প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

প্রধানমন্ত্রী বি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে বক্তব্য রেখেছেন


“ভারতের চন্দ্র অভিযানের সফল বাস্তবায়ন বিজ্ঞান এবং শিল্পের কারণে হয়েছে”

“বি-২০-র ভাবনা – আর.এ.আই.এস.ই.-র মধ্যে যে ‘আই’অক্ষরটি আছে তা উদ্ভাবন (ইনোভেশন) শব্দটির প্রতিনিধিত্ব করছে; কিন্তু উদ্ভাবনের পাশাপাশি আমি এখানে আরেকটি ‘আই’ – অন্তর্ভুক্তিকরণকেও (ইনক্লুসিভনেস) দেখতে পাচ্ছি”

“বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যে জিনিসটির সবথেকে প্রয়োজন তা হল পারস্পরিক আস্থা”

“বিশ্বের উন্নয়নের ভবিষ্যৎ ব্যবসা-বাণিজ্যের ভবিষ্যতের মধ্যে নিহিত রয়েছে”

“ভারত একটি দক্ষ এবং বিশ্বাসযোগ্য আন্তর্জাতিক সরবরাহ শৃঙ্খল গড়ে তোলার গুরুত্বপূর্ণ স্থান”

“স্থিতিশীলতা সুযোগ এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের মডেল হিসেবে সমানভাবে প্রযোজ্য”

“ভারত ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ-বান্ধব আমানতের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলছে যেখানে প্রো-প্ল্যানেট উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে”

“বাণিজ্যিক সংস্থাগুলির উপভোক্তাদের ক্রয় করার ক্ষমতার বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করতে হবে, তারা যদি আত্মকেন্দ্রিক মনোভাব নিয়ে চলে তাহলে সেটি সকলের জন্যই ক্ষতিকারক”

“আন্তর্জাতিক উপভোক্তা দিবসের বিষয়ে আমাদের ভাবনাচিন্তার প্রয়োজন; এর মাধ্যমে বাণিজ্যিক সংস্থা এবং উপ

Posted On: 27 AUG 2023 1:36PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৭ আগস্ট, ২০২৩

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নতুন দিল্লিতে বি-২০ ইন্ডিয়া ২০২৩ শীর্ষ সম্মেলনে বক্তব্য রেখেছেন। বি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের নীতি নির্ধারক, বাণিজ্য জগতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এবং বিশেষজ্ঞরা এক জায়গায় জড়ো হন এবং ‘বি-২০ ভারত বিজ্ঞপ্তি’ নিয়ে আলোচনা করেন। এই বিজ্ঞপ্তিতে ৫৪টি সুপারিশ এবং বিভিন্ন নীতি প্রণয়নের জন্য ১৭২টি পদক্ষেপের প্রস্তাব রয়েছে, যা জি-২০ গোষ্ঠীর কাছে পাঠানো হবে।   

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী জানান, সফলভাবে চন্দ্রযান ২৩ আগস্ট চাঁদের মাটিতে পৌঁছনোয় দেশজুড়ে এক উৎসবের আবহ তৈরি হয়েছে। ভারতে উৎসবের মরশুম এগিয়ে এসেছে এবং সমাজ ও বাণিজ্য জগৎ তা উপভোগ করছে। ইসরো-র সফল চন্দ্র অভিযানের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই অভিযানে যে সমস্ত উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলি বেসরকারি সংস্থা এবং অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। “এই সফল বাস্তবায়ন বিজ্ঞান এবং শিল্পের কারণে হয়েছে।”

শ্রী মোদী বলেন, ভারতের পাশাপাশি সারা বিশ্ব এই সাফল্য উদযাপন করছে। এটি একটি দায়বদ্ধ মহাকাশ অভিযান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই অভিযান দায়বদ্ধ, ত্বরান্বিত, উদ্ভাবনী, সুস্থায়ী এবং সাম্যের প্রতিফলন , যা আজকের বি-২০ সম্মেলনের মূল ভাবনার সঙ্গে মিলে যায়। মানবজাতিকে – ‘এক বিশ্ব, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ’-এর ধারণায় এগিয়ে যেতে হবে।  

বি-২০-র মূল ভাবনা প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বি-২০-র ভাবনা – আর.এ.আই.এস.ই.-র মধ্যে যে ‘আই’অক্ষরটি আছে তা উদ্ভাবন (ইনোভেশন) শব্দটির প্রতিনিধিত্ব করছে। কিন্তু উদ্ভাবনের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী এখানে আরেকটি ‘আই’ – অন্তর্ভুক্তিকরণের (ইনক্লুশিভনেস) কথা বলেছেন। তিনি জানান এই ভাবনা থেকেই জি-২০ গোষ্ঠীতে আফ্রিকান ইউনিয়নকে স্থায়ী আসন দেওয়ার কথা আলোচনা হচ্ছে। বি-২০ সম্মেলনেও আফ্রিকার আর্থিক উন্নয়নকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। “ভারত বিশ্বাস করে, এই মঞ্চের সমন্বিত উদ্যোগের মধ্য দিয়ে এই গোষ্ঠীর ওপর একটি প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়বে।” যে সিদ্ধান্তগুলি গৃহীত হচ্ছে তার সাফল্য নির্ভর করবে ভবিষ্যতে সেগুলিকে কার্যকর করার সময় আন্তর্জাতিক স্তরে অর্থনৈতিক বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের মধ্য দিয়ে, যার ফলে সুস্থায়ী উন্নয়নের এক বাতাবরণ তৈরি হবে। 
 
শ্রী মোদী প্রতি শতাব্দীতে একবার বিপর্যয়ের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, এই শতাব্দীতে তা কোভিড-১৯ অতিমারী হিসেবে উপস্থিত হয়েছিল। এই অতিমারী আমাদের শিখিয়েছে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যে জিনিসটির সবথেকে প্রয়োজন তা হল পারস্পরিক আস্থা। অতিমারী পারস্পরিক আস্থাকে নষ্ট করে দিলেও ভারতের তার ওপর ভরসা ছিল। তাই, ভারত ১৫০টির বেশি দেশকে ওষুধ সরবরাহ করেছে। এর ফলে সারা বিশ্বের কাছে নিজেকে ওষুধের ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত করে তুলেছে। একইভাবে, এ দেশের উৎপাদিত টিকা বহু মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছে। ভারতের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ তার কাজের মধ্য দিয়ে প্রকাশ পেয়েছে। “ভারতের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের কারণে জি-২০ গোষ্ঠীর বিভিন্ন বৈঠক এ দেশের ৫০টির বেশি শহরে অনুষ্ঠিত হয়েছে।”

আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সংগঠনগুলির কাছে ভারত আকর্ষণীয় অংশীদার হিসেবে উঠে এসেছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, এ দেশে তরুণ প্রতিভার প্রাচুর্য রয়েছে এবং দেশ ডিজিটাল ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটিয়েছে। “ভারতের সঙ্গে যত আপনারা বন্ধুত্ব করবেন, ততই উভয় পক্ষের সমৃদ্ধি নিশ্চিত হবে।”

শ্রী মোদী বলেন, “ব্যবসা-বাণিজ্য সম্ভাবনাকে সমৃদ্ধিতে, বাধা-বিপত্তিকে সম্ভাবনায় এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে সাফল্যে পরিণত করে। বড় হোক কিংবা ছোট, আন্তর্জাতিক বা স্থানীয় – ব্যবসা-বাণিজ্য প্রত্যেকের উন্নতি নিশ্চিত করে।” বিশ্বের উন্নয়নের ভবিষ্যৎ ব্যবসা-বাণিজ্যের ভবিষ্যতের মধ্যে নিহিত রয়েছে।

কোভিড-১৯ মহামারীর ফলে মানুষের জীবনে যে পরিবর্তন এসেছে তার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, এই অতিমারী আন্তর্জাতিক সরবরাহ শৃঙ্খলে চিরস্থায়ী বিঘ্ন ঘটিয়েছে। যে সময়ে সরবরাহ শৃঙ্খলের প্রয়োজনীয়তা সবথেকে বেশি ছিল, সেই সময় তার দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শ্রী মোদী বলেন, সরবরাহ শৃঙ্খলের বিঘ্ন ঘটার সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে ভারতই। ভারত একটি দক্ষ এবং বিশ্বাসযোগ্য আন্তর্জাতিক সরবরাহ শৃঙ্খল গড়ে তোলার গুরুত্বপূর্ণ স্থান। একটি ভরসাযোগ্য সরবরাহ শৃঙ্খল গড়ে তুলতে ভারত সক্ষম, যা বিশ্ব বাণিজ্যে সহায়ক হবে। 

জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বি-২০-র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন স্থিতিশীলতার দিকে গুরুত্ব আরোপের সময় এসেছে। স্থিতিশীলতা সুযোগ এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের মডেল, দুই ক্ষেত্রেই সমানভাবে প্রযোজ্য। এ প্রসঙ্গে এখানে মোটা দানার শস্য অর্থাৎ, মিলেটের কথা তিনি উল্লেখ করেন। এই মিলেট একটি মহাখাদ্য। এটি চাষের ক্ষেত্রে পরিবেশ-বান্ধব বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করা যায়। ছোট চাষীদের জন্য মিলেট চাষ লাভজনক। অর্থাৎ, অর্থনীতি এবং জীবনশৈলী – উভয় ক্ষেত্রেই এটি সমান কার্যকরী। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বৃত্তীয় অর্থনীতি এবং পরিবেশ-বান্ধব জ্বালানীর কথা উল্লেখ করেন। আজ ভারত পরিবেশ-বান্ধব জ্বালানীর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক সৌর জোট উল্লেখযোগ্য।  

শ্রী মোদী বলেন, কোভিড পরবর্তী সময়কালে সকলেই নিজের স্বাস্থ্যের বিষয়ে অতিরিক্ত সচেতন হয়ে উঠেছেন, যা তাঁদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় প্রকাশ পাচ্ছে। বাণিজ্য মহল এবং সমাজকে পৃথিবীর বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করতে হবে। তাদের সিদ্ধান্তগুলি পৃথিবীর ওপর কি প্রভাব ফেলে তা নিয়ে মূল্যায়নের প্রয়োজন। “এই পৃথিবীর কল্যাণসাধন করতে আমাদের দায়বদ্ধ।” তাঁর ভাষণে প্রধানমন্ত্রী ‘মিশন লাইফ’-এর প্রসঙ্গটি উল্লেখ করেন। এই অভিযানের মূল উদ্দেশ্য, সকলের যৌথ উদ্যোগে এমন কিছু করা যা  আমাদের গ্রহের জন্য শুভ হবে। এ সংক্রান্ত সমস্যাগুলির সমাধান খুব শীঘ্রই করা যাবে যখন আমাদের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আসবে এবং বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান প্রো-প্ল্যানেট নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। ভারত ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ-বান্ধব আমানতের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলছে যেখানে গ্রহের প্রতি ইতিবাচক উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী এই উদ্যোগে সামিল হওয়ার জন্য বাণিজ্য মহলকে আহ্বান জানান, যাতে বিশ্বজুড়ে এক নতুন আন্দোলন গড়ে তোলা যায়।   

শ্রী মোদী ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে প্রথাগত ভাবনাচিন্তার পরিবর্তন ঘটানোর ডাক দেন। এখন সময় এসেছে ব্র্যান্ড এবং বিক্রি নিয়ে নতুন করে ভাবনাচিন্তা করার। “ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আমাদের এমন একটি পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে যার দীর্ঘমেয়াদি সুফল আমরা সকলেই ভোগ করব। ভারত বেশ কিছু নীতি কার্যকর করার ফলে মাত্র পাঁচ বছরেই ১৩ কোটি ৫০ লক্ষ মানুষ দারিদ্র্যের নাগপাশ থেকে মুক্ত হয়েছেন। এঁরা নতুন উপভোক্তা। এই নব্য মধ্যবিত্তরা ভারতের উন্নয়নে নতুন গতি এনেছেন। দরিদ্র মানুষের জন্য গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের সুফল এটি,  যার প্রভাব মধ্যবিত্ত শ্রেণী এবং অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগের ওপরও পড়ে।” বাণিজ্যিক সংস্থাগুলির উপভোক্তাদের ক্রয় করার ক্ষমতার বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করতে হবে। তারা যদি আত্মকেন্দ্রিক মনোভাব নিয়ে চলে তাহলে সেটি সকলের জন্যই ক্ষতিকারক। এই প্রসঙ্গে তিনি বিরল মৃত্তিকা বা রেয়ার আর্থ এবং গুরুত্বপূর্ণ কিছু খনিজ উপাদানের অপ্রতুলতার প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। “এই চাহিদাগুলিকে যদি আন্তর্জাতিক স্তরের দায়বদ্ধতা বলে বিবেচনা করা না হয়, তাহলে নতুন এক ধরনের ঔপনিবেশিকতার জন্ম নেবে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, লাভজনক বাজার তখনই স্থায়ী হয় যখন সেই বাজার উৎপাদক এবং গ্রাহক – দু’পক্ষের স্বার্থই বজায় রাখে। এই একই ভাবনা রাষ্ট্রগুলির ওপরও বর্তায়। অন্য দেশকে বাজার হিসেবে বিবেচনা করলে উৎপাদক রাষ্ট্রগুলি অচিরেই সমস্যার সম্মুখীন হবে। প্রত্যেককে উন্নয়ন যাত্রায় সমান অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাণিজ্য জগতের নেতৃবৃন্দকে প্রধানমন্ত্রী আরও বেশি উপভোক্তা-কেন্দ্রিক উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান। এর ফলে তাদের সকলের স্বার্থই সুরক্ষিত থাকবে। “প্রতি বছর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মহল এক জায়গায় বসে গ্রাহকদের মঙ্গলের জন্য এবং তাঁদের বাজার যাতে ভালো থাকে তার জন্য একজোট হয়ে শপথ গ্রহণ করুন।” 

শ্রী মোদী আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মহলকে প্রস্তাব দেন যে বছরে একটি দিন নির্ধারণ করতে যে দিনটিতে তাঁরা উপভোক্তাদের স্বার্থ নিয়ে আলোচনা করবেন। “আমরা যখন উপভোক্তাদের অধিকার নিয়ে কথা বলছি, তখন তাঁদের স্বার্থ সুরক্ষার জন্য আমাদের সচেতন হতে হবে। তাহলেই উপভোক্তাদের অধিকার সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়গুলির সমাধান করা যাবে। আন্তর্জাতিক উপভোক্তা দিবসের বিষয়ে আমাদের ভাবনাচিন্তার প্রয়োজন। এর মাধ্যমে বাণিজ্যিক সংস্থা এবং উপভোক্তাদের মধ্যে আস্থা শক্তিশালী হবে।” তিনি এ বিষয়ে আরও ব্যাখ্যা করে বলেন, উপভোক্তাদের একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অঞ্চলের মধ্যে খুচরো ক্রেতা হিসেবে বিবেচনা করলে হবে না, একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্যে যে দেশগুলি যুক্ত রয়েছে তাদের সারা বিশ্বজুড়ে পণ্য ও পরিষেবা নিয়ে ভাবতে হবে। 

এই অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মহলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকায় প্রধানমন্ত্রী তাঁদের উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি প্রশ্ন রাখেন। তিনি বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং মানবজাতির ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে এই প্রশ্নগুলির উত্তরের ওপর। এক্ষেত্রে উত্তরের জন্য পারস্পরিক সহযোগিতার প্রয়োজন। জলবায়ু পরিবর্তন, জ্বালানী ক্ষেত্রে সঙ্কট, অসম খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খল, জলের নিরাপত্তা, সাইবার নিরাপত্তা সহ বিভিন্ন বিষয়ের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যে যথেষ্ট প্রভাব সৃষ্টি হবে। এই সমস্যাগুলির সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। তিনি বলেন, ১০-১৫ বছর আগেও কেউ ক্রিপ্টোকারেন্সির মতো সমস্যার কথা ভাবেননি। এই বিষয়ে একটি সুসংহত উদ্যোগ গ্রহণের প্রয়োজন। একইভাবে কৃত্রিম মেধার বিষয় নিয়েও ভাবনাচিন্তা করতে হবে। আজ এই বিষয়ে যথেষ্ট উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। কিন্তু এক্ষেত্রে দক্ষতা এবং নতুন দক্ষতা সৃষ্টি সংক্রান্ত কিছু নৈতিক প্রশ্ন দেখা যাচ্ছে। “নৈতিকভাবে কৃত্রিম মেধা ব্যবহারের জন্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সংগঠন এবং সরকারগুলির একজোট হয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত।” বিভিন্ন ক্ষেত্রের নানা সমস্যার সমাধানে এভাবেই সবাইকে একজোট হতে হবে। 

তাঁর ভাষণের শেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাণিজ্য মহল বর্তমানে সফলভাবে দেশ ও কালের গণ্ডি অতিক্রম করেছে, কিন্তু এখন সময় এসেছে তৃণমূল স্তর থেকে ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু করার। সরবরাহ শৃঙ্খলের স্থিতিশীলতার দিকে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। বি-২০ শীর্ষ সম্মেলন এক্ষেত্রে পরিবর্তন আনার জন্য একটি যৌথ উদ্যোগ নিতে সাহায্য করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। “বিশ্বের সকলের মধ্যে প্রযুক্তির সাহায্যে যোগাযোগ গড়ে ওঠার মাধ্যমে অভিন্ন উদ্দেশ্য সাধন হয়, পৃথিবীর প্রতি দায়বদ্ধতা প্রকাশ পায়, সমৃদ্ধ এক ভবিষ্যৎ গড়ে ওঠে”

প্রেক্ষাপট
বিজনেস-২০’ বা বি-২০ হল জি-২০ গোষ্ঠীর ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে আলাপ-আলোচনা চালানোর সরকারি মঞ্চ। ২০১০ সালে বি-২০ প্রতিষ্ঠিত হয়। জি-২০ গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে বি-২০-র ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে বিভিন্ন সংস্থা এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরাও রয়েছেন। আর্থিক উন্নতি এবং উন্নয়নে গতি আনতে বি-২০ গোষ্ঠী নীতিগত ক্ষেত্রে নানা ধরনের সুপারিশ করে থাকে। 
২৫ আগস্ট থেকে ২৭ আগস্ট পর্যন্ত বি-২০-র শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মূল ভাবনা আর.এ.আই.এস.ই. – দায়বদ্ধ (রেসপন্সিবল), ত্বরান্বিত (অ্যাক্সিলারেটেড), উদ্ভাবনী (ইনোভেটিভ), সুস্থায়ী (সাসটেনেবল) এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে সাম্য (ইক্যুইটেবল বিজনেসেস)। ২৭ আগস্টের সম্মেলনে ৫৫টি দেশের ১,৫০০-র বেশি প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেছেন। 


AC/CB/DM/……



(Release ID: 1952782) Visitor Counter : 125