প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

গুজরাটের গান্ধীনগরে চতুর্থ গ্লোবাল রিনিউয়েবল এনার্জি ইনভেস্টর্স মিট অ্যান্ড এক্সপো (রি-ইনভেস্ট)-র উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী

“ভারতের সমাধানসূত্র সারা বিশ্বে প্রয়োগের জন্য”

“বাসগ্রহ-বান্ধব মানুষের নীতির প্রতি সরকার দায়বদ্ধ”

Posted On: 16 SEP 2024 1:05PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

 

গুজরাটের গান্ধীনগরের মহাত্মা মন্দিরে চতুর্থ গ্লোবাল রিনিউয়েবল এনার্জি ইনভেস্টর্স মিট অ্যান্ড এক্সপো (রি-ইনভেস্ট)-এর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনদিনের এই সম্মেলনের মাধ্যমে অ-জীবাশ্ম উৎস থেকে জ্বালানি উৎপাদনে ভারতের সাফল্য অর্জনে যাঁরা অবদান রেখেছেন, তাঁদের সম্মানিত করা হচ্ছে। এই ধরনের উৎস থেকে ২০০ গিগাওয়াটেরও বেশি শক্তি উৎপাদনে সক্ষম হয়ে উঠেছে এই দেশ। শ্রী মোদী সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে উদ্ভাবনমূলক নানান সমাধান নিয়ে আয়োজিত প্রদর্শনীও ঘুরে দেখেন। 

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী অভ্যাগত সকলকে স্বাগত জানান। পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির বিকাশে তিনদিনের এই আলোচনা প্রয়োজনীয় পথনির্দেশ দেবে বলে তিনি আশাবাদী। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতে ৬০ বছর পর ধারাবাহিকভাবে তিনবার একই সরকারকে নির্বাচিত করেছে দেশের মানুষ। এই বিষয়টি সরকারের প্রতি ১৪০ কোটি দেশবাসীর আস্থার প্রতিফলন। তৃতীয় মেয়াদে তাঁর সরকার দরিদ্র এবং বঞ্চিত মানুষের ক্ষমতায়নে আরও জোর দেবে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। তিনি আরও বলেন, আজকের এই আয়োজন ২০৪৭ নাগাদ এই দেশকে উন্নত করে তোলার কর্মসূচির একটি ধাপ। তৃতীয় মেয়াদে তিনি ক্ষমতাসীন হওয়ার পর সরকারের প্রথম ১০০ দিনের কর্মকাণ্ডের খতিয়ান তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ১০০ দিনে ভৌত এবং সামাজিক পরিকাঠামোর প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ নানান পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ভারতে ৭ কোটি বাড়ি তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে যেখানে বহু দেশের জনসংখ্যা ৭ কোটির কম। বিগত দুটি মেয়াদে ৪ কোটি বাড়ি তৈরি করে প্রাপকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ১২টি নতুন শিল্পায়িত শহর, ৮টি উচ্চগতির সড়ক অলিন্দ প্রকল্প, ১৫টি প্রায়-উচ্চগতির বন্দে ভারত ট্রেন চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। গবেষণা ও উদ্ভাবনের বিকাশে ১ ট্রিলিয়ন টাকার একটি তহবিল গড়ে তোলা হচ্ছে। ই-মবিলিটি, জৈব উৎপাদন এবং বায়ো-ই-৩ নীতির কথাও উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে। 

পরিবেশ-বান্ধব শক্তিক্ষেত্রে এই ১০০ দিনে মোট ৭ হাজার কোটি টাকার বায়ুশক্তি প্রকল্পের জন্য বাস্তব্যতা ব্যবধান অপসারক তহবিল প্রকল্প প্রকল্প চালু করা হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। তিনি আরও বলেন, ভারত ৩১ হাজার মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছে – যার জন্য খরচ ধরা হয়েছে ১২ হাজার কোটি টাকা। 

একবিংশ শতকে ভারত বিভিন্ন ক্ষেত্রে সারা বিশ্বকে বিবিধ সমস্যার সমাধানের পথ বাৎলে দেবে বলে প্রধানমন্ত্রী প্রত্যয়ী। এ প্রসঙ্গে তিনি এ মাসের শুরুর দিকে আয়োজিত গ্লোবাল ফিনটেক ফেস্ট কিংবা প্রথম আন্তর্জাতিক সৌর উৎসব, গ্লোবাল সেমি-কন্ডাক্টর সামিট এবং দ্বিতীয় এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অসামরিক উড়ান মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনের উল্লেখ করেন। 

শ্বেত বিপ্লব, মধু বিপ্লব, সৌর বিপ্লব প্রভৃতি ক্ষেত্রে গুজরাট রাজ্যটির অগ্রণী ভূমিকার প্রসঙ্গও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় প্রাদেশিক সরকারগুলির মধ্যে এখানেই প্রথম পৃথক মন্ত্রক তৈরি হয়েছে বলেও তিনি জানান। এই সম্মেলনের আয়োজন স্থল মহাত্মা মন্দিরের তাৎপর্য তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিপদ সম্পর্কে মহাত্মা গান্ধী অনেক আগেই সারা বিশ্বকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। 

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ২০৪৭ নাগাদ ভারতকে উন্নত দেশ গড়ে তোলার প্রশ্নে জ্বালানির চাহিদা সম্পর্কে সরকার সচেতন। এক্ষেত্রে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি একটি বড় পন্থা। ভারতে উন্নয়নের যে ভিত আজ তৈরি হচ্ছে, তা আগামী হাজার বছরেও প্রাসঙ্গিক থাকবে বলে প্রধানমন্ত্রী প্রত্যয়ী। 

জলবায়ু পরিবর্তন রোধে ভারতের বিভিন্ন উদ্যোগের প্রসঙ্গ ফের তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর ভাষণে উঠে আসে ‘পিএম সূর্য ঘর মুফ্‌ত বিদ্যুৎ প্রকল্প’-এর কথা। এই প্রকল্পের আওতায় বাড়ির ছাদে সৌর প্যানেল লাগিয়ে প্রতিটি পরিবার বিদ্যুৎ উৎপাদক হয়ে উঠতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, এই প্রকল্পের আওতায় ১ কোটি ৩০ লক্ষ পরিবার নিবন্ধিকৃত হয়েছে এবং ৩.২৫ লক্ষ বাড়িতে সৌর প্যানেল বসানোর কাজ শেষ হয়েছে।  

‘পিএম সূর্য ঘর মুফ্‌ত বিদ্যুৎ প্রকল্প’-এর সুবাদে একটি পরিবার বিদ্যুৎ উৎপাদন করে উদ্বৃত্ত বিক্রির মাধ্যমে বছরে বিদ্যুৎ বিল বাবদ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত সাশ্রয় করতে পারে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। এই টাকা পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড-এ ২০ বছর রাখলে ১০ লক্ষ টাকা পাওয়া যাবে এবং তা দিয়ে দরিদ্র পরিবারের অন্য চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। 

পিএম সূর্য ঘর প্রকল্পের সুবাদে পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি, ২০ লক্ষ কর্মসংস্থানেরও সুযোগ তৈরি হবে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। প্রকল্পটির আওতায় ৩ লক্ষ যুবককে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করাও সম্ভব বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। 

সৌর বিপ্লবের প্রসঙ্গে ভারতের সাফল্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রথম সৌর গ্রাম ‘মধেরা’র কথা বলেন। দেশে এরকম আরও সৌর গ্রাম তৈরি করা হবে বলে তিনি জানান। অযোধ্যা সহ ১৭টি জনপদকে সৌর শহর করে তোলা হবে বলেও প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন। 

গ্রিন হাইড্রোজেন ক্ষেত্রেও ভারতে দ্রুত কাজ হচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন। সরকারের গৃহীত গ্রিন হাইড্রোজেন মিশনের কথা তুলে ধরেন তিনি। বর্জ্য থেকে শক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রেও ভারতে জোরকদমে কাজ চলছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাসগ্রহ-বান্ধব মানুষের নীতির প্রতি সরকার দায়বদ্ধ। এক্ষেত্রে তিনি ‘মিশন LiFE’-এর উল্লেখ করেন। ২০২৫ নাগাদ পেট্রোলে ইথানল সংমিশ্রণের মাত্রা ২০ শতাংশে নিয়ে যেতে ভারত লক্ষ্য রেখেছে বলে প্রধানমন্ত্রী ফের উল্লেখ করেন। অমৃত সরোবর প্রকল্প, ‘মা-এর নামে একটি গাছ’ কর্মসূচির কথাও তিনি উল্লেখ করেন পরিবেশগত প্রশ্নে ভারতের নানা উদ্যোগের প্রসঙ্গে।

ভারতে শক্তি উৎপাদনের পাশাপাশি, উৎপাদন ক্ষেত্রেও বিনিয়োগের প্রভূত সুযোগ রয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী বার্তা দিয়েছেন। এই কর্মযজ্ঞে আরও লগ্নির আহ্বান জানান তিনি। 

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গুজরাটের রাজ্যপাল আচার্য দেবব্রত, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল, কেন্দ্রীয় নবীন এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি মন্ত্রী শ্রী প্রহ্লাদ যোশী, অন্ধ্রপ্রদেশ, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিশগড় এবং গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমুখ। 
 
PG/AC/DM


(Release ID: 2055496) Visitor Counter : 34