প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
''পরীক্ষা পে চর্চা ২০২৫'' কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কথপোকথন
प्रविष्टि तिथि:
10 FEB 2025 4:18PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
ছাত্রছাত্রী: আমরা “পরীক্ষা পে চর্চা” নিয়ে খুবই উচ্ছ্বসিত!
খুশি: আজ মনে হচ্ছে আমি যেন স্বপ্নের মধ্যে আছি।
বৈভব: এতজন ছাত্রছাত্রী নিবন্ধন করেছে, আর আমরা তার মধ্যে নির্বাচিত হয়েছি—এটাই আমাদের জন্য বিরাট সৌভাগ্য।
সাই শাস্ত্র: আমি আগের “পরীক্ষা পে চর্চা” অনুষ্ঠান দেখেছিলাম, যেটা অডিটোরিয়ামে হয়েছিল। আমি ভেবেছিলাম এ বারও একইভাবে হবে।
ইরা শর্মা: কিন্তু এ বার সম্পূর্ণ আলাদা—পুরো ফরম্যাটটাই বদলে গেছে।
অক্ষরা: এ বার অনুষ্ঠান হচ্ছে এক খোলা জায়গায়, যার নাম সুন্দর নার্সারি।
এড্রিয়েল গুরুং: আমি ভীষণ খুশি, আমি ভীষণ উচ্ছ্বসিত!
অদ্বিতীয় সদুখান: বহু প্রতীক্ষিত সেই দিন আজ এসেছে—আমরা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে সামনে থেকে দেখব!
এড্রিয়েল গুরুং: আজ আমি এখানে এসেছি আলাপ করতে—
লোপংসাই লাওয়াই: ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে!
অক্ষরা জে. নায়ার: যখন মোদীজী এলেন, চারপাশে একটা ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি হল।
সবাই: নমস্তে, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: নমস্তে! তোমরা কি আলাদা আলাদা বসেছ?
ছাত্রছাত্রী: না, স্যার!
ঋতুরাজ নাথ: তাঁকে দেখার সঙ্গে সঙ্গেই সবার মধ্যে ইতিবাচক শক্তি ছড়িয়ে গেল।
প্রধানমন্ত্রী: এই যে এতগুলো ছেলে-মেয়ে, ক’জনকে চেনো?
ছাত্রছাত্রী: স্যার, প্রায় সবাইকে!
প্রধানমন্ত্রী: আচ্ছা, তাহলে সবাইকে বাড়িতে ডেকেছ?
ছাত্রছাত্রী: স্যার, আমি অবশ্যই ডাকব!
প্রধানমন্ত্রী: আহা! আগে থেকেই ডাকতে পারতে!
আকাঙ্ক্ষা অশোক: তিনি সত্যিই ভীষণ আকর্ষণীয় ও মনোমুগ্ধকর।
প্রধানমন্ত্রী: মকর সংক্রান্তিতে কী খাও?
সবাই: (তিল–গুড়) তিল আর গুড়!
প্রধানমন্ত্রী: এর কোনো নিয়ম নেই যে একটিই খেতে হবে—যারা ভালোবাসে তারা যত খুশি খেতে পারে।
ছাত্রছাত্রী: যখন প্রধানমন্ত্রী নিজ হাতে আমাদের ‘তিলের নাড়ু’ দিলেন, আমি ভীষণ খুশি হলাম!
প্রধানমন্ত্রী: তো কী বলে? তিল গুড় খা, আর মিষ্টি মিষ্টি কথা বল!
সবাই: তিল গুড় খা, আর মিষ্টি মিষ্টি কথা বল!
প্রধানমন্ত্রী: বাহ!
অনন্যা ইউ: যেমন বাড়িতে অতিথি এলে আমরা তাঁদের কিছু খেতে দিই, তেমনি তিনিও আমাদের দিলেন (তিল নাড়ু)!
প্রধানমন্ত্রী: কেরালায় একে কী বলে?
ছাত্রছাত্রী: ওখানে একে তিল লাড্ডু বলে।
প্রধানমন্ত্রী: আচ্ছা, ওরা তিল লাড্ডুই বলে।
ছাত্রছাত্রী: ওখানে খুব কমই পাওয়া যায়।
প্রধানমন্ত্রী: আহা! মানে, প্রায়ই পাও না?
ছাত্রছাত্রী: না, স্যার।
প্রধানমন্ত্রী: আচ্ছা।
ছাত্রছাত্রী: মনে হল, কেউ আমাদের কথা ভেবেছে।
প্রধানমন্ত্রী: কারো নিয়ে যেতে ইচ্ছে করছে?
ছাত্রছাত্রী: স্যার, এক-দুটো নিলেই হবে!
প্রধানমন্ত্রী: হ্যাঁ, খুবই সুন্দর ভাবনা।
ছাত্রছাত্রী: আমার ভীষণ ভালো লেগেছে, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: ভালো! বসো। এবার বলো—তিল আর গুড় খাওয়ার সেরা সময় কোন ঋতু?
ছাত্রছাত্রী: শীতকাল!
প্রধানমন্ত্রী: আর কেন খাও?
ছাত্রছাত্রী: শরীর গরম রাখে।
প্রধানমন্ত্রী: ঠিক বলেছ! শরীর গরম রাখে। আচ্ছা, পুষ্টি সম্পর্কে তোমাদের কী জানা আছে?
ছাত্রছাত্রী: স্যার, শরীরের জন্য বিভিন্ন প্রয়োজনীয় খনিজ লাগে।
প্রধানমন্ত্রী: কিন্তু যদি এ ব্যাপারে জ্ঞানই না থাকে, তবে কী করবে?
ছাত্রছাত্রী: আসলে ভারত এখন মিলেটের প্রচার করছে, কারণ এগুলো ভীষণ পুষ্টিকর।
প্রধানমন্ত্রী: তোমাদের মধ্যে ক’জন মিলেট খেয়েছ? প্রায় সবাই খেয়েছ নিশ্চয়ই, যদিও টের পাওনি।
ছাত্রছাত্রী: বাজরা, রাগি আর জোয়ার-এর মতো মিলেট।
প্রধানমন্ত্রী: সবাই এগুলো খায়। জানো কি, মিলেট এখন কীভাবে বিশ্বে পরিচিত?
ছাত্রছাত্রী: ভারতই বিশ্বের সবচেয়ে বড় মিলেট উৎপাদক ও ভোক্তা।
প্রধানমন্ত্রী: একদম ঠিক! ২০২৩ সালে জাতিসংঘ ‘আন্তর্জাতিক মিলেট বর্ষ’ ঘোষণা করেছিল এবং তা গোটা বিশ্বে প্রচার করেছিল—এটি ভারতের প্রস্তাব ছিল। পুষ্টি নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে ভারত সরকার দৃঢ়ভাবে কাজ করছে, কারণ সঠিক পুষ্টির মাধ্যমে অনেক রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। মিলেটকে সুপারফুড বলা হয়। আচ্ছা বলো তো, তোমাদের ঘরে সারা বছর মিলেট থাকে?
ছাত্রছাত্রী: স্যার, আমরা গম, জোয়ার আর বাজরা মিশিয়ে ময়দা বানাই!
প্রধানমন্ত্রী: খেয়াল করেছ তো, আমাদের অনেক প্রথার মধ্যেই পুষ্টির বার্তা লুকিয়ে আছে? যেমন, নতুন মরশুমের ফল আমরা প্রথমে ঈশ্বরকে নিবেদন করি।
ছাত্রছাত্রী: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: আর আমরা উৎসব করি, তাই না?
ছাত্রছাত্রী: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: এভাবে তো সর্বত্রই হয়।
ছাত্রছাত্রী: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: তারপর আমরা প্রসাদ হিসেবে খাই।
ছাত্রছাত্রী: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: মানে ঈশ্বরও প্রথমে মৌসুমি ফল খান, তাহলে মানুষ হিসেবে আমাদেরও কি মৌসুমি ফল খাওয়া উচিত নয়?
ছাত্রছাত্রী: হ্যাঁ, স্যার! অবশ্যই খাওয়া উচিত।
প্রধানমন্ত্রী: তোমাদের মধ্যে কতজন এই মরশুমে কাঁচা গাজর খাও? আমি জানি তোমরা সবাই গাজরের হালুয়া ভালোবাসো।
ছাত্রছাত্রী: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: তোমরা গাজরের রসও খাও নিশ্চয়ই। তাহলে বলো তো, নির্দিষ্ট কিছু খাবার খাওয়া কি পুষ্টির জন্য প্রয়োজনীয়?
ছাত্রছাত্রী: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: তোমরা কি মনে করো, কিছু খাবার এড়ানোও গুরুত্বপূর্ণ?
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী:কী খাবার এড়ানো উচিত?
ছাত্র: জাঙ্ক ফুড!
প্রধানমন্ত্রী: জাঙ্ক ফুড!
ছাত্র: তৈলাক্ত এবং রিফাইন্ড আটা দিয়ে তৈরি খাবার এড়ানো উচিত, কারণ এগুলো রক্তের শর্করার মাত্রা বাড়ায়।
প্রধানমন্ত্রী: ঠিক! কখনও কখনও আমরা জানি কি খাওয়া উচিত আর কি খাওয়া উচিত নয়, কিন্তু আমরা কি জানি কিভাবে খেতে হয়? আমাদের কয়টি দাঁত আছে?
ছাত্র: ৩২!
প্রধানমন্ত্রী: ৩২! স্কুলে শিক্ষকরা প্রায়শই আমাদের বলে দেন, আর বাড়িতে বাবা-মা মনে করিয়ে দেন যে যেহেতু আমাদের ৩২টা দাঁত আছে, তাই আমাদের খাবার অন্তত ৩২ বার চিবাতে হবে।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার! সঠিকভাবে চিবানো উচিত।
প্রধানমন্ত্রী: তাই, কিভাবে খেতে হয় তা জানা ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: এখন, তোমাদের মধ্যে কতজন খাবার খায় মনোযোগ না দিয়ে—যেমন ডাকঘরে চিঠি দেওয়ার মতো দ্রুত গিলে ফেলে? অথবা, যদি বন্ধু তোমার সঙ্গে খায়, তুমি কি কখনও ভাবো, ‘যদি সে আমার চেয়ে বেশি খায়?’
ছাত্র: সত্যি, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: আর তোমাদের মধ্যে কতজন জল খাওয়ার সময় তার স্বাদ চেখেছে? মানে, সত্যিই তার স্বাদ উপভোগ করেছে? কতজন এটি করে?
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: কিন্তু অধিকাংশই করে না! তোমরা স্কুলে পৌঁছানোর জন্য এত ব্যস্ত থাকো।
ছাত্র: না, স্যার! না, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: না, সৎ হও—সত্য বলো।
ছাত্র: সত্যি, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: যেমন আমরা চা ছোট ছোট চুমুক দিয়ে উপভোগ করি, তেমনি জলও খাওয়ার সময় উপভোগ করা উচিত। সত্যিই তার স্বাদ নেওয়া উচিত। আমরা কিভাবে খেতে হয় এবং কী খেতে হয়, তা আলোচনা করেছি। তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো কখন খেতে হয়।
ছাত্র: স্যার, সন্ধ্যায় আচার বা সালাদ খাওয়া এড়ানো উচিত। সালাদ সকালে খাওয়াই ভালো।
ছাত্র: Ideally আমাদের খাবার রাত ৭টার আগে খাওয়া উচিত। জৈন সম্প্রদায়েও এই অভ্যাস প্রচলিত, কারণ এটি হজমে সাহায্য করে।
প্রধানমন্ত্রী: আমাদের দেশে কৃষকরা সাধারণত কখন খায়?
ছাত্র: দুপুরে, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: যতদূর আমি জানি, কৃষকরা সকাল ৮ বা ৮:৩০টার দিকে মাঠে যাওয়ার আগে প্রচুর খাবার খায়। তারা সারাদিন কাজ করে, আর যদি খিদে পায়, মাঠে যা পাওয়া যায় খায়। সন্ধ্যা ৫ বা ৬টার দিকে বাড়ি ফেরে এবং সূর্যাস্তের আগে রাতের খাবার খায়।
কিন্তু তোমরা হয়তো বলবে, “আমায় এখন খেলতে যেতে হবে বা একটি টিভি শো দেখতে হবে বা ফোন চেক করতে হবে!” হয়তো তোমরা মাকে বলো, “এখন না, মা! আমার এখনো খিদে পায়নি!”
ছাত্র: না, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: মনে রাখো, অসুস্থ না থাকা মানেই সুস্থ হওয়া নয়। আমাদের সুস্থতা মানে শারীরিক ও মানসিক অবস্থার ওপর মূল্যায়ন করা উচিত। আমাদের ঘুমের ধরণও পুষ্টির সঙ্গে যুক্ত—যতটা ঘুম পাই বা কখনও অতিরিক্ত ঘুম।
ছাত্র: স্যার, পরীক্ষার সময় আমার আরো ঘুম পায়। বিশেষ করে প্রস্তুতির সময়।
প্রধানমন্ত্রী: তাহলে পরীক্ষার সময় তোমরা ঘুমের অভাব অনুভব করো?
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার! আর পরীক্ষার পর ঘুম যেন একেবারেই চলে যায়!
প্রধানমন্ত্রী: ঘুম পুষ্টি, সুস্থতা, এবং সামগ্রিক ফিটনেসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পুরো ক্ষেত্র এখন ঘুমের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে—কতটা ভালো ঘুম হয়, কত ঘণ্টা বিশ্রাম পাওয়া যায়—সবকিছু গভীরভাবে অধ্যয়ন করা হচ্ছে। কিন্তু আমি নিশ্চিত অনেকেই ভাবছেন, ‘স্যার আমাদের ঘুমানোর কথা কেন বলছেন?’
তোমাদের মধ্যে কতজন প্রতিদিন সূর্যের আলো গ্রহণ করো?
ছাত্র: স্যার, আমরা স্কুলের অ্যাসেম্বলিতে সূর্যের আলো নিই…
প্রধানমন্ত্রী: অরুণাচলের কেউ কিছু বলতে চায়?
ছাত্র: অরুণাচল হল উদীয়মান সূর্যের ভূমি, তাই আমরা প্রতিদিন সকালবেলা সূর্যের আলো নিই!
প্রধানমন্ত্রী: সবাইকে অভ্যাস করতে হবে সকালবেলার সূর্যের আলোতে কয়েক মিনিট ব্যয় করা—যে কোনো সুবিধাজনক সময়ে—শরীরের যতটা সম্ভব অংশ সরাসরি সূর্যের আলোতে ২, ৫, বা ৭ মিনিটের জন্য রাখো। এটি শুধু স্কুলে যাওয়ার পথে সূর্য দেখা নয়; এটি ইচ্ছাকৃতভাবে এবং উদ্দেশ্য নিয়ে করতে হবে।
সূর্যোদয়ের পর অন্তত ১০টি গভীর শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করেছো কেউ? গাছের নিচে দাঁড়িয়ে যতটা সম্ভব গভীর শ্বাস নাও, এমন যে মনে হয় ফেটে যাবে—কেউ কি নিয়মিত এটা প্র্যাকটিস করে?
ছাত্র: স্যার, সঠিকভাবে গভীর শ্বাস না হলেও, এটি খুব রিল্যাক্সিং লাগে।
প্রধানমন্ত্রী: আমি যা বলতে চাই, তা হলো, যদি তুমি জীবনে উন্নতি করতে চাও, পুষ্টি অপরিহার্য। তুমি কী খাও, কখন খাও, কিভাবে খাও, এবং কেন খাও—সবই গুরুত্বপূর্ণ।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: আমি একবার একটি পরিবারের সঙ্গে খাবার খেতে গিয়েছিলাম। তাদের এক ছেলে গম বা জোয়ারের রুটি খায় না। হয়তো শিক্ষক একবার বলেছিল—বা সে কোথাও শুনেছিল—যদি সে গম বা জোয়ারের রুটি খায়, তার ত্বকের রঙ গাঢ় হবে। তাই সে শুধুমাত্র চাল খায়।
কিন্তু এটি হওয়া উচিত নয়—আমি আশা করি তোমরা প্রতিদিন কী খাওয়া উচিত তা ঠিক করার জন্য ‘গুগল গুরু’-র উপর নির্ভর করো না!
ছাত্র: না, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: তুমি তো তা করো না, তাই না?
ছাত্র: না, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: ঠিক আছে, আমি অনেকক্ষণ ধরে বলছি। তোমরা কী বলতে চাও?
ছাত্র: নমস্কার, স্যার! আমার নাম আকাঙ্ক্ষা, আমি কেরালার। আমার প্রশ্ন হলো…
প্রধানমন্ত্রী: তুমি এত সুন্দর হিন্দি বলো! এটা কীভাবে সম্ভব?
ছাত্র: কারণ আমি হিন্দি ভালোবাসি, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: তুমি কি কখনও ভেবেছ কেন হিন্দি শেখা তোমার এত ভালো লাগে?
ছাত্র: না, কিন্তু আমি কবিতা লিখি।
প্রধানমন্ত্রী: বাহ! তাহলে, আমি প্রথমে তোমার একটি কবিতা শুনতে চাই।
ছাত্র: যদি মনে পড়ে, আমি আপনাকে পড়ে শোনাব।
প্রধানমন্ত্রী: ঠিক আছে! যা মনে থাকে তা শোনাও। আমি সাধারণত কিছুই মনে রাখি না।
ছাত্র:এত হিড়িক এই বাজারে,
এত হিড়িক এই গলিতে,
কেন তুমি কলম নিয়ে বসে আছো আবার একটি গজল লিখতে,
তারপর সেই বইয়ের পাতায় তুমি কী লিখতে চাও, তোমার মনে কি আছে,
তোমার প্রশ্নময় মনের মধ্যে হয়তো একটি কালিতে উত্তর লিখছে,
তাহলে কেন তুমি আকাশের দিকে তাকাও,
এই তারা গুলোতে কী আছে, তোমার মনে কী আছে!
প্রধানমন্ত্রী: বাহ! বাহ! দারুণ!
ছাত্র: এই সংলাপটা খুব উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ লাগল—পুরো যেন বড়দের সঙ্গে কথা বলা।
প্রধানমন্ত্রী: তাহলে, কী নিয়ে তুমি চিন্তিত?
ছাত্র: পরীক্ষার চাপ, স্যার। যদি আমরা ভালো মার্কস না পাই, আমরা নিজেদের বলি, ‘আমায় ভালো করতে হবে, নাহলে আমাদের ভবিষ্যত নষ্ট হবে।’
প্রধানমন্ত্রী: আর তুমি কী মনে করো, এর সমাধান কী?
ছাত্র: মার্কস আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে না, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: তাহলে মার্কস গুরুত্বপূর্ণ নয়?
ছাত্র: জ্ঞানই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রধানমন্ত্রী: আচ্ছা, তুমি কি বলছ, টিউশন ও পরীক্ষা অপ্রয়োজনীয়?
ছাত্র: না, স্যার! আমি মনে করি পরীক্ষা শুধু আমাদের যাত্রার একটি অংশ, গন্তব্য নয়।
প্রধানমন্ত্রী: কিন্তু সমস্যা হলো, তুমি এটা বুঝলেও, তোমার পরিবার সবসময় এভাবে দেখে না।
প্রধানমন্ত্রী: তাহলে তুমি কী করবে?
ছাত্র: স্যার, আমরা শুধু পরিশ্রমের উপর মনোযোগ দেবো এবং বাকিটা ঈশ্বরে ছেড়ে দেবো।
প্রধানমন্ত্রী: আকাঙ্ক্ষা, তুমি একদম ঠিক বলেছো। দুর্ভাগ্যবশত, আমাদের সমাজের মগজে এতটাই ঢুকে গেছে যে, যদি একজন ছাত্র স্কুলে নির্দিষ্ট মার্কস না পায়, দশম বা দ্বাদশ পরীক্ষা ভালো না দেয়, মনে হয় তার পুরো জীবনই ঝুঁকিতে।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: আর এজন্যই তো এত চাপ আছে—বাড়িতে চাপ, পরিবারে চাপ—সর্বদা টেনশন!
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: তো, বলছ তুমি তোমার মা-বাবাকে বুঝাতে পারছ না? পরীক্ষার মাত্র দুই মাস বাকি, আর যদি মা তোমাকে পরামর্শ দিতে শুরু করে, তুমি মনে মনে বলতে চাও, ‘মা, আবার আরেকটা লেকচার, না!’ কিন্তু সেটা বলতে পারো না, তাই না? তোমাকে নিজের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।
এর মানে তোমার উপর চাপ রয়েছে—তোমার চারপাশের সবাই বলছে, এটা করো! ওটা করো! তোমার কি তাই লাগে?
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: তোমাদের মধ্যে কতজন ক্রিকেট খেলা দেখো টিভিতে যখন ম্যাচ চলে? কতজন?
ছাত্র: স্যার, আমরা সবাই! হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: নিশ্চয় লক্ষ্য করেছ, যখন ম্যাচ চলছে, তখন স্টেডিয়াম কাঁপছে কোলাহলে।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: কী শব্দ শোনো তখন?
ছাত্র: স্যার, পুরো ভিড় চিৎকার করছে!
প্রধানমন্ত্রী: কেউ কেউ চিৎকার করছে ‘সিক্সার! সিক্সার!’ আবার কেউ বলছে ‘ফোর!’
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার! কেউ সিক্স চাইছে।
প্রধানমন্ত্রী: এখন বলো, ব্যাটসম্যান কী করছে? সে কি ভিড়ের শব্দ শোনে, না কি বলের দিকে মনোযোগ দেয়?
ছাত্র: সে বলের দিকে মনোযোগ দেয়।
প্রধানমন্ত্রী: ঠিক! যদি সে ভাবতে শুরু করে, ‘ওহ, তারা সিক্স চাইছে, আমাকে সিক্স মারতে হবে!’—তাহলে কী হবে?
ছাত্র: সে আউট হয়ে যাবে!
প্রধানমন্ত্রী: ঠিক! এর মানে ব্যাটসম্যান চাপকে তার উপর প্রভাবিত করতে দেয় না।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: তার পুরো মনোযোগ বলের উপর থাকে। ঠিক তেমনি, যদি তুমি চাপকে তোমাকে কাবু করতে না দাও এবং শুধু তোমার পড়াশোনার উপর মনোযোগ দাও—‘আজ আমি এইটুকু পড়ব, এবং আমি তা করব!’—তাহলে তুমি সহজেই সেই চাপ থেকে মুক্তি পাবে।
ছাত্র: স্যার আমাদের প্রশ্নের উত্তর খুব ভালোভাবে দিয়েছেন! তিনি আমাদের বুঝিয়েছেন কিভাবে পরীক্ষার চাপকে নিতে হবে না এবং অনেক কিছু শিখিয়েছেন।
ছাত্র: যদি তোমার লক্ষ্য স্পষ্ট হয়, তাহলে কোনো বিভ্রান্তি বা প্রতিবন্ধকতা তোমাকে থামাতে পারবে না। তোমাকে সবসময় লক্ষ্যস্থির রাখতে হবে।
ছাত্র: তিনি বললেন, যেকোনো চাপ থাকুক, তাকে খোলাখুলি গ্রহণ করো—কিন্তু তার উপর স্থায়ীভাবে মনোযোগ দিও না!
প্রধানমন্ত্রী: সবসময় নিজেকে দায়বদ্ধ রাখতে হবে।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: নিজেকে চ্যালেঞ্জ করতে হবে সর্বদা।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: যদি তুমি শেষবার ৩০ নম্বর পেয়েছিলে, এবার ৩৫-এর লক্ষ্য রাখো। নিজেকে চ্যালেঞ্জ করো! অনেক মানুষ নিজের লড়াই লড়ে না। তুমি কি কখনো নিজেই লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছ?
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: যদি তুমি নিজেকে চ্যালেঞ্জ করতে চাও, প্রথমে নিজেকে চেনা দরকার।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: তুমি কি কখনো নিজেকে জিজ্ঞেস করেছ, "আমি জীবনে কী হতে পারি? আমি কী করতে সক্ষম? কী সত্যিই আমাকে সন্তুষ্টি দেবে?" এই প্রশ্নগুলো প্রায়ই করা উচিত।
সেটা যেন newspaper এ একদিন পড়ে ঠিক করা না হয়, ‘ওহ, এটা ইন্টারেস্টিং!’—আর পরের দিন টিভিতে কিছু দেখেও বলা, ‘ওটাও ভালো লাগছে!’ তোমাকে ধীরে ধীরে মনোযোগ দিতে হবে একটানা লক্ষ্য স্থির করতে।
বেশিরভাগ মানুষ সহজেই বিভ্রান্ত হয়, এবং তাদের মন নানাদিকে বিভ্রান্ত থাকে।
ছাত্র: এটা ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়।
প্রধানমন্ত্রী: ঠিক! কেবল দৃষ্টি স্পষ্ট থাকলে তুমি ঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবে, পরবর্তী চ্যালেঞ্জ কী নেবে। চেষ্টা করবে?
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
ছাত্র: স্যার, আমার আপনার কাছে একটি প্রশ্ন আছে! আপনি এমন একজন প্রখ্যাত বিশ্ব নেতা, এবং বহু গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন। আমাদের জন্য দুই-তিনটি নেতৃত্বের শিক্ষা ভাগ করে নিতে পারেন কি, যা আমরা জীবনে এগিয়ে যেতে ব্যবহার করতে পারি?
প্রধানমন্ত্রী: বিরাজ!
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: বিহারের ছেলে হলে রাজনীতি নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকবে না, এটা অসম্ভব! বিহারের মানুষ অসাধারণ বুদ্ধিমান। কেউ কি নেতৃত্বের বিষয় নিয়ে ভাবছে?
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার! আমি ভাবছি। কিন্তু কিভাবে ব্যাখ্যা করব?
প্রধানমন্ত্রী: যেভাবেই ব্যাখ্যা করতে চাও করো।
ছাত্র: কখনো কখনো, যখন শিক্ষক আমাদের ক্লাস মনিটর নিযুক্ত করেন বা শৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্ব দেন, ছাত্ররা সবসময় মানে না। তাদের বোঝানোর কোনো উপায় থাকা উচিত। শুধু আদেশ দেওয়া যাবে না, ‘বসো! বসো!’ বা নাম লিখে হুমকি দেওয়া যাবে না। এতে তারা আরও উত্তেজিত হবে। তাহলে, কীভাবে তাদের বোঝানো যায় যাতে শৃঙ্খলা বজায় থাকে?
প্রধানমন্ত্রী: তুমি কি হরিয়ানা থেকে এসেছ?
ছাত্র: না, স্যার! আমি পাঞ্জাব—চণ্ডীগড় থেকে।
প্রধানমন্ত্রী: চণ্ডীগড়!
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: নেতৃত্ব মানে কুর্তা-পায়জামা পরা, জ্যাকেট পরে বড় মঞ্চে চমকপ্রদ বক্তৃতা দেওয়া নয়। তোমাদের গ্রুপের মধ্যে কেউ কেউ স্বাভাবিকভাবেই নেতা হয়ে ওঠে। কাউকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিযুক্ত করতে হয় না, কিন্তু যখন তারা বলে ‘চল, যাই’, অন্যরাও অনুসরণ করে। নেতৃত্ব স্বাভাবিকভাবেই সৃষ্টি হয়।
এটি অন্যকে শুধরে দেওয়ার বিষয় নয়—নিজেই উদাহরণ স্থাপন করার ব্যাপার।
উদাহরণস্বরূপ, যদি তুমি মনিটর হয়ে থাকো এবং দেরিতে আসো কিন্তু প্রত্যেকের সময়মতো আসা আশা করো, তারা কি তোমার কথা শুনবে?
ছাত্র: না, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: যদি হোমওয়ার্ক করতে হয় এবং মনিটর তার কাজ ইতিমধ্যেই শেষ করেছে, অন্যরা অনুপ্রাণিত হবে। যদি মনিটর ক্লাসমেটকে বলে, ‘তোমার হোমওয়ার্ক হয়নি? ঠিক আছে, আমি সাহায্য করি—চল!’—এটি উদাহরণ স্থাপন করে।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: কাউকে ডেকে শাসন করার পরিবর্তে, সাহায্যের হাত বাড়াও। যখন তুমি অন্যকে সহায়তা করো এবং তাদের সমস্যাগুলো বুঝতে চাও—যখন তুমি কাউকে জিজ্ঞেস করো, ‘আজ তোমার অবস্থা কেমন? জ্বর আছে কি? গত রাতে ভালো ঘুম হয়নি?’—তারা অনুভব করতে শুরু করে যে মনিটর সত্যিই তাদের যত্ন নেয়, শুধু নিয়ম চাপাচ্ছে না।
তুমি সম্মান দাবি করতে পারো না…
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: …তোমাকে সম্মান অর্জন করতে হবে!
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার! হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: কিন্তু এটা কিভাবে অর্জন করা যায়?
ছাত্র: আগে নিজেকে পরিবর্তন করে!
প্রধানমন্ত্রী: একদম! আমাদের নিজেকে পরিবর্তন করতে হবে।
ছাত্র: মানুষ আমাদের, আমাদের আচরণের মাধ্যমে চিনবে।
প্রধানমন্ত্রী: ঠিক! তোমার আচরণ স্বাভাবিকভাবেই অন্যদের প্রভাবিত করবে।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: নেতৃত্ব আরোপ করা যায় না। তোমার চারপাশের মানুষ কি তোমাকে মানছে? যদি তুমি শুধু জ্ঞান ঢেলে দাও, তারা মানবে না। মানুষ তোমাকে কেবল তোমার কাজের ভিত্তিতে মান্য করবে, কথার উপর নয়।
উদাহরণস্বরূপ, যদি তুমি পরিচ্ছন্নতা নিয়ে বক্তৃতা দাও কিন্তু নিজে তা মানো না…
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: …তাহলে তুমি নেতা হতে পারবে না।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: নেতা হতে হলে, টিমওয়ার্ক শিখতে হবে। ধৈর্য্য অপরিহার্য। প্রায়শ:ই, যখন আমরা কোনো কাজ দিই এবং কেউ তা শেষ করতে ব্যর্থ হয়, আমরা সঙ্গে সঙ্গে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাই।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: আমরা তাদের প্রশ্ন করি—কেন করনি?—কিন্তু এটা নেতৃত্ব নয়।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: কেউ কাজ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়লে, তাদের কষ্ট বোঝার চেষ্টা করো। কোথাও সংস্থান কম থাকলে, প্রকৃত নেতা নিশ্চিত করে যে তা প্রয়োজনীয় স্থানে দেওয়া হয়েছে।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: একজন নেতা হিসেবে, তোমাকে সর্বদা তোমার দলের পাশে থাকতে হবে। তারা কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে, সর্বপ্রথমে তোমার পৌঁছানো উচিত। এভাবে তাদের তোমার উপর বিশ্বাস বাড়বে। শেষ পর্যন্ত, তারা মনে করবে যে তারা নিজেরাই করেছে—যদিও প্রকৃতপক্ষে তুমি ৮০% সাহায্য করেছ।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: কিন্তু ‘আমি করেছি’ সেই অনুভূতি তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে, আর এই আত্মবিশ্বাস তোমার নেতৃত্বকে শক্তিশালী করবে।
তুমি হয়তো শিশুবয়সে এই গল্প শুনেছ—একটি শিশু এবং তার বাবা মেলায় গিয়েছেন। বাবা বললেন, ‘আমার হাত ধর!’ কিন্তু শিশুটি বলল, ‘না, তুমি আমার হাত ধর!’
প্রথমে কেউ ভাবতে পারে, এ কেমন ধরনের ছেলে? বাবার হাত ধরার পরিবর্তে বাবাকে তার হাত ধরতে বলছে? কিন্তু পরে শিশু ব্যাখ্যা করল:
"বাবা, যদি আমি তোমার হাত ধরি, তা যে কোনো মুহূর্তে ছিটকে যেতে পারে… কিন্তু তুমি যদি আমার হাত ধর, আমি জানি তুমি কখনও ছাড়বে না।"
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: সেই বিশ্বাস—অটল আস্থা—নেতৃত্বের অন্যতম বড় শক্তি, তাই না?
ছাত্র: আমি প্রীতম দাস, ১২ ক্লাস-এর ছাত্র, পিএমশ্রী আর্য হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল, ত্রিপুরা…
প্রধানমন্ত্রী: কোথা থেকে?
ছাত্র: বেলোনিয়া, দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলা!
প্রধানমন্ত্রী: তাহলে তুমি কীভাবে এখানে এলে?
ছাত্র: এটি ছিল আমার আবেগ, স্যার। আমি আপনাকে দেখার জন্য, কিছু শেখার জন্য, কিছু বোঝার জন্য এসেছিলাম—এটুকুই!
প্রধানমন্ত্রী: কিভাবে নির্বাচিত হলে? ঘুষ দিতে হয়েছে কি?
ছাত্র: না, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: তাহলে কীভাবে হলো?
ছাত্র: স্যার, ত্রিপুরায় ঘুষ কাজ করে না।
প্রধানমন্ত্রী: কাজ করে না ?
ছাত্র: আমি এখানে এসেছি আমার রাজ্যকে উপস্থাপন করতে এবং আমার ভাবনা আপনার কাছে প্রকাশ করতে।
প্রধানমন্ত্রী: ঠিক আছে, আমি আমার মনে যা আছে তা শেয়ার করব, আর তুমি তোমার হৃদয়ের কথা বলো।
ছাত্র: স্যার, আমার আপনার কাছে একটি প্রশ্ন আছে। আমাদের বোর্ডের বছরগুলোতে, ১০ম বা ১২শ শ্রেণীতে, আমরা যে শখ বা যে কাজগুলো উপভোগ করি—যেমন নাচ, বাগান করা, ছবি আঁকা—আমার পরিবার প্রায়ই তা করতে নিরুৎসাহিত করে। তারা বলে, এই কাজগুলো কোনো কাজে আসবে না। বোর্ড পরীক্ষার পরও তারা জোর দেয় যে আমাদের শুধুমাত্র পড়াশোনার দিকে মনোযোগ দিতে হবে এবং কেরিয়ারের দিকে এগোতে হবে। তারা বিশ্বাস করে এই কাজগুলোর কোনো ভবিষ্যৎ নেই এবং সফল হওয়ার একমাত্র উপায় হলো একাডেমিক।
প্রধানমন্ত্রী: তাহলে তুমি কি নাচ জানো?
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার! তবে আমাকে ছোটবেলায় শেখানো হয়নি কারণ আমাদের গ্রামে ছেলেরা নাচ করলে মানুষ ভালভাবে তা নেয় না।
প্রধানমন্ত্রী: দেখাও একটু!
ছাত্র: এরকম… আর এরকম! এছাড়াও বাংলা ‘ধুনুচি’ নাচ আছে, যা এরকম… আরেকটি এরকম।
প্রধানমন্ত্রী: নাচের সময় কেমন লাগে?
ছাত্র: এটি আমাকে অন্তর থেকে সুখ ও তৃপ্তি দেয়।
প্রধানমন্ত্রী: নাচের পরে কি তুমি ক্লান্ত বোধ করো, নাকি ক্লান্তি দূর হয়ে যায়?
ছাত্র: না, স্যার, ক্লান্তি চলে যায়।
প্রধানমন্ত্রী: অর্থাৎ তোমার বাবা-মাকে বোঝাতে হবে এবং জিজ্ঞেস করতে হবে, যদি কেউ সারাদিন চাপের মধ্যে থাকে, তাহলে তার কি দিনটা ভাল হবে?
ছাত্র: না, স্যার।
প্রধানমন্ত্রী: তুমি কি মনে করো না, আমাদের কিছু সময় বিশ্রাম নেওয়া উচিত? ধরা যাক, তোমার বাড়িতে একটি প্রিয় কুকুর আছে—যাকে তুমি খুব ভালোবাসো এবং ছোটবেলা থেকে পালন করছ। এখন, তুমি ১০ম শ্রেণিতে পৌঁছালে, বাবা-মা হঠাৎ বলে, ‘কুকুরের সাথে আর সময় কাটাবে না। আমরা দেখভাল করব, তুমি পড়াশোনায় মনোযোগ দাও।’ এতে কি পড়াশোনা সহজ হবে, নাকি তুমি অশান্ত বোধ করবে?
ছাত্র: অশান্ত বোধ করব।
প্রধানমন্ত্রী: ঠিক! তাই তুমি একদম সঠিক—বোঝাতে হবে যে আমরা রোবটের মতো বাঁচতে পারি না। আমরা মানুষ। শেষ পর্যন্ত, আমরা কেন পড়াশোনা করি? জীবনের পরবর্তী স্তরে এগোনোর জন্য।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: আমরা প্রতিটি স্তরে আমাদের সামগ্রিক উন্নতির জন্য পড়াশোনা করি। যখন তুমি শিশু ক্লাসে ছিলে, তখন তোমাকে বিভিন্ন কার্যক্রম দেওয়া হতো। তখন তুমি হয়তো ভেবেছিলে, কেন আমাদের এত কঠোর পরিশ্রম করানো হচ্ছে? কেন তারা ফুল সম্পর্কে শেখাচ্ছে? আমি তো মালি হতে চাই না!
এই কারণেই আমি সবসময় ছাত্রছাত্রী, তাদের পরিবার এবং শিক্ষকদের বলি, যদি শিশুদের চার দেওয়ালের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয় এবং বই দিয়ে বন্দি করা হয়, তারা কখনো সত্যিকারের বড় হতে পারে না। তাদের খোলা আকাশ প্রয়োজন। তাদের নিজেদের আগ্রহ অন্বেষণের জন্য স্থান প্রয়োজন। যদি তারা তাদের আবেগের পিছনে মনোযোগ দিয়ে এগোয়, তারা পড়াশোনায়ও সফল হবে।
পরীক্ষা জীবনের সব কিছু নয়। সেই মানসিকতায থাকা উচিত নয়। তুমি যদি এটি বুঝতে পারো, আমি নিশ্চিত তুমি তোমার পরিবারকে এবং এমনকি শিক্ষকদেরও বোঝাতে পারবে।
প্রধানমন্ত্রী: বৈভব, তোমার অভিজ্ঞতা কী?
ছাত্র: স্যার, আপনি ঠিক বলছেন। যখন মানুষকে শুধুমাত্র পড়াশোনার দিকে মনোযোগ দিতে বাধ্য করা হয়, তারা আগ্রহ হারায়। কিন্তু আমাদের মধ্যে…
প্রধানমন্ত্রী: হ্যাঁ?
ছাত্র: যদি তুমি কেবল বইয়ের পোকা হয়ে যাও, তুমি সত্যিই জীবনকে অনুভব করতে পারবে না!
প্রধানমন্ত্রী: তাহলে কি আমাদের কেবল বইয়ের বাইরেই যেতে হবে?
ছাত্র: আমরা বই পড়ব কারণ তাতে জ্ঞান বাড়ে, কিন্তু আমাদের নিজেদের জন্যও সময় বের করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী: আমি বলছি না যে বই পড়া উচিত নয়। বরং, বই বিস্তৃতভাবে পড়া উচিত এবং যতটা সম্ভব জ্ঞান অর্জন করা উচিত। তবে, পরীক্ষাই সব কিছু নয়। জ্ঞান এবং পরীক্ষা দুটি ভিন্ন জিনিস।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: এগুলো সম্পূর্ণ আলাদা।
ছাত্র: তিনি আমাদের অনেক কিছু শিখিয়েছেন—জীবন সম্পর্কে এত কিছু। তিনি দেখিয়েছেন কিভাবে পরীক্ষার চাপ সামলাতে হয়, কিভাবে চাপকে দূরে রাখতে হয়, এবং পরীক্ষার প্রতি সঠিক মনোভাব কীভাবে নিতে হয়। তিনি আমাদের সব দিকেই পথপ্রদর্শক।
ছাত্র: তিনি অত্যন্ত ইতিবাচক, এবং সেই ইতিবাচকতা আমাদের মধ্যেও প্রবাহিত করেছেন।
ছাত্র: তিনি প্রতিটি প্রজন্মকে শক্তিশালী করছেন।
ছাত্র: আজ তিনি যা কিছু বলেছেন—আমি তা আমার জীবনে প্রয়োগ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব!
প্রধানমন্ত্রী: বসো! হ্যাঁ, হ্যাঁ—পরের ছাত্র এগিয়ে আসুক এবং তাদের প্রশ্ন করুক।
ছাত্র: নমস্কার, স্যার! আমার নাম প্রীতি বিসওয়াল। আমি আমার ক্লাসে লক্ষ্য করেছি অনেক ছাত্র অত্যন্ত প্রতিভাবান এবং পরিশ্রমী, তবুও তারা তাদের যোগ্য সাফল্য অর্জন করতে পারে না। আপনি তাদের কি পরামর্শ দেবেন?
প্রধানমন্ত্রী: পরামর্শ কেবল দেওয়া উচিত নয়—দয়া করে বসো!
প্রধানমন্ত্রী: যদি আমি তোমাকে পরামর্শ দিই, তুমি সঙ্গে সঙ্গে ভাবতে শুরু করবে, “তিনি কেন আমাকে এটি বললেন? তার মানে কী? তিনি কি আমার কোনো ত্রুটি দেখছেন?”
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: এর মানে হলো মানুষের মানসিকতা হয়ে যায় ' কাঠিন্য-মুখী’, যা সত্যিকারের সমর্থন দেওয়াকে কঠিন করে তোলে। এর পরিবর্তে, ত্রুটির উপর মনোযোগ দেওয়ার চেয়ে, তাদের ভালো গুণাবলী চিহ্নিত করা অনেক কার্যকর।
যদি তুমি কাউকে পাঁচ থেকে সাত দিন পর্যবেক্ষণ করো, তুমি নিশ্চয়ই কিছু ইতিবাচক গুণ লক্ষ্য করবে—সম্ভবত কেউ ভালো গান গায়, পরিচ্ছন্নভাবে পোশাক পরিধান করে, বা অন্য কোনো প্রশংসনীয় বৈশিষ্ট্য আছে। একবার তুমি এটি স্বীকার করো, তাদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করো। যখন তুমি তাদের শক্তি স্বীকার করবে, তারা অনুভব করবে যে তুমি সত্যিই তাদের প্রতি আগ্রহী এবং তাদের দক্ষতাকে মূল্য দিচ্ছ।
এরপর, যদি তুমি বলো, " বন্ধু, তুমি এত পরিশ্রম করছ, কিন্তু পরীক্ষার সময়ে কী হয়? কেন তুমি কষ্ট পাও?” তারা বলতে পারে, “আমি পড়াশোনায় ভালো না। জানি না কেন ।”
সেই মুহূর্তে তুমি উৎসাহ দিতে পারো: “আমার ঘরে এসো; আমরা একসঙ্গে পড়াশোনা করি।”
এছাড়াও, তুমি নিশ্চয় লক্ষ্য করেছ যে বেশিরভাগ শিক্ষক পুরো বছর শিক্ষা দেন, কিন্তু যখন পরীক্ষার সময় আসে, তারা শুধু প্রশ্নোত্তর লিখতে বলেন।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: আমার বিশ্বাস সবসময় ছিল যে, যেকোনো বয়সে, লেখার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। যারা কবিতা লেখে, যেমন বিরাজ এবং আকাঙ্ক্ষা তাদের কবিতা পড়েছে, তারা আসলে তাদের চিন্তাকে লিপিবদ্ধ করছে বলে আমি মনে করি। আহমেদাবাদের কিছু স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়েছিল। একজন শিশুর বাবা-মা আমাকে চিঠি লিখেছিলেন, বললেন তাদের সন্তানকে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, “কেন তাকে বহিষ্কার করা হচ্ছে?” তারা বলল, শিশু মনোযোগ দিচ্ছে না। আশ্চর্যজনকভাবে, পরে স্কুল একটি টিঙ্কারিং ল্যাব শুরু করল, এবং সেই শিশু তার অধিকাংশ সময় ল্যাবে কাটাতে থাকল। একটি রোবোটিক্স প্রতিযোগিতায় স্কুল টিম প্রথম স্থান অর্জন করল। সেই শিশুটিই রোবটটি তৈরি করেছিল! সেই শিশু যাকে তারা বহিষ্কার করতে যাচ্ছিল, সে রোবোটিক্সে সেরা হয়ে উঠল। এর মানে তার বিশেষ প্রতিভা ছিল। একজন শিক্ষকের কাজ হলো সেই প্রতিভা চিহ্নিত করা এবং বিকাশ ঘটানো। আমি একটি পরীক্ষা তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করি—আজ কি এটি করব?
ছাত্রছাত্রীরা: হ্যাঁ, আমরা করব!
প্রধানমন্ত্রী: তোমাদের শৈশব থেকে এখন পর্যন্ত সমস্ত বন্ধুদের কথা ভাবো—প্রায় ২৫ থেকে ৩০ জন। তাদের পুরো নাম লিখে দেখো, বাবার নামসহ। সম্ভবত তুমি ১০ জনের নাম মনে রাখতে পারবে। এরপর তাদের বাবা-মা এবং অন্যান্য পরিবারের সদস্যদের নাম লেখো। তুমি বুঝতে পারবে সংখ্যা আরও কমে যায়। এটি দেখায় যে এমনকি যাদের তুমি ভালো বন্ধু মনে করো, তাদের সম্পর্কেও তুমি খুব কমই জানো। সবকিছুই মুখস্থ মাত্র। এখন নিজেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন করো: “আমি বৈভবের সঙ্গে তিন দিন থেকেছি, কিন্তু আমি কি তার কোনো নির্দিষ্ট ভালো গুণাবলী তালিকাভুক্ত করতে পারি?” যদি তুমি এই অভ্যাস গড়ে তোলো, তুমি স্বাভাবিকভাবেই সব কিছুর ইতিবাচক দিক খুঁজে পাবে। আমি বিশ্বাস করি এটি তোমাদের জন্য উপকারী হবে।
ছাত্র: স্যার, আমার প্রশ্ন হলো, যখন পরীক্ষা নিকটবর্তী হয়, ছাত্ররা সর্বাধিক পড়াশোনা এবং সেরাটা দেওয়ার চাপ অনুভব করতে শুরু করে। সেই সময়ে, খাওয়া, ঘুম, এবং দৈনন্দিন রুটিন বিঘ্নিত হয়। স্যার, আপনি আপনার সারাদিন খুব ফলপ্রসূভাবে পরিচালনা করেন। স্যার, আপনি ছাত্রদের কী পরামর্শ দেবেন যাতে তারা তাদের পুরো দিন এবং পড়াশোনা দক্ষভাবে পরিচালনা করতে পারে?
প্রধানমন্ত্রী: সর্বপ্রথম, প্রত্যেকেরই তো ২৪ ঘণ্টা আছে, তাই না?
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: তুমি তো জানো, তাই না?
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: কেউ কেউ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অসাধারণ কাজ করে যায়, আবার কেউ সারাদিন কাটিয়েও মনে করে কিছুই করতে পারেনি।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: মূল সমস্যা হলো, তাদের সময়ের সঠিক ব্যবস্থাপনা ও এটি কিভাবে ব্যবহার করতে হবে তা বোঝার অভাব।
ছাত্র: ঠিক!
প্রধানমন্ত্রী: যদি কোনো বন্ধু এসে যায়, তারা সময় নষ্ট করে কেবল গল্পে মগ্ন হয়ে।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: যদি ফোন আসে, তারা সেটার সঙ্গেই লেগে থাকে, কিন্তু সময়কে দক্ষভাবে ব্যবহার করার কোনো ধারণা নেই। প্রথমেই ভাবতে হবে আমাদের সময়ের কথা—কিভাবে সর্বোত্তমভাবে ব্যবহার করা যায়? আমি সবসময় আমার সময় নিয়ে সচেতন থাকি এবং ফালতু কাজে সময় নষ্ট হতে দিই না। এর মানে এই নয় যে আমি একটানা এক কাজ থেকে অন্য কাজে দৌড়াই। আমি আমার কাজগুলো কাগজে পরিকল্পনা করি সময়ের ব্যবস্থাপনার মতো এবং পরে দেখি আমি তা সম্পন্ন করেছি কিনা। আগামীকাল তুমি তিনটি কাজ সম্পন্ন করতে চাও, তা লিখে নাও—যা কিছুই হোক না কেন, সেই তিনটি কাজ করো। এরপর, পরের দিন দেখো তুমি কি তা সম্পন্ন করেছ!! প্রায়শই হয় যে আমরা যেসব বিষয় পছন্দ করি, সেখানে বেশি সময় ব্যয় করি এবং যেগুলো অপছন্দ করি তা পুরোপুরি উপেক্ষা করি।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার! এটা সত্যি!
প্রধানমন্ত্রী: প্রথমে, তোমাকে এই পদ্ধতি উল্টো করতে হবে।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: নিজেকে চ্যালেঞ্জ করো। ভাবো, “এই ভূগোলের কী হয়েছে? এটা আমার সঙ্গে সহযোগিতা করছে না কেন? আমি এটাকে জয় করব।” এটা জয়ের মানসিকতা তৈরি করবে। গণিত হোক—“চলো, লড়াই করি। আমি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত।” কখনো হাল ছাড়বে না বা মাথা নত করবে না।
ছাত্র: সবার ২৪ ঘণ্টা আছে, কিন্তু কেউ খুব ফলপ্রসূ, আবার কেউ তা চ্যাটিং করে নষ্ট করে, যেমন আপনি বললেন। তাই আমাদের সময়ের সঠিক ব্যবস্থাপনা দরকার যাতে কাজ সময়মতো শেষ হয় এবং সারাদিন উৎপাদনশীল থাকা যায়।
ছাত্র: স্যার, প্রথমে, যেহেতু আপনি একটি দুর্দান্ত উত্তর লদিলেন, আমরা আপনার জন্য হাততালি দিতে চাই, তবে একটি বিশেষ “ফুলের তালি” নামে।
প্রধানমন্ত্রী: তুমি জানো কেন এটা করা হয়?
ছাত্র: স্যার, এটি এমন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য, যারা শুনতে পারে না।
প্রধানমন্ত্রী: তারা হাতে হাত নাড়িয়ে তাদের প্রশংসা দেখায়।
ছাত্র: স্যার, আমাদের মনে অনেক ভাবনা, সম্ভাবনা, এবং প্রশ্ন আসে। এগুলো পরীক্ষার সময় মনোযোগ ভঙ্গ করে। স্যার, এমন পরিস্থিতিতে আমরা কিভাবে মন শান্ত রাখতে পারি?
প্রধানমন্ত্রী: দেখো, আমি বিশ্বাস করি তুমি প্রকৃতপক্ষে বিচলিত হও না।
ছাত্র: স্যার, একটু হয়, কারণ…
প্রধানমন্ত্রী: আমি মনে করি না তুমি সত্যিই বিচলিত হও।
ছাত্র: স্যার, কিছুটা বিভ্রান্তি ঘটে।
প্রধানমন্ত্রী: আমি তোমার আত্মবিশ্বাস দেখছি। আজ সকাল থেকে তোমার আত্মবিশ্বাস অসাধারণ।
ছাত্র: কিন্তু তা সত্ত্বেও, স্যার, একটি বিষয় নিশ্চিত যে পরীক্ষা কঠিন…
প্রধানমন্ত্রী: এর মানে তুমি নিজেকে পুরোপুরি জানো না। হয়তো তুমি কেবল বন্ধুদের সামনে বলতে চাও, “হ্যাঁ, এটা কঠিন।” দশম শ্রেণির ছাত্ররা প্রায়শই একে অপরের সঙ্গে এভাবে কথা বলে—“আমি গতকাল পড়াশোনা করতে পারিনি, ঘুম পেয়েছিল” অথবা “গতকাল আমার মেজাজ ঠিক ছিল না।” তারা এমন কথাও ফোনে বন্ধুদের সঙ্গে বলে।
ছাত্র: হ্যাঁ!
প্রধানমন্ত্রী: তাহলে কিভাবে তুমি মনোযোগ দিতে পারবে?
প্রধানমন্ত্রী: সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস কী?
ছাত্র: এখনকার মুহূর্ত!
প্রধানমন্ত্রী: যদি বর্তমান মুহূর্ত চলে যায়, তা অতীত হয়ে যায়, যা আর তোমার হাতে নেই। কিন্তু তুমি যদি সত্যিই এটি বাঁচো…
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: তাহলে এটা তোমার জীবনের অংশ হয়ে যায়। কিন্তু কখন তুমি এভাবে বাঁচতে পারবে? দেখো, বাতাস এখন কত সুন্দরভাবে বইছে। কিন্তু তুমি কি লক্ষ্য করেছ? সুন্দর একটা ফোয়ারা আছে। যখন আমি এটি উল্লেখ করি, তখন তুমি হঠাৎ করে বুঝতে পারো, “ওহ হ্যাঁ…”
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: বাতাস তো আগে থেকেও ছিল।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: কিন্তু তুমি লক্ষ্য করোনি।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: তোমার মন অন্য কোথাও ছিল।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
ছাত্র: আমার প্রশ্ন হলো, স্যার, এই সময়ে ছাত্ররা পড়াশোনার সময় প্রায়ই বিষণ্ণ হয়, উদবিগ্ন হয়। আমরা কিভাবে এটি কাটিয়ে উঠতে পারি, স্যার?
প্রধানমন্ত্রী: সমস্যা কোথা থেকে শুরু হয়? ধীরে ধীরে তুমি পরিবর্তন লক্ষ্য করবে—তুমি বাড়িতে কথা বলতে আনন্দ পাও না? আগে তুমি ছোট ভাইয়ের সঙ্গে অনেক গল্প করতে!
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: এখন মনে হয় সে তোমাকে বিরক্ত করছে—“চলে যাও, আমাকে একা থাকতে দাও।” আগে তুমি স্কুল থেকে দৌড়ে এসে মা’কে সব কিছু বলতে!
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: আর এখন তুমি মা’র সঙ্গে কিছু শেয়ার করো না—স্রেফ বলো, “ভুলে যাও।” তুমি বাড়ি এসে কিছু সময় বই পড়ো, তারপর ছেড়ে দাও। এই ধরণের আচরণ ধীরে ধীরে তোমাকে আলাদা করে দেয়। ধীরে ধীরে তুমি নিজেকে সংকুচিত করে ফেলো। শেষ পর্যন্ত এটি তোমাকে বিষণ্ণতার দিকে নিয়ে যেতে পারে। তোমাকে খোলাখুলিভাবে তোমার সন্দেহ বা দ্বিধা শেয়ার করতে হবে। যদি তুমি তা প্রকাশ না করো এবং সবকিছু ভিতরে রাখো, এটি শেষ পর্যন্ত একটি বড় বিস্ফোরণ ঘটাবে। আগে আমাদের সামাজিক কাঠামোর একটি বড় সুবিধা ছিল। পরিবার নিজেই যেন একটি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। কখনও তুমি তোমার দাদার সঙ্গে খোলাখুলিভাবে কথা বলতে, কখনও দিদিমার সঙ্গে, কখনও কাকু, কাকিমা, দাদা/ দিদি, বা বোন/ভাই—সবসময় কাউকে না কাউকে শেয়ার করার জন্য পাওয়া যেত। এখন এটা যেন প্রেসার কুকারের সিটির ফিসফিস…
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: প্রেসার কুকার ফেটে যায় না
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: একইভাবে, এটা হলো তোমার অনুভূত চাপ
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: আর তারপর, অজান্তে আলাপের সময়, তোমার ঠাকুরদা বলতেন, “না, এটা কোরো না।”
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: এবং আমরা মনে করতাম, “হ্যাঁ, আমি করব না।” তারপর তোমার দাদু বা কাকু বলতেন, “সাবধান, পড়ে যাবে,” এবং তা শান্তির অনুভূতি দিত।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: মানুষের স্বভাবই হলো যত্ন এবং মনোযোগ চাওয়া। যদি আমি শুধু এখানে এসে দীর্ঘ বক্তৃতা দিতাম, তুমি হয়তো ভাবতে, “এই প্রধানমন্ত্রী নিজেকে কি ভাবছেন?” কিন্তু আমি সত্যিই তোমাদের গান, তোমাদের চিন্তা, এবং তোমাদের গ্রামের কথা জানতে চাই। এতে তোমরা মনে করবে, “তিনিও আমাদেরই মতো। চল, কথা বলি।” তখন কোনো চাপ থাকবে না, তাই না? বিষণ্ণতার অন্যতম বড় কারণ হলো প্রকৃত যত্নের অভাব। দ্বিতীয়ত, আগে শিক্ষকেরা ছাত্রছাত্রীদের জন্য গভীরভাবে উৎসাহী ছিলেন। আমি মনে করি যখন আমি ছাত্র ছিলাম, আমার শিক্ষকরা আমার জন্য খুব পরিশ্রম করতেন, যদিও আমার হাতের লেখা খুব খারাপ ছিল। তাঁরা সত্যিই তা উন্নত করার চেষ্টা করতেন। হয়তো তাঁরা নিজের হাতের লেখা আমার চেয়ে আরও ভালো করেছেন! (হাসি) কিন্তু তাঁদের প্রচেষ্টা আমার হৃদয় স্পর্শ করেছিল—তাঁরা সত্যিই যত্ন নিয়েছিলেন।
ছাত্র: স্যার, আমার শেষ প্রশ্ন আছে
প্রধানমন্ত্রী: হ্যাঁ, বলো।
ছাত্র: বাবা-মা'র চাপের কারণে অনেক ছাত্রকে এমন কেরিয়ার বা স্ট্রিমে ঠেলে দেওয়া হয় যেটাতে তাদের কোনো আগ্রহ নেই। এই ধরনের ছাত্ররা কিভাবে তাদের আবেগকে অনুসরণ করতে পারে, বাবা-মাকে আহত না করে?
প্রধানমন্ত্রী: বাবা-মায়ের সাধারণত কিছু প্রত্যাশা থাকে, কিন্তু তা পূরণ না হলে তারা চিরকাল কষ্ট পাবেন, তা নয়। তাদের আশা সাধারণত সন্তানের সাফল্য দেখতে চাওয়ার কারণে আসে। কখনও কখনও এটি তাদের নিজস্ব চিন্তাও নয়—তারা তাদের সন্তানদের অন্যদের সঙ্গে তুলনা করেন। উদাহরণস্বরূপ, “আমার ভাইপো এত ভাল করছে; কেন আমার ছেলে তা করতে পারছে না?”
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: তাদের সামাজিক অবস্থান প্রায়ই একটি বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: তাই আমার বাবা-মায়েদের প্রতি পরামর্শ—অনুগ্রহ করে আপনার সন্তানকে প্রদর্শনের জন্য মডেল বানাবেন না। আপনার সন্তানকে তার মতো ভালোবাসুন এবং তাদের বিশেষ শক্তিকে স্বীকার করুন। পৃথিবীতে এমন কোনো মানুষ নেই যার কোনো বিশেষ প্রতিভা নেই। যেমন আগে বলেছিলাম, যে শিশু প্রায় স্কুল থেকে বহিষ্কৃত হচ্ছিল, সে রোবট তৈরি করে প্রথম স্থান অর্জন করল। কেউ কেউ একাডেমিকের চেয়ে খেলাধুলায় ভালো। যেমন ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় নামদের মধ্যে একজন—সচিন তেন্ডুলকর। তিনি স্বীকার করেছেন পড়াশোনায় কখনো তার আগ্রহ ছিল না। কিন্তু তার বাবা-মা এবং শিক্ষকরা তার প্রতিভা চিহ্নিত করেছিলেন, যা তার জীবন পরিবর্তন করেছিল। কেউ আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল, “যদি আপনি প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রী না হতেন, এবং কোনো বিভাগকে নির্বাচন করতে বলা হতো, আপনি কোনটি বেছে নিতেন?” আমি বলেছিলাম, “আমি দক্ষতা উন্নয়ন বিভাগ বেছে নিতাম।”
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: দক্ষতার অনেক শক্তি আছে। আমরা দক্ষতা বিকাশের ওপর মনোযোগ দেব। যদি কোনো শিশু পড়াশোনায় ভালো না হয়, তারা অন্য কোনো না কোনো ক্ষেত্রে অবশ্যই ভাল। বাবা-মায়েদের তা চিনতে হবে এবং তাঁদের সন্তানদের সেই অনুযায়ী গাইড করতে হবে। এতে অযথা চাপ কমবে।
ছাত্র: পিএম মোদী বাবা-মায়েদেরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন যে তাঁরা তাঁদের সন্তানদের উপর চাপ দেবেন না। সন্তানরা তাদের বাবা-মা'র কাছ থেকে শিখুক, আর বাবা-মা তাঁদের সন্তানকে বুঝুন। পারস্পরিক বোঝাপড়া থাকা উচিত।
প্রধানমন্ত্রী: আরো একটু কাছে এসো; তোমরা অনেক দূরে বসেছ। আমরা একটু ধ্যান করি।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: সহজ ভাষায়, ধ্যানকে আমরা আমাদের ভাষায় কী বলব?
ছাত্র: মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করা।
প্রধানমন্ত্রী: ঠিক। এখন কয়েক মুহূর্তের জন্য ফোয়ারার শব্দ শোনো। কোনো সুর শোনা যাচ্ছে কি?
ছাত্র: যা আমাকে সবচেয়ে অবাক করেছে তা হলো, যখন পিএম স্যার আমাদের ধ্যানের মাধ্যমে গাইড করলেন, বিশেষ করে যখন তিনি ফোয়ারা পর্যবেক্ষণ করতে বললেন এবং আমাদের চিন্তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করালেন। সেটা সত্যিই অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ ছিল।
প্রধানমন্ত্রী: তুমি কি পাখির ডাক শুনেছ?
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: কেমন লাগল?
ছাত্র: অসাধারণ লাগল, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: একই সময়ে পাঁচটি ভিন্ন শব্দ ছিল। তুমি কি কখনো চেষ্টা করেছ কোন শব্দ কোথা থেকে এসেছে এবং কোন পাখি থেকে এসেছে তা চিহ্নিত করতে? যদি করো, তোমার ফোকাস স্বাভাবিকভাবেই বৃদ্ধি পাবে। তুমি সেই শব্দের শক্তির সঙ্গে নিজেকে সংযুক্ত করবে। যেমন বৈভব আগে প্রশ্ন করেছিল উদ্বেগ নিয়ে—সমাধান কী? শ্বাস!
ছাত্র: স্যার, প্রানায়াম!
প্রধানমন্ত্রী: ঠিক!
প্রধানমন্ত্রী: হ্যাঁ, প্রানায়াম সত্যিই কার্যকর। এটি আলাদা ধরনের শক্তি তৈরি করে। যখন তুমি শ্বাস নাও, কল্পনা করো ঠাণ্ডা বাতাস তোমার শরীরে প্রবেশ করছে এবং উষ্ণ বাতাস বের হচ্ছে। তুমি কি কখনো পরীক্ষা করেছ কোন নাক দিয়ে শ্বাস নিচ্ছ?
ছাত্র: ঠিক!
প্রধানমন্ত্রী: দুটি নাক সব সময় সক্রিয় থাকে না। একটি একপাশে থাকতেই পারে! ধরো তুমি ডান নাক থেকে বাম নাকে পরিবর্তন করতে চাও—তুমি কি কেবল এটি নির্দেশ দিয়ে পরিবর্তন করতে পারবে?
ছাত্র: না!
প্রধানমন্ত্রী: এর জন্য একটি কৌশল আছে। যদি ডান নাক সক্রিয় থাকে, হালকাভাবে বাম পাশে কামড়াও এবং আঙুল দিয়ে ডান গাল হালকাভাবে চাপ দাও। তুমি লক্ষ্য করবে শ্বাস ধীরে ধীরে বাম নাকের দিকে চলে যাবে।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: পাঁচ সেকেন্ডের মধ্যে তুমি তোমার শরীরের নিয়ন্ত্রণ পাবে।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: আদর্শভাবে, দুটি নাক সমানভাবে সক্রিয় থাকা উচিত। স্কুলে শিক্ষকরা যেমন বলেন সঠিকভাবে বসতে, হাত ঘোরানো—তোমরা এটি করো এবং শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করো—তুমি লক্ষ্য করবে দুটি নাক সক্রিয় হচ্ছে।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার! একদম!
প্রধানমন্ত্রী: আমি বলছি এটা কাজ করে, এবং তুমি বাস্তবে সেটা অনুভব করছ!
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার, এটা সত্যিই কাজ করছে!
ছাত্র: স্যার আমাদের ধ্যান এবং শ্বাস নিয়ন্ত্রণ শেখালেন। আমরা খুব ভালো বোধ করেছি এবং আমাদের সব চাপ শেষ হয়েছে।
ছাত্র: তিনি আমাদের ধ্যান শেখালেন। এর ফলে আমরা আমাদের মনকে চাপমুক্ত রাখতে পারি। তিনি আমাদের শ্বাস নিয়ন্ত্রণ শেখালেন। আমাদের বেশি চাপ নিতে হবে না, এবং যেটুকু চাপ আছে, তা উপভোগ করতে হবে, বেশি চিন্তা না করে।
প্রধানমন্ত্রী: দারুণ! সবাই কাছে এসো! আজ আমাদের নিজস্ব গুরুকুল!
ছাত্র: স্যার, সকালে আমরা হাসি থেরাপিও করেছি।
প্রধানমন্ত্রী:বাহ! সবচেয়ে বেশি কে হেসেছে?
ছাত্র: স্যার, আমরা সবাই!
প্রধানমন্ত্রী: দেখাও কিভাবে করেছ!
ছাত্র: হা-হা! হো-হো! হা-হা! হো-হো! হা-হা! হো-হো! হা-হা! হো-হো!
প্রধানমন্ত্রী: যখন তুমি বাড়ি ফিরে এইটা করাবে এবং পরিবারকে করাবে, তারা কি বলবে—"এখান থেকে ফিরে এসে তুমি পাগল হয়ে গেছ!" কিন্তু এক কাজ করো—সবাইকে একত্র করো এবং সবাইকে একসাথে করাও। এই আনন্দের মধ্যে একটি অনন্য শক্তি রয়েছে। তিন দিনের মধ্যে তুমি পরিবর্তন দেখবে; বাড়ির পুরো পরিবেশ পরিবর্তিত হবে।
ছাত্র: আমরা ভেবেছিলাম এটা আগের মতো হবে, যেখানে প্রধানমন্ত্রী স্যার মঞ্চে থাকবেন এবং আমরা সবাই নিচে বসব। কিন্তু আজ এটা একদমই এমন ছিল না। তিনি এমনভাবে কথা বলছিলেন যেন একজন বন্ধু। আমরা মনে করিনি যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী এখানে আছেন।
ছাত্র: আমার নাম Yukta Mukhi, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: তুমি কোথা থেকে এসেছো?
ছাত্র: ছত্তীসগড়!
প্রধানমন্ত্রী: ছত্তীসগড়!
ছাত্র: স্যার, আমি জানতে চাই কিভাবে আমরা ছোট ছোট জয়কে উদযাপন করে সুখী থাকতে পারি। আমি প্রায় সবকিছুকে নিয়ে খুব নেতিবাচক হয়ে পড়ি।
প্রধানমন্ত্রী: এটা কি তুমি নিজে নেতিবাচক ভাবার কারণে, না অন্যরা তোমাকে এমন অনুভব করায়?
ছাত্র: আমি দশম শ্রেণির পরীক্ষায় ৯৫% আশা করেছিলাম, কিন্তু পেয়েছি ৯৩%। এই ২%-এর জন্য আমি খুবই দু:খিত ছিলাম।
প্রধানমন্ত্রী: দেখো, আমি এটাকে সাফল্য মনে করি। তোমার লক্ষ্য থাকা উচিত পৌঁছনো যায় এমনের থেকে সামান্য বাইরে। প্রথমে, আমি তোমাকে অভিনন্দন জানাই যে তুমি নিজের আসল স্কোরের চেয়ে ২ পয়েন্ট বেশি লক্ষ্য ঠিক করেছ। এটা খারাপ কিছু নয়। যদি তুমি পরেরবার ৯৭ লক্ষ্য রাখো এবং ৯৫ পাও, তোমার গর্বিত হওয়া উচিত। মূল বিষয় হলো তুমি ৯৫ লক্ষ্য রেখে নিজের উপর বিশ্বাস রেখেছ, ৯৭, ৯৯ বা ১০০ না রেখে। তুমি সর্বদা একই পরিস্থিতিকে ভিন্নভাবে এবং ইতিবাচকভাবে দেখতে পারো।
ছাত্র: স্যার, পরীক্ষার সময় অনেক ছাত্র বোর্ড পরীক্ষার জন্য ভয় পায়, এবং ফলে তারা তাদের স্বাস্থ্যের যত্ন নেয় না।
প্রধানমন্ত্রী: এই সমস্যার মূল কারণ শিক্ষার্থীর চেয়ে তাদের পরিবারের মধ্যে বেশি থাকে। একজন শিশু হয়তো চিত্রশিল্পী হতে চায় কারণ সে আঁকায় ভালো, কিন্তু পরিবার জোর দেয় তাকে ইঞ্জিনিয়ার বা ডাক্তার হতে হবে।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার।
প্রধানমন্ত্রী: এতে শিশুটি ক্রমাগত চাপের মধ্যে থাকে। আমার প্রথম অনুরোধ পিতামাতার কাছে—দয়া করে তাদের সন্তানকে, তাদের আগ্রহ এবং সক্ষমতাকে বোঝার চেষ্টা করুন। তাদের ক্ষমতা অনুযায়ী তারা কী করছে তা পর্যবেক্ষণ করুন। সম্ভব হলে, তাদের সমর্থন করুন। যদি আপনার সন্তান খেলাধুলায় আগ্রহ দেখায়, তাকে খেলা দেখাতে নিয়ে যান; সে প্রেরণা পাবে। দ্বিতীয়ত, শিক্ষকরা প্রায়ই স্কুলে এমন পরিবেশ তৈরি করেন যেখানে কেবল ভাল ছাত্রছাত্রীরাই মনোযোগ ও প্রশংসা পায়। বাকি সবাই উপেক্ষিত হয় বা পিছনে বসতে বলা হয়, যা তাদের মন খারাপ করায়। আমার অনুরোধ শিক্ষকবৃন্দের প্রতি—শিক্ষার্থীদের মধ্যে তুলনা এড়ান। তাকে অন্য পড়ুয়াদের সামনে সমালোচনা করবেন না। যদি কিছু বলতে চান, তাকে আলাদা ভাবে বলুন। প্রত্যেককে আলাদা করে ইতিবাচকভাবে উৎসাহ দিন। "তুমি খুব ভালো। তুমি ভালো চেষ্টা করেছ। কিন্তু এই বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া দরকার।" শিক্ষার্থীদেরও ভাবতে হবে, "আমি কঠোর পরিশ্রম করব, ফল ভাল করব, এবং আগের চেয়ে আরো ভালো করব। আমি আমার বন্ধুদের চেয়ে ভালো করার চেষ্টা করব।" কিন্তু মনে রেখো, পরীক্ষাই সব নয়। যেহেতু আমি তোমাদের পর্যবেক্ষণ করছি, মনে হচ্ছে তোমরা নিজের জগতে হারিয়ে গিয়েছ। তুমি খোলামেলা হয়ে সংযোগ করছো না!
ছাত্র: আমার স্কুলের একজন সিনিয়র ছাত্র হিসেবে, আমি প্রায়ই আমার জুনিয়রদের পরীক্ষা বা সাংস্কৃতিক ও সাহিত্যিক প্রতিযোগিতার জন্য প্রেরণা দিই। কিন্তু কখনও কখনও, আমি নিজেকে প্রেরণা দিতে পারি না।
প্রধানমন্ত্রী: কখনো নিজেকে আলাদা করো না বা অতিরিক্ত চিন্তা করো না। মনে হচ্ছে তুমি নিজের বিষয়ে অনেক ভাবো কিন্তু তা কাউকে বলো না। তোমাকে প্রেরণা দেবার জন্য কাউকে প্রয়োজন—সম্ভবত পরিবারের কোন সদস্য বা বড় কেউ। এছাড়াও, ছোট ছোট লক্ষ্য নিয়ে নিজেকে চ্যালেঞ্জ করো। উদাহরণস্বরূপ, আমি আজ ১০ কিলোমিটার সাইক্লিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এমনকি যদি এটি অরুণাচল প্রদেশের পাহাড়েও হয়, একবার করতে পারলে, পুরো দিন উপভোগ করো এই চিন্তায়, "দেখো, আমি আজ এটা করেছি।" এই ধরনের ছোট ছোট পরীক্ষা আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলে। সর্বদা নিজের অতীতকে পরাজিত করার চেষ্টা করো—এমনভাবে বর্তমানে জীবন যাপন করো যেন তা তোমার অতীতকে ছাপিয়ে যায়।
ছাত্র: তিনি উল্লেখ করেছেন যে নিজস্ব লক্ষ্য থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। নিজেকে প্রেরণা দেওয়া আবশ্যক, এবং তার জন্য অনেক উপায় আছে। উদাহরণস্বরূপ, নিজের জন্য ছোট, অর্জনযোগ্য লক্ষ্য স্থির করো, এবং যখন তা অর্জন করো, সবসময় নিজেকে পুরস্কৃত করো। এই পদ্ধতি আমাকে খুব উৎসাহ দিয়েছে।
ছাত্র: স্যার, আপনার প্রেরণার উৎস কে?
প্রধানমন্ত্রী: আমার প্রেরণার উৎস হলে তোমরা সবাই। উদাহরণস্বরূপ, অজয় ‘পরীক্ষা পে চর্চা’ নিয়ে একটি গান লিখেছে। যদিও আমি বই লিখেছি, অজয় তার গ্রামে বসে, কবিতার মাধ্যমে প্রকাশ করছে। সেটা আমাকে আরও কাজ করতে প্রেরণা দেয়। আমাদের চারপাশে অনেক উৎস আছে।
ছাত্র: এতে গভীর প্রতিফলন এবং আত্মস্থতা অন্তর্ভুক্ত—কিছু শোনা, তা বোঝা, এবং সত্যিই মনের ভিতরে তা গ্রহণ করা। কিন্তু আমি তা করতে পারি না।
প্রধানমন্ত্রী: তুমি কিছু শুনেছো, তারপর তা করেছো—ঠিক কী করেছো? তাদের কথা বার্তা? উদাহরণস্বরূপ, কেউ যদি সকালে সময়মতো ওঠার পরামর্শ দেয়, তুমি হয়তো তার উপকারিতা ভাববে। কিন্তু তারপর, যদি তুমি তা না করেই আবার ঘুমিয়ে পড়ো, তাহলে তুমি কি সত্যিই সেই পরামর্শ আত্মস্থ করেছ?আত্মীকরণ ঘটে কেবল তখনই যখন তুমি নিজেকে একটা ল্যাবরেটরি মনে করো এবং অভ্যাস পরিবর্তনের চেষ্টা করো নিরন্তর । অধিকাংশ মানুষ যে দূর্বল তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে এবং মিথ্যা সন্তুষ্টি পায়। তারা বলে, “দেখো, ও ৩০ নম্বর পেয়েছে আর আমি ৩৫ পেয়েছি!” কিন্তু যারা নিজের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে, তারা কখনো আত্মবিশ্বাস হারায় না।
ছাত্র: এমন একজন ব্যক্তি যিনি বিশ্বের জন্য একজন পথ প্রদর্শক । এমন একজন ব্যক্তি যিনি তার সংগ্রামকে শক্তিতে রূপান্তরিত করেন এবং অন্যদের সুখের জন্য দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। এমন একজন ব্যক্তি, যিনি আমাদের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে, আমাদের অনুপ্রেরণা দেন, পরামর্শ দেন, এবং আমাদের সঙ্গে কথা বলে আমাদের আনন্দে ভরিয়ে দেন। সেই প্রিয় ব্যক্তি হলেন শ্রী নরেন্দ্র মোদি জী। ধন্যবাদ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: ধন্যবাদ! ধন্যবাদ!
ছাত্র: স্যার, আমার প্রশ্ন হলো, যখনই আমি পরীক্ষা দিতে যাই, আমি সবসময় লিখতে গিয়ে চিন্তিত থাকি যে যদি আমি ফেল করি, তাহলে কি হবে? আমরা কিভাবে ব্যর্থতার ভয় এড়াতে পারি?
প্রধানমন্ত্রী: স্কুলে, দশম বা দ্বাদশ শ্রেণিতে প্রায় ৩০-৪০% শিক্ষার্থী ফেল করে। তাদের কী হয়?
ছাত্র: তারা আবার চেষ্টা করে।
প্রধানমন্ত্রী: আর যদি তারা আবারও ফেল করে?
প্রধানমন্ত্রী: দেখো, জীবন সেখানে থেমে থাকে না। তোমাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তুমি কি শুধু পরীক্ষায় সফল হতে চাও, নাকি জীবনে সফল হতে চাও। জীবনে সফল হওয়ার এক উপায় হলো তোমার ব্যর্থতাকে শিক্ষক হিসেবে নেওয়া। তুমি জানো ক্রিকেট ম্যাচে, খেলোয়াড়রা পুরো দিনের ফুটেজ রিভিউ করে, তাদের ভুল দেখে এবং উন্নতি করার চেষ্টা করে? তুমি তোমার ব্যর্থতার থেকেও তা করতে পারো এবং শিখতে পারো। ‘দিব্যাঙ্গ' ব্যক্তিদের জীবন কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করো। ঈশ্বর হয়তো তাদের কিছু জিনিস দেননি, কিন্তু ঈশ্বর তাদের কিছু বিশেষ ক্ষমতা দিয়ে ক্ষতিপূরণ দেন যা তাদের শক্তি হয়ে ওঠে। অনুরূপভাবে, আমাদের সবার মধ্যেই ঈশ্বর শৈথিল্য ও অনান্য গুণাবলী রেখেছেন।
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: নিজের মধ্যে থাকা অনন্য গুণাবলী কীভাবে উন্নত করা যায় সেই দিকে মনোযোগ দাও। তাহলে কেউ তোমার ডিগ্রি, কোথায় পড়েছ, দশম শ্রেণিতে কত নম্বর পেয়েছ—এইসব জিজ্ঞাসা করবে না। কী গুরুত্বপূর্ণ—তোমার নম্বর কি বলছে, না কি তোমার জীবন কি বলছে?
ছাত্র: জীবন, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: ঠিক। জীবনেরই কথা বলা উচিত।
ছাত্র: আমি অজয়, অরোহী মডেল সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুল থেকে। আজকাল প্রযুক্তি অনেক উন্নত হয়েছে, কিন্তু কখনও কখনও আমরা এটিকে অতিরিক্ত ব্যবহার করি। স্যার, আমি জানতে চাই কিভাবে আমরা প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার করতে পারি।
প্রধানমন্ত্রী: প্রথমত, আমরা সবাই সৌভাগ্যবান, আর তুমি বিশেষভাবে সৌভাগ্যবান কারণ তুমি এমন এক যুগে বড় হচ্ছ যেখানে প্রযুক্তি এত বিস্তৃত, প্রভাবশালী এবং কার্যকর। প্রযুক্তি থেকে পালানোর কোনো প্রয়োজন নেই। তবে তোমাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে—তুমি কি দিকনির্দেশনা ছাড়া শুধু অবিরাম রিল দেখছ, নাকি সত্যিই কিছুতে আগ্রহী? যদি তাই হয়, তাহলে তাতে গভীরভাবে প্রবেশ করো এবং বিশ্লেষণ করো। তখন প্রযুক্তি শক্তি হয়ে যাবে, তোমাকে ভয় দেখাবে না। গবেষক ও উদ্ভাবকদের কথা ভাবো—তাঁরা তোমার উন্নতির জন্য কাজ করছেন। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত প্রযুক্তি বোঝা, শেখা এবং সর্বোত্তমভাবে ব্যবহার করা।
ছাত্র: স্যার, আমার একটি প্রশ্ন আছে। আমরা কীভাবে কোনো কাজে সর্বোত্তম দেওয়া নিশ্চিত করতে পারি?
প্রধানমন্ত্রী: আমাদের ধারাবাহিকভাবে সর্বোত্তম দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে, এবং সর্বোত্তম দেওয়ার প্রথম নিয়ম হলো—গতকালের চেয়ে আজ আরো ভালো করা।
ছাত্র: স্যার, আমাদের পরিবার প্রায়ই বলে আমরা কী করব, যেমন কোন স্ট্রিম বা বিষয় বেছে নেব। আমাদের কি তাঁদের কথা শোনা উচিত, নাকি নিজের কথা শোনা উচিত?
প্রধানমন্ত্রী: তুমি তাঁদের কথা শোনো, তারপর তাঁদের বোঝাও। তাঁরা যদি কিছু পরামর্শ দেন, তাকে সম্মান দাও, রাজি হও এবং জিজ্ঞাসা করো কিভাবে এগোতে হবে, কোথা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা যাবে, এবং তাঁরা কীভাবে সাহায্য করতে পারেন। তারপর শান্তভাবে তোমার চিন্তাভাবনা ও আইডিয়া শেয়ার করো। ধীরে ধীরে তাঁরা বুঝতে শুরু করবেন এবং তোমার দৃষ্টিভঙ্গি উপলব্ধি করবেন।
ছাত্র: ধন্যবাদ, স্যার, আমার প্রশ্ন শুনে উত্তর দেওয়ার জন্য এবং আমাকে শান্ত থাকা, ইতিবাচক থাকা এবং নেতিবাচক চিন্তা মনেও না আনতে শেখানোর মতো অনেক মূল্যবান শিক্ষা দেবার জন্য। একটা অসাধারণ অভিজ্ঞতা। অসংখ্য ধন্যবাদ!
ছাত্র: আজকাল, অনেক ছাত্র পরীক্ষার সময় উত্তরপত্র সময়মতো শেষ করতে পারে না, যার ফলে চাপ এবং উদ্বেগ তৈরি হয়। স্যার, তারা কীভাবে এই চাপ এবং পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পারে?
প্রধানমন্ত্রী: প্রথম সমাধান হলো আগের পরীক্ষার পেপার দিয়ে ভালোভাবে চর্চা করা। ভালোভাবে চর্চা করলে তুমি গুছিয়ে উত্তর লেখা শিখবে, যা সময় বাঁচাবে। তারপর, পরীক্ষার সময় প্রশ্নগুলোর অগ্রাধিকার নির্ধারণ করো। প্রথমে যেগুলো ভালোভাবে জানো, সেগুলো করো, তারপর মাঝারি জটিলতা এবং শেষে চ্যালেঞ্জিং প্রশ্নগুলো। কোনো প্রশ্ন না জানা হলে, সেটা এড়ানো ঠিক আছে। শিক্ষার্থীরা প্রায়ই যে ভুল করে তা হলো অজানা বিষয়ের উপর অতিরিক্ত সময় ব্যয় করা, ফলে জানা প্রশ্নের জন্য সময় কম থাকে। কখনও কখনও, যদি তারা উত্তর জানেঈ, খুব দীর্ঘ উত্তর লিখে সময় নষ্ট করে। এই সমস্যার সমাধান হলো বেশি চর্চা করা।
ছাত্র: আমি দশম শ্রেণির ছাত্রী, পিভিআর বালিকা অঙ্গতি পাঠশালা থেকে। আমি অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে এসেছি। আপনার সঙ্গে এখানে দেখা হওয়া আমাদের জন্য বড় সৌভাগ্য। আমি জানতে চাই, আমরা আমাদের বইতে পড়েছি পরিবর্তিত জলবায়ু পরিস্থিতি সম্পর্কে। আমরা কী করতে পারি?
প্রধানমন্ত্রী: তুমি খুব ভালো প্রশ্ন করেছো, এবং আমি খুশি যে আমার দেশের ছেলেমেয়েরাও জলবায়ুর জন্য উদ্বিগ্ন। বিশ্বের অধিকাংশ স্থানে, উন্নয়ন একটি ভোগবাদী সংস্কৃতি সৃষ্টি করেছে—মনের মধ্যে ধারণা, সবকিছু ব্যক্তিগত আনন্দের জন্য। কেউ যদি ভালো আসবাব চায়, তারা ২০০ বছরের একটি গাছ কেটে দিতে দ্বিধা করে না। যদি তারা চায় অবিরাম বিদ্যুৎ, তারা যত কয়লা প্রয়োজন, জ্বালাবে। ২৪ X৭ আলো জ্বালানোর জন্য। এতে প্রকৃতির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। আমাদের সংস্কৃতি প্রকৃতিকে শোষণ করার নয়।
আমার একটি মিশন আছে—LiFE (Lifestyle for Environment)। আমি জোর দিই যে আমাদের জীবনধারায় প্রকৃতিকে রক্ষা ও লালন করা উচিত। আমাদের সংস্কৃতিতে, বাবা-মা সন্তানকে সকালে মাটিতে পা রাখার আগে মা পৃথিবীর কাছে ক্ষমা চাওয়া শেখায়, যাতে disturbance-এর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়। আমরা গাছ পূজা করি, উৎসব উদযাপন করি, এবং নদীকে মা হিসেবে বিবেচনা করি। এই মূল্যবোধ আমাদের গর্বিত করে। বর্তমানে ভারত একটি গুরুত্বপূর্ণ অভিযান চালাচ্ছে, ‘এক পেঢ় মা কে নাম’—এটা একাধারে দুই মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা: একজন যিনি আমাদের জন্ম দিয়েছেন, আরেকজন যিনি জীবন প্রদান করেন। তোমরাও মায়ের জন্যে একটা গাছ লাগাও এবং যত্ন নাও যেন মরে না যায়। এই গাছকে যে কোনো মূল্যে বৃদ্ধি করতে হবে। যত্ন নাও। কী হবে? মানুষ আরো বড় পরিসরে গাছ লাগাবে। এই দায়িত্ব এবং স্বত্ববোধ প্রকৃতিকে রক্ষা করতে সাহায্য করবে।
ছাত্র: প্রকৃতি আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমাদের গাছের সঙ্গে জড়িত হওয়া উচিত, কারণ এটি আমাদের অনেকভাবে উপকার দেয়। আমাদের প্রকৃতিকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
প্রধানমন্ত্রী: মনে হচ্ছে সবাই তাদের গাছ লাগানোর জন্য প্রস্তুত! এগিয়ে যাও এবং গাছ লাগাও। গাছে জল দেবার একটি টিপ শেয়ার করি। গাছের পাশে একটি মাটির পাত্রে জল রাখো। এইভাবে, শুধু মাসে একবার পূর্ণ করতে হবে, এবং গাছ কম জলের মধ্যে ভালোভাবে বৃদ্ধি পাবে। এটা একটা ব্যবহারিক পদ্ধতি যা যেকোনো জায়গায় প্রয়োগ করা যায়। সবাইকে অভিনন্দন!
ছাত্র: ধন্যবাদ, স্যার!
ছাত্র: স্যার, এখানে এসে আমাদের এই সুন্দর সুযোগ দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
প্রধানমন্ত্রী: তাহলে আজকের দিনে তোমার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কী ছিল?
ছাত্র: পরিবেশ সম্পর্কে আলোচনা, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: পরিবেশের বিষয়!
ছাত্র: হ্যাঁ, স্যার! আপনি সত্যিই আমাদের অনুপ্রাণিত করলেন। এই পুরো দিনটি স্মরণীয় থাকবে, আর পরীক্ষা আর আমাদের জন্য চাপের মনে হবে না।
প্রধানমন্ত্রী: নম্বর কম হলেও পরীক্ষা নিয়ে আর কোনো চাপ নেই?
ছাত্র: ঠিক বলেছেন, স্যার — জীবনে সফল হওয়াই আসল বিষয়।
ছাত্র: স্যার, এখন পরীক্ষাই আমাদের থেকে ভয় পাবে!
প্রধানমন্ত্রী: অসাধারণ! সবাইকে অনেক ধন্যবাদ!
ছাত্র: ধন্যবাদ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: মনে রাখো, আমাদের সরাসরি সংযোগ আছে! শিক্ষকদেরও ভয় দেখিও না!
ছাত্র: না, স্যার! বাই, স্যার!
SC/TM
(रिलीज़ आईडी: 2160288)
आगंतुक पटल : 49
इस विज्ञप्ति को इन भाषाओं में पढ़ें:
हिन्दी
,
Assamese
,
Punjabi
,
Marathi
,
Manipuri
,
Odia
,
Tamil
,
Telugu
,
Kannada
,
Malayalam
,
English
,
Urdu
,
Gujarati