প্রতিরক্ষামন্ত্রক
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী : ভারত মহাসাগর অঞ্চলে ভারতকে এখন দেখা হচ্ছে পছন্দের নিরাপত্তা অংশীদার হিসেবে; শান্তি ও প্রগতির প্রসারে নৌবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে
Posted On:
19 SEP 2024 3:31PM by PIB Kolkata
নতুনদিল্লি ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শ্রী রাজনাথ সিং নতুন দিল্লিতে ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪-এ ন্যাভাল কম্যান্ডার্স ২০২৪-এর দ্বিতীয় সংস্করণে ভাষণ দিয়েছেন। ভারত মহাসাগরে শান্তি প্রগতির প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার জন্য ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রশংসা করেছেন। তিনি এই অঞ্চলকে অর্থনীতি, ভূ-রাজনৈতিক, বাণিজ্য এবং নিরাপত্তার পরিপ্রেক্ষিতে মূল্যবান এবং সংবেদনশীল বলে আখ্যা দিয়েছেন।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেছেন, ভারত একসময় ছিল সমুদ্র উপকূল নিয়েও ভূমিবেষ্টিত দেশের মতো। কিন্তু এখন এটি ভূ-সীমান্ত নিয়ে একটি দ্বীপরাষ্ট্র। তিনি দেশের সামুদ্রিক স্বার্থের সুরক্ষায় সদা প্রস্তুত থাকার জন্য ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন, এর ফলে এই অঞ্চলে যেকোনো বিষয়ে সর্ব প্রথমেই এগিয়ে যাওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেছে বাহিনী।
শ্রী রাজনাথ সিং বলেন, “বিশ্ব বাণিজ্যের সিংহভাগই হয় এই অঞ্চল দিয়ে, যা তাকে মূল্যবান করে তুলেছে। আবার একইসঙ্গে জলদস্যু, অপহরণ, ড্রোন আক্রমণ, ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এবং সমুদ্রে কেবল সংযোগ ব্যাহত হওয়ার মতো ঘটনার জন্য এটি অত্যন্ত সংবেদনশীল অঞ্চলও। আমাদের নৌবাহিনী ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলির অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে এবং ভারত মহাসাগর অঞ্চলে সুষ্ঠুভাবে পণ্য পরিবহনে সাহায্য করেছে। বাহিনীর জলদস্যু বিরোধী অভিযান শুধু ভারতেই নয়, বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে । সমগ্র অঞ্চলে এখন ভারতকে দেখা হচ্ছে পছন্দের অংশীদার হিসেবে। যখনই প্রয়োজন আমরা এই অঞ্চলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবো”।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন যে, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভারতীয় নৌবাহিনীর ক্রমবর্ধমান শক্তি সম্পর্কে আত্মসন্তুষ্টি থাকা উচিত নয়। তিনি কম্যান্ডারদের সময়ে সময়ে আত্মসমীক্ষা চালিয়ে যাওয়ার এবং বর্তমানের টালমাটাল আন্তর্জাতিক আবহে যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান। অর্থনীতি, বাণিজ্য, পরিবহন এবং সার্বিক জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় শক্তিশালী নৌশক্তির প্রয়োজনের ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।
শ্রী রাজনাথ সিং প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকারের ভাবনা অনুযায়ী আত্মনির্ভর হওয়ার লক্ষ্যে সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য অত্যাধুনিক জাহাজ, ডুবো জাহাজ ইত্যাদির অন্তর্ভুক্তির মা্ধ্যমে ভারতীয় নৌবাহিনীকে আরও শক্তিশালী করার উদ্যোগের কথা পুণরায় ব্যক্ত করেন। ভারতের জাহাজ নির্মাণ কারখানায় বর্তমানে নির্মাণাধীন ৬৪টি জাহাজ এবং ডুবো জাহাজ এবং ২৪টি অতিরিক্ত প্ল্যাটফর্মের জন্য বরাত দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী আরও বলেন যে, গত পাঁচ বছরে নৌবাহিনীর আধুনিকীকরণের বাজেটের দুই তৃতীয়াংশের বেশি খরচ করা হয়েছে দেশজ উপাদানের জন্য। যার ফলে ঘরোয়া প্রতিরক্ষা পরিমন্ডলের উন্নয়ন গতি পেয়েছে। নৌবাহিনীর দেশজ পণ্য ক্রয়ের উদ্যোগের প্রশংসা করে তিনি কম্যান্ডারদের ‘আত্মনির্ভরতা’ অর্জনের সংকল্পকে আরও জোরদার করার পথ খোঁজার ওপর জোর দিতে বলেন। তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন, নৌবাহিনীকে ‘ক্রেতা’ থেকে ‘নির্মাতা’য় রূপান্তর করার ভাবনা ২০৪৭-এর মধ্যে পূর্ণ স্বনির্ভর হওয়ার লক্ষ্যের সহায়ক।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী যূথবদ্ধতা এবং সম্পদের পূর্ণ মাত্রায় ব্যবহারের গুরুত্ব নিয়েও বলেন। তিনি জানান যে, ভারতীয় নৌবাহিনী এবং ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর নিজস্ব শক্তি, বিধি এবং কাজের ধরন আছে। তবে, দেশের সমুদ্র নিরাপত্তা জোরদার করতে আরও সমন্বয়ের প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে শ্রী রাজনাথ সিং একটি প্রযুক্তি প্রদশর্নীতে যোগ দেন। সেখানে প্রদর্শিত হয় ভারতীয় নৌবাহিনী এবং অন্যান্য সংস্থার তৈরি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির বিভিন্ন যন্ত্রপাতি এবং উপকরণ। চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চ্বৌহান, চিফ অফ দ্য নাভাল স্টাফ অ্যাডমিরাল দীনেশ কে ত্রিপাঠি, প্রতিরক্ষা সচিব শ্রী গিরিধর আরামানে এবং অন্য উচ্চ পদস্থ আমলা এবং সামরিক আধিকারিকরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
দ্বিবার্ষিক এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয় নৌ কম্যান্ডারদের মধ্যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রণকৌশলগত, কার্যগত এবং প্রশাসনিক বিষয় নিয়ে আলোচনার সুবিধার জন্য। সদা পরিবর্তনশীল ভূ-রাজনৈতিক এবং ভূ-রণকৌশলগত পরিস্থিতি, আঞ্চলিক সংকট এবং পশ্চিম এশিয়ায় সমুদ্র নিরাপত্তার পরিস্থিতি নিয়ে জটিলতার প্রেক্ষাপটে এবারের এই সম্মেলন ভারতীয় নৌবাহিনীর ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা স্থির করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে।
PG/AP/CS
(Release ID: 2056770)
Visitor Counter : 38