সংস্কৃতিমন্ত্রক

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৯তম জন্মজয়ন্তী অনলাইনে উদযাপন করল রাষ্ট্রীয় আধুনিক কলা সংগ্রহালয়

Posted On: 06 MAY 2020 8:42PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ৭ মে, ২০২০

 



গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৯তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার, ৭ই মে থেকে রাষ্ট্রীয় আধুনিক কলা সংগ্রহালয় (ন্যাশনাল গ্যালারি অফ মডার্ণ আর্ট - এনজিএমএ), অনলাইনের মাধ্যমে ‘গুরুদেব – মহান সঙ্গীত রচয়িতার দৃষ্টিলব্ধ অভিধানের যাত্রা’ শীর্ষক একটি চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। এনজিএমএ-এর সংগ্রহে  বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী এই  শিল্পীর ১০২টি চিত্রকর্ম রয়েছে। এই শিল্পকর্মের মাধ্যমে তাঁর চিত্রশিল্পের দক্ষতার পরিচয় পাওয়া যায়। এই চিত্র প্রদর্শনীতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘প্রতিকৃতি ও মুখাবয়ব’ এবং ‘প্রকৃতিতে আবিষ্ট মানুষ’ এই দুই বিষয়ের ওপর আঁকা ছবিগুলি দর্শকরা দেখতে পাবেন।


কবির, সৃজনশীলতার বেশকিছু নিদর্শন এনজিএমএ –এর সংগ্রহে রয়েছে।


নোভেল করোনা ভাইরাসের কারণে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের পরামর্শক্রমে এই সংগ্রহশালা এবং পাঠাগার বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।


এনজিএমএ–এর মহানির্দেশক, শ্রী অদ্বৈতচরণ গড়নায়ক বলেন, কবি, ঔপন্যাসিক এবং চিত্রশিল্পী, প্রথম ভারতীয় নোবেল পুরস্কার প্রাপক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতি তাঁরা এভাবেই শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন। দর্শকরা বাড়িতে বসেই কবির সৃজনশীলতার আস্বাদন পাবেন। তাঁদের জন্য অনলাইনের মাধ্যমে একটি প্রশ্নোত্তর প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। এনজিএমএ –এর তথ্য-প্রযুক্তি শাখার প্রধান শ্রী এস. এস. পাল-এর উদ্যোগে অনলাইনের মাধ্যমে এই চিত্রপ্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে।


ভার্চুয়াল এই চিত্রপ্রদর্শনীতে এনজিএমএ –এর সংগ্রহে থাকা রবীন্দ্রনাথের চিত্রকর্ম দর্শকরা যখন দেখবেন, তখন কবির কিছু কিছু উল্লেখযোগ্য সাহিত্য সৃষ্টির ধারাবিবরণীও তাঁরা শুনতে পাবেন। দর্শকরা এবিষয়ে তাঁদের মতামত জানাতে পারবেন, নিচের লিঙ্কটি ক্লিক করে - https://so-ham.in/gurudev-journey-of-the-maestro-through-his-visual-vocabulary/
২০১৮ সালে এনজিএমএ, সংস্কৃতি মাধ্যমের https://so-ham.in এই পোর্টালটি সূচনা করেন। 


রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ( ১৮৬১ – ১৯৪১), ‘গুরুদেব’ নামে  জনপ্রিয় ছিলেন। এক সচ্ছল পরিবারে জন্ম নেওয়া এই মহান সঙ্গীত রচয়িতা, সাহিত্য, শিল্প, নৃত্য-গীতিতে ছোটবেলা থেকেই পারদর্শী হয়ে উঠেছিলেন। তাঁর গীতাঞ্জলী কাব্যগ্রন্থের জন্য ১৯১৩ সালে প্রথম ভারতীয় হিসেবে তিনি নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তিনি ভারত ও বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা। তাঁর শিল্পকর্মে আধুনিকতার ছোঁয়া পাওয়া যায়।


রবীন্দ্রনাথ, গোড়ার দিকে লেখক, কবি, নাট্যকার, দার্শনিক ও নন্দনতত্ত্ববীদ, গীতিকার, সুরকার ও নৃত্য পরিকল্পনাকার, অন্যন্য এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান – বিশ্বভারতীর প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ১৯২৮ সালে যখন তাঁর বয়স ৬৭, সেই সময় থেকে একজন চিত্রশিল্পী হিসেবে তিনি পরিচিত হতে শুরু করেন।


তাঁর কাছে এটি ছিল, তাঁর কাব্য চেতনার এক বর্হিপ্রকাশ। বিংশ শতকের ২০-র দশকের মাঝামাঝি সময়ে তিনি পান্ডুলিপিতে যে আঁকিবুকি শুরু করেন, পরবর্তীতে তা-ই প্রতিকৃতির রূপ নেয়। 


১৯২৮ – ৪০ এর মধ্যে রবীন্দ্রনাথ,  ২০০০-এরও বেশি ছবি এঁকেছেন। তাঁর ছবির কোনো শিরোনাম তিনি কখনই দেন নি। স্মৃতির কোনায় থাকা অবনমিত চিন্তা থেকে রবীন্দ্রনাথের শিল্পকর্ম ছিল, তাৎক্ষণিকতার প্রতীক। তাঁর ছবিগুলো বর্হিজগৎ-কে প্রকাশ করে না, বরং সেগুলি অন্তরের অনুভূতির প্রতিফলন।


তাঁর শিল্পকর্ম ১৯৩০ সালে প্যারিসে প্রথম প্রদর্শিত হয়। তারপর ইউরোপ ও আমেরিকার নানা জায়গায় সেগুলি দেখানো হয়েছে। এভাবেই কবির আঁকা ছবিগুলি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টির মধ্যে বিমূর্ত চিত্রকলার ছোঁয়া আমরা পাই। তাঁর কাজে কল্পনা ও ছন্দ মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। এই ছবিগুলি তাঁর কল্পনাশক্তির গভীরতার প্রতিফলন౼যেখানে পাখি এবং মানুষ অর্ধবিমূর্ত অবস্থা এক হয়ে যায়। রবীন্দ্রনাথ, তাঁর স্বাধীন সৃজনশীলতাকে নিজস্ব আঙ্গিকে তুলে ধরেছেন। তিনি, কাগজে কালির সাহায্যে তাঁর সৃষ্টিকর্মকে ফুটিয়ে তুলেছেন। কখনও তুলির ব্যবহার করেছেন, কখনও কাপড়, কখনও তুলো, আবার কখনও স্রেফ কালিতে আঙ্গুল ডুবিয়ে তিনি ছবি এঁকেছেন। কবির শিল্পকর্ম ছিল, ব্যক্তি রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে বিশ্বের এক সেতু বন্ধন। আধুনিক ধারায় তিনি ছবি আঁকতেন। ইউরোপের অভিব্যক্তিবাদ এবং প্রাচীন সংস্কৃতির আদিযুগের শিল্পকর্ম – সবকিছুতেই তিনি অনুপ্রেরণা পেয়েছেন। তাঁর কল্পনার সঙ্গে চিন্তাধারা, তাঁর ছবির ভাষার অন্য এক পরিচয় দিয়েছে। দেশ-বিদেশের শিল্পীদের কাছে বিশ্বকবির কাজের ধারা আজও অনুপ্রেরণার উৎস। 

 

 


CG/CB/SFS 



(Release ID: 1621936) Visitor Counter : 731