প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী গুজরাটের গান্ধীনগরে চতুর্থ বিশ্ব পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি বিনিয়োগকারী সম্মেলন ও এক্সপো’র (রি-ইনভেস্ট) উদ্বোধন করেন

"প্রথম ১০০ দিনে আমাদের অগ্রাধিকার স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। এটি আমাদের গতি এবং পরিমাপেরও প্রতিফলন"

Prime Minister Shri Narendra Modi inaugurates 4th Global Renewable Energy Investor’s Meet and Expo (RE-INVEST) in Gandhinagar, Gujarat

Posted On: 16 SEP 2024 1:05PM by PIB Agartala

নয়াদিল্লি, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪: আজ গুজরাটের গান্ধীনগরে চতুর্থ বিশ্ব পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি বিনিয়োগকারী বৈঠক ও প্রদর্শনীর (রি-ইনভেস্ট) উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিন দিনব্যাপী আয়োজিত এই শীর্ষ সম্মেলনে ২০০ গিগাওয়াটেরও বেশি অ-জীবাশ্ম জ্বালানী উৎপাদন ক্ষমতার ক্ষেত্রে ভারতের উল্লেখযোগ্য অবদানকারীদের সম্মান জানানো হয়। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, স্টার্ট আপ এবং প্রধান প্রধান শিল্প সংস্থাগুলির অত্যাধুনিক উদ্ভাবন প্রচেষ্টা সেখানে তুলে ধরা হয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রী এই প্রদর্শনী ঘুরে দেখেছেন৷

অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী রি-ইনভেস্ট সামিটের চতুর্থ সংস্করণে উপস্থিত সকলকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং আস্থা প্রকাশ করেছেন এই বলে যে, আগামী তিনদিন জ্বালানি, প্রযুক্তি ও নীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে গুরুত্বের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে। শ্রী মোদী বলেন, এই সম্মেলন থেকে প্রাপ্ত আলোচনা ও শিক্ষা সমগ্র মানবজাতিকে উপকৃত করবে। তিনি সফল আলোচনার জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সকলকে৷

৬০ বছর পর রেকর্ড তৃতীয়বারের জন্য একই সরকারকে নির্বাচন করার জন্য ভারতবাসী যে জনাদেশ দিয়েছেন সে কথাও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। শ্রী মোদী বলেন, “ভারতের আকাঙ্ক্ষাই তৃতীয় মেয়াদে সরকার পুনর্নির্বাচিত হওয়ার কারণ”। তিনি ১৪০ কোটি নাগরিক, যুব ও মহিলাদের বিশ্বাস ও আত্মবিশ্বাসের কথা তুলে ধরেন, যাঁরা বিশ্বাস করেন যে তাঁদের আকাঙ্ক্ষা এই তৃতীয় মেয়াদে নতুন করে পূরণ হবে। প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, গরিব, দলিত ও বঞ্চিতরা বিশ্বাস করেন যে সরকারের তৃতীয় মেয়াদ সম্মানজনক জীবনের গ্যারান্টি হয়ে উঠবে। তিনি বলেন, ভারতের ১৪০ কোটি নাগরিক ভারতকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হিসাবে গড়ে তোলার সংকল্প নিয়ে কাজ করে চলেছেন। আজকের এই অনুষ্ঠান কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার বৃহত্তর দৃষ্টিভঙ্গী, মিশন এবং কর্মপরিকল্পনার অঙ্গ বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তাঁর কার্যকালের প্রথম ১০০ দিনে সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্তগুলির কথা তুলে ধরেন।

ভারতের দ্রুত গতির উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত ক্ষেত্রের উপর জোর দেওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী প্রথম ১০০ দিনে সরকারের অগ্রাধিকারগুলিকে উল্লেখ করেন এবং কাজের গতি এবং পরিমাপের প্রতিফলনের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ১০০ দিনে দেশের ভৌত তথা সামাজিক পরিকাঠামো সম্প্রসারণে একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, ভারত ৭ কোটি গৃহ নির্মাণের পথে রয়েছে, যা অনেক দেশের জনসংখ্যার চেয়েও বেশি৷ গত দুই মেয়াদে ৪ কোটি আবাসন জনগণকে হস্তান্তর করা হয়েছে। ১২টি নতুন শিল্পনগরী তৈরির সিদ্ধান্ত, ৮টি হাইস্পিড রোড করিডর প্রকল্পের অনুমোদন, ১৫টিরও বেশি সেমি-হাইস্পিড বন্দে ভারত ট্রেন চালু করা, গবেষণার প্রসারের জন্য ১ লক্ষ কোটি টাকার গবেষণা তহবিল গঠন, ই-মোবিলিটি পরিচালনার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগের ঘোষণা, উচ্চ-পারফরম্যান্স বায়ো-ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের প্রচার এবং বায়ো ই৩ নীতির অনুমোদনের কথাও জানান তিনি।

গত ১০০ দিনে সবুজ শক্তি ক্ষেত্রের অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ৭ হাজার কোটি টাকারও বেশি মূল্যের উপকূলবর্তী এলাকায়  বায়ুশক্তি প্রকল্পগুলির জন্য 'ভায়াবিলিটি গ্যাপ ফান্ডিং' প্রকল্প শুরু করার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ভারত আগামী দিনে ১২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৩১ হাজার মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে কাজ করছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের বৈচিত্র্য, মাত্রা, ক্ষমতা, সম্ভাবনা এবং কর্মসম্পাদন সবকিছুই অনন্য এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের সমাধানের পথকে প্রশস্ত করেছে। তিনি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, “শুধু ভারত নয়, গোটা বিশ্ব বিশ্বাস করে যে ভারতই একুশ শতকের শ্রেষ্ঠ বাজি”। গত এক মাসে ভারত আয়োজিত আন্তর্জাতিক ঘটনাবলীর কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, এই মাসের গোড়ার দিকে গ্লোবাল ফিনটেক ফেস্টের আয়োজন করা হয়েছিল, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ প্রথম আন্তর্জাতিক সৌর উৎসবে অংশগ্রহণ করেছিলেন, গ্লোবাল সেমিকন্ডাক্টর সামিট, দ্বিতীয় এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনের আয়োজনও ভারত করেছিল এবং আজ ভারত গ্রিন এনার্জি সম্মেলনের আয়োজন করছে বলে উল্লেখ করেন৷

শ্রী মোদী বলেন, শ্বেত বিপ্লব, মধু বিপ্লব, সৌর বিপ্লবের সূচনা প্রত্যক্ষকারী গুজরাটে এখন চতুর্থ বিশ্ব পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি বিনিয়োগকারী বৈঠক ও প্রদর্শনীর আয়োজন হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করে বলেন, গুজরাট ভারতের প্রথম রাজ্য যে সবার আগে নিজস্ব সৌর নীতি প্রবর্তন করে। তিনি আরও বলেন, এর পরে সৌর সম্পর্কিত জাতীয় নীতি অনুসরণ করা হয়েছে। শ্রী মোদী আরও উল্লেখ করেন বলেন, জলবায়ু সম্পর্কিত একটি মন্ত্রক গঠনের ক্ষেত্রেও গুজরাট বিশ্বের অন্যতম অগ্রণী রাজ্য। তিনি উল্লেখ করেন যে গুজরাট ইতিমধ্যে সৌর কেন্দ্র স্থাপন শুরু করেছে যখন বিশ্ব এর কথা চিন্তাও করেনি।

স্থানটির নাম মহাত্মা মন্দিরের নাম উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জের বিষয়টি যখন উঠে আসেনি তখন বিশ্বকে সতর্ক করে দেওয়া অগ্রণী মহাত্মা গান্ধীর নামে এই মন্দিরের নামকরণ করা হয়েছে। মহাত্মাকে উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "আমাদের চাহিদা পূরণের জন্য পৃথিবীর যথেষ্ট সম্পদ রয়েছে, তবে আমাদের লোভ মেটানোর জন্য নয়। তিনি আরও বলেন, মহাত্মা গান্ধীর এই দৃষ্টিভঙ্গি ভারতের মহান ঐতিহ্য থেকে উদ্ভূত হয়েছে। শ্রী মোদী বলেন, ‘গ্রিন ফিউচার, নেট জিরো’র মতো শব্দগুলি কোনও অভিনব শব্দ নয়, বরং কেন্দ্র এবং ভারতের প্রতিটি রাজ্য সরকারের প্রয়োজন ও অঙ্গীকার।

প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, উন্নয়নশীল অর্থনীতি হিসাবে ভারতের কাছে এই প্রতিশ্রুতি থেকে দূরে থাকার বৈধ অজুহাত রয়েছে, কিন্তু তিনি সেই পথ বেছে নেননি। তিনি বলেন, “আজকের ভারত কেবল আজকের জন্য নয়, আগামী হাজার বছরের জন্য একটি ভিত্তি প্রস্তুত করছে”। শ্রী মোদী বিশেষ জোর দিয়ে বলেন, ভারতের লক্ষ্য শুধুমাত্র শীর্ষস্থানে পৌঁছানো নয়, বরং শীর্ষস্থানে টিকে থাকার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করা। তিনি আরও বলেন, ২০৪৭ সালের মধ্যে দেশটিকে এক উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে ভারত তার শক্তির চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে ভালোভাবেই সচেতন। শ্রী মোদী মনে করিয়ে দেন যে ভারত সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, পারমাণবিক ও জলবিদ্যুতের মতো পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির ভিত্তিতে তার ভবিষ্যত গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কারণ তেল-গ্যাসের মজুদের অভাব রয়েছে।

শ্রী মোদী বলেন, ভারত হল প্রথম জি-২০ দেশ যারা প্যারিসে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছে, তাও নির্ধারিত সময়সীমার ৯ বছর আগে। শ্রী মোদী আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০০ গিগাওয়াট পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দেশের লক্ষ্যগুলির একটি রূপরেখা তুলে ধরে বলেন, সরকার সবুজ রূপান্তরকে জনআন্দোলনে পরিণত করেছে। তিনি রুফটপ সোলারের জন্য ভারতের অনন্য প্রকল্পটি পর্যালোচনা করার পরামর্শ দিয়েছেন - প্রধানমন্ত্রী সূর্য ঘর মুক্ত বিদ্যুৎ প্রকল্প যেখানে সরকার প্রতিটি পরিবারের জন্য একটি রুফটপ সোলার সেটআপ স্থাপনের জন্য অর্থবরাদ্দ এবং ইনস্টলেশনে সহায়তা করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই কর্মসূচির মাধ্যমে ভারতের প্রতিটি পরিবার বিদ্যুৎ উৎপাদক হয়ে ওঠবে। তিনি জানান, এই কর্মসূচির আওতায় ১ কোটি ৩০ লক্ষেরও বেশি পরিবার নথিভুক্ত হয়েছে এবং এখনও পর্যন্ত ৩.২৫ লক্ষ বাড়িতে স্পটিংয়ের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে।

পিএম সূর্য ঘর বিনামূল্যে বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রধানমন্ত্রী ব্যাখ্যা করে বলেন, একটি ছোট্ট পরিবার মাসে ২৫০ ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে ১০০ ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ করে বাকি বিদ্যুৎ গ্রিডকে বিক্রি করে বছরে মোট ২৫ হাজার টাকা সাশ্রয় করতে পারবে। তিনি আরও বলেন, যদি সংরক্ষিত অর্থ ২০ বছরের জন্য পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ডে বিনিয়োগ করা হয়, তবে পুরো অর্থের পরিমাণ ১০ লক্ষ টাকারও বেশি হবে যা শিশুদের শিক্ষা এবং বিবাহের সময়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।

শ্রী মোদী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী সুর্য্য ঘর প্রকল্পটি কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং পরিবেশ সুরক্ষার একটি মাধ্যম হয়ে উঠছে, যার ফলে প্রায় ২০ লক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী জানান, এই প্রকল্পের আওতায় ৩ লক্ষ যুবককে দক্ষ শ্রমশক্তি হিসাবে প্রস্তুত করার লক্ষ্য রয়েছে সরকারের। এর মধ্যে এক লক্ষ যুবক হবেন সোলার পিভি টেকনিশিয়ান। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রতিটি পরিবারের অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'প্রতি তিন কিলোওয়াট সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদিত হলে ৫০-৬০ টন কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন রোধ করা যাবে।

তিনি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ভারতের সৌর বিপ্লব স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে, যখন একবিংশ শতাব্দীর ইতিহাস লেখা হবে৷ ভারতের প্রথম সৌর গ্রাম 'মোধেরায় শতাব্দী প্রাচীন সূর্য মন্দিরের কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, বর্তমানে গ্রামের সমস্ত চাহিদা সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে পূরণ হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আজ সারা দেশে এই ধরণের অনেকগুলি গ্রামকে সৌর গ্রামে রূপান্তরিত করার অভিযান চলছে।

সূর্যবংশী ভগবান রামের জন্মস্থান অযোধ্যা শহরের কথা বলতে গিয়ে শ্রী মোদী জানান, এই অনুপ্রেরণা হিসেবে সরকার অযোধ্যাকে একটি মডেল সৌরনগরী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়েছে। সৌরশক্তির মাধ্যমে অযোধ্যার প্রতিটি বাড়ি, প্রতিটি দপ্তর, প্রতিটি পরিষেবাকে সক্রিয় করে তোলার প্রয়াস নেওয়া হয়েছে। শ্রী মোদী সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, অযোধ্যার বহু স্থাপনায় সৌরশক্তির সঞ্চার হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আরও উল্লেখ করে বলেন, সরকার ভারতের ১৭টি শহরকে একইভাবে সৌর শহর হিসাবে বিকাশের জন্য চিহ্নিত করেছে। তিনি আরও বলেন, কৃষি ক্ষেত, খামারকে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যম করার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি বলেন, আজ কৃষকদের সেচের জন্য সৌর পাম্প এবং ছোট সৌর প্ল্যান্ট স্থাপনে সহায়তা করা হচ্ছে।

শ্রী মোদী বিশেষ জোর দিয়ে বলেন, পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি সম্পর্কিত প্রতিটি ক্ষেত্রে ভারত বিশেষ গতি ও মাত্রায় কাজ করে চলেছে। তিনি আরও বলেন, গত দশকে ভারত আগের তুলনায় পারমাণবিক শক্তি থেকে ৩৫ শতাংশ বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে এবং ভারত সবুজ হাইড্রোজেনের ক্ষেত্রে বিশ্বের নেতা হওয়ার চেষ্টা করছে। শ্রী মোদী এই লক্ষ্যে প্রায় কুড়ি হাজার কোটি টাকার গ্রিন হাইড্রোজেন মিশনের সূচনার কথা উল্লেখ করেন। ভারতে 'ওয়েস্ট টু এনার্জি' কর্মসূচি চলছে বলেও তিনি জানান। গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলায় গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের ওপর জোর দিয়ে শ্রী মোদী বলেন, সরকার স্টার্ট আপ সংস্থাগুলিকে ঋণ প্রদানে সহায়তার পাশাপাশি একটি বৃত্তাকার পদ্ধতিকে উৎসাহিত করছে, যাতে পুনরায় ব্যবহার ও পুনর্ব্যবহার সম্পর্কিত উন্নত প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা যায়।

প্রধানমন্ত্রী মোদী ‘মিশন লাইফ’ অর্থাৎ পরিবেশ অনুকুল জীবন যাপন করার ক্ষেত্রে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে বলেন “সরকার প্রো-প্ল্যানেট পিপলসের নীতির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ”। আন্তর্জাতিক সৌর জোটের ভারতের উদ্যোগ, জি-২০ সভাপতিত্বের সময় সবুজ রূপান্তরের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা এবং জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের সময় গ্লোবাল বায়োফুয়েল অ্যালায়েন্সের সূচনার কথাও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলেন, ভারত এই দশকের শেষ নাগাদ তার রেলপথকে নেট জিরো করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে৷ ভারত ২০২৫ সালের মধ্যে পেট্রোলে ২০ শতাংশ ইথানল মিশ্রণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি জল সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত প্রতিটি গ্রামে নির্মিত হাজার হাজার অমৃত সরোবরের কথাও উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী এক পেড় মা কে নাম প্রচারের কথা উল্লেখ করেছেন এবং সকলকে এই উদ্যোগে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

ভারতে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার এই চাহিদা পূরণে নতুন নতুন নীতি প্রণয়ন করছে এবং সবরকম সহায়তা দিচ্ছে। কেবল শক্তি উৎপাদনই নয়, উৎপাদন ক্ষেত্রেও বিনিয়োগকারীদের জন্য বিপুল সুযোগ-সুবিধার কথা ভাষণের শেষে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ভারত সম্পূর্ণ মেড ইন ইন্ডিয়া সমাধানের জন্য প্রচেষ্টা করছে এবং অনেক সম্ভাবনা তৈরি করছে। শ্রী মোদী ভারতের সবুজ রূপান্তরে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানিয়ে উপসংহার টানতে গিয়ে বলেন, ভারত সতি্যকার সম্প্রসারণ এবং আরও ভাল রিটার্নের জন্য একটি নিশ্চয়তার স্থান৷

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গুজরাটের রাজ্যপাল আচার্য দেবব্রত, মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল, কেন্দ্রীয় নবায়ন ও পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি মন্ত্রী শ্রী প্রহ্লাদ যোশী, অন্ধ্রপ্রদেশ, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় ও গোয়ার মুখ্যমন্ত্রীরা৷

প্রেক্ষাপট

চতুর্থ গ্লোবাল রিনিউয়েবল এনার্জি ইনভেস্টরস মিট অ্যান্ড এক্সপো (রি-ইনভেস্ট) পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদন ও স্থাপনার ক্ষেত্রে ভারতের আকর্ষণীয় অগ্রগতিকে তুলে ধরার জন্য প্রস্তুত। এতে সারা বিশ্ব থেকে আসা প্রতিনিধিদের আকৃষ্ট করে আড়াই দিনব্যাপী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। অংশগ্রহণকারীরা মুখ্য মন্ত্রিপরিষদ প্লেনারি, সিইও গোলটেবিল বৈঠক এবং উদ্ভাবনী অর্থায়ন, সবুজ হাইড্রোজেন এবং ভবিষ্যতের শক্তি সমাধানের বিষয়ে বিশেষ আলোচনা সহ একটি বিস্তৃত কর্মসূচীর সাথে যুক্ত থাকবেন। পার্টনার কান্ট্রি হিসেবে অংশ নিচ্ছে জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, ডেনমার্ক ও নরওয়ে। আয়োজক রাজ্য গুজরাট এবং অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, তেলেঙ্গানা এবং উত্তরপ্রদেশ অংশীদার রাজ্য হিসাবে অংশ নিচ্ছে।

এই উপলক্ষে একটি প্রদর্শনী হচ্ছে যেখানে সরকারি ও বেসরকারি খাতের সংস্থাগুলি, স্টার্ট-আপ এবং প্রধান শিল্প ক্ষেত্রের সংস্থাগুলি নিজেদের উদ্ভাবনসমূহ তুলে ধরবে। এই প্রদর্শনী একটি নিরন্তর ভবিষ্যতের প্রতি ভারতের অঙ্গীকারকে তুলে ধরবে।

*****

SKC/DM/KMD


(Release ID: 2055475) Visitor Counter : 47


Read this release in: English