সংস্কৃতিমন্ত্রক
azadi ka amrit mahotsav

কর্ণাটকের হাম্পিতে আজ থেকে শুরু হয়েছে তৃতীয় জি-২০ কালচার ওয়ার্কিং গ্রুপ (সিডব্লিউজি)-এর বৈঠক

Posted On: 09 JUL 2023 7:20PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ৯ জুলাই, ২০২৩
 
কর্ণাটকের হাম্পিতে আজ থেকে তৃতীয় জি-২০ কালচার ওয়ার্কিং গ্রুপ (সিডব্লিউজি)-এর বৈঠক শুরু হয়েছে। হাম্পিতে আজ সাংবাদিক সম্মেলনে ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রকের সচিব শ্রী গোবিন্দ মোহন জানান, ভারতের জি-২০ সভাপতিত্বে তৃতীয় কালচার ওয়ার্কিং গ্রুপ-এর বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে কর্ণাটকের হাম্পিতে ৯-১২ জুলাই।

তিনি আরও বলেন, বৈঠকে যোগ দেবেন জি-২০ভুক্ত সদস্য দেশগুলি, অতিথি দেশগুলি এবং একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা।

তিনি জানিয়েছেন. প্রথম দুটি সিডব্লিউজি বৈঠক হয় খাজুরাহো এবং ভুবনেশ্বরে। হাম্পিতে তৃতীয় বৈঠকে জি-২০ সদস্য দেশগুলি, অতিথি দেশগুলি এবং সাতটি বহুমুখী প্রতিষ্ঠানের ৫০ জন অংশ নিচ্ছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, চারটি গ্লোবাল থিমেটিক ওয়েবিনারের আয়োজন করা হয়েছে। এই ওয়েবিনারগুলি সফল হয়েছে ২৯টি দেশ এবং সাতটি বহুমুখী প্রতিষ্ঠানের সবক’টিই যোগ দেওয়ায়।

শ্রী গোবিন্দ মোহন বলেন যে তৃতীয় সিডব্লিউজি বৈঠকে চেষ্টা করা হবে যাতে সহমত গড়ে তোলা যায় এবং সিডব্লিউজি-র চারটি অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রের ভিত্তিতে আদর্শ কর্মপ্রণালী ভাগ করে নেওয়া যায়। চারটি অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র হল – সাংস্কৃতিক সম্পদের সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধার; দূর ভবিষ্যতের জন্য বর্তমান ঐতিহ্য রক্ষা, সাংস্কৃতিক এবং সৃজনশীল শিল্প ও সৃজনশীল অর্থনীতির প্রসার; এবং সংস্কৃতির রক্ষণ এবং প্রসারে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার।

শ্রী গোবিন্দ মোহন আরও বলেন যে বারাণসীতে আগস্ট মাসে সদস্য দেশের সংস্কৃতি মন্ত্রীদের বৈঠকে একটি যৌথ বিবৃতি তৈরি করার ওপর জোর দেওয়া হবে।

সাংস্কৃতিক সম্পদের সংরক্ষণ এবং পুনরুদ্ধার বিষয়ে বিস্তারিতভাবে বলতে গিয়ে তিনি জানান, ১৯৭০-এ ইউনেস্কো বৈঠকে স্থির হয়েছিল অন্য দেশের কোনও সম্পদ ঔপনিবেশিককালে শাসক দেশে যদি স্থানান্তর করা হয়ে থাকে তা যেন স্বেচ্ছায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া, চোরাচালান বা চুরি ইত্যাদির কারণে যদি সম্পদের স্থানান্তর হয়ে থাকে তাও যেন ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, বৈঠকে চেষ্টা করা হয়েছে যাতে জি-২০ভুক্ত সবক’টি দেশ যেন রাষ্ট্রসঙ্ঘের ঐ সনদে সই করে। এতে লাভবান হবে ভারতই। তিনি আরও জানান, দ্বিপাক্ষিক স্তরে ভারতও অনেক দেশের সঙ্গে চুক্তি করছে। এটি পরিলক্ষিত হবে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময়কার যৌথ বিবৃতি থেকে। ভারত ও আমেরিকার মধ্যে যে সাংস্কৃতিক সম্পদ চুক্তি হয়েছে তাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার চোরাচালান হওয়া শিল্পকর্ম বাজেয়াপ্ত করতে পারবে এবং দ্রুত তা ফিরিয়ে দিতে পারবে। তিনি আরও জানান, আগামী ৩-৬ মাসের মধ্যে এরকম ১৫০টি শিল্পকর্ম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত আসার কথা।

দূর ভবিষ্যতের জন্য বর্তমান ঐতিহ্য রক্ষা সংক্রান্ত দ্বিতীয় অগ্রাধিকার ক্ষেত্র নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি জানান, এর উদ্দেশ্য হল দেশীয় মানুষের অধিকারকে মান্যতা দেওয়া এবং প্রাচীন আচার-ব্যবহারের সংরক্ষণ। এই থিমের আরও লক্ষ্য, বর্তমান ঐতিহ্যের বাণিজ্যিকীকরণ হলে তার সুবিধা যেন সংশ্লিষ্ট সমাজের মানুষ পান।

সাংস্কৃতিক এবং সৃজনশীল শিল্প এবং সৃজনশীল অর্থনীতির প্রসার বিষয়ে তিনি বলেন, চেষ্টা করা হচ্ছে এমন একটি পদ্ধতি তৈরি করার যাতে কোনও সাংস্কৃতিক স্মারক, সাংস্কৃতিক স্থানের বিশিষ্ট ইতিহাসটি বোঝা যায়।

চতুর্থ অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রসারে ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রসারের বিষয়ে তিনি বলেন, সমগ্র সাংস্কৃতিক বিশ্ব ডিজিটাল বিপ্লবের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সেজন্য এমন একটি পদ্ধতির ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে যাতে সব দেশ ডিজিটাল পণ্যগুলি নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিতে পারে।

তিনি আরও বলেন যে ‘উভেন ন্যারেটিভস’ নামে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। এই প্রদর্শনীর থিমটি তৃতীয় অগ্রাধিকার অর্থাৎ, সাংস্কৃতিক এবং সৃজনশীল শিল্প ও সৃজনশীল অর্থনীতির প্রসারের ওপর আলোকপাত করছে। এই প্রদর্শনীতে দেখা যাবে সারা ভারতের বুনন শিল্পের বৈশিষ্ট্যগুলি। বিশেষ বিশেষ স্থানের বুনন বৈশিষ্ট্যগুলি, তার উৎপাদন থেকে বিপণন পর্যন্ত সবকিছু তুলে ধরা হবে সাধারণের সামনে। শিল্পী, কলাকুশলী, নকশাকাররাই এই প্রদর্শনীটির রূপায়ণ করেছেন। সাধারণের জন্য প্রদর্শনীটি খোলা থাকবে ১৪ জুলাই থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত।

সাংবাদিক সম্মেলনে যুগ্ম সচিব শ্রীমতী লিলি পাণ্ডিয়া বলেন, জি-২০ভুক্ত সবক’টি দেশ ছাড়াও ৯টি অতিথি দেশ এবং সাতটি আন্তর্জাতিক সংস্থা এই সংস্কৃতি কর্মগোষ্ঠীর তৃতীয় বৈঠকে যোগ দিয়েছেন।

তিনি জানান, এই বৈঠকের লক্ষ্য সহমত গড়ে তোলা এবং সংস্কৃতি মন্ত্রীদের ঘোষণার খসড়া তৈরি করা।

তিনি আরও জানান, এ বছর ২৬ আগস্ট বারাণসীতে সংস্কৃতি মন্ত্রীদের বৈঠকে গ্লোবাল থিমেটিক ওয়েবিনারগুলির একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হবে। তিনি জানান, গত বৈঠক থেকে একটি  সদর্থক পরিকল্পনা সহ উপযুক্ত ঘোষণা আশা করা হচ্ছে।

লাম্বানি এমব্রয়ডারি ওয়ার্ক প্রদর্শনী নিয়ে শ্রী পাণ্ডিয়া বলেন, সিডব্লিউজি-র লক্ষ্য লাম্বানি এমব্রয়ডারির একটি বৃহৎ প্রদর্শনীর আয়োজন করে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এ স্থান করে নেওয়া। এই প্রদর্শনীর থিম ‘কালচার ইউনাইটস অল’। এটির উদ্বোধন করবেন সংসদ বিষয়ক, কয়লা ও খনি বিষয়ক মন্ত্রী শ্রী প্রহ্লাদ যোশী। লাম্বানি সম্প্রদায়ের ৪৫০-এর বেশি মহিলা শিল্পী এতে অংশ নেবেন। এঁরা সান্দুর কুশল কলাকেন্দ্রের সঙ্গে জড়িত। প্রদর্শিত হবে ১,৩০০ লাম্বানি এমব্রয়ডারি কাজ।

তিনি আরও জানান, বেশ কিছু সাংস্কৃতিক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে প্রতিনিধিদের জন্য। এর মধ্যে রয়েছে - বিজয় বিট্টল মন্দির, রয়্যাল এনক্লোজার এবং ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান পাওয়া হাম্পি সাম্রাজ্যের ইয়েদুরু বাসবন্না কমপ্লেক্স-এর মতো ঐতিহ্যশালী স্থানগুলির পরিদর্শন।

তিনি জানান, প্রতিনিধিদের তুঙ্গভদ্রা নদীতে বিখ্যাত কোর‍্যাকল রাইডের জন্য নিয়ে যাওয়া হবে। চামড়ার পুতুল শিল্প, গঞ্জিফা শিল্প, বিদ্রি শিল্প এবং কিনহল কারুশিল্পের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে যেখানে প্রতিনিধিরা অংশ নিয়ে আনন্দ পাবেন।

গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতে সমন্বয় রেখে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের জন্য সর্বসেরা পদ্ধতির সুপারিশ করার লক্ষ্য নিয়ে সিডব্লিউজি-র বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হবে।

CG/AP/DM/


(Release ID: 1938416) Visitor Counter : 103