প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

বিশ্ব অর্থনীতি এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য নিয়ে আয়োজিত জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য

Posted On: 30 OCT 2021 11:55PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ৩০ অক্টোবর, ২০২১


মহামান্যগণ,

করোনা বিশ্বব্যাপী মহামারী মোকাবেলায় আমরা ‘ওয়ান আর্থ – ওয়ান হেলথ’ বা ‘এক পৃথিবী-এক স্বাস্থ্যের’ দর্শন বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছি।

ভবিষ্যতে এ ধরনের যেকোনো সংকট মোকাবেলা করতে হলে এই দর্শনই হয়ে উঠতে পারে বিশ্ববাসীর বিরাট শক্তির আধার।

মহামান্যগণ,

‘ফার্মেসি অফ দ্য ওয়ার্ল্ড’ বা বিশ্বের ফার্মেসির ভূমিকা পালন করে, বিপর্যয়ের সময় ভারত ১৫০ টিরও বেশি দেশে ওষুধ সরবরাহ করেছে।

এর পাশাপাশি, আমরা ‘ভ্যাকসিন রিসার্চ এন্ড ম্যানুফ্যাকচারিং’ বা টিকা নিয়ে গবেষণা এবং উৎপাদন বৃদ্ধিতে আমাদের পূর্ণ শক্তি প্রয়োগ করেছি।

অত্যন্ত কম সময়ের মধ্যে, আমরা ভারতে এক বিলিয়ন বা একশো কোটিরও বেশি করোনা প্রতিরোধী টিকার ডোজ দিয়েছি।

বিশ্বের জনসংখ্যার এক-ষষ্ঠাংশে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করে, ভারত বিশ্বকে নিরাপদ করার ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে, এবং ভাইরাসের আরও মিউটেশনের সম্ভাবনাও কমিয়েছে।

মহামান্যগণ,

এই অতিমারী গোটা বিশ্বকে একটি নির্ভরযোগ্য সরবরাহ শৃঙ্খলের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সতর্ক করেছে।

এই পরিস্থিতিতে, ভারত নিজেকে একটি নির্ভরযোগ্য ‘ম্যানুফ্যাকচারিং হাব’ বা উৎপাদন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তুলেছে।

এর জন্য ভারত ‘বোল্ড ইকনোমিক রিফর্মস’ বা  সাহসী অর্থনৈতিক সংস্কার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করেছে।

আমরা ‘কস্ট অফ ডুয়িং বিজনেস’ বা দেশে ব্যবসা করার খরচ অনেক কমিয়েছি এবং প্রতিটি স্তরে উদ্ভাবনকে গুরুত্ব দিয়েছি।

আমি G-20 দেশগুলিকে তাঁদের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং সরবরাহ শৃঙ্খলে বৈচিত্র্যের ক্ষেত্রে ভারতকে একটি বিশ্বস্ত অংশীদার করে তোলার জন্য আমন্ত্রণ জানাই।

মহামান্যগণ,

মানুষের জীবনের এমন কোনো দিক সম্ভবতঃ বাকি নেই যেখানে কোভিডের কারণে ব্যাঘাত ঘটেনি।

এমনকি এমন সংকটময় পরিস্থিতিতেও, ভারতের আইটি-বিপিও সেক্টরকে আমরা এক সেকেন্ডের জন্যেও থামতে দিইনি, চব্বিশ ঘন্টা কাজ করে তাঁরা গোটা বিশ্বকে প্রতিনিয়ত সাহায্য করে গেছে।

আমার খুব ভালো লাগে, যখন আপনাদের মত বিশ্ববরেণ্য নেতারা, বৈঠক চলাকালীন সময়ে, ভারত কীভাবে ‘ট্রাস্টেড পার্টনার’ বা বিশ্বস্ত অংশীদারের ভূমিকা পালন করেছে, তার প্রশংসা করেন।

এই প্রশংসা আমাদের তরুণ প্রজন্মকেও নতুন উদ্যমে কাজ করার উৎসাহ জোগায় এবং এটি এজন্যেই সম্ভব হয়েছে কারণ, ভারত কোনও সময় নষ্ট না করে, ‘ওয়ার্ক ফ্রম এনিহোয়ার’ বা যে কোনো জায়গা থেকে কাজ করার সুযোগ প্রশস্ত করতে এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অভূতপূর্ব সংস্কার সাধন করেছে।

মহামান্যগণ,

‘গ্লোবাল ফাইনেন্সিয়াল আর্কিটেকচার’ বা বিশ্বব্যাপী আর্থিক স্থাপত্যকে আরও 'ন্যায্য' করে তোলার জন্য ভারত যে ১৫ শতাংশ, ন্যূনতম কর্পোরেট করের হার নির্ধারণ করেছে তা নিশ্চয়ই একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসাবে প্রমাণিত হবে।

আমি নিজে ২০১৪ সালের জি-২০ বৈঠকে এই পরামর্শ দিয়েছিলাম। আজ এই লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট অগ্রগতি করার জন্য আমি জি-২০ দেশগুলিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।

অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য আন্তর্জাতিক লেনদেন বৃদ্ধি করা অত্যন্ত প্রয়োজন।

এ জন্য আমাদের বিভিন্ন দেশের ভ্যাকসিন সার্টিফিকেটের পারস্পরিক স্বীকৃতি সুনিশ্চিত করতে হবে।

মহামান্যগণ,

ভারত সর্বদাই নিজের আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে নিষ্ঠার পরিচয় দিয়েছে।

আজ, এই জি-২০ প্ল্যাটফর্মে, আমি আপনাদের সবাইকে জানাতে চাই যে ভারত আগামী বছর বিশ্ববাসীর জন্য ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটিরও বেশি ভ্যাকসিনের ডোজ উৎপাদনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

ভারতের এই দায়বদ্ধতা ও প্রতিশ্রুতি বিশ্বে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে নিশ্চিতভাবেই সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে।

অতএব, ভারতীয় ভ্যাকসিনগুলিকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ‘হু’ বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দ্বারা স্বীকৃত করার প্রয়োজন রয়েছে।

ধন্যবাদ।

 

CG/SB/DM/



(Release ID: 1768222) Visitor Counter : 307