PIB Headquarters
azadi ka amrit mahotsav

ভারতে কৃষি বিষয়ক পঠন-পাঠন ও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা

Posted On: 04 NOV 2025 10:14AM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ০৪ নভেম্বর, ২০২৫

 

ভারতের প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যার প্রধান জীবিকা কৃষিকাজ এবং দেশের জিডিপি বা মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনে প্রায় ১৮ শতাংশ অবদান রাখে কৃষিকাজ। উচ্চশিক্ষা, গবেষণা এবং হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সক্ষমতা তৈরি করা উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, খরচ কমানো এবং জাতীয় লক্ষ্যগুলি অর্জনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কৃষিবিদ্যা, গবেষণা এবং সম্প্রসারণকে এই ক্ষেত্রের মূল ভিত্তি হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এগুলিই লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ৫ শতাংশ কৃষিকাজের বৃদ্ধির হার বজায় রাখার এবং "বিকশিত কৃষি ও সমৃদ্ধ কৃষক"  - যা "বিকশিত ভারত"-এর মূল দর্শন - সেই জাতীয় স্বপ্ন পূরণের জন্য অপরিহার্য প্রাতিষ্ঠানিক ও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি তৈরি করে। এই স্বপ্ন পূরণের জন্য, এই তিনটি ভিত্তিকেই "এক দেশ - এক কৃষি - এক দল" – এই নীতির অধীনে পারস্পরিক সহযোগিতার  সঙ্গে কাজ করতে হবে।

ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচার রিসার্চ
কৃষি গবেষণা ও কৃষি শিক্ষার প্রধান সংস্থা : ১৯২৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচারাল রিসার্চ (কৃষি গবেষণা ও শিক্ষা বিভাগ, কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রকের অধীনে) একটি কৃষি গবেষণা ও উচ্চশিক্ষার সমন্বয়ের জন্য ভারতের অন্যতম প্রধান সংস্থা । এটি কৃষিকাজ, উদ্যানবিদ্যা, মৎস্যচাষ এবং প্রাণী বিজ্ঞান সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে নির্দেশ দিয়ে থাকে।

দেশব্যাপী সংযোগ:

আইসিএআর একটি বিশাল ব্যবস্থার তত্ত্বাবধানে রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ১১৩-টি জাতীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিস্তারিত তালিকা এখানে পাওয়া যাবে: https://icar.org.in/institutes) এবং ভারতের ৭৪-টি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। এটি বিশ্বের বৃহত্তম কৃষি গবেষণা সংস্থাগুলির মধ্যে অন্যতম। এটি  হরিৎ বিপ্লবের নেতৃত্ব দিয়েছিল এবং এখনও জলবায়ু সহনশীল, উচ্চ ফলনশীল প্রজাতি এবং কৃষিকাজের প্রযুক্তি উদ্ভাবনে নেতৃত্ব দিয়ে চলেছে।

সম্প্রসারণ ও গুণগত মান: আইসিএআর তার বিভিন্ন বিভাগের মাধ্যমে কৃষকদের কাছে প্রযুক্তি হস্তান্তরের জন্য ৭৩১-টি কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র পরিচালনা করে। এছাড়াও, এটি শিক্ষাগত মানদণ্ড স্থির করে, যেমন ‘আইসিএআর মডেল আইন (সংশোধিত ২০২৩)’ এবং ‘কৃষি কলেজ স্থাপনের জন্য ন্যূনতম প্রয়োজনীয়তা’ প্রকাশ করে। পাশাপাশি, এটি ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল এডুকেশন অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে স্বীকৃতি দেয়।

সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠান: ভারতে ৬৩-টি রাজ্য কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (SAUs), তিনটি কেন্দ্রীয় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (পুসা, ইম্ফল, ঝাঁসি), চারটি "ডিমড" বিশ্ববিদ্যালয় (IARI-দিল্লি, NDRI-কার্নাল, IVRI-ইজাতনগর, CIFE-মুম্বই) এবং কৃষি অনুষদ সহ চারটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। আইসিএআর (ICAR)-এর অধীনে ১১-টি এটিএআরআই (ATARI - এগ্রিকালচার টেকনোলজি অ্যাপ্লিকেশন রিসার্চ ইনস্টিটিউট) কেন্দ্রও অন্তর্ভুক্ত।

বেসরকারি ক্ষেত্র: কৃষিশিক্ষা রাজ্য সরকারের আওতাভুক্ত, যাদের নিজস্ব নীতি অনুসারে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও প্রচার করা হয়। আইসিএআর-এর ভূমিকা অনুরোধের ভিত্তিতে স্বীকৃতি দেওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। গত পাঁচ বছরে, আইসিএআর-স্বীকৃত বেসরকারি কৃষি কলেজের সংখ্যা ২০২০-২১ সালের পাঁচটি থেকে বেড়ে ২০২৪-২৫ সালের মধ্যে ২২-টিতে পৌঁছেছে।

সেন্ট্রাল এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটিস 
বর্তমানে ভারতে তিনটি কেন্দ্রীয় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। প্রত্যেকটি অঞ্চলের প্রয়োজন মেটানোর জন্য সংসদের একটি আইনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছিল:

ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ কেন্দ্রীয় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (CAU), পুসা (বিহার): এটি প্রাক্তন রাজেন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (প্রতিষ্ঠিত: ১৯৭০) থেকে ২০১৬ সালের অক্টোবরে একটি কেন্দ্রীয় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়। এর অধীনে আটটি কলেজ রয়েছে :

১.তিরহুত কলেজ অফ এগ্রিকালচার
২.পোস্টগ্রাজুয়েট কলেজ অফ এগ্রিকালচার
৩.কলেজ অফ এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি 
৪.কলেজ অফ কমিউনিটি সায়েন্স
৫.কলেজ অফ বেসিক সায়েন্সেস ও হিউম্যানিটিজ 
৬.কলেজ অফ ফিশারিজ 
৭.পণ্ডিত দীন দয়াল উপাধ্যায় কলেজ অফ হর্টিকালচার এন্ড ফরেস্ট্রি 
৮.স্কুল অফ এগ্রিবিজনেস এন্ড রুরাল ম্যানেজমেন্ট

আরপিসিএইউ  আটটি বিভাগে স্নাতকস্তরের  প্রোগ্রাম করিয়ে থাকে (কৃষি, উদ্যানবিদ্যা, কৃষি প্রকৌশল, কমিউনিটি সায়েন্স, মৎস্যচাষ, বায়োটেকনোলজি, বনবিদ্যা ও খাদ্য প্রযুক্তি)। এছাড়াও, বিশ্ববিদ্যালয়টি বিস্তৃত পরিসরের মাস্টার্স প্রোগ্রাম এবং পিএইচডি করিয়ে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়টি বিহারের সমস্তিপুর জেলার পুসা, মুজফ্ফরপুর জেলার ঢোলি এবং পূর্ব চম্পারণ জেলার পিপরাকোঠিতে একাধিক ক্যাম্পাসের মাধ্যমে কাজ করে এবং বিহারের কৃষকদের সঙ্গে গবেষণাকে যুক্ত করার জন্য ১৮-টি কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র পরিচালনা করে। জাতীয় শিক্ষা নীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে, বিশ্ববিদ্যালয়টি নিম্নস্তর এবং মধ্য-ব্যবস্থাপনা স্তরে শিল্প-প্রস্তুত প্রতিভা বিকাশের লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি স্বল্প-মেয়াদী সার্টিফিকেট ও ডিপ্লোমা প্রোগ্রাম চালু করেছে।

সেন্ট্রাল এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটি, ইম্ফল (মণিপুর): ১৯৯২ সালের কেন্দ্রীয় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুসারে ১৯৯৩ সালের জানুয়ারী মাসে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি উত্তর-পূর্বের সাতটি পাহাড়ি রাজ্য - অরুণাচল প্রদেশ, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, সিকিম, নাগাল্যান্ড এবং ত্রিপুরার - পরিষেবা প্রদান করে।সিএইউ, ইম্ফল তার সাতটি পাহাড়ি রাজ্যে অবস্থিত ১৩-টি  কলেজের মাধ্যমে শিক্ষাদান, গবেষণা এবং সম্প্রসারণকে একত্রিত করে একটি ব্যাপক পদ্ধতি অনুসরণ করে। (সম্পূর্ণ তালিকা এখানে পাওয়া যাবে: https://cau.ac.in/about-cau-imphal/)। এটিতে বর্তমানে কৃষি ও সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলিতে ১০-টি স্নাতক, ৪৮টি স্নাতকোত্তর এবং ৩৪-টি পিএইচডি প্রোগ্রাম করানো হয়, যেখানে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে মোট ২,৯৮২ জন শিক্ষার্থী নথিভুক্ত রয়েছে।এটিতে বর্তমানে কৃষি ও সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলিতে ১০-টি স্নাতক, ৪৮-টি স্নাতকোত্তর এবং ৩৪টি পিএইচডি প্রোগ্রাম করা হয়, যেখানে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে মোট ২,৯৮২ জন শিক্ষার্থী নথিভুক্ত রয়েছে।

রানী লক্ষ্মীবাই কেন্দ্রীয় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (CAU), ঝাঁসি (উত্তর প্রদেশ): এটি সংসদের একটি আইনের (২০১৪ সালের আইন নং ১০) মাধ্যমে কৃষি গবেষণা ও শিক্ষা বিভাগের (DARE)-এর অধীনে জাতীয় স্তরের একটি প্রতিষ্ঠান হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি কৃষি বিজ্ঞানগুলিতে উৎকর্ষ কেন্দ্র  হিসাবে কাজ করে, যা ভারতে শিক্ষা, গবেষণা এবং সম্প্রসারণ পরিষেবাগুলির উন্নতির জন্য নিবেদিত। আরএলবিসিএইউ-এর পাঠ্যক্রম তৈরি করা হয়েছে যাতে স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডির শিক্ষার্থীরা কৃষিকাজ, উদ্যানবিদ্যা পশুচিকিৎসা বিজ্ঞান এবং কৃষি প্রকৌশল ইত্যাদির মতো বিভিন্ন শাখায় সর্বশেষ জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করতে পারে। এর অধীনে কলেজগুলির মধ্যে রয়েছে ঝাঁসিতে (উত্তর প্রদেশ) কৃষি কলেজ এবং উদ্যানবিদ্যা ও বনবিদ্যা কলেজ এবং দাতিয়াতে (মধ্যপ্রদেশ) মৎস্যচাষ কলেজ এবং পশুচিকিৎসা ও প্রাণী বিজ্ঞান কলেজ।

কৃষি ক্ষেত্রে ইন্টারনেট অফ থিংস এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা 
প্রযুক্তি গ্রহণ : কৃষিকাজের আধুনিকীকরণের জন্য সরকার ইন্টারনেট অফ থিংস  এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে সক্রিয়ভাবে প্রচার করছে। এর প্রয়োগগুলির মধ্যে রয়েছেঃ সুনির্দিষ্ট কৃষিকাজ (সেন্সর-চালিত সেচ, স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রপাতি),ইমেজিং এবং স্প্রে করার জন্য ড্রোন ব্যবহার, পশুসম্পদ পর্যবেক্ষণ, জলবায়ু-স্মার্ট গ্রিনহাউস, এআই-চালিত কীটপতঙ্গ/শস্য পর্যবেক্ষণ  এবং রিমোট সেনসিং।

উদ্ভাবনী কেন্দ্র : ডিএসটি-র ইন্টারডিসিপ্লিনারি সাইবার-ফিজিক্যাল সিস্টেমের জাতীয় মিশনের অধীনে, ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশব্যাপী ২৫-টি টেকনোলজি ইনোভেশন হাব বা প্রযুক্তি উদ্ভাবন কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছিল; যার মধ্যে তিনটি কৃষি ক্ষেত্রে আইওটি এবং এআই-এর প্রয়োগের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। উদাহরণস্বরূপ, আইআইটি রোপারের কৃষি/জল টিআইএইচ কাজ করছে জাফরান উৎপাদন ও সারা ভারতে সরবরাহের জন্য আইওটি সেন্সর নিয়ে। আইআইটি বোম্বে "ইন্টারনেট অফ এভরিথিং" নিয়ে একটি টিআইএইচ পরিচালনা করে এবং আইআইটি খড়গপুর এআই/এমএল সমাধানের (শস্যের স্বাস্থ্য পূর্বাভাস, ফলনের পূর্বাভাস) জন্য একটি এআই৪আইসিপিএস হাব চালায়।

ডিজিটাল পরিকাঠামো:

ইলেকট্রনিক্স মন্ত্রক বেঙ্গালুরু, গুরুগ্রাম, গান্ধীনগর এবং বিশাখাপত্তনমের মতো শহরগুলিতে আইওটি-এর উপর উৎকর্ষ কেন্দ্র স্থাপন করেছে। উদাহরণস্বরূপ, বিশাখাপত্তনমের আইওটি উৎকর্ষ কেন্দ্র , কৃষি-প্রযুক্তির উপর মনোযোগ দেয় এবং উদ্ভাবনকে গণতান্ত্রিক করার জন্য স্টার্টআপ, শিল্প, বিনিয়োগকারী এবং শিক্ষাবিদদের সংযুক্ত করে।কৃষির জন্য জাতীয় ই-গভর্নেন্স পরিকল্পনার অধীনে, এআই/এমএল, আইওটি, ব্লকচেইন ইত্যাদি ব্যবহার করে ডিজিটাল-কৃষি প্রকল্পগুলি বাস্তবায়নের জন্য রাজ্যগুলিকে তহবিল সরবরাহ করা হয়।

স্টার্ট-আপ ইকোসিস্টেম: 

২০১৮-১৯ সাল থেকে, রাষ্ট্রীয় কৃষি বিকাশ যোজনার অধীনে "উদ্ভাবন ও কৃষি-উদ্যোক্তা উন্নয়ন" (ইনোভেশন এন্ড এগ্রি-এন্টারপ্রেনিউরশিপ ডেভেলপমেন্ট) প্রোগ্রামটি আর্থিক সহায়তা প্রদান এবং কৃষি-ইনকিউবেশন ইকোসিস্টেমকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে উদ্ভাবন ও কৃষিক্ষেত্রে উদ্যোক্তা তৈরি করতে উৎসাহিত করে আসছে। এই উদ্যোগটি কৃষি ও সহযোগী ক্ষেত্রগুলিতে স্টার্ট-আপগুলিকে সমর্থন করে, যার দ্বৈত লক্ষ্য হল নতুন সুযোগের মাধ্যমে কৃষকদের আয় বৃদ্ধি করা এবং গ্রামীণ যুবকদের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি করা। এই প্রোগ্রামের অধীনে সমর্থিত স্টার্ট-আপগুলি কৃষি ও সহযোগী ক্ষেত্রগুলির বিভিন্ন দিকে নিযুক্ত রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে - কৃষি-প্রক্রিয়াকরণ , খাদ্য প্রযুক্তি ও মূল্য সংযোজন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ইন্টারনেট অফ থিংস, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, যথাযথ কৃষি, ডিজিটাল কৃষি, এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি।

কৃষকদের দক্ষতা ও প্রশিক্ষণ
কৃষকদের দক্ষতা তৈরি ও প্রশিক্ষণ ভারতের কৃষি রূপান্তরের মূল কেন্দ্রে এসেছে। আধুনিক কৃষিকাজের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে, সরকার কৃষকদের প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, জলবায়ু এবং বাজারের পরিবর্তনে মানিয়ে নিতে সাহায্য করার জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধিকে অগ্রাধিকার দিয়েছে।  স্কীল ট্রেনিং অফ রুরাল ইয়ুথ, কৃষি যান্ত্রিকীকরণের উপ-মিশন, প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনার মত কর্মসূচি এবং কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র  ও কৃষি প্রযুক্তি ব্যবস্থাপনা এজেন্সির মাধ্যমে নেওয়া উদ্যোগগুলি কৃষকদের সুস্থায়ী কৃষিকাজ অনুশীলনের জন্য ব্যবহারিক জ্ঞান ও বৃত্তিমূলক দক্ষতা দিয়ে সজ্জিত করছে।

কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র :

আইসিএআর-এর অধীনে চালিত এই কেন্দ্রগুলি কৃষকদের প্রশিক্ষণের জন্য প্রথম সারির প্রতিষ্ঠান।২০২১-২২ এবং ২০২৩-২৪ সালের মধ্যে, এগুলি ৫৮.০২ লক্ষ কৃষককে প্রশিক্ষণ দিয়েছে, যার সংখ্যা প্রতি বছর ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৪-২৫ সালের প্রথম দশ মাসে, ইতিমধ্যেই অতিরিক্ত ১৮.৫৬ লক্ষ কৃষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। কেভিকে-এর কোর্সগুলি স্থানীয় অবস্থার সঙ্গে মিলিয়ে উন্নত কৃষিকাজ, পশুসম্পদ পরিচর্যা, মাটির স্বাস্থ্য, ফসল তোলার পরের প্রযুক্তি  ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষা প্রদান করে।

এটিএমএ (সম্প্রসারণ সংস্কার প্রকল্প): কৃষি প্রযুক্তি ব্যবস্থাপনা সংস্থা  প্রকল্পটি বিকেন্দ্রীভূত কৃষি সম্প্রসারণকে  শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই উদ্যোগের অধীনে, ২০২১-২২ সালে ৩২.৩৮ লক্ষ কৃষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল, তার পরে ২০২২ - ২৩ সালে ৪০.১১ লক্ষ এবং ২০২৩ - ২৪ সালে ৩৬.৬০ লক্ষ কৃষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ২০২৫ সালের জানুয়ারী মাস পর্যন্ত, প্রায় ১৮.৩০ লক্ষ কৃষক ইতিমধ্যেই প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। সব মিলিয়ে, ২০২১-২৫ সাল পর্যন্ত এটিএমএ-এর মাধ্যমে প্রায় ১.২৭ কোটি কৃষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

স্কীল ট্রেনিং অফ রুরাল ইউথ - (গ্রামীণ যুবকদের দক্ষতা প্রশিক্ষণ)
এসটিআরওয়াই (STRY) কৃষি/সহযোগী বাণিজ্যগুলিতে (যেমন উদ্যানবিদ্যা, দুগ্ধশিল্প, মৎস্যচাষ ইত্যাদি) স্বল্প-মেয়াদী বৃত্তিমূলক কোর্স (প্রায় সাত দিনের) প্রদান করে। ২০২১-২২ সালে এটি ১০,৪৫৬ জন, ২০২২-২৩ সালে ১১,৬৩৪ জন এবং ২০২৩-২৪ সালে ২০,৯৪০ জন গ্রামীণ যুবককে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত, ২০২১ সাল থেকে মোট ৫১,০০০-এর বেশি গ্রামীণ যুবককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এই কর্মসূচির লক্ষ্য হলো স্ব-নিযুক্তিকে বাড়ানো এবং গ্রামগুলিতে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা।

কৃষি যান্ত্রিকীকরণ (SMAM): কৃষি যান্ত্রিকীকরণের উপ-মিশন কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহারের উপর প্রশিক্ষণ দেয়। ২০২১-২৫ সালের মধ্যে, এসএমএএম প্রদর্শন এবং কাস্টম হায়ারিং সচেতনতার মাধ্যমে ৫৭,১৩৯ জন কৃষককে সরাসরি যান্ত্রিকীকরণে প্রশিক্ষণ দিয়েছে।

ভূমি স্বাস্থ্য কার্ড প্রকল্প (সয়েল হেলথ কার্ড স্কীম): এই কর্মসূচির মাধ্যমে ভূমির স্বাস্থ্য কার্ড বিতরণ করা হয় এবং কৃষকদের ভারসাম্যপূর্ণ সারের ব্যবহার সম্পর্কে শিক্ষিত করা হয়। ২০২৫ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত, দেশব্যাপী ২৫.১৭ কোটিরও বেশি কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। পুষ্টি ব্যবস্থাপনা  পদ্ধতি শেখানোর জন্য ৯৩,০০০-এর বেশি মাটি-স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ এবং ৬.৮ লক্ষ মাঠে প্রদর্শনী-সহ সমান্তরাল প্রয়াস চালানো হয়েছে।

কৃষক উৎপাদক সংগঠন (ফার্মার প্রোডিউসার অর্গানাইজেশনস): বাজার-ভিত্তিক সক্ষমতা তৈরি করতে, সরকার ১০,০০০-এর বেশি এফপিও  নথিভুক্ত করেছে। ডিজিটাল মডিউল এবং ওয়েবিনারের মাধ্যমে এফপিও-এর কৃষকদের কৃষি-ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা, মূল্য শৃঙ্খল এবং বাজারজাতকরণ সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। (ক্ষুদ্র কৃষকদের একত্রিত করার মাধ্যমে, এফপিও-গুলি গ্রামীণ এলাকায় লক্ষ্যযুক্ত দক্ষতা ও সম্প্রসারণ পরিষেবা দিতে সহায়তা করে)।

উপসংহার

আজ ভারতের কৃষি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা শিক্ষা, গবেষণা, প্রযুক্তি এবং মাঠ-পর্যায়ের দক্ষতা উন্নয়নকে যুক্ত করে একটি সুসংহত পদ্ধতিকে প্রতিফলিত করে।"এক দেশ - এক কৃষি - এক দল” (ওয়ান নেশন - ওয়ান এগ্রিকালচার - ওয়ান টিম) এই দৃষ্টিভঙ্গির দ্বারা পরিচালিত হয়ে আইসিএআর, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রগুলির মত প্রতিষ্ঠানগুলি কৃষিকাজকে আরও উৎপাদনশীল, সুস্থায়ী এবং জ্ঞান-ভিত্তিক করার জন্য একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করেছে। গুণমানসম্পন্ন শিক্ষা, স্বীকৃতি সংস্কার এবং কৃষক-কেন্দ্রিক প্রশিক্ষণের উপর ক্রমাগত জোর দেওয়ায় বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও ব্যবহারিক প্রয়োগের মধ্যেকার ফাঁক পূরণ করতে সহায়তা করছে।
ইন্টারনেট অফ থিংস, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং সুনির্দিষ্ট কৃষি সরঞ্জামগুলির মত প্রযুক্তির অন্তর্ভুক্তি আধুনিক এবং ডেটা-ভিত্তিক কৃষির দিকে একটি তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তনকে চিহ্নিত করে। এটিএমএ (ATMA), এসটিআরওয়াই (STRY) এবং এসএমএএম (SMAM)-এর মত উদ্যোগগুলির মাধ্যমে কৃষক ও গ্রামীণ যুবকদের প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত ও উদ্যোগমূলক দক্ষতা দিয়ে সজ্জিত করা হচ্ছে, যা গ্রামগুলিতে কর্মসংস্থান ও স্ব-নির্ভরতাকে উৎসাহিত করছে। সব মিলিয়ে, এই প্রয়াসগুলি উচ্চ উৎপাদনশীলতা, উন্নত আয়, এবং সম্পদের  সুস্থায়ী ব্যবহারে অবদান রাখছে। যেহেতু ভারত খাদ্য উৎপাদনে স্বনির্ভরতা এবং একটি স্থিতিশীল গ্রামীণ অর্থনীতির লক্ষ্য স্থির করেছে, তাই শিক্ষা, উদ্ভাবন এবং দক্ষতা তৈরির মধ্যে এই পারস্পরিক সংযোগকে শক্তিশালী করা দেশের কৃষি অগ্রগতির জন্য কেন্দ্রীয় গুরুত্ব বহন করবে।

তথ্যসূত্র;

PIB:

ICAR:

CAU

Click here to see pdf


SSS/AS.....


(Release ID: 2186307) Visitor Counter : 7