তথ্যওসম্প্রচারমন্ত্রক
azadi ka amrit mahotsav

সারা বিশ্ব ভারতের পাশে : সীমান্ত পারের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ জোট

Posted On: 14 MAY 2025 8:49PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১৪ মে, ২০২৫

 

পহেলগামে ২২ এপ্রিল ২০২৫ নৃশংস জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিরীহ নাগরিকের মৃত্যুতে ক্ষোভে ফেটে পড়ে সারা দেশ। জোরালো জবাব দেয় ভারত। সীমান্ত পারের সন্ত্রাসকে মদত দেওয়ায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সুরক্ষা বিষয়ক কমিটি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একের পর কড়া পদক্ষেপ নেয়। এর মধ্যে রয়েছে

 

১৯৬০-এর সিন্ধু জলচুক্তি তাৎক্ষণিক ভিত্তিতে স্হগিত করে দেওয়া। পাকিস্তান সীমান্ত পারের সন্ত্রাসকে মদত দেওয়া বন্ধ না করা পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে।

 

তাৎক্ষণিক ভিত্তিতে আত্তারি ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্ট বন্ধ করে দেওয়া।

 

সার্ক ভিসা এক্সেম্পশন স্কিমের আওতায় পাকিস্তানি নাগিরকদের ভারতে প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া।

 

নতুন দিল্লির পাক হাইকমিশনের প্রতিরক্ষা বিষয়ক পরামর্শদাতাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা।

 

পাক হাইকমিশনে কর্মীর সংখ্যা ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০ করে দেওয়া।

 

 

সীমান্ত পারের জঙ্গিদের শাস্তি দিতে এবং তাদের পরিকাঠামো ধ্বংস করতে অপারেশন সিঁদুরের আওতায় ভারত পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের ভূখণ্ডে জঙ্গিদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে সুনির্দিষ্ট সামরিক অভিযান চালায়। ভারতের বায়ুসেনা  বাহওয়ালপুর এবং মুরিদকে সহ ৯টি জায়গায় জঙ্গিদের ঘাঁটি চুরমার করে দিয়েছে।

 

অপারেশন সিঁদুরের উদ্দেশ্য :

 

জঙ্গিদের মদতদাতাদের শাস্তি দেওয়া।

সীমান্ত পারে জঙ্গিদের পরিকাঠামো ধ্বংস করা।

 

গোয়েন্দা তথ্য এবং লক্ষ্য নির্ধারণ :

 

সন্ত্রাসবাদীদের যাবতীয় ঘাঁটির আণুবীক্ষণিক পর্যবেক্ষণ।

জঙ্গিদের শিবির এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলির চিহ্নিতকরণ।

 

কর্মকাণ্ডে সংযম ও ন্যায়ের প্রতি দায়বদ্ধতা :

 

অভিযান চালানো হয়েছে সংযমের সঙ্গে, যাতে পারিপার্শিক ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো যায়।

শুধুমাত্র জঙ্গিদের লক্ষ্য করেই হামলা চালানো হয়েছে, সাধারণ নাগরিকদের ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো ছিল লক্ষ্য।

 

চূড়ান্ত লক্ষ্যসমূহ :

 

সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ৯টি জঙ্গি শিবির চিহ্নিত।

মূল লক্ষ্য :

বাহওয়ালপুর (জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র)

মুরিদকে (জঙ্গিদের আর একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র)

 

প্রত্যাঘাতের ফল :

 

১০০ জঙ্গির মৃত্যু।

পাকিস্তানের ১১টি বিমানঘাঁটি ধ্বংস।

পাকিস্তানের হামলার প্রত্যুত্তরে ভারতীয় সেনার অভিযানে সেদেশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

যেসব কুখ্যাত জঙ্গি মারা পড়েছে তাদের মধ্যে রয়েছে :

 

ইউসুফ আজহার

আব্দুল মালিক রউফ

মুদাস্সির আহমেদ

এরা আইসি-৮১৪ বিমান ছিনতাই এবং পুলওয়ামা বিস্ফোরনের ঘটনায় জড়িত।

 

 

ভারতের অভিযানের পাল্টা হিসেবে পাকিস্তান এদেশের অসামরিক অঞ্চল এবং ধর্মীয় পরিকাঠামো লক্ষ্য করে ৭,৮, ও ৯ মে ড্রোন ও ক্ষেপনাস্ত্র হামলার চেষ্টা করে। কিন্তু ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা ছিল সজাগ এবং মাঝ আকাশেই এইসব অস্ত্র ধ্বংস করে দেওয়া হয়। তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এর মাধ্যমে সার্বভৌমত্ব ও দেশের নাগরিকদের রক্ষার পাশাপাশি অভিযানের ক্ষেত্রে সংযমের চূড়ান্ত নিদর্শন তৈরি করেছে দেশের সশস্ত্র বাহিনী। এরই সঙ্গে কৌশলগত দিক থেকে ভারতীয় সেনার শ্রেষ্ঠত্বও প্রমাণিত হয়েছে।

 

ভারতের জবাব :

 

ভারত পাল্টা হামলা চালিয়েছে :

 

লাহোরের রেডার ব্যবস্থাপনায়

গুরজানওয়ালার রেডার ব্যবস্থাপনা ধ্বংস

ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী জঙ্গিদের ৯টি ঘাঁটি লক্ষ্য করে সুনির্দিষ্ট অভিযান চালায়। এরমধ্যে ৪টি পাকিস্তানে (বাহওয়ালপুর এবং মুরিদকে সহ) এবং ৫টি পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে (যেমন মুজাফ্ফরাবাদ এবং কোটলি)। এই অঞ্চলগুলি জৈশ-ই-মহম্মদ (জেইএম) এবং লস্কর-ই-তৈবা (এলইটি)-র শক্ত ঘাঁটি ছিল। পুলওয়ামা (২০১৯) এবং মুম্বাই (২০০৮) হামলায় জড়িত ছিল এই জঙ্গি সংগঠনগুলি।

 

পাঞ্জাব এবং বাহওয়ালপুর সহ পাকিস্তানের মূল ভূখণ্ডের অনেকটাই ভিতরে ভারতের অভিযান জঙ্গিদের এবং তাদের রাষ্ট্রীয় মদতদাতাদের ভেদরেখা মুছে দিয়েছে।

 

৩ ঘণ্টার মধ্যে ভারত অভিযান চালিয়েছে নুর খান, রফিকি, মুরিদ, সুক্কুর, সিয়ালকোট, পাসরুর, চুনিয়ান, সারগোরা, স্কার্দু, ভোলারি এবং জেকবাবাদ- পাকিস্তানের এই ৬টি সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে।

 

এই অভিযান পরিচালিত হয় সারগোরা এবং ভোলারির মতো পাকিস্তানের অস্ত্র ভাণ্ডার ও বিমান ঘাঁটিগুলি লক্ষ্য করে- যেখানে ছিল বেশ কয়েকটি এফ-১৬ এবং জেএফ-১৭ যুদ্ধ বিমান। এর ফলে পাকিস্তানের বিমান বাহিনী প্রায় ২০ শতাংশ পরিকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে।

 

পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে পুঞ্চ-রজৌরি সেক্টরে অসামরিক এলাকা লক্ষ্য করে গোলা বর্ষণ করায় প্রত্যাঘাত করে ভারতীয় বাহিনী। ধ্বংস হয়ে যায় জঙ্গিদের একাধিক বাঙ্কার এবং পাকিস্তানের সেইসব সামরিক ঘাঁটি যেখান থেকে সাধারণ নাগরিকদের লক্ষ্য করে হামলা চলছিল।

 

 

১২ মে সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুধুমাত্র একটি নামই নয়, কোটি কোটি ভারতীয়ের অনুভব ও ন্যায় বিচারের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। তিনি বলেন, ভারত এবং ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে আমরা দায়বদ্ধ। সমর প্রাঙ্গনে আমরা সবসময় পাকিস্তানকে পরাস্ত করেছি। এবার অপারেশন সিঁদুর বিষয়টিতে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। কয়েকটি বিষয় স্পষ্ট করে দেন প্রধানমন্ত্রী। ১. ভারতে জঙ্গি হামলা হলে উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। ২. এক্ষেত্রে পরমাণু হামলার জুজুকে পাত্তা দেওয়া হবে না। ৩. সন্ত্রাসে  রাষ্ট্রীয় মদতদাতা এবং জঙ্গিদের আলাদা করে দেখা হবে না। ৪. ভারতের অবস্থান স্পষ্ট-সন্ত্রাস এবং আলাচনা একসঙ্গে চলতে পারে না... সন্ত্রাস এবং বাণিজ্য একসঙ্গে চলতে পারে না... জল এবং রক্ত একসঙ্গে বইতে পারে না। ৫. পাকিস্তানের সঙ্গে যদি কথা হয়, তাহলে তা হবে সন্ত্রাস নিয়ে, এবং, পাকিস্তানের সঙ্গে যদি কথা হয়, তবে তা হবে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর (পিওকে) নিয়ে।

 

ক্ষয়ক্ষতি আর সহ্য করতে না পেরে পাকিস্তান সংঘর্ষ বিরতির প্রস্তাব দেয়। সেদেশের ডিজিএমও ভারতের ডিজিএমও-কে ফোন করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেরও দ্বারস্থ হয় সংঘাত থামাতে মরিয়া পাকিস্তান। ১০ মে ২০২৫ ভারতীয় সময় বিকেল ৫টা থেকে দু পক্ষই জল, স্থল এবং অন্তরীক্ষে সামরিক অভিযান বন্ধ রাখতে সম্মত হয়।

 

সংঘর্ষ বিরতির জন্য কাকুতি-মিনতি করলেও, অচিরেই তা লঙ্ঘন করে পাকিস্তান। ভারতের অসামরিক এবং সামরিক এলাকা লক্ষ্য করে ড্রোন পাঠায় তারা। সেসব বিনষ্ট করে দেয় ভারতীয় বাহিনী। সীমান্তে অপারেশন সিঁদুর আপাতত স্থগিদ থাকলেও সীমান্তপারে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারতের লড়াই চলবে। যেকোন হামলা রুখে দিতে সদা জাগ্রত রয়েছে ভারতের সশস্ত্র বাহিনী।

 

ভারতের বলিষ্ঠ অথচ নিয়ন্ত্রিত পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মহল। সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা এবং আঞ্চলিক সুস্থিতি রক্ষায় ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছেন বিশ্বের নেতারা।

 

ব্রিটেনের বিদেশমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেছেন, পহেলগাম হামলার পর ভারতের ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠার যথেষ্ঠ কারণ রয়েছে। এই মর্মে বার্তা দিয়েছেন ওই দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক।

 

রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, তাঁর দেশ সব ধরনের সন্ত্রাসবাদী কাজকর্মের নিন্দা করে। বিরোধ মিটিয়ে ফেলতে ভারত ও পাকিস্তানের প্রতি আবেদন রেখেছেন তিনি।

 

ভারত ও ইজরায়েলের রাষ্ট্রদূত রিউভেন আজার দ্বর্থ্যহীন ভাষায় ভারতের পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।

 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, নেদারল্যান্ডস-এর প্রধানমন্ত্রী ডিক স্কুফ, জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেলারেল নাগাতানি সান প্রমুখ জোরালো ভাষায় সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের নিন্দা করেছেন। এই মর্মে বার্তা দিয়েছেন সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশালী, ইরান, কাতার, পানামা, শ্রীলঙ্গা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মালদ্বীপ, প্যালেস্তাইন।

 

কাশ্মীর নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রর তরফে মধ্যস্থতার যে প্রস্তাব এসেছে, তার প্রতিক্রিয়ায় ভারত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, এক্ষেত্রে যে বিষয়ে কথা হতে পারে তা হল পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর ভারতকে ফিরিয়ে দেওয়া। সীমান্তপারের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পাকিস্তান ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত ওই দেশের সঙ্গে আলোচনার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। কাশ্মীর দ্বিপাক্ষিক ইস্যু। এক্ষেত্রে তৃতীয় ক্ষেত্রের মধ্যস্থতার প্রয়োজন নেই। ভবিষ্যতে ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী কাজকর্মকে যুদ্ধ হিসেবে দেখা হবে।

 

http://chrome-extension://efaidnbmnnnibpcajpcglclefindmkaj/https://static.pib.gov.in/WriteReadData/specificdocs/documents/2025/may/doc2025513554301.pdf

 

 

SC/AC/NS…


(Release ID: 2128811)