প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

ভারত-ব্রিটেন ভিশন ২০৩৫

Posted On: 24 JUL 2025 7:12PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৪ জুলাই ২০২৫

 

লন্ডনে ২৪ জুলাই ভারত ও ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীদ্বয়ের বৈঠকে নতুন ভারত-ব্রিটেন ভিশন, ২০২৫-কে অনুমোদন দেওয়া হয়। দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার সম্ভাবনার বিভিন্ন দিক পূরণে তাঁরা উভয়েই দায়বদ্ধতার কথা জানিয়েছেন। উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং ভবিষ্যৎমুখী এই চুক্তিতে দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে পারস্পরিক বৃদ্ধি, বিকাশ ও সমৃদ্ধি, নিরাপদ এবং সুস্থায়ী বিশ্ব গড়ে তুলতে পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে একযোগে কাজ করার সঙ্কল্পের কথা ব্যক্ত হয়েছে।

সর্বাত্মক কৌশলগত সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে তোলার পর থেকে সমস্ত ক্ষেত্রেই ভারত এবং ব্রিটেন উল্লেখযোগ্য সহযোগিতার নজির গড়ে তুলেছে। নতুন এই ভিশন উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্যকে সামনে রেখে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতাকে আরও গভীর ও বৈচিত্র্যপূর্ণ করে গড়ে তুলতে চায়। ২০৩৫-এর এই কৌশলগত ভিশনে ভারত ও ব্রিটেনের সম্পর্ক রূপান্তরমূলক সম্ভাবনা এবং দু’দেশের পারস্পরিক সুবিধার স্বার্থ পূরণ করবে। সুস্থায়ী ভবিষ্যতের লক্ষ্যে সহযোগিতার ক্ষেত্রে উদ্ভাবনকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। ভারত ও ব্রিটেনে কর্মসংস্থানের প্রসারের পাশাপাশি, উচ্চাকাঙ্ক্ষী বাণিজ্য চুক্তি দু’দেশের জন্য বাজার এবং অন্যান্য সম্ভাবনার ক্ষেত্রকে খুলে দেবে। বিশ্ব মেধা ক্ষেত্রে পরবর্তী প্রজন্মকে গড়ে তোলার স্বার্থে ভারত ও ব্রিটেনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে শিক্ষা এবং দক্ষতা বিকাশ ক্ষেত্রে সহযোগিতাকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। সেইসঙ্গে, প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ক্যাম্পাস উভয় দেশেই গড়ে তোলা হবে। টেলিকম, কৃত্রিম মেধা, ক্রিটিক্যাল ধাতব সহ সেমি-কন্ডাক্টর, কোয়ান্টাম, জৈবপ্রযুক্তি এবং উন্নত ধাতব ক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ সহযোগিতার ভিত্তি রচনা হবে। সেইসঙ্গে, উন্নতমানের প্রযুক্তি এবং গবেষণা প্রসারলাভ করবে। 

পরিচ্ছন্ন জ্বালানি এবং পরিবেশ ক্ষেত্রে অর্থায়নের প্রসার ঘটিয়ে স্থিতিস্থাপকতাকে শক্তিশালী করতে রূপান্তরমূলক পরিবেশ সহযোগিতার ওপর আলোকপাত করা হয়েছে। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকা সহ সব অঞ্চলের শান্তি, নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে।

ভারত-ব্রিটেন ভিশন, ২০৩৫ উভয় দেশের বিদেশ মন্ত্রী বার্ষিক পর্যালোচনা করবেন। সেইসঙ্গে, প্রযুক্তি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং আর্থিক ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়টিও মন্ত্রী পর্যায়ে আলোচিত হবে। নিরাপত্তা পরিষদ, কমনওয়েলথ, বিশ্ব বাণিজ্য সংগঠন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংগঠন, আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার, বিশ্বব্যাঙ্ক প্রভৃতি বহুপাক্ষিক প্রতিষ্ঠানগুলি সহ রাষ্ট্রসঙ্ঘের সংস্কারের ব্যাপারে উভয় দেশ একযোগে কাজ করবে যাতে করে সমসাময়িক বিশ্বের বাস্তব চিত্র এতে প্রতিফলিত হয় এবং উদ্ভূত চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলায় তা সক্ষম হয়ে ওঠে। 

ভারত ও ব্রিটেনের মধ্যে জনসম্পর্ক গড়ে তোলার ওপরও বিশেষ প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় সম্পর্কের প্রসার ঘটানো হবে। সেইসঙ্গে, উভয় দেশের জনসাধারণ এবং অভিবাসী সম্প্রদায়ের প্রয়োজনের দিকে তাকিয়ে উন্নত পরিষেবার লক্ষ্যে দূতাবাসগুলি কাজ করবে। ভিশন, ২০৩৫-এ ভারত ও ব্রিটেন দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতাকে গভীরতা দেওয়ার পাশাপাশি, একেবারে সময় বেঁধে বিভিন্ন কর্মসূচি রূপায়ণ করবে।

বিগত এক দশকে ভারত এবং ব্রিটেনের দ্বিপাক্ষিক উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারত-ব্রিটেন সর্বাত্মক অর্থনৈতিক বাণিজ্য চুক্তি (সিইটিএ) স্বাক্ষর এবং ডবল কন্ট্রিবিউশন কনভেনশন সম্পাদনে সম্মতি এক উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। এতে দু’দেশের অর্থনৈতিক বিকাশ প্রসারিত হবে। পাশাপাশি, কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রও বৃদ্ধি পাবে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি দ্রুত সম্পাদনে উভয় দেশ দায়বদ্ধ। সহমতের ভিত্তিতে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি উভয়ের উচ্চাকাঙ্ক্ষী বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি সূচনা মাত্র। ভারত ও ব্রিটেন উভয়েই তাকে সুস্থায়ী ভবিষ্যতের লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। উভয় দেশ উদ্ভাবন, গবেষণা, নিয়ন্ত্রণবিধি-ভিত্তিক সহযোগিতাকে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি, স্বাস্থ্য ও জীবনশৈলী, ক্রিটিক্যাল ও উদ্ভূত প্রযুক্তি, পেশাগত ও ব্যবসায়িক পরিষেবা, আর্থিক পরিষেবা, সৃজনশীল শিল্প এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের প্রসার ঘটাতে উদ্যোগী। 

পণ্য ও পরিষেবা ক্ষেত্রে উভয় দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আরও উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্যপথে এগোতে ভারত-ব্রিটেন সর্বাত্মক অর্থনৈতিক এবং সহযোগিতা চুক্তি বিশেষ ফলদায়ী হয়ে উঠবে। সেইসঙ্গে, নতুনভাবে গড়ে তোলা যৌথ আর্থিক ও বাণিজ্য কমিটি ভারত-ব্রিটেন সর্বাত্মক আর্থিক সহযোগিতা চুক্তি রূপায়ণকে সুনিশ্চিত করবে এবং অর্থনৈতিক ও অর্থ সংক্রান্ত আলোচনা, ইএফডি এবং আর্থিক বাজার সংক্রান্ত আলোচনা দু’দেশের সহযোগিতা, বিনিয়োগ ও আর্থিক নিয়ন্ত্রণবিধি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা নেবে।

ভারত ও ব্রিটেন উভয় দেশের বাণিজ্য সম্প্রদায় নিয়মিতভাবে বৈঠকে মিলিত হবে। সেইসঙ্গে ভারত ও ব্রিটেনের মধ্যে বিমা, পেনশন এবং সম্পদ ব্যবস্থাপনা ক্ষেত্রে মূলধনী বাজারের সহযোগিতা সম্পর্কের প্রসার ঘটানো হবে। উদ্ভাবন ও কৃত্রিম মেধাকে আর্থিক পরিষেবা ক্ষেত্রে কাজে লাগানো হবে। ভারত ও ব্রিটেনের মধ্যে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বিনিয়োগের সম্ভাবনা তুলে ধরতে ইউকে-ইন্ডিয়া ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফাইনান্সিং ব্রিজ (ইউকেআইআইএফবি) দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের প্রসার ঘটাবে। 

পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট চিহ্নিত ক্ষেত্রগুলিতে বাণিজ্য শৃঙ্খলে সুস্থায়িত্বের লক্ষ্যে নিয়মিত মতবিনিময়ের ক্ষেত্র গড়ে তোলা হয়েছে। সেইসঙ্গে, ইউকে-ইন্ডিয়া লিগ্যাল প্রফেশন কমিটি মারফৎ আইনি পেশায় দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ক্ষেত্রকে আরও সুসংহত করা হবে। ভারত ও ব্রিটেনের মধ্যে যোগাযোগ আরও বেশি করে প্রসারিত করার লক্ষ্যে বিমান চলাচল ক্ষেত্রের সম্প্রসারণ ঘটানো হবে। এই লক্ষ্যে ভারত-ব্রিটেন বিমান পরিষেবা চুক্তি পুনর্নবীকরণের লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে যানবাহন পরিকাঠামোর ক্ষেত্রে উভয় দেশের সহযোগিতা আরও সম্প্রসারিত করা হবে।

বহুস্তরীয় মঞ্চে নেতৃত্ব পর্যায়ের আলোচনার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অবৈধ অর্থের যোগান রোধ করতে হবে। সেইসঙ্গে, আন্তর্জাতিক কর ক্ষেত্রে সহযোগিতাকে আরও বেশি শক্তিশালী করে কর ক্ষেত্রের একটা স্বচ্ছতার মান নির্ধারণ করতে হবে। বিশ্ব বাণিজ্য সংগঠনকে মাথায় রেখে উভয় দেশই নিয়ম-ভিত্তিক, বৈষম্যহীন, মুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক, সুষম এবং স্বচ্ছ বহুস্তরীয় বাণিজ্য ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে সম্মত হয়েছে। বিশ্ব বাণিজ্য সংগঠনকে যাতে উন্নয়নশীল দেশ এবং অনুন্নত দেশগুলির বিষয়সমূহকে প্রাধান্য দিয়ে তাদের বিশেষ সুবিধা প্রদান করে তাও এই চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

পরিবেশ-বান্ধব শিল্পক্ষেত্রের প্রসারের লক্ষ্যে ভারত-ব্রিটেন মূলধনী বিনিয়োগ সহযোগিতা পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট নতুন বাজার গড়ে তুলতে কাজ করবে। সেইসঙ্গে, প্রযুক্তি-ভিত্তিক বিভিন্ন স্টার্ট-আপ ও পরিবেশগত বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় নতুন বিনিয়োগকে প্রাধান্য দেবে।

ডিজিটাল জন-পরিকাঠামো এবং ডিজিটাল পরিচালন ব্যবস্থার সাফল্যের ওপর ভিত্তি করে ভারত ও ব্রিটেন উভয়েই একযোগে কাজ করবে। আগামীদিনের প্রযুক্তিকে রূপ দিতে ভারত-ব্রিটেন সহযোগিতার সম্পর্ক উদ্ভাবন-ভিত্তিক সহযোগিতার পথে প্রসারিত হবে। নিরাপদ, সুস্থায়ী, সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে বিজ্ঞান, গবেষণা ও নতুন প্রযুক্তি শক্তি গড়ে তুলতে ভারত ও ব্রিটেন একযোগে কাজ করবে। এক্ষেত্রে গবেষণা ও উদ্ভাবনকে প্রাধান্য দেওয়া হবে, উদ্ভাবনী হাব স্টার্ট-আপ ইনকিউবেটর, উদ্ভাবনী সুপার গ্রুপ, ইত্যাদি ক্ষেত্রে সহযোগিতা প্রসারিত করা হবে। 

বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃত্রিম মেধাগত সমাধানের লক্ষ্যে দুই দেশ বিভিন্ন সমাধানসূত্র গড়ে তুলবে। সেজন্য যৌথ গবেষণা ও উদ্ভাবনকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। সাইবার নিরাপত্তা ও অত্যাধুনিক সংযোগ গড়ে তোলার লক্ষ্যেও কৌশলগত সহযোগিতা তৈরি করা হবে। সংযোগের ক্ষেত্রে উভয় দেশ ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তিকরণকে কাজে লাগাবে এবং আইটিইউ, ৩জিপিপি এবং ৬জি-র মতো ক্ষেত্রে একযোগে কাজ করবে। 

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের লক্ষ্যে ক্রিটিক্যাল ধাতব সরবরাহ শৃঙ্খল গড়ে তোলা হবে। জীব-বিজ্ঞানের অগ্রগতির দিকে তাকিয়ে স্বাস্থ্য এবং পরিচ্ছন্ন জ্বালানি সহ সুস্থায়ী কৃষিক্ষেত্রের উদ্ভাবনে জৈবপ্রযুক্তিকে প্রাধান্য দেবে উভয় দেশ। 

মহাকাশ ক্ষেত্রে গবেষণা নিয়ে উভয় দেশের সহযোগিতার সম্পর্ককে আরও উন্নত করতে দুই দেশ সম্মত হয়েছে। ভবিষ্যৎ অতিমারী প্রতিরোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ক্ষেত্রে ভারত-ব্রিটেন নেতৃত্ব আরও শক্তিশালী করতে সম্মত হয়েছে দুই দেশ যাতে করে ওষুধপত্রের সরবরাহ শৃঙ্খল সুরক্ষিত থাকে। 

জাতীয় নিরাপত্তাকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি, ভারত-ব্রিটেন প্রতিরক্ষা সহযোগিতা শক্তিশালী করে তোলার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক নিরাপদ বাতাবরণ গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করা হবে। দু’দেশের মধ্যে ১০ বছরের প্রতিরক্ষা শিল্প রোডম্যাপ গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে প্রতিরক্ষা শিল্প সহযোগিতা এবং কৌশলগত সহযোগিতা প্রসার লাভ করবে। দু’দেশের পদস্থ আধিকারিকরা নিয়মিত এর রূপায়ণের অগ্রগতি পর্যালোচনা করবেন। অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র এবং ইলেক্ট্রনিক প্রপালশন ক্যাপাবিলিটি পার্টনারশিপ এবং জেট ইঞ্জিন অ্যাডভান্সড কোর টেনলজি ক্ষেত্রে সহযোগিতামূলক কর্মসূচি গড়ে তোলা এবং উদ্ভাবনকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। সমুদ্রপথে নিরাপত্তা বাতাবরণকে জোরদার করতে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় সমুদ্র উদ্যোগ (আইপিওআই)-এর সহযোগিতার প্রসার ঘটানো হবে। সেইসঙ্গে, যৌথ সামরিক মহড়া এবং প্রতিরক্ষার তিনটি বিভাগই প্রশিক্ষণের সুযোগ সম্প্রসারিত হবে। ভারত মহাসাগরীয় এলাকায় ব্রিটেনের সশস্ত্র বাহিনীর উপস্থিতিতে সমস্ত রকম লজিস্টিক্স সহায়তার ব্যাপারে আঞ্চলিক হাব হিসেবে ভারত কাজ করবে। 

যে কোনো রকম সন্ত্রাসবাদের নিন্দা করা হয়েছে। সেইসঙ্গে তা প্রতিরোধে রাষ্ট্রসঙ্ঘ চার্টার এবং আন্তর্জাতিক আইন মোতাবেক সুস্থায়ী সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। মৌলবাদ এবং চরম উগ্রপন্থা প্রতিরোধ সহ সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন, সন্ত্রাসবাদীদের আন্তঃসীমান্ত গতিবিধি প্রতিরোধ এবং সন্ত্রাসবাদীদের হাতে অত্যাধুনিক অস্ত্র ও প্রযুক্তি যাতে না পৌঁছয় তার ব্যবস্থা করা প্রভৃতি বহুস্তরীয় সহযোগিতার ক্ষেত্রে ভারত-ব্রিটেন সম্পর্ক এক শক্তিশালী বাতাবরণ হিসেবে কাজ করবে। সেইসঙ্গে, নিয়মিত তথ্য বিনিময়, আইনি সহায়তা প্রভৃতি দিয়েও পরস্পর পরস্পরকে সাহায্য করবে। সন্ত্রাসবাদী এবং সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে উভয় দেশ যৌথভাবে কাজ করবে। 

সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টিকেও প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। জনসাধারণকে রক্ষার পাশাপাশি, মূল পরিষেবা ক্ষেত্রগুলিকে এর হাত থেকে রক্ষা করার জন্য উভয় দেশের সাইবার ক্ষেত্রে সহযোগিতার প্রসার, ডিজিটাল পরিচালন এবং উদ্ভূত প্রযুক্তির প্রসারে প্রাধান্য দেওয়া হবে।

কার্বন নির্গমনের সীমাকে শূন্যে নামিয়ে আনতে ভারত-ব্রিটেন পরস্পরকে সহায়তা করবে। সেইসঙ্গে, পরিবেশ-বান্ধব প্রযুক্তি ও বিনিয়োগে সহযোগিতা সম্প্রসারিত হবে। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে পারস্পরিক সহযোগিতার পাশাপাশি, পরিবেশ-বান্ধব পণ্য, পরিষেবা ও নির্মাণ ক্ষেত্রকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।

পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি, কৃত্রিম মেধা, হাইড্রোজেন, জ্বালানি সংরক্ষণ, ব্যাটারি প্রভৃতি ক্ষেত্রে যৌথ কর্মসূচির প্রসার ঘটানো হবে। সেইসঙ্গে, কার্বন নিগর্মন হয় না, এমন উদ্ভাবন প্রযুক্তির ক্ষেত্রে উদ্যোগ গড়ে তোলারও সহায়তা দেওয়া হবে। সেইসঙ্গে, এই জাতীয় প্রযুক্তির বাজার গড়ে তুলতেও উভয় দেশ একযোগে কাজ করবে। 

আন্তর্জাতিক সৌর জোট, বিপর্যয় প্রতিরোধক পরিকাঠামো ক্ষেত্রে যৌথ উদ্যোগ, ‘এক সূর্য, এক পৃথিবী, এক গ্রিড’ এবং পরিবেশ-বান্ধব সড়ক পরিবহণ সহ বিশ্ব পরিবেশ-বান্ধব শক্তি জোট গড়ে তুলতে বিভিন্ন সম্ভাবনার দিকগুলিকেও খতিয়ে দেখা হবে।

দ্বিপাক্ষিক সাংস্কৃতিক সহযোগিতা চুক্তি ২০২৫ সালের মে মাসে স্বাক্ষরিত হয়েছে। সেদিকে তাকিয়ে ভারতের জাতীয় শিক্ষানীতি, ২০২০-তে সাংস্কৃতিক সহযোগিতার যে সমস্ত কর্মসূচি রয়েছে তাতে ব্রিটেনকে অগ্রাধিকারের তালিকায় রাখা হচ্ছে। 

দু’দেশের মধ্যে মেধা সম্পর্ক প্রসার ও সেইসঙ্গে শিক্ষা ও গবেষণা ক্ষেত্রে সহযোগিতা, দক্ষতা বিকাশ এবং নিরাপদ সুস্থায়ী ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার বিষয়গুলিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। ব্রিটেনের এডুকেশন ওয়ার্ল্ড ফোরাম এবং ভারতের জাতীয় শিক্ষানীতি মঞ্চ-এ শিক্ষাক্ষেত্রে পারস্পরিক অংশগ্রহণকে প্রাধান্য দেওয়ার পাশাপাশি, উভয় দেশের শিক্ষাগত যোগ্যতাকে পারস্পরিক স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যাপারটিও পর্যালোচনা করা হবে। ব্রিটেনের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলির শাখা ভারতে খুলতে এবং ভারতেরও প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলির শাখা সে দেশে খুলতে ও বিভিন্ন জটিল বিষয়ে যৌথ ডিগ্রি উভয় দেশের ভবিষ্যৎ অর্থনীতির ক্ষেত্রে পরিপূরক হয়ে দেখা দেবে। ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে যুব সম্প্রদায়ের দক্ষতা বিকাশের লক্ষ্যে ইন্ডিয়া-ইউকে গ্রিন স্কিলস পার্টনারশিপের মাধ্যমে বিনিয়োগকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। দু’দেশের মধ্যে যুব ও ছাত্র বিনিময় কর্মসূচিকে উৎসাহ দেওয়া হবে। সেইসঙ্গে, ইয়ং প্রফেশনাল স্কিম এবং স্টাডি ইন্ডিয়া প্রোগ্রামের মতো কর্মসূচির সাফল্য সমস্ত ক্ষেত্রে আরও প্রসারের লক্ষ্যে কাজ করা হবে।

 

SC/AB/DM...


(Release ID: 2148388)