কেন্দ্রীয়মন্ত্রিসভা

চন্দ্রযান-৩ মিশনের ঐতিহাসিক সাফল্য উদযাপনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার প্রস্তাব গ্রহণ

Posted On: 29 AUG 2023 4:09PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ২৯ অগাস্ট, ২০২৩

 

চাঁদে চন্দ্রযান-৩ মিশনের ঐতিহাসিক সাফল্য উদযাপনে সারা দেশের সঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাও যোগ দিয়েছে। আমাদের বিজ্ঞানীরা যে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছেন, তার প্রশংসা করেছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। এ কেবল আমাদের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার সাফল্যই নয়, এটি আসলে বিশ্ব মঞ্চে ভারতের আরোহণ ও অগ্রগতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। ২৩ অগাস্ট দিনটিকে ‘জাতীয় মহাকাশ দিবস’ হিসেবে উদযাপনের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, মন্ত্রিসভা তাকে স্বাগত জানিয়েছে।

ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা - ইসরোকে তার প্রয়াসের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। বিজ্ঞানীদের ধন্যবাদ, তাঁদের জন্যই ভারত বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণের কৃতিত্ব অর্জন করেছে। পূর্ব নির্ধারিত হিসাব অনুযায়ী নির্ভুল ভাবে চাঁদে অবতরণ করতে পারাটাই এক অসাধারণ সাফল্য। যাবতীয় কঠিন পরিস্থিতি অগ্রাহ্য করে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ আমাদের বিজ্ঞানীদের সক্ষমতার প্রমাণ, যাঁরা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মানুষের জ্ঞানের সীমা প্রসারিত করার কাজে ব্রতী। চাঁদের মাটি থেকে রোভার ‘প্রজ্ঞান’ যেসব অমূল্য তথ্য পাঠাচ্ছে, তা চাঁদ ও মহাকাশের রহস্য উন্মোচন করে যুগান্তকারী আবিষ্কার ও অন্তর্দৃষ্টির সহায়ক হবে। 

কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে এটি হল প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতি ও উদ্ভাবনের যুগ। ভারতীয় বিজ্ঞানীরা এই সময়কালের জ্ঞান, নিষ্ঠা ও দক্ষতার উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা হয়ে উঠেছেন। তাঁদের বিশ্লেষণী দক্ষতা এবং অনুসন্ধান ও অন্বেষণের আন্তরিক ইচ্ছা, দেশকে ক্রমাগত বিশ্বব্যাপী বৈজ্ঞানিক সাফল্য অর্জনের প্রথম সারিতে নিয়ে চলেছে। উৎকর্ষের জন্য নিরলস সাধনা, অদম্য কৌতুহল এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার অজেয় মানসিকতা আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতীয় বিজ্ঞানীদের সম্ভ্রমের আসনে বসিয়েছে তো বটেই, সেই সঙ্গে অজস্র মানুষকে বড় মাপের স্বপ্ন দেখতে এবং বিশ্ব জ্ঞানের বিপুল ভান্ডারে অবদান রাখতে অনুপ্রাণিত করেছে। 

চন্দ্রযান-৩-এর সাফল্য এবং সাধারণভাবে ভারতের মহাকাশ কর্মসূচিতে বিপুল সংখ্যক মহিলা বিজ্ঞানীর অবদান থাকায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা গর্বিত। এই ঘটনা ভবিষ্যতের মহিলা বিজ্ঞানীদের প্রেরণা যোগাবে।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তাঁর দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও দৃষ্টান্তমূলক নেতৃত্বের জন্য এবং মানবকল্যাণ ও বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির লক্ষ্যে ভারতের মহাকাশ কর্মসূচিকে পরিচালনার ক্ষেত্রে তাঁর অটল দায়বদ্ধতার জন্য অভিনন্দন জানিয়েছে। আমাদের বিজ্ঞানীদের সামর্থ্যের প্রতি তাঁর বিশ্বাস এবং নিরন্তর উৎসাহ দান বিজ্ঞানীদের মনোবল বাড়িয়েছে। 

প্রথমে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী এবং পরে দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদে সরকার প্রধান হিসেবে ২২ বছরের দীর্ঘ যাত্রায় শ্রী নরেন্দ্র মোদী সর্বদাই চন্দ্রযান মিশনের সঙ্গে মানসিক ভাবে জড়িয়েছিলেন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শ্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী যখন প্রথম চাঁদে অভিযানের ঘোষণা করেন, তখন শ্রী মোদী ছিলেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী। ২০০৮ সালে চন্দ্রযান-১-এর সফল উৎক্ষেপণের পর শ্রী মোদী ইসরোয় গিয়ে ব্যক্তিগত ভাবে বিজ্ঞানীদের অভিনন্দন জানান। ২০১৯ সালে চন্দ্রযান-২ যখন একচুলের জন্য চাঁদে সফল অবতরণে ব্যর্থ হয়, তখনও প্রধানমন্ত্রীর বিচক্ষণ ও মানবিক নেতৃত্ব বিজ্ঞানীদের মনোবল বাড়ায়, তাঁদের সংকল্প সুদৃঢ় করে এবং আরও বৃহত্তর দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে এই মিশনে আত্মনিয়োগ করতে অনুপ্রাণিত করে। 

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সবসময়ই বিজ্ঞান ও উদ্ভাবনকে উৎসাহ দিয়ে এসেছেন। গত ৯ বছরে একের পর এক সংস্কার, গবেষণা ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রকে সহজতর করে তুলেছে। মহাকাশ ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থা ও স্টার্ট আপগুলি যাতে আরও বেশি সুযোগ পায় প্রধানমন্ত্রী মোদী তা সুনিশ্চিত করেছেন। মহাকাশ দপ্তরের আওতায় ২০২০ সালের জুন মাসে IN-SPACe নামে একটি স্বশাসিত সংস্থা গঠন করা হয়। এর লক্ষ্য ছিল শিল্পমহল, শিক্ষামহল ও স্টার্ট আপগুলিকে এক ছাতার তলায় এনে বিশ্বব্যাপী মহাকাশ অর্থনীতির একটি বৃহৎ অংশকে ভারতের ভাগে আনা। মহাকাশ ক্ষেত্রে ভারতের পদক্ষেপ সুগভীর করতে এই উদ্যোগ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। হ্যাকাথনের ওপর গুরুত্ব দেওয়ায় ভারতীয় যুবসমাজের সামনে বহু নতুন সুযোগের সৃষ্টি হয়েছে। 

তিরঙ্গা পয়েন্ট (চন্দ্রযান-২-এর চিহ্নবাহী স্থল) এবং শিবশক্তি পয়েন্ট (চন্দ্রযান-৩-এর অবতরণস্থল) হিসেবে চাঁদের দুটি জায়গার নামকরণকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা স্বাগত জানিয়েছে। এই নামকরণের মধ্য দিয়ে আমাদের অতীতের কৃতিত্ব এবং আধুনিকতার চেতনার চমৎকার মেলবন্ধন ঘটেছে। এই নামগুলি নিছক নাম নয়। এ আমাদের সহস্রাব্দ প্রাচীন ঐতিহ্যের সঙ্গে বৈজ্ঞানিক উচ্চাশার যোগসূত্র স্থাপন করেছে। 

চন্দ্রযান-৩-এর সাফল্য প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী “জয় বিজ্ঞান, জয় অনুসন্ধান” মন্ত্রের সব থেকে বড় সাক্ষ্য। মহাকাশ ক্ষেত্রে এখন আরও বেশি করে ভারতীয় স্টার্ট আপ এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পগুলির জন্য খুলে দেওয়া হবে। এতে লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থানের সুযোগ এবং নতুন উদ্ভাবনের পরিসর সৃষ্টি হবে। ভারতের যুবসমাজের কাছে খুলে যাবে সম্ভাবনার এক নতুন দিগন্ত। 

নিঃসন্দেহে বলা যায়, চন্দ্রযান-৩ মিশনের সাফল্য মানবতার কল্যাণ ও অগ্রগতির জন্য ব্যবহার করা হবে। বিশেষত দক্ষিণ গোলার্ধের দেশগুলি এর সুবিধা পাবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আরও একবার আমাদের চিরন্তন আদর্শ বসুধৈব কুটুম্বকমের ভাবনাকে তুলে ধরেছেন। ভারতের অগ্রগতির এই দীপশিখা অন্য জায়গার মানুষের জীবনকেও আলোকিত করে তুলবে। 

মহাকাশ ক্ষেত্রে ভারতের এই অগ্রগতি কেবল অসাধারণ বৈজ্ঞানিক সাফল্য বলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা মনে করে না। এর মধ্য দিয়ে অগ্রগতি, আত্মনির্ভরতা ও বিশ্বজনীন নেতৃত্বের বার্তাও প্রতিফলিত হচ্ছে। একই সঙ্গে এটি নতুন ভারতের উত্থানের এক প্রতীক। উপগ্রহ যোগাযোগ থেকে আবহাওয়াবিদ্যা, কৃষি, বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা – শিল্পের সব ক্ষেত্রে আরও সুযোগ তৈরি করতে এই পদক্ষেপগুলি কাজে লাগানোর জন্য আমরা সহনাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের উদ্ভাবনগুলি যাতে সরাসরি বাস্তবে প্রয়োগ করা যায়, পরিকাঠামোর উন্নয়ন ঘটে, ডিজিটাল অর্থনীতি প্রসারিত হয় এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের নাগাল মেলে, সেই লক্ষ্যে আমাদের কাজ করতে হবে। 

বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের এই যুগে তরুণ-তরুণীরা যাতে আরও বেশি করে বিজ্ঞানের প্রতি আকর্ষণ বোধ করেন, সেজন্য উৎসাহ যোগাতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা শিক্ষা জগতের প্রতি বিশেষভাবে আবেদন রাখছে। চন্দ্রযান-৩-এর এই সাফল্য এই ক্ষেত্রগুলিতে আগ্রহের স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে দেওয়ার এক চমৎকার সুযোগ এনে দিয়েছে, জাতির সামনে খুলে গেছে সুযোগের নতুন জানালা। 

এই যুগান্তকারী মিশনে যেসমস্ত ব্যক্তি অবদান রেখেছেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা তাঁদের প্রত্যেকের প্রশংসা করছে। আবেগ, অধ্যবসায় ও অটল নিষ্ঠার মাধ্যমে ভারত কী অর্জন করতে পারে, চন্দ্রযান-৩ তার এক জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত। আনন্দ ও গর্বে পরিপূর্ণ দেশের মানুষ যে ভারতকে ২০৪৭ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে নিজেদের পুনরায় উৎসর্গ করবেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সেই আস্থাও পোষণ করে। 

 

AC/SD/AS/



(Release ID: 1953280) Visitor Counter : 631