প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

পোল্যান্ডের ওয়ারশ-তে ভারতীয় সম্প্রদায়ের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বঙ্গানুবাদ

Posted On: 22 AUG 2024 4:45AM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি,  ২২ আগস্ট  , ২০২৪

 

ভারত মাতা কি - জয় !
ভারত মাতা কি - জয় !

নমস্কার !কেম ছো ? ভনাক্কাম !সৎ শ্রী আকাল !জিন ডোবরে !
আপনাদের উৎসাহ ও উদ্দীপনা বিশেষভাবে আনন্দ দিচ্ছে।এই দৃশ্য সত্যিই অবাক করার মত।  আমি যে মুহূর্তে এখানে পা দিয়েছি আপনারা তখন থেকে অক্লান্তভাবে আমাকে স্বাগত জানাচ্ছেন। আপনারা পোল্যান্ডের বিভিন্ন অংশ থেকে এসেছেন। প্রত্যেকের আলাদা ভাষা, উপভাষা ও খাদ্যভ্যাস রয়েছে।  কিন্তু আপনারা সকলেই ভারতীয় নাগরিক হিসেবে জুড়ে রয়েছেন। আপনারা আমাকে এখানে এত আন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়েছেন যে আমি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ এবং এই অভ্যর্থনার জন্য পোল্যান্ডবাসীর কাছে কৃতজ্ঞ। 

বন্ধুগণ, 
গত সপ্তাহে আপনারা নিশ্চয়ই ভারতের সংবাদমাধ্যমের খবর দেখেছেন। সেখানে পোল্যান্ডের জনগণ নিয়ে এবং পোল্যান্ড নিয়ে অনেক কথা বলা হয়েছে। দীর্ঘ ৪৫ বছর পর কোনো ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী পোল্যান্ডে আসছেন এই শিরোনামে একটি খবরও বহুল প্রচারিত হয়েছে। আমার ভাগ্যে অনেক ভালো কিছু রয়েছে। মাত্র কয়েক মাস আগেই আমি অস্ট্রিয়া গিয়েছিলাম। চার দশক পর সেখানে কোনো ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী সফর করলেন। এমন অনেক দেশ রয়েছে যেখানে বিগত বেশ কয়েক দশকে কোনো ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী সফর করেন নি। কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয়েছে। গত কয়েক দশকে ভারতের নীতি ছিল অন্য সব দেশ থেকে সমদূরত্ব বজায় রাখা। কিন্তু  বর্তমান ভারতের নীতি হল সব দেশের সঙ্গে সমান ঘনিষ্ঠতা বজায় রাখা। বর্তমান ভারত সকলের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখতে চায়, বর্তমান ভারত সকলের উন্নয়নের কথা বলে, বর্তমান ভারত সকলের পাশে দাঁড়ায় এবং সকলের স্বার্থের কথা চিন্তা করে। আমরা গর্বিত যে বর্তমান বিশ্ব ভারতকে ‘বিশ্ববন্ধু’ সম্মান দেয়। আপনারাও এখানে তাই প্রত্যক্ষ করছেন। তাই না ? আমার দেওয়া তথ্য সঠিক, তাই নয় কি ?
বন্ধুগণ, 
আমাদের জন্য এটি ভূরাজনীতির বিষয় নয়, বরং মূল্যবোধের বিষয় যারা কোথাও জায়গা পায়নি, ভারত তাদের হৃদয়ে এবং নিজভূমিতে স্থান দিয়েছে, এটিই আমাদের ঐতিহ্য। যার জন্য প্রত্যেক ভারতবাসী গর্বিত। এমনকি আজও পোল্যান্ডের প্রত্যেকে জাম সাহেবকে ‘ডোবরে’ বা ভালো মহারাজা হিসেবে জানেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যখন পোল্যান্ড বিভিন্ন সমস্যায় জড়িত, তখন পোল্যান্ডের হাজার হাজার নারী ও শিশু আশ্রয়ের জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। সেই সময় এগিয়ে আসেন জাম সাহেব। দিগ্বিবিজয় সিং রঞ্জিৎ সিং জাদেজাজি, তিনি পোলিশ নারী ও শিশুদের জন্য বিশেষ শিবির গড়ে ছিলেন। ওই শিবিরে পোলিশ শিশুদের জাম সাহেব বলেন, নাওয়া নগরের জনগণের মতোই তোমরা আমাকে বাপু বলে ডাকবে। আমি তোমাদেরো বাপু।
বন্ধুগণ, 
জাম সাহেবের পরিবারের সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। আমার প্রতি তাঁদের অগাধ স্নেহ রয়েছে। এমনকি কয়েক মাস আগেও বর্তমান জাম সাহেবের সঙ্গে দেখা করতে গেছিলাম। এখনও তাঁর ঘরে পোল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি ছবি রয়েছে। আমি এটি দেখে আনন্দিত যে, জাম সাহেব যে পথ তৈরি করেছিলেন, পোল্যান্ড আজও তা রক্ষা করে চলেছে। দুই দশক আগে জাম নগর সহ গুজরাটে যখন ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছেল তখন পোল্যান্ড সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসা অন্যতম প্রথম দেশ ছিল। পোল্যান্ডের জনগণ জাম সাহেব ও তার পরিবারকে দেশের সম্মান দিয়েছে। ওয়ারশ-র ‘গুড মহারাজা স্কোয়ার’ –এ এই ভালোবাসা স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। কিছুক্ষণ আগে ডোবরে মহারাজা মেমোরিয়াল ও কোলাপুর মেমোরিয়াল দেখার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। এ এক অবিস্মরণীয় মুহূর্ত। আমি আপনাদের সঙ্গে কিছু তথ্য ভাগ করে নিতে চাই, ভারত জাম সাহেব মেমোরিয়াল যুবা আদানপ্রদান কর্মসূচি চালু করতে চলেছে। এর আওতায় ২০ জন পোলিশ যুবক-যুবতীকে ভারতে আমন্ত্রণ জানানো হবে। এর ফলে পোল্যান্ডের তরুণ প্রজন্ম ভারতকে জানার সুযোগ পাবে।

বন্ধুগণ, 
আজ আমার মনটেক্যাসিনো মেমোরিয়ালে শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ হয়েছে। এই স্মৃতিশৌধটি আমাদের হাজার হাজার ভারতীয় সেনার আত্মবলিদানের কথা স্মরণ করায়। বিশ্বের প্রতি প্রান্তে ভারতীয়রা কিভাবে তাঁদের দায়িত্ব পালন করেন এ তারই প্রমাণ। 
বন্ধুগণ, 
২১ শতকে ভারত নিজের মূল্যবোধ ও ঐতিহ্য নিয়ে গর্ববোধ করে এবং এই অনুভূতিকে সঙ্গে নিয়ে সামনের দিকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে।  সমগ্র বিশ্বের কাছে ভারত তার গুণাবলী তুলে ধরেছে তার জন্যই বর্তমানে সে পরিচিত। আমরা ভারতীয়রা নিজেদের প্রচেষ্টা, শ্রেষ্ঠত্ব ও সহানুভূতির জন্য পরিচিত। বিশ্বের যেকোনো প্রান্তেই যাই না কেন, ভারতের মানুষকে সর্বত্র নিজেদের সেরাটুকু উজার করে দিতে দেখা যায়। আপনারা হয়ত ভাবছেন আমি তৃতীয় কোনো দেশের কথা বলছি, কিন্তু বাস্তবে তা নয়,  কিন্তু আমি ভারতের কথা বলছি। তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্র বা ভারতের চিকিৎসকরা সর্বক্ষেত্রেই নিজেদের গুণগতমান নিয়ে উজ্জ্বল এবং এক বিশাল সংখ্যক মানুষ বর্তমানে আমার সামনেই উপস্থিত রয়েছেন। 

বন্ধুগণ, 
 আমাদের ভারতীয়দের অন্য একটি পরিচয় হল সহমর্মিতা। বিশ্বের যেকোনো দেশেই যখন সমস্যা দেখা দেয় ভারত তখন প্রথম সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। ১০০ বছরের মধ্যে সবথেকে বড় বিপর্যয় কোভিড যখন এসেছিল তখন ভারত বলেছিল মানবতাই প্রথম। আমরা ১৫০-র বেশি দেশে টিকা ও ওযুধ পাঠিয়েছি। বিশ্বের কোথাও যখন ভূমিকম্প বা প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দেয়, তখনও ভারতের মন্ত্র মানবতাই প্রথম। যুদ্ধের সময়ে ভারত বলে, মানবতাই প্রথম এবং এই দৃষ্টিভঙ্গী নিয়েই ভারত সমগ্র বিশ্বের জনগণকে সাহায্য করে। 
বন্ধুগণ,
ভারত বুদ্ধের উত্তরাধিকারের দেশ। যখন বুদ্ধের কথা আসে তখন বলতে হয় তিনি যুদ্ধ নয়, শান্তিতে বিশ্বাস করেন। তাই ভারত এই অঞ্চলে শান্তি চায়। এক্ষেত্রে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গী স্পষ্ট। এটি কোনো যুদ্ধের যুগ নয়। মানবতার জন্য সবচেয়ে বড় হমকির সৃষ্টিকারী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সময় তাই, ভারত কূটনীতি ও আলাপ আলোচনার ওপর জোর দেয়। 

বন্ধুগণ,
ইউক্রেনে আটকে পড়া শিশুদের আপনারা কিভাবে সহায়তা করেছেন তা দেখেছি। তাদের জন্য আপনারা লঙ্গর চালু করেছেন, নিজেদের বাড়ির দরজা খুলে দিয়েচেন, এমনকি আপনাদের রেস্তোঁরাও উন্মুক্ত করেছেন। পোলিশ সরকার আমাদের পড়ুয়াদের জন্য ভিসা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে নেয়। পোল্যান্ড আমাদের শিশুদের জন্য নিজেদের দরজাও খুলে দিয়েছিল। এমনকি আজও আমি যখন ইউক্রেন থেকে ফিরে যাওয়া আমাদোর ছেলেমেয়েদের সঙ্গে দেখা করি, তারা পোল্যান্ডের জনগণের প্রশংসা করেন। তাই আজ আমি ১৪০ কোটি ভারতবাসীর পক্ষ থেকে পোল্যান্ডের গনগণকে ও আপনাদের অভিনন্দন জানাই।  আপনাদের স্যালুট জানাই।
বন্ধুগণ, 
ভারত এবং পোল্যান্ডের সমাজের মধ্য অনেক সাযুজ্য রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম মূল বিষয়টি হল গণতন্ত্র। ভারত কেবলমাত্র গণতন্ত্রের ভ্রাতৃভূমিই নয়, প্রাণবন্ত গণতন্ত্রও। ভারতের জনগণের গণতন্ত্রের ওপর অটুট আস্থা রয়েছে। আমরা সাম্প্রতিক নির্বাচনে এর বিশেষ নিদর্শন দেখেছি ইতিহাসের অন্যতম, বৃহত্তম নির্বাচন ছিল এটি। সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচন হয়েছে। যেখানে ১৮০ মিলিয়ন ভোটদাতা ভোট দিয়েছেন। অন্যদিকে ভারতে এর তিন গুণেরও বেশি প্রায় ৬৪০ মিলিয়ন ভোটদাতা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। হাজার হাজার রাজনৈতিক দল এই নির্বাচনে অংশ নেয়। ৮ হাজারের বেশি প্রার্থী ছিলেন প্রতিযোগিতার আসরে। ৫০ লক্ষের বেশি ভোটযন্ত্র এবং ১০ লক্ষের বেশি পোলিং বুথ ও ১ কোটি ৫০ লক্ষ কর্মী ভোটের কাজে যুক্ত ছিলেন। বিশ্বের জনগণ যখন এই সংখ্যা শোনেন তখন তারা বিস্মিত হন। 

 বন্ধুগণ 
আপনারা মাত্র কয়েকদিন আগে এখানে স্বাধীনতা দিবস  উদযাপন করেছেন। স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা একটি উন্নত  ভারতের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আজ প্রত্যেক ভারতীয় সেই স্বপ্নকে সত্যি করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছেন। ভারত একটি লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে যে ২০৪৭ সালের মধ্যে, আমাদের দেশ নিজেকে, একটি উন্নত দেশ হিসাবে গড়ে তোলার সংকল্প নিয়ে এগিয়ে চলেছে। অতএব, আজকের ভারত অভূতপূর্ব  গতি এবং সমস্যার  সমাধান নিয়ে কাজ করছে। বর্তমানে  ভারতে যে গতিতে পরিবর্তন হচ্ছে তা শুনে আপনিও গর্বিত বোধ করবেন। ভারতে, গত ১০ বছরে ২৫০ মিলিয়ন মানুষ দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে এসেছে। এবং ২৫০ মিলিয়ন মানে এই সংখ্যা ফ্রান্স, জার্মানি এবং যুক্তরাজ্যের মোট জনসংখ্যার চেয়ে বেশি। ১০ বছরে, আমরা গরিবদের জন্য ৪০ মিলিয়ন স্থায়ী বাড়ি তৈরি করেছি, এবং  আরও ৩০ মিলিয়ন বাড়ি তৈরি করব । আমরা আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকে পরবর্তী স্তরে নিয়ে গিয়েছি। ১০ বছরে, ভারতে ৫০০ মিলিয়ন জন ধন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। এই সংখ্যা সমগ্র ইউরোপীয় ইউনিয়নের জনসংখ্যার চেয়েও বেশি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের জনসংখ্যার সমান ভারতে প্রতিদিন UPI-এর মাধ্যমে ডিজিটাল লেনদেন হয়। সরকার ইউরোপীয় ইউনিয়নের মোট জনসংখ্যার চেয়ে বেশি ভারতীয়কে ৫ লক্ষ টাকার বিনামূল্যে স্বাস্থ্য বীমা প্রদান করে। গত দশকে, ভারতে ব্রডব্যান্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যাও ৬০ মিলিয়ন থেকে বেড়ে ৯৪০ মিলিয়নের বেশি হয়েছে। তার মানে, যদি আমরা ইউরোপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যাকে একত্রিত করি, তাহলে প্রায় একই সংখ্যক মানুষ বর্তমানে ভারতে ব্রডব্যান্ড ব্যবহার করে। গত এক দশকে প্রায় ৭ লাখ কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপন করা হয়েছে। ২ বছরের মধ্যে, ভারত দেশের প্রতিটি জেলায় ৫জি নেটওয়ার্ক প্রসারিত করেছে। এখন আমরা মেড ইন ইন্ডিয়া ৬জি নেটওয়ার্ক নিয়ে কাজ করছি। 
বন্ধুগণ 
 ভারতের পরিবর্তনের  এই গতি গণপরিবহনেও দৃশ্যমান। ২০১৪ সালে, ভারতের ৫টি শহরে কার্যকর মেট্রো পরিষেবা ছিল। বর্তমানে ২০টি শহরে মেট্রো চালু আছে। বর্তমানের  পোল্যান্ডের জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ প্রতিদিন মেট্রো ট্রেনে ভ্রমণ করেন। 
বন্ধুগণ 
ভারত যাই করুক না কেন, তা হয়ে যায় নতুন রেকর্ড, তৈরি হয় ইতিহাস। আপনারা দেখেছেন, ভারত একসঙ্গে ১০০টিরও বেশি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে। এটাও নিজের মধ্যে একটা রেকর্ড। আর ঠিক দুই দিন পরে ২৩শে আগস্ট জাতীয় মহাকাশ দিবস । আপনাদের  মনে আছে ? একই দিনে  চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ভারতের চন্দ্রযান অবতরণ করে । যেখানে অন্য কোনো দেশ পৌঁছাতে পারেনি, ভারত সেখানে পৌঁছেছে। আর সেই জায়গার নাম- শিবশক্তি।  ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম। 
বন্ধুগণ 
 
বিশ্বের জনসংখ্যায় ভারতের অংশ প্রায় ১৬-১৭ শতাংশ, কিন্তু জনসংখ্যার পরিপ্রেক্ষিতে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধিতে ভারতের অংশ বেশি আগে ছিল না। এখন পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। বর্তমানে , বিশ্বের প্রতিটি সংস্থা, প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ভারতের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা বলছে। তারা কিন্তু কেউই জ্যোতিষী নয়,  তথ্যের ভিত্তিতে গণনা করে, তারা এই ভবিষ্যতবাণী করছে । এখন ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হওয়া থেকে বেশি খুব বেশী দূরে নয় ।আমি দেশের মানুষকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি যে আমার তৃতীয় মেয়াদে ভারত তিন নম্বর অর্থনীতি দেশ হয়ে উঠবে । সমগ্র বিশ্ব আগামী বছরগুলিতে ভারতের অসাধারণ অর্থনৈতিক উত্থান দেখতে চলেছে। ন্যাসকম অনুমান করেছে যে ভারত তার ডিজিটাল পরিকাঠামোর কারণে এই দশকের শেষে ৮ মার্কিন ডলার ট্রিলিয়ন অর্থনীতিতে পরিণত হবে। আগামী ৩-৪ বছরে ভারতের এ আই বাজার প্রায় ৩০-৩৫ শতাংশ  গতিতে বৃদ্ধি পাবে। অর্থাৎ ভারত সম্পর্কে এক অভূতপূর্ব ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি চারিদিকে পরিলক্ষিত হচ্ছে ।  ভারত বর্তমানে সেমি-কন্ডাক্টর মিশন, ডিপ ওশান মিশন, ন্যাশনাল গ্রিন হাইড্রোজেন মিশন, ন্যাশনাল কোয়ান্টাম মিশন এবং এআই মিশনে কাজ করছে যাতে ভারত আগামী বহু দশক ধরে এগিয়ে থাকে। ভারতও আগামী বছরগুলিতে নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন স্থাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।  সেই দিন বেশি দূরে নয় যেদিন আপনি ভারতীয় মহাকাশচারীদের মেড ইন ইন্ডিয়া গগনযানে মহাকাশে যেতে দেখবেন। 
বন্ধুগণ 
ভারতের সম্পূর্ণ লক্ষ্য উচ্চমানসম্পন্ন উৎপাদনের উপর। সম্প্রতি বাজেটে আমরা আমাদের তরুণদের দক্ষতা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপর অনেক জোর দিয়েছি। আমাদের বিপুল সংখ্যক যুবক এখানে পড়াশোনার জন্য এসেছেন। আমরা ভারতকে শিক্ষা, গবেষণা এবং উদ্ভাবনের একটি বড় কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্যও ঙ্কাজ করছি। 
বন্ধুগণ 
প্রযুক্তি , চিকিৎসা পরিষেবা, শিক্ষা , প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিশ্বের জন্য দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে ভারত নেতৃত্ব দিয়েছে। আমি স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের একটি উদাহরণ দেব। গত ১০ বছরে, আমরা ভারতে ৩০০ টিরও বেশি নতুন মেডিকেল কলেজ তৈরি করেছি। ভারতে মেডিকেল আসন  গত ১০ বছরে দ্বিগুণ হয়েছে। এই ১০ বছরে আমরা আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থায় ৭৫ হাজার নতুন আসন যুক্ত করেছি।  আগামী ৫ বছরে, ৭৫ হাজার নতুন মেডিকেল আসন যুক্ত করার লক্ষ্য রয়েছে। এর ফলে উচ্চ গুণমানসম্পন্ন স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারী হিসাবে ভারতের ভূমিকাকে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে ৷ 
বন্ধুগণ 
উদ্ভাবন এবং যুবশক্তি ভারত ও পোল্যান্ড উভয়ের উন্নয়নে শক্তি যোগাতে চলেছে। আজ আমি আপনাদের কাছে একটি বড় সুখবর নিয়ে হাজির হয়েছি। ভারত ও পোল্যান্ড উভয়েই একটি সামাজিক নিরাপত্তা চুক্তিতে সম্মত হয়েছে। যা থেকে আপনাদের মত সকল বন্ধু্রা উপকৃত হতে চলেছেন। 
বন্ধুগণ 
ভারতের প্রজ্ঞা ও দৃষ্টিভংগী বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। আমাদের পূর্বপুরুষেরা আমাদের বাসুধৈব কুটুম্বকম মন্ত্র দিয়েছেন। আমরা সমগ্র বিশ্বকে একটি পরিবার হিসাবে বিবেচনা করেছি। বর্তমান ভারতের নীতি ও সিদ্ধান্তে তা দৃশ্যমান। জি-২০ চলাকালীন, - এক পৃথিবী, এক পরিবার এবং এক ভবিষ্যত এই আহ্বান করেছিল ভারত। ভারত বিশ্বকে এক সূর্য, এক বিশ্ব, এক গ্রিড ধারণার সাথে সংযুক্ত করতে চায়। আমাদের লক্ষ্য  ওয়ান হেলথ বা এক স্বাস্থ্য  অর্থাৎ সামগ্রিক স্বাস্থ্য ।  ভারত সমগ্র বিশ্বকে মিশন লাইফ অর্থাৎ পরিবেশের জন্য জীবনধারার একটি মডেল দিয়েছে। আপনারা  নিশ্চয়ই বর্তমানে ভারতে চালু একটি বৃহৎ প্রচারাভিযানের কথা শুনেছেন । মায়ের নামে একটি গাছ এই কর্মসূচিতে বর্তমানে  কোটি কোটি ভারতীয় তাদের জন্মদাত্রী মায়ের নামে বৃক্ষ রোপণ করছেন।  এভাবেই মাতৃভূমিকে রক্ষার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। 
বন্ধুগণ 
অর্থনীতি এবং বাস্তুশাস্ত্রের মধ্যে ভারসাম্য বর্তমান  ভারতের অগ্রাধিকার।  সবুজ ভবিষ্যতের জন্য ভারত ৩৬০ ডিগ্রি পদ্ধতিতে কাজ করছে। সবুজ গতিশীলতা এর একটি বড় উদাহরণ। আমরা পেট্রোলে ২০শতাংশ ইথানল মিশ্রিত করার খুব কাছাকাছি চলে এসেছি। ভারত বর্তমানে দ্রুত গতিতে বৈদ্যুতিক গতিশীলতা প্রসারিত করছে। ভারতে বৈদ্যুতিক গাড়ির বিক্রি প্রতি বছর দ্রুত বাড়ছে। গত বছর ইভির বিক্রি বেড়েছে ৮০ শতাংশের বেশি। সেই দিন বেশি দূরে নয় যখন ভারত ইভি উত্পাদন এবং উদ্ভাবনের বিশ্ব কেন্দ্র হয়ে উঠবে। আগামী সময়ে, আপনি ভারতকে সবুজ হাইড্রোজেনের একটি বড় বৈশ্বিক কেন্দ্র হিসাবে দেখতে চলেছেন। 
বন্ধুগণ 
আমি  আনন্দিত  যে নতুন প্রযুক্তি এবং পরিচ্ছন্ন শক্তির মতো ক্ষেত্রে ভারত ও পোল্যান্ডের মধ্যে অংশীদারিত্ব ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেক ভারতীয় কোম্পানি এখানে বিনিয়োগ করেছে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করেছে। অনেক পোলিশ কোম্পানি ভারতে কাজের সুযোগ তৈরি করেছে। আগামীকাল আমি রাষ্ট্রপতি দুদা জি এবং প্রধানমন্ত্রী টাস্ক জির সঙ্গেও দেখা করব । রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এই  বৈঠকগুলির মাধ্যমে ভারত ও পোল্যান্ডের মধ্যে চমৎকার অংশীদারিত্ব আরও মজবুত হবে । প্রধানমন্ত্রী টাস্ক ভারতের খুব ভালো বন্ধু। ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন আমি তার সঙ্গে বেশ কয়েকবার দেখা করেছি। 
বন্ধুগণ 
বর্তমান ভারত সম্ভাবনার দেশ। আপনাকে যতটা সম্ভব ভারতের উন্নয়ন গাঁথার সঙ্গে যুক্ত হতে হবে। আপনাদের ভারতের পর্যটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হতে হবে। আপনি কি করবেন?  সোশ্যাল মিডিয়ায় তাজমহলের সামনে বসা আপনার ছবি পোস্ট করবেন । ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর মানে আপনাকে প্রতি বছর অন্তত পাঁচটি পোলিশ পরিবারকে ভারত ভ্রমণে পাঠাতে হবে।  আপনাদের প্রচেষ্টা আপনার ভারতকে উন্নত ভারতে পরিণত করতে সাহায্য করবে। 
বন্ধুগণ 
এখানে আসার জন্য, এবং আমাকে এত সুন্দরভাবে স্বাগত জানানোর জন্য আবারও, আমি আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই
 আমার সঙ্গে বলুন 
ভারত মাতা কি জয় !
ভারত মাতা কি জয় !
ভারত মাতা কি জয় ! 
আপনাদের অনেক ধন্যবাদ.


PG/ PM /SG



(Release ID: 2048393) Visitor Counter : 10