কেন্দ্রীয়মন্ত্রিসভা

ওষুধ শিল্পের জন্য উৎপাদন ভিত্তিক উৎসাহদায়ক প্রকল্পে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অনুমোদন

Posted On: 24 FEB 2021 3:46PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লী, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
 
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ওষুধ শিল্পের জন্য উৎপাদন ভিত্তিক উৎসাহদায়ক প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে। এই প্রকল্পের মেয়াদ ২০২০-২১ অর্থবর্ষ  থেকে ২০২৮-২৯ অর্থবর্ষ।  
 
এই প্রকল্পের ফলে দেশীয় উৎপাদকরা উপকৃত হবেন, কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে এবং গ্রাহকরা সস্তায় ওষুধ পাবেন।  
 
এই প্রকল্পটি দেশে উন্নতমানের ওষুধ উৎপাদনে উৎসাহ যোগাবে। এর ফলে রপ্তানী বাড়বে। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষ থেকে ২০২৭-২৮ অর্থবর্ষ সময়কালে ক্রমবর্ধমান বিক্রির পরিমাণ ২,৯৪,০০০ কোটি টাকা এবং মোট রপ্তানীর পরিমাণ ১,৯৬,০০০ কোটি টাকা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 
 
এই প্রকল্পের ফলে দক্ষ ও অদক্ষ কর্মীদের কাজের সুযোগ তৈরি হবে। এই শিল্পের সম্প্রসারণে প্রত্যক্ষভাবে ২০ হাজার এবং অপ্রত্যক্ষভাবে ৮০ হাজার কর্মসংস্থান তৈরি হবে। 
 
বিভিন্ন অত্যাধুনিক থেরাপি, গবেষণাগারে ব্যবহৃত সরঞ্জাম এবং গুরুত্বপূর্ণ ওষুধগুলি উৎপাদনের জন্য এর ফলে উদ্ভাবনমূলক কাজে উৎসাহ দেওয়া হবে। দেশের নাগরিকদের জন্য অরফ্যান ড্রাগস সহ বিভিন্ন চিকিৎসা সামগ্রী যাতে কম পয়সায় পাওয়া যায় তার সুযোগ তৈরি হবে। এই প্রকল্প চিকিৎসা ক্ষেত্রে ১৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ আকৃষ্ট করবে বলে মনে করা হচ্ছে। 
 
এই প্রকল্পটি ওষুধ শিল্পের উন্নয়নের জন্য মূল প্রকল্পের একটি অংশ। বিনিয়োগ আকর্ষণ করে দেশের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ওষুধ উৎপাদন শিল্পে ভালো মানের বিভিন্ন ওষুধ উৎপাদন করা প্রকল্পের মূল লক্ষ্য। যেসব সংস্থার দেশের বাইরে বাজার বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে তারা এর ফলে উপকৃত হবে। এই প্রকল্পের বৈশিষ্ট্যগুলি হল : 
 
উপকৃত সংস্থা সমূহ
 
ভারতে নিবন্ধীকৃত ওষুধ এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি এই প্রকল্পের সুবিধা পাবে। এক্ষেত্রে তাদের আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে উৎপাদন সংক্রান্ত রাজস্বের পরিমাণ বিবেচিত হবে। এই সংস্থাগুলিকে ৩টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। 
 
ক) ক বিভাগ : ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে যেসব সংস্থাগুলির আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে উৎপাদনের রাজস্বের পরিমাণ ৫ হাজার কোটি টাকা বা তার বেশি।
 
খ) খ বিভাগ : ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে যেসব সংস্থাগুলির আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে উৎপাদনের রাজস্বের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকা থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা।
 
গ) গ বিভাগ : ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে যেসব সংস্থাগুলির আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে উৎপাদনের রাজস্বের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকার কম। অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ সংস্থাগুলির জন্য এই বিভাগের মধ্যে একটি উপ-বিভাগ তৈরি করা হয়েছে।  
 
উৎসাহদানের পরিমাণ 
 
প্রশাসনিক ব্যয় সহ এই প্রকল্পে মোট উৎসাহদানের পরিমাণ প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। নির্ধারিত গোষ্ঠীগুলির জন্য যে উৎসাহদায়ক অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে তা হল :
 
ক বিভাগ : ১১ হাজার কোটি টাকা
খ বিভাগ : ২ হাজার ২৫০ কোটি টাকা
গ বিভাগ : ১ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা
 
উৎসাহদায়ক বরাদ্দকৃত অর্থের মধ্যে ক বিভাগ এবং গ বিভাগের আবেদনকারীরা অন্য কোন বিভাগে যেতে পারবেন না। কিন্তু খ বিভাগের আবেদনকারীরা বরাদ্দকৃত অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহার করতে না পারলে তাদের ক বিভাগে উন্নীত করা হবে।  
 
২০১৯-২০ অর্থবর্ষকে ভিত্তিবর্ষ ধরে সমস্ত হিসেবগুলি করা হবে। 
 
পণ্যের বিভাগ
 
এই প্রকল্পে চিকিৎসা সংক্রান্ত পণ্যগুলিকে ৩টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। 
 
ক) প্রথম বিভাগ : বায়ো ফার্মাসিউটিক্যালস, কমপ্লেক্স জেনেরিক ড্রাগস, পেটেন্টেড ড্রাগস, যেসমস্ত ওষুধের পেটেন্ট শেষ হওয়ার দিন এগিয়ে আসছে, কোষ ভিত্তিক অথবা জিনগত থেরাপির ওষুধ, অরফ্যান ড্রাগস, এইচপিএনসি, পুল্লুলান, আন্ত্রিক ইত্যাদি অসুখের জন্য বিশেষ ধরণের ফাঁকা ক্যাপসুল, ফাইটো ফার্মাসিউটিক্যালস, অন্যান্য অনুমোদিত ওষুধ।
 
খ) দ্বিতীয় বিভাগ : বহুল ব্যবহৃত বিভিন্ন ওষুধের উপাদান/ওষুধ উৎপাদনের মূল উপাদান/অন্তর্বতীকালীন ওষুধ। 
 
গ) তৃতীয় বিভাগ : (যেসব ওষুধ প্রথম ও দ্বিতীয় বিভাগের অন্তর্ভুক্ত নয়)
 
পুনর্ব্যবহারযোগ্য ওষুধ, রোগ প্রতিরোধী ওষুধ, ক্যান্সার প্রতিরোধী ওষুধ, ডায়াবেটিক প্রতিরোধী ওষুধ, সংক্রমণ প্রতিরোধী ওষুধ, হৃদরোগের ওষুধ, মানসিক রোগের ওষুধ এবং ভাইরাস প্রতিরোধী ওষুধ, যেসব ওষুধ মুখের মাধ্যমে প্রয়োগ করা হয়, অন্যান্য যেসব ওষুধ অনুমোদিত, যেসমস্ত ওষুধ ভারতে উৎপাদন করা হয়না।
 
ক্রমবর্ধমান বিক্রয়ের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে উৎসাহদায়ক হার প্রথম ও দ্বিতীয় বিভাগের জন্য প্রথম চার বছরে হবে ১০ শতাংশ, পঞ্চম বছরে ৮ শতাংশ এবং ষষ্ঠ বছরে ৬ শতাংশ। 
 
ক্রমবর্ধমান বিক্রয়ের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে উৎসাহদায়ক হার তৃতীয় বিভাগের জন্য প্রথম চার বছরে হবে ৫ শতাংশ, পঞ্চম বছরে ৪ শতাংশ এবং ষষ্ঠ বছরে ৩ শতাংশ। 
 
২০২০-২১ অর্থবর্ষ থেকে ২০২৮-২৯ অর্থবর্ষ পর্যন্ত এই প্রকল্পের মেয়াদ নির্ধারিত হয়েছে। এর মধ্যে আবেদন পত্রগুলিকে বিবেচনা করা হবে ২০২০-২১ অর্থবর্ষে। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে আবেদন পত্রগুলি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর উৎসাহদায়ক প্রকল্পের জন্য বিভিন্ন বিষয়ের প্রক্রিয়ার কাজ চলবে। ২০২৮-২৯ অর্থবর্ষে ২০২৭-২৮ অর্থবষের বিক্রির ওপর উৎসাহদায়ক অর্থ দেওয়া হবে। 
 
প্রেক্ষাপট  
 
ভারতীয় ওষুধ শিল্প আয়তনের দিক থেকে বিশ্বে তৃতীয় বৃহত্তম, যার মোট আর্থিক পরিমাণ ৪ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। বিশ্বে মোট রপ্তানীকৃত ওষুধের ৩.৫ শতাংশ ভারত থেকে রপ্তানী করা হয়। এদেশ থেকে ২০০টির বেশি দেশ এবং অঞ্চলে নিয়মিতভাবে ওষুধ পাঠানো হয়। এর মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা রয়েছে। ভারতের ওষুধ সংক্রান্ত উদ্ভাবন এবং সেগুলির উৎপাদনের একটি উন্নত ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও এদেশে অত্যন্ত দক্ষ মানব সম্পদ আছে। ভারতে বিখ্যাত ওষুধ উৎপাদনকারী সংস্থা, শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং সহায়ক শিল্পের প্রতিষ্ঠান আছে।  
 
বর্তমানে কম দানের জেনেরিক ওষুধ ভারত প্রচুর পরিমাণে রপ্তানী করে থাকে। অন্যদিকে দেশের পেটেন্টেড ড্রাগসের চাহিদা মেটাতে হয় বিদেশ থেকে আমদানি করা ওষুধের সাহায্যে। এর মূল কারণ ভারতের ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি উচ্চমানের ওষুধ উৎপাদন করে না। এছাড়াও গবেষণা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রেও কিছু ঘাটতি রয়েছে। দেশী বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলিকে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতে এই উৎসাহদায়ক প্রকল্পের ব্যবস্থা করা হয়েছে যাতে ভারতে বিভিন্ন ধরণের ওষুধ উৎপাদন করা সম্ভব হয়। 
 
***
 
 
 
 
CG/CB/NS


(Release ID: 1700512) Visitor Counter : 862