প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
প্রধানমন্ত্রী সুপ্রিম কোর্টের হীরকজয়ন্তী উদ্বোধন করলেন
ডিজিটাল সুপ্রিম কোর্ট রিপোর্টস, ডিজিটাল কোর্টস ২.০ এবং সুপ্রিম কোর্টের নতুন ওয়েবসাইট-সহ একাধিক প্রযুক্তি উদ্যোগের উদ্বোধন
“সুপ্রিম কোর্ট ভারতের জীবন্ত গণতন্ত্রকে আর-ও বলিষ্ঠ করেছে”
“আজকের ভারতের অর্থনৈতিক নীতিই আগামী দিনের উজ্জ্বল ভারতের ভিত্তি গড়বে”
Posted On:
28 JAN 2024 2:28PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ২৮ জানুয়ারি ২০২৪
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ, ২৮ জানুয়ারি দিল্লির সুপ্রিম কোর্ট প্রেক্ষাগৃহে শীর্ষ আদালতের হীরকজয়ন্তী অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন। তিনি কয়েকটি নাগরিক-কেন্দ্রিক তথ্য ও প্রযুক্তি উদ্যোগও উদ্বোধন করেন। এর মধ্যে ডিজিটাল সুপ্রিম কোর্ট রিপোর্টস, ডিজিটাল কোর্টস ২.০ এবং সুপ্রিম কোর্টের নতুন ওয়েবসাইট অন্যতম।
ভাষণে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আজ সুপ্রিম কোর্ট তার ৭৫তম বর্ষে পদার্পণ করছে। তিনি বলেন, দুদিন আগে ভারতের সংবিধানও ৭৫-তম বর্ষে প্রবেশ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করিয়ে দেন যে, সংবিধান রচনাকারীরা মুক্তি, সাম্য ও ন্যায়ের উপর ভিত্তি করে স্বাধীন ভারতের স্বপ্ন দেখেছিলেন। সুপ্রিম কোর্ট সেই নীতি রক্ষায় ক্রমাগত কাজ করে চলেছে। তিনি বলেন, অভিব্যক্তির স্বাধীনতা হোক, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা হোক বা সামাজিক ন্যায়, সুপ্রিম কোর্ট ভারতের সজীব গণতন্ত্রকে বলিষ্ঠ করেছে। তিনি কয়েকটি স্মরণীয় রায় উল্ল্যেখ করে বলেন, এগুলি জাতির সামাজিক-রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে নতুন দিশা দেখিয়েছে।
আগামী ২৫ বছরের লক্ষ্য নির্ধারণের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের অর্থনৈতিক নীতি আগামী দিনের উজ্জ্বল ভারতের ভিত্তি গড়বে। তিনি আরও বলেন, আজ যে আইনগুলি প্রণীত হচ্ছে সেগুলি আগামী দিনের ভারতকে আরও সক্ষম করবে।
আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব এখন ভারতের দিকে তাকিয়ে। আমাদের সমস্ত সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। তিনি জীবনযাত্রা ও ব্যবসা সহজ করা এবং যাতায়াত, যোগাযোগ এবং ন্যায়বিচারের সহজলভ্যতাকে শীর্ষ অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলেন। তিনি বলেন, ন্যায়বিচারের সহজলভ্যতা প্রত্যেক ভারতীয় নাগরিকের অধিকার এবং সুপ্রিম কোর্ট তারই মাধ্যম।
দেশের পুরো বিচারব্যবস্থা সুপ্রিম কোর্টের অধীনে কাজ করে বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী ই-কোর্টস মিশন প্রকল্পের তৃতীয় ধাপ অনুমোদনের কথা জানান। তিনি জানান, তৃতীয় ধাপের তহবিল দ্বিতীয় ধাপের তুলনায় চারগুণ বাড়ানো হয়েছে। তিনি খুশি হয়ে বলেন, দেশের সকল কোর্ট ডিজিটাইজেশনের কাজ প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণে হচ্ছে এবং তাঁর এই প্রচেষ্টা প্রশংসনীয়।
পরিকাঠামো উন্নয়নে সরকারের অঙ্গীকার সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০১৪ সালের পর থেকে আদালতগুলির উন্নয়নে ₹৭০০০ কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ ও বিতরণ করা হয়েছে। বর্তমান সুপ্রিম কোর্ট ভবনের সীমাবদ্ধতা তুলে ধরে তিনি জানান, গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্ট ভবন সম্প্রসারণের জন্য ₹৮০০ কোটি অনুমোদন করা হয়েছে।
ডিজিটাল উদ্যোগ নিয়ে বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী আনন্দ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এখন থেকে রায়গুলি ডিজিটাল রূপে উপলব্ধ হবে। সুপ্রিম কোর্টের রায়গুলির স্থানীয় ভাষায় অনুবাদের প্রকল্পও শুরু হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ভবিষ্যতে অন্যান্য আদালতেও এইরকম ব্যবস্থা চালু হবে।
আজকের অনুষ্ঠানই প্রমাণ করে প্রযুক্তি কিভাবে ন্যায়বিচার সহজ করতে পারে, এই কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর ভাষণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এ আই সহায়তায় সরাসরি ইংরেজিতে অনুবাদ করা হচ্ছে এবং ভাষিণী অ্যাপের মাধ্যমে শোনা যাচ্ছে। তিনি স্বীকার করেন, শুরুতে কিছু সমস্যা দেখা দিলেও এতে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়বে। আমাদের আদালতেও এই ধরনের প্রযুক্তি প্রয়োগ করলে সাধারণ মানুষের জীবন সহজ হবে। তিনি সহজ ভাষায় আইন রচনার অনুরোধ জানান।
ভারতীয় মূল্যবোধ ও আধুনিকতার সমন্বয় আইন ব্যবস্থায় থাকা প্রয়োজন, এই কথাটিই ছিল প্রধানমন্ত্রীর মূল বক্তব্য। তিনি বলেন, আইনে ভারতীয় নীতি এবং আধুনিক অনুশীলন দুইই প্রতিফলিত হওয়া প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, সরকার আইন আধুনিকীকরণের কাজ করছে।
সরকার পুরানো ঔপনিবেশিক শাস্ত্র বিধি তুলে দিয়ে নতুন বিধি আনার উদ্যোগ নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা, ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ও ভারতীয় সাক্ষ্য আইন। তিনি বলেন, এই পরিবর্তনের ফলে আমাদের আইন, পুলিশ ও তদন্ত ব্যবস্থা নতুন যুগে প্রবেশ করেছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, শতাব্দী-প্রাচীন আইন থেকে নতুন বিধিতে রূপান্তর নির্বিঘ্নে হওয়া উচিত। এই লক্ষ্যে সরকারি আধিকারিকদের জন্য প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ শুরু হয়েছে। তিনি সুপ্রিম কোর্টকেও সমস্ত অংশীদারদের জন্য ক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগে অংশ নেওয়ার অনুরোধ করেন।
একটি দৃঢ় বিচারব্যবস্থা বিকশিত ভারতের অন্যতম ভিত্তি, এই কথা পুনরায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, সরকার জন বিশ্বাস বিল আনার মাধ্যমে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে। তিনি জানান, মামলার সংখ্যা কমিয়ে অনাবশ্যক চাপ কমানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, মধ্যস্তরীয় আদালতে মীমাংসা গ্রহণে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির উদ্যোগও শুরু হয়েছে। এই উদ্যোগ বিচারব্যবস্থার ওপর চাপ হ্রাসে সহায়ক হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী সব নাগরিককে ২০৪৭ সালের মধ্যে বিকশিত ভারত গড়ার লক্ষ্যে সম্মিলিত দায়িত্ব গ্রহণের আহ্বান জানান। তিনি সবশেষে সুপ্রিম কোর্টকে আগামী ২৫ বছরে দেশের ভবিষ্যত রচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, মহিলা বিচারপতি এম. ফাতিমা বিবিকে মরণোত্তর পদ্মভূষণ দেওয়া হয়েছে; এই পদক্ষেপ আমাদের সকলের জন্য গৌরবের।
উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারতের প্রধান বিচারপতি ড. ডি. ওয়াই. চন্দ্রচূড়, কেন্দ্রীয় আইন ও ন্যায় মন্ত্রী শ্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল, সুপ্রিম কোর্টের বিচারকগণ, বিচারপতি শ্রী সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি শ্রী ভূষণ রামকৃষ্ণ গবৈ, অ্যাটর্নি জেনারেল শ্রী ভেঙ্কটরমণি, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ড. আধিশ সি. আগরওয়াল এবং বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার সভাপতি শ্রী মানন কুমার মিশ্রা প্রমুখ।
পটভূমি
সুপ্রিম কোর্টের ৭৫-তম বর্ষ উদযাপন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী নাগরিক-কেন্দ্রিক তথ্য ও প্রযুক্তি উদ্যোগগুলি উদ্বোধন করেনঃ ডিজিটাল সুপ্রিম কোর্ট রিপোর্টস, ডিজিটাল কোর্টস ২.০ এবং সুপ্রিম কোর্টের নতুন ওয়েবসাইট।
ডিজিটাল সুপ্রিম কোর্ট রিপোর্টস নাগরিকদের জন্য সুপ্রিম কোর্টের রায়গুলি বৈদ্যুতিন রুপে বিনামূল্যে প্রদান করবে। এর মূল বৈশিষ্ট্য হল: ১৯৫০ সাল থেকে প্রকাশিত ৩৬,৩০৮টি মামলা সহ মোট ৫১৯ খণ্ডের সুপ্রিম কোর্ট রিপোর্টস ডিজিটাল, বুকমার্ক করা, ব্যবহারকারী-সুবিধাজনক এবং সর্বসাধারণের জন্য প্রাপ্ত হবে।
ডিজিটাল কোর্টস ২.০ অ্যাপ্লিকেশনটি ই-কোর্টস প্রকল্পের সাম্প্রতিক উদ্যোগ। এর লক্ষ্য জেলা কোর্টের বিচারকেদের জন্য আদালত নথি বৈদ্যুতিন রুপে সরবরাহ করা। এর সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এ আই ব্যবহার করে সরাসরি বিচারকদের কথা লিপিবদ্ধ করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী সুপ্রিম কোর্টের নতুন ওয়েবসাইটও উদ্বোধন করেন। নতুন ওয়েবসাইটটি ইংরেজি ও হিন্দিতে দেখা যাবে এবং অত্যন্ত সুবিধাজনক।
****
SSS/RS
(Release ID: 2177119)
Visitor Counter : 14
Read this release in:
Kannada
,
English
,
Urdu
,
Marathi
,
हिन्दी
,
Assamese
,
Manipuri
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Odia
,
Tamil
,
Telugu
,
Malayalam