প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

প্রধানমন্ত্রী কর্ণাটকের বেলাগাভিতে ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকারও বেশি একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেছেন


পিএম কিষাণ যোজনার ত্রয়োদশ কিস্তি বাবদ ১৬ হাজার কোটি টাকা কৃষকদের অ্যাকাউন্টে প্রদান করেছেন

নবনির্মিত বেলাগাভি রেলস্টেশনটি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন

প্রধানমন্ত্রী জল জীবন মিশনের আওতায় ৬টি প্রকল্পের শিলান্যাস করেছেন

Posted On: 27 FEB 2023 6:35PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ কর্ণাটকের বেলাগাভিতে ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকার একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেছেন। এই অনুষ্ঠানে তিনি পিএম কিষাণ যোজনার ত্রয়োদশ কিস্তি বাবদ ১৬ হাজার কোটি টাকা কৃষকদের অ্যাকাউন্টে প্রদান করেছেন। নবনির্মিত বেলাগাভি রেলস্টেশনটি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করা ছাড়াও শ্রী মোদী জল জীবন মিশনের আওতায় ৬টি প্রকল্পের শিলান্যাসও করেছেন। 

এই উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বেলাগাভির জনসাধারণের অতুলনীয় ভালোবাসা ও আশীর্বাদ জনকল্যাণমূলক কাজে প্রেরণা যোগায়। বেলাগাভি সফর তাঁর কাছে তীর্থ যাত্রার সামিল। কিত্তুরে রানী চেন্নাম্মা এবং ক্রান্তিবীর সাঙ্গোলি রায়ান্না ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার কন্ঠ হিসাবে সকলের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন।

উন্নয়নে বেলাগাভির অবদানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১০০ বছর আগে এখানে বাবুরাও কুশলকর একটি শিল্প স্থাপন করেছিলেন। পরবর্তীতে যা এই অঞ্চলে বহু শিল্প গড়ে তুলতে সাহায্য করেছিল। বর্তমান দশকে ডবল ইঞ্জিন সরকার বেলাগাভির সেই ঐতিহ্যকে আরও শক্তিশালী করে তুলেছে। এই অঞ্চলেই প্রথম স্টার্টআপ সংস্কৃতি গড়ে ওঠে।

আজ যেসব প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করা হয়েছে, সেগুলির জন্য তিনি এই অঞ্চলের নাগরিকদের অভিনন্দন জানান। সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলি বেলাগাভির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। পিএম কিষাণ প্রকল্পের আরও এক কিস্তির টাকা প্রত্যেক কৃষকের অ্যাকাউন্টে পাঠানোর বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাটনের একটি ক্লিকের মাধ্যমেই দেশের কোটি কোটি কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৬ হাজার কোটি টাকা পাঠানো হয়েছে। এটিকে তিনি হোলির আগে বিশেষ উপহার বলে উল্লেখ করে সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। পুরো প্রক্রিয়ায় কোনও মধ্যস্বত্তভোগীর সাহায্যের প্রয়োজন পরে না। পূর্বতন কংগ্রেস সরকারের সময়কালের তুলনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই সময় ১ টাকা পাঠানো হলে দরিদ্র মানুষের কাছে পৌঁছতো মাত্র ১৫ পয়সা। কিন্তু, এখন মোদীর সরকার চলছে। ‘তাই আপনাদের প্রতিটি পয়সা আপনাদের কাছেই পৌঁছবে”।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিবর্তনের এই ভারতে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে সমাজের পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর মানুষদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। তাঁর সরকার ক্ষুদ্র চাষীদের অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। এ পর্যন্ত আড়াই লক্ষ কোটি টাকা পিএম কিষাণ সম্মান নিধির মাধ্যমে ক্ষুদ্র চাষীদের কাছে পৌঁছেছে। এর মধ্যে ৫০ হাজার কোটি টাকা পেয়েছেন মহিলা চাষীরা।  

শ্রী মোদী বলেন, ২০১৪ সালের আগে কৃষি ক্ষেত্রে বাজেটের পরিমাণ ছিল ২৫ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু, বর্তমানে তা ৫ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১ লক্ষ ২৫ হাজার কোটি টাকা। আজ জন ধন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট মোবাইল ও আধারের সঙ্গে সংযুক্তিকরণের মতো প্রযুক্তির সাহায্যে কৃষকরা উপকৃত হচ্ছেন। কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে তাঁরা ব্যাঙ্ক থেকে যে কোনও ধরনের সহায়তা পেয়ে থাকেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষি ক্ষেত্রের বিভিন্ন চাহিদার কথা বিবেচনা করে এবারের বাজেটে একগুচ্ছ প্রস্তাব রাখা হয়েছে। ক্ষুদ্র কৃষকদের সংগঠিত করার মধ্য দিয়ে ফসল মজুত রাখার জন্য কম অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে। একইভাবে, প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে কৃষিকাজে উৎসাহিত করার জন্য পিএম প্রণাম প্রকল্পের সূচনা করা হয়েছে। 

শ্রী মোদী বলেছেন, সরকার কৃষি ক্ষেত্রের বিভিন্ন সমস্যা দূরীকরণের পাশাপাশি, ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলা করতে উদ্যোগী হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য মিলেট বা মোটাদানা শস্য সম্পর্কে সকলকে অবহিত করা হচ্ছে। এবারের বাজেটে মোটাদানা শস্যের নতুন নাম দেওয়া হয়েছে ‘শ্রী অন্ন’। এই নতুন নামকরণে কর্ণাটকের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। এই রাজ্যে মিলেট শ্রী ধান্য হিসাবে পরিচিত। এক সময়ে বি এস ইয়েদুরাপ্পার নেতৃত্বাধীন সরকার শ্রী অন্ন-কে জনপ্রিয় করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। শ্রী অন্নের বিভিন্ন গুণের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই শস্য চাষ করতে কম জল লাগে। ফলে, কৃষকরা দ্বিগুণ উপকৃত হন।  

আখ উৎপাদনকারী রাজ্য হিসাবে কর্ণাটকের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, এবারের বাজেটে সমবায়-ভিত্তিক আখ চাষের ক্ষেত্রে শস্য সংগ্রহের সময় বিশেষ কর ছাড়ের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এর ফলে, আখ সংক্রান্ত সমবায় প্রতিষ্ঠানগুলি ১০ হাজার কোটি টাকা ছাড় পাবে। ইথানল উৎপাদনের মধ্য দিয়ে আখ চাষীদের আয় বৃদ্ধি হবে। গত ৯ বছরে পেট্রোলে ইথানল মিশ্রণ বৃদ্ধির পরিমাণ ১.৫ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ১০ শতাংশ। ইতোমধ্যেই ইথানলের পরিমাণ ২০ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।  

যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হলে কৃষি, শিল্প, পর্যটন ও শিক্ষার উন্নতি হবে বলে শ্রী মোদী মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের আগের ৫ বছরে কর্ণাটকে রেলের জন্য ৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। অথচ, এই বছরেই এই রাজ্যে ৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা রেল প্রকল্পগুলির জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। বর্তমানে রাজ্যে মোট ৪৫ হাজার কোটি টাকার রেল প্রকল্পের কাজ চলছে। আজ বেলাগাভিতে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন নবনির্মিত যে রেল স্টেশনটির উদ্বোধন করা হয়েছে, তার ফলে রেলের প্রতি মানুষের আস্থা বৃদ্ধি হবে। লোন্ডা থেকে ঘাটপ্রভা পর্যন্ত দ্বিতীয় লাইন বসানোর ফলে এই অঞ্চলে রেলযাত্রা আরও নিরাপদ হবে।  

“ডবল ইঞ্জিন সরকার দ্রুতগতিতে উন্নয়ন নিশ্চিত করতে চায়”। জল জীবন মিশনের উদাহরণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৯ সালের আগে কর্ণাটকের গ্রামগুলিতে মাত্র ২৫ শতাংশ বাড়িতে নলবাহিত জলের ব্যবস্থা ছিল। আজ তা বৃদ্ধি পেয়ে ৬০ শতাংশে পৌঁছেছে। বেলাগাভিতে সেই সময়ে ২ লক্ষ বাড়িতে নলবাহিত জল পৌঁছতো। বর্তমানে তা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে সাড়ে চার লক্ষ গৃহ। এবারের বাজেটে এই প্রকল্পের জন্য ৬০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।    

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, অতীতের সরকারগুলি যাঁদের অবহেলা করতো, সেইসব অবহেলিত মানুষদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার কাজ করে চলেছে। বেলাগাভির হস্ত ও কারুশিল্পের খ্যাতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগে এই অঞ্চলকে বেণুগ্রাম বা বাঁশের গ্রাম বলা হ’ত। অতীতের সরকারগুলি বাঁশ চাষে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। বর্তমান সরকার বাঁশ চাষের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার আনার ফলে আজ বাঁশ চাষ এবং বাঁশ থেকে উৎপাদিত পণ্যের নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এবারের বাজেটে প্রথমবার হস্তশিল্পীদের সহায়তার জন্য পিএম বিশ্বকর্মা যোজনার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। 

শ্রী মোদী বলেন, কংগ্রেস সরকার কর্ণাটকের নেতৃবৃন্দকে অসম্মান করতো। এস নিজোলিঙ্গাপ্পা এবং বীরেন্দ্র পাটিলজীকে কিভাবে কংগ্রেস পরিবার অপমানিত করেছে, ইতিহাস তার সাক্ষী। মল্লিকার্জুন খাড়গেজী জনসেবায় নিয়োজিত থাকা সত্ত্বেও তিনি তাঁর যোগ্য সম্মান পাননি। ছত্তিশগড়ে কংগ্রেসের কর্মসূচিতে প্রচন্ড রৌদ্রেও তাঁকে ছাতা দেওয়া হয়নি। অথচ, তিনি দলের সভাপতি। দেশের অনেক রাজনৈতিক দলই পরিবারতন্ত্রের শিকার। আর তাই সময় এসেছে যে, এইসব পরিবারতন্ত্রের থেকে দেশকে মুক্ত করা।

পরিশেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সদিচ্ছা থাকলেই প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব। তিনি ডবল ইঞ্জিন সরকারের উন্নয়নের প্রশ্নে অঙ্গীকারের কথা উল্লেখ করে বলেন, কর্ণাটক ও দেশের উন্নয়নের জন্য ‘সবকা প্রয়াস’ – এর মাধ্যমে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। অনুষ্ঠানে কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বাসবরাজ বোম্মাই, কেন্দ্রীয় কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র সিং তোমর, প্রতিমন্ত্রী শ্রীমতী শোভা করন্দলাজে, সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী শ্রী প্রহ্লাদ যোশী সহ রাজ্যের মন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।  

 


PG/CB/SB


(Release ID: 1906024) Visitor Counter : 85