প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
কানাডায় ইনভেস্ট ইন্ডিয়া সম্মেলনে মূল ভাষণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ভারতে বিনিয়োগের সবথেকে আদর্শ পরিবেশ রয়েছে
Posted On:
08 OCT 2020 8:11PM by PIB Kolkata
নতুন দিল্লি, ৮ই অক্টোবর, ২০২০
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কানাডায় অনুষ্ঠিত ইনভেস্ট ইন্ডিয়া সম্মেলনে মূল ভাষণ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, রাজনৈতিক স্থিতাবস্থা, বিনিয়োগ ও ব্যবসা – বাণিজ্য বান্ধব নীতি, স্বচ্ছ প্রশাসন, দক্ষ মেধা সম্পন্ন শ্রমশক্তি এবং বৃহৎ বাজারের মতো বিনিয়োগের আকর্ষণ করার সব উপাদানই ভারতের রয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, উৎপাদক, উদ্ভাবন ব্যবস্থা ও পরিকাঠামো সংক্রান্ত সহায়ক সংস্থা – সকলেরই ভারতে সুযোগ রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কোভিড পরবর্তী বিশ্বে ভারত দেখিয়েছে কিভাবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে তোলা যায় এবং উৎপাদন, সরবরাহ শৃঙ্খলের মতো বিভিন্ন সমস্যার মোকাবিলা করে সমাধান ক্ষেত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা যায়। তিনি আরো জানান, বিভিন্ন বিঘ্ন সত্ত্বেও কয়েক দিনের মধ্যেই ৪০ কোটির বেশি কৃষক, মহিলা এবং দরিদ্র মানুষদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা পাঠানো গেছে। মহামারীর ফলে বিভিন্ন সমস্যার উত্তরণে সরকার কি কি ব্যবস্থা নিয়েছে, তিনি সেবিষয়েও জানিয়েছেন এবং এর মাধ্যমে গত কয়েক বছর ধরে যে প্রশাসনিক কাঠামো তৈরি করা হয়েছে, তার ক্ষমতাও প্রদর্শিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সারা দেশে যখন কঠোরভাবে লকডাউন পালন করা হচ্ছিল, ভারত সেই সময়ে প্রায় ১২০টি দেশে ওষুধ সরবরাহ করে বিশ্বের ওষুধ প্রস্তুতকারক কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। তিনি জানান, এবছরের মার্চ থেকে জুন মাসের মধ্যে ২৩ শতাংশ বেশি কৃষিপণ্য রপ্তানি হয়েছে। মহামারীর আগে ভারতে পিপিই কিট তৈরি করা হতো না, অথচ বর্তমানে প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ পিপিই কিট তৈরি করা হচ্ছে এবং রপ্তানিও করা হচ্ছে। কোভিড -১৯ এর টিকা উৎপাদন করে সারা বিশ্বকে সাহায্য করার বিষয়ে ভারত অঙ্গীকারবদ্ধ।
প্রধানমন্ত্রী জানান, ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে সরকার, বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আর এর ফলে ভারত, আরো শক্তিশালী হয়েছে। প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগের নিয়মকানুন শিথিল করা, সোভেরিন ওয়েল্থ এন্ড পেনশন ফান্ডের জন্য কর বান্ধব নীতি গ্রহণ, বিপুল বন্ডের বাজার তৈরির জন্য তাৎপর্যপূর্ণভাবে সংস্কার নিয়ে আসা, প্রধান প্রধান ক্ষেত্রগুলিতে বিভিন্ন উৎসাহ ব্যাঞ্জক নীতি প্রণয়ণের মতো নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ওষুধ প্রস্তুত, চিকিৎসা সরঞ্জাম নির্মাণ এবং বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি তৈরির ক্ষেত্রগুলি ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে। বিনিয়োগকারীদের প্রতি যথাযথ গুরুত্ব দেওয়ার জন্য একটি নির্ধারিত ক্ষমতাশালী সচিব গোষ্ঠী তৈরি করা হয়েছে। বিমানবন্দর, রেল পথ, মহাসড়ক, বিদ্যুৎ বন্টন ইত্যাদি ক্ষেত্রে অর্থের যোগানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রিয়েল এস্টেট এবং পরিকাঠামো ক্ষেত্রের বিনিয়োগের জন্য সরকারী এবং বেসরকারী স্তর থেকে মূলধনের যোগান দেওয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভারতের চিন্তা-ভাবনা এবং তার বাজার দ্রুত গতিতে পরিবর্তিত হচ্ছে। কোম্পানী আইনের আওতায় একটা সময় বিভিন্ন বিষয়কে অপরাধ হিসাবে দেখা হতো, আজ সেগুলিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে এবং নিয়মের বেড়াজাল থেকে মুক্ত করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক উদ্ভাবন সূচকের তালিকায় ৮১ থেকে ৪৮তম স্থানে এবং বিশ্ব ব্য়াঙ্কের সহজে ব্যবসা – বাণিজ্য করার ক্রমতালিকায় ভারত, ১৪২তম স্থান থেকে ৬৩তম স্থানে উঠে এসেছে। শ্রী মোদী বলেছেন, এই উন্নতির ফলে ২০১৯-এর জানুয়ারী থেকে ২০২০-র জুলাই পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ভারতে ৭০০০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছেন, যা ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল – এই ৪ বছরের মোট বিনিয়োগের প্রায় সমান। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের ভারতের প্রতি আস্থা প্রতিফলিত হচ্ছে। যখন দেখা যায় ২০১৯ সালে বিশ্বজুড়ে প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগের পরিমাণ ১ শতাংশ কম হলেও ভারতে তা ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
কোভিড – ১৯ এর সংক্রমণ সারা বিশ্বে যখন সবথেকে বেশি ছিল – অর্থাৎ এবছরের প্রথম ৬ মাসে, ভারতে ২০০০ কোটি মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ এসেছে। কোভিড – ১৯ মহামারীর বিরুদ্ধে ভারতে একটি অনন্য ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। তিনি বলেছেন, দরিদ্র এবং ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য যে উৎসাহমূলক ত্রাণের প্যাকেজের ব্যবস্থা করা হয়েছে, তার সাহায্যে কাঠামোগত সংস্কারের পাশাপাশি উৎপাদন এবং সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, শিক্ষা, শ্রম এবং কৃষি ক্ষেত্রের সংস্কার হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ভারতবাসীর কাছে এর প্রভাব পৌঁচেছে। কৃষি এবং শ্রমের ক্ষেত্রে পুরোনো আইনগুলির সংস্কার করা হয়েছে। এর ফলে বেসরকারী ক্ষেত্রগুলির অংশগ্রহণ যেমন আরো নিশ্চিত হবে, সরকারী সুরক্ষা কবচও শক্তিশালী হয়ে উঠবে। এই ব্যবস্থায় কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী এবং আমাদের কঠোর পরিশ্রমি জনসাধারণ – প্রত্যেকেই উপকৃত হবেন। শিক্ষা ক্ষেত্রে সংস্কার আমাদের তরুণদের মেধাকে কাজে লাগাতে সাহায্য করবে এবং আরো বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ভারতে আসার পথ তৈরি হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, শ্রম আইনের সংস্কারের ফলে শ্রম সংক্রান্ত কোডের সংখ্যা কমেছে, যার ফলে কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী ও কর্মচারী দু’পক্ষেরই সুবিধা হবে এবং সহজে ব্যবসা – বাণিজ্য করার সুযোগ বাড়বে। তিনি আরো জানান, কৃষি ক্ষেত্রের সংস্কারগুলি সুদূর প্রসারী প্রভাব বিস্তার করবে। এর ফলে আমাদের কৃষকদের কাছে অনেক সুযোগ আসবে এবং রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে। এই সংস্কারগুলি আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তুলতে সাহায্য করবে, তার মাধ্যমে বিশ্বের সমৃদ্ধি নিশ্চিত হবে। তিনি এই প্রসঙ্গে জানান, শিক্ষা ক্ষেত্রে ভারত অংশীদার হতে পারে, উৎপাদন এবং পরিষেবা ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করা যেতে পারে। এছাড়াও কৃষি ক্ষেত্রের সহযোগিতার সুযোগও রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং অনেক অভিন্ন স্বার্থ ভারত ও কানাডার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে দৃঢ় করেছে। ব্যবসা – বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আমাদের বহুস্তরীয় সম্পর্কের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। তিনি বলেছেন, কানাডা হল বৃহৎ এবং অভিজ্ঞ পরিকাঠামোগত বিনিয়োগকারীদের জায়গা। ভারতে কানাডিয়ান পেনশন ফান্ড প্রথম থেকেই প্রত্যক্ষভাবে বিনিয়োগের কাজ শুরু করেছে। মহাসড়ক, বিমানবন্দর, লজিস্টিক এবং রিয়েল এস্টেটের মতো ক্ষেত্রগুলিতে কানাডার বিনিয়োগকারীরা নতুন নতুন সম্ভাবনা খুঁজে পেয়েছেন। তিনি জানান, বহু বছর ধরে কানাডার যে সব বিনিয়োগকারীরা ভারতে রয়েছেন, তাঁরা আমাদের সব থেকে ভালো ব্র্যান্ড অ্যাম্বাস্যাডর হতে পারেন। তাঁদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা, ব্যবসা – বাণিজ্য বাড়ানোর পরিকল্পনা, কানাডার অন্যান্য বিনিয়োগকারীদের কাছে উৎসাহের কারণ হতে পারে। ভারতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কানাডার বিনিয়োগকারীদের কোনো বিধি – নিষেধের সম্মুখীন হতে হবে না বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।
CG/CB/SFS
(Release ID: 1662924)
Visitor Counter : 288
Read this release in:
English
,
Urdu
,
Marathi
,
Hindi
,
Assamese
,
Manipuri
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Odia
,
Tamil
,
Telugu
,
Kannada
,
Malayalam