প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

“যে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যের পথে একুশ শতকের ভারত ক্রম অগ্রসরমান, তাতে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থারও এক বিরাট ভূমিকা রয়েছে”

দিল্লির ভারত মন্ডপে আয়োজিত অখিল ভারতীয় শিক্ষা সমাগমের উদ্বোধনকালে মন্তব্য প্রধানমন্ত্রীর

“নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতিতে প্রথাগত জ্ঞান এবং ভবিষ্যতের প্রযুক্তি সম্ভাবনার উপর সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে” : বললেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী”

Posted On: 29 JUL 2023 12:37PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৯ জুলাই, ২০২৩


যে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যের পথে একুশ শতকের ভারত এগিয়ে চলেছে, তাকে সফল করে তুলতে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার এক বিরাট ভূমিকা রয়েছে। তাই, শিক্ষার স্বার্থে আলাপ-আলোচনা ও মতবিনিময় চালিয়ে যাওয়া খবুই গুরুত্বপূর্ণ। এই কথাটি মনে রেখে ভারতের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় দেশের সুপ্রাচীন ঐতিহ্য সংরক্ষণের উপর বিশেষভাবে জোর দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে, দেশ দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে চলেছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির আঙিনাতেও। 

আজ দিল্লিতে ভারত মন্ডপে আয়োজিত অখিল ভারতীয় শিক্ষা সমাগমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে এই মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। নতুন শিক্ষা নীতির আজ তৃতীয় বার্ষিকী উপলক্ষে এই শিক্ষা নীতি রচনার পেছনে যে সমস্ত বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ ও শিক্ষাজীবীদের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে, তাঁদের অবদানের কথাও বিশেষভাবে স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। একই সঙ্গে, দেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে অগ্রগতির সঙ্গে অবদানের দিক থেকে যাঁরা কোনও না কোনোভাবে যুক্ত, তাঁদেরও অভিনন্দন জানান তিনি। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিরাট কিছু পরিবর্তন সম্ভব করে তুলতে বহুদিন সময় লাগে। নতুন শিক্ষা নীতির সূচনাকালে যে বিরাট প্রেক্ষিতের কথা তখন প্রধানমন্ত্রী তুলে ধরেছিলেন, তা পুনরুচ্চারণ করে তিনি নতুন শিক্ষা নীতিকে সাগ্রহে গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের ভুয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, এই নীতিতে প্রথাগত জ্ঞান এবং ভবিষ্যতের প্রযুক্তি সম্ভাবনাকে সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে নতুন শিক্ষাক্রম প্রবর্তনের পাশাপাশি, বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় পুস্তক প্রকাশ করার জন্য যাঁরা কঠোর পরিশ্রম করেছেন, তাঁদের সেই অবদানের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। শ্রী মোদী বলেন, গবেষণার উপযোগী পরিবেশ ও পরিস্থিতিকে জোরদার করে তুলতে এবং উচ্চ শিক্ষাকে সফল করে তুলতে তাঁদের অবদান বিশেষ প্রশংসার দাবী রাখে। তিনি বলেন, ১০+২ এর পরিবর্তে ৫+৩+৩+৪ যে শিক্ষাক্রম চালু হয়েছে, তা কোনও ছাত্রছাত্রীর কাছেই এখন অবোধ্য নয়। নতুন শিক্ষাসূচিতে ৩ বছর বয়সীদেরও যুক্ত করা হয়েছে। নতুন শিক্ষা নীতির আওতায় ন্যাশনাল কারিকুলাম ফ্রেমওয়ার্ক অচিরেই আসতে চলছে। ৩ থেকে ৮ বছর বয়সীদের জন্য এই ফ্রেমওয়ার্ক ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গেছে। সারা দেশের জন্য এক অভিন্ন সিলেবাস চালু করা হবে। এজন্য পাঠ্য পুস্তক রচনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এনসিইআরটি-কে। নতুন বইগুলি রচিত ও প্রকাশিত হবে প্রায় ১৩০টির মতো ভিন্ন ভিন্ন বিষয়কে অবলম্বন করে। তৃতীয় থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের জন্য ১২টি বিভিন্ন ভাষায় এগুলি প্রকাশিত হচ্ছে। গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে আঞ্চলিক ভাষায় শিক্ষাদানের উপরও। 

অমৃতকালের আগামী ২৫ বছরে উৎসাহী এবং উদ্যোগী এক নতুন প্রজন্মের জন্ম হবে বলে আশাপ্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই প্রজন্মের মধ্যে দাসত্বের কোনও মানসিকতা কাজ করবে না। বরং আগ্রহ ও প্রচেষ্টার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান থেকে ক্রীড়া – সবকটি ক্ষেত্রেই সাফল্য অর্জনের চেষ্টার সঙ্গে যুক্ত হবে। একই সঙ্গে, একুশ শতকের চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় তারা দক্ষতা অর্জন তথা অনুশীলনের নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে। তাদের মধ্যে গড়ে উঠবে কর্তব্যবোধের এক বিশেষ মানসিকতা। নতুন শিক্ষা নীতির এক বিশেষ ভূমিকা রয়েছে এই পট পরিবর্তনে।

শ্রী মোদী বলেন, সংস্কার প্রচেষ্টাকে সফল করে তুলতে হলে প্রয়োজন সাহসিকতার। কারণ, সাহসিকতাই নতুন নতুন সম্ভাবনার জন্ম দিতে পারে। সমগ্র বিশ্ব এখন ভারতকে নতুন নতুন সম্ভাবনার পীঠস্থান বলে মনে করে। প্রসঙ্গত, সফটওয়্যার প্রযুক্তি এবং মহাকাশ প্রযুক্তির কথাও উল্লেখ করেন তিনি। তাঁর বক্তব্যে ফুটে ওঠে প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির দিকটিও। প্রযুক্তির বিশ্বায়নে ব্যয় সাশ্রয়ী উপায়ে কিভাবে সর্বশ্রেষ্ঠ মানে উন্নীত হওয়া যায়, তার পথপ্রদর্শক হ’ল বর্তমান ভারত। 

প্রধানমন্ত্রীর মতে, যদি দেশের যুবসমাজ সুদক্ষ ও কর্মকুশল হয়ে উঠতে পারে, তা নিশ্চিতভাবেই হয়ে উঠবে এক বলিষ্ঠ জাতি গঠনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এক্ষেত্রে পিতামাতা এবং শিক্ষকদের বিশেষ ভূমিকার প্রয়োজনীয়তার কথাও স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে কৌতূহল, আত্মবিশ্বাস এবং কল্পনাশক্তি গড়ে তুলতে শিক্ষক ও অভিভাবকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য স্থির থাকবে ভবিষ্যতের দিকে এবং আমাদের চিন্তাভাবনার পরিসরে যুক্ত হবে ভবিষ্যতের মানসিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গী। এইভাবেই আমরা শিশুদের পাঠ্য পুস্তকের বোঝা থেকে মুক্ত করতে পারবো।

ভারত সম্পর্কে সারা বিশ্বের আগ্রহ ও কৌতূহল যেভাবে দানা বেঁধে উঠেছে, তাতে দেশবাসীর দায়বদ্ধতা ও দায়িত্বশীলতার প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী। শিক্ষার্থীদের মধ্যে যোগাভ্যাস, আয়ুর্বেদ চর্চা এবং সাহিত্য ও শিল্পকলা সম্পর্কে আগ্রহ গড়ে তোলার উপর জোর দেন তিনি। আগামী ২০৪৭ সালে এক বিকশিত ভারত গড়ে তোলার যাত্রাপথে বর্তমান প্রজন্মের ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকার কথাও স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। 

আজকের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা, দক্ষতা বিকাশ এবং শিল্পোদ্যোগ মন্ত্রী শ্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী-শ্রী কর্মসূচির আওতায় তহবিলের প্রথম কিস্তি দেওয়া হয়। ৬ হাজার ২০৭টি স্কুল তহবিলের এই অর্থ গ্রহণ করে। এজন্য ব্যয়িত হয় ৬৩০ কোটি টাকা। ১২টি ভারতীয় ভাষায় অনূদিত শিক্ষা ও দক্ষতা সম্পর্কিত বিভিন্ন বইও আজ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। আজকের অনুষ্ঠান উপলক্ষে আয়োজিত একটি প্রদর্শনীও ঘুরে দেখেন তিনি। 


AC/SKD/SB


(Release ID: 1946258) Visitor Counter : 141