প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

প্রধানমন্ত্রী ‘উত্তরাখন্ড আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারী শীর্ষ সম্মেলন ২০২৩’ – এর উদ্বোধন করেছেন

তিনি হাউস অফ হিমালয়াস ব্র্যান্ড এবং সশক্ত উত্তরাখন্ড বইটি প্রকাশ করেছেন
“উত্তরাখন্ডে আমরা আধ্যাত্মিকতা এবং উন্নয়ন একইসঙ্গে প্রত্যক্ষ করছি”
“ভারতে এসডব্লিউওটি-র মূল্যায়ন উচ্চাকাঙ্ক্ষা, আশা, আত্মপ্রত্যয়, উদ্ভাবন এবং সম্ভাবনার প্রাচুর্যের প্রতিফলন”
“উচ্চাকাঙ্ক্ষী ভারত অস্থায়ী সরকারের পরিবর্তে স্থায়ী সরকার প্রত্যাশা করে”
“উত্তরাখন্ড সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকার একে অপরের উদ্যোগগুলির বাস্তবায়নে সহায়তা করে”
“মেক ইন ইন্ডিয়া’র মতো ’ভারতে বিবাহ’ উদ্যোগটিকে জনপ্রিয় করতে আহ্বান জানাচ্ছি”
“উত্তরাখন্ডে মধ্যবিত্ত সমাজের ক্ষমতা বিরাট এক বাজার সৃষ্টি করেছে”
“আমাদের ভোকাল ফর লোকাল এবং লোকাল ফর গ্লোবাল ধারণাকে হাউস অফ হিমালয়াস আরও শক্তিশালী করে তুলবে”
“২ কোটি দিদিকে লাখোপতি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি”
“এটি সময়, এটি সঠিক সময়, এটিই ভারতের সময়”

Posted On: 08 DEC 2023 1:55PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৩ 


প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ উত্তরাখন্ডের দেরাদুণে ফরেস্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউট - এ ‘উত্তরাখন্ড আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারী শীর্ষ সম্মেলন ২০২৩’ – এর উদ্বোধন করেছেন। এরপর, তিনি সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত এক প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন। শ্রী মোদী হাউস অফ হিমালয়াস ব্র্যান্ড এবং সশক্ত উত্তরাখন্ড বইটি প্রকাশ করেছেন। এবারের সম্মেলনের মূল ভাবনা ‘শান্তি থেকে সমৃদ্ধি’।

অনুষ্ঠানে শিল্পপতিরা তাঁদের বক্তব্য তুলে ধরেন। আদানী গ্রুপের ডিরেক্টর এবং কৃষি, তেল ও গ্যাস শাখার ম্যানেজিং ডিরেক্টর শ্রী প্রণব আদানী বলেছেন, বেসরকারি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে রাজ্যের উদ্যোগের কারণে উত্তরাখন্ড অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান হয়ে উঠেছে। এখানে এ্ক জায়গা থেকে বিভিন্ন ছাড়পত্র পাওয়ার সুযোগ, ব্যয়সাশ্রয়ী মূল্যে জমি কেনা, স্বল্প মূল্যে বিদ্যুতের সুবিধা এবং দক্ষ মানবসম্পদের কারণে বিনিয়োগকারীরা আকর্ষিত হচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী এই রাজ্যকে নিরন্তর সহযোগিতা করায় তিনি তাঁকে ধন্যবাদ জানান।

জেএসডব্লিউ – এর চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর শ্রী সজ্জন জিন্দল বলেন, কেদারনাথ ও বদ্রীনাথের উন্নয়ন প্রকল্পে কাজ করার সময় এই রাজ্যের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর একাত্মতা তিনি উপলব্ধি করেছেন। মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশে যে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে, তার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগের প্রশংসা করেন। ভারত খুব শীঘ্রই বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তি হয়ে উঠতে চলেছে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মহাশক্তিধর দেশ হিসেবে ভারতকে গড়ে তোলার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তাতে নেতৃত্বদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন। উত্তরাখন্ডে তাঁর সংস্থা আনুমানিক ১৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছে। গত মাসে পরিচ্ছন্ন কেদারনাথ প্রকল্প শুরু হয়েছে। এই কাজে উত্তরাখন্ড সরকারের সমর্থন পাওয়ায় তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

জি-২০ শিখর সম্মেলন আয়োজনের সাফল্য তুলে ধরে আইটিসি-র ম্যানেজিং ডিরেক্টর শ্রী সঞ্জীব পুরী বলেন, বিশ্বে অসচ্ছল রাষ্ট্রগুলির বিভিন্ন সমস্যার কথা প্রধানমন্ত্রী তুলে ধরেছেন। গত কয়েক বছরে প্রয়োজনীয় নীতি গ্রহণ করে ভারত আন্তর্জাতিক স্তরে বিভিন্ন সমস্যার মোকাবিলা করতে পেরেছে। দেশের অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার-সাধনের ফলে জিডিপি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্ব জুড়ে বর্তমান পরিস্থিতিতে কেউ কেউ বলছেন, এই শতক এবং এই শতাব্দী ভারতের। 

পতঞ্জলির প্রতিষ্ঠাতা যোগগুরু শ্রী বাবা রামদেব প্রধানমন্ত্রীকে বিকশিত ভারতের পরিকল্পনাকারী বলে উল্লেখ করেন। ভারতকে ৫ লক্ষ কোটি মার্কিন ডলারের সমতুল অর্থনীতির দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রী যে উদ্যোগ নিয়েছেন, পতঞ্জলি সেই উদ্যোগে সামিল হয়েছে। এই সংস্থা ভবিষ্যতে ১০ হাজার কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ করবে এবং ১০ হাজারেরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। নতুন ভারত গড়তে প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছার প্রশংসা করে তিনি উত্তরাখন্ডের মুখ্যমন্ত্রীর বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার কথা উল্লেখ করে রামদেব কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে এখানে শিল্প স্থাপনের আহ্বান জানিয়েছেন। পর্যটন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং পরিকাঠামো ক্ষেত্রে রাজ্য জুড়ে যে উন্নয়ন নজরে আসছে, তিনি তার প্রশংসা করেন। 

ইমার ইন্ডিয়ার মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক শ্রী কল্যাণ চক্রবর্তী দেশের উন্নয়নে দিশা দেখানো এবং যথাযথ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। ভারতকে বিকশিত রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, কর্পোরেট জগৎ সেই উদ্যোগে অংশীদার হতে অঙ্গীকারবদ্ধ। ভারত – সংযুক্ত আরব আমিরশাহী সম্পর্ক বর্তমানে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। জিএসটি-র মতো বিভিন্ন সংস্কারমূলক নীতি বাস্তবায়ন এবং শিল্প জগতে ফিনটেক – এর মতো উদ্যোগ গ্রহণের ফলে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারত সম্পর্কে এক ইতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে। 

টিভিএস সাপ্লাই চেন সলিউসনস্ – এর চেয়ারম্যান শ্রী আর দিনেশ প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে যে উন্নয়ন যাত্রা সূচিত হয়েছে, তাতে তাঁদের সংস্থা অংশীদার হবে বলে অঙ্গীকার করেছেন। উত্তরাখন্ডে এই সংস্থা টায়ার এবং গাড়ির যন্ত্রাংশ তৈরি করছে। ভবিষ্যতে পণ্য পরিবহণ ও ওয়্যারহাউস – এর ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য আরও বিনিয়োগ করা হবে। এর ফলে, ৭ হাজার নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। ডিজিটাল এবং সুস্থায়ী পরিবর্তনের জন্য দক্ষতা বৃদ্ধিতে টিভিএস আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকে। সিআইআই – এর সভাপতি হিসেবে রাজ্যে ১০টি মডেল কেরিয়ার সেন্টার গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছেন। দেশের মধ্যে উত্তরাখন্ড-ই প্রথম রাজ্য, যেখানে বহুমুখী দক্ষতা বিকাশ কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। এই কেন্দ্রে ১০ হাজার মানুষ আতিথেয়তা, স্বাস্থ্য এবং উৎপাদন ক্ষেত্রের জন্য প্রশিক্ষণ পাবেন।

প্রধানমন্ত্রী দেবভূমি উত্তরাখন্ডে উপস্থিত হতে পেরে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, গত তিনটি দশক আসলে উত্তরাখন্ডের দশক। সিল্কিয়াড়া সুড়ঙ্গে আটকে পড়া শ্রমিকদের সফলভাবে উদ্ধার করায় তিনি রাজ্য সরকারকে অভিনন্দন জানান। 

এই রাজ্যের সঙ্গে তাঁর নিবিড় সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উত্তরাখন্ডে আমরা আধ্যাত্মিকতা এবং উন্নয়ন একইসঙ্গে প্রত্যক্ষ করছি। তিনি তাঁর রচিত একট কবিতা পাঠ করেন। 

অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিনিয়োগকারীদের প্রধানমন্ত্রী বহুজাতিক সংস্থাগুলির ভারতের এসডব্লিউওটি-র মূল্যায়নের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। এই মূল্যায়নে এদেশের উচ্চাকাঙ্ক্ষা, আশা, আত্মপ্রত্যয়, উদ্ভাবন এবং সম্ভাবনার প্রাচুর্যের প্রতিফলন দেখা গেছে। তিনি বিভিন্ন নীতি প্রণয়নের কথা উল্লেখ করে বলেন, দেশের নাগরিকরা রাজনৈতিক ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা চান। “উচ্চাকাঙ্ক্ষী ভারত অস্থায়ী সরকারের পরিবর্তে স্থায়ী সরকার প্রত্যাশা করে”। এই প্রসঙ্গে তিনি সদ্য অনুষ্ঠিত বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, মানুষ সুপ্রশাসনের অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে ভোট দিয়েছেন। কোভিড অতিমারী এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নানা স্থানে অস্থির অবস্থা সত্ত্বেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশ এগিয়ে চলেছে। “কোভিড টিকা বা আর্থিক নীতি – প্রতিটি ক্ষেত্রে ভারত তার দক্ষতা প্রমাণ করেছে”। ফলস্বরূপ, অন্যান্য বৃহৎ অর্থনৈতিক দেশগুলির সঙ্গে ভারতের আজ তুলনা করা হচ্ছে। এই শক্তির সুফল উত্তরাখন্ড সহ দেশের প্রতিটি রাজ্যে অনুভূত হচ্ছে।

ডবল ইঞ্জিন সরকারের সুফলের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, সর্বত্র দ্বিগুণ উদ্যোগ নজরে আসছে। রাজ্য সরকার আঞ্চলিক বাধ্যবাধকতাকে বিবেচনা করছে। কেন্দ্রীয় সরকার উত্তরাখন্ডে অভূতপূর্ব বিনিয়োগ করছে। উত্তরাখন্ড সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকার একে অপরের উদ্যোগগুলির বাস্তবায়নে সহায়তা করে। গ্রামাঞ্চল থেকে চারধাম পর্যন্ত সর্বত্র বিভিন্ন প্রকল্পের রূপায়ণ হচ্ছে। সেদিন আর দেরী নেই, যখন মাত্র আড়াই ঘণ্টায় দিল্লি থেকে দেরাদুণে পৌঁছনো যাবে। দেরাদুণ এবং পন্থনগর বিমানবন্দরের সম্প্রসারণের ফলে আকাশপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত হবে। রাজ্যে হেলি-ট্যাক্সি সার্ভিস এবং রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সম্প্রসারিত ও শক্তিশালী করা হচ্ছে। এর ফলে, কৃষি, শিল্প, পণ্য পরিবহণ, পর্যটন এবং আতিথেয়তার মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে। 

পূর্ববর্তী সরকারগুলি সীমান্তবর্তী অঞ্চলে যোগাযোগ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সীমিত সুযোগ দিত। কিন্তু, ডবল ইঞ্জিন সরকার ঐ গ্রামগুলিকে দেশের প্রথম গ্রাম হিসেবে গড়ে তুলছে। প্রধানমন্ত্রী উচ্চাকাঙ্ক্ষী জেলা ও উচ্চাকাঙ্ক্ষী ব্লক কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেন। উন্নয়নের নিরিখে পিছিয়ে পড়া গ্রাম ও অঞ্চলগুলি এই কর্মসূচির সুফল পাচ্ছে। রাজ্যের যেসব সম্ভাবনাকে এতদিন কাজে লাগানো হয়নি, সেগুলিকে কাজে লাগাতে তিনি বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে আহ্বান জানান। 

উত্তরাখন্ডের পর্যটন শিল্পের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ডবল ইঞ্জিন সরকারের সুফল এই ক্ষেত্রে প্রতিফলিত হচ্ছে। আজ বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে পর্যটকরা ভারত ভ্রমণে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। এদেশের ঐতিহ্য এবং প্রকৃতিকে পর্যটকদের কাছে তুলে ধরতে বিষয়-ভিত্তিক ট্যুরিস্ট সার্কিট তৈরি করা হচ্ছে। উত্তরাখন্ড প্রকৃতি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের কারণে এক ব্র্যান্ড হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে। যোগ, আয়ুর্বেদ, তীর্থ এবং অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস্ – এর মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে নতুন নতুন সুযোগকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য তিনি বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী ধনী ব্যক্তি এবং যুবক-যুবতীদের মেক ইন ইন্ডিয়া’র মতো ‘ভারতে বিবাহ’ উদ্যোগটিকে জনপ্রিয় করতে আহ্বান জানিয়েছেন। আগামী ৫ বছরে এই রাজ্যে অন্তত একটি বিবাহ অনুষ্ঠান আয়োজন করার অনুরোধ জানান তিনি। “যদি এক বছরে উত্তরাখন্ডে ৫ হাজার বিবাহ অনুষ্ঠান আয়োজন করা যায়, তা হলে নতুন এক পরিকাঠামো গড়ে উঠবে এবং এই রাজ্য সারা পৃথিবীর কাছে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হওয়ার গন্তব্য হয়ে উঠবে”। বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে সিদ্ধান্তগুলি বাস্তবায়নের সংকল্প ভারত নিয়েছে, সেই বিষয়গুলি তিনি তাঁর ভাষণে উল্লেখ করেন। 

শ্রী মোদী বলেন, আজ ভারত জুড়ে পরিবর্তনের এক জোরালো বাতাস বইছে। গত ১০ বছরে এক উচ্চাকাঙ্ক্ষী ভারত গড়ে তোলা হয়েছে। একদা বঞ্চিত নাগরিকদের একটি বড় অংশ বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন। কোটি কোটি মানুষ দারিদ্র্যের নাগপাশ থেকে মুক্ত হয়ে অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করছে। নব্য মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণী আর্থিক সচ্ছলতার কারণে বর্তমানে অনেক বেশি খরচ করছেন। “আমরা মধ্যবিত্ত শ্রেণির সম্ভাবনাকে উপলব্ধি করতে পেরেছি। উত্তরাখন্ডে মধ্যবিত্ত সমাজের ক্ষমতা বিরাট এক বাজার সৃষ্টি করেছে”। 

হাউস অফ হিমালয়াস ব্যান্ড চালু করায় প্রধানমন্ত্রী উত্তরাখন্ড সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। রাজ্যের স্থানীয় পণ্যগুলিকে আন্তর্জাতিক বাজারে পৌঁছে দেওয়ার এটি একটি উদ্ভাবনমূলক উদ্যোগ। “আমাদের ভোকাল ফর লোকাল এবং লোকাল ফর গ্লোবাল ধারণাকে হাউস অফ হিমালয়াস আরও শক্তিশালী করে তুলবে”। দেশে প্রত্যেক জেলা ও ব্লকের উৎপাদিত পণ্য সামগ্রীর আন্তর্জাতিক বাজারে সমাদৃত হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। রান্নার কাজে ব্যবহৃত মাটির তৈরি বিভিন্ন সামগ্রী আজ বিদেশে প্রদর্শিত হচ্ছে। এদেশের বিশ্বকর্মারা তাঁদের চিরায়ত দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে এই ধরনের উৎকৃষ্ট সামগ্রী উৎপাদন করেন। প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন জেলায় এ ধরনের পণ্য সামগ্রীকে চিহ্নিত করতে বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানান। এক্ষেত্রে মহিলা পরিচালিত স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং কৃষি পণ্য উৎপাদক সংগঠনগুলিকে কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন তিনি। লাখোপতি দিদি অভিযান কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্রামাঞ্চলের ২ কোটি দিদিকে লাখোপতি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি। এই উদ্যোগের ফলে হাউস অফ হিমালয়াস ব্র্যান্ডও উপকৃত হবে। 

দিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে জাতীয় বৈশিষ্ট্যগুলিকে আরও শক্তিশালী করার আহ্বান জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা যাই করি না কেন, তা বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ হওয়া প্রয়োজন, যাতে সারা বিশ্ব আমাদের মানকে অনুসরণ করে। আমরা যে সামগ্রী উৎপাদন করবো, তাতে যেন কোনও খুঁত না থাকে। আমরা বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় গুণমানসম্পন্ন পণ্য সামগ্রী উৎপাদন কিভাবে বৃদ্ধি করা যায়, সেদিকে বিশেষ গুরুত্ব দেব”। তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে উৎসাহ-ভিত্তিক উৎপাদন প্রকল্পের কথা উল্লেখ করেন। স্থানীয় পর্যায়ে সরবরাহ-শৃঙ্খলকে শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। অণু, ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পোদ্যোগগুলির জন্য আরও বিনিয়োগের প্রয়োজন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষতা বৃদ্ধিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। পেট্রোলিয়াম আমদানীর জন্য বর্তমানে ১৫ লক্ষ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়। কয়লার জন্য ব্যয় হয় ৪ লক্ষ কোটি টাকা। আজও ভারতকে ১৫ হাজার কোটি টাকার ডালশস্য আমদানী করতে হয়। এদেশে ডালশস্য এবং তৈলবীজ আমদানীর উপর নির্ভরতা কমাতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। 

পুষ্টির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্যাকেটজাত খাদ্য সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী সকলকে সতর্ক করে দেন। ভারতে দানাশস্যের মতো বিভিন্ন পুষ্টিকর খাদ্য রয়েছে। আয়ুষ-ভিত্তিক জৈব খাদ্যের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের কৃষক ও শিল্পপতিরা এই সম্ভাবনাগুলিকে কাজে লাগাতে পারেন। আন্তর্জাতিক বাজারে পৌঁছনোর জন্য স্থানীয় স্তরে উৎপাদিত খাদ্য সামগ্রীকেও প্যাকেটজাত করে বিক্রি করা যেতে পারে।  

পরিশেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতে, এদেশের বিভিন্ন কোম্পানী এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য এক অভূতপূর্ব সময় এসেছে। “আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক দেশ হিসেবে ভারত আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে”। এই কৃতিত্বের দাবী রাখে একটি স্থায়ী সরকার, সহায়ক নীতি বাস্তবায়ন ব্যবস্থাপনা, সংস্কারমুখী ও পরিবর্তনশীল মানসিকতা এবং উন্নয়নের প্রতি আস্থাশীল জনসাধারণ। “এটি সময়, এটি সঠিক সময়, এটিই ভারতের সময়”। উত্তরাখন্ডের উন্নয়ন যাত্রায় তিনি বিনিয়োগকারীদের যুক্ত হতে আবেদন জানিয়েছেন।

অনুষ্ঠানে উত্তরাখন্ডের রাজ্যপাল লেঃজেঃ গুরমিত সিং, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী পুষ্কর সিং ধামী সহ বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন। 


PG/AB/SB



(Release ID: 1984287) Visitor Counter : 59