প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

ভারত-মালেশিয়া যৌথ সর্বাত্মক অংশীদারিত্ব সহযোগিতা নিয়ে যৌথ বিবৃতি

Posted On: 20 AUG 2024 8:29PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২০ আগস্ট ২০২৪

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে মালেশিয়ার প্রধানমন্ত্রী শ্রী দাতো সেরি আনোয়ার ইব্রাহিম ভারতে রাষ্ট্রীয় সফরে আসেন। দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে এটাই মালেশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর প্রথম সফর এবং দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যেও প্রথম বৈঠক। সম্প্রসারিত কৌশলগত চুক্তি পর্যালোচনা করেন তাঁরা। ভারত ও মালেশিয়ার মধ্যে বহুস্তরীয় ও বহুমুখী  বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে ছিল উচ্চস্তরীয় প্রতিনিধিদল। এতে ছিলেন সে দেশের বিদেশ মন্ত্রী, বিনিয়োগ ও শিল্প-বাণিজ্য মন্ত্রী, পর্যটন, শিল্প-সংস্কৃতি, ডিজিটাল দপ্তরের মন্ত্রী এবং মানবসম্পদ মন্ত্রী। 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী আনোয়ার ইব্রাহিমকে রাষ্ট্রপতি ভবনে সংবর্ধনা জানানো হয়। এরপর তিনি রাজঘাটে গিয়ে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তারপর দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা বৈঠক শুরু হয়। উভয় প্রধানমন্ত্রী দ্বিপাক্ষিক চুক্তিপত্র বিনিময় প্রত্যক্ষ করেন। প্রধানমন্ত্রী মোদীর দেওয়া ভোজসভায় যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। রাষ্ট্রপতি শ্রীমতী দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গেও তিনি সাক্ষাৎ করেন। বিদেশ মন্ত্রী ডঃ এস জয়শঙ্কর প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ ওয়ার্ল্ড অ্যাফেয়ার্স-এ প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ভাষণ দেন।

দু' দেশের মধ্যে বহুমুখী  সম্পর্ক প্রসারে বিশেষ ফলদায়ক ২০১৫ সালে ভারত ও মালেশিয়ার মধ্যে সম্পাদিত বর্ধিত কৌশলগত সহযোগিতা চুক্তি  উভয় প্রধানমন্ত্রী পর্যালোচনা করেন। সর্বাত্মক কৌশলগত সহযোগিতাকে আরও বেশি সুসংহত রূপ দেওয়ার এটাই উপযুক্ত সময় বলে তাঁরা জানান। ভারত-মালেশিয়ার মধ্যে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক যোগ এবং দু’দেশের মানুষের মধ্যে সাংস্কৃতিক বন্ধুত্ব অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হওয়ায় উভয় নেতাই সন্তোষ প্রকাশ করেন। মালেশিয়ায় ভারতীয় অভিবাসীরা দু’দেশের সংস্কৃতির প্রসারে বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছেন। আর্থিক বৃদ্ধি ও উন্নয়নের ক্ষেত্রেও ভারত-মালেশিয়া উভয় দেশই বিশ্বস্ত সহযোগী।

রাজনৈতিক, প্রতিরক্ষাগত, সুরক্ষা সম্বন্ধীয় সহযোগিতা; অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক, ডিজিটাল প্রযুক্তিগত স্টার্ট-আপ; ফিনটেক; পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি; স্বাস্থ্য পরিষেবা; উচ্চশিক্ষা; সংস্কৃতি; পর্যটন এবং দু’দেশের মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক সংক্রান্ত নানা বিষয় নিয়ে উভয় প্রধানমন্ত্রীর বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। 

কর্মসংস্থান, কর্মী প্রত্যর্পণ, আয়ুর্বেদ এবং অন্য প্রথাগত চিকিৎসা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, সংস্কৃতি, কলা ও ঐতিহ্য, পর্যটন, জন-প্রশাসন এবং প্রশাসনিক সংস্কার, যুব এবং ক্রীড়া, মালেশিয়ার লাবুয়ান ফাইনান্সিয়াল সার্ভিস অথরিটি এবং ভারতের ইন্টারন্যাশনাল ফাইনান্সিয়াল সার্ভিসেস সেন্টার্স অথরিটি (আইএফএসসিএ)-র মধ্যে আর্থিক পরিষেবা সংক্রান্ত সমঝোতাপত্র বিনিময় উভয় নেতাই প্রত্যক্ষ করেন।

ভয়েস অফ গ্লোবাল সাউথ আয়োজনে ভারতের উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে মালেশিয়া। গ্লোবাল সাউথ-এর দেশগুলির মধ্যে পারস্পরিক বিনিময়ের এক মঞ্চ হিসেবে গড়ে উঠে তাতে নানা দেশের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট অগ্রাধিকারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে  আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি করেছে। এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের তিনটি পর্বেই মালেশিয়ার যোগদানের প্রশংসা করে ভারত। 

উভয় প্রধানমন্ত্রীই দু’দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের সফরের বিষয়টির প্রশংসা করেন। ঘনিষ্ঠ আলোচনার গুরুত্বের দিক তুলে ধরে তাঁরা উভয়েই দ্বিপাক্ষিক বহুক্ষেত্রীয় পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নিয়মিত মতবিনিময় চালিয়ে যাওয়ার ওপর গুরুত্ব দেন। এছাড়াও, যৌথ কমিশনের বৈঠক এবং বিদেশ দপ্তরের মধ্যে নিয়মিত পর্যায়ে আয়োজনের ওপরও গুরুত্ব দেন তাঁরা। 

দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতাকে আরও প্রসারের লক্ষ্যে দু’দেশের সংসদের মধ্যে নিয়মিত সদস্য বিনিময় ও আলোচনা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে তাঁরা জানান। দেশের উন্নয়নে যুব সম্প্রদায়ের ভূমিকার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে দু’দেশের মধ্যে যুব বিনিময় কর্মসূচি প্রসারে সম্মত হন দুই প্রধানমন্ত্রী।

উভয় প্রধানমন্ত্রী দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন যে বর্ধিত কৌশলগত সহযোগিতা একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য রেকর্ড সংখ্যক ১৯.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছনোয় তাঁরা খুশি। এক্ষেত্রে উচ্চ পর্যায়ের সিইও ফোরাম এবং নতুন দিল্লিতে ১৯ আগস্ট, ২০২৪-এ অনুষ্ঠিত হওয়া নবম বৈঠক নিয়েও তাঁরা সন্তোষ প্রকাশ করেন। 

উভয় প্রধানমন্ত্রী দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ প্রসার এবং বহুস্তরীয় ক্ষেত্রে বিনিয়োগ ও সহযোগিতা প্রসারের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। আসিয়ান ইন্ডিয়া ট্রেড ইন গুড্‌স এগ্রিমেন্ট (এআইটিআইজিএ) প্রক্রিয়ার পর্যালোচনা আরও বেশি কার্যকরী করে তোলার ব্যাপারে গুরুত্ব দিয়েছেন তাঁরা, যাতে করে ২০২৫-এর মধ্যেই তা লক্ষ্যসীমায় পৌঁছতে পারে এবং ভারত-আসিয়ান দেশগুলির মধ্যে সরবরাহ শৃঙ্খলকে শক্তিশালী করে তুলতে পারে। 

দু’দেশের মধ্যে সমসাময়িক অর্থনৈতিক অগ্রাধিকারের বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে দ্বিতীয় মালেশিয়া-ভারত সর্বাত্মক সহযোগিতা অর্থনৈতিক চুক্তি (এমআইসিইসিএ) আয়োজনের বিষয়ে আলোচনার প্রস্তাবকে সাধুবাদ জানিয়েছে দুটি দেশ। 

দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে স্থানীয় মুদ্রার ভিত্তিতে বিনিময় কর্মসূচির যে উদ্যোগ ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং মালেশিয়ার ব্যাঙ্ক নিগারা নিয়েছে, তার প্রশংসা করেছে দুই দেশ। দু’দেশের শিল্পে ভারতীয় টাকা এবং মালেশিয়ার রিঙ্গিত মুদ্রার মাধ্যমে আর্থিক বিনিময়কে আরও বেশি প্রসারিত করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

ডিজিটাল সহযোগিতার ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তি সংক্রান্ত দু’দেশের মধ্যে সমঝোতাপত্রকে উভয় প্রধানমন্ত্রী স্বাগত জানান। সেইসঙ্গে, মালেশিয়া-ভারত ডিজিটাল কাউন্সিলের বৈঠক এগিয়ে আনার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। এতে ডিজিটাল জন-পরিকাঠামো, ডিজিটাল বি২বি সহযোগিতা, ডিজিটাল দক্ষতা বৃদ্ধি, সাইবার সুরক্ষা, ৫জি-র মতো উদ্ভুত প্রযুক্তি, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, ক্লাউড কম্পিউটিং, ইন্টারনেট অফ থিংস প্রভৃতি বিষয়ে দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও প্রসারের ক্ষেত্রে এই বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। 

দু’দেশের ডিজিটাল অর্থনীতির অগ্রাধিকারের বিষয়টিকে চিহ্নিত করতে উভয় নেতাই গুরুত্ব দেন। সেইসঙ্গে, ভারতের ইউপিআই ব্যবস্থার সাফল্যকে স্বীকার করে নিয়ে ভারত ও মালেশিয়ার মধ্যে সহযোগিতা সম্পর্ক প্রসারে জোর দেন তাঁরা। 

স্টার্ট-আপ ইন্ডিয়া এবং মালেশিয়ার ফেডারেল ফান্ড-এর মধ্যে যে আলোচনা চলছে তাকে সাধুবাদ জানিয়ে উভয় নেতা, ভারত-মালেশিয়া স্টার্ট-আপ সহযোগিতা সম্পর্ক অন্যান্য অংশীদারদের মধ্যেও প্রসারিত করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।

মহাকাশ, পরমাণু শক্তি, সেমি-কন্ডাক্টর, টিকাকরণ এবং অন্য চিহ্নিত ক্ষেত্রে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে উভয় প্রধানমন্ত্রী সম্মত হয়েছেন। দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা এবং সুরক্ষা সহযোগিতা সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করা বর্ধিত কৌশলগত সহযোগিতার মূল স্তম্ভ বলে তাঁরা জানান। প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আরও বেশি ঘনিষ্ঠ করার স্বার্থে দ্বিপাক্ষিক বিনিময় প্রসারের ওপরও প্রধানমন্ত্রী মোদী ও প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম গুরুত্ব দিয়েছেন।

প্রতিরক্ষা শিল্প সহযোগিতা এবং প্রতিরক্ষা আরঅ্যান্ডডি সহযোগিতা আরও প্রসারে উভয় নেতাই সম্মত হয়েছেন। 

উভয় প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাসবাদের নিন্দা করে যাবতীয় সন্ত্রাসবাদী প্রয়াসকে সম্পূর্ণ নির্মূল করার ওপর গুরুত্ব দেন। তাঁরা বলেন যে, কোন দেশই সন্ত্রাসবাদীদের আশ্রয় দেবে না এবং সন্ত্রাসবাদে মদত যোগানকারীদের ক্ষেত্রে দেশের আইন ও আন্তর্জাতিক বিধি অনুযায়ী বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সন্ত্রাসবাদ এবং আন্তর্জাতিক সংগঠিত সন্ত্রাসের মধ্যে যোগসূত্রের বিষয়টির ওপর গভীরভাবে আলোকপাত করে উভয় দেশ এই বিপদ নিরসনে সম্মিলিত প্রয়াস আরও বাড়ানোর ব্যাপারে সম্মত হয়েছে যাতে করে সন্ত্রাস নিরসনের ক্ষেত্রে উভয় দেশের মধ্যে তথ্য বিনিময় সঠিকভাবে হতে পারে তার ওপরও তাঁরা জোর দিয়েছেন।

উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা প্রসারে উভয় প্রধানমন্ত্রী সম্মত হন। দক্ষতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা প্রসারে মালেশিয়ার নাগরিকদের জন্য সাইবার সুরক্ষা, কৃত্রিম মেধা এবং মেশিন লার্নিং-এর ভারতের টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকনমিক কো-অপারেশন কর্মসূচির অধীন ১০০টি আসন বরাদ্দ করার বিষয়টি মালেশিয়া প্রশংসা করেছে।

ভারতের আয়ুষ মন্ত্রকের অধীন ভারতের ইনস্টিটিউট অফ ট্রেনিং অ্যান্ড রিসার্চ ইন আয়ুর্বেদ মালেশিয়ার টুংকু আব্দুল রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি আয়ুর্বেদ চেয়ার স্থাপন সহ এক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা প্রসারের ওপরও উভয় প্রধানমন্ত্রী গুরুত্ব দিয়েছেন। ফার্মাকোপিয়া সহযোগিতা ক্ষেত্রে সমঝোতাপত্রের বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যাপারে উভয় দেশই সম্মত হয়েছে। 

ইউনিভার্সিটি মালায়া-তে থিরুভাল্লুভার চেয়ার অফ ইন্ডিয়ান স্টাডিজ স্থাপনের বিষয়টি উভয় দেশ সাধুবাদ জানিয়েছে। 

কৃষি, যৌথ গবেষণা ও উন্নয়ন, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং কৃষিক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে সহযোগিতা আরও বেশি জোড়ালো করার বিষয়টি উভয় দেশই খতিয়ে দেখবে। 

দু’দেশের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী সাংস্কৃতিক সম্পর্কের দিকে তাকিয়ে উভয় প্রধানমন্ত্রী অডিও-ভিস্যুয়াল যৌথ প্রযোজনার ক্ষেত্র প্রসারে সম্মত হয়েছে। 

জলবায়ু পরিবর্তনের দিকে তাকিয়ে সুস্থায়ী শক্তি প্রসারে সহযোগিতা শক্তিশালী করার ওপর উভয় প্রধানমন্ত্রী গুরুত্ব দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক সৌর সমঝোতা এবং কোয়ালিশন ফর ডিজাস্টার রেজিলিয়েন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার (সিডিআরআই) স্থাপনে ভারতের উদ্যোগের প্রশংসা করেছে মালেশিয়া। 

ইন্টারন্যাশনাল বিগ ক্যাট অ্যালায়েন্স (আইবিসিএ)-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে মালেশিয়ার যোগদানের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ভারত। আইবিসিএ-এর কাঠামোগত চুক্তি এবং সমঝোতার দ্রুত নিষ্পত্তির প্রয়োজনীয়তার ওপর উভয় প্রধানমন্ত্রী গুরুত্ব দেন। 

মালেশিয়ার অর্থনীতিতে মালেশিয়ায় বসবাসকারী ভারতীয়দের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের প্রশংসা করেন উভয় প্রধানমন্ত্রী। দু’দেশের মধ্যে দক্ষ প্রতিভা বিনিময় প্রক্রিয়াকে আরও বেশি শক্তি যোগাতেও তাঁরা সম্মত হন।

দু’দেশের মধ্যে ভিসার কড়াকড়ি নমনীয় করে দু’দেশের মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সংযোগ এবং পর্যটনের প্রসারের সাম্প্রতিক উদ্যোগের প্রশংসা করে উভয় প্রধানমন্ত্রী দু’দেশের পর্যটন ক্ষেত্র যাতে আরও বেশি প্রসারিত হয়, তার বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখার ওপর গুরুত্ব দেন। ২০২৬-কে ‘মালেশিয়া ভ্রমণ’-এর বিষয়টিকে যেমন ভারত তুলে ধরেছে, পাশাপাশি ওই বছরটি উদযাপনের ক্ষেত্রেও মালেশিয়া অতিরিক্ত ভারতীয় পর্যটককে স্বাগত জানাচ্ছে। 

দু’দেশের মধ্যে সাধারণ মানুষের যাতায়াত বৃদ্ধি পাওয়ায় উভয় দেশেরই অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক ভারত-মালেশিয়ার মধ্যে বিমান সংযোগ যাতে আরও বাড়ায়, সে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে উভয় নেতাই সম্মত হয়েছেন। 

আন্তর্জাতিক আইন মেনে দু’দেশের মধ্যে অবাধ আইনি বাণিজ্য এবং জলপথ ও বিমানপথে পরিবহণের দিকটিকে উভয় দেশই সম্মান জানাতে চায়। ১৯৮২ সালের ইউনাইটেড নেশনস কনভেনশন অন দ্য ল’ অফ দ্য সি (ইউএনসিএলওএস) মোতাবেক যাবতীয় বিরোধের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তিতে উভয় নেতা সম্মত হয়েছেন। 

আসিয়ানের সঙ্গে ভারতের সর্বাত্মক কৌশলগত সহযোগিতার প্রতি পুনরায় গুরুত্ব ব্যক্ত করে মালেশিয়ায় ২০২৫-এ আসিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের পূর্ণ সমর্থনের বিশেষ প্রশংসা করেছে সে দেশ। বর্তমান সর্বাত্মক কৌশলগত সহযোগিতার ক্ষেত্রকে আরও বেশি সুদৃঢ় করতে আসিয়ান গোষ্ঠীভুক্ত দেশ এবং ভারতের মধ্যে সহযোগিতার সম্পর্ক প্রসারে উদ্যোগকে মালেশিয়া সাধুবাদ জানিয়েছে।

রাষ্ট্রসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদ এবং রাষ্ট্রসঙ্ঘ মানবাধিকার কমিশন সহ অন্য আরও বহুজাতিক ক্ষেত্রে রাষ্ট্রসঙ্ঘে সহযোগিতা এবং সমন্বয়কে শক্তিশালী করতে উভয় প্রধানমন্ত্রী সম্মত হয়েছেন। শান্তি এবং বিকাশের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক নিয়মের প্রতি বিশ্বস্ততা দেখানো খুবই জরুরি বলে তাঁরা জানান। বর্তমান বাস্তব অবস্থার ভিত্তিতে রাষ্ট্রসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদকে আরও বেশি প্রতিনিধিত্বমূলক করে তোলার ওপর তাঁরা গুরুত্ব দেন। উন্নয়নশীল দেশগুলি থেকে যাতে আরও বেশি প্রতিনিধিত্ব সেখানে দেখা যায়, সে বিষয়টিতে জোর দেওয়ার পাশাপাশি স্থায়ী এবং অস্থায়ী উভয় ক্ষেত্রেই রাষ্ট্রসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রসার বর্তমান বিশ্ব চ্যালেঞ্জের বিষয়গুলি নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে অনেক বেশি কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে বলে উভয় নেতাই মত প্রকাশ করেন। রাষ্ট্রসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্য পদের বিষয়ে মালেশিয়ার সমর্থনকে ভারত প্রশংসা করেছে। 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী আনোয়ার ইব্রাহিম এই রাষ্ট্রীয় সফরে তাঁর এবং তাঁর প্রতিনিধিদলের প্রতি উষ্ণ সংবর্ধনা ও অতিথেয়তার জন্য প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। সুবিধামতো আগামীদিনে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে মালেশিয়া সফরেরও আমন্ত্রণ জানান তিনি।

PG/AB/DM



(Release ID: 2049168) Visitor Counter : 24