প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
বারাণসীতে একগুচ্ছ প্রকল্পের সূচনা ও শিলান্যাস অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বঙ্গানুবাদ
Posted On:
11 APR 2025 1:29PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ১১ এপ্রিল, ২০২৫
নমঃ পার্বতী পতয়ে, হর-হর মহাদেব !
মঞ্চে উপবিষ্ট উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল আনন্দীবেন প্যাটেল, মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমান যোগী আদিত্যনাথ, উপমুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য, ব্রজেশ পাঠক, উপস্থিত মন্ত্রীগণ, অন্য জনপ্রতিনিধিরা, বনস ডেয়ারির অধ্যক্ষ শঙ্কর ভাই চৌধুরী এবং এখানে আমাকে আশীর্বাদ জানাতে আসা আমার পরিবারের বিপুল সংখ্যক সদস্য,
কাশীতে আমার পরিবারের সবাইকে আমার প্রণাম। আপনারা সকলে আমাকে আশীর্বাদ করুন। আমি আপনাদের ভালোবাসার কাছে ঋণী। কাশী আমার, আমি কাশীর।
বন্ধুরা,
আগামীকাল হনুমান জয়ন্তীর পবিত্র দিন। আর আজ সংকটমোচন মহারাজের কাশীতে আপনাদের সঙ্গে দেখা করার সৌভাগ্য আমার হল। হনুমান জন্মোৎসবের আগে, কাশীর মানুষ আজ এখানে উন্নয়নের উৎসব উদযাপন করতে সমবেত হয়েছেন।
বন্ধুরা,
গত ১০ বছরে বারাণসীর উন্নয়নে এক নতুন গতি এসেছে। কাশী আধুনিকতাকে আঁকড়ে ধরেছে, ঐতিহ্যের সংরক্ষণ করেছে এবং একে আরও উজ্জ্বল করার জন্য দৃঢ় পদক্ষেপও নিয়েছে। আজকের কাশী কেবল প্রাচীনই নয়, প্রগতিশীলও বটে। কাশী এখন পূর্বাঞ্চলের অর্থনৈতিক মানচিত্রের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছে। যে কাশীকে স্বয়ং মহাদেব চালনা করেছিলেন... আজ সেই কাশী পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের রথ টানছে।
বন্ধুরা,
একটু আগে কাশী ও পূর্বাঞ্চলের বহু অংশের সঙ্গে জড়িত অনেক প্রকল্পের সূচনা ও শিলান্যাস হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থাকে মজবুত করার জন্য বেশকিছু পরিকাঠামো সংক্রান্ত প্রকল্প, গ্রামে-গ্রামে, ঘরে-ঘরে নলবাহিত জল পৌঁছে দেওয়ার অভিযান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ক্রীড়া সুবিধার সম্প্রসারণ এবং প্রতিটি ক্ষেত্র, প্রতিটি পরিবার, প্রতিটি যুবক-যুবতীকে উন্নত সুযোগ-সুবিধা প্রদানের সংকল্পে পরিপূর্ণ এই সমস্ত প্রকল্প পূর্বাঞ্চলকে উন্নত করে তোলার ক্ষেত্রে এক মাইলফলক হতে চলেছে। কাশীর প্রতিটি বাসিন্দা এই প্রকল্পগুলি থেকে ব্যাপকভাবে উপকৃত হবেন। এইসব উন্নয়নমূলক কাজের জন্য আমি বারাণসী ও পূর্বাঞ্চলের মানুষকে অভিনন্দন জানায়।
বন্ধুরা,
আজ সামাজিক চেতনার প্রতীক মহাত্মা জ্যোতিবা ফুলের জন্মবার্ষিকী। মহাত্মা জ্যোতিবা ফুলে ও সাবিত্রীবাই ফুলে সারা জীবন নারীর ক্ষমতায়ন, তাঁদের আত্মবিশ্বাস বাড়ানো এবং সমাজকল্যাণের লক্ষ্যে কাজ করেছেন। আজ আমরা তাঁদের চিন্তা-ভাবনা, তাঁদের সংকল্প, মহিলা ক্ষমতায়নের জন্য তাঁদের আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, তাতে নতুন গতির সঞ্চার করছি।
বন্ধুরা,
আজ আমি আরও একটা কথা বলতে চাই। মহাত্মা ফুলের মতো ত্যাগী, তপস্বী মহাপুরুষদের কাছ থেকে প্রেরণা লাভ করেই দেশসেবার জন্য আমাদের মন্ত্র হল, ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’। আমরা দেশের জন্য যে ভাবনা নিয়ে এগিয়ে চলি, তার সারমর্ম হল সবকা সাথ, সবকা বিকাশ। আর যাঁরা কেবলমাত্র ক্ষমতা অর্জনের জন্য, ক্ষমতা দখলের জন্য খেলা করে বেড়ান, তাঁদের নীতি হল, পরিবার কা সাথ, পরিবার কা বিকাশ। আজ আমি পূর্বাঞ্চলের পশুপালক পরিবারগুলিকে, বিশেষ করে আমার পরিশ্রমী বোনদের, সবকা সাথ, সবকা বিকাশ মন্ত্রের বাস্তবায়নের জন্য বিশেষভাবে অভিনন্দন জানাই। এই বোনেরা দেখিয়ে দিয়েছেন যে, যদি আস্থা রাখা যায়, তাহলে সেই আস্থা নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করে। এই বোনেরা এখন সমগ্র পূর্বাঞ্চলের সামনে দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছেন। কিছুক্ষণ আগে উত্তরপ্রদেশের বনস ডেয়ারি প্লান্টের সঙ্গে যুক্ত পশুপালক সহযোগীদের বোনাস দেওয়া হয়েছে। বেনারস আর বোনাস, এটা কোনো উপহার নয়, এটা আপনাদের তপস্যার পুরস্কার। ১০০ কোটি টাকারও বেশি এই বোনাস আপনাদের ঘাম, আপনাদের কঠোর পরিশ্রমের জন্য দেওয়া উপহার।
বন্ধুরা,
বনাস ডেয়ারি কাশীর হাজার হাজার পরিবারের ছবি আর ভাগ্য, দুইই বদলে দিয়েছে। এই ডেয়ারি আপনাদের কঠোর পরিশ্রমের পুরস্কার দিয়েছে, স্বপ্ন সাকার করেছে এবং আনন্দের বিষয় হল, এই উদ্যোগের ফেল পূর্বাঞ্চলের অনেক বোন এখন লাখপতি দিদি হয়ে গেছেন। যেখানে আগে অস্তিত্ব রক্ষার চিন্তা ছিল, সেখানে এখন সমৃদ্ধির দিকে পা ফেলা সম্ভব হচ্ছে। এই অগ্রগতি শুধু বারাণসী বা উত্তরপ্রদেশেই নয়, সমগ্র দেশেই দেখা যাচ্ছে। ভারত বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম দুধ উৎপাদনকারী দেশ। ১০ বছরে দুধ উৎপাদন প্রায় ৬৫ শতাংশ বেড়েছে, যা দ্বিগুনেরও বেশি। এই সাফল্য দেশের কোটি কোটি কৃষকের আমার পশুপালক ভাই-বোনদের। আর এই সাফল্য একদিনে আসেনি। গত ১০ বছর ধরে আমরা দেশের দুগ্ধক্ষেত্রকে মিশন মোডে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
আমরা পশুপালকদের কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা দিয়েছি। তাঁদের ঋণের ঊর্ধ্বসীমা বাড়িয়েছি। ভর্তুকির ব্যবস্থা করেছি, আর সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হল জীবে দয়ার কাজ। গবাদি পশুদের পা ও মুখের রোগ থেকে বাঁচাতে বিনামূল্যে টিকাদানের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। কোভিডের বিনামূল্যে টিকাদানের কথা সবাই মনে রেখেছে। কিন্তু এই সরকার এমন সরকার, যে সবকা সাথ সবকা বিকাশ, এই নীতিতে আমার পশুদেরও বিনামূল্যে টিকা দিয়েছে।
সুসংগঠিতভাবে দুধের সংগ্রহ সুনিশ্চিত করতে দেশে ২০,০০০-এরও বেশি সমবায় সমিতি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। এতে লক্ষ লক্ষ নতুন সদস্য যুক্ত হয়েছেন। এর উদ্দেশ্য হল, দুগ্ধ ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের একত্রিত করে এগোন। দেশীয় জাতের গরুর উৎপাদন বাড়াতে হবে, তাদের মান ভালো হতে হবে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গরুর প্রজনন করা উচিত, এইজন্য রাষ্ট্রীয় গোকূল মিশনের সূচনা করা হয়েছে। এই সমস্ত কর্মকাণ্ডের মূল উদ্দেশ্য একটাই, তা হল দেশের পশুপালক ভাই-বোনদের উন্নয়নের পথে নিয়ে আসা। তাদের ভালো বাজার ও বিভিন্ন সুযোগ সম্ভাবনার সঙ্গে যুক্ত করা। আজ বনস ডেয়ারির কাশীর প্রকল্প সমগ্র পূর্বাঞ্চলে এই প্রকল্পকে, এই ভাবনা-চিন্তাকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। বনস ডেয়ারি এখানে গির গরু বিতরণ করেছে। আমাকে বলা হয়েছে যে তাদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। বনস ডেয়ারি বারাণসীতে পশুদের জন্য খাবারের ব্যবস্থাও শুরু করেছে। এই ডেয়ারি আজ পূর্বাঞ্চলের প্রায় ১ লক্ষ পশুপালকের কাছ থেকে দুধ সংগ্রহ করছে, কৃষকদের ক্ষমতায়নে সহায়ক হচ্ছে।
বন্ধুরা,
কিছুক্ষণ আগে আমি এখানকার বয়স্ক কিছু মানুষের হাতে আয়ুষ্মান বয়ো বন্দনা কার্ড তুলে দেওয়ার সুযোগ পেয়েছি। আমি ওই বন্ধুদের মুখে-চোখে স্বস্তির যে অনুভূতি দেখেছি, সেটাই আমার কাছে এই যোজনার সবথেকে বড় সাফল্য। চিকিৎসা নিয়ে বাড়ির বয়স্করা কতটা চিন্তিত থাকেন, তা আমরা সবাই জানি। ১০-১১ বছর আগে সমগ্র পূর্বাঞ্চলে চিকিৎসা সংক্রান্ত যেসব সমস্যা ছিল, তাও আমাদের জানা। আজ কিন্তু ছবিটা পুরো বদলে গেছে, আমার কাশী এখন আরোগ্যের রাজধানীতে পরিণত হচ্ছে। দিল্লি-মুম্বইয়ের বড় বড় হাসপাতাল এখন আপনাদের বাড়ির কাছাকাছি চলে এসেছে। একেই তো উন্নয়ন বলে, যেখানে সুযোগ-সুবিধা মানুষের কাছে আসে।
বন্ধুরা,
গত ১০ বছরে আমরা শুধু হাসপাতালের সংখ্যাই বাড়ায়নি, রোগীর মর্যাদাও বাড়িয়েছি। আয়ুষ্মান ভারত যোজনা আমার দরিদ্র ভাই-বোনদের কাছে কোনো বরদানের থেকে কম নয়। এই যোজনা কেবল চিকিৎসার ব্যবস্থায় করে না, এর সঙ্গে আত্মবিশ্বাসও যোগায়। উত্তরপ্রদেশের লক্ষ লক্ষ এবং বারাণসীর হাজার হাজার মানুষ এর থেকে উপকৃত হয়েছেন। প্রতিটি চিকিৎসা, প্রতিটি অস্ত্রপচার, প্রতিটি নিরাময় জীবনের এক নতুন সূচনা হয়ে উঠেছে। আয়ুষ্মান যোজনায় শুধু উত্তরপ্রদেশে লক্ষ লক্ষ পরিবারের কোটি কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে, কারণ সরকার বলেছে, এখন আপনাদের চিকিৎসার দায়িত্ব আমরা নিচ্ছি।
আর বন্ধুরা,
আপনারা যখন আমাকে তৃতীয়বারের জন্য আশীর্বাদ করেছেন, তখন আমিও আপনাদের সেবক হিসেবে আমার কর্তব্য ভালোবেসে পালন করছি এবং কিছু ফিরিয়ে দেওয়ার বিনম্র প্রয়াস চালাচ্ছি। আমি গ্যারান্টি দিয়েছিলাম, বয়স্কদের চিকিৎসা বিনামূল্যে হবে। এরই পরিণাম হল আয়ুষ্মান বয়োঃবন্দনা যোজনা। এই যোজনা বয়স্কদের চিকিৎসার পাশাপাশা তাঁদের সম্মান জানাই। এখন প্রতিটি পরিবারের সত্তরোর্ধ ব্যক্তিরা বিনামূল্যে চিকিৎসা পাওয়ার অধিকারী, তাঁদের আয় যাই হোক না কেন। বারাণসীতে সব থেকে বেশি সংখ্যক বয়োঃবন্দনা কার্ড, প্রায় ৫০,০০০ এখানকার প্রবীণ মানুষদের কাছে পৌঁছেছে। এটা কেবল পরিসংখ্যান নয়, এটা সেবার, একজন সেবকের বিনম্র প্রয়াস। এখন আর চিকিৎসার জন্য জমি বেচতে হবে না। চিকিৎসার জন্য টাকা পয়সা ধার করারও দরকার নেই। চিকিৎসার জন্য দরজায় দরজায় ঘুরে বেড়াতে হবে না। আপনার চিকিৎসার জন্য চিন্তা করবেন না। এখন সরকার আপনার চিকিৎসার খরচ আয়ুষ্মান কার্ডের মাধ্যমে বহন করবে।
বন্ধুরা,
আজ যাঁরাই কাশী যান, তাঁরা এর পরিকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধার প্রশংসা করেন। আজ প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ লোক কাশীতে আসেন। বাবা বিশ্বনাথের দর্শন করেন, মা গঙ্গায় স্নান করেন। প্রত্যেক তীর্থযাত্রীই বলেন, বারাণসী সম্পূর্ণ বদলে গেছে। ভাবুন তো, কাশীর রাস্তাঘাট, রেলপথ ও বিমান বন্দরের অবস্থা যদি ১০ বছর আগের জায়গায় থাকতো তাহলে কাশীর অবস্থা কতটা খারাপ হত। আগে তো ছোট ছোট উৎসবেও এখানে যানজটের সৃষ্টি হত। আগে যদি কাউকে চুনার থেকে শিবপুরে যেতে হত, তাহলে তাকে গোটা বেনারস ঘুরে যানজটে আটকে ধুলোয়, গরমে কষ্ট পেতে হত। এখন ফুলওয়াড়িয়ার ফ্লাইওভার হয়ে গেছে। এখন রাস্তা কমে গেছে, সময় বাঁচছে, জীবন অনেক সহজ হয়েছে। একইভাবে জৌনপুর ও গাজিপুরের গ্রামীণ এলাকার মানুষদের যাতায়াতের জন্য বারাণসী শহর দিয়ে যেতে হত। বালিয়া, মাউ ও গাজিপুর জেলার বাসিন্দাদের বিমান বন্দরে যাওয়ার জন্য গোটা বারাণসী ঘুরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকতে হত। এখন রিং রোডের সাহায্যে কয়েক মিনিটে মানুষ এক পার থেকে অন্য পারে পৌঁছে যাচ্ছে।
বন্ধুরা,
আগে কেউ গাজিপুর যেতে চাইলে বেশ কয়েক ঘণ্টা হাতে সময় নিয়ে বেরতে হত। এখন গাজিপুর, জৌনপুর, মির্জাপুর, আজমগড়ের মতো প্রতিটি শহরে পৌঁছনোর রাস্তা প্রশস্ত হয়েছে। আগে যেখানে যানজট ছিল, আজ সেখানে উন্নয়নের গতি। গত এক দশকে বারাণসী ও আশপাশের অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিতে প্রায় ৪৫,০০০ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। এই টাকা কেবল কংক্রিটের জন্য খরচ হয়নি, এর মাধ্যমে আস্থা স্থাপিত হয়েছে। এই বিনিয়োগের সুফল আজ কাশী ও আশপাশের জেলাগুলির মানুষ ভোগ করছেন।
বন্ধুরা,
কাশীর পরিকাঠামোতে এই বিনিয়োগ আজও অব্যাহত। আজ হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের শিলান্যাস করা হয়েছে। আমাদের লাল বাহাদুর শাস্ত্রী বিমান বন্দরের সম্প্রসারণের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। বিমান বন্দর সম্প্রসারিত হলে তার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার প্রসারও অবশ্যম্ভাবী হয়ে ওঠে। সেজন্য এখন বিমান বন্দরের কাছে একটি ৬ লেনের ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গ তৈরি করা হচ্ছে। আজ ভাদোহি, গাজিপুর ও জৌনপুরের সড়ক প্রকল্পগুলির কাজও শুরু হয়েছে। ভিখারীপুর ও মান্ডুয়াডিতে একটি ফ্লাইওভারের দাবি দীর্ঘদিন ধরে ছিল। আমি খুশি যে এই দাবি পূরণ হচ্ছে। বারাণসী শহর ও সারনাথের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের জন্য একটি নতুন সেতুও নির্মিত হতে চলেছে। এটি তৈরি হয়ে গেলে বিমান বন্দর ও অন্যান্য জেলা থেকে সারনাথ যাওয়ার জন্য বারাণসী শহরের ভিতরে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না।
বন্ধুরা,
আগামী কয়েক মাসের মধ্যে যখন এইসব কাজ শেষ হয়ে যাবে, তখন বারাণসীতে যাতায়াত আরও সহজ হবে। গতিও বাড়বে, ব্যবসাও বাড়বে। এরফলে যারা বেনারসে উপার্জনের জন্য বা চিকিৎসার জন্য আসেন, তাঁদেরও সুবিধা হবে। আর এখন তো কাশীতে সিটি রোপওয়ের ট্রায়ালও শুরু হয়ে গেছে। বিশ্বের যে কয়েকটি মাত্র শহরে এমন সুবিধা পাওয়া যায়, বারাণসীও তার অন্তর্ভুক্ত হবে।
বন্ধুরা,
বারাণসীতে উন্নয়ন বা পরিকাঠামোর কোনো কাজ হলে সমগ্র পূর্বাঞ্চলের যুব সমাজ তার সুবিধা ভোগ করে। কাশীর যুব সম্প্রদায় যাতে খেলাধুলায় এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়, সেই বিষয়টির ওপরও আমাদের সরকার জোর দিয়েছে। এখন তো আমরা ২০৩৬ সালে ভারতে অলিম্পিক গেমস আয়োজনের চেষ্টা চালাচ্ছি। কিন্তু আমার কাশীর তরুণ বন্ধুরা, অলিম্পিকে পদক জেতার জন্য তোমাদের এখন থেকে কাজ শুরু করতে হবে। সেইজন্যই আজ বারাণসীতে নতুন স্টেডিয়াম হচ্ছে, খেলাধুলার নতুন সুযোগ-সুবিধা গড়ে তোলা হচ্ছে। নতুন স্পোর্টস কমপ্লেক্স খুলে দেওয়া হয়েছে। বারাণসীর শত শত খেলোয়াড় সেখানে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। সাংসদ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীরাও তাঁদের প্রতিভা প্রদর্শনের সুযোগ পেয়েছেন।
বন্ধুরা,
ভারত আজ উন্নয়ন এবং ঐতিহ্য, উভয়কেই একসঙ্গে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। আমাদের কাশীর এর সব থেকে সুন্দর মডেল হয়ে উঠেছে। এখানে গঙ্গার প্রবাহ এবং ভারতের চেতনার প্রবাহ একসঙ্গে বয়ছে। ভারতের আত্মা তার বৈচিত্র্যের মধ্যে নিহিত, কাশী এর সবথেকে উজ্জ্বল নিদর্শন। কাশীর প্রতিটি এলাকায় এক ভিন্ন সংস্কৃতি দেখা যায়, প্রতিটি গলিতে ভারতের এক ভিন্ন রঙ দেখা যায়। আমি আনন্দিত যে কাশী-তামিল সঙ্গমমের মতো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে একতার এই যোগসূত্র আরও মজবুত হচ্ছে। এখন তো এখানে একতা মলও তৈরি হতে চলেছে। এই একতা মলে ভারতের বৈচিত্র্য প্রদর্শিত হবে। ভারতের বিভিন্ন জেলার পণ্য এখানে এক ছাদের তলায় পাওয়া যাবে।
বন্ধুরা,
বিগত বছরগুলিতে উত্তরপ্রদেশ তার অর্থনৈতিক মানচিত্র ও দৃষ্টিভঙ্গী বদলে ফেলেছে। উত্তরপ্রদেশ এখন আর সম্ভাবনার ভূমি নয়, এটি এখন সামর্থ ও সিদ্ধির সংকল্পভূমিতে পরিণত হচ্ছে। এখন সর্বত্রই মেড ইন ইন্ডিয়ার প্রতিধ্বনি শোনা যায়। ভারতে তৈরি সামগ্রী এখন বিশ্বব্যাপি ব্র্যান্ড হয়ে উঠছে। এখানকার অনেক উৎপাদিত পণ্য জিআই ট্যাগ পাচ্ছে। জিআই ট্যাগ কেবল একটি ট্যাগ নয়, এটি একটি জমির পরিচয়ের প্রমাণপত্র। এ থেকে বোঝা যায় যে, এই জিনিসটি এই মাটি থেকেই উৎপন্ন হয়। জিআই ট্যাগ পেলে বাজারে উন্নতির রাস্তাও খুলে যায়।
বন্ধুরা,
আজ উত্তরপ্রদেশ সারা দেশে জিআই ট্যাগিং-এর ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে। অর্থাৎ আমাদের শিল্প, আমাদের দ্রব্য সামগ্রী, আমাদের দক্ষতা এখন দ্রুত আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করছে। এ পর্যন্ত বারাণসী ও আশপাশের জেলাগুলির ৩০টিরও বেশি পণ্য জিআই ট্যাগ পেয়েছে। বারাণসীর তবলা, সানাই, দেওয়াল চিত্র, ঠান্ডাই, লাল লঙ্কা, লাল পেঁড়া, নিরঙ্গা বরফি- প্রতিটিই জিআই ট্যাগ পেয়েছে। আজই জৌনপুরের ইমারতি দ্রব্য, মথুরার সাঁচি আর্ট, বুন্দেলখণ্ডের কাথিয়া গম, পিলিভিতের বাঁশি, প্রয়াগরাজের মুঞ্জকলা, বেরিলির জারদৌসি, চিত্রকূটের কাঠ শিল্প, লাখ ইমারির থারু জারদৌসির মতো বিভিন্ন শহরের পণ্য জিআই ট্যাগ লাভ করেছে। উত্তরপ্রদেশের মাটির সুবাস এখন কেবল বাতাসেই নয়, সীমান্ত পেরিয়েও ছড়িয়ে পড়বে।
বন্ধুরা,
যে কাশীকে বোঝে, সে ভারতের আত্মাকে বুঝতে পারে। আমি কাশীকে ক্রমাগত আরও সুন্দর করে তোলার প্রয়াস চালিয়ে যাবো। আমাদের কাশীকে সুন্দর ও স্বপ্নময় করে রাখতে হবে। কাশীর প্রাচীন আত্মাকে তার আধুনিক শরীরের সঙ্গে সংযুক্ত করার প্রয়াস চালিয়ে যেতে হবে। এই সংকল্প মনে নিয়ে আমার সাথে আরও একবার হাত তুলে আপনারা বলুন, নমঃ পার্বতী পতয়ে, হর-হর মহাদেব। অজস্র ধন্যবাদ।
SC/SD/NS…
(Release ID: 2121015)
Visitor Counter : 19