প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
কুয়েতে ভারতীয় সম্প্রদায়ের ‘হালা মোদী’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বাংলা অনুবাদ
Posted On:
21 DEC 2024 9:22PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪
ভারত মাতার জয়!
ভারত মাতার জয়!
ভারত মাতার জয়!
নমস্কার!
আমি মাত্র দুই-আড়াই ঘন্টা আগে কুয়েতে পৌঁছেছি। আর এখানে পা রাখার পর থেকেই আমি চারপাশে খুব কাছের মানুষের সান্নিধ্য এবং উষ্ণতার অনুভূতি অনুভব করেছি। আপনারা সকলেই ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে এসেছেন, কিন্তু আপনাদের সকলকে দেখে মনে হচ্ছে যেন আমার সামনে একটি ক্ষুদ্র হিন্দুস্তান জীবন্ত হয়ে উঠেছে। এখানে, আমি উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব এবং পশ্চিমের মানুষদের বিভিন্ন ভাষা এবং উপভাষায় কথা বলতে দেখি। তবুও, প্রত্যেকের হৃদয়ে একটি সাধারণ প্রতিধ্বনি, প্রত্যেকের হৃদয়ে একটি ধ্বনি - ভারত মাতার জয়!
ভারত মাতার জয়! শুনতে পাই ।
এখানে, সংস্কৃতির এক উৎসবমুখর পরিবেশ রয়েছে। এখন, আপনারা বড়দিন এবং নববর্ষের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন । শীঘ্রই পোঙ্গল আসবে। মকর সংক্রান্তি, লোহরি, বিহু, অথবা এই জাতীয় নানা উৎসবই , সেগুলো ও খুব বেশি দূরে নয়। আমি আপনাদের সকলকে বড়দিন, নববর্ষ এবং দেশের প্রতিটি কোণে পালিত সকল উৎসবের জন্য আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
বন্ধুরা,
আজ, এই মুহূর্তটি ব্যক্তিগতভাবে আমার জন্য খুবই বিশেষ। বস্তুত, ৪৩ বছর—চার দশকেরও বেশি সময় পর—ভারতের একজন প্রধানমন্ত্রী কুয়েতে এসেছেন। ভারত থেকে কুয়েত ভ্রমণ করতে আপনাদের মাত্র চার ঘন্টা সময় লাগে, কিন্তু একজন প্রধানমন্ত্রীর এই ভ্রমণ করতে চার দশক সময় লেগেছে। আপনাদের অনেকেই বংশ পরম্পরায় কুয়েতে বসবাস করছেন। আপনাদের মধ্যে কেউ কেউ এখানে জন্মগ্রহণও করেছেন। এবং প্রতি বছর, শত শত ভারতীয় আপনাদের সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগ দেয়। আপনারা কুয়েতের সমাজে ভারতীয় স্বাদের ছোঁয়া যোগ করেছেন, ভারতীয় দক্ষতার রঙ দিয়ে কুয়েতের ক্যানভাস রাঙিয়েছেন এবং ভারতের প্রতিভা, প্রযুক্তি এবং ঐতিহ্যকে কুয়েতের কাঠামোতে মিশ্রিত করেছ। সেই কারণেই আমি আজ এখানে আমি এসেছি—শুধু আপনাদের সাথে দেখা করতে নয়, বরং আপনাদের সাফল্য প্রত্যক্ষ করতে।
বন্ধুরা,
কিছুক্ষণ আগে, আমি এখানে কর্মরত ভারতীয় শ্রমিক এবং পেশাদারদের সাথে দেখা করেছি। এই বন্ধুরা নির্মাণ কাজের সাথে জড়িত এবং অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রেও তাদের কঠোর পরিশ্রম নানাবিধ অবদান রাখছে। ভারতীয় সম্প্রদায়ের সদস্যরা, ডাক্তার, নার্স এবং প্যারামেডিক হিসেবে, কুয়েতের চিকিৎসা পরিকাঠামোর একটি উল্লেখযোগ্য শক্তি। আপনাদের মধ্যে যারা শিক্ষক, তারা কুয়েতের পরবর্তী প্রজন্মকে শক্তিশালী করার জন্য অবদান রাখছেন। আপনাদের মধ্যে যারা ইঞ্জিনিয়ার এবং স্থপতি, তারা কুয়েতে পরবর্তী প্রজন্মের পরিকাঠামো নির্মাণ করছেন।
এবং বন্ধুরা,
আমি যখনই কুয়েতের নেতৃত্বের সাথে কথা বলি, তারা সর্বদা আপনাদের সকলের প্রশংসা করে। আপনাদের কঠোর পরিশ্রম, সততা এবং দক্ষতার জন্য কুয়েতের নাগরিকরাও আপনাদের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল। আজ, ভারত রেমিটেন্সের ক্ষেত্রে বিশ্বে শীর্ষস্থানীয়, এবং এই অর্জনের কৃতিত্ব আপনাদের মত সকল পরিশ্রমী বন্ধুদের। আপনাদের অবদানকে আপনাদের দেশবাসী গভীরভাবে সম্মান করে।
বন্ধুরা,
ভারত ও কুয়েতের সম্পর্ক সভ্যতা, সমুদ্র এবং বাণিজ্যের মাধ্যমে একটি সম্পর্ক। ভারত ও কুয়েত আরব সাগরের বিপরীত তীরে অবস্থিত। কেবল কূটনীতিই আমাদের আবদ্ধ করে না, রয়েছে হৃদয়ের সংযোগও। আমাদের বর্তমান সম্পর্ক আমাদের অভিন্ন ইতিহাসের মতোই শক্তিশালী। একটা সময় ছিল যখন কুয়েত থেকে মুক্তা, খেজুর এবং দুর্দান্ত প্রজাতির ঘোড়া ভারতে পাঠানো হত, যখন ভারত থেকে অনেক পণ্য এখানে আসত। ভারতীয় চাল, চা, মশলা, কাপড় এবং কাঠ নিয়মিত কুয়েতে আনা হত। ভারত থেকে আসা সেগুন কাঠ ব্যবহার করা হত জাহাজ তৈরিতে যার সাহায্যে কুয়েতি নাবিকরা দীর্ঘ ভ্রমণ করতেন। কুয়েতের মুক্তা ভারতের কাছে হীরার মতো মূল্যবান। আজ, ভারতীয় গহনা বিশ্বব্যাপী বিখ্যাত, এবং কুয়েতি মুক্তা সেই ঐতিহ্যে অবদান রেখেছে। গুজরাটে, আমরা প্রায়শই আমাদের বয়স্কদের কাছ থেকে গল্প শুনি যে, বিগত শতাব্দীগুলিতে, কুয়েত এবং ভারতের মধ্যে কীভাবে নিয়মিত ভ্রমণ এবং বাণিজ্য হত। বিশেষ করে উনবিংশ শতকে, কুয়েতি ব্যবসায়ীরা সুরাটে আসতে শুরু করেছিলেন। সেই সময়ে, সুরাট ছিল কুয়েতি মুক্তার একটি আন্তর্জাতিক বাজার। গুজরাটের সুরাট, পোরবন্দর এবং ভেরাবলের মতো বন্দরগুলি এই ঐতিহাসিক সম্পরকের সাক্ষী হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।
কুয়েতি ব্যবসায়ীরা গুজরাটি ভাষায় অসংখ্য বই প্রকাশ করেছেন। গুজরাটের পর, কুয়েতি ব্যবসায়ীরা মুম্বাই এবং অন্যান্য বাজারেও একটি স্বতন্ত্র উপস্থিতি প্রতিষ্ঠা করেছেন। এর একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হলেন বিখ্যাত কুয়েতি ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ আল আব্দুল রাজ্জাক, যার বই 'হাউ টু ক্যালকুলেট পার্ল ওয়েট' মুম্বাইতে প্রকাশিত হয়েছিল। অনেক কুয়েতি ব্যবসায়ী তাদের রপ্তানি ও আমদানি ব্যবসার জন্য মুম্বই, কলকাতা, পোরবন্দর, ভেরাভাল এবং গোয়ায় অফিস খুলেছিলেন। আজও, অনেক কুয়েতি পরিবার মুম্বাইয়ের মোহাম্মদ আলি স্ট্রিটে বাস করে। এটা জেনে অনেকেই অবাক হতে পারেন যে ৬০-৬৫ বছর আগে, ভারতের মতো কুয়েতেও ভারতীয় রুপি ব্যবহার করা হত। সেই সময়ে, কেউ কুয়েতের দোকান থেকে কিছু কিনলে, ভারতীয় রুপি মুদ্রা হিসেবে গ্রহণ করা হত। "রূপিয়া," "পয়সা," এবং "আনা" এর মতো শব্দগুলি, যা ভারতীয় মুদ্রার শব্দভাণ্ডারের অংশ ছিল, কুয়েতের জনগণের কাছে খুবই পরিচিত ছিল।
বন্ধুরা,
ভারত ছিল বিশ্বের প্রথম দেশগুলির মধ্যে একটি যারা স্বাধীনতার পর কুয়েতকে স্বীকৃতি দেয়। এই কারণেই কুয়েত এমন একটি দেশ, যার সমাজের সাথে আমাদের অতীত এবং বর্তমানের প্রচুর স্মৃতি এবং গভীর সংযোগ রয়েছে। এই দেশ সফর আমার জন্য সত্যিই স্মরণীয়। আমি কুয়েতের জনগণ এবং এর সরকারের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞ। আমি বিশেষভাবে মাননীয় আমিরকে তার সাদর আমন্ত্রণের জন্য ধন্যবাদ জানাতে চাই।
বন্ধুরা,
অতীতে সংস্কৃতি ও বাণিজ্যের মাধ্যমে গড়ে ওঠা বন্ধন এখন এই নতুন শতাব্দীতে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। আজ, কুয়েত ভারতের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শক্তি এবং বাণিজ্য অংশীদার, এবং ভারত কুয়েতি কোম্পানিগুলির জন্য একটি প্রধান বিনিয়োগের গন্তব্যও। নিউ ইয়র্কে আমাদের বৈঠকে কুয়েতের যুবরাজের উল্লেখ করা একটি উক্তি আমার স্পষ্টভাবে মনে আছে। তিনি বলেছিলেন, "যখন আপনাদের প্রয়োজন হবে, তখন ভারত হবে আপনাদের গন্তব্য।" ভারত এবং কুয়েতের নাগরিকরা কঠিন সময়ে এবং সংকটে সর্বদা একে অপরের পাশে দাঁড়িয়েছে। করোনা মহামারীর সময়, উভয় দেশই প্রতিটি স্তরে একে অপরকে সমর্থন করেছিল। যখন ভারতের সবচেয়ে বেশি সাহায্যের প্রয়োজন ছিল, তখন কুয়েত আমাদের তরল অক্সিজেন সরবরাহ করেছিল। যুবরাজ ব্যক্তিগতভাবে সকলকে দ্রুত কাজ করার জন্য অনুপ্রাণিত করার জন্য এগিয়ে এসেছিলেন। আমি আনন্দিত যে ভারতও কুয়েতকে সংকট মোকাবিলায় সহায়তা করার জন্য ভ্যাকসিন এবং মেডিকেল টিম পাঠিয়ে তাকে সহায়তা করেছে। ভারত তার বন্দরগুলি খোলা রেখেছিল যাতে কুয়েত এবং এর আশেপাশের অঞ্চলের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহের কোনও ঘাটতি না হয়। এই বছরের জুন মাসে, কুয়েতে একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছিল - মঙ্গাফে অগ্নিকাণ্ড - যা অনেক ভারতীয়র জীবন কেড়ে নিয়েছিল। এই খবরটি শুনে আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। তবে, সেই সময়ে কুয়েত সরকার যেভাবে সহায়তার হাত বাড়িয়েছিল তা ছিল একজন প্রকৃত ভাইয়ের মতো। আমি কুয়েতের মনোবল এবং সহানুভূতিকে শ্রদ্ধা জানাই।
বন্ধুরা,
সুখ-দুঃখে একে অপরের পাশে দাঁড়ানোর এই ঐতিহ্য আমাদের পারস্পরিক সম্পর্ক এবং বিশ্বাসের ভিত্তি তৈরি করে। আগামী দশকগুলিতে, আমরা সমৃদ্ধির আরও বৃহত্তর অংশীদার হয়ে উঠব। আমাদের লক্ষ্যগুলি খুব আলাদা নয়। কুয়েতের জনগণ নতুন কুয়েত গড়ে তোলার জন্য কাজ করছে, এবং ভারতের জনগণও ২০৪৭ সালের মধ্যে দেশকে একটি উন্নত জাতিতে পরিণত করার জন্য নিবেদিতপ্রাণ। কুয়েতের লক্ষ্য বাণিজ্য এবং উদ্ভাবনের মাধ্যমে একটি গতিশীল অর্থনীতিতে পরিণত হওয়া, এবং ভারতও উদ্ভাবনের উপর মনোনিবেশ করছে এবং ক্রমাগত তার অর্থনীতিকে শক্তিশালী করছে। এই দুটি লক্ষ্য একে অপরের পরিপূরক। নতুন কুয়েত তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় উদ্ভাবন, দক্ষতা, প্রযুক্তি এবং জনশক্তি ভারতেই পাওয়া যায়। ভারতের স্টার্ট-আপ, ফিনটেক, স্বাস্থ্য পরিসেবা, স্মার্ট সিটি , পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি — কুয়েতের প্রতিটি প্রয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা করতে পারে। ভারতের দক্ষ যুবকরা কুয়েতের ভবিষ্যতের যাত্রায় নতুন শক্তি যোগ করতে পারে।
বন্ধুরা,
ভারতের বিশ্বের দক্ষতার রাজধানী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ভারত আগামী কয়েক দশক ধরে বিশ্বের সবচেয়ে তরুণ দেশ হিসেবেই থাকবে। এই প্রেক্ষাপটে, ভারত বিশ্বব্যাপী দক্ষতার চাহিদা মেটানোর ক্ষমতা রাখে। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য, ভারত বিশ্বব্যাপী চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রেখে তার যুবসমাজের দক্ষতা উন্নয়নের উপর জোর দিচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, ভারত উপসাগরীয় দেশ, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, মরিশাস, যুক্তরাজ্য এবং ইতালি সহ প্রায় দুই ডজন দেশের সাথে অভিবাসন এবং কর্মসংস্থান চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশও ভারতের দক্ষ জনশক্তির জন্য তাদের দরজা খুলে দিচ্ছে।
বন্ধুরা,
বিদেশে কর্মরত ভারতীয়দের কল্যাণ এবং সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন দেশের সাথে অনেক চুক্তি করা হচ্ছে। আপনারা নিশ্চয় ই-মাইগ্রেন্ট পোর্টালের সাথে পরিচিত। এই পোর্টালের মাধ্যমে বিদেশী কোম্পানি এবং নিবন্ধিত এজেন্টদের একটি একক প্ল্যাটফর্মে আনা হয়েছে। এর ফলে জনশক্তির চাহিদা কোথায়, কী ধরণের জনসম্পদের প্রয়োজন এবং কোন কোন কোম্পানির প্রয়োজন তা সনাক্ত করা সহজ হয়। এই পোর্টালের জন্য , গত ৪-৫ বছরে লক্ষ লক্ষ কর্মী উপসাগরীয় দেশগুলিতে এসেছেন। এই ধরণের প্রতিটি উদ্যোগের একটিই লক্ষ্য থাকে - ভারতের প্রতিভা যাতে বিশ্বের উন্নয়নে অবদান রাখে এবং যারা কাজের জন্য বিদেশে যান তাদের যে কোন প্রয়োজনে সহায়তা নিশ্চিত করা। কুয়েতে আপনারা সকলেই এই ক্ষেত্রে ভারতের এই উদ্যোগগুলি থেকে প্রচুর উপকৃত হবেন।
বন্ধুরা,
আমরা বিশ্বের যেখানেই থাকি না কেন, আমরা যে দেশে থাকি সেই দেশকে সম্মান করি, এবং ভারতকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছাতে দেখে আমরা অপরিসীম আনন্দ অনুভব করি। আপনারা সকলেই ভারত থেকে এসে, এখানেই বাস করছেন, তবুও আপনারা আপনাদের ভারতীয় পরিচয় হৃদয়ে সংরক্ষণ করে রেখেছেন। এখন বলুন, মঙ্গলযানের সাফল্যে কোন ভারতীয় গর্বিত হবে না? চাঁদে চন্দ্রযানের অবতরণে কোন ভারতীয় আনন্দিত হবে না? আমি কি ঠিক বলছি তো? আজ, ভারত এক নতুন চেতনা নিয়ে এগিয়ে চলেছে। ভারত এখন বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি। বিশ্বের এক নম্বর ফিনটেক ইকোসিস্টেমের আবাসস্থল। ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম স্টার্ট-আপ ইকোসিস্টেম এবং বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন প্রস্তুতকারক দেশ ।
আমি আপনাদের সাথে একটি পরিসংখ্যান ভাগ করে নেব, এবং আমি নিশ্চিত যে আপনারা এটি শুনে খুশি হবেন। গত ১০ বছরে, ভারত জুড়ে বিছানো অপটিক্যাল ফাইবারের দৈর্ঘ্য পৃথিবী এবং চাঁদের মধ্যে দূরত্বের চেয়ে আট গুণ বেশি। আজ, ভারত বিশ্বের সবচেয়ে ডিজিটালভাবে সংযুক্ত দেশগুলির মধ্যে একটি। ছোট শহর থেকে শুরু করে গ্রাম পর্যন্ত প্রতিটি ভারতীয় ডিজিটাল সরঞ্জাম ব্যবহার করছে। ভারতে স্মার্ট ডিজিটাল সিস্টেম এখন আর বিলাসিতা নয়; এগুলি এখন সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের একটি অংশ। এক কাপ চা খাওয়া, রাস্তায় ফল কেনা, অথবা ডিজিটাল পেমেন্ট করা যাই হোক না কেন, ভারত ডিজিটাল সুবিধা গ্রহণ করেছে। মুদিখানা, খাবার, ফল, সবজি, অথবা দৈনন্দিন গৃহস্থালীর জিনিসপত্র অর্ডার করা এখন মুহূর্তের মধ্যে হয়ে যায় এবং মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পেমেন্ট করা হয়। মানুষের কাছে নথিপত্র সংরক্ষণের জন্য DigiLocker, বিমানবন্দরে নির্বিঘ্ন ভ্রমণের জন্য DigiYatra এবং টোল বুথে সময় বাঁচানোর জন্য FASTag রয়েছে। ভারত ক্রমশ ডিজিটালভাবে স্মার্ট হয়ে উঠছে, এবং এটি কেবল শুরু। ভারতের ভবিষ্যৎ এমন উদ্ভাবনের মধ্যে নিহিত যা সমগ্র বিশ্বকে পথ দেখাবে। ভবিষ্যতের ভারত হবে বিশ্বব্যাপী উন্নয়নের কেন্দ্র, বিশ্বের উন্নয়নের চালিকাশক্তি । সেই সময় খুব বেশি দূরে নেই যখন ভারত পরিবেশ বান্ধব জ্বালানি, ফার্মা, ইলেকট্রনিক্স, অটোমোবাইলস, সেমিকন্ডাক্টর, আইন, বীমা এবং বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে র কেন্দ্র হয়ে উঠবে। আপনি বিশ্বের প্রধান অর্থনৈতিক কেন্দ্রগুলিকে ভারতে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত হতে দেখতে পাবেন। ভারত বিশ্বব্যাপী সক্ষমতা কেন্দ্র, বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তি কেন্দ্র এবং বিশ্বব্যাপী প্রকৌশল কেন্দ্রের একটি বিশাল কেন্দ্র হিসেবে আবির্ভূত হবে।
বন্ধুরা,
আমরা সমগ্র বিশ্বকে একটি পরিবার হিসেবে বিবেচনা করি। ভারত বিশ্বের কল্যাণের কথা চিন্তা করে ‘বিশ্ববন্ধু’ (বিশ্ব বন্ধু) হিসেবে এগিয়ে চলেছে। বিশ্বও ভারতের এই চেতনাকে স্বীকৃতি দিচ্ছে। আজ, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, বিশ্ব তার প্রথম বিশ্ব ধ্যান দিবস উদযাপন করছে, যা ভারতের হাজার বছরের ধ্যান ঐতিহ্যের প্রতি উৎসর্গীকৃত। ২০১৫ সাল থেকে, বিশ্ব ২১শে জুন আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উদযাপন করে আসছে, যা ভারতের যোগ ঐতিহ্যের প্রতি উৎসর্গীকৃত। ২০২৩ সালে, বিশ্ব আন্তর্জাতিক বাজরা বর্ষ উদযাপন করেছে, যা ভারতের প্রচেষ্টা এবং প্রস্তাবের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। আজ, ভারতের যোগ বিশ্বের প্রতিটি অঞ্চলকে একত্রিত করছে। ভারতের ঐতিহ্যবাহী ঔষধ, আমাদের আয়ুর্বেদ এবং আমাদের আয়ুষ পণ্য বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য পরিষেবাকে সমৃদ্ধ করছে। আমাদের সুপারফুড, বাজরা এবং শ্রী অন্ন পুষ্টি এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার একটি প্রধান ভিত্তি হয়ে উঠছে। নালন্দা থেকে আইআইটি পর্যন্ত, ভারতের জ্ঞান ব্যবস্থা বিশ্বব্যাপী শিক্ষাক্ষেত্র কে শক্তিশালী করছে। আজ, ভারত বিশ্বব্যাপী সংযোগের একটি মূল কেন্দ্র হয়ে উঠছে। গত বছর ভারতে অনুষ্ঠিত G-20 শীর্ষ সম্মেলনে, ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ করিডোরের ঘোষণা করা হয়েছিল। এই করিডোর বিশ্বের ভবিষ্যতের জন্য একটি নতুন দিকনির্দেশনা প্রদান করবে।
বন্ধুরা,
‘বিকশিত ভারত’ (উন্নত ভারত) এর যাত্রায় আপনাদের সমর্থন এবং প্রবাসী ভারতীয়দের অংশগ্রহণ ছাড়া অসম্পূর্ণ। আমি আপনাদের সকলকে ‘বিকশিত ভারত’ এর সংকল্পে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। নতুন বছরের প্রথম মাস, ২০২৫ সালের জানুয়ারি, অনেক জাতীয় উদযাপনের মাস হবে। এই বছর ৮ থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত, প্রবাসী ভারতীয় দিবস ভুবনেশ্বরে অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে সারা বিশ্বের মানুষ একত্রিত হবেন। আমি আপনাদের সকলকে এই অনুষ্ঠানের অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। এই যাত্রায়, আপনি পুরীতে ভগবান জগন্নাথের আশীর্বাদ নিতে পারেন। এরপর, ১৩ জানুয়ারি থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত মহা কুম্ভ মেলায় অংশ নিতে প্রয়াগরাজে যান, যা প্রায় দেড় মাস স্থায়ী হবে। আপনারা ২৬ জানুয়ারী সাধারণতন্ত্র দিবস উদযাপন দেখে অবশ্যই ফিরে আসুন। আর হ্যাঁ, আপনার কুয়েতি বন্ধুদের ভারতে নিয়ে আসুন, তাদের ঘুরে দেখুন এবং তাদের ভারত ভ্রমণ উপভোগ করতে দিন। একটা সময় ছিল যখন দিলীপ কুমার সাহেব এখানে প্রথম ভারতীয় রেস্তোরাঁ উদ্বোধন করেছিলেন। ভারতের আসল স্বাদ কেবল সেখানেই অনুভব করা যায়। তাই, এই অভিজ্ঞতাটি আপনাদের কুয়েতের বন্ধুদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে ভুলবেন না।
বন্ধুরা,
আমি জানি আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া আরব উপসাগরীয় কাপ নিয়ে আপনারা সকলেই খুবই উত্তেজিত। আপনারা কুয়েত দলকে সমর্থন করতে আগ্রহী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমাকে সম্মানিত অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য আমি আমিরের কাছে কৃতজ্ঞ। এর মাধ্যমে রাজপরিবার ও কুয়েত সরকারের আপনাদের সকলের এবং ভারতের প্রতি যে অপরিসীম শ্রদ্ধা রয়েছে তা প্রতিফলিত করে। আমি আশা করি আপনারা এভাবেই ভারত-কুয়েত সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করে তুলবেন। এই কামনার সাথে, আবারও আপনাদের সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই !
ভারত মাতার জয়!
ভারত মাতার জয়!
ভারত মাতার জয়!
অনেক ধন্যবাদ।
SSS/CB/DM
(Release ID: 2177771)
Visitor Counter : 8
Read this release in:
English
,
Urdu
,
हिन्दी
,
Marathi
,
Assamese
,
Manipuri
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Odia
,
Tamil
,
Telugu
,
Kannada
,
Malayalam