নতুন দিল্লি, ১ জুন ২০২৫ 

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও সমবায় মন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ আজ পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক বিজ্ঞান ল্যাবরেটরি (সিএফএসএল)-এর নতুন ভবনের উদ্বোধন করেন। তাঁর ভাষণে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ভারত সরকার সুরক্ষিত, স্বচ্ছ এবং তথ্যপ্রমাণ-ভিত্তিক ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে। তিনি জানান, ৮৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এই ভবন নির্মাণের ফলে পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খন্ড, বিহার, ওড়িশা, আসাম, সিকিম এবং উত্তর পূর্বাঞ্চলের সমস্ত রাজ্যের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থা উপকৃত হবে। তিনি বলেন, দেশজুড়ে ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি (এফএসএল) নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার লক্ষ্যে মোদী সরকার কাজ করে চলেছে। এই লক্ষ্যে ৩-৪টি রাজ্যকে নিয়ে ক্লাস্টার তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই সব ক্লাস্টারের মাধ্যমে আগামী বছরের জানুয়ারি মাস থেকে ফরেন্সিক বিজ্ঞানকে থানা স্তর পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হবে, যাতে থানাগুলির তদন্তকারী আধিকারিকরাও এর গুরুত্ব বুঝতে পারেন। শ্রী শাহ বলেন, এটি একমাত্র তখনই সম্ভব হবে, যখন থানা, পাবলিক প্রসিকিউটর এবং আদালতগুলি এর গুরুত্ব উপলব্ধি করে একে গ্রহণ করবে এবং তাদের কাজকর্মে একে অগ্রাধিকার দেবে। 

শ্রী অমিত শাহ বলেন, ২১ শতকে অপরাধের ধরন দ্রুত বদলে যাচ্ছে। তাই আমরা যদি বিজ্ঞানকে কাজে না লাগায় এবং আইন সম্পর্কে আমাদের যদি সুস্পষ্ট ধারণা না থাকে, তবে আমরা অপরাধীদের দমন করতে পারব না। বিভিন্ন আর্থিক কেলেঙ্কারির ক্ষেত্রেও ফরেন্সিক অডিটকে কাজে লাগানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, দেশবাসীর সাংবিধানিক অধিকার রক্ষায় সংসদে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা এবং ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বে সরকার ব্রিটিশ আমলের ১৬০ বছরের পুরনো আইনের বিলুপ্তি ঘটিয়ে নতুন ভারতের জন্য নতুন আইন প্রণয়ন করেছে। মানুষকে ন্যায় বিচার পাইয়ে দিতেই সরকারের এই পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

শ্রী শাহ বলেন, নতুন ফৌজদারি আইনে অপরাধের তদন্তের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহারকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এই আইন প্রণয়নের ফলে এখন ৬০ দিনের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ মামলার চার্জশিট পেশ করা সম্ভব হচ্ছে। তিনি জানান, দেশের ১৭,১৮৪টি থানাকে সিসিটিএনএস-এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে এবং সমষ্টিগত ভাবে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। 

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত সরকার প্রতিটি জেলায় একটি করে ফরেন্সিক মোবাইল ভ্যান চালুর প্রস্তাব রেখেছে এবং দেশের অনেক রাজ্য তাদের নিজেদের উদ্যোগে ভ্যানের সংখ্যা বৃদ্ধি করেছে। তিনি জানান, জাতীয় ফরেন্সিক বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের (এনএফএসইউ) ১৬টি ক্যাম্পাসের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, এর মধ্যে ৭টি চালু করা হয়েছে এবং অন্যগুলির কাজ চলছে। এই ক্যাম্পাসগুলি থেকে বছরে ৩৬,০০০ ছাত্র-ছাত্রী ডিগ্রি, ডিপ্লোমা এবং পিএইচডি করতে পারবেন। বর্তমানে দেশে বছরে ৩০,০০০ প্রশিক্ষিত পেশাদারের প্রয়োজন রয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ফরেন্সিক বিজ্ঞান পরিকাঠামোকে আধুনিক করে তোলার লক্ষ্যে ২,০৮০ কোটি টাকার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।  

SC/MP/AS