প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
প্রধানমন্ত্রী পোর্ট ব্লেয়ারে বীর সাভারকার আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে নতুন ইন্টিগ্রেটেড টার্মিনাল ভবনের উদ্বোধন করেছেন
“পোর্ট ব্লেয়ারে নতুন টার্মিনাল ভবন ভ্রমণ, ব্যবসা এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রে স্বাচ্ছন্দ্যের বিকাশ ঘটাবে”
“ভারতে বহুদিন ধরেই উন্নয়নের সুযোগ কেবলমাত্র বড় শহরগুলিতেই সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে”
“ভারতে অন্তর্ভুক্তিমূলক নতুন উন্নয়ন মডেল তৈরি হয়েছে। এই মডেল হল ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’”
“আন্দামান উন্নয়ন ও ঐতিহ্যের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে চলার মহা মন্ত্রের এক সজীব ও জাগ্রত দৃষ্টান্ত”
Posted On:
18 JUL 2023 12:03PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ১৮ জুলাই, ২০২৩
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পোর্ট ব্লেয়ারে বীর সাভারকার আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে নতুন ইন্টিগ্রেটেড টার্মিনাল ভবনের উদ্বোধন করেছেন। ৭১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই নতুন টার্মিনাল ভবনে প্রতি বছর ৫০ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করতে পারবে।
সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের এই অনুষ্ঠান পোর্ট ব্লেয়ারে অনুষ্ঠিত হলেও সমগ্র দেশ এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দিকে অধীর আগ্রহে তাকিয়ে। তার কারণ বীর সাভারকার আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে যাত্রী পরিবহণ ক্ষমতা বৃদ্ধি দীর্ঘদিনের চাহিদা অবশেষে পূরণ হয়েছে। এই উপলক্ষে নাগরিকদের উৎফুল্ল চিত্ত এবং আনন্দময় পরিবেশ প্রত্যক্ষ করতে অনুষ্ঠান স্থলে উপস্থিত থাকার ইচ্ছাও ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, যারাই আন্দামান ভ্রমণে আসতে চাইতেন তাদের প্রত্যেকেরই দাবি ছিল বিমান বন্দরে যাত্রীবহন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাক।
পোর্ট ব্লেয়ার বিমান বন্দরের স্বাচ্ছন্দ্যের বিকাশ ঘটানোর চাহিদা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ পর্যন্ত টার্মিনালে প্রতিদিন যাত্রী পরিবহন ক্ষমতা ছিল চার হাজার। নতুন টার্মিনাল হওয়ায় এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে এগারো হাজারে। এবং যেকোন সময়ই একসঙ্গে এই বিমান বন্দরে ১০টি বিমান রাখা যাবে। অনেক বেশি বিমান এবং অনেক পর্যটক আসায় এলাকায় অনেক নতুন কর্মসংস্থান হবে। তিনি বলেন, পোর্ট ব্লেয়ারের নতুন টার্মিনাল বিল্ডিং যাতায়াত, ব্যবসা এবং যোগাযোগের স্বাচ্ছন্দ্য প্রসারে এক সহায়ক ভূমিকা নেবে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “ভারতে উন্নয়নের সুযোগ বহুদিন ধরে বড় শহরগুলিতে আটকে রয়েছে। দেশের এই আদিবাসী এবং দ্বীপ এলাকা দীর্ঘ সময় ধরে উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করেনি।” তিনি জানান, বিগত ৯ বছরে বর্তমান সরকার কেবলমাত্র অতীতের সরকারগুলির ত্রুটি সংশোধন করেই থেমে থাকেনি, বরং উন্নয়নের নতুন মডেল সামনে নিয়ে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ভারতে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের এক নতুন মডেল সামনে এসেছে। এই মডেল হল ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ।’” তিনি বলেন, উন্নয়নের এই মডেল সর্বাত্মক এবং তাতে প্রতিটি এলাকার এবং সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সংযোগ সহ জীবনের বিভিন্ন দিক ধরা পড়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ৯ বছরে আন্দামানে উন্নয়নের এক নতুন গল্প লেখা হয়েছে। অতীতে সরকারের সময় ৯ বছরে আন্দামান ও নিকোবরে যেখানে বাজেট বরাদ্দ ছিল ২৩ হাজার কোটি টাকা, বর্তমান সরকারের বিগত ৯ বছরে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করে হয়েছে ৪৮ হাজার কোটি টাকা। ঠিক তেমনি অতীতে সরকারের ৯ বছরে যেখানে ২৮ হাজার গৃহতে নলবাহিত বিশুদ্ধ জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছিল সেখানে এই সরকারের আমলে বিগত ৯ বছরে এই সংযোগ বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৫০ হাজার। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ আন্দামান ও নিকোবরের প্রত্যেকটি মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে এবং তারা এক দেশ ও এক রেশন কার্ডের সুবিধা ভোগ করেন। বর্তমান সরকারের সময় পোর্ট ব্লেয়ারে মেডিকেল কলেজ তৈরি হয়েছে। অতীতে যেখানে এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে কোনো মেডিকেল কলেজর অস্তিত্বই ছিলনা। অতীতে ইন্টারনেট ছিল সম্পূর্ণভাবে উপগ্রহ নির্ভর। বর্তমান সরকারের আমলে সমুদ্র তলের কয়েকশো কিলোমিটার পর্যন্ত অপটিক্যাল ফাইবার পাতা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুযোগ-সুবিধার এই সম্প্রসারণের ফলে পর্যটনের ক্ষেত্রে গতি সঞ্চার হয়েছে। মোবাইল সংযোগ, স্বাস্থ্য পরিকাঠামো, বিমান বন্দরে সুবিধা সম্প্রসারণ এই সমস্ত কিছুই পর্যটন প্রসারের নির্ণায়ক হিসেবে কাজ করে। শ্রী মোদী বলেন, এই কারণবশতই ২০১৪র তুলনায় পর্যটকের সংখ্যা বর্তমানে দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। রোমাঞ্চকর পর্যটনের সংখ্যা বাড়ছে এবং আগামীদিনে তা আরও বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়ন এবং ঐতিহ্য হাতে হাত ধরে চলার মহামন্ত্রের এক সজীব এবং জাগ্রত দৃষ্টান্ত হয়ে উঠছে আন্দামান। তিনি বলেন, লালকেল্লায় তিরঙ্গা পতাকা উত্তোলনের অনেক আগেই আন্দামানে তা তোলা হয়েছিল। কিন্তু এই দ্বীপভূমি দাসত্বের পরাকাষ্ঠা হয়ে থাকে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি নিজেকে সৌভাগ্যবান বলে মনে করেন যে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস ঠিক যেখানে দাঁড়িয়ে তিরঙ্গা পতাকা উত্তোলন করেছিলেন সেখান দাঁড়িয়েই তিনি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার রস আইল্যান্ডকে নেতাজী সুভাষ দ্বীপে নামাঙ্কিত করেছে। হ্যাভলক দ্বীপের নাম বদলে করা হয়েছে স্বরাজ দ্বীপ এবং নীল আইল্যান্ডের নাম বদলে করা হয়েছে শহীদ দ্বীপ। এছাড়াও আরও ২১টি দ্বীপকে পরমবীর চক্র জয়ীদের নামে নামাঙ্কিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, আন্দামান এবং নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ দেশের তরুণদের কাছে এক প্রেরণার উৎস স্বরূপ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতীয়দের সক্ষমতা নিয়ে কোনো সংশয় নেই এবং তার সঠিক ব্যবহার করতে পারলে ভারত স্বাধীনতার ৭৫ বছরে উন্নয়নের নতুন শিখরে পৌঁছতে পারতো। কিন্তু আক্ষেপের বিষয় দুর্নীতি এবং পরিবারতন্ত্রের রাজনীতি দেশের সাধারণ মানুষের শক্তি ও সক্ষমতার প্রতি অন্যায় করেছে। কয়েকটি দলের সুবিধাবাদী রাজনীতির কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। দুর্নীতিগ্রস্তরা যাদের কেউ সাজাপ্রাপ্ত, কেউ বা জামিনেও রয়েছেন তাদেরকে নেতা হিসেবে গ্রহণ করার মানসিকতারও সমালোচনা করেন তিনি। সংবিধানকে জিম্মাদার করে রাখার মানসিকতার প্রবল সমালোচনা করে তিনি বলেন, এই জাতীয় শক্তিগুলি সাধারণ মানুষের উন্নয়নের থেকে পরিবারের স্বার্থ সিদ্ধিতে বেশি ব্যস্ত। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে এবং স্টার্টআপে দেশের তরুণ সমাজের অসামান্য শক্তির ওপর আলোকপাত করে শ্রী মোদী আক্ষেপ করেন যে দেশের এই তরুণ শক্তির প্রতি ন্যায়বিচার হয়নি।
ভাষণের শেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়নের লক্ষ্যে আমাদের নিয়োজিত হতে হবে। তিনি বলেন, বিশ্বে এমন অনেক ছোট ছোট দ্বীপরাষ্ট্র এবং দ্বীপপুঞ্জ রয়েছে যেসব জায়গা আজ অভূতপূর্ব উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করছে। শ্রী মোদী বলেন, উন্নয়নের পথ সব সময় চ্যালেঞ্জের। এবং উন্নয়ন আসে যাবতীয় সমাধানের পথ ধরেই। তিনি আস্থা প্রকাশ করে বলেন, আন্দামান ও নিকোবরে যে উন্নয়নের কাজ এগিয়ে চলেছে আগামীদিনে এই সমগ্র এলাকায় তাতে আরও বেশি গতি সঞ্চারিত হবে।
প্রেক্ষাপট
বর্তমান সরকারের প্রধান লক্ষ্য হল সংযোগ পরিকাঠামো সম্প্রসারণ ঘটানো। ৭১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন ইন্টিগ্রেটেড টার্মিনাল বিল্ডিং এই কেন্দ্রশাসিত দ্বীপপুঞ্জে সংযোগ সম্প্রসারণে এক অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। ৪০ হাজার ৮০০ বর্গমিটার ব্যাপৃত এই নতুন টার্মিনাল বিল্ডিং-এ বার্ষিক ৫০ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করতে পারবে। এই বিমান বন্দরে দুটি বোয়িং ৭৬৭-৪০০ এবং দুটি এয়ারবাস ৩২১ রাখার মতো ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ৮০ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। যার ফলে বর্তমানে এই বিমান বন্দরে এখন একসঙ্গে একই সময় ১০টি বিমান রাখা সম্ভব।
CG/AB/NS
(Release ID: 1940671)
Visitor Counter : 150
Read this release in:
Marathi
,
Punjabi
,
English
,
Urdu
,
Hindi
,
Manipuri
,
Gujarati
,
Odia
,
Tamil
,
Telugu
,
Kannada
,
Malayalam