প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

স্ট্যাচু অফ ইউনিটির সঙ্গে রেল যোগাযোগ বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী ৮টি ট্রেনের যাত্রার সূচনা করেছেন


গুজরাটে রেলের বিভিন্ন প্রকল্পেরও উদ্বোধন করেছেন

এমজিআর -এর জন্মদিনে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন

কেভিডিয়া বিশ্বে বৃহত্তম পর্যটকদের গন্তব্য হয়ে উঠেছে : প্রধানমন্ত্রী

ভারতীয় রেল লক্ষ্য নির্ভর উদ্যোগের মাধ্যমে পরিবর্তিত হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী

Posted On: 17 JAN 2021 1:39PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ১৭ই জানুয়ারী, ২০২১

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গুজরাটের কেভাডিয়ার মধ্যে রেলের যোগাযোগ বাড়াতে আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৮টি ট্রেনের যাত্রার সূচনা করেছেন। এই ট্রেনগুলি স্ট্যাচু অফ ইউনিটির সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে সাহায্য করবে। প্রধানমন্ত্রী দাভৈই – চান্দোড় শাখায় ্রেল লাইনকে ব্রডগেজ লাইনে পরিণত করা এবং চান্দোড় – কেভাডিয়ায় নতুন ব্রডগেজ রেল লাইন, প্রতাপনগর – কেভাডিয়া শাখায় নতুন বৈদ্যুতিকীকরণ, দাভৈই, চান্দোড় এবং কেভাডিয়া স্টেশনের নতুন ভবনের উদ্বোধন করেছেন। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ও রেল মন্ত্রী এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, রেলের ইতিহাসে সম্ভবত এই প্রথম দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে একই গন্তব্যের উদ্দেশে ট্রেনের যাত্রার সূচনা করা হল। এর কারণ স্ট্যাচু অফ ইউনিটি ও সর্দার সরোবর কেভাডিয়ায় থাকায় এই জায়গার গুরুত্ব বেড়েছে। আজকের অনুষ্ঠান রেলের পরিকল্পনার বাস্তবায়ন এবং সর্দার প্যাটেলের স্বপ্নপূরণের উদাহরণ।

পুরুচি থালিয়াভার ড. এম জি রামচন্দ্রন সেন্ট্রাল রেল স্টেশন থেকে কেভাডিয়ার উদ্দেশে একটি ট্রেনের যাত্রার সূচনা করে প্রধানমন্ত্রী, ভারতরত্ম এম জি রামচন্দ্রনকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। চলচ্চিত্র জগৎ ও রাজনীতির আঙিনাতে ড. রামচন্দ্রনের অবদানের কথা তিনি উল্লেখ করেছেন। এমজিআর – এর রাজনৈতিক যাত্রা ছিল দরিদ্রদের প্রতি উৎসর্গকৃত। তিনি সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের উন্নতির জন্য নিরলস কাজ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এমজিআর –এর আদর্শ পূরণে তাঁরা কাজ করছেন। কৃতজ্ঞ জাতি এমজিআর –এর নামে চেন্নাই সেন্ট্রাল রেল স্টেশনের নামাঙ্কন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী, কেভাডিয়া থেকে চেন্নাই, বারাণসী, রেওয়া, দাদার ও দিল্লির মধ্যে যোগাযোগ ছাড়াও কেভাডিয়া থেকে প্রতাপনগর পর্যন্ত মেমু পরিষেবার কথা উল্লেখ করেছেন। দাভৈই – চান্দোড় এবং চান্দোড় – কেভাডিয়ার মধ্যে ব্রডগেজ লাইনের ফলে কেভাডিয়ায় উন্নয়নের নতুন অধ্যায় শুরু হবে। এর ফলে পর্যটক এবং স্থানীয় আদিবাসীরা উপকৃত হবেন। স্বনির্ভর এবং কর্মসংস্থানের নতুন নতুন সুযোগ গড়ে উঠবে। এই রেল লাইনের ফলে নর্মদা তীরবর্তী তীর্থস্থান কারনালি, পৈচা এবং গুরুদেশ্বরের মধ্যে যোগাযোগ গড়ে উঠবে।

কেভাডিয়ার উন্নয়ন যাত্রার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কেভাডিয়া এখন আর প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি ছোট্ট ব্লক নয়। এটি এখন বিশ্বের পর্যটকদের অন্যতম গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, স্ট্যাচু অফ লিবার্টি থেকেও স্ট্য়াচু অফ ইউনিটিতে বেশি পর্যটক আসছেন। করোনা সময়কালে এটি বন্ধ থাকা সত্ত্বেও উদ্বোধনের পর ৫০ লক্ষের বেশি দর্শক স্ট্যাচু অফ ইউনিটি দেখতে এসেছেন। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হওয়ায় এখন কেভাডিয়ায় দৈনিক ১ লক্ষ দর্শক আসবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। কেভাডিয়া, পরিকল্পনা মাফিক অর্থনীতি ও বাস্তুতন্ত্রের বিকাশের আদর্শ উদাহরণ হয়ে উঠেছে – যেখানে পরিবেশকে রক্ষা করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, প্রাথমিকভাবে কেভাডিয়াকে যখন পর্যটকদের অন্যতম গন্তব্য হিসেবে গড়ে তোলার প্রস্তাব করা হয়েছিল, সেই সময় এটি স্বপ্ন বলে মনে হয়েছিল। পুরোনো ধারায় কাজ করলে, এর পিছনে যুক্তি আছে। কারণ তখন রাস্তাঘাট, রাস্তার আলো, রেল লাইন, পর্যটকদের থাকার জায়গা – কোনো কিছুই ছিল না। আর আজ কেভাডিয়া, পরিবারকে নিয়ে ছুটি কাটানোর একটি আদর্শ জায়গায় পরিণত হয়েছে, যেখানে সব রকমের সুযোগ – সুবিধা আছে। স্ট্যাচু অফ ইউনিটির বিশাল মূর্তি, সর্দার সরোবর, সর্দার প্যাটেল চিড়িয়াখানা, আরোগ্য বন ও জঙ্গল সাফারি এবং পোষণ (পুষ্টি) পার্ক, পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় জায়গা হয়ে উঠেছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, গ্লো গার্ডেন, একতা ক্রুজ ও ওয়াটার স্পোর্টস। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পর্যটন ক্ষেত্রের বিকাশ হওয়ায় আদিবাসী যুবক – যুবতীরা আরো বেশি কাজের সুযোগ এবং স্থানীয় মানুষরা সব রকমের অত্যাধুনিক সুযোগ – সুবিধা পাচ্ছেন। একতা মলে স্থানীয় হস্তশিল্পীদের নানা সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে। আদিবাসী গ্রামগুলিতে হোমস্টের জন্য ২০০টি ঘর সাজানো হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী, কেভাডিয়া স্টেশনের কথাও উল্লেখ করেছেন। পর্যটন ক্ষেত্রের বিকাশের কথা মাথায় রেখে এখানে আদিবাসী শিল্পকলার প্রদর্শশালা এবং স্ট্যাচু অফ ইউনিটিকে এক ঝলক দেখার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভারতীয় রেল, লক্ষ্য নির্ভর উদ্যোগের মাধ্যমে পরিবর্তিত হচ্ছে। পণ্য এবং যাত্রী পরিবহণের জন্য প্রথাগত ভূমিকার পাশাপাশি রেল, পর্যটন ও ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে। আমেদাবাদ – কেভাডিয়া জনশতাব্দী এক্সপ্রেস সহ বিভিন্ন রুটে আকর্ষণীয় “ভিস্তা – ডোম ” কামরার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী, রেলের পরিকাঠামো উন্নয়নে পরিবর্তিত উদ্যোগের কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, আগে রেলের যে পরিকাঠামো ছিল, সেগুলিতে ট্রেন চালানোর মধ্যেই উদ্যোগ সীমিত ছিল। নতুন ভাবনা বা নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে ভাবনা – চিন্তা কম করা হত। বাধ্যতামূলকভাবে এই মানসিকতার পরিবর্তন করা হয়েছে। সম্প্রতি রেল ব্যবস্থাপনার সর্বাঙ্গীন রূপান্তর নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। নতুন ট্রেনের ঘোষণা এবং সীমাবদ্ধ বাজেটের মধ্যেই আর রেলের কাজকর্ম আবদ্ধ থাকছে না। এই প্রসঙ্গে তিনি কেভাডিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য বহুমুখী উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেছেন। যেখানে প্রকল্পের কাজ রেকর্ড সময়ে শেষ হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী, আগের সময়ের মানসিকতার পরিবর্তনের উদাহরণ দিতে গিয়ে নির্ধারিত পণ্য পরিবহণ করিডোরের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, সম্প্রতি পূর্বাঞ্চলীয় ও পশ্চিমাঞ্চলীয় করিডরকে উৎসর্গ করা হয়েছে। এই প্রকল্পের পরিকল্পনা ২০০৬ সালে করা হয়েছিল। কিন্তু ২০১৪ সাল পর্যন্ত তা কাগজে কলমেই সীমাবদ্ধ ছিল। ১ কিলোমিটার রেল লাইনও পাতা হয় নি। আর আজ আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ১১০০ কিলোমিটার রেলপথের কাজ শেষের দিকে।

শ্রী মোদী, দেশের যে সব অংশে যোগাযোগ ছিল না, সেখানে নতুন নতুন যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা উল্লেখ করেছেন। ব্রডগেজ লাইনের রূপান্তর, বৈদ্যুতিকীকরণের কাজে গতি এসেছে। রেলের ট্রাককে এমনভাবে বানানো হচ্ছে যাতে উচ্চগতি সম্পন্ন ট্রেনও চলতে পারে। সেমি হাইস্পিড ট্রেন চালানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আর উচ্চগতি সম্পন্ন ট্রেন চালানোর জন্য বাজেট বহু বাড়ানো হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন।

রেলকে পরিবেশবান্ধব হিসেবে গড়ে তোলা নিশ্চিত করা হচ্ছে। কেভাডিয়া স্টেশন, ভারতের প্রথম রেল স্টেশন, যার বাড়িটি পরিবেশবান্ধব ভবনের শংসাপত্র পেয়েছে।

তিনি রেলের যন্ত্রপাতি এবং প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরতার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন, এর সুফল এখন থেকেই নজরে আসছে। উচ্চগতি সম্পন্ন ইলেক্ট্রিক ইঞ্জিন স্থানীয়ভাবে তৈরি হওয়ায় ভারতে বিশ্বের প্রথম দীর্ঘতম দোতলা মালগাড়ি চালানো সম্ভব হয়েছে। শ্রী মোদী জানিয়েছেন, আজ ভারতীয় রেলে দেশীয় প্রযুক্তিতে অত্যাধুনিক ট্রেন তৈরি করে তা চালানো হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী, রেলের পরিবর্তনের জন্য দক্ষ বিশেষজ্ঞ মানব সম্পদ ও পেশাদারের চাহিদার কথা উল্লেখ করেছেন। এর জন্য ভাদোদরাতে রেলের ডিমড বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। বিশ্বে খুব অল্প কয়েকটি দেশেই এই মাপের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। এখানে রেল পরিবহণ, রেলের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গবেষণা ও প্রশিক্ষণের সুযোগ আছে। বর্তমান এবং ভবিষ্যতের চাহিদা মেটানোর জন্য দেশের ২০টি রাজ্যের মেধাবী তরুণ – তরুণীরা এখানে প্রশিক্ষিত হচ্ছেন। আর এভাবেই উদ্ভাবন ও গবেষণার মধ্য দিয়ে রেলের আধুনিকীকরণের উদ্যোগে সুবিধে হবে বলে শ্রী মোদী উল্লেখ করেছেন।

***

 

 

CG/CB/SFS



(Release ID: 1689473) Visitor Counter : 156