স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও সমবায় মন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ আজ ছত্তিশগড়ের জগদলপুরে বস্তার দশহরা মহোৎসবে অংশগ্রহণ করলেন
Posted On:
04 OCT 2025 6:28PM by PIB Kolkata
নতুন দিল্লি, ৪ অক্টোবর ২০২৫
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও সমবায় মন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ আজ ছত্তিশগড়ের জগদলপুরে বস্তার দশহরা মহোৎসবে অংশগ্রহণ করেছেন। তার আগে শ্রী অমিত শাহ বিখ্যাত দান্তেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করেছেন এবং পুজো দিয়েছেন। দশহরা মহোৎসব উপলক্ষে ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিষ্ণু দেও সাই এবং উপ-মুখ্যমন্ত্রী ডঃ বিজয় শর্মা-সহ বহু গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র এবং সমবায় মন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ তাঁর ভাষণে বলেন, ৭৫ দিন ধরে এই অনুপম বস্তার দশেরা মেলা চলবে। এটি বিশ্বের সর্ব বৃহৎ সাংস্কৃতিক মহোৎসব, যেখানে বস্তারের জনজাতি সমাজ এবং ছত্তিশগড় তথা ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের জনজাতি গোষ্ঠীর মানুষেরা এখানে অংশগ্রহণ করেন। শ্রী শাহ বলেন যে, আজ তিনি মা দন্তেশ্বরী দর্শন এবং পুজো দেওয়ার সময় প্রার্থনা করেছেন, যাতে মা আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তাবাহিনীগুলিকে শক্তি যোগান, যাতে তাঁরা ২০২৬ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে বস্তার এলাকাকে লাল আতঙ্ক থেকে মুক্ত করতে পারে। শ্রী শাহ বলেন, দিল্লিতে কিছু মানুষ অনেক বছর ধরে এই ভ্রম প্রচারের চেষ্টা করছে যে, নকশালবাদের জন্ম হয়েছে উন্নয়নের জন্য লড়াই-এ। কিন্তু প্রকৃত সত্য এটাই যে বস্তার উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত থাকার মূল কারণ হল নকশালবাদ। তিনি আরও বলেন যে, আজ দেশের প্রত্যেক গ্রামের বিদ্যুৎ সরবরাহ, পানীয় জল সরবরাহ, সড়ক পথ, প্রত্যেক বাড়িতে শৌচালয়, ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত স্বাস্থ্য বীমা এবং বিনামূল্যে ৫ কেজি খাদ্য শস্যের পাশাপাশি, ৩,১০০ টাকায় প্রতি কুইন্টাল হিসেবে চাল কেনার ব্যবস্থা চালু হয়েছে। কিন্তু বস্তার এই উন্নয়নের ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পক্ষ থেকে এই আশ্বাস দিতে চান যে, ২০২৬ সালের ৩১ মার্চের পর নকশালবাদীরা আর বস্তারের উন্নয়ন এবং বস্তারের জনগণের অধিকারগুলি থেকে বঞ্চিত রাখতে পারবে না। শ্রী শাহ বলেন, বস্তার এলাকার যে ছেলে-মেয়েরা নকশালবাদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে তাঁরা এই স্থানীয় গ্রামগুলির সন্তান-সন্ততি। সেজন্য শ্রী শাহ বস্তারের জনগণের প্রতি আবেদন রাখেন যে তাঁরা যেন এই ছেলে-মেয়েদের অস্ত্র ত্যাগ করে মূলধারায় ফিরে আসার কথা বোঝান, যাতে তাঁরা বস্তারের উন্নয়নের অংশীদার হয়ে ওঠেন।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ছত্তিশগড় প্রশাসন দেশের সবচেয়ে উন্নত আত্মসমর্পণ নীতি রচনা করেছে। বিগত এক মাসে ৫০০-রও বেশি যুবক-যুবতী আত্মসমর্পণ করেছেন। তিনি অন্য নকশালবাদীদের কাছে আবেদন রাখেন, তাঁরাও যেন দ্রুত আত্মসমর্পণ করে দেন। শ্রী শাহ বলেন, যে গ্রামে নকশালবাদ সম্পূর্ণভাবে সমাপ্ত হবে, সেই গ্রামের উন্নয়নের জন্য ছত্তিশগড় রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১ কোটি টাকা করে দেওয়া হবে। শ্রী শাহ বলেন যে, নকশালবাদে কারও কোনও উপকার হয়নি, আর এখন এই সমস্যা অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে।
শ্রী শাহ আর-ও বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার এবং ছত্তিশগড় সরকার বস্তার-সহ সকল নকশাল প্রভাবিত এলাকার উন্নয়নে পূর্ণ রূপে সমর্পিত, আর এর জন্য বেশকিছু আকর্ষণীয় নীতি রচনা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী গত ১০ বছরে ছত্তিশগড়ের উন্নয়নের জন্য প্রায় ৪ লক্ষ ৪০ হাজার কোটি টাকা প্রদান করেছেন। ছত্তিশগড়ের উন্নয়ন ‘দিনে দ্বিগুণ, রাতে চার গুণ’ গতিতে এগিয়ে চলেছে। তিনি বলেন যে, বিভিন্ন শিল্পোদ্যোগ প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে, আর স্বাস্থ্য সংস্থানগুলি উন্নত হচ্ছে। পাশাপাশি, আমাদের ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগগুলিকেও উৎসাহ যোগানো হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা অত্যন্ত আকর্ষণীয় আত্মসমর্পণ নীতি রচনা করেছি। তিনি নকশালবাদীদের প্রতি আবেদন রাখেন যাতে তাঁরা অস্ত্র সমর্পণ করেন। তিনি আরও বলেন, এর পরও যদি অস্ত্রের মাধ্যমে বস্তারের শান্তি নষ্ট করার চেষ্টা করা হয়, তাহলে আমাদের সশস্ত্র আধাসামরিক বাহিনী, সিআরপিএফ এবং ছত্তিশগড় পুলিশ মিলে এক-ই সঙ্গে কড়া প্রত্যাঘাত হানবে। তিনি আরও বলেন, দিন ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। ২০২৬ সালের ৩১ মার্চ, যখন এই দেশ থেকে সম্পূর্ণভাবে নকশালবাদকে উপড়ে ফেলা হবে।
শ্রী শাহ তাঁর বক্তব্যে জানান, এবার বস্তার অলিম্পিকে সারা দেশের বিভিন্ন জনজাতি গোষ্ঠীর মানুষেরা অংশগ্রহণ করবেন। বস্তারের পান্ডুম উৎসব, খাদ্যাভ্যাস, পোশাক, কলা-সংস্কৃতি এবং বাদ্যযন্ত্র শুধু বস্তার নয়, গোটা বিশ্বের একটি বড় আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী-জীর এটাই সংকল্প যে আমাদের সংস্কৃতি, ভাষা বৈচিত্র্য, খাদ্যাভ্যাস, পোশাক এবং বাদ্যযন্ত্র শুধু ভারত নয়, অনেক শতাব্দি ধরে যাতে গোটা বিশ্বে সংরক্ষিত থাকে সেই ব্যবস্থা করবেন। এই সংকল্প বাস্তবায়নের জন্য ছত্তিশগড় সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন যে, বস্তারে ১৮৭৪ সাল থেকে আজ পর্যন্ত মুরিয়া দরবারে সক্রিয় অংশগ্রহণ, বিচার ব্যবস্থা, জনজাতী সংস্কৃতিকে সংরক্ষণের ভাবনা, আর ‘জনসংবাদ’-এর ঐতিহাসিক পরম্পরা কোন আন্তর্জাতিক ঐতিহ্য থেকে কম নয়। তিনি বলেন যে, এই মুরিয়া দরবার গোটা দেশের জন্য প্রেরণার উৎস এবং এটিএকটি জানার বিষয়।
শ্রী শাহ স্বদেশী জাগরণ মঞ্চ দ্বারা আয়োজিত স্বদেশী মেলার কথা উল্লেখ করে বলেন যে, প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী-জি দীর্ঘ সময় ধরে ‘স্বদেশী’-র ওপর জোর দিচ্ছেন। স্বদেশী জাগরণ মঞ্চ অনেক বছর ধরে স্বদেশীকে একটি গণআন্দোলনে পরিণত করেছে। এখন, মোদী জি প্রত্যেক দেশবাসীর কাছে আবেদন রেখেছেন যাতে প্রত্যেক পরিবার এই সংকল্প নেয় যে তাঁরা শুধুই নিজের দেশে উৎপাদিত পণ্য ব্যবহার করবে। তিনি বলেন যে, প্রত্যেক ব্যবসায়ীকে এই সংকল্প নিয়ে হবে যাতে তাঁর দোকানে বা শপিং মলে বিদেশী পণ্য না থাকে। শ্রী শাহ বলেন যে, যদি ১৪০ কোটি জনসংখ্যার মানুষ এই স্বদেশী সংকল্পকে আপন করে নেয়, তাহলে ভারতকে বিশ্বের সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে গড়ে উঠতে কেউ আটকাতে পারবে না।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আর-ও বলেন, মোদী-জী সম্প্রতি গোটা দেশের মা-বোনদের ৩৯৫টি পণ্যের ওপর জিএসটি-তে বড় রকমের ছাড় দিয়ে অনেক সাশ্রয়ের সুযোগ করে দিয়েছেন। প্রায় সমস্ত খাদ্য এবং পানীয়কে করমুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। শুধু দৈনন্দিন ব্যবহারের পণ্যগুলির ওপর মাত্র ৫ শতাংশ কর রাখা হয়েছে। তিনি বলেন যে, দেশের এত বড় কর ছাড় আগে কখনও হয়নি। যতটা মোদীজি করেছেন। এর পাশাপাশি, যদি আমরা স্বদেশী পণ্য কেনার অভ্যাস তৈরি করি তাহলে আমাদের দেশের অর্থনীতি অভূতপূর্ব গতি পাবে। শ্রী শাহ বলেন যে, বস্তার দশহরা মহোৎসবে ৩০০টিরও স্বদেশী কোম্পানি অংশগ্রহণ করছে। তিনি আরও বলেন, ‘স্বদেশী ওয়াকথন’ স্বদেশী ভাবনাকে নতুন পরিচয় দেওয়ার একটি প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। আজ সারা দেশে আয়োজিত স্বদেশী মেলার মাধ্যমে এই স্বদেশী অভিযানে আরও গতি সঞ্চার হচ্ছে।
শ্রী শাহ বলেন যে, শ্রাবণের অমাবস্যা থেকে আশ্বীনের শুক্লা ত্রয়োদশী পর্যন্ত ৭৫ দিন ধরে চলতে থাকা এই দশহরা মেলা আমাদের সকলের জন্য গর্ব, আত্মপরিচয় এবং অস্মিতার বিষয়। তিনি বলেন, চতুর্দশ শতাব্দী থেকে শুরু হওয়া রথযাত্রা এই গোটা এলাকার সাংস্কৃতিক জাগরণের উৎস ছিল। মা দন্তেশ্বরী রথযাত্রায় ৬৬টি জনজাতি এবং বেশকিছু অজনজাতি গোষ্ঠী অংশগ্রহণ করে। শ্রী শাহ বলেন যে, বস্তার দশহরা এবং মুরিয়া দরবার জনজাতিদের ঐক্যবদ্ধ করার কাজ করে এবং গোটা বস্তারকে একসূত্রে গেঁথে নেয়।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন যে, মোদী সরকার জনজাতিদের সম্মানে অনেক প্রকল্প শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী-জী প্রথমবার দেশের সর্বোচ্চ পদে জনজাতি সম্প্রদায়ের কন্যা শ্রীমতী দ্রৌপদী মুর্মুকে রাষ্ট্রপতি করে একটি গৌরবপূর্ণ কাজ করেছেন। তিনি বলেন যে, যখন মহামান্যা দ্রৌপদী মুর্মু- জী বিশ্বের অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে মিলিত হন, তখন শুধু জনজাতি সমাজ নয়, আমাদের সকলের হৃদয় গর্বে ভরে ওঠে। গণতন্ত্রের সর্বোচ্চ পদে ওড়িশার একটি গরীব পরিবারের কন্যার মহামান্য রাষ্ট্রপতি রূপে আসীন হওয়া আমাদের সকলের জন্য গৌরবের বিষয়। শ্রী শাহ বলেন যে, মোদী-জী ভগবান বিরসা মুন্ডার ১৫০-তম জন্মজয়ন্তী বর্ষকে ‘জনজাতীয় গৌরব বর্ষ’ রূপে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁর জন্মদিনটিকে আদিবাসী গৌরব দিবস রূপে পালন করা শুরু করেছেন। বস্তার এলাকার সাতটি জেলায় নকশাল ছেড়ে আত্মসমর্পণকারী ব্যক্তিদের এবং নকশালী হিংসায় নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের জন্য ১৫,০০০-এরও বেশি প্রধানমন্ত্রী আবাসন যোজনার অন্তর্গত গৃহ নির্মাণ প্রকল্পও প্রধানমন্ত্রী মঞ্জুর করেছেন।
শ্রী শাহ বলেন যে, নারায়ণপুর জেলার পুন্ডিরাম মন্ডাভি এবং হেমচন্দ্র মাঝি, আর কাঙ্কের জেলার অজয় কুমার মন্ডাভিকে পদ্ম পুরষ্কারে সম্মানিত করা হয়েছে। তিনি বলেন যে, বস্তার দশহরা মহোৎসব উপলক্ষে আজ ‘মহতারী বন্দন যোজনা’-এর ২০-তম কিস্তি রূপে ৭০ লক্ষ ছত্তিশগড়ী মায়েদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৬০৭ কোটি টাকা প্রত্যক্ষ নগদ হস্তান্তর করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী গ্রামীণ বাস যোজনার শুভারম্ভ করা হয়েছে। এই প্রকল্প বস্তার এবং সুরগুজা বিভাগে চালু করা হয়েছে এবং এর মাধ্যমে ২৫০টি গ্রামে বাস পরিষেবা চালু করা হয়েছে।
****
SSS/SB/AS
(Release ID: 2175178)
Visitor Counter : 4