প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
রাষ্ট্রীয় ঐক্য দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী-র ভাষণ - কেভাডিয়া, গুজরাত
Posted On:
31 OCT 2024 3:25PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ৩১ অক্টোবর ২০২৪
ভারতমাতার জয়!
ভারতমাতার জয়!
ভারতমাতার জয়!
সর্দার সাহেবের অনুপ্রেরণামূলক বাণী, ঐক্য মূর্তির সামনে এই মহা আয়োজন, একতা নগরের অপূর্ব দৃশ্য, এখানে উপস্থাপিত মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা…মিনি ভারতের এক অনন্য ঝলক। সবকিছুই অসাধারণ, অনুপ্রেরণামূলক। ঠিক ১৫ আগস্ট ও ২৬ জানুয়ারির মতন, ৩১ অক্টোবরের এই অনুষ্ঠানও সমগ্র দেশকে ভরে তোলে নব উদ্যমে। জাতীয় ঐক্য দিবসে আমি দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।
বন্ধুগণ,
এবারের জাতীয় ঐক্য দিবস এক বিশেষ সমাপতন এনেছে। একদিকে আমরা উদযাপন করছি ঐক্যের উৎসব, অন্যদিকে সমগ্র দেশে দীপাবলির পবিত্র উপলক্ষ। দীপাবলি আলোয় দেশকে একসূত্রে গেঁথে তোলে। আজ এই উৎসব ভারতকে বিশ্বের সঙ্গেও যুক্ত করছে। বহু দেশে দীপাবলি এখন জাতীয় উৎসব হিসেবে পালিত হয়। দেশে-বিদেশে বসবাসরত ভারতীয় ও ভারতের সকল শুভানুধ্যায়ীকে আমি শুভ দীপাবলির শুভেচ্ছা জানাই।
বন্ধুগণ,
জাতীয় ঐক্য দিবসের এ বছরের আরেকটি তাৎপর্য আছে। আজ থেকে শুরু হচ্ছে সর্দার প্যাটেলের জন্মের ১৫০তম বর্ষপূর্তি । আগামী দুই বছর ধরে দেশ তাঁর জন্মশতবর্ষ উদযাপন করবে। এ দেশের মানুষের পক্ষ থেকে এটি তাঁর অসাধারণ অবদানের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য। আগামী দুই বছরের এই অনুষ্ঠান আমাদের ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত-এর সংকল্পকে আরও দৃঢ় করবে। স্বাধীনতার পর বিশ্বে অনেকে ভেবেছিল ভারত ভেঙে যাবে। শত শত দেশীয় রাজ্যকে একসূত্রে বাঁধা অসম্ভব—এই ভবিষ্যদ্বাণীও করা হয়েছিল। কিন্তু সর্দার সাহেব তা সম্ভব প্রমাণ করেছিলেন। কারণ, তিনি কাজে ছিলেন বাস্তববাদী, সংকল্পে সত্যনিষ্ঠ, কর্মে মানবতাবাদী ও উদ্দেশ্যে ছিলেন খাঁটি জাতীয়তাবাদী।
বন্ধুগণ,
আজ আমরা ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ-এর থেকেও অনুপ্রেরণা পাই। তিনি সকলকে একত্রিত করেছিলেন আক্রমণকারীদের উৎখাত করতে। মহারাষ্ট্রের রায়গড় দুর্গ আজও সেই ইতিহাস বহন করে। রায়গড় দুর্গ থেকে তিনি বৈচিত্র্যময় চিন্তাধারাকে এক লক্ষ্যেই সংযুক্ত করেছিলেন। আজ একতা নগরে রায়গড় দুর্গের প্রতিরূপ আমাদের সামনে অনুপ্রেরণার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। রায়গড় দুর্গ ন্যায়, দেশপ্রেম ও জাতিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার মর্মবাণী বহন করেছে। এই প্রেক্ষাপটেই আমরা আজ একত্রিত হয়েছি একটি ‘বিকশিত ভারত’-এর সংকল্প নিয়ে।
বন্ধুগণ,
গত দশ বছর ভারতের ঐক্য ও অখণ্ডতার জন্য অভূতপূর্ব সাফল্যের সাক্ষী। সরকারের প্রতিটি পদক্ষেপে আজ জাতীয় ঐক্যের প্রতিফলন ঘটছে। একতা নগরই তার প্রমাণ। এখানে রয়েছে ঐক্য মূর্তি। শুধু নামেই নয়, এর নির্মাণেও রয়েছে ঐক্যের ছাপ। দেশের কৃষকদের ব্যবহৃত লৌহ সরঞ্জাম দিয়ে এই মূর্তি নির্মাণ করা হয়েছে, কারণ সর্দার সাহেব ছিলেন কৃষকপুত্র, ছিলেন লৌহমানব। দেশের প্রতিটি প্রান্তের মাটি আনা হয়েছিল এখানে। এর নির্মাণই ঐক্যের বাণী বহন করে। এখানে রয়েছে ‘একতা নার্সারি’, ‘বিশ্ব অরণ্য’—যেখানে বিশ্বের নানা মহাদেশের গাছপালা স্থান পেয়েছে। রয়েছে ‘শিশু পুষ্টি উদ্যান, যেখানে দেশের নানা প্রান্তের স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস প্রদর্শিত। আছে ‘আরোগ্য বন, যেখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের আয়ুর্বেদিক গাছপালা একত্রিত হয়েছে। এছাড়া রয়েছে ‘একতা মল, যেখানে দেশের নানা প্রান্তের হস্তশিল্প এক ছাদের নিচে পাওয়া যায়।
বন্ধুগণ,
‘একতা মল’শুধু এখানে নয়, প্রতিটি রাজ্যের রাজধানীতে এরকম মল গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। প্রতি বছরের ‘ঐক্য দৌড়’ও এই বার্তাকে আরও শক্তিশালী করে।
বন্ধুগণ,
প্রকৃত ভারতীয় হিসেবে, দেশের ঐক্যের জন্য প্রতিটি প্রচেষ্টা আমাদের উদযাপন করতে হবে আনন্দ-উদ্দীপনায়। উদ্যম, আত্মবিশ্বাস, নতুন আশা ও সংকল্পই উৎসবের আসল অর্থ। যখন আমরা ভারতের ভাষাগুলিকে গুরুত্ব দিই, তখনও আমরা ঐক্যের বন্ধনকে দৃঢ় করে তুলি। নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে ভারতীয় ভাষায় শিক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি একটি সিদ্ধান্ত গোটা দেশকে গর্বিত করেছে। জানেন সেটা কি? সরকার সম্প্রতি মারাঠি, বাংলা, অসমিয়া, পালি ও প্রাকৃতকে শাস্ত্রীয় ভাষার মর্যাদা দিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত দেশজুড়ে সাদরে গ্রহণ করা হয়েছে। ভাষাকে মাতৃভাষা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া মানে আমাদের মা, মাতৃভূমি ও ভারত মাতাকে সম্মান জানানো। ভাষার মতোই দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা ঐক্যকে আরও দৃঢ় করছে। রেল, সড়ক, হাইওয়ে ও ইন্টারনেট অবকাঠামো গ্রামকে শহরের সঙ্গে যুক্ত করছে। কাশ্মীর ও উত্তর-পূর্বের রাজধানীগুলি যখন রেলের সঙ্গে যুক্ত হয়, লাক্ষাদ্বীপ ও আন্দামান এবংঞ নিকোবার দ্বীপপুঞ্জ যখন সাগরতলের তারের সাহায্যে হাই-স্পিড ইন্টারনেটে যুক্ত হয়, পাহাড়ের মানুষ যখন মোবাইল নেটওয়ার্কে সংযুক্ত হয়, তখন উন্নয়নের দৌড়ে পিছিয়ে থাকার অনুভূতি দূর হয়। ঐক্যের স্পৃহা আরও দৃঢ় হয়।
বন্ধুগণ,
পূর্বতন সরকারের নীতি ও অভিপ্রায়ের বৈষম্য দেশের ঐক্যকে দুর্বল করেছিল। গত ১০ বছরে সুশাসনের নতুন মডেল প্রতিটি বৈষম্য দূর করেছে। ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’-এর পথে আমরা চলেছি। আজ ‘হর ঘর জল’ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিটি পরিবারে জল পৌঁছাচ্ছে, বৈষম্যহীনভাবে। প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি প্রত্যেক কৃষকের কাছে পৌঁছাচ্ছে, বৈষম্যহীনভাবে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা ঘর দিচ্ছে, বৈষম্যহীনভাবে। ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্প সুবিধা দিচ্ছে, বৈষম্যহীনভাবে। এই পদ্ধতিতে সমাজে বহু বছরের ক্ষোভ দূর হয়েছে। সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা বেড়েছে। এই ‘বিকাশ’ ও ‘বিশ্বাস’-এর ঐক্যই ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর দর্শনকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আমি দৃঢ় বিশ্বাস করি, ঐক্যই আমাদের প্রতিটি প্রকল্প, প্রতিটি নীতি এবং আমাদের সকল ইচ্ছার প্রাণশক্তি। আমি মনে করি, সর্দার সাহেবের আত্মা এই দৃশ্য দেখে ও শুনে আমাদের আশীর্বাদ করছেন।
বন্ধুগণ,
পুজ্য বাপু মহাত্মা গান্ধী বলেছিলেন, “বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখার আমাদের ক্ষমতা বারবার পরীক্ষিত হবে।” গান্ধীজি আরও বলেছিলেন, “আমাদের এই পরীক্ষায় যেকোনো মূল্যে সফল হতে হবে।” গত ১০ বছরে ভারত প্রতিটি প্রচেষ্টায় বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। সরকারের নীতি ও সিদ্ধান্তের মধ্যে ক্রমাগত শক্তিশালী হয়েছে ‘এক ভারত’-এর স্পৃহা। আজ আমরা সকলেই ‘এক দেশ, এক পরিচয়’-এর সাফল্য দেখছি, অর্থাৎ আধার ব্যবস্থা, যা বিশ্বজুড়ে আলোচনার বিষয়। আগে ভারতে ছিল ভিন্ন ভিন্ন কর ব্যবস্থা। আমরা তৈরি করেছি ‘এক দেশ, এক কর’ - জিএসটি। ‘এক দেশ, এক পাওয়ার গ্রিড’-এর মাধ্যমে শক্তি খাতকে শক্তিশালী করেছি। এক সময় কোথাও আলো, কোথাও অন্ধকার থাকত, গ্রিড বিভক্ত ছিল। আমরা সেই বিভাজন দূর করে প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছি। ‘এক দেশ, এক রেশন কার্ড’-এর মাধ্যমে দরিদ্রদের সুবিধা একীভূত করেছি। ‘আয়ুষ্মান ভারত’-এর মাধ্যমে আমরা তৈরি করেছি ‘এক দেশ, এক স্বাস্থ্যবিমা’, যাতে প্রতিটি নাগরিক উপকৃত হচ্ছেন।
বন্ধুগণ,
ঐক্যের এই প্রয়াসে এখন আমরা কাজ করছি ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’-এর পথে। এটি আমাদের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করবে, দেশের সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করবে এবং ‘বিকশিত ভারত’-এর স্বপ্নকে নতুন অগ্রগতির দিকে নিয়ে যাবে। ভারত এগোচ্ছে ‘এক দেশ, এক দেওয়ানি বিধি’-এর দিকেও - অর্থাৎ অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। আমি লালকেল্লা থেকেও এ বিষয়ে বলেছি। এর সারমর্মই হল সামাজিক ঐক্য, যা সর্দার সাহেবের বাণী, এবং এটি বিভিন্ন সমাজগোষ্ঠীর মধ্যে বৈষম্যের অভিযোগ মেটাতে সাহায্য করবে। জাতীয় ঐক্যকে শক্তিশালী করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। ঐক্যবদ্ধ হয়েই দেশ তার প্রতিশ্রুতি পূরণ করবে।
বন্ধুগণ,
আজ সমগ্র দেশ আনন্দিত, কারণ স্বাধীনতার সাত দশক পর ‘এক দেশ, এক সংবিধান’-এর প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়েছে। এটি সর্দার সাহেবের আত্মার প্রতি আমার সবচেয়ে বড় শ্রদ্ধাঞ্জলি। হয়তো অনেক নাগরিক জানেন না, বাবাসাহেব আম্বেদকরের সংবিধান পুরো দেশজুড়ে সাত দশক কার্যকর হয়নি। সংবিধানের নাম জপ করা ব্যক্তিরাই আসলে তাকে অসম্মান করেছেন। কেন? কারণ ৩৭০ অনুচ্ছেদের দেওয়াল জম্মু-কাশ্মীরকে সংবিধান থেকে বঞ্চিত রেখেছিল। আজ সেই ৩৭০ অনুচ্ছেদ চিরতরে সমাধিস্থ। প্রথমবার এই বিধানসভা নির্বাচনে জম্মু-কাশ্মীরে বৈষম্যহীন ভোট হয়েছে। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর প্রথমবার জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ভারতীয় সংবিধানের শপথ নিয়েছেন। এই দৃশ্য সংবিধান প্রণেতাদের আত্মাকে শান্তি দেবে, এটি আমাদের পক্ষ থেকে তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি। আমি একে ভারতের ঐক্যের এক শক্তিশালী মাইলফলক মনে করি। জম্মু-কাশ্মীরের দেশপ্রেমিক জনগণ বিচ্ছিন্নতা ও সন্ত্রাসবাদকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাঁদের ভোট ভারতের সংবিধান ও গণতন্ত্রকে বিজয়ী করেছে, দশকের পর দশক ধরে চলা প্রচারণাকে ধ্বংস করেছে। জাতীয় ঐক্য দিবসে আমি জম্মু-কাশ্মীরের দেশপ্রেমিক মানুষদের প্রণাম জানাই, যারা ভারতের সংবিধানকে সম্মান করেন।
বন্ধুগণ,
গত ১০ বছরে ভারত এমন বহু সমস্যার সমাধান করেছে, যা জাতীয় ঐক্যের জন্য হুমকি ছিল। আজ সন্ত্রাসবাদী চক্র জানে, তারা যদি ভারতকে আঘাত করে, ভারত তাদের ছেড়ে দেবে না। উত্তর-পূর্বে যেসব বড় সংকট ছিল, আমরা তা সংলাপ, উন্নয়ন ও বিশ্বাসের মাধ্যমে শান্ত করেছি। বোড়ো চুক্তি সমাপ্ত করেছে অসমের ৫০ বছরের পুরোনো বিবাদ। ব্রু-রিয়াং চুক্তির ফলে হাজারো উদ্বাস্তু পরিবার দশক পরে ঘরে ফিরতে পেরেছে। ত্রিপুরার ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্টের সঙ্গে চুক্তি দীর্ঘ অস্থিরতা শেষ করেছে। অসম ও মেঘালয়ের সীমান্ত-বিবাদও অনেকাংশে মিটেছে।
বন্ধুগণ,
যখন একবিংশ শতাব্দীর ইতিহাস লেখা হবে, তখন একটি সোনালি অধ্যায় থাকবে, কীভাবে ভারত দ্বিতীয় ও তৃতীয় দশকে নকশালবাদের মতো ভয়ঙ্কর ব্যাধিকে উপড়ে ফেলে দিয়েছে। মনে করুন সেই সময়, যখন লাল করিডর বিস্তৃত ছিল নেপালের পশুপতি থেকে ভারতের তিরুপতি পর্যন্ত। যে আদিবাসী সমাজ ভগবান বীরসা মুন্ডার মতো দেশপ্রেমিক দিয়েছে, যারা সীমিত সম্পদ নিয়েও ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার সংগ্রাম করেছে, তাদের মধ্যে ষড়যন্ত্র করে বপন করা হয়েছিল নকশালবাদের বীজ। সেই আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। নকশালবাদ হয়ে উঠেছিল ভারতের ঐক্য ও অখণ্ডতার বড় চ্যালেঞ্জ। আমি তৃপ্তি পাই, কারণ দশ বছরের নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টার পর নকশালবাদ আজ ভারতে শেষ নিঃশ্বাস গুনছে। যে উন্নয়ন এতদিন প্রতীক্ষিত ছিল, তা আজ আমার আদিবাসী সমাজের ঘরে পৌঁছচ্ছে, এক নতুন আশার আলো দেখাচ্ছে।
বন্ধুগণ,
আজকের ভারত সেই দেশ, যার রয়েছে দৃষ্টি, দিকনির্দেশ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল দৃঢ়তা। আজকের দেশ শক্তিশালী, অন্তর্ভুক্তিমূলক, সংবেদনশীল, সতর্ক, বিনয়ী এবং উন্নয়নের পথে অগ্রসর। আজকের ভারত জানে ‘শক্তি’ ও ‘শান্তি’-উভয়ের গুরুত্ব। বৈশ্বিক অস্থিরতার মধ্যে দ্রুত উন্নয়ন সাধন কোনো সাধারণ বিষয় নয়। যখন বিশ্বের নানা প্রান্তে যুদ্ধ চলছে, তখন বুদ্ধের বাণী ছড়িয়ে দেওয়া সাধারণ ঘটনা নয়। যখন দেশগুলির মধ্যে সম্পর্কের সংকট, তখন বিশ্ববন্ধু হয়ে ওঠা সহজ নয়। আজ বিশ্বের নানা দেশ যখন একে অপরের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, তখন তারা ভারতের কাছে আসছে। এটি নতুন ইতিহাস রচনা করছে। ভারত কী করেছে তা অর্জনের জন্য?
বন্ধুগণ,
আজ বিশ্ব দেখছে ভারত কীভাবে দৃঢ়ভাবে চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করছে। দেখছে ভারত কীভাবে ঐক্যবদ্ধ থেকে দশকের পুরোনো সমস্যাগুলির সমাধান করছে। তাই এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আমাদের ঐক্যকে রক্ষা করতে হবে, পরিচালনা করতে হবে। আমরা যে ঐক্যের শপথ নিয়েছি, বারবার তা স্মরণ করতে হবে, সেই শপথ পালন করতে হবে, প্রয়োজনে সেই শপথের জন্য সংগ্রামও করতে হবে। আমাদের প্রতিটি মুহূর্ত ঐক্যের এই শপথে ভরে তুলতে হবে।
বন্ধুগণ,
কিছু শক্তি, বিকৃত চিন্তা ও মানসিকতা ভারতের শক্তি ও ঐক্যের অনুভূতি দেখে অশান্ত। দেশের ভেতরে-বাইরে এমন মানুষ আছে যারা অস্থিরতা ছড়ানোর চেষ্টা করছে। তাদের লক্ষ্য ভারতের অর্থনৈতিক স্বার্থে আঘাত হানা। তারা বিশ্বের বিনিয়োগকারীদের কাছে ভারতের ভুল বার্তা পৌঁছে দিতে চায়, ভারতের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চায়। এমনকি আমাদের সেনাবাহিনীকেও নিশানা করছে, মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে। সেনাবাহিনীতে বিভাজন তৈরি করার চেষ্টা করছে। এই শক্তিগুলি জাতি ও সমাজকে ভাঙতে জাতপাত ও সম্প্রদায়ের নামে বিভাজন ঘটাতে চাইছে। তাদের লক্ষ্য একটাই - ভারতের সমাজ ও ঐক্যকে দুর্বল করা। তারা কখনোই চায় না ভারত উন্নত হোক। কারণ, দুর্বল ভারত, দরিদ্র ভারতই তাদের রাজনীতির উপযোগী। পাঁচ দশক ধরে এই ঘৃণ্য রাজনীতি দেশের ক্ষতি করেছে। সংবিধান ও গণতন্ত্রের নাম নিয়ে এই শক্তিগুলি ভাঙনের কাজ করেছে। আমাদের এই তথাকথিত ‘আরবান নকশাল’-এর জোটকে চিনতে হবে, তাদের মুখোশ খুলতে হবে, যারা দেশভাঙার স্বপ্ন দেখে, ধ্বংসাত্মক চিন্তা পোষণ করে। জঙ্গলে যে নকশালবাদ বেড়ে উঠেছিল, আজ তা শেষ হয়ে আসছে, কিন্তু নতুন রূপে ‘আরবান নকশালবাদ’ মাথা তুলছে।
বন্ধুগণ,
আজ পরিস্থিতি এমন যে ঐক্যের কথা বলাও অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একসময় স্কুল-কলেজে, ঘরে-বাইরে গর্বের সঙ্গে ঐক্যের গান গাওয়া হতো। বয়স্ক প্রজন্ম নিশ্চয়ই মনে করতে পারবেন- “হিন্দুস্তানের সব বাসিন্দা এক, রূপ-রঙ-ভাষা যাই হোক না কেন।” এই গানগুলি প্রকাশ্যে গাওয়া হতো। আজ যদি কেউ এমন গান গায়, তবে আরবান নকশাল গোষ্ঠীর নিশানায় পড়ে যায়। কেউ যদি বলে- “ঐক্য মানে নিরাপত্তা,” তবে তারাও তার ভুল ব্যাখ্যা করে। যারা দেশ ভাঙতে চায়, সমাজকে বিভক্ত করতে চায়, তারা জাতীয় ঐক্যের কথায় বিরক্ত হয়। তাই, প্রিয় দেশবাসী, আমাদের আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি সতর্ক থাকতে হবে এই মানুষগুলির বিরুদ্ধে, এই ধরণের চিন্তা, প্রবণতা ও মানসিকতার বিরুদ্ধে।
বন্ধুগণ,
আমরা সর্দার সাহেবের আদর্শে জীবন যাপন করি। সর্দার সাহেব বলতেন, ভারতের সর্বোচ্চ লক্ষ্য হওয়া উচিত ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী সংযোগশীল শক্তিতে পরিণত হওয়া। আমাদের মনে রাখতে হবে, ভারত বৈচিত্র্যের দেশ। বৈচিত্র্যকে আমরা উদযাপন করব, তবেই ঐক্য দৃঢ় হবে। আগামী ২৫ বছর ঐক্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই ঐক্যের মন্ত্রকে কখনো দুর্বল হতে দেওয়া যাবে না। প্রতিটি মিথ্যার মোকাবিলা করতে হবে, ঐক্যের মন্ত্রকে জীবনযাপনে বাস্তবায়িত করতে হবে। দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন, বিকশিত ও সমৃদ্ধ ভারত গড়ার জন্য ঐক্য অপরিহার্য। সামাজিক সম্প্রীতির রক্তধারা ঐক্যেই নিহিত। সত্যিকারের সামাজিক ন্যায়বিচারের অগ্রাধিকার যদি থাকে, তবে ঐক্যই তার প্রথম শর্ত। ঐক্য ছাড়া উন্নত সুযোগ-সুবিধা আসতে পারে না। ঐক্য ছাড়া কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগ সম্ভব নয়। তাই আসুন, আমরা সকলে একসঙ্গে এগিয়ে চলি। আবারও জাতীয় ঐক্য দিবসে আপনাদের সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা।
আমি বলব - সর্দার সাহেব, আপনারা বলুন - অমর রহে… অমর রহে!
সর্দার সাহেব - অমর রহে… অমর রহে!
সর্দার সাহেব - অমর রহে… অমর রহে!
সর্দার সাহেব - অমর রহে… অমর রহে!
সর্দার সাহেব - অমর রহে… অমর রহে!
ভারতমাতার জয়!
ভারতমাতার জয়!
ভারতমাতার জয়!
**
SSS/SS
(Release ID: 2171785)
Visitor Counter : 14
Read this release in:
Odia
,
Telugu
,
English
,
Urdu
,
हिन्दी
,
Marathi
,
Manipuri
,
Assamese
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Tamil
,
Kannada
,
Malayalam