প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

চলচ্চিত্র কিংবদন্তী রাজ কাপুরের শতবর্ষ পূর্তিতে কাপুর পরিবারের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আলাপচারিতার বঙ্গানুবাদ

Posted On: 11 DEC 2024 8:13PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪

 

রণবীর কাপুর :  গত এক সপ্তাহ ধরে আমাদের পারিবারিক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ একটা বিষয় নিয়ে সরগরম হয়ে উঠেছে। তা হল আপনাকে আমরা কী বলে সম্বোধন করবো – প্রাইম মিনিস্টার জি, নাকি প্রধানমন্ত্রী জি। রীমা পিসি তো রোজ আমাকে ফোন করে কী বলতে হবে, কখন বলতে হবে – তা জিজ্ঞাসা করতেন। 

প্রধানমন্ত্রী : ভাই, আমি তো আপনাদের পরিবারেরই অংশ। আমাকে যা ইচ্ছে তাই সম্বোধন করুন। 

মহিলা : মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, শ্রী নরেন্দ্র মোদী জি!

প্রধানমন্ত্রী : কাট!

মহিলা : আপনি আপনার মূল্যবান সময় ব্যয় করে আজ অত্যন্ত সহৃদয়তার সঙ্গে আমাদের এখানে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। রাজ কাপুরের শততম জন্মদিন উপলক্ষে আমরা আপনাকে ধন্যবাদ জানাই। বাবার একটা ছবির কয়েকটা লাইন আমার মনে পড়ছে :  ম্যায় না রহুঙ্গি, তুম না রহোগে, লেকেন রহেঙ্গে নিশানিয়াঁ!

প্রধানমন্ত্রী : ওয়াও!

মহিলা : আপনি আমাদের যে সম্মান ও ভালোবাসা দেখিয়েছেন, তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জি, কাপুর পরিবারের প্রতি যে শ্রদ্ধা প্রকাশ করছেন, আজ সমগ্র জাতি তা দেখতে পাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী : কাপুর সাব-এর অবদান অসামান্য! আপনাদের এখানে স্বাগত জানাতে পেরে আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি। রাজ সাবের শততম জন্মদিন, ভারতীয় চলচ্চিত্রের যাত্রায় এক সোনালী মাইলফলক। ১৯৪৭ সালের নীল কমল থেকে ২০৪৭, ১০০ বছরের এই যাত্রা, জাতির প্রতি অসাধারণ অবদানকে সূচিত করে। আজকাল কূটনৈতিক মহলে একটা কথার খুব চল হয়েছে, তা নিয়ে প্রচুর আলোচনা হয় – ‘সফট পাওয়ার’। যে যুগে এই ‘সফট পাওয়ার’ শব্দটা তৈরি হয়নি, সেই সময়ে রাজ সাব তাঁর কাজের মধ্য দিয়ে বিশ্বমঞ্চে ভারতের প্রভাব প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। দেশের জন্য তা অবিস্মরণীয় সেবা ছিল। 

মহিলা : রণবীরের সঙ্গেও এরকম হয়েছিল। ও একটা গাড়িতে যাচ্ছিল, সেই সময় রুশ গাড়িচালক ওঁকে জিজ্ঞাসা করে, আপনি কি ভারত থেকে এসেছেন? তারপরে তিনি একটি গান গাইতে শুরু করেন। রণবীর ওই গাড়িচালককে বলে, আমি রাজ কাপুরের নাতি। 

রণবীর কাপুর : আমি ওনাকে বলেছিলাম যে আমি রাজ কাপুরের নাতি। এই পরিচয়ের জন্য আমার কখনও ট্যাক্সি ভাড়া লাগেনি। 

প্রধানমন্ত্রী : বিশেষত মধ্য এশিয়ার জন্য কিছু করা যেতে পারে। ওখানকার মানুষের মন ও হৃদয়ে অনুরণিত হবে, এমন একটা সিনেমা তৈরি করা উচিত। এত বছর পরে আজও ওখানকার মানুষের সঙ্গে রাজ সাবের একটা সুদৃঢ় মানসিক সংযোগ রয়েছে। এটা সত্যিই অসাধারণ। 

মহিলা : এখন তো ছোট ছেলে-মেয়েদেরও নানারকম গান শেখানো হচ্ছে!

প্রধানমন্ত্রী : তাদের জীবনে এর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব পড়ছে। মধ্য এশিয়ার অপার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আমি বিশ্বাস করি। আমাদের এই সংযোগ পুনঃস্থাপন করতে হবে। নতুন প্রজন্মকে এর সঙ্গে যুক্ত করতে হবে, বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করতে হবে। এজন্য এই ধরনের সৃজনশীল প্রয়াস শুরু করা উচিত। এগুলো অবশ্যই নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছোবে। 

মহিলা : উনি এতো ভালোবাসা পেয়েছিলেন যে ওনার নাম আন্তর্জাতিক স্তরে পরিচিত হয়ে উঠেছিল। তাঁকে একজন সাংস্কৃতিক দূত বলা যেতে পারতো। তবে, আজকের দিনে যেটা বলতেই হবে তা হল, তিনি হয়তো একদিক থেকে সাংস্কৃতিক দূত ছিলেন, তবে আমাদের প্রধানমন্ত্রী ভারতকে বিশ্বমঞ্চে উত্তীর্ণ করেছেন। এজন্য আমাদের পরিবারের প্রতিটি সদস্যই অত্যন্ত গর্বিত। 

প্রধানমন্ত্রী : সত্যি বলতে কী, বিশ্বমঞ্চে দেশের অবস্থান ও প্রভাব অনেকটাই বেড়েছে। যেমন ধরুন, যোগাভ্যাস। আজ আপনি বিশ্বের যে প্রান্তেই যান না কেন, যোগাভ্যাসের প্রশংসা শুনতে পাবেন। 

মহিলা : আমার মা, আমি, বেবো, লোলো – আমরা সবাই যোগব্যায়ামে গভীর ভাবে আগ্রহী। 

প্রধানমন্ত্রী : আমার সঙ্গে যখনই বিশ্ব নেতাদের কথা হয়, সে মধ্যাহ্নভোজ হোক বা নৈশভোজ, তাঁরা প্রায়শই যোগাভ্যাস নিয়ে আমার সঙ্গে কথা বলেন। 

ব্যক্তি : এই সিনেমাটি দাদুর প্রতি আমার বিনম্র শ্রদ্ধা। এটাই প্রযোজক হিসেবে আমার প্রথম ছবি। আমার পরিবারকে নিয়ে কিছু তৈরি করার ইচ্ছা আমার বরাবরই ছিল। যা কিছু আমাদের প্রিয়, সব এই কাজটার মধ্যে রয়েছে। 

মহিলা : আচ্ছা আমি একটা কথা বলবো? এরা আমার নাতি-নাতনি, আমার সন্তান। এরা তাদের দাদুকে দেখেনি। তবু, তাকে সম্মান জানিয়ে এই সিনেমাটা বানিয়েছে। আরমান প্রচুর গবেষণা করেছে। এই কাজটা আসলে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি। 

ব্যক্তি : আমাদের যা কিছু শেখা, সবই সিনেমা থেকে। এর বেশির ভাগই মা আমাদের শিখিয়েছেন। 

প্রধানমন্ত্রী : আপনি যখন কোন কিছু নিয়ে গবেষণা করেন, তখন নিজেকে সেই জগতের মধ্যে ডুবিয়ে দিতে হয় – আপনি তার মধ্যে বাঁচেন। আপনারা সত্যিই ভাগ্যবান, কারণ আপনাদের দাদুর সঙ্গে আপনাদের দেখা না হলেও এই কাজের মধ্য দিয়ে আপনারা তাঁর জীবন প্রত্যক্ষ করার সুযোগ পেয়েছেন। 

ব্যক্তি : একদম ঠিক বলেছেন। এটা আমার খুব বড় একটা স্বপ্ন ছিল। আমার পুরো পরিবার যে এই কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, তার জন্য আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। 

প্রধানমন্ত্রী : ওনার সিনেমার প্রভাব যে কতটা, আমি তা বলছি। জনসংঘের সময়ে একবার দিল্লিতে একটা নির্বাচন হল, জনসংঘ তাতে হারলো। পরাজয়ের পর আডবানি জি এবং অটল জি বললেন, “আমরা এখন কী করবো?” মন ভালো করার জন্য তাঁরা একটা সিনেমা দেখতে গেলেন। তাঁরা রাজ কাপুরের সিনেমা দেখতে গেলেন। পরদিন সকালেই তাঁরা আবার নতুন আশায় ভর করে চাঙ্গা হয়ে উঠলেন। এটাই হল ব্যাপার। হার সত্বেও এক নতুন ভোর তাঁদের জন্য অপেক্ষা করছিল। 

আমার মনে আছে একবার আমি চীনে আছি। সেখানে আপনার বাবার একটা গান চলছিল। আমি আমার এক সহকর্মীকে মোবাইল ফোনে গানটা রেকর্ড করতে বললাম। আমি সেটা ঋষি সাবকে পাঠিয়েছিলাম। উনি খুব খুশি হয়েছিলেন। 

আলিয়া : আপনি কিছুদিন আগে আফ্রিকা গিয়েছিলেন। আমি একটা ক্লিপে দেখেছি, আপনি একজন সেনার সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছেন। আর তিনি আমার একটা গান গাইছেন। ওই ক্লিপটা ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল। বহু মানুষ ওই ক্লিপ আমার কাছে পাঠিয়েছিলেন। সবাই ওটা দেখে খুব খুশি হয়েছিল। আমার খুব মনে হয় যে, বিশ্বকে এক সূত্রে বাঁধার এক অনন্য ক্ষমতা গানের রয়েছে। বিশেষ করে, হিন্দি গানের একটা বিশেষ জায়গা রয়েছে। হিন্দি গান অনায়াসে ভাষার বেড়া ডিঙিয়ে যেতে পারে। মানুষ হয়তো সব সময় গানটার মানে বুঝছেন না, কিন্তু তাঁরা গানটা গাইছেন। বিভিন্ন জায়গায় ঘোরার সময়ে আমিও এটা লক্ষ করেছি। বিশেষ করে রাজ কাপুরের গানের ক্ষেত্রে তো এটা আরও বেশি করে সত্য। আমাদের গান-বাজনার মধ্যে এমন একটা গভীর আবেগ রয়েছে, আর সেটা এমন বিশ্বজনীন যে, এর সঙ্গে সহজেই সংযোগ স্থাপন করা যায়। আচ্ছা আমার একটা প্রশ্ন আছে আপনার কাছে – আপনি কি এখনও গান শোনার সময় পান?

প্রধানমন্ত্রী : হ্যাঁ, আমি তো গান শুনি, যখনই সুযোগ পাই তখনই শুনি। 

সইফ আলি খান : আপনি একমাত্র প্রধানমন্ত্রী, যাঁর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ আমার হয়েছে। আপনি আমাদের ব্যক্তিগত ভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। একবার নয়, দু-দুবার। আপনি এমন একটা ইতিবাচক শক্তি চারিদিকে ছড়িয়ে দেন, যার তুলনা নেই। কাজের প্রতি আপনার নিষ্ঠা সত্যই প্রশংসার যোগ্য। আপনি যে সব কাজ করেছেন তার জন্য আপনাকে অভিনন্দন জানাই। আমাদের সামনে আপনার দরজা খুলে দেওয়ার জন্য, আমাদের সঙ্গে দেখা করার জন্য এবং এভাবে নাগালের মধ্যে আসার জন্য আপনাকে অজস্র ধন্যবাদ। 

প্রধানমন্ত্রী : আমার মনে আছে আপনার বাবার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। আমি আশা করেছিলাম আপনার পরিবারের তিন প্রজন্মের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ আজই আমার হয়ে যাবে। কিন্তু আপনারা তো আপনাদের তৃতীয় প্রজন্মকে তো সঙ্গে করে নিয়ে এলেন না। 

করিশ্মা কাপুর : আমরা খুব আনতে চেয়েছিলাম। 

মহিলা : এরা সকলেই বড় অভিনেতা। তবে, আমরা কোন বৃহত্তর ক্ষেত্রে নেই। আমার ছেলে-মেয়েরা তাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। আজ আপনি এখানে আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। সব কিছুই বাবার জন্য!

রণবীর কাপুর : আমরা ১৩, ১৪ ও ১৫ ডিসেম্বর রাজ কাপুরের সিনেমা নিয়ে একটা রেট্রোস্পেকটিভের আয়োজন করছি। ভারত সরকার, এনএফডিসি এবং এনএফএআই এই কাজে আমাদের সর্বতো সহায়তা করছে। আমরা তাঁর ১০টি সিনেমা সংরক্ষণ করেছি। সেগুলি দেশের ৪০টি শহরে ১৬০টি সিনেমা হলে দেখানো হবে। মুম্বাইতে ১৩ তারিখ এর প্রিমিয়ার হবে। চলচ্চিত্র শিল্পের সঙ্গে জড়িত সবাইকে আমরা আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। 

(প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাপুর পরিবারের মূল আলাপচারিতা হিন্দিতে হয়েছিল)
 

 


PG/SD/AS


(Release ID: 2086080) Visitor Counter : 26