প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

১০টি প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে ‘কোভিড-১৯ ব্যবস্থাপনা : অভিজ্ঞতা, সুঅভ্যাস ও ভবিষ্যৎ পন্থা’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

Posted On: 18 FEB 2021 3:32PM by PIB Kolkata
নতুনদিল্লি, ১৮ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ 
 
 
সুধীবৃন্দ,  
 
নমস্কার! 
 
 
আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে আমাদের একদম পাশের ও বর্ধিত প্রতিবেশী দেশগুলির স্বাস্থ্য আধিকারিক ও বিশেষজ্ঞরা আজ মিলিত হয়েছেন। আজ  একটি অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনার জন্য আমি প্রথমেই আপনাদের সকলকে শুভেচ্ছা জানাই। এই মহামারীর সময়ে যেভাবে আমাদের সকলের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মধ্যে সমন্বয় গড়ে তোলা হয়েছিল, তার জন্য আমি আরো একবার আপনাদের সকলকে অভিনন্দন জানাই। গতবছর যখন কোভিড,  মহামারীর আকার ধারণ করে, তখন আমাদের এই জনবহুল অঞ্চলের বিষয়ে অনেকেই চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন।  কিন্তু শুরু থেকেই আমরা সকলেই এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা একসাথে করেছি। গত বছর মার্চ মাসে এই সঙ্কটের মোকাবিলা করার জন্য  প্রথমবার  আমরা সকলে একসঙ্গে বসেছিলাম,  আর একসঙ্গে লড়াই করার অঙ্গীকার করেছিলাম। পরবর্তীতে  বিভিন্ন অঞ্চল ও গোষ্ঠী আমাদের শুরুর দিকের সেই উদ্যোগটির মত নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। 
 
এই মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইএর জন্য আমরা কোভিড-১৯ আপৎকালীন তহবিল গঠন করেছিলাম। ওষুধ, পিপিই আর নমুনা পরীক্ষার সরঞ্জাম౼ আমরা আমাদের সম্পদ ভাগ করে নিয়েছিলাম। আর সর্বোপরি  আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীদের সমন্বিত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমরা সবথেকে মূল্যবান সম্পদ౼ জ্ঞান ভাগ করে নিয়েছিলাম। ওয়েবিনার, অনলাইন পাঠক্রম ও তথ্য প্রযুক্তির পোর্টালের মাধ্যমে  নমুনা পরীক্ষা, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ ও চিকিৎসা সংক্রান্ত বর্জ্য পদার্থ ব্যবস্থাপনায় আমরা  নিজেদের মধ্যে ভালো পন্থা-পদ্ধতিগুলি নিয়ে আলোচনা করেছি। যেটি প্রয়োগ করে আমরা সবথেকে ভালো ফল পেয়েছি, সেটির উপর ভিত্তি করে সবথেকে ভালো  পদ্ধতি তৈরি করেছি। আমরা সকলেই জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার একটি শক্তিশালী ভান্ডার গড়ে তুলেছি। 
 
বন্ধুগণ, 
 
এই মহামারী থেকে আমরা সহযোগিতার  মূল্যবান ভাবনাটি গড়ে তুলতে পেরেছি। আমাদের মুক্ত চিন্তা এবং অধ্যাবসায়ের ফলে বিশ্বে এই অঞ্চলে মৃত্যুর হার সবচেয়ে কম ছিল, যা প্রশংসার দাবি রাখে। আজ আমাদের ও সারা বিশ্বের আশা দ্রুত টিকাকরণের সঙ্গে আবর্তিত। এক্ষেত্রেও আমাদের একই রকম সহযোগিতার মানসিকতা অবশ্যই বজায় রাখতে হবে।  
 
বন্ধুগণ, 
 
গত এক বছরে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা অনেক কিছু অর্জন করেছি। আমরা কি আমাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি ? আপনাদের আজকের আলোচনার জন্য আমি  কিছু প্রস্তাব দিচ্ছি। 
 
• স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে কোনও দেশে জরুরি পরিস্থিতির উদ্ভব হলে আমাদের চিকিৎসক ও নার্সরা সেই দেশের অনুরোধক্রমে যাতে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় দ্রুত যেতে পারেন, তার জন্য একটি বিশেষ ভিসা ব্যবস্থা গড়ে তোলার বিষয়টি নিয়ে কি আমরা ভাবনাচিন্তা করতে পারিনা ?  
 
•   আমাদের অসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রীরা চিকিৎসার কারণে একটি আঞ্চলিক এয়ার অ্যাম্বুলেন্স চুক্তি করতে পারেন কিনা  সেই বিষয়টি নিয়ে একটি সমন্বিত ভাবনাচিন্তার কি করতে পারেন না ? 
 
• আমাদের জনসাধারণের মধ্যে কোভিড-১৯ টিকার প্রভাব নিয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে তার বিশ্লেষণের জন্য একটি আঞ্চলিক প্ল্যাটফর্ম কি গড়ে তোলা যায়? 
 
• ভবিষ্যতে মহামারী প্রতিরোধে প্রযুক্তি-ভিত্তিক মহামারী সংক্রান্ত বিদ্যাচর্চার জন্য আমরা কি একই ধরণের একটি আঞ্চলিক ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে পারি? 
 
কোভিড-১৯ ছাড়াও আমরা কি আমাদের সফল জনস্বাস্থ্য নীতি ও কর্মসূচীগুলির বিষয়ে পারস্পরিক আলোচনা চালাতে পারি? এই অঞ্চলে আমাদের বন্ধুদের জন্য ভারত, আয়ুষ্মান ভারত ও জন আরোগ্য প্রকল্পের মতো সফল কর্মসূচিগুলির বিষয়ে  আলোচনা করতে পারে। এই ধরণের সহযোগিতা,  আরো বৃহত্তর আঞ্চলিক সহযোগিতা অন্যন্য ক্ষেত্রের জন্য উদাহরণ হয়ে উঠতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক বিপর্যয়, দারিদ্র, নিরক্ষরতা, সামাজিক ও লিঙ্গ বৈষম্যর মত নানা চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করার বিষয়েও আমরা আলাপ আলোচনা করতে পারি। যুগ যুগ ধরে প্রাচীন সাংস্কৃতিক বন্ধন ও এই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ রয়েছে। যে সব কারণে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি, সেগুলি  বিবেচনা করলে, শুধু মহামারীই নয়, আমাদের অন্যান্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সুবিধা হবে। 
 
বন্ধুগন, 
 
যদি একবিংশ শতাব্দী এশিয়ার শতক হয়, সেক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়া ও ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলির মধ্যে বৃহত্তর সমন্বয় ছাড়া লক্ষ্যে পৌঁছনো সম্ভব নয়। মহামারীর সময় যে আঞ্চলিক ভ্রাতৃত্ববোধ আপনারা দেখিয়েছেন, তার মাধ্যমে এটা স্পষ্ট যে, এ ধরনের সংহতি গড়ে তোলা সম্ভব। আরো একবার আমি আপনাদের সকলকে একটি ফলপ্রসূ আলোচনার জন্য শুভেচ্ছা জানাই। 
 
ধন্যবাদ!
 
 অনেক অনেক ধন্যবাদ! 
 
***
 
 
 
 
CG/CB


(Release ID: 1699239) Visitor Counter : 267