প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

সাইপ্রাস এবং ভারতের মধ্যে সার্বিক অংশীদারিত্ব রূপায়ণ নিয়ে যৌথ ঘোষণা

Posted On: 16 JUN 2025 3:13PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ১৬ জুন, ২০২৫

 


একটি ঐতিহাসিক সফর এবং দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারিত্ব

সাইপ্রাসের রাষ্ট্রপতি শ্রী নিকোস ক্রিস্টোডুলিডেস আন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীকে ১৫-১৬ জুন, ২০২৫ সরকারি সাইপ্রাস সফরে। দুই দশকেরও বেশি সময় পরে ভারতের কোনো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই সফর একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক রচনা করেছে এবং দুই দেশের মধ্যে গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বকে পুনরায় তুলে ধরেছে। এই সফর শুধুমাত্র একইধরনের ইতিহাসের উদযাপন নয়, বরং এটি আগামী দিনের অংশীদারিত্ব, যার মূল প্রোথিত আছে যৌথ কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি এবং পারস্পরিক আস্থা ও শ্রদ্ধার মধ্যে।

দুই নেতা দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন, যার মধ্যে আছে সাইপ্রাস এবং ভারতের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি। তাঁরা এই সম্পর্কের বিবর্তনকারী এবং প্রাণবন্ত বৈশিষ্ট্যের প্রতিফলন হিসেবে অর্থনীতি, প্রযুক্তি এবং মানুষে মানুষে যোগাযোগের সাম্প্রতিক অগ্রগতিকে স্বাগত জানিয়েছেন।

মূল্যবোধ, আগ্রহ, আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং দর্শনের ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান সংহতিকে স্বীকৃতি জানিয়ে দুই পক্ষই গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতে এই অংশীদারিত্ব আরও বাড়াতে তাদের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সাইপ্রাস এবং ভারত বিশ্বস্ত এবং অবিচ্ছেদ্য অংশীদার হিসেবে তাদের সহযোগিতা গভীর করতে দায়বদ্ধ, যাতে আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক শান্তি, প্রগতি এবং স্থিরতারক্ষায় অবদান রাখা যায়।

তাঁরা নিম্নলিখিত যৌথ ঘোষণায় সম্মত হয়েছেন :

একইধরনের মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতা

দুই নেতাই শান্তি, গণতন্ত্র, আইনের শাসন, কার্যকরী বহুমুখিনতা এবং সুস্থায়ী উন্নয়নে তাদের একইধরনের দায়বদ্ধতার কথা জানিয়েছেন। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সনদ এবং আন্তর্জাতিক আইন মেনে বিধি নির্ভর আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় তাদের সাহায্যের কথা পুনরায় ঘোষণা করেছেন। জোর দিয়েছেন বিশেষ করে ইউনাইটেড নেশনস কনভেনশন অন দ্য ল অব দ্য সি (ইউএনসিএলওএস) সমুদ্র পথের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌম সামুদ্রিক অধিকার বিষয়ে।

দুই নেতাই সব দেশের সার্বভৌমত্ব এবং সীমানা সংহতির জন্য তাঁদের পূর্ণ সহায়তার কথা পুনরায় ঘোষণা করেছেন। আন্তর্জাতিক বিষয়ে তাঁদের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে, যার মধ্যে আছে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি এবং ইউক্রেনের যুদ্ধ। পরমাণু সরবরাহ গোষ্ঠীতে ভারতের যুক্ত হওয়ার মূল্যকে স্বীকৃতি দিয়ে দুই নেতা আন্তর্জাতিক পরমাণু প্রসার রোধের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেছেন।

আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধি করতে দুই নেতাই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন; যেমন রাষ্ট্রসঙ্ঘে এবং কমনওয়েলথে। ২০২৪-এর অ্যাপিয়া কমনওয়েলথ ওশান ডিক্লেয়ারেশন রূপায়ণে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক সুস্থায়িত্ব এবং দৃঢ়তার স্তম্ভ রূপে সামুদ্রিক প্রশাসনের ভূমিকাকে তুলে ধরে এই প্রসঙ্গে সাইপ্রাসে ২০২৪-এর এপ্রিলে উদ্বোধনী কমনওয়েলথ ওশান মিনিস্টারদের বৈঠকে ব্লু চার্টার সেন্টার অফ এক্সসেলেন্স স্থাপন করা হয়েছিল। কমনওয়েলথ-এর সদস্য দেশগুলির মধ্যে সুস্থায়ী সামুদ্রিক প্রশাসন বাড়াতে এবং সক্ষমতা জোরদার করতে।

দুই নেতাই রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন। এটিকে আরও কার্যকরী, দক্ষ এবং সমকালীন ভূরাজনৈতিক সমস্যার প্রতিনিধি করে তোলার পথ নিয়ে আলোচনা হয়। দুই নেতা রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারে আন্তঃসরকারি আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করার কথা বলেন। বিষয়ভিত্তিক আলোচনার লক্ষ্যে এগোতে সতত প্রয়াসে দায়বদ্ধতার কথাও তাঁরা জানান। সাইপ্রাস পুনরায় তার সাহায্যের কথা জানিয়েছে রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের সম্প্রসারণে প্রতিনিধিত্বমূলক চরিত্র বৃদ্ধি করতে। যেখানে সম্প্রসারিত রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভারত হবে স্থায়ী সদস্য।

দুই পক্ষই রাষ্ট্রসঙ্ঘে একে অপরকে সাহায্য করতে এবং নিবিড় সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছে। বহুমুখী মঞ্চে একে অন্যের প্রার্থীপদকে সমর্থন করতে রাজি হয়েছে তারা।

রাজনৈতিক আলোচনা

দুই পক্ষই নিয়মিত রাজনৈতিক আলোচনা করতে সম্মত হয়েছে। চলতি দ্বিপাক্ষিক ব্যবস্থায় সাইপ্রাসের বিদেশ মন্ত্রক এবং ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মধ্যে যাতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুষ্ঠু সংহতি হয় এবং সহযোগিতা বৃদ্ধি পায়। উপরোক্ত উপযুক্ত মন্ত্রক ভবিষ্যতের কর্মপরিকল্পনা সহ সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলিতে রূপায়ণের বিষয়টির তদারকি এবং নজরদারি করবে, দুই দেশের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের মধ্যে নিবিড় সমন্বয় বজায় রেখে।

সার্বভৌমত্ব এবং শান্তির জন্য সহায়তা

স্বীকৃত রাষ্ট্রসঙ্ঘের কাঠামো এবং প্রাসঙ্গিক রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব অনুযায়ী রাজনৈতিক সমতা নিয়ে দ্বিআঞ্চলিক দ্বিসাম্প্রদায়িক যুক্তরাজ্যের ভিত্তিতে সাইপ্রাস প্রশ্নের দীর্ঘস্থায়ী এবং সার্বিক নিষ্পত্তি অর্জনে রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রয়াস পুনরায় শুরু করতে তাদের কঠোর দায়বদ্ধতার কথা প্রকাশ করেছে সাইপ্রাস এবং ভারত।

ভারত পুনরায় সাইপ্রাসের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, সীমাসংহতি এবং একতা-কে নির্ভরতার সঙ্গে সাহায্যের কথা ব্যক্ত করেছে। এই প্রসঙ্গে দুই পক্ষ অর্থবহ আলোচনা শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরি করতে জরুরি একপক্ষীয় পদক্ষেপ এড়িয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছে।

নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা এবং সঙ্কট সহযোগিতা

সাইপ্রাস এবং ভারত সবধরনের সন্ত্রাসবাদ এবং হিংসাত্মক চরমপন্থার নিন্দা করেছে একসুরে, যার মধ্যে আছে আন্তর্জাতিক এবং সীমান্তপারের সন্ত্রাসবাদ। এছাড়া শান্তি এবং স্থিরতা নষ্ট করতে পারে এমন যে কোনো সমস্যার মোকাবিলা করতে যৌথ দায়বদ্ধতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

সীমান্তপারের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারতের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন এবং সংহতি প্রকাশ করেছে সাইপ্রাস। দুই নেতা কঠোরভাবে ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের সাম্প্রতিক ভয়ংকর সন্ত্রাসী হামলায় সাধারণ নাগরিকের নৃশংস হত্যার নিন্দা করেছে। সন্ত্রাসবাদের বিপক্ষে জিরো টলারেন্সের কথা তাঁরা পুনরায় ব্যক্ত করেছেন। যে কোনো পরিস্থিতিতে এই ধরনের কাজের পক্ষে কোনোরকম যুক্তি গ্রাহ্য না করার কথাও জানিয়েছেন দুই নেতা। তাঁরা জোর দিয়ে বলেছেন, এই হামলার জন্য যারা দায়ী তাদের অপরাধী বলে গণ্য করতে হবে।

দুই নেতাই সকল দেশকে অন্য দেশের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করতে এবং যে কোনো ধরনের সীমান্তপারের সন্ত্রাসের নিন্দা করতে আবেদন জানিয়েছেন। সন্ত্রাসবাদীদের অর্থ যোগানোর নেটওয়ার্ক ভেঙে দেওয়া, নিরাপদ আশ্রয় দূরীকরণ, সন্ত্রাসবাদী পরিকাঠামো নষ্ট করা এবং সন্ত্রাসবাদের চক্রান্তকারীদের দ্রুত বিচার করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। সীমান্তপারের সন্ত্রাসের মোকাবিলায় সার্বিক সংহতিপূর্ণ এবং দীর্ঘস্থায়ী পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়ে তাঁরা একসঙ্গে, দ্বিপাক্ষিকভাবে এবং বহুপাক্ষিক ব্যবস্থার মাধ্যমে কাজ করার গুরুত্বের কথা বলেছেন।

দুই নেতা পুনরায় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বহুমুখী প্রয়াসকে জোরদার করতে তাঁদের দায়বদ্ধতার কথা জানিয়েছেন। রাষ্ট্রসঙ্ঘের কাঠামোর মধ্যে কম্প্রিহেনসিভ কনভেনশন অন ইন্টারন্যাশনাল টেররিজম দ্রুত চূড়ান্ত করে তা গ্রহণ করার আবেদন জানিয়েছেন। রাষ্ট্রসঙ্ঘ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ঘোষিত সকল সন্ত্রাসবাদী এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠী, সহযোগী গুপ্ত গোষ্ঠী, সুবিধা প্রদানকারী এবং পৃষ্ঠপোষকের পাশাপাশি ১২৬৭ ইউএনএসসি স্যাংশন কমিটির অধীনে সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে যৌথ ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা। রাষ্ট্রসঙ্ঘ এবং ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্স (এফএটিএফ)-এর মাধ্যমেও সন্ত্রাসবাদীদের অর্থ যোগানোর রাস্তাগুলি বন্ধ করতে সক্রিয় পদক্ষেপ চালিয়ে যেতে তাঁরা তাঁদের দৃঢ় অবস্থানের কথা জানিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ক্ষেত্রে নতুন নতুন সমস্যার কথা স্বীকার করে দুই নেতা কৌশলগত স্বয়ংক্রিয়তা, প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি এবং প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়ানোর গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছেন।

সাইবার নিরাপত্তা এবং নতুন ধরনের প্রযুক্তির উপর বিশেষ নজর দেওয়ার সঙ্গে তাদের নিজস্ব প্রতিরক্ষা শিল্পের মধ্যে সহযোগিতার মাধ্যম সহ প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তা সহযোগিতা আরও গভীর করতে সহমত হয়েছেন তাঁরা।

ভারত এবং সাইপ্রাস দুটি দেশই সমুদ্রবর্তী দেশ। যাদের নৌ যাত্রার ইতিহাস দীর্ঘ, দুই নেতাই এই ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা করেছেন। ভারতীয় জাহাজগুলি যাতে নিয়মিত সাইপ্রাসের বন্দরে আসে তাতে উৎসাহ দেওয়া হবে, সেইসঙ্গে সচেতনতা এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা বাড়াতে যৌথ মহড়াতেও উৎসাহ দেওয়া হবে। 

চলতি আন্তর্জাতিক সঙ্কটের পরিপ্রেক্ষিতে দুই পক্ষই আপৎকালীন প্রস্তুতি এবং সুসংহত সঙ্কটমোকাবিলায় সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে দায়বদ্ধতার কথা জানিয়েছে। অতীতের সফল প্রয়াসের প্রসঙ্গ টেনে নেতারা উদ্ধার এবং অনুসন্ধান কাজে প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতায় রাজি হয়েছেন।

যোগাযোগ এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা

অঞ্চলগুলির মধ্যে সেতু হিসেবে কাজ করতে একইরকম কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী সাইপ্রাস এবং ভারত। শান্তি, অর্থনৈতিক সংহতি এবং সুস্থায়ী উন্নয়নে রূপান্তরকারী বহুমুখী উদ্যোগ হিসেবে ইন্ডিয়া-মিডল ইস্ট-ইউরো ইকনোমিক করিডর (আইএমইসি)-এর গুরুত্ব তুলে ধরেছেন দুই নেতা। গঠনমূলক আঞ্চলিক সহযোগিতার জন্য আইএমইসি-কে একটি অনুঘটক হিসেবে মনে করে তাঁরা পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় এবং বিস্তৃত মধ্যপ্রাচ্যের স্থিরতার প্রসারে তাদের একইধরনের দায়বদ্ধতার কথা পুনরায় ব্যক্ত করেছেন। সেইসঙ্গে বিস্তৃত মধ্যপ্রাচ্য থেকে ইউরোপের মধ্য দিয়ে ভারতীয় উপদ্বীপে আন্তঃসংযোগের পথ এবং গভীর যোগাযোগের গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছেন দুই নেতা।

ইউরোপের প্রবেশদ্বার হিসেবে সাইপ্রাসের ভূমিকা স্বীকার করে এই প্রসঙ্গে জাহাজ চলাচল, মজুত, পরিবন্টন এবং লজিস্টিকস ক্ষেত্রে আঞ্চলিক হাব হিসেবে তার সম্ভাবনার উল্লেখ করে তাঁরা সাইপ্রাসে ভারতীয় জাহাজ কোম্পানীগুলির উপস্থিতির সম্ভাবনাকে স্বাগত জানিয়েছেন। উৎসাহ দিয়েছেন যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে সমুদ্র পথে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে, যেখানে সাইপ্রাসে অবস্থিত এবং ভারতীয় জাহাজ পরিষেবা প্রদানকারীরা অর্থনৈতিক ও লজিস্টিক্যাল মৈত্রী আরও বাড়াবার মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে।

ইইউ-ভারত কৌশলগত যোগাযোগ

২০২৬-এর প্রথমে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাউন্সিলে সাইপ্রাসের প্রেসিডেন্সির দিকে তাকিয়ে দুই নেতাই ইইউ-ভারত সম্পর্ককে জোরদার করতে তাঁদের দায়বদ্ধতার কথা পুনরায় জানিয়েছেন। ভারতে কলেজ অফ কমিশনার্স-এর ঐতিহাসিক সফরের কথা উল্লেখ করেছেন এবং প্রথম ভারত-ইইউ কৌশলগত আলোচনার সূচনায় সন্তোষপ্রকাশ করেছেন। বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, জলপথ, যোগাযোগ, স্বচ্ছ এবং সবুজ শক্তি এবং মহাকাশ সহ ওই সফরে ইতিমধ্যেই যেসব ক্ষেত্রগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে সেইসব ক্ষেত্রে অগ্রগতিতে সন্তোষপ্রকাশ করা হয়েছে।

সাইপ্রাস তাদের সভাপতিত্বকালে ইইউ-ভারত কৌশলগত অংশীদারিত্বকে বাড়িয়ে নিয়ে যেতে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। অর্থনৈতিক এবং কৌশলগত সম্ভাবনার গুরুত্ব স্বীকার করে এই বছরের শেষ নাগাদ ইইউ-ভারত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করতে দুই পক্ষই প্রস্তুত বলে জানিয়েছে। ইইউ-ইন্ডিয়া ট্রেড অ্যান্ড টেকনোলজি কাউন্সিলের মাধ্যমে চলতি কাজকর্মে সহযোগিতার কথা জানিয়েছেন দুই নেতা। এই গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বকে আরও গভীর করতে ২০২৫-এর কৌশলগত পথচিত্রের অতিরিক্ত সম্ভাব্য দিকগুলি নিয়ে তাঁদের দায়বদ্ধতার কথা জানিয়েছেন।

বাণিজ্য, উদ্ভাবন, প্রযুক্তি এবং অর্থনৈতিক সুযোগ

সাইপ্রাস এবং ভারতের মধ্যে ক্রমবর্ধমান কৌশলগত আদানপ্রদানকে স্বীকৃতি দিয়ে দুই নেতা বাণিজ্য, বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং বিজ্ঞান, উদ্ভাবন এবং গবেষণায় সহযোগিতার মাধ্যমে অর্থনৈতিক মৈত্রীর প্রসার ঘটাতে দায়বদ্ধতার কথা জানিয়েছেন।

সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে দুই নেতা মনে করেন যে, তাঁরা ভারত সফরে সাইপ্রাসের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানাবেন, যে দলে আছেন বাণিজ্য প্রতিনিধিরা এবং সাইপ্রাস ও ভারতের বণিক সংগঠনগুলি। বিনিয়োগের সুবিধা খুঁজতেই এই সফর। দুই নেতাই সাইপ্রাস-ইন্ডিয়া বিজনেস গোলটেবিল বৈঠকে কৌশলগত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে ভাষণ দেন।

গবেষণা, উদ্ভাবন, প্রযুক্তিতে সহযোগিতা বৃদ্ধি, স্টার্টআপ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শিল্পের মধ্যে আরও দৃঢ় যোগাযোগে দুই নেতাই সম্মত হন। কৃত্রিম মেধা, ডিজিটাল পরিকাঠামো এবং গবেষণার মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে আদানপ্রদানের সহযোগিতাতেও তাঁরা সহমত হন, যার চূড়ান্ত লক্ষ্য এই বিষয়ে একটি সমঝোতাপত্র স্বাক্ষর করা।

যাতায়াত, পর্যটন এবং মানুষে মানুষে সংযোগ

দুই নেতাই মনে করেন মানুষে মানুষে সংযোগ একটি কৌশলগত সম্পদ এবং অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মৈত্রী বাড়ানোর একটি উপায়। ২০২৫-এর শেষ নাগাদ মোবিলিটি পাইলট প্রোগ্রাম ম্যানেজমেন্ট চূড়ান্ত করতে দুই পক্ষই কাজ করবে।

দুই পক্ষই জোর দিয়েছে সাংস্কৃতিক এবং মানুষে মানুষে সংযোগের মাধ্যমে পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়ানোর মূল্যের উপর। পর্যটনের প্রসার এবং সাইপ্রাস ও ভারতের মধ্যে সরাসরি কিংবা অন্য বন্ধু দেশের মাধ্যমে বিমান যোগাযোগ বৃদ্ধি করার উপায় খুঁজতেও সম্মত হয়েছেন তাঁরা, যাতে ভ্রমণ সহজ হয় এবং দ্বিপাক্ষিক আদানপ্রদান বাড়ে।

ভবিষ্যৎ: ২০২৫-২৯ কর্মপরিকল্পনা

যৌথ ঘোষণায় পুনরায় উল্লেখ করা হয়েছে, সাইপ্রাস এবং ভারতের মধ্যে কৌশলগত মৈত্রীর। দুই নেতাই চলতি দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার অগ্রগতিতে সন্তোষপ্রকাশ করেছেন এবং তাঁদের বিশ্বাস ওই অংশীদারিত্ব তাদের অঞ্চল এবং তা ছাড়িয়ে আরও প্রস্ফূটিত হবে এবং শান্তি, স্থায়িত্ব, সমৃদ্ধির প্রসার ঘটবে।

দুই নেতাই একটি কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুত করতে সহমত হয়েছেন যা আদামী ৫ বছরে সাইপ্রাস এবং ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে দিক নির্দেশ করবে। এটির তত্বাবধান করবে দুই দেশের বিদেশ মন্ত্রক।

 


SC/AP/SKD


(Release ID: 2136852)