প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

দক্ষ ভারতীয় যুবশক্তির চাহিদা এখন বিশ্বজুড়ে

মহারাষ্ট্রে ৫১১টি প্রমোদ মহাজন গ্রামীণ কৌশল্যা বিকাশ কেন্দ্রের সূচনা অনুষ্ঠানে মন্তব্য প্রধানমন্ত্রীর

Posted On: 19 OCT 2023 5:46PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ১৯ অক্টোবর, ২০২৩

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ এক ভিডিও কনফারেন্সের মঞ্চে মহারাষ্ট্রের ৫১১টি প্রমোদ মহাজন গ্রামীণ কৌশল্যা বিকাশ কেন্দ্রের সূচনা করেন। গ্রামীণ যুবকদের কাছে কর্মসংস্থানের সুযোগ পৌঁছে দিতে এই কেন্দ্রগুলির মাধ্যমে তাঁদের দক্ষতার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। 

এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন যে দক্ষ ভারতীয় যুবকদের চাহিদা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে বিশ্বজুড়েই। এক পরিসংখ্যানগত তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন যে বিশ্বের ১৬টি দেশ প্রায় ৪০ লক্ষ দক্ষ যুবককে কর্মে নিযুক্ত করার পরিকল্পনা করেছে। এই পরিস্থিতিতে ভারত শুধুমাত্র স্বদেশের জন্য নয়, বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্যও দক্ষ পেশাদার গড়ে তুলতে বিশেষ ভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মতে, মহারাষ্ট্রের এই দক্ষতা বিকাশ কেন্দ্রগুলি স্থানীয় যুবকদের বিশ্বের বিভিন্ন পেশায় কর্মসংস্থানের জন্য উপযোগী করে তুলবে। নির্মাণ শিল্প, আধুনিক কৃষি পদ্ধতি, সংবাদমাধ্যম ও বিনোদন এবং বৈদ্যুতিন সবকটি ক্ষেত্রে তাঁদের দক্ষতার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এমনকি, বিদেশি ভাষা আয়ত্ব করার জন্য প্রাথমিক পাঠও দেওয়া হবে এই যুবকদের। এক ভাষা থেকে অন্য ভাষায় তাঁদের স্বচ্ছন্দ করে তোলার জন্য আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অর্থাৎ কৃত্রিম মেধাশক্তি ব্যবহার করা হবে। 

শ্রী মোদী বলেন দেশের পূর্ববর্তী সরকারগুলির আমলে দক্ষ যুবশক্তির দক্ষতা বিকাশের দিকে তেমনভাবে কোন নজর দেওয়া হয়নি। ফলে, গ্রামীণ যুবকদের কাছে দক্ষতা বিকাশের প্রশিক্ষণ ছিল এককথায় অধরা। কিন্তু কেন্দ্রের বর্তমান সরকার যুবশক্তির দক্ষতা বিকাশের প্রয়োজন ও অপরিহার্যতা উপলব্ধি করে একটি পৃথক মন্ত্রকও গঠন করেছে এবং সেই জন্য প্রয়োজনীয় বাজেট সংস্থানও রাখা হয়েছে। কৌশল বিকাশ কর্মসূচির আওতায় ১ কোটি ৩০ লক্ষেরও বেশি যুবককে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এই লক্ষ্যে সারা দেশে গড়ে তোলা হয়েছে শত শত প্রধানমন্ত্রী কৌশল কেন্দ্র। 

সামাজিক ন্যায় নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের দক্ষতা বিকাশ যে একটি পূর্বশর্ত একথাও স্মরণ করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বাবাসাহেব আম্বেদকরের জীবন দর্শনই ছিল অনগ্রসর, দলিত এবং আদিবাসী মানুষের সার্বিক বিকাশ ও উন্নয়ন। দক্ষতার অভাবে অতীতে এই শ্রেণীর মানুষ ভালো এবং উচিত কর্মসংস্থানের সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিলেন। তাই, কেন্দ্রের বর্তমান সরকারের লক্ষ্য হল দেশের দরিদ্র, দলিত, অনগ্রসর এবং আদিবাসী পরিবারগুলির উন্নয়নের পাশপাশি তাঁদের আর্থিক বিকাশ প্রচেষ্টা। 

প্রসঙ্গত, নারী শিক্ষার বিষয়টিও এদিন স্পর্শ করে যায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে। সাবিত্রী বাঈ ফুলের অবদানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে নারী শিক্ষার প্রসারে সমাজের যাবতীয় বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে তিনি এগিয়ে গিয়েছিলেন। কারণ, তিনি উপলব্ধি করেছিলেন যে জ্ঞান ও দক্ষতাই সামাজিক রূপান্তর সম্ভব করে তুলতে পারে। দেশের মহিলাদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দানের কাজে সাবিত্রী বাঈ ফুলের কর্মপ্রচেষ্টা থেকে সরকার বিশেষ অনুপ্রেরণা লাভ করেছে বলেও স্বীকার করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশের স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি মহিলাদের মধ্যে প্রশিক্ষণ দানের কাজে যুক্ত রয়েছে। নারী ক্ষমতায়ণ কর্মসূচির আওতায় বিশেষ ধরণের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে তিন কোটিরও বেশি মহিলাকে। এমনকি, কৃষি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মহিলাদের ড্রোন ব্যবহারের কাজেও উৎসাহদান করা হয়েছে। 

দেশের নাপিত, ছুতার, রজক, স্বর্ণশিল্পী এবং লোহার কারিগরদের জন্য বিশ্বকর্মা যোজনার সূচনার কথাও উল্লেখ করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি জানান, এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিনিয়োগ করা হয়েছে ১৩,০০০ কোটি টাকারও বেশি। মহারাষ্ট্রের ৫০০টিরও বেশি দক্ষতা বিকাশ কেন্দ্রের মাধ্যমে এই রাজ্যে এই কাজকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। 

দেশের কৃষি ক্ষেত্রে নতুন নতুন দক্ষতার প্রয়োজনীয়তার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে প্রধানমন্ত্রী মাতা বসুন্ধরাকে সুরক্ষিত রাখতে প্রাকৃতিক কৃষি পদ্ধতির সপক্ষে বক্তব্য রাখেন। জল সেচের ক্ষেত্রে সুষম ব্যবস্থার প্রসার, কৃষি উৎপাদনের প্রক্রিয়াকরণ, প্যাকেজিং ও ব্র্যান্ডিং এবং দক্ষ শ্রমশক্তির প্রয়োজন ও অপরিহার্যতার কথা তুলে ধরেন তিনি। শ্রী মোদী বলেন যে বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার ক্ষেত্রে এই প্রচেষ্টা বিশেষভাবে সুফলদায়ী হয়ে উঠতে পারে। তাই, দক্ষতা বিকাশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি। 

প্রশিক্ষণপ্রার্থীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে দক্ষতা বিকাশ ও কর্মসংস্থানের মাধ্যমে তাঁরা নিজেদের পরিবার-পরিজন তথা সমগ্র জাতির কল্যাণ নিশ্চিত করতে পারে। এই প্রসঙ্গে শ্রী মোদী তাঁর সিঙ্গাপুর সফরের কথা উল্লেখ করেন। দক্ষতা বিকাশ এবং সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটি দেশ কিভাবে এগিয়ে যেতে পারে তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে সিঙ্গাপুর প্রসঙ্গের অবতারণা করেন তিনি। শ্রমের মর্যাদা এবং দক্ষ শ্রমশক্তির স্বীকৃতিদান সমাজের বিশেষ কর্তব্যের মধ্যে পড়ে বলে স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। 

এই উপলক্ষে এদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী একনাথ শিন্ডে এবং উপমুখ্যমন্ত্রী শ্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ ও শ্রী অজিত পাওয়ার। 

PG/SKD/AS


(Release ID: 1975236) Visitor Counter : 97