প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

নতুন দিল্লিতে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের শতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

Posted On: 02 OCT 2025 11:15AM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ০২ অক্টোবর, ২০২৫

 

মঞ্চে উপস্থিত, শ্রদ্ধেয় রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সরকার্যবাহক, শ্রী দত্তাত্রেয় হোসাবালেজী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী গজেন্দ্র শেখাওয়াতজী, দিল্লির জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তাজী, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সকল স্বেচ্ছাসেবক, অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, ভদ্রমহিলা এবং ভদ্রমহোদয়গণ!

গতকাল, আমরা আমাদের দীর্ঘদিনের অন্যতম স্বেচ্ছাসেবক বিজয় কুমার মালহোত্রাজি-কে হারিয়েছি, যিনি সংঘের যাত্রা পথের প্রতিটি বাঁকে সবসময় গুরুত্বপূর্ণ স্থান নিয়েছিলেন। সর্বপ্রথমে আমি তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।

বন্ধুগণ,

আজ মহানবমী। আজ দেবী সিদ্ধিদাত্রীর দিন। নবরাত্রি উপলক্ষে আমি সকল দেশবাসীকে আমার শুভেচ্ছা জানাই। আগামীকাল বিজয়াদশমীর মহান উৎসব, যা অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়, মিথ্যার  বিরুদ্ধে সত্য এবং অন্ধকারের বিরুদ্ধে আলোর জয়। এটা কাকতালীয় ঘটনাই নয়, যে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১০০ বছর আগে এই পবিত্র দিনে। এটি ছিল প্রাচীন ঐতিহ্যের পুনরুজ্জীবন, যেখানে দেশের অন্তরাত্মা প্রকাশিত হয় নতুন নতুন রূপে, নানা সময়ে প্রতিটি যুগে সমস্যার মোকাবিলা করতে। এই যুগে সেই চিরন্তন জাতীয় অন্তরাত্মার পবিত্র জন্মান্তর এই সংঘ।

বন্ধুগণ,

আমাদের এই স্বেচ্ছাসেবক প্রজন্মের সৌভাগ্য যে আমরা সংঘের শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানের সাক্ষী থাকতে পারছি। এই উপলক্ষে, দেশ সেবার সংকল্পে নিয়োজিত অগণিত স্বেচ্ছাসেবককে আমি আমার শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। আমি সংঘের মাননীয় প্রতিষ্ঠাতা এবং আমাদের আদর্শ, ডক্টর হেডগেওয়ারজির চরণেও প্রণাম জানাই।

বন্ধুগণ,

ভারত সরকার সংঘের ১০০ বছরের উজ্জ্বল যাত্রা পথের স্মরণে আজ বিশেষ ডাকটিকিট এবং স্মারক মুদ্রা প্রকাশ করেছে। ১০০ টাকার মুদ্রার একদিকে আছে জাতীয় প্রতীক এবং অন্যদিকে, আছে আশীর্বাদদানকারী রূপে ভারতমাতার অপরূপ ছবি যেখানে চরণতলে বিদ্যমান সিংহ এবং স্বেচ্ছাসেবকরা। বোধহয় ভারতমাতার ছবি স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে এই প্রথম ভারতীয় মুদ্রায় প্রকাশিত হল। মুদ্রায় সংঘের: “রাষ্ট্রায় স্বাহা, ইন্দ রাষ্ট্রায় ইন্দ ন মম” (আমি যে জাতির জন্য উৎসর্গ করছি, এটি জাতির জন্য, আমার জন্য নয়) নীতি বাক্যটি মুদ্রিত হয়েছে।

বন্ধুগণ,

আজ প্রকাশিত বিশেষ স্মারক ডাকটিকিটিও তার নিজস্ব তাৎপর্য বহন করছে। আমরা সকলে জানি ২৬ জানুয়ারি সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজের গুরুত্ব। ১৯৬৩ সালে, আরএসএস-এর স্বেচ্ছাসেবকরাও ওই জাতীয় কুচকাওয়াজে অংশ নিয়েছিল এবং তাঁরা গর্বের সঙ্গে দেশপ্রেমের সুরে পা মিলিয়েছিল। এই ডাকটিকিটটি সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তের স্মারক।

বন্ধুগণ,

আরএসএস স্বেচ্ছাসেবকগণ, যাঁরা নিয়মিত দেশসেবা এবং সমাজের ক্ষমতায়নের সঙ্গে যুক্ত, তাঁরাও এই স্মারক ডাকটিকিটে স্থান পেয়েছেন। আমি এই স্মারক মুদ্রা এবং ডাকটিকিটের জন্য দেশবাসীকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।

বন্ধুগণ,

যেমন একটি বড় নদী তার দুই তীরে মানবসভ্যতাকে লালন-পালন করে, তেমনই সংঘের দুই তীরে এবং স্রোতে অগণিত জীবন একইরকমভাবে ফুটে উঠেছে। যেমন একটি নদী মাটির উপর দিয়ে, গ্রামের ফেরত দিয়ে, অঞ্চল দিয়ে বয়ে যায়, নিজের জলে সেগুলিকে উর্বর ও সমৃদ্ধ করে তোলে তেমনভাবেই সংঘ দেশের প্রতিটি অংশ, সমাজের প্রতিটি স্তরকে ছুঁয়েছে। এটি লাগাতার প্রয়াসের ফল এবং এটি জাতীয় সত্তার শক্তিশালী প্রবাহ।

বন্ধুগণ,

যেমন একটি নদী বহু ধারায় বয়ে যায়, একেকটি শাখা বিভিন্ন অঞ্চলকে লালন করে, তেমনই সংঘের যাত্রা পথ। সংঘের অনেক নথিভুক্ত সংস্থা জীবনের প্রতিটি স্তরের সঙ্গে যুক্ত- তারা নিজেদের মতো করে দেশের সেবা করে, সে শিক্ষা ক্ষেত্রেই হোক কি কৃষি ক্ষেত্রে, সমাজকল্যাণ, জনজাতি কল্যাণ, মহিলাদের ক্ষমতায়ন, শিল্প এবং বিজ্ঞানে অথবা আমাদের শ্রমজীবী ভাই ও বোনদের সাহায্য করতে। সংঘ সামাজিক জীবনের অগণিত এলাকায় নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। এই যাত্রা পথের বিশেষ দিকটি হল এই যে, যেমন একটি ধারা বহু হয়ে ওঠে তারা কখনো একে অপরের সঙ্গে সংঘাতে জড়ায় না, কখনো বিভাজন করে না, কারণ প্রতিটি স্রোতের উদ্দেশ্য, বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মরত প্রত্যেকটি সংগঠনের আদর্শ এক এবং অভিন্ন: 'রাষ্ট্র প্রথম'। নেশন ফার্স্ট!

বন্ধুগণ,

সূচনা থেকে, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ একটি মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে চলেছে এবং সেটি হল দেশ গঠন। এই লক্ষ্য পূরণে যে পথ তারা নিয়েছে সেটি হল ব্যক্তি চরিত্র গঠনের মাধ্যমে দেশ গঠন এবং যে পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়েছে সেটি হল শাখার দৈনন্দিন, নিয়মবদ্ধ অনুশীলন।

বন্ধুগণ,

প্রণম্য ডঃ হেডগেওয়ারজি ভাল করে জানতেন যে আমাদের দেশ তখনই শক্তিশালী হবে যখন প্রতেক নাগরিক দেশের প্রতি তার কর্তব্য পালন করবে। আমাদের দেশ তখনই উত্থিত হবে যখন প্রতিটি ভারতীয় শিখবে দেশের সঙ্গে বাঁচতে। সেই কারণে তিনি নিজেকে নিয়মিত নিয়োগ করেছিলেন ব্যক্তিচরিত্র গঠনে এবং তাঁর পদ্ধতি ছিল অভিনব। আমরা প্রায়ই শুনে থাকি ডঃ হেডগেওয়ারজি বলতেন: "যেমন আছে সেভাবেই গ্রহণ করো এবং তাকে রূপ দাও যা তা হতে চায়।" মানুষের মনোভাব পরিবর্তন করতে তার পদ্ধতি বুঝতে হলে, একজন কুম্ভকারের কাজের কথা মনে করতে হবে। যখন একজন কুম্ভকার ইঁট পোড়ায়, তিনি শুরু করেন মাটি থেকে সাধারণ কাদা দিয়ে। তিনি সেটিকে সংগ্রহ করেন, সেটিকে মাখেন, তাকে একটি আকার দেন এবং আগুনে পোড়ান। এবং যখন তা করেন তখন তিনি নিজেও সেই আগুনের তাপ সহ্য করেন। তিনি ওই কাদামাটির সঙ্গে নিজেকেও সেঁকেন। তারপর, সবকটি ইঁট জড়ো করে তিনি বিভিন্ন ধরনের চমকপ্রদ কাঠামো তৈরি করেন। একইরকমভাবে, ডাক্তার সাহেব সম্পূর্ণ সাধারণ মানুষকে বেছে নেন, তাদের প্রশিক্ষণ দেন, তাদের লক্ষ্য স্থির করেন, তাদের ভেঙেচুরে গড়েন এবং সেইভাবেই দেশের সেবায় নিষ্ঠাবান স্বেচ্ছাসেবকদের তৈরি করেন। সেই কারণেই সংঘ সম্পর্কে বলা হয়, সাধারণ মানুষরা এখানে একসঙ্গে এসে অসাধারণ, অভূতপূর্ব কাজ করেন। 

বন্ধুগণ,

চরিত্র গঠনের এই সুন্দর প্রক্রিয়া এখনও দেখা যায় সংঘের শাখাগুলিতে। সংঘ শাখার ভূমি অনুপ্রেরণার পবিত্র ভূমি, যেখান থেকে একজন স্বেচ্ছাসেবকের "আমি" থেকে "আমরা"-য় যাত্রা শুরু হয়। চরিত্র গঠনের জন্য  আত্মনিবেদনের বেদী এই শাখাগুলি। এই শাখাগুলিতে ব্যক্তির শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক উন্নয়ন ঘটে। স্বেচ্ছাসেবকদের মনে, দিনে দিনে বেড়ে ওঠে দেশ সেবার আদর্শ এবং সাহস। তাদের জন্য, আত্মবলিদান এবং নিষ্ঠা খুবই সাধারণ হয়ে ওঠে, ব্যক্তিগত কৃতিত্বের জন্য প্রতিযোগিতার মনোভাব বিলুপ্ত হয় এবং তারা অর্জন করে যৌথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং যৌথ কাজের সংস্কৃতি। 

বন্ধুগণ,

দেশ গঠনের মহান লক্ষ্য, চরিত্র গঠনের স্পষ্ট পথ এবং শাখার অতি সাধারণ কিন্তু প্রাণবন্ত পদ্ধতি সংঘের ১০০ বছরের যাত্রার ভিত্তি। এই স্তম্ভগুলির উপর দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে, সংঘ লক্ষ লক্ষ স্বেচ্ছাসেবক তৈরি করেছে, যারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশের জন্য তাদের সেরাটা দিচ্ছেন, নিষ্ঠার মাধ্যমে, সেবার মাধ্যমে এবং দেশের অগ্রগতির মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে লাগাতার প্রয়াস চালাচ্ছেন। 

বন্ধুগণ,

সূচনাকাল থেকে, সংঘ অগ্রাধিকার দিয়েছে দেশের অগ্রাধিকারকে। সেই কারণে, প্রতিটি যুগে, যখন দেশ বড় সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে, তখন সংঘ নিজেকে ডুবিয়ে দিয়েছে সংগ্রামে আপাদমস্তক। যদি আমরা স্বাধীনতা সংগ্রামের দিকে তাকাই, তখন দেখব প্রণম্য ডক্টর হেডগেওয়ারজি এবং সংঘের অনেক কর্মী স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন। ডক্টর সাহেব একাধিকবার জেলে গিয়েছেন। সংঘ অনেক স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সাহায্য করেছে এবং রক্ষা করেছে, তাঁদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছে। ১৯৪২-এ ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে চিমুর বিদ্রোহের সময় অনেক স্বেচ্ছাসেবক ব্রিটিশদের হাতে মারাত্মকভাবে নির্যাতিত হয়েছেন। এমনকি স্বাধীনতার পরে সংঘ অগুন্তি আত্মবলিদান দিয়েছে, সে হায়দ্রাবাদে নিজামের দমনপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াইয়েই হোক, গোয়ার স্বাধীনতা সংগ্রামেই হোক অথবা দাদরা এবং নগর হাভেলির মুক্তি, কিন্তু এইসবের মধ্যে একটিই মনোভাব ছিল: দেশ প্রথম। লক্ষ্য রয়ে গেছে একই: 'এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত'। 

বন্ধুগণ,

দেশের সেবার পথে, এটা নয় যে সংঘ কখনও আক্রমণ অথবা চক্রান্তের সম্মুখীন হয়নি। আমরা দেখেছি স্বাধীনতার পরেও সংঘকে পিষে ফেলার কিরকম চেষ্টা হয়েছে। মূলস্রোতে ঢুকতে বাধা দিতে অসংখ্য পরিকল্পনা হয়েছে। প্রণম্য গুরুজী (এমএস গোলওয়ালকর)-কে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে। কিন্তু যখন গুরুজী জেল থেকে বেরিয়ে এসেছেন, তিনি অত্যন্ত সাধারণ ভাষায় কথা বলেছেন – সেই কথা যা ইতিহাসে অনুপ্রেরণার মহান উৎস হিসেবে থেকে গেছে। গুরুজি বলেন, "কখনও কখনও জিভ দাঁতে কেটে যায়, তাই বলে আমরা দাঁতকে ভেঙে ফেলি না। কারণ দাঁত হল আমাদের, জিভও আমাদের।" একবার ভাবুন জেলে এত অত্যাচার সহ্য করে, এত নির্যাতন সহেও কোনো রাগ নেই। গুরুজীর মনে অশুভ নেই। এটাই তাঁর ঋষিপ্রতিম ব্যক্তিত্ব। তাঁর ভাবনার স্বচ্ছতা প্রতিটি সংঘ স্বেচ্ছাসেবকের জীবনে দিক নির্দেশ হয়ে ওঠেছে। সমাজের প্রতি একাত্মতা ও ভালোবাসার মূল্যবোধ শক্তিশালী হয়েছে। সেই কারণে সংঘ যখন নিষিদ্ধ হয়, যখন ষড়যন্ত্র এবং ভুয়ো মামলার সম্মুখীন হয়, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের হৃদয়ে তিক্ততাকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। কারণ, তারা জানে যে সংঘ সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন নয়। সমাজ আমাদের সকলকে নিয়েই তৈরি। এর মধ্যে যেটা ভালো, সেটা আমাদের, যা কম ভালো সেটাও আমাদের। 

বন্ধুগণ,

আরও একটি কারণ সংঘের মধ্যে তিক্ততা শিকড় গাড়তে না পারার সেটা হল গণতন্ত্র এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি প্রত্যেক স্বেচ্ছাসেবকের অদম্য আস্থা। যখন দেশে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছিল, তখন এই বিশ্বাসই প্রত্যেক স্বেচ্ছাসেবককে শক্তি যুগিয়েছিল, সেটাই তাদের সংগ্রামে সক্ষম করে তুলেছিল। এই দুটি মূল্যবোধ সমাজের সঙ্গে একাত্মতা এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে আস্থা, সংঘের স্বেচ্ছাসেবকদের প্রতিটি সঙ্কটে অটল রেখেছিল এবং সমাজের প্রতি সংবেদনশীল করেছিল। সেই কারণে সংঘ আজ বড় বট গাছের মতো শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সমাজ থেকে অগনিত আক্রমণ সহ্য করে দেশ এবং সমাজের সেবায় নিয়ত নিয়োজিত হয়ে। এইমাত্র আমাদের এক স্বেচ্ছাসেবক এই সুন্দর পরিবেশনটি করল: শূন্য থেকে ১০০ হও, অঙ্কের মনোভাব ভারতীর জয় বিজয় হোক, হৃদয়ে প্রেরণা নাও, আমরা সাধনা করি, মাতৃভূমির আরাধনা করি। এর শিক্ষা ছিল আমরা আমাদের দেশকে ভগবান মনে করেছি, আমরা আমাদের শরীরকে প্রদীপে পরিবর্তন করে সেবায় জ্বালানোর শিক্ষা পেয়েছি। প্রকৃতই এটি অতুলনীয়। 

বন্ধুগণ,

শুরু থেকে সংঘ দেশপ্রেম এবং সেবার সমার্থক। যখন দেশভাগের দুঃখজনক ঘটনা লক্ষ লক্ষ পরিবারকে গৃহহীন করে তুলেছিল, স্বেচ্ছাসেবকরা উদ্বাস্তুদের সেবা করেছিলেন। তাঁদের সীমিত শক্তি নিয়ে সংঘ স্বেচ্ছাসেবকরা প্রথম সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। এটা শুধুই একটি ত্রাণ কাজ ছিল না। দেশের আত্মাকে শক্তি যোগানোর এক প্রয়াস ছিল। 

বন্ধুগণ,

১৯৫৬ সালে, এক মারাত্মক ভূমিকম্প হয় গুজরাটের কচ্ছের আঞ্জারে। বিপর্যয় হয় প্রবল। চারিদিকে ধ্বংসের চিত্র। এমনকি, সেই সময়েও সংঘের স্বেচ্ছাসেবকরা ত্রাণ ও উদ্ধার কাজে লিপ্ত ছিলেন। সেই সময়ে, প্রণম্য গুরুজী গুজরাটের বর্ষীয়ান প্রচারক, উকিল সাহেবকে একটি চিঠি লিখেছিলেন, যিনি সেখানে কাজ সামলাচ্ছিলেন। তিনি লিখেছিলেন: "অন্যের দুঃখকষ্ট দূর করতে নিঃস্বার্থভাবে যিনি নিজে কষ্ট ভোগ করেন, সেটাই হল এক মহৎ হৃদয়ের পরিচয়।"

বন্ধুগণ,

অন্যের দুঃখ দূর করতে নিজে কষ্টভোগ করাই প্রত্যেক স্বেচ্ছাসেবকের প্রকৃত পরিচয়। ১৯৬২ সালের যুদ্ধের দিনগুলি স্মরণ করুন। সংঘের স্বেচ্ছাসেবকরা সেনাবাহিনীকে সমর্থন করার জন্য, তাদের মনোবল বাড়ানোর জন্য, সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিতে সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য দিনরাত কাজ করেছিলেন। ১৯৭১ সালে, যখন লক্ষ লক্ষ শরণার্থী পূর্ব পাকিস্তান থেকে ভারতে এসেছিলেন, তখন তাদের কোনও ঘর ছিল না, কোনও সম্পদ ছিল না। সেই কঠিন সময়ে, সংঘের স্বেচ্ছাসেবকরা তাদের জন্য খাবার সংগ্রহ করেছিলেন, তাদের আশ্রয় দিয়েছিলেন, স্বাস্থ্যসেবা দিয়েছিলেন, তাদের চোখের জল মুছেছিলেন এবং তাদের ব্যথা ভাগ করে নিয়েছিলেন।

বন্ধুগণ,

আমরা এটা ভালো করেই জানি যে ১৯৮৪ সালে শিখদের গণহত্যার সময়ে বহু শিখ পরিবার সংঘ স্বেচ্ছাসেবকদের বাড়িতে আশ্রয় পেয়েছিলেন। এটা সবসময় স্বেচ্ছাসেবকদের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি।

বন্ধুগণ,

একবার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডঃ এ.পি.জে. আব্দুল কালাম চিত্রকূটে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি নানাজি দেশমুখজি-র আশ্রমে তাঁর কাজ দেখেছিলেন। সেখানে সেবার কাজকর্ম দেখে ডঃ কালাম অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। একইরকমভাবে, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী যখন নাগপুর গেছিলেন, তিনি সংঘের সারল্য এবং নিয়মশৃঙ্খলা দেখে গভীরভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন।

বন্ধুগণ,

এমনকি আজও, আপনারা দেখতে পাচ্ছেন পাঞ্জাবের বন্যায় বা হিমাচল ও উত্তরাখণ্ডের বিপর্যয়, কেরলের ওয়াইনাডের দুঃখজনক ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবকরাই সর্বপ্রথম সেখানে সাহায্য নিয়ে পৌঁছেছেন। কোভিডের সময়ে সারা বিশ্ব সঙ্ঘের সাহস এবং সেবার মনোভাব প্রত্যক্ষ করেছিল।

বন্ধুগণ,

১০০ বছরের এই যাত্রায় সংঘের অন্যতম প্রধান কাজ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মধ্যে আত্মসচেতনতা এবং আত্মসম্মান বৃদ্ধি। এর জন্য, সংঘ এমন সব জায়গায় কাজ করেছে, যা অত্যন্ত দুর্গম, যেখানে পৌঁছনো অত্যন্ত দুরূহ। আমাদের দেশে প্রায় ১০ কোটি জনজাতি ভাই ও বোনেরা আছেন এবং সংঘ নিয়ত তাদের কল্যাণে কাজ করে চলেছে। দীর্ঘ সময় ধরে পূর্বেকার সরকারগুলি তাদের অগ্রাধিকার দেয়নি, কিন্তু সংঘ তাদের সংস্কৃতি, তাদের উৎসব, তাদের অনুষ্ঠান, তাদের ভাষা এবং তাদের ঐতিহ্যকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। সেবা ভারতী, বিদ্যা ভারতী, একল বিদ্যালয় এবং বনবাসী কল্যাণ আশ্রমের মতো সংগঠনগুলি জনজাতি সম্প্রদায়ের ক্ষমতায়নের স্তম্ভ হয়ে উঠেছে। আজ আমাদের জনজাতি ভাই ও বোনদের মধ্যে যে আত্মবিশ্বাস জেগে উঠেছে তা তাদের জীবনকে বদলে দিচ্ছে।

বন্ধুগণ,

দশকের পর দশক ধরে সংঘ জনজাতি ঐতিহ্য, আচার এবং মূল্যবোধকে সংরক্ষণ এবং লালনে নিবেদিত। এই প্রসঙ্গে তাঁরা তাঁদের কর্তব্য পালন করেছে এবং তাঁদের নিষ্ঠা ভারতের সাংস্কৃতিক পরিচয় রক্ষায় বড়সড় ভূমিকা নিয়েছে। আমাদের জনজাতি ভাই ও বোনেদের জীবন সহজ করে তুলতে দেশের প্রতিটি কোণে নিরলসভাবে কাজ করে চলা সংঘের অগণিত স্বেচ্ছাসেবকের আমি প্রশংসা করি। 

বন্ধুগণ,

শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে যে অশুভ শক্তি সমাজে প্রোথিত হয়েছে, হামবড়াই এবং হীনম্মন্যতার মনোভাব, কুসংস্কার এবং অস্পৃশ্যতার জঞ্জাল, হিন্দু সমাজের জন্য এক বড় সমস্যা হয়ে উঠেছে। এটি একটি গুরুতর উদ্বেগের বিষয় যা নিয়ে সংঘ নিরন্তর চেষ্টা করে কাজ করার। মহাত্মা গান্ধী একবার ওয়ার্ধায় সংঘ শিবিরে গিয়েছিলেন। তিনি মুক্তকণ্ঠে প্রশংসা করেছিলেন যা তিনি দেখেছিলেন সংঘে - সাম্য, ভালোবাসা, সম্প্রীতি, সমতা, স্নেহ এবং আপনারা দেখুন ডক্টর সাহেব থেকে আজ পর্যন্ত, সংঘের প্রত্যেক মহান, প্রত্যেক সরসঙ্ঘচালক বৈষম্য এবং অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। পরমপূজ্য গুরুজী নিরন্তর “ন হিন্দু পতিতো ভবেত্” - এই মনোভাবের প্রচার করেছেন, যার অর্থ প্রত্যেক হিন্দু একটি পরিবার। কোনও হিন্দুই নীচ নয়। আমরা পূজ্য বালা সাহেব দেওরসজী-র কথাকে স্মরণ করতে পারি, তিনি প্রায়ই বলতেন, যদি অস্পৃশ্যতা পাপ না হয়, তাহলে পৃথিবীতে কোনও পাপই নেই! সরসঙ্ঘচালক হিসেবে কাজ করার সময়ে পূজ্য রাজ্জু ভাইয়াজী এবং পূজ্য সুদর্শনজীও এই মনোভাবকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। বর্তমান সরসঙ্ঘচালক, শ্রদ্ধেয় মোহন ভাগবতজী, সম্প্রীতির জন্য, সমাজের জন্য একটি স্পষ্ট লক্ষ্য স্থাপন করেছেন এবং সেই বার্তা প্রত্যেক গ্রামে পৌঁছে দিয়েছেন। সেটা কী? তিনি বলেছিলেন, "একটি কূপ, একটি মন্দির এবং একটি শ্মশান – সংঘ এই বার্তা নিয়ে দেশের সর্ব জায়গায় গেছে। কোনও বৈষম্য নয়, কোনও পার্থক্য নয়, কোনও বিরোধ নয় - এটাই সম্প্রীতির ভিত্তি, এটাই অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজের সংকল্প এবং সংঘ একে নতুন শক্তি এবং প্রাণশক্তি দিচ্ছে নিরত।"

বন্ধুগণ,

১০০ বছর আগে যখন সংঘ প্রতিষ্ঠা হয়েছিল, তখনকার সময়ের প্রয়োজন এবং সংগ্রাম আলাদা ছিল। আমাদের নিজেদের মুক্ত করতে হবে বহু শতাব্দীর রাজনৈতিক দাসত্ব থেকে এবং রক্ষা  করতে হবে সাংস্কৃতিক মূল্যবোধগুলিকে। কিন্তু আজ, ১০০ বছর পরে, যখন ভারত উন্নয়নের লক্ষ্যে এগোচ্ছে, যখন ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হতে চলেছে, যখন দেশ এবং তার বিশাল সংখ্যায় দরিদ্র মানুষ দারিদ্র্যকে অতিক্রম করে উঠে আসছে, যখন নতুন নতুন ক্ষেত্রে আমাদের যুবাদের সামনে নতুন সুযোগ আসছে, এবং যখন ভারত বিশ্বে তার কণ্ঠ তুলছে, আন্তর্জাতিক কূটনীতি থেকে জলবায়ু নীতি এই সময়ের সমস্যাগুলি অন্যরকম এবং সংগ্রামগুলোই তাই। অন্য দেশের উপর অর্থনৈতিক নির্ভরতা, আমাদের একতাকে ভাঙার চক্রান্ত, আমাদের জনবিন্যাসকে পরিবর্তন করার চক্রান্ত - প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমি বিনয়ের সঙ্গে জানাই যে আমি সন্তুষ্ট যে আমাদের সরকার দ্রুত এই সমস্যাগুলির মোকাবিলা করছে। একজন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে আমি খুশি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ শুধুমাত্র এই সমস্যাগুলিকে চিহ্নিত করেছে তাই নয়, এই সমস্যাগুলির মোকাবিলায় একটি সুনির্দিষ্ট পথ নির্দেশ তৈরি করেছে। মাননীয় দত্তাত্রেয়জী যা বলেছেন, আমি সেগুলি আমার মতো করে উল্লেখ করতে চাই। 

বন্ধুগণ,

সংঘের পাঁচটি পরিবর্তন, আত্ম-সচেতনতা, সামাজিক সম্প্রীতি, পারিবারিক জ্ঞানার্জন, সামাজিক শিষ্টাচার ও পরিবেশ, এই সংকল্পগুলি দেশের সামনে থাকা সমস্যা অতিক্রম করতে প্রত্যেক স্বেচ্ছাসেবকের কাছে এক মহান অনুপ্রেরণা।

বন্ধুগণ,

আত্ম-উপলব্ধির অর্থ আত্ম-সচেতনতা, আত্ম-উপলব্ধির অর্থ দাসত্ব মনোভাব থেকে মুক্তি এবং নিজের ঐতিহ্যের প্রতি গর্ব, নিজের ভাষার প্রতি গর্ব, আত্ম-উপলব্ধির অর্থ দেশজকরণ, আত্মনির্ভর এবং আমার দেশবাসী তা বোঝে, আত্মনির্ভরতা ঐচ্ছিক নয়, একটি প্রয়োজনীয়তা। আমাদের স্বদেশীর মূল মন্ত্রকে সামাজিক অঙ্গীকারে পরিণত করতেই হবে। 'ভোকাল ফর লোকাল' অভিযানের সাফল্যের জন্য, 'ভোকাল ফর লোকাল'কে করতে হবে আমাদের নিরন্তর আদর্শ এবং প্রয়াস, বিকল্প শক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে। 

বন্ধুগণ,

সংঘ সর্বদা সামাজিক সম্প্রীতিকে গুরুত্ব দিয়েছে। সামাজিক সম্প্রীতির অর্থ অনগ্রসর শ্রেণীকে অগ্রাধিকার দিয়ে এবং জাতীয় ঐক্যের প্রসার ঘটিয়ে সামাজিক ন্যায় স্থাপন করা। আজ দেশ এমন কয়েকটি সংকটের মুখোমুখি হয়েছে যা সরাসরি আমাদের একতা, সংস্কৃতি এবং নিরাপত্তায় আঘাত হানছে। বিচ্ছিন্নতাবাদী ভাবনা, আঞ্চলিকতাবাদ, অনেক সময়ে জাতি নিয়ে বিরোধ, কখনও ভাষা নিয়ে, কখনও বিভেদকামী মনোভাব প্ররোচিত করে বহিঃশক্তি, এই অগণিত সমস্যা আমাদের সামনে। ভারতের মূল মন্ত্র বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য। যদি এই ফর্মুলা ভেঙে যায়, ভারতের শক্তিও দুর্বল হয়ে পড়বে। এবং সেই জন্য আমাদের নিরন্তর এই ফর্মুলা নিয়ে বাঁচতে হবে এবং তাকে শক্তিশালী করতে হবে।

বন্ধুগণ,

বর্তমানে, সামাজিক সম্প্রীতি জনবিন্যাস পরিবর্তন করার চক্রান্তের মতো বড় সমস্যার মুখোমুখি। এমনকি অনুপ্রবেশকারীদের কাছ থেকেও। আমাদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এবং ভবিষ্যৎ শান্তি নিয়েও এটি একটি প্রশ্ন। এবং সেই কারণে আমি লাল কেল্লা থেকে ডেমোগ্রাফি মিশনের ঘোষণা করেছিলাম। আমাদের এই সমস্যার বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে এবং সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে।

বন্ধুগণ,

পারিবারকে আলোকিত করা সময়ের দাবি, যা সমাজ বিজ্ঞানীদের ভাষা, যা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ব্যবহৃত হয়েছে। তাঁরা বলেন যে, হাজার হাজার বছর ধরে ভারতের জীবনী শক্তির পিছনে অন্যতম কারণ পারিবারিক প্রতিষ্ঠান। যদি ভারতীয় সমাজব্যবস্থায়, একটি শক্তিশালী একক থাকে সেটা হল শক্তিশালী পরিবার ব্যবস্থা যা বিকশিত হয়েছে ভারতীয় সমাজে। পারিবারিক আলোকনের অর্থ পারিবারিক সংস্কৃতি লালন করা যা ভারতীয় সভ্যতার ভিত্তি, যা ভারতীয় সংস্কৃতি দ্বারা অনুপ্রাণিত এবং যা আমাদের শিকড়ের সঙ্গে সংযুক্ত। পারিবারিক মূল্যবোধ, বড়দের শ্রদ্ধা, মহিলাদের প্রতি শ্রদ্ধা, কম বয়সীদের মধ্যে মূল্যবোধ জাগিয়ে তোলা, পরিবারের প্রতি দায়িত্ব পালন করা, তাদের বোঝা এবং এই লক্ষ্যে সমাজে ও পরিবারে সচেতনতা গড়ে তোলা এই উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয়। 

বন্ধুগণ,

সামাজিক শিষ্টাচার বিভিন্ন আমলে প্রতিটি দেশকে অগ্রগতির পথে নিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সামাজিক শিষ্টাচারের অর্থ কর্তব্যজ্ঞান, সামাজিক দায়িত্বপালনের বোধ থাকতে হবে প্রতিটি নাগরিকের মধ্যে, পরিচ্ছন্নতার প্রসার ঘটাতে হবে, দেশের সম্পদের জন্য শ্রদ্ধা থাকবে, আইনশৃঙ্খলার প্রতি শ্রদ্ধা থাকবে, আমাদের এই নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের সংবিধানের মূল ভাবনাটি হল নাগরিকরা তাদের কর্তব্য পালন করবে। আমাদের সংবিধানের সেই মনোভাবকে জোরালো করতে হবে নিরন্তর। 

বন্ধুগণ,

বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য জলবায়ু সংরক্ষণ অত্যন্ত জরুরি। এটা এমন একটি বিষয় যা গোটা মানবসমাজের সঙ্গে যুক্ত। আমাদের অর্থনীতির পাশাপাশি বাস্তুতন্ত্রের দিকেও নজর দিতে হবে। জল সংরক্ষণ, সবুজ শক্তি, পরিচ্ছন্ন শক্তি, এইসব অভিযান একইলক্ষ্যে। 

বন্ধুগণ,

সংঘের এই পাঁচটি পরিবর্তন হচ্ছে একটি মাধ্যম, যা দেশের শক্তি বাড়াবে, যা বিভিন্ন সমস্যা মোকাবিলায় দেশকে সাহায্য করবে। ২০৪৭-এর মধ্যে উন্নত ভারত গঠনে এটাই ভিত্তি। 

বন্ধুগণ,

২০৪৭-এর ভারত গৌরবময় ভারত হয়ে উঠুক, জ্ঞান ও বিজ্ঞান, সেবা এবং সম্প্রীতির নির্যাস থেকে উঠে এসে। এটাই সংঘের দৃষ্টিভঙ্গি; এটাই সব স্বেচ্ছাসেবকের অনুশীলন এবং এটাই আমাদের সংকল্প।

বন্ধুগণ,

আমাদের সবসময় মনে রাখা উচিত যে, সংঘ দেশের প্রতি অদম্য আস্থা থেকে উঠে এসেছে। সংঘ পরিচালিত হয় দেশে সেবার গভীর ভাবনা থেকে। সংঘ ত্যাগ ও তপস্যার আগুনে পরিশুদ্ধ। সংঘ ফুটে উঠেছে সংস্কৃতি ও ভক্তির সঙ্গমের মধ্য দিয়ে। সংঘ দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছে, যাঁরা মনে করে জীবনের পরম ধর্ম জাতীয়তাবাদ। সংঘ সংযুক্ত মা ভারতীর সেবার মহান স্বপ্নের সঙ্গে। 

বন্ধুগণ,

সংঘের আদর্শ, সংস্কৃতির মূল যেন গভীর এবং শক্তিশালী হয়। সংঘের প্রয়াস সমাজে আত্মবিশ্বাস এবং আত্মসম্মানের বোধ প্রোথিত করা। সংঘের লক্ষ্য প্রত্যেক হৃদয়ে জনসেবার শিখা প্রজ্জ্বলন। সংঘের উদ্দেশ্য ভারতীয় সমাজ যেন হয়ে ওঠে সামাজিক ন্যায়ের প্রতীক। সংঘের লক্ষ্য ভারতের কণ্ঠস্বরকে সমাজিক ন্যায়ের প্রতীক হিসেবে গড়ে তোলা। সংঘের লক্ষ্য বিশ্ব মঞ্চে ভারতের কণ্ঠস্বরকে আরও কার্যকর করে তোলা। সংঘ একনিষ্ঠ ভারতের ভবিষ্যৎকে সুরক্ষিত এবং উজ্জ্বল করতে। আমি এই ঐতিহাসিক ক্ষণ উপলক্ষে আমি আরও একবার আপনাদের সকলকে অভিনন্দন জানাই। আগামীকাল বিজয়াদশমীর উৎসব। বিজয়াদশমী আমাদের সকলের জীবনে একটি বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। এর পাশাপাশি, এই উপলক্ষে আপনাদের সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমি আমার বক্তব্য শেষ করছি। অনেক ধন্যবাদ!

মূল ভাষণটি দেওয়া হয়েছিল হিন্দিতে। এটি সেই ভাষণের বাংলা রূপান্তর।

 

SSS/AP/SKD


(Release ID: 2175471) Visitor Counter : 3