প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

৭৫তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বিশেষ অংশগুলি

Posted On: 15 AUG 2021 2:18PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১৫ আগস্ট, ২০২১

 

১. ….স্বাধীনতার অমৃত মহোত্সব, ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবসের এই সমারোহে যাঁরা উপস্থিত আছেন আপনাদের সবাইকে এবং গোটা বিশ্বে ভারতকে ভালবাসেন, গণতন্ত্রকে ভালবাসেন, এমন সবাইকে অনেক অনেক শুভকামনা জানাচ্ছি।
২….দেশ পূজনীয় বাপু, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, ভগত সিং, চন্দ্রশেখর আজাদ, বিসমিল এবং আশফাকুল্লাহ খানের মতো মহান মুক্তি সেনানী থেকে শুরু করে ঝাঁসির রাণী লক্ষ্মীবাই, কিত্তুরের রাণী চিনাম্মা, অথবা রাণী গাইদুলু, অথবা মাতঙ্গিনী হাজরা, দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত নেহরুজি, সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল, বাবাসাহেব আম্বেদকর- দেশ এই সমস্ত মহান মানুষদের কাছে ঋণী।
৩. …বিশ্বব্যাপী করোনা অতিমারিতে আমাদের চিকিত্সক, সেবিকা, প্যারামেডিক্যাল কর্মী, সাফাই কর্মী, টিকা তৈরির কাজে নিয়োজিত আমাদের বিজ্ঞানীরা, তাঁরা সবাই আমাদের বন্দনার পাত্র।
৪. …অলিম্পিকে ভারতের যুব প্রজন্ম দেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন। আমাদের সেই অ্যাথলেট, আমাদের খেলোয়াড়রা আজ আমাদের সঙ্গে আছেন। তাঁরা শুধু আমাদের মন জয়ই করেননি, বরং তাঁরা আমাদের আগামী প্রজন্মকে, ভারতের যুব প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করার বিশাল বড় কাজ করেছেন।
৫. …এখন থেকে প্রতি বছর ১৪ আগস্ট তারিখটিকে ‘বিভাজন বিভীষিকা স্মৃতি দিবস’ হিসেবে স্মরণ করা হবে। ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে ‘বিভাজন বিভীষিকা স্মৃতি দিবস’ এর সিদ্ধান্ত, এমন মানুষদের প্রতি সমস্ত ভারতবাসীর পক্ষ থেকে সাদর শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন।
৬. …আজ আমরা গৌরবের সঙ্গে বলতে পারি যে, আজ বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকাকরণ কর্মসূচি আমাদের দেশে পরিচালিত হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ৫৪ কোটিরও বেশি মানুষ টিকার ডোজ পেয়ে গেছেন।
৭….অতিমারির সময় ভারত যেভাবে আশি কোটি দেশবাসীকে বহু মাস ধরে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য জুগিয়ে সেই গরিবদের উনুন জ্বালিয়ে রেখেছে, এটাও পৃথিবীর সামনে চমকে যাওয়ার বিষয় এবং এ নিয়ে আলোচনাও চলছে বটে।
৮….মৃতদের আপনজনদের প্রতি সমবেদনা - সর্বাত্মক প্রচেষ্টা সত্বেও কত মানুষকে যে আমরা বাঁচাতে পারলাম না, কত শিশুর মাথার ওপর থেকে যে আশ্বাসের হাত সরে গেছে, আদর করার, বায়না পূরণের লোক মারা গেছেন। এই অসহ্য যন্ত্রণা সর্বদাই আমাদের সঙ্গে থেকে যাবে!
৯….ইন্ডিয়া অ্যাট সেভেন্টি ফাইভ – দেশের স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষ - বর্তমান সময়টা অমৃতকাল। এই অমৃত সময়ে আমাদের সংকল্পের সিদ্ধি আমাদের স্বাধীনতার একশো বছরে পৌঁছে দেবে। এই অমৃত সময়ের লক্ষ্য হল এমন ভারত নির্মাণ করা যেখানে সব আধুনিক পরিকাঠামো থাকবে।
১০….সবার প্রচেষ্টা - অমৃতকাল আগামী পঁচিশ বছরের জন্য। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য প্রাপ্তির জন্য এত দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে না। সবার সঙ্গে, সবার বিকাশ, সবার বিশ্বাস এবং এখন সবার প্রচেষ্টা আমাদের প্রতিটি লক্ষ্যপ্রাপ্তির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
১১….সবার বিকাশ - আগের তুলনায় আমরা অনেক বেশি গতিতে অনেকটাই এগিয়ে গেছি। কিন্তু আমাদের স্যাচুরেশন পর্যন্ত পৌঁছুতে হবে, পূর্ণতায় পৌঁছতে হবে। একশ শতাংশ গ্রামে সড়ক থাকবে, একশো শতাংশ পরিবারের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকবে।, সমস্ত সুবিধাভোগীদের আয়ুষ্মান ভারতের কার্ড থাকবে, উজ্জ্বলা যোজনা এবং গ্যাস সংযোগ থাকবে।
১২….স্বনিধি যোজনা – রেললাইনের পাশে আর ফুটপাতে বসে যাঁরা জিনিস বিক্রি করেন, ঠেলায় করে ফেরি করেন যে বন্ধুরা, তাঁদের স্বনিধি যোজনার মাধ্যমে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে।
১৩….জলজীবন মিশন – আমি আনন্দিত যে জলজীবন মিশন শুরুর পর মাত্র দু’বছরেই সাড়ে চার কোটিরও বেশি পরিবার নলের মাধ্যমে জল পেতে শুরু করেছে।
১৪….অপুষ্টির সমস্যা - গরিব শিশুদের অপুষ্টি এবং তাদের শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর উপাদানের অভাব দেখেই স্থির করা হয়েছে যে, সরকারের নিজের ভিন্ন ভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে যে চাল গরিবদের দেয়, সেগুলিকে আরও গুণমানযুক্ত বা ফরটিফায়েড করা হবে।
১৫….সংরক্ষণের নতুন ব্যবস্থা - দলিত, অনগ্রসর, আদিবাসী, সাধারণ শ্রেণীর গরিবদের জন্য সংরক্ষণ নিশ্চিত করা হচ্ছে। সম্প্রতি চিকিত্সা শিক্ষার ক্ষেত্রে অল ইন্ডিয়া কোটায় ওবিসি সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সংসদে আইন পাশ করিয়ে রাজ্যগুলিকে ওবিসি তালিকা তৈরির অধিকার প্রদান করা হয়েছে।
১৬….উত্তর-পূর্ব ভারত - আজ উত্তর-পূর্বে যোগাযোগের নতুন ইতিহাস রচিত হচ্ছে। এই যোগাযোগ হৃদয়ের তো বটেই, পরিকাঠামোরও। খুব শিগগিরই উত্তর-পূর্বের সমস্ত রাজ্যের রাজধানীকে রেল পরিষেবায় যুক্ত করার কাজ সম্পন্ন হতে চলেছে।
১৭….‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতির আওতায় আজ উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ, মায়ানমার এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার যোগাযোগ স্থাপিত হচ্ছে। বিগত বছরগুলিতে যে প্রয়াস চালানো হচ্ছিল সে কারণে আমরা উত্তর-পূর্বে স্থায়ী শান্তির জন্য, শ্রেষ্ট ভারত গড়ার জন্য অনেক গুণ বেশি উত্সাহ দেখতে পাচ্ছি।
১৮….সবার সক্ষমতাকে উপযুক্ত গুরুত্ব দেওয়াই গণতন্ত্রের আসল ভাবণা। জম্মু কাশ্মীরেই ডিলিমিটেশন কমিশন গঠন করা হয়েছে। আর ভবিষ্যতে বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতিও চলছে।।
১৯….লাদাখও বিকাশের অসীম সম্ভাবনার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। একদিকে লাদাখ আধুনিক পরিকাঠামোগুলি নির্মাণ হতে দেখছে, অন্যদিকে সিন্ধু সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি লাদাখকে উচ্চশিক্ষার, হায়ার এডুকেশনের কেন্দ্রও বানাচ্ছে।
২০….ডিপ ওশান মিশন সমুদ্রের অসীম সম্ভাবনার খোঁজ আমাদের উচ্চাকাঙ্খার প্রমাণ। যে খনিজ সম্পদ সমুদ্রে লুকিয়ে আছে, যে থার্মাল এনার্জি সমুদ্রের জলে আছে, তা দেশের বিকাশকে নতুন উচ্চতা দিতে পারে।
২১….প্রত্যাশী জেলাগুলি - দেশে ১১০টির বেশি প্রত্যাশী জেলা, প্রত্যাশী জেলাগুলিতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, সড়ক, রোজগারের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রকল্পগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে অনেক জেলা আমাদের আদিবাসী এলাকায়।
২২….সমবায়বাদ - আর্থিক জগতে ভারত সমবায়বাদের উপরে জোর দেয়। সমবায় দেশের তৃণমূল স্তরের অর্থনীতির জন্য একটি প্রধান ক্ষেত্র। সমবায় একটি শিষ্টাচার, যৌথভাবে চলার এক মানসিকতা। তাকে যাতে শক্তিশালী করা যায়, আমরা আলাদা মন্ত্রক বানিয়ে সেই লক্ষ্যে পদক্ষেপ নিয়েছি।
২৩….গ্রামীণ ভারত - আজ আমরা আমাদের গ্রামগুলিকে দ্রুত পরিবর্তিত হতে দেখছি। গত কিছু বছরে গ্রাম পর্যন্ত বিদ্যুৎ আর সড়কের সুবিধা পৌঁছানো হচ্ছে। এখন গ্রামগুলিতে অপ্টিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক ডেটার শক্তি পৌঁছচ্ছে। ইন্টারনেট পৌঁছোচ্ছে। গ্রামেও ডিজিট্যাল আন্ত্রেপ্রেনার তৈরি হচ্ছে।
২৪….ভোকাল ফর লোকাল – সরকার ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম তৈরি করবে। এখন যখন দেশ ভোকাল ফর লোকাল মন্ত্র নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, এই ডিজিট্যাল প্ল্যাটফর্ম মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির উৎপাদিত পণ্যকে দেশের দূরদূরান্তের এলাকায় এবং বিদেশেও মানুষকে জুড়বে, এবং তার প্রভাবও খুব বিস্তৃত হবে।
২৫….কৃষিক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিকদের ক্ষমতা - দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের বৈজ্ঞানিকেরা অনেক চিন্তাভাবনার সঙ্গে কাজ করছেন। এখন সময় এসেছে, আমাদের কৃষিক্ষেত্রেও বৈজ্ঞানিকদের ক্ষমতা আর তাঁদের পরামর্শগুলিকে, কৃষি ক্ষেত্রের সঙ্গে জুড়তে হবে। তার জন্য বেশিদিন অপেক্ষা করা যাবে না। আমাদের এর পুরো লাভ তুলতে হবে। দেশকে খাদ্য সুরক্ষা দেওয়ার সঙ্গেই ফল, সবজি আর তরকারির উৎপাদন বৃদ্ধিতে বিপুল সহায়তা পাওয়া যাবে। আর আমরা বিশ্ব পর্যন্ত পৌঁছতে নিজেদের জোরের সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাব।
২৬….কৃষক - ছোট কৃষকরা হয়ে উঠুক দেশের সম্মান, এটাই আমাদের স্বপ্ন। আগামী দিনে, আমাদের দেশের ছোট কৃষকদের সম্মিলিত শক্তিকে আরও বাড়াতে হবে। তাঁদের নতুন নতুন সুবিধা দিতে হবে।
২৮….দেশে ৮০ শতাংশের বেশি এমন কৃষক আছেন, যাদের কাছে জমির পরিমাণ দুই হেক্টরের চেয়েও কম। আগে দেশে যে নীতিগুলি ছিল, তাতে ছোট কৃষকদের প্রতি যতটা নজর দেওয়া দরকার ছিল, তা হয়নি। এখন দেশে, এই ছোট কৃষকদের কথা মাথায় রেখেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
২৮….কিষাণ রেল - আজ দেশের ৭০টির বেশি রেল রুটে কিষাণ রেল চলছে। ছোট কৃষকরা নিজেদের উৎপাদিত ফসল কম খরচে দূরদূরান্তের এলাকায় পৌঁছে দিতে পারছে।
২৯….স্বামীত্ব যোজনা - গ্রামে জমির দলিলে বেশ কিছু প্রজন্মে কোনও কাজ হয়নি। মানুষের কাছে তার কোনও ব্যবস্থা নেই। এই অবস্থা বদলের কাজ আজ স্বামীত্ব যোজনা করছে। আজ প্রত্যেক গ্রামের প্রত্যেক পরিবারের প্রত্যেক জমির ড্রোন দিয়ে মানচিত্র আঁকা হচ্ছে। গ্রামের জমির তথ্য আর সম্পত্তির দলিল অনলাইনে আপলোড করা হচ্ছে। এর দ্বারা গ্রামে জমি সম্পর্কিত দ্বন্দ্বই কেবল সমাপ্ত হচ্ছে না, উপরন্তু গ্রামের লোকেদের ব্যাঙ্ক থেকে সহজে ঋণ পাওয়ার ব্যবস্থাও তৈরি হয়েছে।
৩০….পরবর্তী প্রজন্মের পরিকাঠামো - আমাদের মিলিতভাবে কাজ করতে হবে বিশ্বমানের পণ্য উৎপাদনের জন্য। আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে, পরবর্তী প্রজন্মের কাটিং এডজ উদ্ভাবনের জন্য। আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির জন্য।
৩১….অনাবশ্যক আইনের প্রক্রিয়া থেকে মুক্তি – অনেক ক্ষেত্রে শত শত পুরনো আইন সমাপ্ত করা হয়েছে। অযৌক্তিক আইনের বন্ধন থেকে মুক্তি ‘ইজ অফ লিভিং’ এর পাশাপাশি ‘ইজ অফ ডুয়িং বিজনেস’, এই দুটোর জন্যই খুবই জরুরি। আমাদের দেশের শিল্প আর বাণিজ্য আজ এই পরিবর্তন অনুভব করছে।
৩২….জাতীয় সংকল্প – দেশ সংকল্প নিয়েছে যে স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবের ৭৫ সপ্তাহে, ৭৫টি সপ্তাহে ৭৫টি বন্দে ভারত ট্রেন দেশের প্রত্যেক প্রান্তকে পরস্পরের সঙ্গে জুড়বে। আজ যে গতিতে দেশে নতুন এয়ারপোর্ট নির্মাণ হচ্ছে, উড়ান যোজনা দূরদূরান্তের এলাকাকে জুড়ছে, তা অভূতপূর্ব।
৩৩….প্রধানমন্ত্রী গতিশক্তি – ভারতে ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যানকে আধুনিক পরিকাঠামোর পাশাপাশি পরিকাঠামো নির্মাণে সমন্বয়ী দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োজন রয়েছে। ভারত আগামী কিছুদিনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী গতিশক্তি - ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান চালু করতে চলেছি।
৩৪….শিল্প উৎপাদন আর রপ্তানী -, উন্নয়নের পথে এগিয়ে ভারতকে তার শিল্প উৎপাদন আর রপ্তানী, দুটোকেই বাড়াতে হবে। আপনারা দেখেছেন, এই কিছুদিন আগেই ভারতকে তার নিজস্ব স্বদেশী এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ার আইএনএস বিক্রান্তকে সমুদ্রে ট্রায়াল-এর জন্য নামিয়েছে।
৩৫….প্রতিরক্ষা উৎপাদন - ভারত আজ নিজস্ব যুদ্ধ বিমান বানাচ্ছে, নিজস্ব ডুবোজাহাজ বানাচ্ছে। মহাকাশযানও অন্তরীক্ষে ভারতের পতাকা ওড়ানোর জন্য তৈরি হচ্ছে।
৩৬….পণ্য এবং সম্মান – আপনাদের প্রতিটি পণ্য ভারতের ব্র্যান্ড আম্বেসেডার। দেশের সব শিল্প উৎপাদকদেরও একথা বুঝতে হবে যে, আপনারা যে পণ্য বিদেশে বেচেন, সেগুলি কেবল আপনাদের কোম্পানির বানানো একটি পণ্য নয়, তার সঙ্গে ভারতের পরিচয় যুক্ত আছে, ভারতের সম্মান যুক্ত আছে।
৩৭….স্টার্ট আপস - আমরা দেখেছি, করোনার এই কঠিন সময়ে হাজার হাজার নতুন স্টার্ট আপ উঠে এসেছে। খুব সাফল্যের সঙ্গে আগে এগোচ্ছে। কালকের স্টার্ট আপ আজ ইউনিকর্ন হয়ে যাচ্ছে। তাদের মার্কেট ভ্যালু হাজার হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত ছুঁয়ে যাচ্ছে।
৩৮….সংস্কার রূপায়নের জন্য দরকার ভাল এবং স্মার্ট গভর্নেন্স। আজ বিশ্ব এই ঘটনার সাক্ষী যে, ভারত নিজের দেশে গভর্নেন্স ক্ষেত্রে একটি নতুন অধ্যায় লিখছে।
৩৯….নিয়ম আর প্রক্রিয়ার সমীক্ষা - আমি আজ আহ্বান জানাচ্ছি, কেন্দ্র হোক বা রাজ্য, সকলের দফতরগুলিকেই বলছি, সব সরকারি দফতরকেই বলছি। আপনাদের ওখানে নিয়ম আর প্রক্রিয়ার সমীক্ষা করুন। তেমন প্রত্যেকটি নিয়ম, তেমন প্রত্যেকটি প্রক্রিয়া, যেগুলি দেশের সামনে বাধা হয়ে, বোঝা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, সেগুলি আমাদের দূর করতে হবে।
৪০….নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতি - আজ দেশের কাছে একুশ শতকের প্রয়োজনীয়তা মেটানোর উপযোগী নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতিও আছে। যখন গরিবের মেয়ে, গরিবের ছেলে মাতৃভাষায় পড়াশোনা করে সফল পেশাদার হতে পারবে, তখনই আমাদের সার্বিক সামর্থ্যের সঙ্গে ন্যায় হবে। নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতিকে আমি দারিদ্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অস্ত্র বলে মনে করি।
৪১….দারিদ্রের বিরুদ্ধে লড়াই আর মাতৃভাষা - নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতিতে দারিদ্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অস্ত্র ভাষা। এই নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতি এক অর্থে দারিদ্রের বিরুদ্ধে লড়াই করার একটি খুব বড় অস্ত্র হিসেবে কাজ করবে। দারিদ্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ জেতার ভিত্তিও মাতৃভাষায় শিক্ষা, মাতৃভাষার সম্মান, মাতৃভাষার মাহাত্ম্য।
৪২.….শিক্ষস নীতি আর ক্রীড়া - নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির আরেকটি বৈশিষ্ট্য আছে। এতে ক্রীড়াকে এক্সট্রা কারিকুলার-এ না রেখে মূল ধারার পাঠক্রমের অংশ করা হয়েছে। জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে যত কার্যকরী মাধ্যম রয়েছে, তার মধ্যে একটি হল খেলা।
৪৩….ভারতের মেয়েরা - এটা দেশের জন্য গর্বের বিষয় যে শিক্ষা হোক কিংবা খেলা, বোর্ডের ফল হোক কিংবা অলিম্পিকের ময়দান – আমাদের মেয়েরা আজ অভূতপূর্ব নৈপুণ্য দেখাচ্ছে। আজ ভারতের মেয়েরা তাঁদের জায়গা নেওয়ার জন্য প্রবল আগ্রহী।
৪৪….মেয়েদের জন্য সৈনিক স্কুল - আজ আমি একটি আনন্দের কথা দেশবাসীকে জানাচ্ছি। দু আড়াই বছর আগে মিজোরামের সৈনিক স্কুলে প্রথমবার মেয়েদের ভর্তি করার একটি ক্ষুদ্র প্রয়োগ আমরা করেছিলাম। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এখন থেকে দেশের সমস্ত সৈনিক স্কুল দেশের মেয়েদের জন্যও খুলে দেওয়া হবে।
৪৫….শক্তি উৎপাদনে আত্মনির্ভরতা - ভারতের প্রগতির জন্য, আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তোলার জন্য ভারতের শক্তি উৎপাদনে আত্মনির্ভর হওয়া সময়ের চাহিদা; অনিবার্য প্রয়োজন। সেজন্য আজ ভারতকে এই সঙ্কল্প নিতে হবে যে, আমরা স্বাধীনতার ১০০ বছর পূর্তির আগে ভারতকে শক্তি উৎপাদনে আত্মনির্ভর করে তুলবো
৪৬… গ্রীন হাইড্রোজেন ক্ষেত্র - ভারত আজ যত কাজ করছে, তার মধ্যে সবচাইতে বড় লক্ষ্য হল, যা ভারতকে কোয়ান্টাম জাম্প এনে দেবে তা হল, গ্রিন হাইড্রোজেনের ক্ষেত্র। আমি আজ এই জাতীয় পতাকাকে সাক্ষী রেখে ন্যাশনাল হাইড্রোজেন মিশন ঘোষণা করছি।
৪৭….ঝুলে থাকা সমস্যাগুলির সমাধান - একবিংশ শতাব্দীর আজকের ভারত বড় লক্ষ্য নির্ধারণ আর সেগুলি বাস্তবায়নের সামর্থ্য রাখে। আজ ভারত সেই সমস্যাগুলিরও সমাধান করছে, যেগুলি সমাধানের জন্য দেশবাসী কয়েক দশক কিংবা কয়েক শতাব্দী ধরে অপেক্ষায় ছিল।
৪৮….আর্টিকেল ৩৭০ বদলের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত থেকে শুরু করে, দেশকে ট্যাক্সের জাল থেকে মুক্তি প্রদানের ব্যবস্থা – জিএসটি, আমাদের ফৌজি সাথীদের জন্য ‘ওয়ান র্যাঙ্ক ওয়ান পেনশন’ এর সিদ্ধান্ত, রাম জন্মভূমি বিবাদের শান্তিপূর্ণ সমাধান – এসব কিছু আমরা বিগত কয়েক বছরে বাস্তবায়িত হতে দেখেছি।
৪৯….ত্রিপুরায় কয়েক দশক পর ব্রূ রিয়াং চুক্তি সম্পাদন থেকে শুরু করে ওবিসি কমিশনকে সাংবিধানিক মর্যাদা প্রদান পর্যন্ত আর জম্মু-কাশ্মীরে স্বাধীনতার পর প্রথমবার বিডিসি এবং ডিডিসি নির্বাচন, ভারতের সঙ্কল্প শক্তি ক্রমাগত বাস্তবায়িত করে চলেছে।
৫০….ভারত বদলাচ্ছে - আজ করোনার এই সঙ্কটকালে ভারতে রেকর্ড পরিমাণ বিদেশি বিনিয়োগ আসছে। ভারতের বিদেশি মুদ্রা ভাণ্ডার সর্বকালীন সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে। সার্জিক্যাল স্ট্রাইক এবং এয়ার স্ট্রাইক করে ভারত দেশের শত্রুদের নতুন ভারতের সামর্থ্যের বার্তাও দিয়েছে। ভারত বদলাচ্ছে, ভারত বদলাতে পারে। ভারত কঠিন থেকে কঠিনতর সিদ্ধান্তও নিতে পারে, আর কড়া সিদ্ধান্ত নিতেও ভারত দ্বিধাগ্রস্ত হয় না, থামে না।
৫১….সন্ত্রাসবাদ আর বিস্তারবাদের চ্যালেঞ্জ - আজ বিশ্ব ভারতকে একটি নতুন চোখে দেখছে। এই দৃষ্টির দুটি গুরুত্বপূর্ণ মাত্রা রয়েছে – একটি সন্ত্রাসবাদ, আর দ্বিতীয়টি বিস্তারবাদ।, আর দ্বিতীয়টি বিস্তারবাদ। ভারত এই দুটি সমস্যার বিরুদ্ধে লড়ছে আর বিচক্ষণতার সঙ্গে, অনেক সাহসের সঙ্গে জবাবও দিচ্ছে।
৫৩... অরবিন্দ জন্মজয়ন্তী - আজ দেশের মহান দার্শনিক শ্রী অরবিন্দেরও জন্মজয়ন্তী। ২০২২ সালে তাঁর ১৫০তম জন্মজয়ন্তী পালিত হবে। তিনি বলতেন, আমাদের ততটাই সামর্থ্যবান হয়ে উঠতে হবে, যতটা আমরা আগে কখনও ছিলাম না। আমাদের নিজস্ব স্বভাবগুলি বদলাতে হবে। একটি নতুন হৃদয় নিয়ে নিজেদেরকে আবার জাগ্রত করতে হবে।
৫৩….গণ সহযোগিতা- ভারত আজ যে সংকল্পগুলি বাস্তবায়নের দায়িত্ব নিয়েছে, সেগুলি বাস্তবায়ণের জন্য এর সঙ্গে দেশের প্রত্যেক মানুষকে যুক্ত হতে হবে, এগুলি প্রত্যেক দেশবাসীকে আপন করে নিতে হবে। দেশ জল সংরক্ষণের অভিযান শুরু করেছে। এক্ষেত্রে আমাদের কর্তব্য হলো, জল বাঁচানোকে আমাদের অভ্যাসের সঙ্গে যুক্ত করা।
৫৪….ক্যান ডু জেনারেশন - আমি ভবিষ্যৎদ্রষ্টা নই, আমি কর্মের মাধ্যমে ফল পাওয়া বিশ্বাস করি। আমার বিশ্বাস আছে আমার দেশের যুবশক্তি ওপরে, আমার বিশ্বাস আছে দেশের বোনেদের ওপর, দেশের মেয়েদের ওপর, দেশের কৃষকদের ওপর, দেশের পেশাদারদের ওপর। এটা ক্যান ডু জেনারেশন, এরা প্রত্যেক লক্ষ্যে পৌঁছনোর ক্ষমতা রাখে।
৫৫….ভিশন ২০৪৭-আমার দৃঢ় বিশ্বাস যখন ২০৪৭, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসব হবে – তখন যিনিই প্রধানমন্ত্রী হবেন, তিনি তাঁর ভাষণে যেসব সাফল্যের কথা বর্ণনা করবেন, সেই সাফল্যগুলি সেগুলিই হবে, যেগুলির সঙ্কল্প আজ দেশ গ্রহণ করছে… এটা আমার বিশ্বাস।
৫৭….রাষ্ট্র সর্বাগ্রে, সর্বদাই সর্বাগ্রে - একবিংশ শতাব্দীতে ভারতের স্বপ্নগুলি এবং আকাঙ্ক্ষাগুলিকে বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে কোনও বাধা এখন আমাদের থামাতে পারবে না। আমাদের শক্তি আমাদের ঐক্যবদ্ধতা। আমাদের প্রাণশক্তি ‘রাষ্ট্র সর্বাগ্রে, সর্বদাই সর্বাগ্রে’-র ভাবনা।

 

CG/SB/DM


(Release ID: 1749064) Visitor Counter : 2025