প্রতিরক্ষামন্ত্রক
azadi ka amrit mahotsav

সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারতের লড়াই এখন জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতির অংশ, আমরা এই ছায়া যুদ্ধকে নির্মূল করবো : ভূজ বায়ুসেনা ঘাঁটিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী

Posted On: 16 MAY 2025 2:06PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১৬ মে, ২০২৫

 

“সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারতের লড়াই কেবল নিরাপত্তার বিষয় নয়, এটি এখন জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতির অংশ হয়ে উঠেছে। আমরা এই ছায়া যুদ্ধকে নির্মূল করবো”। গুজরাটে ভূজ বায়ুসেনা ঘাঁটিতে বিমান যোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেওয়ার সময় একথা বলেছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শ্রী রাজনাথ সিং। তিনি জোর দিয়ে বলেন, বর্তমানে সংঘর্ষ বিরতির অর্থ হল, ভারত পাকিস্তানের আচরণের ওপর নজর রেখেছে। যদি তাদের আচরণে উন্নতি হয় তাহলে ঠিক আছে। কিন্তু যদি তারা কোনোও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে তাহলে তার কঠোরতম শাস্তি দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।  

প্রতিরক্ষা মন্ত্রী স্পষ্ট জানান যে, অপারেশন সিঁদুর এখনও শেষ হয়নি। তিনি বলেন, “আমাদের পদক্ষেপগুলি কেবল একটি ট্রেলার ছিল। প্রয়োজনে আমরা সম্পূর্ণ ছবি দেখাবো। সন্ত্রাসের ওপর হানা এবং নির্মূল করা নতুন ভারতের নিউ নর্মাল”। 

ভারতের ধ্বংস করা সন্ত্রাসবাদী পরিকাঠামো পুনর্নির্মাণ শুরু করেছে পাকিস্তান, বলে উল্লেখ করেন শ্রী রাজনাথ সিং। ইসলামাবাদকে আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার (আইএমএফ)-এর এক বিলিয়ন ডলার আর্থিক সাহায্য পুনর্বিবেচনা এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনও সহায়তা প্রদান থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান তিনি। শ্রী সিং বলেন, “পাকিস্তান তার নাগরিকদের কাছ থেকে কর সংগ্রহ করে প্রায় ১৪ কোটি টাকা রাষ্ট্রসংঘের ঘোষিত জঙ্গি জৈশ-ই-মহম্মদ সংগঠনের প্রধান মাসুদ আজহারকে দেবে। পাকিস্তান সরকার মুরিদকে এবং বাহাওয়ালপুরে অবস্থিত লস্কর-ই-তৈবা ও জৈশ-ই-মহম্মদের জঙ্গি পরিকাঠামো পুনর্নির্মাণের জন্য আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণাও করেছে। অবশ্যই আইএমএফ-এর এক বিলিয়ন ডলারের সাহায্যের একটা বড় অংশ সন্ত্রাসবাদী পরিকাঠামোয় ব্যবহার করা হবে। আন্তর্জাতিক সংস্থা, আইএমএফ-এর দ্বারা এটি পরোক্ষ আর্থিক সাহায্য হিসেবে বিবেচিত হবে না? পাকিস্তানকে যে কোনও আর্থিক সাহায্য সন্ত্রাসবাদী তহবিলের চেয়ে কম নয়। ভারত আইএমএফ-কে যে অর্থ দেয় তা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পাকিস্তান অথবা অন্য কোনও দেশে জঙ্গি পরিকাঠামো তৈরিতে ব্যবহার করা উচিত নয়।”  

প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, অপারেশন সিঁদুরে ভারতীয় বিমান বাহিনীর কার্যকরী ভূমিকা প্রশংসনীয়। এমনকি বিশ্বজুড়ে তা প্রশংসিতও হয়েছে। মাত্র ২৩ মিনিটের মধ্যে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গি শিবির ধ্বংস করার জন্য বিমান যোদ্ধাদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “যখন শত্রু ভূখণ্ডের ভিতর ক্ষেপনাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছিল তখন বিশ্ব ভারতের বীরত্ব ও শক্তির প্রতিধ্বনি শুনতে পেয়েছিল।” তিনি আরও বলেন, ভারতীয় বিমান বাহিনী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এই অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছে। অপারেশন চলাকালীন তারা কেবল শত্রুদের ওপর আধিপত্যই বিস্তার করেনি, তাদের ধ্বংস করে দিয়েছে। 

শ্রী রাজনাথ সিং উল্লেখ করেন যে, ভারতের যুদ্ধ বিমান সীমান্ত অতিক্রম না করেই পাকিস্তানের প্রতিটি কোনে আঘাত হানতে সক্ষম। তিনি বলেন, “বিশ্ব দেখেছে কীভাবে ভারতীয় বিমান বাহিনী জঙ্গি ঘাঁটি এবং পরে পাকিস্তানের বিমান ঘাঁটি ধ্বংস করেছে। ভারতীয় বিমান বাহিনী প্রমাণ করে দিয়েছে যে ভারতের যুদ্ধ নীতি এবং প্রযুক্তি পরিবর্তিত হয়েছে। তারা নতুন ভারতের বার্তা পৌঁছে দিয়েছে যে আমরা শুধুমাত্র বিদেশ থেকে আমদানি করা অস্ত্রের ওপর নির্ভরশীল নই, মেড ইন ইন্ডিয়া সরঞ্জাম আমাদের সামরিক শক্তির অংশ হয়ে উঠেছে। ভারতের তৈরি অস্ত্র   দুর্ভেদ্য।”

প্রতিরক্ষা মন্ত্রী আরও বলেন যে, পাকিস্তান নিজে থেকেই ‘ব্রহ্মস’ ক্ষেপনাস্ত্রের শক্তির কথা স্বীকার করে নিয়েছে। ভারতের তৈরি এই ক্ষেপনাস্ত্র রাতের অন্ধকারে পাকিস্তানকে দিনের আলো দেখিয়েছে। তিনি ভারতের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের প্রশংসা করে বলেন, ডিআরডিও-র তৈরি আকাশ এবং অন্য রাডার ব্যবস্থাপনা অসাধারণ ভূমিকা পালন করেছে। 

গতকাল শ্রীনগরে বাদামি বাগ ক্যান্টনমেন্টে সাহসী ভারতীয় সেনা জওয়ানদের সঙ্গে এবং আজ ভূজে বিমান যোদ্ধা ও সেনাদের সঙ্গে আলাপচারিতায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, তিনি নিশ্চিত যে ভারতের সীমান্ত সম্পূর্ণ নিরাপদ। তিনি বলেন, “আমি উভয় ফ্রন্টের সৈন্যদের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরের উৎসাহ ও দেশপ্রেম লক্ষ্য করেছি। অপারেশন সিঁদুরের সময় আমাদের বাহিনী যা করেছে তাতে দেশ গর্বিত।”

প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, ভূজ ১৯৬৫, ১৯৭১ এবং বর্তমানে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের জয়ের সাক্ষী। ভূজকে দেশপ্রেমের ভূমি হিসেবে অভিহিত করেন তিনি। এখানে সেনারা জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য দৃঢ় সংকল্প নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। মাতৃভূমির প্রতি সেবায় বিমান যোদ্ধা এবং সশস্ত্র বাহিনী, বিএসএফ-এর অনন্য সাহসী সৈন্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। 

সশস্ত্র বাহিনীকে সর্বাধুনিক অস্ত্র এবং আধুনিক পরিকাঠামো দিয়ে সাজিয়ে তোলার বিষয়ে সরকারের প্রতিশ্রুতির কথা পুনরায় তুলে ধরে শ্রী রাজনাথ সিং বলেন, একটি শক্তিশালী দেশ তার সেনাবাহিনীকে সম্মান করে এবং তাদেরকে সম্পদ, প্রযুক্তি ও সকল ধরনের সাহায্য করে থাকে। তিনি উল্লেখ করেন যে আগে ভারত আমদানির ওপর বেশি নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু এখন ভারত দেশীয়ভাবে আর্টিলারি সিস্টেম, রাডার ব্যবস্থাপনা, ক্ষেপনাস্ত্র, ড্রোন এবং প্রতিপক্ষের ড্রোন ধ্বংসকারীর মতো সরঞ্জাম তৈরি করছে। তিনি বলেন, “আমরা আমদানিকারক থেকে রপ্তানীকারক হয়ে উঠেছি এবং এটি কেবল শুরু হয়েছে।”

শ্রী রাজনাথ সিং বলেন যে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে দেশের জনগণ, সরকার, সশস্ত্র বাহিনী এবং অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থার মধ্যে ঐক্য এবং বোঝাপড়া লক্ষ্য করা গেছে। প্রতিটি নাগরিক একজন সৈনিকের মতো অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি বলেন, সরকার এবং জনগণ প্রতিটি পদক্ষেপে বাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন যে “আমরা একসঙ্গে এই অঞ্চল থেকে সন্ত্রাসকে সম্পূর্ণ রূপে নির্মূল করবো এবং কেউ দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর খারাপ নজর দেওয়ার সাহস করবে না।”   

প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পহেলগাঁও-এ নিহত নিরীহ মানুষ ও অপারেশন সিঁদুরে সর্বোচ্চ বলিদানকারী সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ভাষণ শুরু করেন। তিনি আহত সেনাদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন। 

অনুষ্ঠানে বায়ুসেনা প্রধান এয়ারচিফ মার্শাল এ পি সিং এবং ভারতীয় বিমান বাহিনীর অন্য শীর্ষ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। 

 


SC/SS/NS….


(Release ID: 2129131)