প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

ভারতীয় আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগের ১৫০তম প্রতিষ্ঠা দিবসে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

Posted On: 14 JAN 2025 2:53PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫

 

কেন্দ্রীয় মন্ত্রীপরিষদের আমার সহকর্মী ড. জিতেন্দ্র সিং জি, বিশ্ব আবহাওয়া বিজ্ঞান সংস্থার মহাসচিব অধ্যাপক সেলেস্টে সাওলে, বিদেশ থেকে আগত আমাদের অতিথিবৃন্দ, পৃথিবী বিজ্ঞান মন্ত্রকের সচিব ড. এম রবিচন্দ্রন, আইএমডির মহানির্দেশক ড. মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র, অন্যান্য অতিথিবর্গ, বিজ্ঞানীগণ এবং বিভিন্ন বিভাগ তথা সংস্থার কর্মকর্তা, ভদ্রমহোদয়া ও ভদ্রমহোদয়গণ

আজ আমরা ভারতীয় আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগ, আইএমডির ১৫০তম বর্ষপূর্তি উদযাপন করছি। এই ১৫০ বছরের যাত্রা কেবলমাত্র ভারতীয় আবহাওয়া বিজ্ঞানের যাত্রা নয়, আমাদের ভারতে আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এক গৌরবময় যাত্রাও বটে। এই ১৫০ বছরে আইএমডি কেবল কোটি কোটি ভারতীয়কে সেবা প্রদান করেনি, বরং ভারতের বৈজ্ঞানিক যাত্রার এক প্রতীকে পরিণত হয়েছে। এই কৃতিত্বকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য আজ একটি ডাকটিকিট এবং একটি বিশেষ মুদ্রাও প্রকাশ করা হয়েছে।

এছাড়াও, ২০৪৭ সালে ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগের রূপ কেমন হবে— যখন দেশ স্বাধীনতার ১০০ বছর পূর্তি উদযাপন করবে— সেই বিষয়ে একটি ভিশন ডকুমেন্টও প্রকাশ করা হয়েছে। এই উপলক্ষে আপনাদের সকলকে এবং দেশবাসীকে আমি আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।

১৫০ বছরের এই যাত্রার সঙ্গে যুব সমাজকে যুক্ত করার জন্য আইএমডি একটি জাতীয় আবহাওয়া অলিম্পিয়াডের আয়োজন করেছে। এতে হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী অংশগ্রহণ করেছে। এর ফলে আবহাওয়া বিজ্ঞানের প্রতি তাদের আগ্রহ আরও বৃদ্ধি পাবে। আমি কিছু কিশোর বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগও পেয়েছি, এবং আমাকে জানানো হয়েছে যে দেশের প্রতিটি রাজ্যের যুবক-যুবতীরা এখানে উপস্থিত আছেন। এই কর্মসূচিতে তাদের অংশগ্রহণের জন্য আমি তাদের অভিনন্দন জানাই।

বন্ধুরা,

১৮৭৫ সালের ১৫ জানুয়ারি, মকর সংক্রান্তির সময়, ভারতীয় আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়। ভারতীয় পরম্পরায় মকর সংক্রান্তির গুরুত্ব আমরা সবাই জানি। আর আমি গুজরাটী হওয়ার কারণে, মকর সংক্রান্তি আমার প্রিয় উৎসব। এই সময় গুজরাটে সবাই ছাদে সারা দিন ধরে ঘুড়ি উড়িয়ে আনন্দ পায়। আমি যখন সেখানে বাস করতাম মকর সংক্রান্তি আমার কাছে বড় আনন্দের বিষয় ছিল। আজ আমার সেই সব স্মৃতি মনে পড়ে যাচ্ছে।

বন্ধুরা,

আজ ধনু রাশির সূর্য মকর রাশিতে প্রবেশ করছে। সূর্য ক্রমশ উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ভারতীয় পরম্পরায় এটিকে উত্তরায়ণ বলা হয়। এই সময় থেকে আমরা ক্রমশ সূর্যের আলোর বৃদ্ধি পাওয়া অনুভব করতে শুরু করি। কৃষি-কার্যের প্রস্তুতি শুরু হয়। তাই ভারতীয় পরম্পরায় এই দিনটিকে এত গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হয়। উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এই দিন উদযাপন করা হয়। এই উপলক্ষে মকর সংক্রান্তি সংক্রান্ত সকল উৎসবের জন্য আমি দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।

বন্ধুরা,

যে কোনো দেশের বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠানের অগ্রগতি বিজ্ঞান সম্পর্কে তার সচেতনতার প্রমাণ দেয়। বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠানে গবেষণা ও উদ্ভাবন নতুন ভারতের অঙ্গ। তাই আইএমডির আন্তঃসংযোগ ও প্রযুক্তিও গত দশকে অভূতপূর্বভাবে প্রসারিত হয়েছে। ডপলার রাডার, স্বয়ংক্রিয় আবহাওয়া স্টেশন, রানওয়ে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা, জেলা ভিত্তিক বৃষ্টিপাত পর্যবেক্ষণ স্টেশন—এমন বহু আধুনিক পরিকাঠামোর সংখ্যা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং উন্নত হয়েছে।

ড. জিতেন্দ্র সিংও আপনাদেরকে পরিসংখ্যানে দেখিয়েছেন যে আগের সময়ে আমরা কোথায় ছিলাম এবং আজ কোথায় পৌঁছেছি। ভারতের মহাকাশ প্রযুক্তি ও ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে আবহাওয়া বিজ্ঞানের উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। আজ দেশে আন্টার্কটিকায় মৈত্রী ও ভারতী নামে দুটি আবহাওয়া বিজ্ঞানের পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। গত বছর আর্ক ও অরুণিকা সুপার কম্পিউটার চালু করা হয়েছে। এর ফলে আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগের বিশ্বাসযোগ্যতা আগের চেয়ে আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।

ভবিষ্যতে ভারতকে প্রতিটি আবহাওয়া পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। ভারতকে একটি ক্লাইমেট-স্মার্ট জাতি হতে হবে। এজন্য আমরা ‘মিশন মৌসম’ শুরু করেছি। মিশন মৌসম ভারতের ভবিষ্যতের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতারও প্রতীক।

বন্ধুরা,

বিজ্ঞানের প্রাসঙ্গিকতা কেবল নতুন উচ্চতা স্পর্শ করায় সীমাবদ্ধ নয়। বিজ্ঞান তখনই প্রাসঙ্গিক হয়, যখন এটি সাধারণ মানুষের জীবনের জন্য, তার জীবন উন্নত করার জন্য এবং সহজ-সুবিধাজনক জীবনযাপনের মাধ্যম হয়ে দাঁড়ায়। এই মাপকাঠিতে এগিয়ে আছে ভারতের আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগ।

আবহাওয়ার তথ্য যাতে সঠিক হয় এবং প্রতিটি নাগরিকের কাছে পৌঁছায়, তার জন্য আইএমডি আজ বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। দেশের ৯০ শতাংশেরও বেশি মানুষ আগাম সতর্কবার্তার সুবিধা পাচ্ছে। যে কোনো ব্যক্তি বিগত ১০ দিন এবং আগাত ১০ দিনের আবহাওয়ার তথ্য যে কোনো সময়ে পেতে পারবে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসও এখন দ্রুত হোয়াটসঅ্যাপে পাওয়া যাচ্ছে। আমরা মেঘদূত মোবাইল অ্যাপের মতো পরিষেবা চালু করেছি, যেখানে দেশের সকল স্থানীয় ভাষায় তথ্য উপলব্ধ।

আপনি পার্থক্যটি দেখতে পাবেন—১০ বছর আগে দেশের মাত্র ১০ শতাংশ কৃষক ও পশুপালক আবহাওয়া সংক্রান্ত পরামর্শ ব্যবহার করতে পারতেন, আর আজ সেই সংখ্যা ৫০ শতাংশেরও বেশি। এমনকি মানুষ এখন মোবাইলে বজ্রপাতের সতর্কবার্তাও পাচ্ছে। আগে যখন লাখ লাখ মাৎস্যজীবী সমুদ্রে যেতেন, তখন তাদের পরিবার সব সময় চিন্তায় থাকত। কোনো দুর্যোগ ঘটতে পারে, এমন ভয় সর্বদা বিদ্যমান ছিল। কিন্তু এখন আইএমডির সাহায্যে মাৎস্যজীবীরাও সময়মতো সতর্কবার্তা পাচ্ছে। এই সঠিক সময়ের আপডেট শুধু মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে না, কৃষি এবং নীল অর্থনীতির মতো ক্ষেত্রগুলোকেও শক্তিশালী করেছে।

বন্ধুরা,

যে কোনো দেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হলো আবহাওয়া বিজ্ঞান। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় যুক্ত বিশাল সংখ্যক মানুষ এতে নির্ভরশীল। প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব কমাতে আমাদের আবহাওয়া বিজ্ঞানের কার্যকারিতা সর্বাধিক করতে হবে। ভারত ক্রমাগত এর গুরুত্ব বোঝার চেষ্টা করেছে। আগে যেসব দুর্যোগ ঘটত তাকে ভাগ্য বলে মনে করা হত, আজ আমরা সেই ঘটনাগুলোর প্রভাব কমাতে সক্ষম হয়েছি।

১৯৯৮ সালে কচ্ছের কুণ্ডলায় ঘূর্ণিঝড়ের ফলে যে ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছিল, তা হয়তো আপনারা মনে রাখবেন। তখন প্রচুর মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল। তেমনি ১৯৯৯ সালে ওড়িশার সুপার সাইক্লোনে হাজার হাজার মানুষ মারা যায়। বিগত বছরে বহু বড় ঘূর্ণিঝড় ও দুর্যোগ দেশে আঘাত হেনেছে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা প্রাণহানি ন্যূনতম পর্যায়ে রাখতে সক্ষম হয়েছি। এই সফলতায় আবহাওয়া বিভাগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

বিজ্ঞান এবং প্রস্তুতির এই সংমিশ্রণ লাখ লাখ কোটি টাকার অর্থনৈতিক ক্ষতি হ্রাস করেছে। এর ফলে দেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা এসেছে, বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং এটি আমাদের দেশের জন্য অত্যন্ত সহায়ক।

গতকাল আমি সোনমার্গে ছিলাম। সেই কর্মসূচী  পূর্বেই স্থির করা হয়েছিল, কিন্তু আবহাওয়া বিভাগের তথ্য অনুযায়ী সেই সময় আমার জন্য উপযুক্ত ছিল না। তখন আবহাওয়া বিভাগ আমাকে জানাল যে ১৩ তারিখে যাওয়াই সঠিক হবে। এরপর যখন আমি গিয়েছিলাম, তখন তাপমাত্রা মাইনাস ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল, কিন্তু পুরো সময়কাল ধরে কোনো মেঘ ছিল না, সম্পূর্ণ রোদ ছিল। আবহাওয়া বিভাগের এই তথ্যের কারণে আমি সহজে কর্মসূচী সম্পন্ন করতে এবং ফিরে আসতে পেরেছি।

বন্ধুরা,

বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে অগ্রগতি এবং এর পূর্ণ সম্ভাবনার ব্যবহারই যে কোনো দেশের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তির সবচেয়ে বড় ভিত্তি। আজ আপনারা দেখছেন, আমাদের আবহাওয়া বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে আমাদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সুদৃঢ় হয়েছে। এর মাধ্যমে সমগ্র বিশ্বই উপকৃত হচ্ছে। আজ আমাদের ফ্ল্যাশ ফ্লাড গাইডেন্স ব্যবস্থা নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কাকেও তথ্য সরবরাহ করছে। আমাদের প্রতিবেশী দেশের কোথাও যদি কোনো দুর্যোগ দেখা দেয়, ভারতই সবার আগে সাহায্যের জন্য উপস্থিত হয়। এর ফলে বিশ্বে ভারতের প্রতি আস্থাও বেড়েছে। বিশ্বের বন্ধু হিসেবে ভারতের ভাবমূর্তি আরও শক্তিশালী হয়েছে। এজন্য আমি আইএমডির বিজ্ঞানীদের বিশেষভাবে অভিনন্দন জানাই।

বন্ধুরা,

আজ ১৫০ বছরের আইএমডিকে সামনে রেখে আমি ভারতের হাজার বছরের অভিজ্ঞতা এবং আবহাওয়া বিজ্ঞানের বিশেষজ্ঞতার বিষয়েও আলোচনা করতে চাই। বিশেষভাবে আমি স্পষ্ট করতে চাই যে এই প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোটি ১৫০ বছর ধরে চলছে, কিন্তু এর আগেও আমাদের হাতে জ্ঞান ছিল, আমাদের ঐতিহ্যও ছিল। বিশেষ করে আমাদের আন্তর্জাতিক অতিথিরা এ বিষয়ে জানতে অত্যন্ত আগ্রহী হবেন।

আপনারা জানেন, আবহাওয়া হলো অন্যতম প্রাথমিক উপাদান যা মানুষের বিবর্তনে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে। পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে মানুষ আবহাওয়া ও পরিবেশ বোঝার চেষ্টা করে এসেছে। এই দিক থেকে ভারত এমন একটি দেশ, যেখানে আবহাওয়া বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে হাজার হাজার বছর আগেও পদ্ধতিগত অধ্যয়ন এবং গবেষণা করা হয়েছিল। এখানে ঐতিহ্যগত জ্ঞানকে লিখিত আকারে সংরক্ষণ এবং পরিশোধন করা হয়েছিল। আমাদের বেদ, সংহিতা এবং সূর্য সিদ্ধান্তর মতো গ্রন্থে আবহাওয়া বিজ্ঞানের ওপর বহু আলোচনা হয়েছে।

তামিলনাড়ুর সংগম সাহিত্য এবং উত্তরের ঘাঘ ভদ্দারীর লোকসাহিত্যেও বহু তথ্য পাওয়া যায়। আসলে, আবহাওয়া বিজ্ঞান কোনো আলাদা শাখা ছিল না। এর মধ্যে জ্যোতির্বিদ্যার গণনা, জলবায়ু অধ্যয়ন, প্রাণীর আচরণ এবং সামাজিক অভিজ্ঞতা সবই অন্তর্ভুক্ত ছিল। গ্রহের অবস্থান নিয়ে কতখানি গাণিতিক কাজ হয়েছে, তা সমগ্র বিশ্ব জানে। আমাদের ঋষিরা গ্রহগুলোর অবস্থান নির্ণয় করেছিলেন। আমরা রাশি, নক্ষত্রমণ্ডল এবং ঋতুর সঙ্গে সম্পর্কিত হিসাব-নিকাশ করেছি। কৃষি পরাশর, পরাশর রুচি এবং বৃহৎ সংহিতার মতো গ্রন্থে মেঘের গঠন এবং এর প্রকার নিয়ে গভীর অধ্যয়ন পাওয়া যায়।

কৃষি পরাশর-এ বলা হয়েছ, বায়ুমণ্ডলের চাপ বেশি বা কম, তাপমাত্রা বেশি বা কম হওয়াটাই মেঘ ও বৃষ্টির বৈশিষ্ট্যে প্রভাব ফেলে। আপনারা কল্পনা করতে পারেন, লক্ষ লক্ষ বছর আগে আধুনিক যন্ত্রপাতি ছাড়াই সেই ঋষি-মুনিরা, সেই পণ্ডিতরা কত গবেষণা করেছিলেন। কয়েক বছর আগে আমি এই বিষয়ে “Pre-modern Kutch Navigation Techniques and Voyage” শীর্ষক একটি বই উন্মোচন করেছিলাম। এই গ্রন্থে সাগর ও আবহাওয়ার সঙ্গে যুক্ত গুজরাটের নাবিকদের পুরোনো জ্ঞানের সংকলন রয়েছে। আমাদের আদিবাসী সমাজেও এ ধরনের জ্ঞানের এক সমৃদ্ধ ঐতিহ্য আছে। এর পেছনে রয়েছে প্রকৃতির বোঝাপড়া এবং প্রাণীর আচরণের গভীর অধ্যয়ন।

আমার মনে আছে, প্রায় ৫০ বছরেরও বেশি আগে আমি গির অরণ্যে কিছু সময় কাটাতে গিয়েছিলাম। সেখানে সরকারের পক্ষ থেকে নিয়ম মাফিক একজন আদিবাসী শিশুকে মাসে ৩০ টাকা দেওয়া হতো। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এটি কেন দেওয়া হয়? কেন এই শিশুটি টাকা পাচ্ছে? তখন তারা জানাল যে এই শিশুর একটি বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে। যদি জঙ্গলের কোনো দূরবর্তী স্থানে আগুন লাগে, তবে প্রথম পর্যায়েই সে তা অনুভব করতে পারে—তার মধ্যে সেই অনুভূতি জাগ্রত হতো এবং সে সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনকে জানিয়ে দিত। তাই তাকে ৩০ টাকা দেওয়া হতো। অর্থাৎ, সেই আদিবাসী শিশুটির এমন এক অনুভূতি শক্তি ছিল যে সে বলতে পারতো—“স্যার, আমি দূর থেকে আগুনের গন্ধ পাচ্ছি।”

বন্ধুরা,

বর্তমান সময়ে আমাদের এই দিকটিতে আরও গবেষণা করা উচিত। প্রমাণিত জ্ঞানকে আধুনিক বিজ্ঞানের সঙ্গে যুক্ত করার উপায় খুঁজে বের করতে হবে।

বন্ধুরা,

আবহাওয়া বিভাগের পূর্বাভাস যতটাই সঠিক হয়, ততটাই তা তথ্য সরবরাহ করে। আগামী দিনে আইএমডির তথ্যের চাহিদা আরও বাড়বে। এই তথ্যের ব্যবহার বিভিন্ন শিল্প, এমনকি সাধারণ মানুষের জীবনেও আরও বৃদ্ধি পাবে। তাই ভবিষ্যতের প্রয়োজনীয়তাকে সামনে রেখে আমাদের কাজ করতে হবে। ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগেরও চ্যালেঞ্জ আছে, যেখানে আমাদের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। আমি চাই, আমাদের বিজ্ঞানীরা, গবেষক পণ্ডিতরা এবং আইএমডির মতো প্রতিষ্ঠানসমূহ এই ক্ষেত্রে নতুন অগ্রগতি নিয়ে আসুক।

বিশ্বের সেবার পাশাপাশি ভারত যেন বিশ্বের নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। আমি নিশ্চিত যে আগামী দিনে আইএমডি নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।

১৫০ বছরের এই গৌরবময় যাত্রার জন্য আইএমডি এবং আবহাওয়া বিজ্ঞানের সঙ্গে যুক্ত সবাইকে আবারও অভিনন্দন জানাই এবং যাঁরা গত ১৫০ বছরে এই অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করেছেন, তাঁরাও সমানভাবে প্রশংসার যোগ্য। আবারও আপনাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

 

SC/PK...


(Release ID: 2160414) Visitor Counter : 6