প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

আইসিসি মহিলা বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আলাপচারিতার বঙ্গানুবাদ

Posted On: 06 NOV 2025 1:32PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ০৬ নভেম্বর, ২০২৫ 

 

প্রধানমন্ত্রী : আজ একটি বিশেষ দিন। আজ দেব দীপাবলি, সেইসঙ্গে গুরুপরব। সত্যি, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক উপলক্ষ্য। 
খেলোয়াররা : শুভ গুরুপরব স্যর! 
প্রধানমন্ত্রী : আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক অভিনন্দন। 
প্রশিক্ষক : মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। এখানে আসতে পেরে আমরা নিজেদের সম্মানিত ও সৌভাগ্যবান মনে করছি। আমি আপনাকে একটি কথা জানাই। এই মেয়েরা আশ্চর্য কাজ করেছে, সত্যিই অসাধারণ। গত দু’বছর ধরে তারা কঠোর পরিশ্রম করেছে, প্রাণপন চেষ্টা করেছে। তারা সম্পূর্ণ মনোযোগ ও উদ্যম নিয়ে প্রতিটি প্র্যাক্টিস সেশনে অনুশীলন করেছে। অবশেষে কঠোর পরিশ্রমের পুরস্কার তারা পেয়েছে। 
হরমনপ্রীত কউর : স্যর, আমার এখনও মনে আছে যে, আপনি ২০১৭ সালে আমাদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তখন আমরা ট্রফি নিয়ে আসতে পারিনি। কিন্তু, আজ আমাদের খুব ভালো লাগছে যে, আমরা এতদিন ধরে যেজন্য কঠোর পরিশ্রম করেছি, সেই ট্রফি সঙ্গে নিয়ে আসতে পেরেছি। আপনি আমাদের আনন্দ দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন। এটা আমাদের কাছে অত্যন্ত সম্মানের বিষয়। এখন থেকে আমাদের লক্ষ্য হ’ল – প্রতিবার ট্রফি নিয়ে আপনার সঙ্গে দেখা করা, আর আপনার সঙ্গে টিম ফটো তোলা। 
প্রধানমন্ত্রী : সত্যি আপনারা অসাধারণ কাজ করেছেন। ভারতে ক্রিকেট কেবল একটি খেলা নয়, একদিক থেকে এটা মানুষের জীবনের অঙ্গ হয়ে গেছে। ক্রিকেটে ভালো ফল করলে গোটা দেশ খুশি হয়, আর যদি একটু টলমল করে, তা হলে সবাই হতাশ হয়ে পড়েন। আপনারা যখন টানা তিনটে ম্যাচ হেরেছিলেন, তখন ট্রোলিং বাহিনী আপনাদের পিছনে পড়ে গিয়েছিল। 
হরমনপ্রীত কউর : আপনার সঙ্গে ২০১৭ সালে যখন দেখা হয়েছিল, তখন আমরা ফাইনালে হেরে ফিরেছিলাম। কিন্তু, তখনও আপনি আমাদের এত উদ্বুদ্ধ করেছিলেন, যে বলার নয়। আপনি আমাদের বলেছিলেন, কিভাবে খেলতে হবে এবং পরের সুযোগে নিজেদের সেরাটা দিতে হবে। আজ যখন আমরা ট্রফি নিয়ে ফিরেছি, তখন আপনার সঙ্গে কথা বলতে পেরে খুব ভালো লাগছে। 
প্রধানমন্ত্রী : হ্যাঁ, স্মৃতিজি, আপনি কিছু বলুন। 
স্মৃতি মান্ধানা : আমরা যখন ২০১৭ সালে আপনার কাছে এসেছিলাম, তখন ট্রফি নিয়ে আসতে পারিনি। কিন্তু আমার মনে আছে যে, আপনি আমাদের প্রত্যাশা নিয়ে একটা প্রশ্ন করেছিলেন, তার উত্তরও দিয়েছিলেন। সেই উত্তর আমার চিরকাল মনে থাকবে। সেটা আমাদের সত্যিই কাজে লেগেছে। পরের ৬ – ৭ বছরে আমরা বহুবার চেষ্টা করেছি। কিন্তু, বিশ্বকাপে আমাদের ব্যর্থ হয়ে ফিরতে হয়েছে। আমার মনে হয়, প্রথম মহিলা বিশ্বকাপ যে ভারতে আসবে, এটা ভবিতব্য ছিল। আর স্যর, আপনি সর্বদাই আমাদের সবার কাছে প্রেরণার উৎস। বিশেষ করে, এখন যখন ইসরো’র রকেট উৎক্ষেপণ থেকে শুরু করে সবক্ষেত্রেই মহিলারা সাফল্যের সাক্ষর রাখছেন, তখন তা আমাদের উদ্বুদ্ধ করছে। আমরা যখনই এমন কোনও ঘটনা দেখি, তখনই তা আমাদের আরও ভালো খেলতে এবং দেশজুড়ে অন্য মেয়েদের প্রেরণা দিতে উদ্বুদ্ধ করে। 
প্রধানমন্ত্রী : সারা দেশ আপনাদের দেখেছে, গর্ব অনুভব করেছে। আমি আপনাদের সবার কাছ থেকে আপনাদের অভিজ্ঞতা শুনতে চাই। 
স্মৃতি মান্ধানা : স্যর, আমার মনে হয়, এবারে আমাদের প্রয়াসের সবচেয়ে ভালো দিকটা হ’ল – প্রতিটি খেলোয়াড়েরই কিছু বলার আছে, আর, কারও অবদানই অন্যের থেকে কম নয়। 
স্মৃতি মান্ধানা : শেষবার যখন আপনার সঙ্গে দেখা হয়েছিল, আপনি আমাদের বলেছিলেন, কিভাবে প্রত্যাশার চাপ সামলাতে হয়। সেই কথা আমার মনে গেঁথে রয়েছে। আপনি যেরকম শান্ত ও স্থিতধী থাকেন, তা আমাদের সবাইকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করে। 
জেনিমা রডরিগস : স্যর, আমরা যখন ওই তিনটি ম্যাচ হেরেছিলাম... আসলে আমার মনে হয়, একটা টিম কতবার জিতল, তা দিয়ে তার বিচার হয় না। তার আসল বিচার হয়, ব্যর্থতার পর ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতা থেকে। এই টিম সেটাই করে দেখিয়েছে, আর সেজন্যই আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে পেরেছি। আর যে বিষয়টা বলার, তা হ’ল – এই টিমের ঐক্য। আমি এমন সংহতি আগে কখনও দেখিনি। যখনই কেউ ভালো করেছে, প্রত্যেকে তাতে খুশি হয়েছে, হাততালি দিয়েছে, এমনভাবে উদযাপন করেছে, যেন তারা নিজেই ঐ রানগুলি করেছে বা উইকেট-গুলি নিয়েছে। আবার, কেউ যখন ব্যর্থ হয়েছে, তখন সবসময়েই কেউ না কেউ তার পাশে গিয়ে কাঁধে হাত রেখেছে, বলেছে, কোনও ব্যাপার নয়। পরের ম্যাচে করে দেখিও। আমার মনে হয়, এটাই এই টিমের পরিচয়। 
স্নেহ রানা : আমি জেমির সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত। সাফল্য পেলে সবাই একসঙ্গে থাকে। কিন্তু, ব্যর্থতার সময়ে একে-অপরের পাশে দাঁড়ানোই হ’ল আসল পরীক্ষা। একটা টিম হিসেবে, একটা ইউনিট হিসেবে আমরা ঠিক করেছিলাম যে, যাই হোক না কেন, আমরা কাউকে পিছনে ফেলে রাখব না, সবসময়ে একে-অপরকে তুলে ধরব। আমার মনে হয়, এটাই আমাদের টিমের সবচেয়ে শক্তির  জায়গা।
ক্রান্তি গৌড় : হরমন দি সবসময়ে বলে, হাসো। কেউ যদি নার্ভাস হয়ে বসে থাকে, বা চুপ করে থাকে, আমরা গিয়ে তাকে হাসাই। একে-অপরকে হাসতে দেখলে, আমাদের চাপ কমে যায়, আমরা ইতিবাচক হয়ে উঠি। 
প্রধানমন্ত্রী : কিন্তু, আপনাদের টিমে এমন কেউ নিশ্চয়ই আছে, যে সবাইকে হাসায়, তাই না। 
খেলোয়াড়রা : জেমি দি।
জেমিমা রডরিগস : স্যর, আমি একা নই। হরলীনও আছে। টিমকে একসূত্রে বেঁধে রাখতে ওরও প্রচুর অবদান রয়েছে। 
হরলীন কউর দেওল : স্যর, আসলে আমার মনে হয়, প্রত্যেকটা টিমে এমন অন্তত একজন থাকা দরকার, যে সবার মন হাল্কা করে দিতে পারে। যখনই আমি কাউকে একা থাকতে বা চুপ করে বসে থাকতে দেখি, বা ধরুন, আমার নিজের যখন আলসেমি ভাব আসে, তখনই আমি মজাদার কিছু করতে শুরু করি। আমার চারপাশের সবাই খুশি থাকলে আমার খুব ভালো লাগে। 
প্রধানমন্ত্রী : তা হলে তো আপনারা নিশ্চয়ই এখানেও এমন কিছু করেছেন, কী ঠিক বলছি তো? 
হরলীন কউর দেওল : স্যর, ওরা আমাদের বকেছেন। আমাদের চুপ করে থাকতে বলেছেন। আমরা একটু শোরগোল করলেই বকা খেয়েছি। 
হরলীন কউর দেওল : স্যর, আপনার ত্বক পরিচর্যার রুটিনটা একটু বলুন না, আপনাকে দারুণ ঝলমলে লাগে। 
প্রধানমন্ত্রী : দেখুন, আমি সত্যি বলছি, এ ব্যাপারে আমি কখনও মনোযোগ দিইনি।
খেলোয়াড়রা : স্যর, লক্ষ লক্ষ ভারতীয়র ভালোবাসাই আপনাকে ঝলমলে করে তোলে। 
প্রধানমন্ত্রী : এটা ঠিক বলেছেন। এটাই সত্যি। এর শক্তি কিন্তু প্রবল... মানুষের ভালোবাসা আর আশীর্বাদ। দেখুন, সরকারের প্রধান হিসেবে আমার ২৫ বছর হয়ে গেল। অনেকটা সময়। কিন্তু, এখনও মানুষ যখন তাঁদের ভালোবাসা উজাড় করে দেন, তখন সত্যিই তার একটা গভীর প্রভাব পড়ে। 
প্রশিক্ষক : স্যর, আপনি দেখছেন তো, কেমন সব প্রশ্ন আসছে। এদের প্রত্যেকের মানসিকতা আলাদা। দু’বছর হ’ল, আমি এদের প্রধান প্রশিক্ষকের দায়িত্ব নিয়েছি। আর এর মধ্যেই দেখুন, আমার মাথার চুল পাকতে শুরু করেছে। আপনাকে একটা কাহিনী বলি, জুন মাসে আমরা যখন ইংল্যান্ডে ছিলাম, তখন সেখানে রাজা চার্লসের সঙ্গে আমরা দেখা করতে যাই। প্রটোকল অনুযায়ী, ২০ জনের সেখানে যাওয়ার অনুমতি ছিল। সেজন্য, সাপোর্ট স্টাফরা যেতে পারেননি, শুধুমাত্র খেলোয়াড়রা এবং তিনজন কোচ গিয়েছিলেন। আমি সাপোর্ট স্টাফদের বলি, আমার খুব খারাপ লাগছে, কিন্তু মাত্র ২০ জনকেই ওরা যাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। এর উত্তরে সাপোর্ট স্টাফরা যা বলেছিলেন, তা আমাকে নাড়া দিয়ে গিয়েছিল। ওরা বলেছিলেন, ঠিক আছে, আমাদের এই ফটোর দরকার নেই। কিন্তু, নভেম্বরের ৪ বা ৫ তারিখে মোদীজির সঙ্গে ফটো আমাদের চাই। আজ সেই দিনটা সত্যিই এসেছে। 
হরমনপ্রীত কউর : কখনও কখনও মনে হ’ত, আমাদের সঙ্গেই বারবার এটা ঘটছে কেন। এখন মনে হয় যে, আমাদের মানসিক ও শারীরিকভাবে আরও শক্তিশালী করে তোলার জন্যই বোধ হয় ঐ ব্যর্থতার প্রয়োজন ছিল। 
প্রধানমন্ত্রী : হরমন আপনি যখন এটা বলছিলেন, তখন আপনার মনের ভেতরে ঠিক কী হচ্ছিল? আপনি যা বলেছেন, তা সত্যিই মানুষকে উদ্বুদ্ধ করবে। 
হরমনপ্রীত কউর : চরম ব্যর্থতার মধ্যেও আমরা সবসময়ে বিশ্বাস করতাম যে, একটা দিন আসবেই, যেদিন আমরা ওই ট্রফিটা হাতে নেব। আর, এই টিমের সঙ্গে থাকতে থাকতে প্রথম দিন থেকেই এটা আমার মনে হচ্ছিল। 
প্রধানমন্ত্রী : কিন্তু, ঐ যে ভাবনাটা আপনার মনে এল – কেন আমাদের সঙ্গেই বারবার এটা ঘটে? আর তারপরও আপনারা যে সাহস ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে গেলেন, তার পেছনে নিশ্চয়ই জোরালো কোনও কারণ ছিল।
হরমনপ্রীত কউর : হ্যাঁ স্যর, এর কৃতিত্ব আমাদের টিমের সবার। প্রত্যেকেই নিজের উপর বিশ্বাস রেখেছে। প্রতিটি ট্যুর্নামেন্টে আমরা উন্নতি করেছি। আমাদের কোচ বলছিলেন, তিনি দু’বছর হ’ল আমাদের সঙ্গে রয়েছেন, এই সময়টাতে আমরা আমাদের মানসিক শক্তি বাড়ানোর জন্য অনেক খেটেছি। কারণ দেখুন, যা ঘটে গেছে, তা তো আপনি আর বদলাতে পারবেন না।
প্রধানমন্ত্রী : তাই, আপনারা বর্তমান নিয়ে বাঁচতে শিখলেন।
হরমনপ্রীত কউর : একদম স্যর। সেজন্যই আপনাকে আমার প্রশ্ন, এমন কী করা যেতে পারে, যাতে আমাদের টিমের সবাই বর্তমানকে নিয়ে বাঁচার এই ধারণা আরও ভালোভাবে নিতে পারে? আপনার এই কথা আমাদের খুব কাজে লেগেছে। আমরা ভবিষ্যতেও এই পথ ধরেই চলব।
প্রধানমন্ত্রী : তা হ’লে ডিএসপি, আজ আপনি কি করেছেন? আপনি নিশ্চয়ই সবাইকে নির্দেশ দিতে ও নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যস্ত ছিলেন?
দীপ্তি শর্মা : না স্যর, আজ আমি আপনার সঙ্গে দেখা করার জন্য অপেক্ষা করে ছিলাম। কতদিন ধরে যে এই দিনটার জন্য আমি অপেক্ষা করছি! আমার এখনও মনে আছে যে, ২০১৭ সালে আপনি আমাকে বলেছিলেন, ব্যর্থতার পর ভেঙে না পড়ে, যে ঘুরে দাঁড়ায়, সেই প্রকৃত খেলোয়াড়। কঠোর পরিশ্রমের কোনও বিকল্প নেই। নিজের চেষ্টায় কখনও ফাঁকি দেবেন না। আপনার এই কথাগুলো আমাকে সর্বদা অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। সময় পেলেই আমি আপনার বক্তৃতা শুনি স্যর। কত লোকে কত কথা বলে, তবু আপনি শান্ত ও স্থিতধী থাকেন। আপনি যেভাবে সবকিছু সামলান, তা দেখে আমিও অনেক কিছু শিখেছি, তাতে আমার উপকার হয়েছে। 
প্রধানমন্ত্রী : আপনি হনুমানজির ট্যাটু করেছেন। আমাকে বলুন তো, হনুমানজি কী আপনাকে ম্যাচের সময়ে সাহায্য করেন?
দীপ্তি শর্মা : হ্যাঁ স্যর, সত্যিই করেন। আমার নিজের থেকেও হনুমানজির উপর আমার আস্থা বেশি। যখনই আমি কোনও কঠিন পরিস্থিতিতে পড়ি, আমি তাঁর নাম নিই, আর আমার মনে হয়, আমার বিপদ কেটে যাবে। 
প্রধানমন্ত্রী : আচ্ছা, আপনি তো আপনার ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ‘জয় শ্রীরাম’ লিখে রেখেছেন, তাই না? 
দীপ্তি শর্মা : হ্যাঁ স্যর। 
প্রধানমন্ত্রী : আস্থা জীবনে খুব সাহায্য করে। সব থেকে বড় কথা হ’ল – এটা আপনাকে শান্তি দেবে। আপনি আপনার সমস্ত দুর্ভাবনা দেবতা'কে সঁপে দিয়ে শান্তিতে ঘুমোতে পারবেন। আপনি জানেন যে, তিনি সবকিছুর দায়িত্ব নেবেন। কিন্তু, লোকে তো বলে, মাঠে নাকি আপনি বেশ দাদাগিরি ফলান, সেটা কতটা সত্যি? 
দীপ্তি শর্মা : না স্যর, সেরকম কিছু নয়। তবে হ্যাঁ, সবাই আমার থ্রো’কে বেশ ভয় পায়। কখনও কখনও আমার টিমমেটরাই মজা করে বলে, ওরে শান্ত হ, আমাদের দিকে এত জোরে বল ছুঁড়িস না। 
দীপ্তি শর্মা : স্যর, আমার হাতে যে হনুমানজির ট্যাটু রয়েছে, আপনি সেটা কিভাবে জানলেন? এমনকি, আপনি আমার ইন্সটাগ্রামের ট্যাগলাইন পর্যন্ত জানেন। 
প্রধানমন্ত্রী : আচ্ছা হরমন, জেতার পর আপনি বলটা আপনার পকেটে ঢুকিয়ে নিয়েছিলেন। এর কারণ কি? এটা কি আপনি আগে থেকেই ভেবে রেখেছিলেন, নাকি কেউ আপনাকে এটা করতে বলেছিল? 
হরমনপ্রীত কউর : না স্যর, আমি বলব, এর পেছনে ঈশ্বরের হাত রয়েছে। আমি তো ভাবিইনি যে, শেষ বল, শেষ ক্যাচটা আমার কাছে আসবে। কিন্তু, তাই হ’ল। এত বছরের কঠোর পরিশ্রম আর প্রতীক্ষার পর যখন শেষ পর্যন্ত এটা আমার হাতে এল, তখন আমি ভাবলাম, তা হলে এটা আমার কাছেই থেকে যাক। ঐ বলটা এখনও আমার ব্যাগে রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী : শাফালী, আপনি তো রোহতক থেকে এসেছেন। সেখানে অনেক বড় বড় কুস্তিগীর রয়েছে। আপনি ক্রিকেটের দিকে এলেন কেমন করে?
শাফালী ভার্মা : হ্যাঁ স্যর, ওখানে কুস্তি আর কবাডি সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। কিন্তু, আমার বাবা ক্রিকেটের দিকে আমাকে নিয়ে গিয়েছিলেন। 
প্রধানমন্ত্রী : আপনি কখনও কুস্তি করে দেখেছেন?
শাফালী ভার্মা : না স্যর, কখনও না। 
প্রধানমন্ত্রী : কখনও নয়? 
শাফালী ভার্মা : না স্যর। 
প্রধানমন্ত্রী : ও আচ্ছা। 
শাফালী ভার্মা : আসলে আমার বাবা নিজে ক্রিকেটার হতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পারেননি। তিনি তাঁর স্বপ্নটা ছেলেমেয়ের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। আমার ভাই আর আমি একসঙ্গে খেলতাম, একসঙ্গে ম্যাচ দেখতাম। এইভাবেই আস্তে আস্তে ক্রিকেটের প্রতি আমার গভীর আগ্রহ জন্মে গেল। আমি ক্রিকেটার হয়ে উঠলাম। 
প্রধানমন্ত্রী : শাফালী, আপনি ঐ ক্যাচটা যেভাবে ধরেছিলেন, তাই দেখে আমার মনে একটা প্রশ্ন জেগেছে। ক্যাচ ধরার পর, কেউ হাসতেই পারে। কিন্তু, আপনি ক্যাচ ধরার আগে থেকেই হাসছিলেন। সেটা কেন? 
শাফালী ভার্মা : স্যর, আমি নিজেকে বলছিলাম, ওরে আয়, আমার হাতের মধ্যে আয়, আর তাই, যখন সত্যি সেটা আমার কাছে এল, তখন আমি না হেসে থাকতে পারিনি। 
প্রধানমন্ত্রী : আমার মনে হয়েছে, বল যে অন্য কোথাও যেতে পারে না, সে ব্যাপারে আপনি স্থির নিশ্চিত ছিলেন, তাই কি? 
শাফালী ভার্মা : স্যর, বল যদি অন্য কোথাও যেত, আমি সেখানেও ঝাঁপিয়ে পড়তাম। 
প্রধানমন্ত্রী : আচ্ছা, আপনারা ঐ মুহূর্তের আবেগটা একটু বর্ণনা করবেন।
জেমিমা রডরিগস : আসলে স্যর, সেটা ছিল সেমিফাইনাল। আমরা বারবার অস্ট্রেলিয়ার কাছে অল্পের জন্য হেরে গেছি। আমি যখন ব্যাট করতে গেলাম, তখন আমার মনে একটাই চিন্তা ছিল, যে কোনোভাবে এই ম্যাচ জিততেই হবে। যাই হোক না কেন, আমাকে শেষ পর্যন্ত ব্যাট করতেই হবে। আমরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছিলাম যে, একটা বড় জুটি, শ্রেফ একটা বড় জুটি, তা হলেই ওরা ধ্বসে যাবে। এটা ছিল এক সম্মিলিত দলগত প্রয়াস। স্যর, আমি হয়তো সেঞ্চুরি করেছি, কিন্তু হ্যারি দি (হরমনপ্রীত কউর)-র সঙ্গে আমার জুটিটা যদি না হ’ত অথবা দীপ্তি যদি ঐ ইনিংসটা না খেলত, আর তারপর রিচা আর আমান যদি ৮ বলে ১৫ রান না করত, তা হলে হয়তো, আমরা সেমিফাইনাল জিততে পারতাম না। আমরা সবাই মিলে বিশ্বাস করেছিলাম যে, আমরা এই ম্যাচ জিততে পারি। 
জেমিমা রডরিগস : উনি (প্রধানমন্ত্রী) আমাদের সবচেয়ে বেশি অনুপ্রাণিত করেছেন। বিশ্বকাপ জিতে আমাদের কেমন লেগেছে, তিনটে ম্যাচ হারার পর, আমাদের মনের অবস্থা কেমন ছিল, কিভাবে আমরা ঘুরে দাঁড়ালাম, সবকিছু তিনি জানতে চেয়েছেন।
ক্রান্তি গৌড় : আমি যখন বিশ্বকাপের ম্যাচে সেরা খেলোয়াড় মনোনীত হলাম, তখন আমার খুব গর্ব হয়েছে। আমি জানি যে, আমার গ্রামের সবাই এজন্য গর্বিতবোধ করছেন। 
ক্রান্তি গৌড় : আমি যখন বল করছিলাম, তখন হরমন দি আমাকে বলছিল, তোকে উইকেট নিতেই হবে। প্রথম উইকেটটা তোর। সত্যি সত্যিই আমি প্রথম উইকেটটা নিয়েছিলাম। আমার এক দাদা আছে, সেও ক্রিকেট খুব ভালোবাসে। সে আমাকে শ্রদ্ধা করে স্যর। সেও ক্রিকেট খেলত, কিন্তু আমার বাবা কাজ হারানোয়, সে আর অ্যাকাডেমী’তে যোগ দিতে পারেনি। ছোটবেলা থেকে আমি ছেলেদের সঙ্গে টেনিস বলে ক্রিকেট খেলতাম, পরে আমাদের গ্রামে চামড়ার বলে এমএলএ ট্রফির আয়োজন করা হ’ল, আমি তাতে যোগ দিলাম। যে দুটি দল খেলছিল, তার মধ্যে একটা দলের একটি মেয়ে হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়ে, কোচ আমার কাছে এসে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি খেলবে? আমি হ্যাঁ বলায় তিনি আমাকে দলে নেন। ওটাই ছিল চামড়ার বলে আমার প্রথম ম্যাচ। আমি ম্যাচের সেরা হয়েছিলাম। ২টো উইকেট নিয়েছিলাম ২৫ রান করেছিলাম। এইভাবে আমার ক্রিকেটের যাত্রা শুরু হয়েছিল। 
প্রধানমন্ত্রী : শাফালী তো শেষ দুটো ম্যাচে খেলার সুযোগ পেয়েছিলে, তাই না?
শাফালী ভার্মা : হ্যাঁ স্যর। এর আগে আমি ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেছি। তাই আমি যখন সুযোগ পেলাম... তবে স্যর, প্রতীকা-র যা হয়েছে, তা যেন আর কারও না হয়। আমার নিজের উপর বিশ্বাস ছিল। দলও আমার উপর বিশ্বাস রেখেছিল। আমি শুধু ভাবছিলাম, যেভাবেই হোক, দলকে জেতাতেই হবে। 
প্রতীকা রাওয়াল : স্যর আমি যখন আহত হয়েছিলাম, তখন আমার টিমের অনেকে বলেছিল, প্রতীকার জন্য এই বিশ্বকাপটা আমাদের জিততে হবে। আমি তো মাঠের বাইরে ছিলাম। কিন্তু, জেতার পর, আমার টিমমেটরা আমাকে সম্মান দেখিয়ে স্টেজে তুলেছে। এই টিম সত্যিই এক পরিবারের মতো। আপনি যখন প্রত্যেক খেলোয়াড়কে সমান মর্যাদা দেবেন এবং সবাই যখন নিজেকে দলের একজন মনে করবে, তখন সেই টিম এক সত্যিকরের পরিবার হয়ে ওঠে। আর সেই টিমকে হারানো খুব কঠিন হয়ে যায়। এই জন্যই এই টিম ফাইনালে জিতেছে।
প্রধানমন্ত্রী : আপনি একদম ঠিক বলেছেন। শেষ পর্যন্ত খেলাধূলার ক্ষেত্রে টিম স্পিরিটই আসল, আর সেটা শুধু মাঠের মধ্যে নয়, আপনারা যখন ২৪ ঘন্টা একসঙ্গে কাটান, তখন আপনাদের মধ্যে এক ধরনের বন্ধন গড়ে ওঠে। আপনারা একে-অপরের দুর্বলতা ও শক্তিগুলি জেনে যান। আর তখনই সত্যিকারের দলগত সংহতি তৈরি হয়। 
প্রধানমন্ত্রী : আপনার ক্যাচটা তো সবচেয়ে বিখ্যাত হয়ে গেছে। সেটা সম্পর্কে আমাকে একটু বলুন।
আমানজ্যোত কউর : হ্যাঁ স্যর। আমি এর আগে অনেক কঠিন ক্যাচ ধরেছি। কিন্তু, কোনোটা এর মতো এত বিখ্যাত হয়নি। আর এই প্রথম ক্যাচ ধরার সময়ে একটু নড়বড়ে ভাব আমার ভালো লেগেছে। 
প্রধানমন্ত্রী : আপনি যে ক্যাচটা নিলেন, সেটাই তো ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট হয়ে গেল, তাই না? 
আমানজ্যোত কউর : হ্যাঁ স্যর। 
প্রধানমন্ত্রী : ক্যাচটা ধরার আগের মুহূর্ত পর্যন্ত আপনি নিশ্চয়ই শুধু বলটাই দেখছিলেন। আর ক্যাচ ধরার পর, নিশ্চয়ই আপনি ট্রফিটাও দেখতে পেয়েছেন। 
আমানজ্যোত কউর : স্যর, আমি সত্যি সত্যিই ঐ ক্যাচের মধ্যে দিয়ে ট্রফিটা দেখতে পাচ্ছিলাম। আমার টিমের সবাই যেভাবে আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, তাতে আমি নিশ্বাস নিতে পারছিলাম না। আমার উপর কতজন যে ছিল, তা আমি জানি না।
প্রধানমন্ত্রী : আপনি জানেন, শেষবার সূর্য কুমার যাদবও এরকম একটা ক্যাচ নিয়েছিলেন। 
আমানজ্যোত কউর : হ্যাঁ স্যর।
প্রধানমন্ত্রী : আমার মনে হয়, আপনাদের কেউ আগেও এইরকম একটা ক্যাচ নিয়েছেন। এটা নিয়ে আমি রিট্যুইটও করেছিলাম। 
হরলীন কউর দেওল : হ্যাঁ স্যর। আমরা যখন ইংল্যান্ডে ছিলাম, তখন আমি সেই ক্যাচটা নিয়েছিলাম। এইরকম ক্যাচ ঠিভাবে ধরার জন্য আমরা অনেক দিন ধরে প্র্যাক্টিস করছি। আমার মনে আছে, আমি ফিল্ডিং করছিলাম, সেই সময়ে ক্যাচটা ওঠায় আমি দৌড়তে শুরু করলাম। কিন্তু আমি একটুর জন্য ওটা মিস করেছিলাম। হ্যারি দি আমাকে বকে বলেছিল, এইরকম ক্যাচ নিতে না পারলে আর ভালো ফিল্ডার হয়ে লাভ কি? জেমি আমার পেছনে ছিল, ও বলেছিল ঠিক আছে। আমি ওকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, তোর কি মনে হয়, আমি সত্যি ক্যাচটা ধরতে পারতাম? ও বলেছিল হ্যাঁ। আমি তখন ওকে বলেছিলাম, আর দু’ওভার বাকি আছে, তার মধ্যেই আমি একটা ভালো ক্যাচ ধরে দেখাব। আর স্যর, তারপরই ঐ ক্যাচটা এলো আর আমি ধরলাম। 
প্রধানমন্ত্রী : ও তারমানে আপনি এটাকে ব্যক্তিগত চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলেন। আচ্ছা রিচা, আপনি যেখানেই খেলেন, সেখানেই জেতেন, তা না? আপনি সবসময়েই দাগ কেটে যান। 
রিচা ঘোষ : আমি জানি না স্যর। তবে হ্যাঁ, অনুর্ধ্ব ১৯, সিনিয়র টিম বা ডব্লিউপিএল – আমরা সব জায়গাতেই ট্রফি জিতেছি, আর আমি লম্বা লম্বা ছয় মেরেছি। 
প্রধানমন্ত্রী : আচ্ছা, আমাকে আরেকটু বলুন। 
রিচা ঘোষ : আমি যখন ব্যাট করতে করতে ঐসব ছয়গুলি মারি... আমার মনে হয়, হ্যারি দি, স্মৃতি দি আর অন্য সবার আমার উপর আস্থা রয়েছে। গোটা টিম মনে করে, পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেন, আমি ঠিক ম্যাচ বের করে আনব। এই আস্থা আমাকে আত্মবিশ্বাস যোগায়। 
রাধা যাদব : আমরা তিনটে ম্যাচ হেরেছি স্যর। কিন্তু, তারপরও আমরা একে-অপরের পাশে দাঁড়িয়েছি। নিজেদের মধ্যে কথা বলেছি। হয়তো সেই জন্যই ঈশ্বর এই ট্রফি দিয়ে আমাদের আশীর্বাদ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী : না না, শুধু ঈশ্বর নয়, আপনাদের কঠোর পরিশ্রমের জন্য এই জয় এসেছে। আচ্ছা, আমাকে বলুন তো আপনারা সবাই কিভাবে নিজেদের তৈরি করেছিলেন? 
রাধা যাদব : আমাদের কোচ যেমন বলছিলেন, আমরা কিছুদিন ধরেই বেশ ভালো ক্রিকেট খেলছিলাম, সবধরনের পরিস্থিতির জন্য নিজেদের প্রস্তুত করছিলাম। ফিটনেস, ফিল্ডিং, দক্ষতা – সবকিছুর উপর জোর দেওয়া হয়েছিল। আর যেটা আমি বলছিলাম, সবাই একসঙ্গে থাকলে কাজটা সোজা হয়ে যায়। 
প্রধানমন্ত্রী : আমি শুনেছি যে, আপনি যখন প্রথম পুরস্কার পেয়েছিলেন, তার টাকা আপনি বাবাকে দিয়ে দিয়েছিলেন। 
রাধা যাদব: হ্যাঁ স্যর। 
প্রধানমন্ত্রী : আচ্ছা, আপনার বাবা আপনাকে সবসময়েই খুব উৎসাহ দিতেন? 
রাধা যাদব : হ্যাঁ স্যর, সবসময়েই। আমাদের পরিবারের পক্ষে সেই সময়ে এটা খুব সহজ ছিল না। কিন্তু, আমার বাবা-মা আমাকে কখনও তা বুঝতে দেননি। 
স্নেহ রানা : স্যর, এটা অনেক বছরের কঠোর পরিশ্রমের ফল। আমি আমার বোলিং কোচ আবিষ্কার স্যরের কাছ থেকে সবসময়ে পরামর্শ নিয়েছি। বিভিন্ন ব্যাটার’কে কিভাবে আটকানো যায়, তার কৌশল নিয়ে আলোচনা করেছি। এইসব কৌশল ক্যাপ্টেন, ভাইস ক্যাপ্টেন আর হেডকোচ মিলে তৈরি করেছেন, আমরা সেটা মাঠে প্রয়োগ করেছি। বেশিরভাগ সময়েই সেগুলো কাজে লেগে গেছে। কোনও কোনও ম্যাচে পরিকল্পনা ঠিক মতো কাজে আসেনি, কিন্তু আমরা সবসময়েই নিজেদের উৎসাহ দিয়ে গেছি।
ঊমা ছেত্রী : স্যর, আমি আপনার সামনে কী বলব বুঝে উঠতে পারছি না। 
প্রধানমন্ত্রী : আরে যা মনে আসে, তাই বলুন। 
ঊমা ছেত্রী : স্যর, সেটা ছিল আমার প্রথম ম্যাচ। আমি দেখেছি যে, আমি প্রথম কোনও জায়গায় গেলেই সেখানে বৃষ্টি হয়। সেদিনও হয়েছিল। তাই, আমি শুধু উইকেট কিপিং করেছি। বিশ্বকাপের মতো জায়গায় ভারতের হয়ে খেলতে পেরে আমি গর্বিত। নিজের সেরাটা দেওয়ার জন্য আমি তৈরি ছিলাম। গোটা দল আমার উপর আস্থা রেখেছিল। 
প্রশিক্ষক : ও হচ্ছে উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে ভারতের হয়ে খেলা প্রথম মহিলা ক্রিকেটার। 
প্রধানমন্ত্রী : আসাম থেকে, তাই না। 
রেণুকা সিং ঠাকুর : হ্যাঁ স্যর। ড্রেসিং রুমের পরিবেশ হাল্কা রাখতে আমরা সৃজনশীল কিছু করার কথা ভেবেছিলাম। আমি একটা ময়ূর এঁকেছিলাম, এটা ইতিবাচকতার চিহ্ন। স্মৃতি যখন ৫০ করল, আমরা বললাম, এবার তা হলে ১০০ হয়ে যাক।
প্রধানমন্ত্রী : আপনি যখন এখানে এসেছেন, চারদিকে ময়ূর দেখতে পেয়েছেন তো?
রেণুকা সিং ঠাকুর : হ্যাঁ স্যর। আসলে আমি ময়ূর ছাড়া আর কিছু আঁকতে পারি না। 
(আরেকজন খেলোয়াড়) : এরপর, ও একটা পাখি আঁকতে গিয়েছিল, আমরা ওকে বারন করি। 
প্রধানমন্ত্রী : তবুও আমি আপনার মায়ের প্রতি শ্রদ্ধায় মাথা নত করি। সমস্ত রকম কঠিন পরিস্থিতি সত্ত্বেও তিনি আপনার সাফল্যের নেপথ্যে বড় ভূমিকা পালন করেছেন। একজন সিঙ্গল পেরেন্ট হিসেবে তিনি আপনার জীবনকে চমৎকার আকার দিয়েছেন। আপনি তাঁকে আমার শ্রদ্ধা জানাবেন। 
রেণুকা সিং ঠাকুর : হ্যাঁ স্যর, নিশ্চয়। 
অরুন্ধতী রেড্ডি : স্যর, আমার মা আপনাকে একটা কথা বলতে বলেছেন। আমি জানতাম না, আপনার সঙ্গে কথা বলার সুযোগ আমি পাব কি না, কিন্তু তিনি আপনাকে বলতে বলেছেন, আপনিই তাঁর নায়ক। এর মধ্যে ৪-৫ বার আমাকে ফোন করে তিনি জানতে চেয়েছেন – আমার নায়কের সঙ্গে দেখা হয়েছে? 
প্রধানমন্ত্রী : আপনারা যখন ক্রীড়া ক্ষেত্রে এমন সাফল্য অর্জন করেছেন, তখন আপনাদের কী মনে হয়? দেশ এরপর আপনাদের কাছ থেকে কী প্রত্যাশা করে? আপনারা আর কী অবদান রাখতে পারেন? 
স্মৃতি মান্ধানা : স্যর, আমরা যখনই বিশ্বকাপে খেলতে যাই, তখনই আমরা ভাবি যে, বিশ্বকাপ জিতলে তার কতটা প্রভাব পড়বে। শুধু মেয়েদের ক্রিকেটেই নয়, সামগ্রিকভাবে মেয়েদের খেলাধুলোর ক্ষেত্রেও। এর থেকে ভারতে এক নতুন বিপ্লবের জন্ম হতে পারে। আগামী দিনে আমরা শুধু মেয়েদের ক্রিকেটই নয়, ভারতে মেয়েদের খেলাধূলার ক্ষেত্রে বিপ্লব আনব। 
প্রধানমন্ত্রী : আমার মনে হয়, আপনারা সকলে অন্যদের কাছে অনুপ্রেরণার এক বিপুল উৎস। আপনারা যখন বাড়ি ফিরবেন, স্বাভাবিকভাবেই নানাধরনের উদযাপন হবে, উচ্ছ্বাস চোখে পড়বে। এগুলো মিটে গেলে যে স্কুলে আপনারা পড়েছেন, সেখানে গিয়ে একদিন কাটান। সেখানকার পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলুন। তারা আপনাদের নানাধরনের প্রশ্ন করবে, খোলা মনে সেগুলির উত্তর দিন। আমি নিশ্চিত যে, স্কুল সবসময়ে আপনাকে মনে রাখবে। ঐ পড়ুয়ারাও কখনও দিনটি ভুলতে পারবে না। আপনাদের যদি সেই অভিজ্ঞতা ভালো লাগে, তা হলে তিনটি স্কুলকে বেছে নিন এবং প্রত্যেক স্কুলে একদিন করে কাটান। আপনারা দেখবেন, এরফলে তারা শুধু অনুপ্রাণিতই হবে না, বরং আপনাকেও উদ্বুদ্ধ করবে। দ্বিতীয়ত, দেশে ফিট ইন্ডিয়া আন্দোলন চলছে। আপনারা জানেন, স্থূলতা এখন আমাদের দেশের এক বড় সমস্যা। এর মোকাবিলার অস্ত্র হ’ল ফিটনেস। আমি সর্বদাই ছোট ছোট কাজগুলি করতে বলি। যেমন ধরুন – ভোজ্যতেলের ব্যবহার ১০ শতাংশ কমানো। আপনারাও এটা পালন করুন। মানুষ যখন এইসব পরামর্শ আপনাদের কাছ থেকে পাবেন, তখন তাতে গুরুত্ব দেবেন। আপনারা যদি শিশুকন্যাদের ফিট ইন্ডিয়া প্রচারাভিযানে যোগ দিতে উৎসাহ দেন, তা হলে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। আপনাদের সঙ্গে এই ঘরোয়া মনছোঁয়া আলাপচারিতা খুব উপভোগ করছি। আপনাদের মধ্যে কিছু জনের সঙ্গে আমার আগেও দেখা হয়েছে। কয়েকজনের সঙ্গে এই প্রথম। কিন্তু, আমি আপনাদের সবার সঙ্গে আবার দেখা করার জন্য প্রতীক্ষায় থাকব। আর প্রতীকা, আমি আপনার দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। 
স্মৃতি মান্ধানা : স্যর, আপনি যা বললেন, আমরা তা নিশ্চয়ই মনে রাখব। সুযোগ পেলেই এই বার্তা আমরা মানুষের কাছে পৌঁছে দেব। কখনও যদি প্রয়োজন হয়, আমাদের একবার বলবেন, আমরা গোটা টিম যে কোনও সময়ে যে কোনও জায়গায় পৌঁছে যাব। 
প্রধানমন্ত্রী : আমাদের সবাইকে মিলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। 
স্মৃতি মান্ধানা : হ্যাঁ স্যর। 
প্রধানমন্ত্রী : ঠিক আছে, আপনাদের সবার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা। 

 

SC/SD/SB


(Release ID: 2187527) Visitor Counter : 15