শিল্পওবাণিজ্যমন্ত্রক

২০২২-২৩ অর্থ বছরে কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের বাণিজ্য দপ্তরের বর্ষশেষ পর্যালোচনার কয়েকটি উল্লেখযোগ্য দিক

Posted On: 16 DEC 2022 3:54PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২২

২০২২-২৩ আর্থিক বছরে ভারতের পণ্য রপ্তানীর মাত্রা দাঁড়িয়েছে ২৬৩.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। তুলনামূলকভাবে ২০২১-২২ অর্থ বছরের ঐ একই সময়কালে এর পরিমাণ ছিল ২৩৪.০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্থাৎ, রপ্তানী বৃদ্ধির হার পরিলক্ষিত হয়েছে ১২.৬ শতাংশ।

অন্যদিকে, পরিষেবা রপ্তানীর ক্ষেত্রে ২০২২-২৩ এর এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এই মাত্রা ছুঁয়ে গেছে ১৮১.৩৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। ২০২১-২২ অর্থ বছরের এপ্রিল থেকে অক্টোবর সময়কালে যা ছিল ১৩৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্থাৎ, পরিষেবা রপ্তানী ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার পরিলক্ষিত হয়েছে ৩১.৪৩ শতাংশ।

সামগ্রিকভাবে ভারতের পণ্য ও পরিষেবা রপ্তানী ২০২২-২৩ এর এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪৪.৭৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অন্যদিকে, ২০২১-২২ এর ঐ একই সময়কালে এই মাত্রা ছিল ৩৭১.৯৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্থাৎ, বৃদ্ধির হার এক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হয়েছে ১৯.৫৬ শতাংশ।

রপ্তানী প্রসারের লক্ষ্যে এবং নির্মাণ তথা কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির বিষয়টিকে উৎসাহিত করতে দেশের জেলাগুলিকে রপ্তানী কেন্দ্র হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ভারতের রপ্তানী বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অংশীদার করে তোলা হয়েছে দেশের রাজ্য ও জেলাগুলিকে। ফলে, সরকারের আত্মনির্ভর কর্মসূচিটি রূপায়ণ যেমন জোরদার করে তোলা সম্ভব হয়েছে, অন্যদিকে তেমনই দেশের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচিটি রপ্তানী বাণিজ্যের মাধ্যমে বিশ্বের সামনে তুলে ধরার প্রচেষ্টাও উল্লেখযোগ্যভাবে সফল হয়েছে।

এই সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণে রপ্তানীর সম্ভাবনা রয়েছে, এ ধরনের জিআই উৎপাদন, কৃষি উৎপাদন গুচ্ছ এবং খেলনা প্রস্তুতকারকদের গুচ্ছ গঠন করা হয়েছে দেশের রাজ্য ও জেলাগুলিতে। রপ্তানী বাণিজ্যকে সহায়তা করতে স্টেট এক্সপোর্ট প্রোমোশন কমিটিগুলির ধাঁচে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাও গড়ে তোলা হয়েছে।

বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে নির্দিষ্ট জেলা-ভিত্তিক রপ্তানী পরিকল্পনা ও কর্মসূচি গড়ে তোলার দিকেও। প্রতিটি জেলার রপ্তানীর পরিমাণ এবং তার অবস্থান চিহ্নিত করতে জেলাগুলির রপ্তানীর প্রচেষ্টা সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য ও পরিসংখ্যান সংগ্রহের ব্যবস্থাও চালু রয়েছে।

বৈদেশিক বাণিজ্য সম্পর্কিত মহানির্দেশালয়ের এক বিজ্ঞপ্তি মারফৎ এ বছর সেপ্টেম্বর মাসে সংশোধিত হয়েছে ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য নীতিটিও। ভারতীয় মুদ্রায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্য স্থির ও চূড়ান্ত করার কাজকে আরও সহজ করে তুলতেই এই বিশেষ ব্যবস্থা।

পরে, ২০২২ – এর নভেম্বর মাসে বৈদেশিক বাণিজ্য নীতিতে আরও কয়েকটি পরিবর্তন সম্পর্কিত একটি বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়।

রপ্তানী উন্নয়ন পরিষদগুলি থেকে এবং দেশের প্রথম সারির রপ্তানীকারকদের পক্ষ থেকেও সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়, বর্তমান বৈদেশিক বাণীজ্য নীতিটিকে (২০১৫-২০) চালু রাখতে। আবার, সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন শিল্প সংস্থা ও রপ্তানীকারকদের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয় যে, বর্তমান টালমাটাল বিশ্ব অর্থনীতি এবং ভৌগোলিক তথা রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বর্তমান নীতিটিকে আরও বেশ কিছু সময়কালের জন্য চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে।

প্রসঙ্গত বলা যেতে পারে যে, নীতি রচনার কাজে সরকার বরাবরই সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের মতামতকে যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গেই বিবেচনা করে। এই কারণে ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য নীতি ২০১৫-২০’কে ২০২২ – এর পয়লা অক্টোবর থেকে আরও ছ’মাস চালু রাখার সিদ্ধান্ত সরকারিভাবে গৃহীত হয়েছে; নতুবা এই নীতির মেয়াদ ছিল বর্তমান বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের পক্ষ থেকে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন শিল্প সংস্থা সংগঠন এবং রপ্তানী উন্নয়ন পরিষদগুলির সঙ্গে বৈঠক ও মতবিনিময় ব্যবস্থাও চালু রয়েছে। প্রয়োজনীয় পরামর্শ গ্রহণের জন্য এ বছর সেপ্টেম্বর মাসে আয়োজন করা হয় বাণিজ্য পর্ষদের একটি বৈঠকও। সেখানে রপ্তানীর লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা, নতুন বিদেশ নীতি গ্রহণ করা এবং দেশে উৎপাদন ও রপ্তানী প্রচেষ্টাকে উৎসাহদান সম্পর্কিত বিষয়গুলি আলোচনা করা হয়। ভারতের আমদানী ও রপ্তানী বাণিজ্য, কেন্দ্রীয় বাণিজ্য দপ্তরের পুনর্গঠন, রপ্তানী ক্ষেত্রে রাজ্যগুলির কাজকর্ম, রপ্তানী কেন্দ্র হিসাবে জেলাগুলির কাজকর্ম, সরকারি ই-বাজার সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনারও ব্যবস্থা ছিল বাণিজ্য পর্ষদের বৈঠকে। বিভিন্ন রাজ্যের মন্ত্রীরাও এই বৈঠকে যোগ দিয়ে তাঁদের মত ও পরামর্শ সকলের সামনে তুলে ধরেন।

অফলাইন ব্যবস্থায় রপ্তানী সম্পর্কিত কাজকর্মের উপর নজরদারির জন্য চালু করা হয় এক বিশেষ ব্যবস্থাও। এই লক্ষ্যে ডিওসি-র পক্ষ থেকে নির্যাত নামে একটি পোর্টাল – এরও সূচনা হয়। বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের রপ্তানী সম্পর্কিত কাজকর্ম তুলে ধরার ব্যবস্থা রয়েছে এই পোর্টালটিতে।

বাণিজ্য প্রচেষ্টায় স্বচ্ছতা বজায় রাখা, দক্ষতা ও কার্যকারিতাকে আরও উন্নত করে তোলা এবং বাণিজ্যিক কাজকর্মকে সহজতর করে তোলার লক্ষ্যে চা উৎপাদন সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রসাদ ও উন্নয়ন কর্মসূচির ব্যবস্থা করা হয় চা পর্ষদ – এর পক্ষ থেকে।

এ ব্যাপারে এগিয়ে এসেছে ভারতের কফি পর্ষদও। রপ্তানী সম্পর্কিত বিভিন্ন নথি ডিজিটাল স্বাক্ষর সহ ইস্যু করার ব্যবস্থা চালু হয়েছে কফি পর্ষদের উদ্যোগে।

অন্যদিকে, ‘স্পাইস এক্সচেঞ্জ ইন্ডিয়া’ নামে একটি অভিনব ডিজিটাল মঞ্চ গড়ে তুলেছে দেশের স্পাইসেস বোর্ড অর্থাৎ মশলা পর্ষদ। দেশের মশলা রপ্তানীকারকরা এই পোর্টালটি ব্যবহারের মাধ্যমে নানাভাবে উপকৃত হবেন।

আবার দেশের রাবার পর্ষদ সূচনা করেছে ‘এম রাব’ নামে একটি বৈদ্যুতিন বিপণন মঞ্চ। এর লক্ষ্য হ’ল – প্রাকৃতিক রাবার উৎপাদন ও রপ্তানী প্রচেষ্টাকে উৎসাহদান।

চালু হয়েছে এনইমিত্র নামে আরেকটি কর্মসূচিও। এর আওতায় উত্তর-পূর্ব ভারতের ২ লক্ষ হেক্টর জমিকে পাঁচ বছর ধরে পর্যায়ক্রমে নিয়ে আসা হবে রাবার চাষের আওতায়। রাবার পর্ষদের পক্ষ থেকে উদ্ভাবন করা হয়েছে রাবেক্সট্‌ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ-ও।

রাবার পর্ষদের ভার্চ্যুয়াল ট্রেড ফেয়ারের দ্বিতীয় পর্বের সূচনা হয় ২০২২ – এর এপ্রিল মাসে। ২ হাজার ৫ জন প্রদর্শক বিভিন্ন ধরনের রাবার উৎপাদন প্রচেষ্টা নিয়ে যোগ দেয় এই ভার্চ্যুয়াল ট্রেড ফেয়ারে। ভারতের রাবার ও রাবার উৎপাদনকে বিশ্বের সামনে তুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে এই রাবার উৎপাদন ট্রেড ফেয়ারটি হ’ল একটি ব্যয় সাশ্রয়ী ডিজিটাল মঞ্চ।

সামুদ্রিক পণ্য রপ্তানীর ক্ষেত্রেও দেশ পিছিয়ে নেই। থাইল্যান্ডের পক্ষ থেকে এল ভান্নামেই প্রজাতির চিংড়ি রপ্তানীর উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এর ফলে, ভারত থেকে ঐ দেশে ফোজেন ভার্নামেই চিংড়ি রপ্তানীর বিষয়টি উৎসাহিত হয়।

২০২২ – এর ১৮ ফেব্রুয়ারি ভারত ও সংযুক্ত আরব আমীরশাহীর মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় একটি সুসংবদ্ধ অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি। এর আওতায় এই দুটি দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক আদান-প্রদানের মাত্রা আগামী পাঁচ বছরে ৬০ বিলিয়ন থেকে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ভারত ও সংযুক্ত আরব আমীরশাহীর মধ্যে গভীর এবং অবাধ বাণিজ্য চুক্তির এ হল এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। ভারত নির্ধারিত সবকটি মূল্য তালিকাকেই বিবেচনা করা হয়েছে এই চুক্তি সম্পাদনের ক্ষেত্রে। বাণিজ্যিক পরিষেবা, যোগাযোগ পরিষেবা, নির্মাণ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ইঞ্জিনিয়ারিং পরিষেবা, বন্টন পরিষেবা, শিক্ষা পরিষেবা, পরিবেশ সংক্রান্ত পরিষেবা, আর্থিক পরিষেবা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক পরিষেবা, ভ্রমণ ও পর্যটন সম্পর্কিত পরিষেবা, বিনোদন তথা সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংক্রান্ত পরিষেবার কথা পরিবহণ পরিষেবা বিষয়গুলিতে ভারতের রপ্তানী বাণিজ্যকে বিশেষভাবে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে এই চুক্তির আওতায়।

ভারত – সৌদি আরব কৌশলগত অংশীদারিত্ব পরিষদের অর্থনীতি ও বিনিয়োগ কমিটির প্রথম মন্ত্রণালয় পর্যায়ের বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় সৌদি আরবের রিয়াধে এ বছর সেপ্টেম্বর মাসে। এক ভারতীয় প্রতিনিধিদল ঐ বৈঠকে অংশগ্রহণ করে। ৪০টিরও বেশি দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ক্ষেত্রকে চিহ্নিত করা হয় ঐ বৈঠকে। উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের মহাসচিব ডঃ এন এফ এম আল-হজরফ ভারত পরিদর্শনে আসেন ২০২২ – এর ২৪ নভেম্বর তারিখে। তিনি এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী শ্রী পীযূষ গোয়েলের সঙ্গে। বৈঠকে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় উঠে আসে আলোচনা টেবিলে। বিশেষভাবে জোর দেওয়া হয় দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক বিনিময় প্রচেষ্টার উপর।

বাণিজ্যিক বিষয়গুলি নিয়ে সময়ে সময়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে বাণিজ্য নীতি ফোরামের মঞ্চটি এক অনুঘটকের ভূমিকা পালন করে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক প্রচেষ্টার দিকগুলি নিয়ে সেখানে আলোচনার পরিসরও সৃষ্টি হয়।

ভারত ও কানাডার মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্কিত মন্ত্রণালয় পর্যায়ের পঞ্চম বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় এ বছর নয়াদিল্লিতে। কানাডার বাণিজ্য মন্ত্রী শ্রীমতী মেরী এনজি ভারত ও কানাডার মধ্যে বাণিজ্য চুক্তিটির সূচনা করে। ঐ বৈঠকে কানাডার পক্ষ থেকে জানানো হয় ভারত থেকে টাটকা কলা এবং তাজা বেবিকর্ন কানাডায় রপ্তানীর বিষয়ে তারা নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। একইভাবে, ভারতের পক্ষ থেকেও জানানো হয়, কানাডা থেকে ডাল আমদানীর বিষয়টিকে দেশে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।

কানাডার বাণিজ্য মন্ত্রীর ভারত সফরকালে আনুষ্ঠানিকভাবে সেপা চুক্তিটি পুনরায় চালু করা হয়। গত নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ রাউন্ড বৈঠকের আয়োজন করা হয়। যে বিষয়গুলি এখন চুক্তির পরিধির মধ্যে রয়েছে, তা হ’ল – চিহ্নিত পণ্যগুলির ক্ষেত্রে বাণিজ্য প্রচেষ্টা, আমদানী পদ্ধতি ও বাণিজ্যিক সুযোগ-সুবিধা, বাণিজ্যিক প্রতিবন্ধকতাকে দূর করা, বাণিজ্য প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত অন্তরায় দূর করা, পরিষেবা বাণিজ্য, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সংস্থাগুলির বাণিজ্য প্রচেষ্টা, বিতর্কিত বিষয়গুলির নিষ্পত্তি, প্রাতিষ্ঠানিক বিভিন্ন বিষয়, পরিবেশ, শ্রম, বিনিয়োগ ইত্যাদি।

ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলির মধ্যে বাণিজ্যিক সহযোগিতা সম্পর্কিত একটি অর্থনৈতিক কাঠামো (আইপিইএফ)-র সূচনা হয় ২০২২ – এর মে মাসে জাপানের টোকিও-তে। ভারত তাতে অংশগ্রহণ করে। অংশীদার রাষ্ট্রগুলির মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতাকে আরও শক্তিশালী করে তোলাই এর লক্ষ্য। একই সঙ্গে, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে উন্নয়ন ও অগ্রগতির পাশাপাশি শান্তি ও সমৃদ্ধির এক বিশেষ বাতাবরণ গড়ে তোলা হল এর অন্যতম উদ্দেশ্য। এই কাঠামোর একটি বিশেষ দিক হ’ল এই যে, এটি যথেষ্ট মাত্রায় অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং প্রয়োজনে অংশীদার রাষ্ট্রগুলির মধ্যে নমনীয় পদক্ষেপ গ্রহণেরও এতে ব্যবস্থা রয়েছে।

আইপিইএফ – এর অংশীদার দেশগুলি হ’ল – অস্ট্রেলিয়া, ব্রুনেই, ফিজি, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, কোরিয়া সাধারণতন্ত্র, মালয়েশিয়া, নিউজিল্যান্ড, ফিলিপিন দ্বীপপুঞ্জ, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এ বছর ১২-১৭ জুন অনুষ্ঠিত হয় বিশ্ব বাণিজ্য সংগঠনের মন্ত্রণালয় পর্যায়ের দ্বাদশ সম্মেলন। এই সম্মেলনে বাণিজ্যিক কর্মপ্রচেষ্টা সম্পর্কিত বিভিন্ন ঘোষণা, সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং চুক্তি সম্পাদন ছিল বিশেষ বিশেষ বৈশিষ্ট্য। ভারতও অংশগ্রহণ করে ঐ সম্মেলেনে।

ভার্চ্যুয়াল মঞ্চে বিশ্ব বাণিজ্য সংগঠনের মন্ত্রণালয় পর্যায়ের আরও একটি সম্মেলনের আয়োজন করে সুইজারল্যান্ড ২০২২ – এর ২১ জানুয়ারি তারিখে। এই বৈঠকে ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রীর নেতৃত্বে অংশগ্রহণ করে এক বিশেষ প্রতিনিধিদল। সুইস কনফেডারেশন অ্যান্ড ফেডারেল কাউন্সিলর মিঃ জি পার্মেলিন এই সম্মেলনে নেতৃত্ব দেন। বাণিজ্যিক ব্যবস্থাকে সহজতর করে তোলা এবং এজন্য বিভিন্ন অন্তরায়গুলি দূর করা সহ বিভিন্ন বিষয়ে মত ও পরামর্শ বিনিময় ছিল এই ভার্চ্যুয়াল সম্মেলনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী ভ্যাকসিন, ওষুধ ও বিভিন্ন পদ্ধতির উপর পেটেন্ট বা স্বত্ত্বাধিকার তুলে দেওয়ার সপক্ষে তাঁর মত ব্যক্ত করে। তিনি বলেন যে, অতিমারীজনিত পরিস্থিতিকে বাজারে প্রবেশের একচ্ছত্র অধিকার হিসাবে চিন্তা করা উচিৎ নয় বিশ্বের উন্নত দেশগুলির। তিনি আরও জানান, বিশ্ব বাণিজ্য সংগঠনের সংস্কার প্রচেষ্টায় ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কারণ, এর মাধ্যমে এই সংগঠনকে আরও সমসাময়িক করে তোলা সম্ভব। উন্নয়নশীল দেশগুলিকে তিনি এই মর্মে সতর্ক করে দেন যে, তারা যেন কোনও অবস্থাতেই বাণিজ্য নীতির নিজস্ব অবস্থানের সঙ্গে অসমীচীন রফায় সম্মত না হয়।

২০২২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তারিখে ভারত অবাধ বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদন করে সংযুক্ত আরব আমীরশাহীর সঙ্গে। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গেও অনুরূপ একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় এ বছরেরই ২ এপ্রিল তারিখে। ভারত – সংযুক্ত আরব আমীরশাহী সুসংবদ্ধ অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তিটি কার্যকর হয় ২০২২ – এর পয়লা মে তারিখে। তবে, ভারত – অস্ট্রেলিয়া অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বাণিজ্য চুক্তিটি বর্তমানে রয়েছে চালু হওয়ার অপেক্ষায়।

ই-কমার্সের ক্ষেত্রে ভারত দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে বিশ্ব সংগঠনের মন্ত্রণালয় পর্যায়ের দ্বাদশ বৈঠকে মতবিনিময় করে। আন্তর্জাতিক ই-কমার্সের ক্ষেত্রটিতে উন্নয়নশীল দেশগুলির আরও বেশি করে অংশগ্রহণের উপর জোর দেওয়া হয় ভারতের পক্ষ থেকে।

মন্ত্রণালয় পর্যায়ের দ্বাদশ সম্মেলনে বর্তমান ও ভবিষ্যতের অতিমারীজনিত পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলি নিয়েও আলোচনা করা হয়।

PG/SKD/SB



(Release ID: 1886740) Visitor Counter : 752