উত্তর প্রদেশ বিধানসভা এবং বিধান পরিষদের সদস্য অন্যান্য বন্ধুগণ, সমস্ত পঞ্চায়েত সদস্যগণ এবং বিপুল সংখ্যায় আগত আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা।

এই কাকোরী থেকে বিপ্লবের জ্যোতি প্রজ্জ্বলনকারী বীর শহীদ বিপ্লবী রামপ্রসাদ বিসমিল, অশফাক উল্লা খান এবং রোশন সিং – এর স্মরণে আমি হাত জোড় করে প্রণাম জানাই। তাঁদের চরণ স্পর্শ করি। এই মহাপুরুষদের আশীর্বাদ নিয়ে যখন আমরা এখানকার মাটি কপালে ঠেকাই তখন সৌভাগ্যবান হই। এখান থেকে তেজস্বী কবি দামোদর স্বরূপ বিদ্রোহী, রাজ বাহাদুর ভিকল এবং অগ্নিবেশ শুকলজী বীররসের বিপ্লবী কবিতা লিখে গেছেন। এই ভূমিতেই  অনুশাসন এবং বিশ্বস্ততার সংকল্প প্রদানকারী স্কাউট গাইডের জনক পন্ডিত শ্রীরাম বাজপেয়ীজীর জন্ম হয়েছিল। এই সমস্ত মহাপুরুষের চরণে আমার প্রণাম।

বন্ধুগণ,

আগামীকালই  বীর শহীদ বিপ্লবী রামপ্রসাদ বিসমিল, অশফাক উল্লা খান এবং রোশন সিং – এর আত্মবলিদান দিবস। ব্রিটিশ সরকারকে চ্যালেঞ্জ করা শাহজাহানপুরের এই তিন সুপুত্রকে ১৯ ডিসেম্বর ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল। ভারতের স্বাধীনতার জন্য নিজেদের সর্বস্ব উৎসর্গ করা এই বীরদের কাছে আমরা অনেক ঋণী। এই ঋণ আমরা কখনই শোধ করতে পারবো না। কিন্তু, দেশের উন্নয়নের জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে তাঁরা যে ভারতের স্বপ্ন দেখেছিলেন, তেমন ভারত গড়ে তুলেই আমরা তাঁদের প্রকৃত শ্রদ্ধা জানাতে পারি। আজ শাহজাহানপুরে এমনই এক পবিত্র মুহূর্ত, ঐতিহাসিক ক্ষণ উপস্থিত হয়েছে। আজ উত্তর প্রদেশের সর্ববৃহৎ এক্সপ্রেসওয়ে, ‘গঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে’র কাজ শুরু হচ্ছে।

রামচরিত মানসে বলা হয়েছে,

‘গঙ্গ সকল মুদ মঙ্গল মূলা।

সব সুখ করনি হরনি সব সূলা’।।

অর্থাৎ, মা গঙ্গা সকলের মঙ্গলের জন্য সকলের উন্নতি প্রগতির উৎস। মা গঙ্গা সমস্ত সুখ দেন এবং সমস্ত দুঃখ হরণ করেন। তেমনই গঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে-ও উত্তর প্রদেশের প্রগতির নতুন দ্বার খুলবে। আমি আজ মীরাট, ঝাপুর, বুলন্দসার, আম্রোহা, সংভল, বদাঁয়ুন, শাহজাহানপুর, হরদৈ, উন্নও, রায়বরেলি, প্রতাপগড় এবং প্রয়াগরাজের প্রত্যেক নাগরিককে বিশেষ শুভকামনা জানাই। প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ৩৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। এই গঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে তার সঙ্গে করে এই অঞ্চলে নতুন নতুন শিল্প আনবে। অনেক কর্মসংস্থান হবে, হাজার হাজার যুবক-যুবতীর জন্য অনেক সুযোগ সৃষ্টি হবে।

বন্ধুগণ,

উত্তর প্রদেশের জনসংখ্যা যেমন বেশি, অঞ্চলের দিক থেকেও এই রাজ্য অনেক বড়। এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের দূরত্ব প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার। এত বড় উত্তর প্রদেশকে চালানোর জন্য যে পরাক্রম চাই, যে বীরত্বের সঙ্গে কাজ করা প্রয়োজন, তা আজ ডবল ইঞ্জিন সরকার করে দেখাচ্ছে। সেইদিন দূরে নেই, যখন উত্তর প্রদেশ নেক্সট জেনারেশন ইনফ্রাস্ট্রাকচার সম্পন্ন আধুনিকতম রাজ্য হিসাবে পরিচিত হবে। এই যে আজ উত্তর প্রদেশের এক্সপ্রেসওয়ে নেটওয়ার্ক তৈরি হচ্ছে, নতুন নতুন এয়ারপোর্ট তৈরি হচ্ছে, নতুন রেলওয়ে রুট হচ্ছে – তা উত্তর প্রদেশের জনগণের জন্য একসঙ্গে অনেক বরদান হিসাবে আসছে। প্রথম বরদান হ’ল – জনগণের সময় সাশ্রয়, দ্বিতীয় বরদান – জনগণের অর্থ সাশ্রয় এবং সুবিধা বৃদ্ধি। তৃতীয় বরদান – উত্তর প্রদেশের সম্পদের সঠিক এবং উত্তম ব্যবহার, চতুর্থ বরদান – উত্তর প্রদেশের সামর্থ্য বৃদ্ধি, পঞ্চম বরদান – উত্তর প্রদেশের চতুর্মুখী সমৃদ্ধি।

বন্ধুগণ,

উত্তরপ্রদেশের এক শহর থেকে অন্য শহরে যাওয়ার জন্য এখন আর বেশি সময় লাগে না। এই এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে গেলে আরও কম সময় লাগবে। যানজটের কারণে আপনাদের সময় নষ্ট হবে না। এই সময় আপনারা আরও ভালো কাজে ব্যয় করবেন। উত্তর প্রদেশের ১২টি জেলাকে এই এক্সপ্রেসওয়ে যুক্ত করবে। পূর্ব উত্তর প্রদেশ ও পশ্চিম উত্তর প্রদেশকে আরও কাছাকাছি তো আনবেই, পাশাপাশি দিল্লির সঙ্গে বিহারের যাতায়াতের সময়ও কম করে দেবে। যখন এই এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ হয়ে যাবে, তখন দু’পাশে অনেক বড় বড় শিল্প ক্লাস্টার তৈরি হয়ে যাবে। এই ক্লাস্টার এখানকার কৃষক ও পশুপালকদের জন্য অনেক নতুন সুযোগ তৈরি করবে। এখানকার ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগগুলির জন্য, ছোট শিল্পের জন্যও নতুন নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি করবে। বিশেষ করে, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পোদ্যোগের জন্য অসীম সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে, যা কৃষকদের আয় বাড়াবে। অর্থাৎ, এটি হবে কৃষক ও নবীন প্রজন্মের মানুষের জন্য অনন্ত সম্ভাবনার এক্সপ্রেসওয়ে।

বন্ধুগণ,

উত্তর প্রদেশে আজ যে আধুনিক পরিকাঠামো নির্মাণ হচ্ছে তা থেকে বোঝা যায়, সম্পদের সঠিক ব্যবহার কিভাবে করা উচিৎ। আগে জনগণের টাকা কিভাবে খরচ হয়েছে, তা আপনারা খুব ভালোভাবেই দেখেছেন। দেখেছেন তো? আপনাদের টাকা দিয়ে কী কী হতো – তাও জানেন তো? মনে আছে নাকি ভুলে গেছেন? কিন্তু, আজ উত্তর প্রদেশের জনগণের টাকাকে উত্তর প্রদেশের উন্নয়নে খরচ করা হচ্ছে। আগে এমন বড় প্রকল্প শুধু কাগজেই শুরু হতো, যাতে তাঁরা নিজেদের সিন্দুক ভরতে পারেন। আজ এই প্রকল্পগুলিতে প্রকৃত কাজ হচ্ছে, যাতে উত্তর প্রদেশের মানুষের অর্থ সাশ্রয় হয়। আপনাদের টাকা আপনাদেরই পকেটে থাকে।

ভাই ও বোনেরা,

যখন সময় সাশ্রয় হয়, পরিষেবা বৃদ্ধি পায়, সম্পদের সঠিক ব্যবহার হয়, তখনই সামর্থ্য বাড়ে। যখন সামর্থ্য বাড়ে, তখন সমৃদ্ধি নিজে থেকেই আসতে থাকে। আজ ডবল ইঞ্জিন সরকারের উদ্যোগে উত্তর প্রদেশের ক্রমবর্ধমান সামর্থ্যকে আমরা সবাই দেখতে পাচ্ছি। পূর্বাঞ্চল এক্সপ্রেসওয়ে অথবা দিল্লি-মীরাট এক্সপ্রেসওয়ে, কুশীনগর ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট, ডেডিকেটেড ফ্রেইড করিডরের গুরুত্বপূর্ণ ফেজ এরকম অনেক প্রকল্প জনসেবার জন্য সমর্পিত হয়েছে। বুন্দেলখন্ড এক্সপ্রেসওয়ে, গোরক্ষপুর লিঙ্ক এক্সপ্রেসওয়ে, প্রয়াগরাজ লিঙ্ক এক্সপ্রেসওয়ে, দিল্লি-দেরাদুণ এক্সপ্রেসওয়ে, নয়ডা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট, দিল্লি-মীরাট র‍্যাপিড হাইস্পিড করিডর – এর মতো মেগা প্রকল্পগুলির কাজ আজ দ্রুতগতিতে চলছে। আমরা এরকম যত পরিকাঠামো তৈরি করছি, তা মাল্টি-পার্পাসও। এর মধ্যে মাল্টি-মডেল কানেক্টিভিটিকেও ততটাই জোর দেওয়া হয়েছে।

বন্ধুগণ,

একবিংশ শতাব্দীতে কোনও দেশের উন্নয়নের জন্য নেওয়া হাইস্পিড কানেক্টিভিটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। যখন পণ্য সামগ্রী দ্রুতগতিতে তাদের গন্তব্যে পৌঁছবে, তখন পরিবহণে খরচ অনেকটাই কমবে। খরচ কমলে ব্যবসা বাড়বে, ব্যবসা বাড়লে রপ্তানি বাড়বে, রপ্তানি বাড়লে দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাবে। সেজন্য এই গঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে উত্তর প্রদেশের উন্নয়নকে গতি যোগাবে আর উত্তর প্রদেশকেও সমৃদ্ধ করে তুলবে। এই প্রকল্পটি পিএম গতিশক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান থেকে সহায়তা পাবে। এই এক্সপ্রেসওয়ের মাধ্যমে এয়ারপোর্টগুলিকে যুক্ত করা হবে। মেট্রোরেলের মাধ্যমে যুক্ত করা হবে। ওয়াটারওয়ে বা জলপথে যুক্ত করা হবে। এছাড়া, ডিফেন্স করিডরকেও এর সঙ্গে যুক্ত করা হবে। গতিশক্তি মাস্টার প্ল্যানের মাধ্যমে টেলিফোনের তার বিছানোর জন্য অপ্টিকাল ফাইবার নেটওয়ার্ক লাগানো থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ-এর তার বিছানোর কথা, গ্যাস গ্রিড নিয়ে আলোচনা, গ্যাসের পাইপলাইন বিছানো, ওয়াটার গ্রিড নিয়ে আলোচনা এবং হাইস্পিড রেল প্রকল্পের সম্ভাবনা দেখে এই সমস্ত প্রয়োজনীয় বিষয়গুলিকে মাথায় রেখে, ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে এগুলি গড়ে তোলা হয়েছে। এই এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি হলে পথে নতুন নতুন সেতু নির্মিত হবে, উড়ালপুল তৈরি হবে। অন্যান্য প্রয়োজনের ক্ষেত্রে তাদের অনুমতি পেতে আর বেগ পেতে হয় না। তাই এখন অত্যন্ত দ্রুতগতিতে কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। ভবিষ্যতে পশ্চিম উত্তর প্রদেশের কার্গো কন্টেনার বারাণসীর হাইপোর্টের মাধ্যমে সরাসরি হলদিয়া বন্দর পর্যন্ত পাঠানো যাবে। অর্থাৎ, গঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে লাভ হবে। কৃষক, শিল্পোদ্যোগী, আমাদের ব্যবসায়ীরা, উৎপাদন ও পরিকাঠামো ক্ষেত্রে কর্মরত ছোট-বড় কর্মী ও পরিশ্রমী নাগরিকদের অনেক সুবিধা হবে।

ভাই ও বোনেরা,

যখন সমগ্র উত্তর প্রদেশ একসঙ্গে এগিয়ে যাবে, তখন তো দেশও এগিয়ে যাবে। সেজন্য ডবল ইঞ্জিন সরকারের অগ্রাধিকার হ’ল সমগ্র উত্তর প্রদেশের উন্নয়ন। ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিসওয়াস অউর সবকা প্রয়াস’ – এর মন্ত্র নিয়ে আমরা সততার সঙ্গে উত্তর প্রদেশের উন্নয়নের জন্য আপ্রাণ পরিশ্রম করছি। আপনারা পুরনো দিনগুলির কথা মনে করুন। তখনকার সিদ্ধান্ত, পুরনো কর্মসংস্কৃতির কথা ভাবুন, আপনারা স্পষ্ট পার্থক্য বুঝতে পারবেন। এখন উত্তর প্রদেশে বৈষম্য নয়, সকলের ভালোর জন্য কাজ হয়। আপনারা স্মরণ করুন ৫ বছর আগের অবস্থা। রাজ্যের কিছু এলাকা বাদ দিলে অন্যান্য শহর ও গ্রামগঞ্জে বিদ্যুতের খুঁটিই ছিল না। ডবল ইঞ্জিন সরকার শুধু উত্তর প্রদেশে প্রায় ৮০ লক্ষ বিদ্যুৎ সংযোগ বিনামূল্যে দিয়েছে। প্রত্যেক জেলায় আগের চেয়ে অনেক গুণ বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। গরিব মানুষের বাড়ি নির্মাণের ব্যাপারেও আগের সরকার তেমন উদ্যোগ নেয়নি। একটু আগেই যোগীজী বর্ণনা করছিলেন যে, কাশীতে মোদীজী শিবজীর পুজো করেছেন। আর সেখান থেকে বেরিয়ে এসে শ্রমিকদের পুজো করেছেন। শ্রমিকদের পুষ্পবর্ষা করে তাঁদের অভিনন্দন জানিয়েছেন।

ভাই ও বোনেরা,

সেখানে ক্যামেরা ম্যানরা ছিলেন বলেই আপনারা জানতে পেরেছেন। কিন্তু, আমাদের সরকার দিনরাত গরিবদের জন্যই কাজ করে। আমাদের সরকার উত্তর প্রদেশে ৩০ লক্ষেরও বেশি গরিব মানুষদের পাকা বাড়ি বানিয়ে দিয়েছে।

ভাই ও বোনেরা,

যখন নিজের পাকা বাড়ি তৈরি হয়, তখন সসম্মানে বেঁচে থাকার ইচ্ছে জাগে। মাথা উঁচু হয়, বুক চওড়া হয়, গরিবদের মনেও দেশের জন্য কিছু করার ইচ্ছে জাগে। মোদী যেহেতু এই কাজ করছে, তা হলে কি ঠিক করছে না? ৩০ লক্ষ গরিব মানুষ নিজের পাকা বাড়ি পেয়েছেন – আমরা কি তাঁদের আশীর্বাদ পাবো না? তাঁদের আশীর্বাদ কি আমাদের শক্তি যোগাবে না? আরও বেশি কাজ করার প্রেরণা যোগাবে না? 

ভাই ও বোনেরা,

এখানে শাহজাহানপুরের মানুষ কি কখনও ভেবেছিলেন যে, এমন এক্সপ্রেসওয়ে দেখবেন। গোটা উত্তর প্রদেশের মানুষ কখনও এত কাজ হতে দেখেননি। শুধু এই শাহজাহানপুরেই ৫০ হাজার মানুষ পাকা বাড়ি পেয়েছেন। তাঁদের জীবনের সবচেয়ে বড় স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। যাঁরা এখনও পিএম আবাস যোজনার মাধ্যমে বাড়ি পাননি, তাঁরা যাতে দ্রুত বাড়ি পেতে পারেন, সেজন্য মোদী এবং যোগী দিনরাত কাজ করছেন এবং করে যাবেন। সম্প্রতি আমাদের সরকার এর জন্য ২ লক্ষ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে। এই অর্থ আপনাদের, আপনাদের সন্তানদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য বন্ধুগণ। হাতে গোনা কয়েকটি পরিবারের স্বার্থে আপনাদের অর্থের অপব্যবহার আমরা করতে পারি না। আমরা আপনাদের জন্য কাজ করি।

ভাই ও বোনেরা,

স্বাধীনতার পর প্রথমবার আজ গরিবের দুঃখ, কষ্ট ও কাজ করার মতো সরকার এসেছে। প্রথমবার গৃহহীনদের জন্য বাড়ি, বিদ্যুৎ, জল, সড়ক, শৌচালয়, রান্নার গ্যাস সংযোগ – এ ধরনের বুনিয়াদী পরিষেবাগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। উন্নয়নের এরকম কাজই দরিদ্র, দলিত, বঞ্চিত, পিছিয়ে পড়া মানুষদের জীবনকে বদলায়। আপনারা এই অঞ্চলেরই পরিস্থিতির কথা স্মরণ করুন। এখানে আগে অসময়ে কোনও এমার্জেন্সি হলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হতো – তা হলে হরদৈ, শাহজাহানপুর, ফারুখখাবাদ জনগণকে লক্ষ্ণৌ, কানপুর এবং দিল্লি ছুটতে হতো। এখানে তেমন কোনও হাসপাতাল ছিল না। অন্যান্য শহর পর্যন্ত যাওয়ার জন্য সড়কপথও ছিল না। আজ এখানে অনেক সড়ক তৈরি হয়েছে। এক্সপ্রেসওয়ে-ও তৈরি হতে চলেছে। আর মেডিকেল কলেজও খুলেছে। হরদৈ ও শাহজাহানপুর দু’জায়গাতেই একটি করে মেডিকেল কলেজ খুলেছে। এমনই করে যোগীজী গোটা উত্তর প্রদেশে কয়েক ডজন নতুন মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছেন। তাঁর গোটা টিম এভাবেই সততার সঙ্গে দ্রুতগতিতে কাজ করে যাচ্ছে।

ভাই ও বোনেরা,

সমাজের যে অংশ পিছিয়ে রয়েছে, তাদের ক্ষমতায়ন উন্নয়নের সুযোগ তাঁদের কাছে পৌঁছে দেওয়া এটাই আমাদের সরকারের অগ্রাধিকার, এই ভাবনা আমাদের সরকারের কৃষি নীতিতে কৃষকদের সঙ্গে যুক্ত নীতিতেও দেখা গেছে। বিগত বছরগুলিতে ব্রিজ থেকে শুরু করে বাজার পর্যন্ত যে ব্যবস্থা আমরা তৈরি করেছি, তাতে দেশের সেই ৮০ শতাংশেরও বেশি ছোট কৃষকদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। যাঁদের কাছে ২ হেক্টরেরও কম জমি রয়েছে, পিএম কিষাণ সম্মান নিধির মাধ্যমে যে হাজার হাজার কোটি টাকা সরাসরি কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছেছে – এর দ্বারা ক্ষুদ্র কৃষকরাই সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছেন। আজ আমরা সেই কোটি কোটি ক্ষুদ্র চাষীদেরও কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত করছি। আগে কখনও আমার ক্ষুদ্র কৃষকদের জন্য ব্যাঙ্কের দরজা খুলতো না, ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধি, রেকর্ড পরিমাণ সরকারি ক্রয় এবং সরাসরি কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হওয়ায় ক্ষুদ্র কৃষকদের অনেক সুবিধা হয়েছে।

বন্ধুগণ,

আমরা দেশের সেচ ব্যবস্থাকে বিস্তারিত করারকে অগ্রাধিকার দিয়েছি। সেচে আধুনিক প্রযুক্তি এনেছি। সেজন্য ১ লক্ষ কোটি টাকা আজ গ্রামীণ পরিকাঠামো নির্মাণ খাতে  গুদামজাতকরণ এবং কোল স্টোরেজের মতো পরিকাঠামো গড়ে তুলতে খরচ করা হচ্ছে। গ্রামের মানুষ যাতে অতি পচনশীল ফল-সব্জি বেশি সময় ধরে সংরক্ষণ করতে পারেন, সেরকম পরিকাঠামো নির্মাণের চেষ্টা চলছে। আর যাতে তাঁরা তাঁদের ফসল দ্রুত বাজারে পৌঁছে দিতে পারেন – সেই পরিকাঠামোও গড়ে তোলা হচ্ছে। এতে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ-এর শিল্প কেন্দ্রগুলিও দ্রুতগতিতে বিস্তারলাভ করবে এবং গ্রামবাসীদের গ্রামের কাছেই নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

ভাই ও বোনেরা,

বিগত বছরগুলিতে আমরা আখ চাষীদের কয়েক দশক পুরনো সমস্যাগুলি সততার সঙ্গে সমাধান করতে নতুন বিকল্প, নতুন সমাধান খোঁজার চেষ্টা করেছি। আজ আখ চাষ থেকে যে রাজ্যগুলি সবচেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছে, তার মধ্যে উত্তর প্রদেশ এগিয়ে রয়েছে। ফসল কেনার ক্ষেত্রেও যোগীজীর সরকার নতুন রেকর্ড স্থাপন করেছে। আজ পেট্রোলের সঙ্গে ইথানলের মিশ্রণকে অভূতপূর্ব উৎসাহ যোগানো হচ্ছে। এর ফলে, বিদেশ থেকে তুলনায় কম অপরিশোধিত তেল আমদানি করতে হচ্ছে। দেশের অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে। পাশাপাশি, চিনি উৎপাদন ক্ষেত্র শক্তিশালী হচ্ছে।

ভাই ও বোনেরা,

আমাদের দেশে এমন কিছু রাজনৈতিক দল আছে, যাদের দেশের ঐতিহ্য নিয়েও সমস্যা, উন্নয়ন নিয়েও সমস্যা। ঐতিহ্য নিয়ে সমস্যার কারণ হ’ল – এটা তাদের ভোট ব্যাঙ্ক। আর দেশের উন্নয়নের জন্য সমস্যা হ’ল – কারণ, এর ফলে তাদের উপর সাধারণ গরিব মানুষের নির্ভরতা ক্রমহ্রাসমান। আপনারা নিজেরাই বিচার করুন। কাশীতে বাবা বিশ্বনাথের অনিন্দ্যসুন্দর মন্দির নির্মাণ নিয়ে তাঁদের সমস্যা, অযোধ্যায় প্রভু শ্রীরামের সুন্দর মন্দির নির্মাণ নিয়ে তাঁদের সমস্যা, গঙ্গা সাফাই অভিযান নিয়ে তা^দের সমস্যা, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সেনা অভিযান নিয়ে তাঁরা প্রশ্ন তোলেন, ভারতীয় বৈজ্ঞানিকদের তৈরি ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ করোনা ভ্যাকসিনকে তাঁরা কাঠগড়ায় তুলতে চান।

ভাই ও বোনেরা,

উত্তর প্রদেশ অনেক বড় রাজ্য। এখানে আগে আয়ারাম-গয়ারামের সরকার ছিল। দেশের উন্নয়ন ও সামর্থ্যের উৎসবকে আমরা প্রত্যেকেই খোলা মনে পালন করি। কিন্তু, দুঃখের বিষয় এই রাজনীতির মানুষরা এরকম ভাবেন না। সরকার যখন সদিচ্ছা নিয়ে কাজ করে, তখন পরিণাম কেমন হয় – তা বিগত ৪-৫ বছরে উত্তর প্রদেশের জনগণ অনুভব করেছেন। যোগীজীর নেতৃত্বে এখানে সরকার গঠনের আগে পশ্চিম উত্তর প্রদেশে আইন-শৃঙ্খলার কেমন পরিস্থিতি ছিল, সে বিষয়ে আপনারা খুব ভালোভাবেই জানেন। আগে এরা কী বলতেন? বলতেন, সূর্যাস্তের পর বাড়ি ঢুকে যাও। আর সূর্য ডুবতেই দা ঘোরাতে ঘোরাতে মস্তানরা পথে নামতেন। এখন সেই দা ঘোরানোর দিন অতীত হয়েছে কি না? মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই যে সমস্যা ছিল, মেয়েদের স্কুল-কলেজে যাওয়া কঠিন ছিল, ব্যবসায়ীরা সকালে বাড়ি থেকে বেরোতেন, পরিবারের জন্য চিন্তা হতো, গরিব পরিবারের মানুষ অন্যান্য রাজ্যে কাজ করতে গেলে তাঁর বাড়ি ও জমিতে অবৈধ দখলদারির ভয় থাকতো। কোথায় দাঙ্গা লাগবে, কোথায় আগুন লাগবে – কেউ বলতে পারতেন না। আপনাদের ভালোবাসা ও আশীর্বাদে আমরা দিনরাত কাজ করে এই পরিস্থিতি বদলেছি। অনেক গ্রাম থেকে প্রতিদিন যে পলায়নের খবর আসতো –আপনাদের আশীর্বাদ ও প্রেরণায় তা বিগত চার-সাড়ে চার বছরে আর শোনা যায় না। এর জন্য আমাদের অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। আজ যখন সেই মাফিয়াদের উপর বুলডজার চলে, অবৈধ নির্মাণের ওপর বুলডোজার চলে, তখন তাঁদের লালন-পালনকারী রাজনৈতিক নেতাদের কষ্ট হয়। সেজন্য আজ গোটা উত্তর প্রদেশের জনগণ বলছেন, “ইউপি+যোগী, বহুত হ্যায় উপযোগী” “ইউপি+যোগী, বহুত হ্যায় উপযোগী” “ইউপি+যোগী, বহুত হ্যায় উপযোগী” “ইউপি+যোগী, বহুত হ্যায় উপযোগী”। আমি আবার বলবো, U.P.Y.।.O.G.I. “ইউপি+যোগী, বহুত হ্যায় উপযোগী!’

বন্ধুগণ,

আমি এর আরেকটা উদাহরণ দেবো। কিছুদিন আগে সংবাদ মাধ্যমে একটা খবর দেখেছিলাম, খবরটা ছিল, আমাদের সামর্থ্যবান শহর মীরাটের। কিন্তু, গোটা উত্তর প্রদেশ দিল্লি এনসিআর এবং দেশের অন্যান্য রাজ্যের মানুষেরও একথা জানা জরুরি।

ভাই ও বোনেরা,

মীরাটে একটা অঞ্চল আছে, একটি বাজার আছে – সতীগঞ্জ। সারা দেশে কোনও জায়গায় গাড়ি চুরি হলে তা বিক্রির জন্য এখানে আসতো। এই সতীগঞ্জে অনেক দশক ধরে এই ব্যবসা চলছিল। যোগীজীর সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন কঠোরভাবে এই অবৈধ ব্যবসা বন্ধ করেছে। এখন সতীগঞ্জে এই কালোবাজার বন্ধ হয়ে গেছে।

ভাই ও বোনেরা,

যারা মাফিয়াদের সঙ্গে চলতে পছন্দ করেন, তারা তো মাফিয়াদের ভাষাতেই কথা বলবেন। কিন্তু, আমরা তাঁদের গৌরব গান করবো, যাঁরা নিজেদের তপস্যা ও ত্যাগের মাধ্যমে এই দেশ গড়ে তুলেছেন। স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব এই ভাবনার প্রতীক। দেশের স্বাধীনতার জন্য জীবন সমর্পণকারী মহাপুরুষদের প্রকৃত সম্মান প্রদর্শন সমস্ত দেশবাসীর কর্তব্য, আমাদের দায়িত্ব। এই লক্ষ্যে শাহজাহানপুরে শহীদ সংগ্রহালয় গড়ে তোলা হচ্ছে। সংগ্রহালয়ে শহীদদের  অনেক স্মৃতি স্মারক সংরক্ষিত হয়েছে। এ ধরনের প্রচেষ্টার মাধ্যমে এখানে ভবিষ্যৎ নবীন প্রজন্মের সর্বদাই দেশের প্রতি সমর্পণের প্রেরণা পাবেন। আপনাদের আশীর্বাদে উত্তর প্রদেশের উন্নয়নের এই কর্মধারা এভাবেই ক্রমাগত চলতে থাকবে। পূর্ব হোক কিংবা পশ্চিম, অবধ হোক কিংবা বুন্দেলখন্ড; উত্তর প্রদেশের কোণায় কোণায় উন্নয়ন অভিযান জারি থাকবে। আরেকবার আপনাদের সকলকে গঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। অনেক অনেক শুভকামনা জানাই।

আমার সঙ্গে জোরে বলুন,

ভারতমাতার জয়!

ভারতমাতার জয়!

ভারতমাতার জয়!

ভারতমাতার জয়!

অনেক অনেক ধন্যবাদ।

 

CG/SB/SB



(Release ID: 1783348) Visitor Counter : 233