প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

মহারাষ্ট্রের ওয়াসিমে ২৩,৩০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে কৃষি ও পশুপালন সম্পর্কিত বিভিন্ন কর্মসূচির সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী

Posted On: 05 OCT 2024 2:38PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ৫ অক্টোবর, ২০২৪

 

মহারাষ্ট্রের ওয়াসিমে আজ কৃষি ও পশুপালন সম্পর্কিত কয়েকটি বিশেষ কর্মসূচির সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এগুলির বাস্তবায়নে বিনিয়োগ করা হবে প্রায় ২৩,৩০০ কোটি টাকা। কর্মসূচিগুলির মধ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধির অষ্টাদশ কিস্তি প্রদান, নমো শেতকারী মহাসম্মান নিধি যোজনার পঞ্চম কিস্তির সূচনা, কৃষি পরিকাঠামো তহবিলের আওতায় ৭,৫০০টি প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গীকরণ, ৯,২০০টি কৃষক উৎপাদক সংগঠন, মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে পাঁচটি সৌর পার্ক স্থাপন এবং গবাদি পশু ও তার প্রজনন সম্পর্কিত একটি বিশেষ প্রকল্প। 

 প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধির অষ্টাদশ কিস্তি প্রদানের বিষয়টির উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে মহারাষ্ট্রের কৃষিজীবীদের কাছে কর্মসূচির সুফল দ্বিগুণ আকারে পৌঁছে দিতে রাজ্য সরকার বিশেষভাবে সচেষ্ট। আজ ৯ কোটি ৫০ লক্ষ কৃষককে মোট ২০ হাজার কোটি টাকা প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধির অষ্টাদশ কিস্তি বাবদ প্রদান করা হয়। শ্রী মোদী তাঁর ভাষণে নমো শেতকারী মহাসম্মান নিধি যোজনার কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এর আওতায় মহারাষ্ট্রের ৯০ লক্ষ কৃষককে ১,৯০০ কোটি টাকার মতো আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে কৃষক উৎপাদক সংগঠন গড়ে তোলা হচ্ছে সরকারি উদ্যোগে। ‘লেড়কি বহিন যোজনা’র আওতায় সুফলভোগীদের কাছে সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারীশক্তির ক্ষমতায়নে এই কর্মসূচিটি বিশেষভাবে সুফল এনে দিতে পারে। আজকের বিভিন্ন প্রকল্প ও কর্মসূচির জন্য মহারাষ্ট্রবাসীকে অভিনন্দিত করেন প্রধানমন্ত্রী।

পোহারা দেবীতে বানজারা বিরাসত মিউজিয়ামের উদ্বোধন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে উদ্বোধন হওয়া এই নতুন মিউজিয়ামটি দেশের প্রাচীন সংস্কৃতি ও বানজারা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য সম্পর্কে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অবহিত করবে। পোহারা দেবীতে বানজারা সম্প্রদায়ের সঙ্গে আলাপচারিতাকালে শ্রী মোদী তাঁদের ঐতিহ্য এই মিউজিয়ামের মধ্য দিয়ে স্বীকৃতি লাভ করায় আনন্দ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ভারতের সমাজজীবন তথা উন্নয়নের যাত্রাপথে বানজারা সমাজ এক বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে। শিল্প, সংস্কৃতি, আধ্যাত্মিকতা এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও বানজারা সম্প্রদায়ের অবদান যথেষ্ট বলে তিনি মন্তব্য করেন। সন্ত সেওয়ালাল মহারাজ, স্বামী হাতিরামজি, সন্ত ঈশ্বর সিং বাপুজি এবং সন্ত লক্ষ্মণ চৈতন্য বাবুজির মতো আধ্যাত্মিক নেতাদের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে বানজারা সম্প্রদায় থেকে উঠে এসেছেন এমনই বহু সাধুসন্ত যাঁরা ভারতের আধ্যাত্মিক জাগরণে অফুরন্ত শক্তি যুগিয়েছেন। এছাড়াও, দেশের সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারকে সজীব ও স্বতঃস্ফূর্ত রাখতে তাঁরা যে নিরলস পরিশ্রম করে গেছেন, একথারও উল্লেখ ছিল আজ প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে। তিনি বলেন, ব্রিটিশ শাসিত ভারতে বানজারা সম্প্রদায়ের মানুষকে অপরাধী বলে গণ্য করা হত। এই কারণে তাঁরা কম অত্যাচারের শিকার হননি। 

কেন্দ্রের বর্তমান সরকারের তুলনায় অতীতের অন্যান্য সরকারগুলির কাজের তুলনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে পোহারা দেবী মন্দিরের উন্নয়ন কর্মসূচি শ্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশের আমলে শুরু হলেও পরবর্তীকালে তা স্থগিত করে দেওয়া হয়। এরপর শ্রী একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বে রাজ্য সরকার গঠিত হলে এই কাজ পুনরায় শুরু করা হয়। পোহারা দেবী মন্দির উন্নয়ন প্রকল্পে ৭০০ কোটি টাকারও বেশি ব্যয় করা হয়েছে বলে এদিন প্রসঙ্গত জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই প্রকল্পটির মাধ্যমে ধর্মীয় স্থানের পরিবেশ ও পরিস্থিতিকে যেমন বদলে দেওয়া সম্ভব হবে, অন্যদিকে তেমনই দূরদুরান্তের পূণ্যার্থীরা এখানে খুব সহজেই পৌঁছতে পারবেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশবাসীর মধ্যে ঐক্যই নানা ধরনের সমস্যা থেকে দেশকে বাঁচাতে পারে। কারণ, ভারতের উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে স্তব্ধ করে দেওয়ার মতো বিভিন্ন চক্রান্তও নেপথ্যে কাজ করে চলেছে। এই কারণে জনসাধারণকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। মাদকের প্রতি আসক্তি থেকে সাধারণ মানুষকে দূরে থাকারও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি এজন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আর্জি জানান। 

শ্রী মোদী বলেন, আমাদের সরকারের প্রতিটি সিদ্ধান্ত এবং প্রতিটি নীতিগত পদক্ষেপ বিকশিত ভারত গড়ে তোলার লক্ষ্যেই বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং দেশের কৃষক সমাজ এই প্রচেষ্টার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে যুক্ত। সেই কারণে দেশের কৃষক ও কৃষিজীবী মানুষের মধ্যে ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে সরকার বড় ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সরকারি কর্মসূচিগুলির মধ্যে রয়েছে ৯,২০০টি কৃষক উৎপাদন সংগঠন জাতির উদ্দেশে উৎসর্গীকরণ, কৃষিপণ্যের মজুত, প্রক্রিয়াকরণ ও ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত বেশ কিছু পরিকাঠামো প্রকল্প এবং এর মাধ্যমে কৃষক ও কৃষিজীবীদের আয় ও উপার্জন বৃদ্ধির উদ্যোগ। মহারাষ্ট্রে বর্তমানে কৃষকরা তাঁদের আয় ও উপার্জন সহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দ্বিগুণ হারে পেতে শুরু করেছেন বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী একনাথ শিন্ডের উদ্যোগে কৃষকরা বিনাব্যয়ে বিদ্যুতের সুযোগও গ্রহণ করতে পারছেন। 

প্রসঙ্গত মহারাষ্ট্র ও বিদর্ভের কৃষকরা বহু দশক ধরে নানা দুঃখ ও কষ্টের মধ্য দিয়ে দিন অতিবাহিত করেছেন বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন যে পূর্ববর্তী সরকারগুলি কৃষকদের জীবন নানাভাবে দুর্বিষহ করে তুলেছিল। তাঁদের কল্যাণে কেন্দ্র থেকে যা বরাদ্দ করা হত তা অন্য খাতে ব্যয় করার প্রবণতাও সেই সময় লক্ষ্য করা গেছে। সেই সময় জলসেচ প্রকল্প রূপায়ণে অযথা বিলম্ব ছিল যেন খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয়। প্রধান প্রধান নদীগুলির মধ্যে সংযোগ সঠিক সময় গড়ে তোলা হলে অমরাবতী, আকোলা, বুলধানা, ওয়াসিম, নাগপুর, ওয়ার্ধা এবং যাবতমলে জলের ঘাটতি পূরণ সঠিক সময়ে সম্ভব হতে পারত।

প্রধানমন্ত্রী বলেন যে মহারাষ্ট্রের দরিদ্র, সাধারণ মানুষ, কৃষক, শ্রমিক, দলিত এবং অন্যান্য বঞ্চিত ও পিছিয়ে পড়া মানুষের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে অভিযানকে যদি আরও জোরদার করে তোলা যায়, তাহলে সার্বিকভাবে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিও ত্বরান্বিত হতে পারে। 

পরিশেষে বিকশিত মহারাষ্ট্র এবং বিকশিত ভারত গঠনের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার ফলশ্রুতিতে দেশ যে তার নির্দিষ্ট লক্ষ্যে উপনীত হতে পারবে, একথা স্থির বিশ্বাসের সঙ্গে ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী।

আজকের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল শ্রী সি পি রাধাকৃষ্ণন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী একনাথ শিন্ডে, উপ-মুখ্যমন্ত্রীদ্বয় শ্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ ও শ্রী অজিত পাওয়ার, কেন্দ্রীয় কৃষি ও কৃষককল্যাণ মন্ত্রী শ্রী শিবরাজ সিং চৌহান এবং মৎস্যচাষ, পশুপালন ও দুগ্ধোৎপাদন দপ্তরের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী রাজীব রঞ্জন।

 

PG/SKD/DM


(Release ID: 2066438) Visitor Counter : 34